মাহিঃ আর একটু দেরি হলে এই পাগলটার ভালোবাসা, পাগলামী রোমান্স গুলো হারিয়ে ফেলতাম। তারপর আমিও ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ওর ডাকেই আমার ঘুম ভাঙ্গলো।
আশফিঃ এই তুমি এখনও এতো ঘুমাচ্ছো কি করে। যাও উঠো। আমার সেবাযত্ন করা শুরু করো। নার্স দুটোকে বিদায় করে দিয়েছি।
মাহিঃ কি?
আশফিঃ কি মানে?
মাহিঃ না না কিছুনা। অনেক ভালো করেছো। আমি থাকতে অন্য কেউ কেনো তোমার সেবা করবে? তুমি বসো আমি এক্ষণি কফি নিয়াসছি।
আশফিঃ এতো তাড়াহুড়ো করতে হবেনা। আগে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন,যান।
মাহিঃ হুম। ফ্রেশ হয়ে ওকে কফি দিয়ে রান্না করতে চলে গেলাম। দেখলাম মা রান্না করছে।
-মা তুমি আমাকে দাও আমি রান্না করছি।
মাঃ না তার কোনো প্রয়োজন নেই। রান্না অলরেডি শেষ। তুই ওর কাছে যা গিয়ে দেখ ওর কি লাগবে না লাগবে। ওকে গিয়ে দেখাশোনা কর।
মাহিঃ হুম যাচ্ছি। মাকে অনেক খুশি খুশি লাগছে।
এখন তো আমার সবসময় শুধু ওর কাছেই থাকতে ইচ্ছা করে। আগে যার থেকে শুধু পালিয়ে বেড়াতাম। এখন তার মুখটা দেখার জন্য মনটা খালি খালি উড়ু উড়ু করে। এভাবেই সবসময় ওর কাছাকাছি থাকি। এখন আমিই ওকে দেখাশোনা করি ওর খেয়াল রাখি। আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ হয়ে গেছে ও কিন্তু মাঝে মাঝে শরীরে জ্বর আসে। আর ওর ঐ দুষ্টু মিষ্টি আদর নেওয়ার জন্য নানা রকম বাহানায় ওর কাছে যাই।
একদিন সকালবেলা...........
আশফিঃ এই মেয়ে মানুষ গুলো এত পরিমাণ স্বার্থপর হয় এদের সাথে না থাকলে সেটা জানা সম্ভব হতোনা।
(নিউজপেপাড় পড়ছিল আর কথাগুলো বলছিল)
মাহিঃ তার মানে কি? তুমি কতগুলো মেয়ের সাথে থেকেছো। আর স্বার্থপরের কি দেখলে?
আশফিঃ না আমি একজন মেয়ের কথায় বলছি আর কি যে আমার সাথে থাকে।
মাহিঃ মানে কি আমি স্বার্থপর? স্বার্থপর হওয়ার মত কি করলাম আমি তোমার সাথে?
আশফিঃ স্বার্থপর ই তো। সবসময় শুধু এক এক রকম বাহানায় আমার কাছে আসো আমার আদর নেওয়ার জন্য। নিজে তো কখনও করোনা।
মাহিঃ যাহ্ ও বুঝতে পেরে গেলো!
-এই শোনো আমি যদি দুষ্টুমি শুরু করিনা তাহলে তুমি একদম অতিষ্ট হয়ে যাবে।
আশফিঃ তার জন্য আমি সর্বদাই প্রস্তুত।
মাহিঃ ঠিক বলছো তো? তাহলে ঠিক আছে, এখন থেকে আমি তাই তাই করবো যা যা তুমি আমার সাথে করতে বরং তার থেকে আরও বেশি কিছু করবো। মানে এখন থেকে তুমি অত্যাচারীত হবে।
আশফিঃ আহ্। (বুকের বাম পাশে হাত রেখে) এত বড় একটা কথা আমার heart টা নিতে পারেনি। খুব জোড়ে ধাক্কা খেলো।
মাহিঃ ইয়ারকি হচ্ছে। আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছেনা তাইনা?
আশফিঃ মাথা নাড়িয়ে না বোধক উত্তর বোঝালো।
মাহিঃ ঠিক আছে বিশ্বাস করাচ্ছি। ওর গাল দুটো ধরে ওর ঠোঁটে কিস করে বসলাম। ও যতুটুকু সময় নিত তার থেকে বেশি সময় আমি নিলাম।
আশফিঃ ও এভাবে আমাকে চুমু দিয়ে বসবে সেটা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমার চোখ দুটো পুরো রসোগোল্লার মত হয়ে গেলো। ও যেভাবে কিস করছে তাতে আমার নাক টাও আটকে গেছে। এদিকে আমার শ্বাষ বন্ধ হয়ে আসছে তাও ওর ছাড়ার কোনো খবর নেই।
মাহিঃ অনেক্ষন ওকে কিস করে তারপর ছাড়লাম।
- কি? হয়েছে বিশ্বাস। ও পুরো হাপিয়ে শুথু মাথা ঝাকালো। তোমার রেকর্ড আমি ভেঙ্গে দিয়েছি।
আশফিঃ হুম। কতক্ষন করেছো?
