> ভয়ঙ্কর ছায়ামূর্তি | True Story | সত্যিকার গল্প | Bangla True Story | Boipoka365
-->

ভয়ঙ্কর ছায়ামূর্তি | True Story | সত্যিকার গল্প | Bangla True Story | Boipoka365

তখন আমি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি। সাল ২০০৮। আমার গ্রামের নাম বেলতা। বনগাঁ জংশন থেকে ৩০ মিনিটের দূরত্ব আমার গ্রাম। আমাদের গ্রামটি এখন কংক্রিটের ছোঁয়ায় আধুনিক রূপ নিলেও তখন কিন্তু মাটির বাড়িতে ঘেরা ছিল আমাদের এই ছোট্ট গ্রামটি।

আমার পরিবারে সদস্য বলতে, আমার মা বাবা আর দিদি। এই রকমই ডিসেম্বর মাসের কোন এক রাত্রের ঘটনা।

বাকি সব দিনের মতই সে দিনটাও ছিল খুব স্বাভাবিক, রাতের খাওয়া শেষ করে ঘরে এলাম,ঘড়িতে সময় তখন ১১টা বাজে। কিছুদিন পরেই ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে তাই আমি আর দিদি খুব মন দিয়ে পড়াশুনা করছিলাম। আর আমার মা আমাদের কাছেই বসে বসে কিছু একটা সেলাই করছিল, তারপর মা বললো তোরা পড়াশুনা কর আমি একটু ঘুমালাম। তারপর বললো তোদের পড়াশুনা শেষ হলে বাইরে বাথরুম করতে যাওয়ার সময় আমাকে ডাকবি, আমরা বললাম ঠিক আছে। তারপর মা ঘুমালো আমাদের কাছেই।
আমরাও খুব মন দিয়ে পড়াশুনা করছিলাম হঠাৎ আবারও চোখ গেলো ঘড়ির দিকে আর দেখলাম রাত তখন ১ টা বাজে।।

তারপর আমি দিদি কে বললাম আর বেশি রাত না করে এখন ঘুমিয়ে পড়ি,আবার ভোরে উঠে পড়াশুনা করবো। দিদিও আমার কথা তে সায় দিল। তারপর আমরা মা কে ডাকলাম, বাইরে যাবো বলে।

আর তারপর যেটা ঘটলো,সেটা কিছুটা এমন হলো..

আমাদের বাড়ির ঠিক পিছনে আমার মেজ কাকার বাড়ি। তার বাড়ির উঠানে একটি বাল্ব জ্বালানো থাকে, আর সেই আলোর কিছুটা ছটাক আমাদের বাড়ির উঠানের উপর এসে পড়তো, হঠাৎ সে আলোর দিকে তাঁকাতেই আমার চোখে পরলো, একটি লম্বা ছায়া ক্রমশই লম্বা হচ্ছে....। আমি দেখার পর প্রচন্ড ভয় পেয়ে  মা ও দিদি কে ডাকলাম। তারাও সেই জিনিসটাই দেখল যেটা আমি দেখলাম, প্রচন্ড ভয় পেয়ে চিৎকার করে আমাদের ঘরের বারান্দাতে ঠেলে উঠলাম তিনজনেই ।ততক্ষণে আমার বাবাও ঘুম থেকে উঠে পরেছে। তারপর আমি হঠাৎ করে বারান্দার আড়াল থেকে ছায়াটাকে আরও একবার দেখার জন্য উঁকি দেওয়ার সাথে সাথে সামনে এসে হাজির হলো একটি সাদা জোব্বা পরা এক ব্যক্তি।

মুখে লম্বা চাপ দাড়ি, মাথায় সাদা গোল টুপি, এবং সাদা দুটো চোখ এবং কিছুটা দাঁত ছাড়া আর কিছুই বোঝা ছিল না। হঠাৎ করে হাতের কাছে একটি টর্চ লাইট পেয়ে মুখে মারতে দেখতে পেলাম আমাদের গ্রামের বাসিন্দা, নাম সাধু। বেশ কিছুদিন হয়েছিল তার মাথা খারাপ হয়ে গেছিল, সেই রাত-বিরাতে ওইভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ওনাকে দেখেই প্রচন্ড ভয় পেলাম আমি। আমার মা ও দিদি খুব ভয় পেয়ে.. ওনার উপর প্রচণ্ড চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিলো, আর উনি চুপচাপ সে কথা গুলো শুনে  আমাদের মুখের দিকে তাকালেন, এবং মুখ নিচু করে নিজের বাড়ির দিকে রওনা দিলেন।

আর ঠিক তখনই আমাদের গ্রামের মসজিদের থেকে মাইকে বলল এই কিছুক্ষণ আগে আমাদের গ্রামের বাসিন্দা সাধু মন্ডল ইন্তেকাল হয়েছে (পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছে)।

হঠাৎ করে চোখের সামনে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল । আমি মা দিদি বাবা সবাই একটা কথাই বলে উঠলাম, সাধু বুড়ো যদি একটু আগে মারা গিয়ে থাকে তাহলে উনি কে ছিলেন?

আর আমাদেরকেই কেন দেখা দিয়ে গেলেন?
ওনার মুখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল উনি কিছু বলতে চাইছিলেন?

ওনার চোখে তখনো জল ছল ছল করছে।
একবারও শোনা হয়নি ওনার কথা।

পরেরদিন ওনাকে কবর দিয়ে এলাম ওনাদের কবরস্থানে।

বিঃদ্রঃ- ভুলতে না পারা সেই ঘটনাই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।






Writer:- নাসির বিশ্বাস
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner