১. যাকে তাকে গছিয়ে দেওয়ার নামই বিবাহ নয়, মনের মিল না হলে বিবাহ করাই ভুল
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২. অতীত মুছে ফেলার শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে স্থান পালটানো
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩. ভালবাসাটার মতো এতবড় শক্তি , এতবড় শিক্ষক সংসারে বুঝি আর নাই। ইহা পারে না এতবড় কাজও বুঝি কিছু নাই।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪. কাল যে ছিল,আজ সে নাই;
আজও যে ছিল,তাহারো ঐ নশ্বর দেহ টা ধীরে ধীরে ভস্মসাৎ হইতেছে, আর তাহাকে চেনাই যায় না; অথচ, এই দেহ টাকে আশ্রয় করিয়া কত আশা,কত আকাঙ্ক্ষা,কত ভয়,কত ভাবনাই না ছিল। কোথায় গেল? এক নিমিষে কোথায় অন্তর্হিত হইল?তবে কি তার দাম?মরিতেই বা কতক্ষন লাগে?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫. "সত্যের স্থান বুকের মধ্যে, মুখের মধ্যে নয়। কেবল মুখ দিয়ে বার হয়েছে বলেই কোনো জিনিস কখনো সত্য হয়ে উঠে না। তবু যারা তাকে সকলের অগ্রে, সকলের ঊর্ধে স্থাপন করিতে চায়, তারা সত্য কে ভালোবাসে বলেই করে না, সত্যভাষণের দম্ভকেই ভালোবাসে বলে করে।"
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬. কিছু একটা কেবল দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে বলেই তা ভালো হয়ে যায় না ।মাঝে মাঝে তাকে যাচাই করে বিচার করে নিতে হয়।যে মমতায় চোখ বুঝে থাকতে চায় সে ই মরে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৭. মনে করি চাঁদ ধরি হাতে দেই পেড়ে বাবলা গাছে হাত লেগে আঙুল গেল ছিড়ে!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৮. মনে হয়, চঞ্চল এবং অস্হিরচিত্ত বলে স্ত্রীলোকের যত অখ্যাতি, ততখানি অখ্যাতির তারা যোগ্য নয়।
অখ্যাতি করতেও তোমরা, সুখ্যাতি করতেও তোমরা।
তোমাদের যা বলবার - অনায়াসে বল; কিন্তু তারা তা পারেনা। নিজের মনের কথা প্রকাশ করতে পারেনা;
পারলেও তা সবাই বোঝে না। কেন না, বড় অস্পষ্ট হয় - তোমাদের মুখের কাছে চাপা পড়ে যায়। তারপরে অখ্যাতিটাই লোকের মুখে স্পষ্টতর হয়ে ওঠে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৯.শিক্ষা, বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান, উন্নতি -- যা কিছু সব সুখের জন্য। যেমন করেই দেখ না কেন, নিজের সুখ বাড়ানো ছাড়া এ সকল আর কিছুই নয়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১০. যে বস্তুরই হোক, শেষ পর্যন্ত ভেবে দেখা মানুষের সাধ্য নয়। যিনি যতবড় বিচক্ষণ পন্ডিতই হোন না কেন,
শেষ ফলটুকু ভগবানের হাত থেকেই নিতে হয়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
১১. বাধাঁ গরু অনাহারে দাড়িয়ে মরতে দেখেছ?
সে দাড়িয়ে মরে তবু সে জীর্ণদড়িটা ছিড়ে ফেলে মনিবের শান্তি নষ্ট করেনা।
শরৎচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়
১২. যাহাকে ভালোবাসি সে যদি ভালো না বাসে,
এমনকি ঘৃণাও করে তাও বোধ করি সহ্য হয়!
কিন্তু যাহার ভালবাসা পাইয়াছি
বলিয়া বিশ্বাস করেছি, সেইখানে ভুল
ভাঙ্গিয়া যাওয়াটাই সবচেয়ে নিদারুন।
পূর্বের টা ব্যাথা দেয়।
কিন্তু শেষের টা ব্যাথাও দেয়, অপমান ও করে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৩. ভেবেচো, বুঝি হঠাৎ করে করে
তোমাকে কুড়িয়ে পেয়েছিলুম?
কুড়িয়ে তোমাকে পাইনি,
পেয়েছিলুম অনেক তপস্যায়, অনেক আরাধনায়।
তাই, বিদায় দেবার কর্তা তুমি নও,
আমাকে ত্যাগ করার মালিকানা
স্বত্বাধিকার তোমার হাতে নেই।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৪. যাহা জটিল ও দুর্বোধ্য, তাহা বিশদভাবে পরিষ্কার করিয়া বুঝাইয়া বলিবার সময় ও সুবিধা না হওয়া পর্যন্ত একেবারে না বলাই ভাল। ইহাতে অধিকাংশ সময়ে সুফলের পরিবর্তে কুফলই ফলে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৫. জগতের সমস্ত বস্তুই সাফাই সাক্ষীর হাত ধরে হাজির হতে পারে না বলেই
মিথ্যা বলে ত্যাগ করতে হলে অনেক ভালো জিনিস হতে বঞ্চিত হয়ে থাকতে হয়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৬. কপালের যেখানটায় বসন্তের দাগ ছিল; সবাই চোখ ফিরিয়ে নিত ঘেন্নায়! সেখানটায় চুমো খেয়ে বুঝিয়ে দিতে হয় ভালোবাসা জিনিসটা সবার জন্য আসেনি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৭. যাহার প্রাসাদতুল্য অট্টালিকা নদীগর্ভে ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে,সে আর খান কতক ইট বাঁচাইবার জন্য নদীর সহিত কলহ করিতে চাহে না৷
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৮. মানুষের দীর্ঘ-জীবনে তাকে অনেক পা চলতে হয়,দীর্ঘ পথটির কোথাও কাদা, কোথাও পিছল,কোথাও উঁচু-নীচু থাকে, তাই লোকের পদস্থলন হয়; তারা কিন্তু সে কথা বলে না,শুধু পরের কথা বলে|পরের দোষ,পরের লজ্জ্বার কথা চীৎকার করে বলে,সে শুধু আপনার দোষটুকু গোপনে ঠেকে ফেলবার জন্যই|
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৯. আমি যে মেয়েমানুষ!
মেয়েমানুষের কি কখনো অসুখ হয়, না সে মরে?
কোথায় শুনেচ, অযত্নে অত্যাচারে মেয়েমানুষ মরে গেছে?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২০. মানুষ তো দেবতা নয়-সে যে মানুষ!
তার দেহ দোষে -গুণে জড়ানো;
কিন্তু তাই বলে তো তার দুর্বল মুহূর্তের উত্তেজনাকে তার স্ভাব বলে ধরে নেওয়া চলে না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২১. মহত্ত জিনিসটা কোথাও ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে না। তাকে সন্ধান করে খুঁজে নিতে হয়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২২. রাজার আইন, আদালত, জজ, ম্যাজিস্ট্রেট সমস্ত মাথার উপরে থাকিলেও দরিদ্র প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিঃশব্দে মরিতে হইবে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২৩. যাহাকে মনে পড়িলেই তাহার বুকে সুচ ফুটিয়াছে,
তাহার সেই চিরদিনের বন্ধুকে অপমান করিয়া
ত্যাগ করার দুঃখ যে তাহার অন্তরে অহরহ কত বড় হইয়া উঠিতেছিল
সে শুধু অন্তর্যামীই দেখিতেছিলেন।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২৪. যে মাত্র কয়েক ঘন্টা পূর্বে ও নিজের মুখে স্বীকার করিয়া গিয়াছে,
সে তাহার কেহ নয়_ উভয়ের কোন বন্ধন নাই, যাহার বিরুদ্ধে আজ তাহার ঘৃণার অন্ত নাই,
তবুও তাহারই জন্য কেন সমস্ত মন জুড়িয়া হাহাকার উঠিতেছে।
এ কি বিচিত্র ব্যপার!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২৫. মানুষ শেষ পর্যন্ত কিছুতেই. নিজের
সমস্ত পরিচয় পাই না,
সে যা নয়, তাই
বলিয়া নিজেকে জানিয়া রাখে
এবং বাহিরে প্রচার করিয়া শুধু
বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায
২৬. যাহাকে ভালোবাসি
সে যদি ভালো না বাসে,
এমনকি ঘৃণাও করে
তাওও বোধ করি সহ্য হয়!
কিন্তু যাহার ভালবাসা পাইয়াছি
বলিয়া বিশ্বাস করেছি,
সেইখানে ভুল
ভাঙ্গিয়া যাওয়াটাই
সবচেয়ে নিদারুন।
পূর্বের টা ব্যাথা দেয়।
কিন্তু শেয়ার টা ব্যাথাও দেয়,
অপমান ও করে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২৭. আমি তো চললুম।
পথের কষ্ট আমাকেই নিতে হবে,
সে নিবারণ করার সাধ্য কারো নেই।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২৮. আমি ঠকিনি,
কারণ আমি ভালবাসতে পেরেছিলাম,
কিন্তু ঠকেছে সে,
সে ভালবাসতে পারেনি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২৯. কত হারাইয়া গিয়াছে টের পাই,
কিন্তু তবু তো শিকল ছিড়িয়া যায় না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩০. এমন কিছু একটা ভাগ্যে মিলিল
যাহা যেমন আকস্মিক তেমনি অপরিসীম।
নিজের গুনে পাই নাই, নিজের দোষেও হারাই নাই,
তথাপি হারানোটাকেই আজ স্বীকার করিতে হইলো,
ক্ষতিটাই আমার বিশ্ব জুড়িয়া রহিলো।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩১. রাগ করিব কাহার উপর? কিসের জন্য?
কি তাহার অপরাধ?
ঝর্ণার জলধারার অধিকার লইয়াই
বিবাদ করা চলে।
কিন্তু উৎসমুখে জলই যদি শেষ হইয়া
থাকে,
তো শুষ্ক খাদের বিরুদ্ধে
মাথা খুড়িয়া মরিব কোন ছলনায়?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩২. পুরুষ মানুষ যত মন্দই হয়ে যাক,
ভালো হতে চাইলে তাকে
কেউ তো মানা করে না ;
কিন্তু আমাদের (মেয়েদের) বেলায়
সব পথ বন্ধ কেন?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩৩. আশা ছিলো একদিন আমার পাপ ক্ষয় হবে, আমি নিষ্পাপ হবো।
এ লোভ কেন জানো?
স্বর্গের জন্য নয়, সে আমি চাইনে।
আমার কামনা, মরনের পর যেন আবার এসে জন্মাতে পারি।
বুঝতে পারো তার মানে কি?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩৪. হয়তো প্রশ্ন করবে, তবে কি এমন নিঃসঙ্গ জীবনই চিরদিন কাটাব?
কিন্তু প্রশ্ন যাই হোক, এর জবাব দেওয়ার দায় আমার নয়, তোমার।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩৫. "মেয়েরা পুরুষের হৃদয় এক নিমিষেই
চিনে নিতে পারে, এটি বিধাতার দেয়া শক্তি। অথচ
আশ্চর্যের ব্যাপার ওরা নিজেদের হৃদয়
নিজেরা চিনতে পারে না"।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
৩৬. কিন্তু যা কিছু লোভের জিনিস - যখন ইচ্ছে করেই ত্যাগ করেচি, তখন আর আমার ভয় নেই।
হঠাৎ যদি ঝোঁকের ওপর ছাড়তাম
তাহলে হয়তো সাবধান হবার আবশ্যক
ছিলো। কিন্তু এতোদিনের মধ্যে একটা দিনও
তো আমাকে অনুতাপ করতে হয়নি?
আমি যে বেশ সুখে আছি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩৭. কত হারাইয়া গিয়াছে টের পাই,
কিন্তু তবু তো শিকল ছিড়িয়া যায় না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩৮. মানুষ শেষ পর্যন্ত কিছুতেই. নিজের
সমস্ত পরিচয় পাই না,
সে যা নয়, তাই
বলিয়া নিজেকে জানিয়া রাখে
এবং বাহিরে প্রচার করিয়া শুধু
বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩৯. আমার জীবন আজ মৃত, বিসর্জিত,
প্রতিমার শেষ চিহ্নটুকু পর্যন্ত নদীতীরে দাড়াইয়া স্বচক্ষে দেখিয়া ফিরিয়াছি।
আশা করিবার, কল্পনা করিবার, আপনাকে ঠকাইবার
কোথাও কোনো সুত্র আর অবশিষ্ট রাখিয়া আসি নাই।
ওদিকটা নিঃশেষ নিশ্চিহ্ন হইয়াছে।
কিন্তু এইশেষ যে কতখানি শেষ,
তাহা বলিবই বা কাহাকে, আর বলিবই বা কেন?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪০. রাগ করে শোয়া যেতে পারে কিন্তু রাগ করে ঘুমনো যায় না| বিছানায় পড়ে ছটফট করার মত শাস্তি আর নেই|
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪১. এতকাল জীবনটা কাটিল উপগ্রহের মত।
যাহাকে কেন্দ্র করিয়া ঘুরি, না পাইলাম
তাহার কাছে আসিবার অধিকার,
না পাইলাম দুরে যাইবার অনুমতি।
অধীন নই, নিজেকে স্বাধীন বলারও জো নাই।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪২. হৃদয়ের কোমলতা ও দূর্বলতা এক বস্তু নয়|
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪৩. আমি তো চললুম।
পথের কষ্ট আমাকেই নিতে হবে,
সে নিবারণ করার সাধ্য কারো নেই।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪৪. ওই বাহিরের চাঁদটাও কিছু না,
মেঘটাও কিছু না,
সব ফাঁকি সব ফাঁকি!