মাহিঃ উমমমম ৭/৮ মিনিট তো হবেই।
আশফিঃ হা my god!
মাহিঃ হুম। এখন থেকে এগুলোর জন্য always ready থাকবে। গট ইট? তারপর রুম থেকে বেরিয়ে এলাম
আশফিঃ Thank god. তাহলে পেরেছি আমি এই নিরামিষ টাকে আমিষে পরিণত করতে।
মাহিঃ আজকে বিকালে ও বাগানে দাড়িয়ে গার্ডদের কি যেনো বোঝাচ্ছিল। আমি ওর পাশে গিয়ে দাড়ালাম। ওর দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছি। কথা বলার মাঝে ও আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জানতে চাইলো কি বলতে এসেছি আমি। আমি ওর দিকে তাকিয়ে ঠোঁটটা কিস এর স্টাইল করে কিস দেখালাম। এটা দেখে ও তো লজ্জা পেয়েছেই সামনের গার্ডগুলো ও লজ্জা পেয়ে মুখ চিপে হাসছিল। তারপর ও চোখ ফিরিয়ে নিয়ে ওদের সাথে কথা বলা শুরু করলো। কিন্তু কথা বলতে পারছিলনা কথা বলার মাঝে বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছিল আর কথা থেমে যাচ্ছিল। এটার কারণ হলো আমি তখন ওর দিকে এক নজরে তাকিয়েই আছি।at last কথা বলতে না পেরে গার্ডগুলোকে চলে যেতে বললো পরে কথা বলবে বলে।
আশফিঃ মাহি তুমি কি করছিলে ওদের সামনে?
মাহিঃ কৈ কি করছিলাম আমি তো তোমার সাথে romance করবো বলে আসলাম। তাই বলে এখানে ওদের সামনে?
মাহি তুমি ঠিক আছো তো? ওর কপালে হাত দিয়ে বললাম
মাহিঃ ধ্যাত।
আশফিঃ ও রেগে চলে গেলো।
মাহিঃ কিছুটা দূরে গিয়ে পেছনে তাকালাম,দেখলাম দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসছে। দেখে আরো রাগ হয়ে গেলো তাই তাই হনহন করে হেঁটে বাসার ভেতর চলে আসলাম। রাতে সবাই একসাথে ডিনার করে মায়ের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে রুমে এলাম। ও তখন শুয়ে পড়েছে। ও যেদিকে মুখ ঘুরে শুয়ে আছে সেদিকে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। তারপর ওর হাতটা টেনে আমার পেটের ওপর রাখলাম। ও তখন চোখ খুলে অবাক হয়ে মাথা উঁচু করে তাকালো। আমি পেছন ফেরা অবস্থাই বললাম। এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই। তারপর ও আবার মাথা বালিশে রেখে শুয়ে পড়লো। কিন্তু এটা কি হলো? ওর ভেতর একটুও রোমান্স কাজ করলোনা?
ব্যাপারটা কেমন কেমন যেনো হয়ে যাচ্ছে। ok. দেখছি কতক্ষন নিজেকে কনট্রোল করতে পারো। আমি বেশি ভালোবাসছি বলে তুমি আনরোমান্টিক হয়ে যাবে এটা তো হতে দেওয়া যায়না। রাত ২:০০ টা বাজে,
-আশফি? এই আশফি? একটু উঠে দেখোনা পিঠের মাঝে কিছু একটা বাঁধছে মনে হচ্ছে। ঘুমাতে পারছিনা। কি হলো?? দেখোনা।
আশফিঃ হুমম (ঘুম চোখে। কি হলো এতো রাতে তোমার? কি হয়েছে পিঠে।ওভাবে পিঠ চুলকাচ্ছো কেনো?
মাহিঃ চুলকাতে পারছি কৈ? পিঠের মাঝে কিছু একটা বাঁধছে একটু দেখো।
আশফিঃ হুম। দেখছি। কিন্তু কিভাবে দেখবো নাইটির ওপরে। তাহলে তো নাইটি টা খুলতে হবে।
মাহিঃ খুলতে হবে তো খোলো।
আশফিঃ কি ব্যাপার? ও এতো ইজিলি নিলো নাইটি খোলার বিষয় টা?? একটু বেশিই অদ্ভুত লাগছে ব্যাপারটা। তার মানে ও কি ইচ্ছে করে করছে শুধু আমাকে exited করার জন্য?? হ্যা, তাই হবে।
মাহিঃ কি হলো? কি ভাবছো বসে। খুলে দেখো কি ঢুকলো?
আশফিঃ হুম দেখছি। তারপর আমি একদম সোজা ওর নাইটির পেছন দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিলাম ওর পিঠের মাঝে।
মাহিঃ এটা কি করলো ও? নাইটি না খুলে পেছন দিক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিল?
আশফিঃ তারপর একটা চেইন বের করে ওর সামনে ধরলাম।
- গলা থেকে চেইন টা ছিড়ে পিঠের মাঝে ঢুকেছিল। তাই বাঁধছিল।
ও আমার ওপর রাগে কটমট করছে। তারপর চেইন টা আমার হাত থেকে থাবা দিয়ে নিয়ে ঠাস করে শুয়ে পড়লো। আমার তখন প্রচুর হাসি পাচ্ছিল।হাহাহা এখন দেখো কেমন লাগে?(মনে মনে)
তারপর আমিও শুয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম ভেঙ্গে চোখ খুলতেই যা দেখলাম। আর একটু হলেই মাহি বলে চিৎকার দিতে যাচ্ছিলাম। তাড়াতাড়ি আমি ওর গায়ে কম্বলটা দিয়ে দিলাম। না হলে যে কেউ ঘরে ঢুকে ওর এই অবস্থা দেখে ফেলতো। কারণ কাল রাতে ও দরজা লক করে ঘুমাইনি।তারপর আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে ফোনে গেম খেলছিলাম।
মাহিঃ এই? একটু দেখোনা আমার নাইটি টা কোথায়? একটু খুঁজে দাও। (চোখ বন্ধ করেই)
আশফিঃ আমি ওর ডাক শুনে ওর কাছে গিয়ে বললাম,
-এই তুমি কাল রাতে এভাবে নাইটি খুলে ঘুমিয়েছো কেনো? (অবশ্য নিচে একটা ছোটো আস্তর পরা ছিল) যদি কেউ রুমে ঢুকে দেখে ফেলতো?
মাহিঃ আরে কাল রাতে এসিটা অফ ছিল আর অন করিনি তোমার শরীরে জ্বর ছিল বলে। এদিকে গরমে পুরো অস্থির হয়ে পড়ছিলাম। তাই খুলে ঘুমিয়েছিলাম।
আশফিঃ গরমে? নাকি আমাকে exited করার জন্য? কথাটা শুনে ও এবার পুরো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।
মাহিঃ যে জন্যই করি তাতে তোমার কি? তুমি কি exited হয়েছো? হউনি তো? তাহলে এতো কথা বলছো কেনো? যাও আমার নাইটি টা খুঁজে দাও।
আশফিঃ আমি বিছানায় চারপাশ খুঁজলাম পেলামনা। তারপর ওর গা থেকে কম্বল টা ফেলে দিলাম। কম্বলের নিচে পরে ছিল। ওকে ধরিয়ে দিলাম। ও সেটা পরে আমার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে উঠে চলে গেলো। এবারও নিজের হাসিটাকে কন্ট্রোল করলাম।
মাহিঃ রুমে এসে দেখলাম ও নিচে থেকে কিছু একটা তুলতে যাচ্ছে কিন্তু ওর অনেক কষ্ট হচ্ছে তাই তাড়াতাড়ি গিয়ে তুলে দিলাম।রেজার ছিল।
- তুমি কি shave করবে? দাও আমি করে দিচ্ছি।
আশফিঃ কাউকে কোনোদিন করে দিয়েছো?
মাহিঃ না। আজকেই 1st time করবো।
আশফিঃ তাহলে আর দরকার নেই। 1st time যেহেতু তাই করতে পারবেনা।
মাহিঃ 1st time তো কি হয়েছে? ট্রাই তো করেই দেখতে পারি।
আশফিঃ থাক। কোনো দরকার নেই। না হলে আমার ফেস এর ১২টা বেজে যাবে। তুমি দেখো আজকে কিভাবে করতে হয় তারপর পরে ট্রাই করো। আর আমাকে অফিস যেতে হবে। তাই দ্রুত করতে হবে।
মাহিঃ অফিস??? হ্যা অফিস তো যেতে হবে। ঠিক আছে আমিও যাবো।
আশফিঃ তুমি গিয়ে আর কি করবে। যেতে হবে না।
মাহিঃ না। আমি যাবো। তবে তোমার পি.এ. হয়ে না। তোমার এম.ডি. হয়ে যাবো। আর তুমি আমার পি.এ. হবে।
আশফিঃ আর ইউ ক্রেজি?
মাহিঃ I'm not crazy. যেটা বলছি সেটাই করবে।
আশফিঃ ok...
মাহিঃ তারপর আমরা রেডি হয়ে অফিসে চলে এলাম। সবাই আমাদের মর্নিং জানালো। কেউ কেউ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল। আমি সরাসরি ওর চেম্বারে গেলাম আশফি ও ঢুকলো।
আশফিঃ কি ম্যাডাম আপনি কি আমার চেয়ারেই বসবেন?
মাহিঃ Of course dear.
আশফিঃ ঠিক আছে বসো। আর ওখানে কিছু প্রজেক্টের ফাইল আছে ওগুলো আমাকে দাও।
মাহিঃ কেনো? ওগুলো আমি দেখবো। এখন যেহেতু আমি এম.ডি. তাই সেগুলো দেখার দায়িত্ব ও আমার। তুমি যাও আমার চেম্বারে গিয়ে আমার কাজ গুলো দেখো।
আশফিঃ আরে...........আচ্ছা ঠিক আছে। যদি আমার ল্যাপটপ টা দিতেন তাহলে একটু ভালো হতো।
মাহিঃ ওকে। নাও। তারপর ও ল্যাপটপ টা নিয়ে আমার চেম্বারে চলে গেলো। বসে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। ওর চোখ যখন আমার দিকে পরলো তখন আমি ওকে চোখ মেরে দিলাম। ও একটা মুচকি হাসি দিয়ে কাজ শুরু করলো। এর মধ্যে ম্যানেজার সাহেব চেম্বারে আসলো। আমাকে স্যার ভেবে কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলো আমাকে দেখে। (অবাক হয়ে)
- মাহি তুমি? না মানে ম্যাম স্যার কোথায়?
