আরহামের তৃতির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে মন চাইলেও সে পারছে না। আজ ভবিষ্যতের কথা ভেবে তার ডাইরিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর তার ওয়াসরুমে দৌড় লাগাতে হচ্ছে। এটা নিয়ে ইবনীহা বেশ মজা নিচ্ছে আরহামের সাথে। সে যে মন মতো দেখতেও পাচ্ছে না তার মিষ্টি বউটাকে। বউটা এতো মিষ্টি কেন, আরহাম মনে মনে ভাবছে কবে না বহুমূত্র রোগ তার শরীরে বাসা বাধে।
বাড়ির সবাই তৃতিকে দেখে বেশ প্রশংসায় শেষ। ইবনীহা তো তৃতির ছবি তুলে চলেছে। কমসে কম হাজার খানেক ছবি সে তুলেছে। তবুও যেন মন ভরছে না তার। এজন্য আরহামদের বের হতে একটু লেট হয়ে যায়। পাশাপাশি যখন আরহাম আর তৃতি বেড়িয়ে গেল তখন তাদের দেখে মনে হয়েছিল " they are made for each other... "
আরহামের বেশ ভাল লাগেছে মনে হচ্ছে যেন ওরা ফুলে মোড়ানো কোনো কার্পেটের উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছে আর আসে পাশে থেকে ভেসে আসছে কোকিল, টিয়া আরও নানান পাখির ডাক। চারিদিক থেকে হাজারো মানুষ হাত তালি দিচ্ছে আর ওরা হাটছে লাল গালিচায়। ওরা গিয়ে গাড়িতে বসল। আরহাম ড্রাইভ করার সময় তৃতিকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলল ও যেন নিজে থেকে কিছু না করে। আরহাম যেটা করতে বলবে যেন সেটাই করে। তৃতি বারবার আরহামের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। আরহাম বারবার এ হাসিটা দেখে নিজের সাজানো গুছানো কথাগুলোকে হারিয়ে ফেলছে। যেন এই এক হাসিতেই পুরো আরহামকে এলোমেলো করে দিচ্ছে মেয়েটা।
ওরা যখন রেস্টুরেন্টে গেল দেখল সবাই আগেই চলে এসেছে। সব ফ্রেন্ডরা নিজের মধ্যে কুশল বিনিময় করল। আরহাম সবার সাথে তৃতিকে মিট করিয়ে দিল।সবাই বেশ আন্তরিকতার সাথে গ্রহন করল তৃতিকে। সবাই তৃতির সাথে হ্যান্ডসেক করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিল। কেউ কেউ আবার হাগ করার জন্য এগিয়ে এলো। তৃতির মোটেও ভাল লাগে নি এসব। সে গ্রামের মেয়ে তাই এসব আগে দেখে নি, আর এসবে অভস্তও নয়। সে সবাইকে এড়িয়ে গিয়ে সবাইকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করল। এতে যে আরহামের ফ্রেন্ডরা কিছুটা মনোক্ষুন্ন হয়েছে তা বোঝা গেল।
এটা এখন একটা কালচার হয়ে গেছে। আমরা আমাদের সংস্কৃতি আর ধর্মের তাতপর্য ভুলে গিয়ে পাশ্চাত্য দেশের কালচার তুমুল ভাবে নিজেদের মধ্যে গ্রহন করে ফেলেছি। এখন আমাদের নিজেদের সংস্কৃতিকে আমারদের কাছে খ্যাত লাগে। আর ধর্মের কথা না বলি। অন্য ফ্রেন্ডদের বউরা ঠিকই একে অপরের সাথে সেইভাবেই কুশল বিনিময় করল। তাই তৃতির ব্যবহারটা সবার দৃষ্টি কটু লাগল। এতে আরহাম কিছুটা খুশি হল। কিন্তু বন্ধুদের বিসন্ন মুখের দিকে তাকিয়ে আবার একটু দমে গেল। সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না তৃতি ওদের সাথে ওদের মতো করে কুশল বিনিময় করলে সে বেশি খুশি হতো না কি এখন হয়েছে।
