দেখে ফেললাম বহুল প্রতীক্ষিত ভারতীয় ওয়েব সিরিজ " দা ফ্যামিলি ম্যান" এর ২য় সিজন। কাল রাত ৯ টার দিকে এমাজন প্রাইমে প্রিমিয়ার হয় সিজনটি। সাথে সাথে বসে দেখে ফেলা।
যারা সিজন ১ এখনো দেখেননি তারা এই পোস্টটি এড়িয়ে যাবেন। কেননা, সিজন ১ এর বড় বড় স্পয়লার থাকবে পুরো পোস্ট জুড়ে।
** Spoiler alert
Series : The family man
language: Hindi, Tamil
imdb : 8.6/10
personal rating : 9/10 ( Season 2)
starring : Manoj bazpayi, Samantha akkineni, Sharib hashmi, priyamani and so on.
কাহিনীর শুরুতে দেখা যায়, আমাদের প্রিয় শ্রীকান্ত তিওয়ারি টাস্ক এর চাকরি ছেড়ে একটি কর্পোরেট কোম্পানিতে চাকরি নেয়। সেখানে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত কাজ থাকে। তাই সে পরিবারকে সময় দিতে পারে আগের চেয়ে বেশি। কিন্তু শ্রীকান্ত টাস্ক ফোরস থেকে ইস্তফা দিলেও শ্রীকান্তের মধ্য থেকে সেই এজেন্ট শ্রীকান্তের ভাব যায়নি। তাই কর্পোরেট চাকরিতে খুব একটা মন বসে না তার। অপরদিকে শ্রীলঙ্কান তামিল রেবেলসের এক উচ্চপদস্ত নেতা সুব্বু ভারতে গা ঢাকা দেয়। এ নিয়ে শ্রীলংকান প্রেসিডেন্ট রুপাতুঙ্গা ভারতীয় প্রধাণমন্ত্রী বাসুর কাছে সাহায্য চায় এবং ভারত যদি সুব্বুকে লংকান সরকারের হাতে হস্তান্তর করে তাহলে উত্তর লংকা বন্দরে চীনের পরিবর্তে ভারতকে নির্মাণ কাজ চালানোর অনুমতি দিবে। বসু তখনই স্পেশাল ফোরস নিযুক্ত করে সুব্বুকে খুজে বের করার জন্য। তামিল টাস্ক বাহিনী সুব্বুর ঠিকানা বের করে কিন্তু সেখানে তাকে ধরতে গিয়ে বিপত্তি বাজে। সেই অপারেশনে জেকে ও ছিল এবং জেকের ফোনে তখন শ্রীকান্ত ফোন দেয়। সব কথা জেনে শ্রীকান্ত সেই হোস্টেজ অবস্থার সলুশন দেয় এবং সুব্বু আত্মসমর্পণ করে। বলে রাখা ভালো, সুব্বু তামিল রেবেল সরকারের প্রধানমন্ত্রী ভাস্করনের ছোট ভাই। সুব্বুকে নিয়ে যখন কোর্টে যাওয়া হচ্ছিল তখনই একটি বোম ব্লাস্ট হয় এবং সুব্বু মারা যায়। এতে ভাস্করণ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেয় এবং হাত মেলায় আইসআই এর মেজর সামিরের সাথে। আর মেজর সামিরের ভারতীয় সৈন্য হলো সাজিদ। সেই সাজিদ যে কিনা দিল্লীতে গ্যাস লিকেজের সাথে জড়িত ছিল। অপরদিকে, তামিলনাড়ুতে তামিল রেবেলস আবার সংঘবদ্ধ হতে থাকে এবং প্রশিক্ষিত গেরিলা ফাইটার রাজি সহ এক টিম বানায় যাতে যোগ দেয় সাজিদ। আইএসআই এবং তামিল রেবেলস এর এই যুগলবন্দীতে পরবর্তী বিপদ কি ? দিল্লীতে মিশন যুলফিকারের প্ল্যান বি এর কি পরিণতি হয়েছিল? শ্রীকান্ত কি আবার টাস্ক ফোরসে জয়েন করবে? সাজিদ কি আবারো নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাকি দিয়ে পালিয়ে যাবে নাকি টাস্ক তাকে ধরতে পারবে? তামিল রেবেলস এর মিশনের শেষ পরিনতি কি ? এসব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে পুরো সিজন জুড়ে।
অভিনয়ের কথা বলতে গেলে প্রথমে বলব রাজি চরিত্রে সামান্থার কথা। ট্রেলারে সামান্থাকে দেখে সিজন ২ দেখার আগ্রহ কয়েকগুন বেড়ে গেছিল। কেননা, সিনেমায় তাকে এমন চরিত্রে এর আগে দেখা যায়নি। আমার মতে, রাজি চরিত্রে সামান্থা খুব ভালো ভূমিকা পালন করেছেন। চরিত্রে অথেন্টিসিটি এনেছেন তিনি। মুখে শান্ত অভিব্যাক্তি কিন্তু চোখে আগুন ঝরিয়েছেন তিনি। মনোজ বাজপেয়ি বরাবরই টপ নচ। আর তিনি তো এখন আমার কাছে মনোজ বাজপেয়ি কম, শ্রীকান্ত তিওয়ারি বেশি। এছাড়া তামিল অভিনেতাদের সংযুক্তি কাস্টিং কে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
সিরিজের মজার দিক গুলো ছিল, শ্রীকান্ত এবং জেকের মধ্যে কথোপকথন, শ্রীকান্তের চটপটে কথা , সারকাজম, অথর্বের মিউজিক, তাদের পারিবারিক রসায়ন।
আর চেইজ এর দৃশ্য গুলো খুবই ইন্টেন্স ছিল। এসব সিন বেশির ভাগ লম্বা লম্বা শট নেয়া হয়েছে। বিজিএম মাথা নষ্ট করার মতো জোস ছিল। বিজিএমে তামিল রক মিউজিক বেশ মানানসই ছিল। আর ভাষার ব্যবহার খুব সূক্ষ্ম ভাবে মানা হয়েছে। হিন্দি মুভিতে দেখা যায় তামিল, বিদেশী যাই হোক তারা হিন্দিতে কথা বলতে থাকে। যেটি খুবই অবাস্তবিক এবং উদ্ভট লাগে। এদিক থেকে " দা ফ্যামিলি ম্যান" ব্যতিক্রম।
তবে সিজন ১ এর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুব একটা গভীরতার সাথে দেয়া হয়নি। বিশেষ করে, করিমের ভুল এনকাউন্টারের জিনিসটির সমাধান খুব একটা ভালো ভাবে দেয়া হয়নি। এমন আরো কিছু জিনিস, যেমন সেদিন লোনাভ্লা তে অরবিন্দ এবং সূচির মধ্যে কি হয়েছিল সেটি নেক্সট সিজনের জন্য রেখে দেয়া হয়েছে।
তবে, সিজন ২ এর শেষের দৃশ্যে নেক্সটি সিজনে কি হবে সেটির একটি বড় হিন্ট দেয়া হয়েছে। ফলে, সিজন ৩ এর জন্য অপেক্ষা শুরু হয়ে গেল।
আমার মতে, সিজন ২ এর চেয়ে সিজন ১ বেশি মজার ছিল। সিজন ২ যে খারাপ সেটি বলছি না। সিজন ২ ও ফাটাফাটি ছিল। কিন্তু তুলনা করলে সিজন ১ বেস্ট। এখুনি দেখে ফেলুন সিরিজটি। এমন সিরিজ ফেলে রাখা অনুচিত।
Writer:- Unknown