মাহিঃ আপনি মাহি বলেই ডাকবেন সমস্যা নেই। এখন বলুন কি প্রয়োজন।
- আসলে নতুন যে প্রজেক্ট এর কাজ শুরু হয়েছে সেগুলো নিয়ে কিছু কথা বলার ছিল।
মাহিঃ আমাকে দেখান।
- এই যে এগুলো।
মাহিঃ ও মাই গড এই প্রজেক্টের বিষয়ে তো আমি কিছুই জানিনা। আমি তখন ছিলাম না। ওকে এখানে আসতে বলি। ফোন করে ওকে আসতে বললাম। ও চেম্বারে আসলো। ওরা দুজন সামনের চেয়ারে বসে কথা বলছিল। আর আমি শুধু ওকেই দেখছি। কথা বলা শেষ করে ম্যানেজার চলে গেলো। আশফি ও বেরিয়ে যাচ্ছিল।
মাহিঃ এই কোথায় যাও। আমি তোমাকে যেতে বলেছি?
আশফিঃ ow...sorry mam. বলুন কি প্রয়োজন?
মাহিঃ হুম। আমার কাছে এসো।তারপর ও কাছে এসে দাড়ালো।
-এই হট কফিটা খাও। এটা তোমাকে ভেবে দিয়ে গেছে।
আশফিঃ ওকে। তারপর কফিটা খেলাম।
মাহিঃ এখন তোমার হট লিপে আমাকে একটা হট কিস করো। ও নিচু হয়ে আমাকে কিস করার জন্য এগিয়ে এলো।
-উহুম এভাবে নয়। ওয়েট।
আমি চেয়ার থেকে উঠে টেবিলের ওপর পা নামিয়ে দিয়ে বসলাম। তারপর ওর স্যুট টেনে ধরে ওকে কাছে নিয়েলাম। হুম এখন করো।
আশফিঃ ওর এসব দেখে আমি সত্যিই exited হয়ে যাচ্ছিলাম।ওর কাছে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে কিস করছিলাম।এমন সময় মনে হলো দরজায় নক পরলো। তাড়াতাড়ি ওকে ছেড়ে দিয়ে ওকে নিচে নামালাম। কিন্তু দুজনেই অনেকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় দাড়িয়ে ছিলাম। আমি ভেতরে আসতে বললাম তাকে। নীলা এসেছে। কিন্তু নীলা ওর দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো?
আমি ওর মুখের দিকে তাকালাম। দেখলাম ওর ঠোঁটের চারপাশে ভিজে হয়ে আছে। আমি যে ওকে কিস করেছি সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আর সে জন্যই নীলা ওভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মাহিঃ আরে নীলা কেমন আছো? এসো বসো।
নীলাঃ হ্যা ভালো। তুমি কেমন আছো? স্যার আপনি কেমন আছেন?
আশফিঃ হুম। খুবই ভালো। ও গড এই মেয়েটা কি বুঝতে পারছেনা ওর ঠোঁটটা ভিজে হয়ে আছে। ঠোঁটটা না মুছেই ওর সাথে বকবক করছে। কিভাবে বলি? আমি ওর একটু কাছে গিয়ে নীলার দিকে তাকিয়ে ওকে আস্তে করে বললাম,
-মাহি ঠোঁটটা মুছো।
মাহিঃ কি মুছবো?(জোড়ে বলে উঠলো)
আশফিঃ তারপর ওর দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে ইশারায় বোঝালাম। ও তাড়াতাড়ি করে ঠোঁট মুছলো। মেয়েটা আসলেই একটা গাধা।
নীলাঃ স্যার এই ফাইল গুলো আপনাকে দেওয়ার ছিল।
আশফিঃ হুম রেখে যাও। নীলা চলে গেলো। তারপর ওর সাথে কথা শুরু করলাম।
-তুমি কি একটুও বুঝতে পারছিলেনা? ও কি ভাবলো বলো তো?
মাহিঃ ভাবুক। হাজবেন্ড ওয়াইফ হতেই পারে। এ্যাহ নিজে যেনো কতো ভাবতো। কি হয়েছে? ওভাবে তাকিয়ে কি দেখছো?
আশফিঃ দেখছি আমার নতুন মাহি কে।
মাহিঃ হুম দেখো ভালো করে দেখো। সামনে আরও অনেক কিছু দেখতে পাবে।
আশফিঃ হুম??? তাই?
মাহিঃ হুম তাই।
আশফিঃ ওর সাথে দুষ্টুমি ফাজলামি করেই সময় কাটছিল। কখনও আমার কোলে বসে নিজেই কিস করছে আদর করে দিচ্ছে, আবার কখনো বিভিন্নরকম কথা বার্তা বলে হাসি ঠাট্টা করছে। আর আমি শুধু আমার মাহিকেই দেখছিলাম। এখন ওর হাসিটাই যেনো আমাকে সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়ে নতুন করে বাঁচিয়ে তুলছে। এই হাসিটা না থাকলে আশফির জীবন টা থেমে যাবে।
-মাহি lunch এর টাইম হয়ে গেছে চলো বাইরে থেকে lunch করে আসি। আজকে তো আর lunch নিয়ে আসিনি।
মাহিঃ হ্যা ঠিক আছে চলো। আমরা lunch করার জন্য একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। lunch শেষে আমাকে নিয়ে কিছুক্ষণ ও গাড়িতে ঘুরলো।
আশফিঃ মাহি চলো অনেক সময় হয়ে গেছে অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় ফিরতে হবে।
মাহিঃ ওকে। চলো। তারপর অফিসে গিয়ে সব কাজ শেষ করে বাসায় ফিরলাম।
সন্ধ্যার পর
আশফিঃ আচ্ছা মামনি তুমি দেখতে এতো সুন্দর কিন্তু তোমার মেয়েটা এমন দেখতে হয়েছে কেনো?
মামনিঃ কেমন দেখতে? ও তো দেখতে আমার থেকেও সুন্দর হয়েছে একদম ওর বাবার মত। ওর বাবা তো দেখতে অনেক সুন্দর ছিল।
মাহিঃ মা! তুমি আবার ঐ লোকটার কথা বলছো? আর আমি কোনোদিও ওনার মত দেখতে না। ওনার মত নিকৃষ্ট ব্যক্তির সাথে আমার কোনো মিল থাকতে পারেনা।
আশফিঃ মাহি! তুমি কার সম্পর্কে কি বলছো? উনি তোমার বাবা হন। আর তুমি এমন ধরনের ব্যবহার কবে থেকে শিখলে?
মাহিঃ আশফি তুমি জানো না ঐ লোক টার জন্য আজও আমার মা চোখের পানি ফেলছে। পুরো জীবন টা শেষ করে দিয়েছে মায়ের।
আশফিঃ চুপ করো তুমি। তুমি কতটুকু জানো তার সম্পর্কে? আমি যা জানি তুমি তার ১ ভাগ ও জানোনা।
আশফিঃ চুপ করো তুমি। তুমি কতটুকু জানো তার সম্পর্কে? আমি যা জানি তুমি তার ১ ভাগ ও জানোনা।
মাহিঃ কি বলছো তুমি এসব আশফি??
আশফিঃ আমি এখন যা বলবো তা তুমি শুনলে তোমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাবে।
আমার এই কথাটা শুনে মামনি ও অবাক হয়ে তাকালো। তার চোখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে অনেক প্রশ্ন করতে চাই আমাকে। তাই আমি বলা শুরু করলাম।
- হ্যা এটা একদম সত্য যে তোমার বাবা তার অফিসের এক প্রবাসী মহিলা কর্মকর্তার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যায় এবং তাকে বিয়ে ও করে। আর তা জানার পর আমার বাবা তোমার বাবার সাথে সব হিসাব নিকাশ বুঝিয়ে দিয়ে তাকে বিজনেস থেকে বের করে দেয়। তারপর তোমার বাবা একাই বিজনেস শুরু করে। তবে তোমার আর মামনির সাথে কোনো যোগাযোগ রাখেনি। একরকম আমার বাবা তোমার সাথে ওনাকে যোগাযোগ করতে দেইনি। সেই থেকে আমার বাবাই তোমাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নেয়। এদিকে মামনির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। সে বিশ্বাস করতে পারছিলনা তোমার বাবা তাকে এভাবে কোনোদিন ঠকাতে পারে। অনেক ভেঙ্গে পড়েছিল মামনি। তবে তোমার বাবাও যে খুব ভালো ছিল সেটা নয়। সে তার ভুল বুঝতে পেরেছিল যখন সে জানতে পারলো ঐ মহিলার আগেও একজন স্বামি আছে। আর সে ছিল আমাদের কোম্পানির অর্থ্যাৎ তোমার আর আমার বাবার কোম্পানির একজন সাধারণ কর্মকর্তা(জাপানিজ)। আর ওরা প্ল্যান করেই তোমার বাবাকে ওদের জালে ফাঁসিয়েছিল শুধুমাত্র ওনার প্রপাটি নেওয়ার জন্য। আর এগুলো জানার পর উনি অনেক চেষ্টা করেছিল তোমাদের কাছে ফিরে আসার জন্য। কিন্তু ওরা ওনাকে আসতে দেইনি।কারণ তোমাকে আর মামনি কে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। তোমার বাবা কে অনেক টর্চার করেছিল ওরা।শুধুমাত্র প্রপাটি তাদের নামে লিখে দেওয়া জন্য কিন্তু সেটা করেনি বলে তাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। একদিন বাবা প্ল্যান করেছিল যে আমার জন্মদিনে বাইরে কোথাও ঘুরে আসবে। আমিও অনেক জেদ ধরেছিলাম বাইরে( জাপানের বাইরে) ঘুরতে যাওয়ার জন্য। বাবা ভেবেছিল এতে মামনির মন টাও একটু ভালো হবে। মামনি কে যেতে বলেছিল কিন্তু মামনি যেতে রাজি হইনি। সেদিন তোমাকে নিয়ে যেতে বলেছিল শুধু। কিন্তু তোমাকে বাবা নেইনি কারণ মামনি সারাদিন ঘরে বন্দি হয়ে থাকতো তার ওপর তোমাকে নিয়ে গেলে আরও একা হয়ে যাবে তাই তোমাকে রেখে গেছিল। আমরা যখন আমাদের গন্তব্যে পৌঁছালাম। তার কিছুক্ষণ পর বাবার ফোনে একটা কল আসলো। কলটা করেছিল তোমার বাবা। সেদিন বাবাকে এই কথাগুলো বলেছিল যা সে জানতে পারে ওদের সম্পর্কে।তোমার বাবা ওদের গোপনে তার সব প্রপাটি যা কিছু ছিল তোমার নামে লিখে সেই কাগজ গুলো একটা ব্যাংকের লকারে রেখে দেয়। আর ওরা সেটা জানতে পারে যে তার সব সম্পত্তি সে তোমার নামে লিখে দিয়েছে। তাই ওরা তোমাদের খুন করার পরিকল্পনা করে। যে কোনো সময় তোমাদের ওপর ওরা এ্যাটাক করতে পারে সেটাই বাবাকে জানায়। আর এটাও বলে দেয় যে ঐ কাগজ গুলো কোন ব্যাংকে আছে। বাবা সেদিনই তোমাদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করে। আমাদের ওখানে রেখেই বাবা চলে যায় জাপান। পৌছাতে প্রায় ২ দিন সময় লেগে গেছিল। বাবা ভাবছিল ওখানে গিয়ে তোমাদের সে দেখতে পাবে তো? বাবা রাতে গিয়ে পৌঁছাই। বাইরে থেকেই বাবা শুনতে পাই ভেতরে অনেক গুলির শব্দ হচ্ছে। বাবা পেছন দিকের সিড়ি দিয়ে উঠে রুমে ভেতর ঢুকে। মামনি তখন তোমাকে নিয়ে বাথরুমে লুকিয়ে ছিল। সেদিন রাতে অনেক কষ্টে ওদের মোকাবেলা করে তোমাদের কে নিয়ে বেরিয়ে আসে। কিন্তু সব থেকে কষ্টের বিষয় কি জানো মাহি? ঐ দিন রাতেই তোমার বাবাকে ওরা মেরে ফেলে।
মাঃ অভি??(মাহির বাবা)
(অভি বলে চিৎকার করে সোফায় বসে পড়ে)
আশফিঃ মামনি আমি এই কথাগুলো কোনোদিন বলতে চাইনি। কারণ আমি জানি তুমি এখনো ওনাকে খুব ভালোবাসো। শুধুমাত্র মাহিকে ভুল ধারণা থেকে বের করার জন্য আমি বলতে বাদ্ধ হয়েছি।বাবা ও আমাকে বলতে নিষেধ করেছিল।
আমি মাহির দিকে তাকালাম। ওর চোখ দিয়ে অজস্র ধারায় পানি পড়ছে। একদম পুতুলের মত দাড়িয়ে আছে। আমি ওর কাছে গেলাম। ওকে আজকে সব জানতে হবে।
-মাহি তোমাকে অনেক শক্ত হতে হবে। সামনে যে অনেক বিপদ ওত পেতে আছে। সেগুলো তোমাকে মোকাবেলা করতে হবে।
মাহিঃ আশফি আমি তাকে ঘৃণা করলেও কোনোদিনও তার মৃত্যু কামনা করিনি।
আশফিঃ আমি জানি মাহি। তুমি নিজেকে সামলাও। মামনির বেঁচে থাকার একমাত্র উৎস তুমি। তোমাকে ভেঙ্গে পড়লে হবেনা। কারণ ওরা থেমে নেই। তোমাকে মারার জন্য ওরা এখানে লোক পাঠিয়েছে। ঐ মহিলার স্বামি আগে থেকেই মাফিয়া দলের সাথে যুক্ত ছিল। এখন সে ঐ দলের leader. তোমাকে খুন করতে পারলে ঐ প্রপাটি ওরা এমনিতেই পেয়ে যাবে। কারণ ওদের একটা ছেলে আছে। সেখানে তোমার বাবাকেই ওর বাবা বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
মাঃ আশফি?
আশফিঃ বলো মামনি?
মাঃ আমি একবার আশরাফ ভাইয়ের সাথে কথা বলতে চাই। তার কাছ থেকে আমি শুনতে চাই।
আশফিঃ মামনি আমি জানি তোমার বিশ্বাস হচ্ছেনা। কিন্তু আমি কি করে তোমাকে বিশ্বাস করাবো? বাবা মা কেউ ই যে বেঁচে নেই।(কেঁদে বলছিল)
এটা শোনার পর মামনি আরও একবার চমকে উঠলো।
মাঃ কি বলছিস তুই এসব?