খাবার অডার করার সময় যখন তৃতিকে কি খাবে জিজ্ঞাসা করল তখন তৃতি বেশ কয়েকটা বাঙ্গালী খাবারের নাম হড়হড় করে বলে দিল। যেগুলো ওখানে পাওয়া যায় না করান সেটা একটা ফাইভ স্টার হোটেল যেখানে নানান ধরনের বিদেশী খাবার দিয়ে ঠাসা। সেখানে বাঙালি খাবার পাওয়া তো দুর কোন বাঙালি মানুষও পাওয়া যাবে না। সবগুলো বিদেশী মোড়কে মুড়ানো এক একটা সংকর প্রজাতি। এতে সবাই বেশ সরু চোখে তাকালো তৃতির দিকে। যেন সে কোন সার্কাস শো করছে, সবাই বোঝার চেষ্টা করল সে মজা করছে কি না। আরহাম বিষয়টাকে কাজে লাগালো। বেশ হাসি হাসি মুখ করে বলল যে তৃতি মজা করছে সবার সাথে। তৃতির দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে বোঝালো এখন যেন সে কোন কথা না বলে। আরহাম নিজের পছন্দসই কিছু খাবার অডার করে দিল।
খেতে বসে বাধল আর এক বিপত্তি। তৃতি কিছুতেই নাইফ আর স্পুন ব্যবহার করে খেতে পারবে না। আরহাম কি করবে বুঝতে পারল না। কারণ ওরা একা থাকলে সমস্যা ছিল না কিন্তু এখন এদের সামনে ও কি করবে। তৃতি সবার সামনে হাত দিয়ে বেশ আয়েশ করে খাওয়া শুরু করল। আরহাম কিছু বলতে চেয়েও বলল না কারণ হাত দিয়ে খেলে তো কোন সমস্যা হবে না কিন্তু নাইফ আর স্পুন ব্যবহার করতে গিয়ে সেদিনের মতো অবস্থা হলে আরও কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। বিষয়টা কেউ ভালভাবে নিল না। সবাই আড় চোখে দেখলেও কিছু বলল না।
হাইরে মানুষ কি যুগ এসেছে, বিদেশী কালচার ধারন করতে করতে নিজের সংস্কৃতি ভুলে গেছে। আর কেউ সেটা ধারন করে বাঁচতে চাইলেও সবার দৃষ্টি কটু হবে। সবাই খাওয়ার মাঝে বেশ ভালোভাবেই হজম করল বিষয়টা আর নিজেদের মাঝে এটা নিয়ে নানা মশকরাও করে নিল। কিছুই দৃষ্টি এড়ালো না আরহামের। সে নিজেকে মনে মনে ছোট মনে করছিল কিন্তু তার আপাতত করার কিছুই ছিল না।
খাওয়ার পর সবাই হালকা ড্রিংক করার বায়না ধরল। অডার করা হল ড্রিংক। আরহাম কিছুতেই চায় না তৃতি এটা খাবে। তাই ও তৃতির জন্য আলাদা করে কোক অডার করল। কারন তৃতি এসব আগে খায় নি তাই একটু খেলেই নেশা হতে পারে। কিন্তু তার মধ্যে একজন এটা খেয়াল করে মজা করার জন্য তৃতির কোকে মদ মিশিয়ে দিয়েছিল। সবাই ড্রিংক করতে করতে বেশ আড্ডা দিল। সবাই ছিল আরহামের স্কুল কলেজের ফ্রেড। তো সেই সর্নালী দিনগুলোর স্মৃতিচারন হলো বেশ জোরেসোরে। সবার বউরা নিজের হাসবেন্ডের অতীত জেনে বেশ খুশি হলো। দুই একটা ঘটনা নিয়ে মজাও করল।
আর তৃতি! সে বেশ শান্তভাবে এক কোনে বসে রইয়েছে। খাবার শেষে সবাই তখন যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল। আবার সবাই একে অপরকে হাগ করে বিদায় দিল। তৃতির সামনে আসলে তৃতি কেমন জানি একটা হাসি দিয়ে বলল,,,
- দেখ দেখ সবাই কেমল একে অপরকে আদর করছে। কিন্তু কেন? ওরা কি কাউকে বকা দিয়েছে?
আরহাম বেশ ভ্যাবাচাকা খেয়ে তৃতির দিকে তাকালো। তৃতি এসব কি বলে। আরহাম চাপা সরে তৃতিকে বলল, এসব কি বলছ তুমি?
তৃতি মুখটাকে বেশ হাসি হাসি করে বলল, কেন তোমার মনে নেই সেদিন যখন তুমি আমাকে বকা দিলে তারপর তো এভাবেই আমাকে আদর করেছিলে। ওরাও কি বকা দিয়েছে নাকি। আচ্ছা তুমি তো আমাকে চুমুও খেয়েছিলে। ওরা চুমু খেল না কেন, শুধু জড়িয়ে ধড়ল?
আরহামের চোখ দুটো রসগোল্লার মতো হয়ে গেছে। ও কি বলবে বুঝতে পারছে না। ওর বাকী ফ্রেন্ডরাও বেশ অবাক হয়েছে। কেউ কেউ আবার কি বুঝে যেন ঠোট চেপে হাসছে। আরহাম সেখানে দাড়ানোর আর রিস্ক নিল না। সে আর কারো সাথে কোন বাক্যালাপ না করে তৃতির হাত টেনে সেখান থেকে বেড়িয়ে আসল।
গাড়িতে আসার সময়ও তৃতি নানা পাগলামি করে চলেছে। আরহামকে বেশ কষ্ট করে গাড়ি ড্রাইভ করে আসতে হয়েছে। আরহাম প্রথমে কিছুতেই বুঝতে পারছিল না তৃতি এমন কেন করছে। পরে মনে হল তৃতি মনে হয় মদ খেয়ে ফেলেছে। আর সেটা অসম্ভব নয়, পুরো টেবিল জুরে মদ ছিল কখন কোথা থেকে উঠিয়ে খেয়ে ফেলেছে হয়তো। আরহাম বেশ জোরে সোরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
সে মনে মনে ভাবতে থাকল কাল সে সবার সামনে ঠিক কি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে চলেছে।
সে মনে মনে ভাবতে থাকল কাল সে সবার সামনে ঠিক কি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে চলেছে।
ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেল ওদের। ওরা য়খন বাসায় আসল তখন বাসার সবাই খেয়ে শুয়ে পড়েছে। তৃতি এতোক্ষন অনেক কথা বলার ফলে এখন কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। হাটতে পাড়ছে না, বারবার টলছে। আরহাম এটা দেখে তৃতিকে পাজকোলে তুলে নিল। বেশ সাবধানতার সাথে এগুলো নিজের ঘরের দিকে।
ঘরে ঢুকে তৃতিকে প্রথমে বিছানায় শুইয়ে দিল। তাপর এগোলো রান্না ঘরে। বেশ সাবধানতা অবলম্বন করে এক গ্লাস তেঁতুলের রস বানালো তৃতির জন্য। তেঁতুলের রসটা তৃতিকে একটু খাইয়ে দিল । রসটা খেয়েই তৃতি বমি করে দিল। বমি করেই তৃতি বেশ নিস্তেজ হয়ে গেল। আরহাম তৃতিকে পরিস্কার করে দিল আর সাথে শাড়িটাও চেন্জ করিয়ে দিল। শাড়িটা তৃতি নিজেই চেন্জ করল, আরহাম চোখ বন্ধ করে তৃতিকে আগলে ধরে দাড়িয়ে থাকল। আরহাম তৃতিকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজেও ফ্রেস হয়ে শুয়ে পড়ল।
পরের দিন থেকে বন্ধুমহলে বেশ হাসির পাত্র হয়ে উঠলো আরহাম। আরহাম বিদেশ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে এটা নিয়ে সবাই মনে মনে একটু হলেও হিংসা তো করত কিন্তু এমন একটা অশিক্ষিত মেয়ের সাথে বিয়ে হয়ে যেন সাপে বর হল। সবার মজা করার মতো একটা বিষয় পেয়ে গেল। অলরাউন্ডার আরহামকে নিয়ে কোন কথা বলার কোন অবকাশ ছিল না কারও কিন্তু এখন আরহামের বউ হয়ে উঠল সবার আলোচনার বিষয়বস্তু । বন্ধু মহলে উঠল আলোচনা-সমালোচনার ঝড়, কিন্তু আরহামকে এটা নিয়ে সরাসরি কেউ কিছুই বলত না।
সবাই আরহামকে দেখে একটা চাপা হাসি দিত।আরহাম সবই বুঝত কিন্তু আজ সে নির্বাক হয়ে গেছিল। সবার সামনে না পারত কিছু বলতে আর না পারত সইতে। কেউ কেউ তো মুখের উপর বলেই দিত, "তুই এতো এডুকেটেড হয়ে শেষে কিনা বিয়ে করলি এক গাইয়া মেয়েকে। মেয়েটার বয়সও তো কম।বাল্যবিবাহ কেসে ফেসে যাস নি।" "দোস্ত কচি মেয়ে সবার পছন্দ তাই বলে কচি মেয়ে খুজতে গিয়ে তুই এমন গাইয়া মেয়ে তুলে আনবি ভাবি নি। শহরেও কিন্তু কচি মেয়ের অভাব ছিল না।" "আসলে কি বলতো তুই তো একটু বেশি এডুকেটেড তাই তোর বউ হচ্ছে অশিক্ষিত। আসলে ব্যালান্সের একটা বিষয় আছে তো। "
আরহামকে সবার সামনে বেশ লজ্জায় পড়তে হত। কথাগুলো শুনে বুকটা ফেটে গেলেও কারও সামনে কিছু বলার মতো পেত না আরহাম। আর এসব কিছুর জন্য সে দায়ী করত তৃতিকে। আরহাম তো কোন ত্রুটি রাখে নি। আরহাম তো চেয়েছিল তৃতিকে নিজের মতো করে গড়ে নিতে। সে তো মন প্রান দিয়ে পরিশ্রমও করেছিল। কিন্তু তৃতি সে সবসময় তার বীপরিতে গেছে। আর আজ তার হামখেয়ালী পোনার জন্য হয়তো আজ এই অবস্থা।
এই সব কিছু থেকে আরহাম একটা বেশ কঠিন সিধান্ত নিল। সে বাড়ির সবার সামনে জানিয়ে দিল সে তৃতিকে তার বাবার বাড়িতে রেখে আসবে। আর তৃতি যদি এস এস সি পরীক্ষাতে A+ পায় তবেই এই বাড়িতে ফিরে আসতে পারবে নয়তো এই বাড়ির দড়জা তার জন্য চিরকালের জন্য বন্ধ।
আশফাক সাহেব কিছুই বললেন না। তিনি মনে মনে বেশ অনুশোচনাতে ভুগছেন। তিনি মনে মনে ভাবলেন তিনি হয়তো এই বিয়ের সিধান্তটা নিয়ে তার ছেলে আর তৃতি দুজনেরই জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছেন। তার এমন হুট করে নেওয়া সিধান্তটা বইতে গিয়েই হয়তো আজ তাদের এমন অবস্থা। তাই তিনি নিরবে সবটা শুনে উঠে চলে গেলেন। আজ আর তার কিছু বলার মুখ নেয়। না আছে ছেলেকে না বন্ধু রেজওয়ানকে।
তৃতিও দুরে দাড়িয়ে চুপচাপ সবটা শুনল। তারপর নিরবে সে জায়গা ত্যাগ করল। দুই দিনে সে বেশ শান্তভাবেই নিজের সব গোছগাছ করে নিল। নিজের জন্য সে যা এনেছিল তা একটা ব্যাগে ঢুকিয়ে যেমনটা এসেছিল তেমনটা চলেও গেল।
আরহাম নিজে গিয়ে তৃতিকে দিয়ে এল ওর শশুড়বাড়ি। আসার সময় সে তৃতির হাতে একটা ফোন গুজে দিলো। কিন্তু তৃতি সে ফোন নিতে নারাজ। আরহাম এতো বোঝালো এই ফোন দিয়ে সে তৃতির খোজ নিবে। তৃতিরও কথা বলতে ইচ্ছা হলে সে যখন খুশি কল দিতে পারে কিন্তু তৃতি তা নিবে না। মেয়েটা বড্ড জেদী। অবশেষে তৃতি বলল, এতো যদি আমার খবর নেওয়ার ইচ্ছা থাকে তো বাবার ফোন নাম্বার নিয়ে যান। সেখানেই ফোন দিয়েন মাঝে মাঝে। আরহাম আর কথা বাড়াল না, ও ওর শশুড়ের ফোন নাম্বার নিয়ে বেড়িয়ে এলো।
এর পরে কেটে গেছে প্রায় পাঁচ মাস।
এর মাঝে তৃতির সাথে আর কোন কথা হয় নি আরহামের। মেয়েটা কেমন আছে কি করছে কিছুই জানে না আরহাম। আরহাম মাঝে মাঝেই ফোন দেয় ওর শশুড়ের নাম্বারে। সব কথা বলে, কেমন আছে, সবার কি অবস্থা, বাড়ির ছাগলটার কিছুদিন আগে নাকি তিনটা বাচ্চা হয়েছে সেটাও বলেছে। কিন্তু তৃতির কথা জিজ্ঞাসা করলে কৌশলে এড়িয়ে যায় তিনি।
আরহাম বুঝতে পারে তৃতি অভিমান করেছে। হয়তো সেই তার বাবাকে বলেছে তার কথা না বলতে তাই শশুড়আব্বা এমন করেন। আরহামের মন চায় ছুটে চলে যায় তৃতির কাছে। সেখানে গিয়ে তৃতিকো দুটো চড় মেরে বলবে, এই মেয়ে কি হয়েছে তোর? কথা কেন বলিস না আমার সাথে? কিন্তু পারে না। আর কটা দিন পড়েই তৃতির পরীক্ষা। এখন গেলে তৃতি হয়তো আবার পাগলামো শুরু করতে পারে। এতে তৃতির পরীক্ষার বেশ ক্ষতি হতে পারে তাই নিজেকে সংযত রাখে সে। আর তো মাত্র কটা দিন তারপর তৃতিকে গিয়ে নিয়ে আসবে নিজের কাছে। আর কোথাও যেতে দিবে না।
আজ আরহামের অনেক দিনের সপ্ন পুরন হয়েছে। আরহামের অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল সে কোন ভার্সিটির লেকচারার হবে। আজ দেশের একটা সনামধন্য ভার্সিটি থেকে ওর গেস্ট টিচার হিসেবে অফার এসেছে। অন্য একটি শহরে, মাত্র ছয় মাসের জন্য কিন্তু তাতে কি। এই ছয় মাসেই তো ওর সপ্ন পুরন হতে চলেছে। একে একে সব সাফল্য ওর হাতে এসে ধরা দিচ্ছে। আরহাম আজ বেশ খুশি আর এই খুশি ও ভাগ করে নিতে চেয়েছিল তৃতির সাথে। তাই তো ওর শশুড়কে ফোন দিয়ে আজ সরাসরি তৃতিকে চাইলো কিন্তু আজও তার তৃতির সাথে কথা বলা হলো না। আচ্ছা মেয়েটা এতো রাগ করে আছে যে ও কথা বলতে চাওয়া সত্ত্বেও প্রত্যাখ্যান করল।
অবশেষে তৃতিকে ছাড়ায় ও পা বাড়াল ওর নতুন সপ্নের দড়বারে।
চলবে,,,
Writer:- জাকিয়া সুলতানা