আসল যা কিছু, তা এই নিজের মনটা।
সে যখন যাকে যা দেখায়,
বিভোর হইয়া সে তখন শুধু দেখে।
আমরাও সেই দশা।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪৫. যখন তুমি কাউকে ভালবাসবে তখন, বুঝবে ব্যথা কী!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪৬. অসময়ে মেঘের আড়ালে আজ সূর্য অস্ত গেছে বলে সেই অন্ধকারটাই হবে সত্যি, আর কাল প্রভাতে আলোয় আলোয় আকাশ যদি ছেয়ে যায়, দুচোখ বুজে তাকেই বলব এ আলো নয়?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪৭. যদির উত্তর যদি দিয়েই হয়| অনিশ্চিত প্রস্তাবের নিশ্চিত মিমাংসা আশা করতে নেই|
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪৮. অনুকরণে মুক্তি আসে না, মুক্তি আসে জ্ঞানে|
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪৯. এতকাল জীবনটা কাটিল উপগ্রহের মত| যাহাকে কেন্দ্র করিয়া ঘুরি, না পাইলাম তাহার কাছে আসিবার অধিকার, না পাইলাম দুরে যাইবার অনুমতি|
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫০. সমস্ত চক্ষু-কর্ণ দৃঢ়রুদ্ধ করিয়া
এখনো এক বিশ্বাসে অটল হইয়া আছে,
সে শুধু আমারই - আমার বড় আর তাহার কিছুই নাই।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫১. বড় প্রেম সব সময় কাছে টানে না| দুরেও ঠেলে দেয়!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫২. জীবনের অনেক বড় বস্তুকে চেনা যায় শুধু তাকে হারিয়ে|
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫৩. মানুষের শুভ ইচ্ছা যখন
বুক থেকে সত্য হয়ে বার হয়,
তখন সে চেষ্টা ব্যর্থ হয় না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫৪. এই যে অশ্রান্ত বিক্ষোভ,
নিজের জীবন হইতে ছুটিয়া
বাহির হইবার এই যে দিগ্বিহীন ব্যাকুলতা,
ইহার কি কোন শেষ নেই?
খাঁচায় আবদ্ধ পাখির মতো কি সে
দিনরাত্রি অবিশ্রাম মাথা খুঁড়িয়া মরিবে?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫৫. তুমি রাগ করবে জানি,
কেননা চিরকাল তুমি
ভালোর সাথে মিশে
ভালো দেখে, ভালো হয়েই আছো।
কিন্তু আমার মতো
ভালো মন্দ দেখে যদি পাকা হতে,
তাহলে আমার এতো
কথা বলার আবশ্যক হতো না।
তোমার নিজের চোখেই
অনেক জিনিস ধরা পড়তো!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫৬. যাহাকে ভালোবাসি
সে যদি ভালো না বাসে,
এমনকি ঘৃণাও করে
তাওও বোধ করি সহ্য হয়!
কিন্তু যাহার ভালবাসা পাইয়াছি
বলিয়া বিশ্বাস করেছি,
সেইখানে ভুল
ভাঙ্গিয়া যাওয়াটাই
সবচেয়ে নিদারুন।
পূর্বের টা ব্যাথা দেয়।
কিন্তু শেয়ার টা ব্যাথাও দেয়,
অপমান ও করে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫৭. যে আহবানে এই স্তব্ধ -নিবিড়
নিশিথে
এই বাড়ির সমস্ত কঠিন শাষনপাশ
তুচ্ছ করিয়া দিয়া,
একাকী বাহির হইয়া আসিয়াছি,
সে যে কতো বড় আকর্ষণ, তাহা তখন
বিচার করিয়া দেখিবার সাধ্য
আমার ছিলো না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায
৫৮. ভালবাসাটার মতো এতবড় শক্তি ,
এতবড় শিক্ষক সংসারে বুঝি আর নাই।
ইহা পারে না এতবড় কাজও বুঝি কিছু নাই।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৫৯. মানুষকে ব্যথা দেবার একটা সীমা আছে,
সেটা ডিঙিয়ে যেও না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬০. যে গোপনে আসিয়াছিল, তাহাকে গোপনেই যাইতে দিলাম। কিন্তু এই নির্জন নিশীথে সে যে তাহার
কতখানি আমার কাছে ফেলিয়া রাখিয়া গেল,
তাহা কিছুই সে জানিতে পারিল না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬১. হায় রে মানুষের মন!
এ যে কিসে ভাঙ্গে, কিসে গড়ে,
তাহার কোনো হিসাবই পাওয়া যায় না।
অথচ এই মন লইয়া মানুষের অহংকারের অবধি নাই।
যাহাকে আয়ত্ত করা যায় না, যাহাকে চিনিতে পর্যন্ত পারা যায় না,
কেমন করিয়া 'আমার 'বলিয়া তাহার মন যোগানো যায়!
কেমন করিয়াই বা তাহাকে লইয়া নিরুদ্বেগে ঘর করা চলে!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬২. এলোমেলো ভাবনার অন্তও নেই,
আর মীমাংসাওও হয় না।
দু চার দিন কেন,
দু চার বছরে ও স্থির হয় না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬৩. যে বস্তুরই হোক, শেষ পর্যন্ত
ভেবে দেখা মানুষের সাধ্য নাই।
যিনি যতবড় বিচক্ষণ পন্ডিতই হোন না কেন,
শেষ ফলটুকু ঈশ্বরের হাত থেকেই নিতে হয়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬৪. যা ভাল কাজ, তার অধিকার মানুষ সঙ্গে সঙ্গেই ভগবানের কাছে পায়—মানুষের কাছে হাত পেতে নিতে হয় না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬৫. ভালবাসিবার অধিকার সংসার আমাকে দেয় নাই।
এই একাগ্র প্রেম, এই হাসি কান্না, মান অভিমান,
এই ত্যাগ, এই নিবিড় মিলন
সমস্তই লোকচক্ষে যেমন ব্যার্থ,
এই আসন্ন বিচ্ছেদের অসহ অন্তর্দাহও
বাহিরের দৃষ্টিতে তেমনি অর্থহীন।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬৬. সত্যের স্থান বুকের মধ্যে, মুখের মধ্যে নয়। কেবল মুখ দিয়ে বার হয়েছে বলেই কোন জিনিস কখনো সত্য হয়ে উঠে না। তবুও তাকেই যারা সকলের অগ্রে, সকলের ঊর্ধ্বে স্থাপন করতে চায়, তারা সত্যকে ভালবাসে বলেই করে না, তারা সত্যভাষণের দম্ভকেই ভালবাসে বলে করে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬৭. আকাশ কুসুম আকাশেই
শুকাইয়া গেল,
এবং যে দুই একটা শুকনো পাপড়ি
বাতাসে ঝরিয়া পড়িল,
তাহাদের
কুড়াইয়া ঘরে তুলিবার জন্যও
মাটি হাতড়াইয়া ফিরিলাম না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায
৬৮. মানুষ শেষ পর্যন্ত কিছুতেই. নিজের সমস্ত পরিচয় পাই না,
সে যা নয়, তাই বলিয়া নিজেকে জানিয়া রাখে
এবং বাহিরে প্রচার করিয়া শুধু বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৬৯. আর এক কথা
তোমাকে যে আমি বড় ভালোবাসিতাম
তাহা আমার কোনো দিন মনে হয় নাই।
আজিও তোমার জন্য আমার অন্তরের মধ্যে
নিরতিশয় ক্লেশ বোধ করিতেছি না।
শুধু এই আমার বড় দুঃখ যে,,,,,
তুমি আমার জন্য কষ্ট পাইবে।
চেষ্টা করিয়া আমাকে ভুলিও, এবং
আন্তরিক আশির্বাদ করি, তুমি সফল হও!!!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৭০. এ জীবনে ভালোবাসার ব্যবসা অনেক করেছি।
কিন্তু একটিবার মাত্র ভালোবেসেছি।
সে ভালোবাসার অনেক মূল্য, অনেক শিখেছি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৭১. সেচ্ছেয়া নেয়া দুঃখ ঐশ্বযর্য়ের মতই ভোগ করা যায়।
শরৎচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়