আশফিঃ হ্যা। ওরা বাঁচতে দেইনি। ২ বছর আগের কথা। ওরা জাল পাওয়ার অফ এটোনির উইল বানিয়ে মাহির প্রপাটি ভোগ করছিল। বাবা সেটা জানতে পেরে আইনি ব্যবস্থা নেই। আর ওরা এটাও জেনে যাই যে মাহির প্রপাটির সমস্ত উইল বাবার কাছে। বাবাকে অনেক ভাবে থ্রেট করে ওগুলো তাদের দিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু বাবা দেইনি। বাবা রাজি না হওয়াই বাবাকে মেরে ফেলার প্ল্যান করে। কার এক্সিডেন্টের মাধ্যমে মারার চেষ্টা করে। ঐ accident স্পটেই মা মারা যায় বাবাকে তাড়াতাড়ি hospital নিয়ে যায়। Hospital এ অনেক গার্ডের ব্যবস্থা করি। কিছুদিন পর বাবার sense ফিরে। বাবা আমাকে ডেকে অনেক কিছু বলে যার কিছুই আমি জানতাম না। বাবা এভাবে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছিল যার জন্য অসুস্থ পরছিল। আমি সেদিন রাতে বাবাকে থামিয়ে দিয়ে রেস্ট নিতে বলি পরে সব কথা শুনবো বলে। কিন্তু ঐ দিন ই যে বাবার শেষ রাত ছিল সেটা আমি জানতামনা। ওরা Doctor কে টাকা দিয়ে বাবাকে মারতে পাঠায় তার আগে এটা জানতে চাই ঐ উইল গুলো কোথায়। বাবা বলেনি তখনই বাবাকে বিষের ইনজেকশন push করে মেরে দেয়। পরে অবশ্য সে ধরা পড়েছিল। কিন্তু ওরা ধরা পড়েনি। ওরা কিছুদিন আগেও জনতো যে মাহি সেদিন রাতেই হয়তো মারা গেছে। ওর লোকেরা ওদের সেইরকম খবর ই দিয়েছিল। কিন্তু কিভাবে যেনো ওরা জানতে পেরে যায় যে মাহি এখনও বেঁচে আছে। ওকে আবার মারতে ওরা এখানে পর্যন্ত লোক পাঠিয়ে দেয়। আমি দেশে আসার আগে চাচ্চুর সাথে যোগাযোগ করে সব জানাই। তারপর দেশে ফিরি। অনেকবার মাহির সামনে গিয়েছি মাহি আমাকে চিনতে পারিনি।খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম আমি। সবকিছু হারিয়ে ওকে পাওয়ার জন্য দেশে ফিরলাম আর সেই মাহি আমাকে চিনতে পারলোনা। তারপর মাহি কোথায় কি করে সব খোঁজ খবর নিলাম। ও যে কোম্পানি তে চাকরি করে সেই কোম্পানির ওউনার এর সাথে কথা বলে ওনার কোম্পানির 75% শেয়ার অনেক চড়া দামে কিনে ঐ কোম্পানির এম.ডি. হয়ে ওখানে গেলাম।
এতকিছু শোনার পর ওদের মুখে কোনা ভাষা ছিলনা। এর মধ্যে চাচ্চু চলে এলো।
চাচ্চুঃ আশফি? কি বলার জন্য আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিস??
-ভাবি আপনাকে এমন লাগছে কেনো? কি হয়েছে?
আশফি ভাবির কি হয়েছে এরকম দেখাচ্ছে কেনো ভাবিকে?(মাহির মায়ের দিকে তাকিয়ে)
আশফিঃ চাচ্চু আমি ওদের সবকিছু বলে দিয়েছি। ওদের ভুল ধারনা থেকে মুক্ত করার জন্য। আমি মামনির কাছে গেলাম।
-মামনি? তুমি এভাবে চুপ করে থেকোনা। প্লিজ কথা বলো তুমি।
চাচ্চুঃ আশফি? ওদেরকে একা থাকতে দে।
আশফিঃ না চাচ্চু এভাবে ওদের একা রাখার জন্য আসিনি। ওদেরকে অনেক কঠোর হতে হবে। মাহিকে ওখানে যেতে হবে, ওকে ওর প্রাপ্য বুঝে নিতে হবে।
মাঃ না। আমি মাহি কে ওখানে যেতে দেবোনা। ওরা আমার মাহির যদি কোনো ক্ষতি করে আবার? যে প্রপাটির জন্য আমার এতো কাছের মানুষ গুলোকে হারিয়েছি সেই প্রপাটির কোনো দরকার নেই।
চাচ্চুঃ ভাবি মাহি কেনো ওর অধিকার ছেড়ে দিবে। ওরা অবৈধ ভাবে ওগুলো ভোগ করছে। মাহি কেনো ওদের কেনো শাস্তি দিবেনা?
মাহিঃ মা। চাচ্চু একদম ঠিক বলেছে। আমি ওখানে যাবো কিন্তু প্রপাটিই মেইন নয়। ওদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য। ওদের কাছে আমরা কেনো হেরে যাবো?
তুমি এখন আমার সাথে ঘরে চলো। একটু রেস্ট নেবে।
আশফিঃ মাহি মামনি কে নিয়ে ঘরে চলে গেলো। আমি চাচ্চুর সাথে কিছু কথা বললাম।
-চাচ্চু আমাদের ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। এখানে যা কিছু আছে সবকিছু তুমিই দেখাশোনা করবে। আর সেটা কাল থেকেই। তারপর মামনির ঘরে গেলাম।
মাঃ আশফি তোরা আমাকে একটু একা থাকতে দিবি বাবা? আমি একটু একা থাকতে চাই।
আশফিঃ ঠিক আছে মামনি। আমি মাহি কে নিয়ে আমাদের রুমে চলে এলাম।আজকে রাতে কারোর ই ডিনার হয়নি। ওকে অনেক কিছু বুঝিয়ে তারপর ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। কাল অনেক কাজ আছে।আমাদের জাপান ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তাই আমিও তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম।
সোমাবার সন্ধা ৬:৪৫ ফ্লাইট টাইম
মাহিঃ মা আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো ওখানে? আমি পারবোনা থাকতে।তুমি প্লিজ চলো আমাদের সাথে।
আশফিঃ মামনি আমি শুধু মাহিকে নিতে আসিনি। আমি তোমাকেও নিতে এসেছি। আমার মামনি কে আবার ফিরে পাবো বলে এখানে এসেছি।
মাঃ আশফি তোরা আমাকে এই বিষয়ে কোনো জোড় করিসনা। কারণ আমি ওখানে গিয়ে থাকতে পারবোনা। প্রত্যেকটা মূহুর্ত আমার ওর স্মৃতিগুলো মনে পড়বে। তোরা তোদের খেয়াল রাখিস ভালোভাবে। তোদের কোনো ক্ষতি হয়ে গেলে আমি আর বাঁচবোনা।
আশফিঃ মামনি আমার আর মাহির কপালে চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁদলো। তারপর আমরা বিদায় নিলাম। চলে এলাম জাপান।
জাপান
আশফিঃ আমাদের দুজনের নতুন জীবন শুরু হলো জাপান। মাহি এখানে এসে আমাদের বাড়ি কিছু সময় ঘুরে দেখলো।
মাহিঃ বাসার ভেতর ঢুকে সব থেকে বেশি আকর্ষিত করলো দেওয়ালে টাঙ্গানো কিছু ছবি। ছবি গুলো ছিল আমাদের সবার এক সাথে থাকা সময়ের কিছু ছবি। কোনো ছবিতে আমরা সবাই একসাথে, কোথাও আমি আর মা, কোথাও আবার আমার আর আশফির ছবি। একটা ছবিতে আমি একটা গাড়ি নিয়ে খেলছি আর ও আমার পেছন থেকে এসে কান কামড়ে ধরেছে। মনে হচ্ছিলনা যে ও ওটা দুষ্টুমি করে করছে। ওর মুখের ভাব দেখে মনে হচ্ছে খুব রেগে ছিল আমার ওপর। একটা ছবিতে আমার চোখ আটকে গেলো। বাবা আর মায়ের ছবি। আমি এই প্রথম বাবার ছবি এতো সামনে দাড়িয়ে কাছ থেকে দেখছি। মনের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল। হঠাৎ পেছন থেকে আশফি আমার কোমোর জড়িয়ে ধরে আমার পিঠ ওর বুকের সাথে মিশিয়ে দাড়িয়ে রইলো।
-আশফি আমরা কি এর থেকে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারতামনা?(ছবির দিকে তাকিয়ে)
আশফিঃ মাহি আমি এই ছবি গুলো এখানে টাঙ্গিয়েছি শুধুমাত্র আমাদের সুন্দর স্মৃতি গুলো তোমাকে মনে করানোর জন্য। কষ্ট পাওয়ার জন্য নয়। তাই এখন থেকে আর কোনো কষ্ট পাবেনা।
মাহিঃ কিন্তু আমার যে কিছুই মনে নেই এই দিন গুলোর কথা। মনে পড়ছেও না।
আশফিঃ তোমাকে মনে করতে হবেনা। তুমি শুধু উপলব্ধি করবে। ঠিক আছে? কথাটা বলে ওর মাথার এক পাশে চুমু দিলাম। এখন ঘরে চলো মামনিকে ও তো ফোন করতে হবে। আর অনেক্ষণ আমাকে আদর করোনা। এবার চলো তো আমাকে একটু আদর করবে। তোমার জন্য স্পেশাল বেডরুম ওয়েট করছে।
মাহিঃ স্পেশাল বেডরুম মানে?
আশফিঃ গেলেই দেখতে পাবে। তারপর ওকে কোলে তুলে বেডরুমে চলে গেলাম।
আশফিঃ গেলেই দেখতে পাবে। ওকে কোলে তুলে বেডরুমে চলে এলাম।
মাহিঃ আরে এবার তো নামাও, এভাবে তাকিয়ে থাকবে নাকি কোলে করে।
-কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে জনাব আমাকে নিচে নামালেন।
আশফিঃ এবার একটু ডানে ঘুরুন ম্যাম।
মাহিঃ ওকে। আমি ডানে ঘুরে দেখলাম একটা মেয়ের আইডল। মুখটা ঢাকা আছে। আর আইডল টা কে একটা হোয়াইট গাউন পড়িয়ে রেখেছে। গাউন টা অনেক সুন্দর। কিন্তু আইডল টা কার হতে পারে? আশফি আমার হাত ধরে আইডল টার কাছে নিয়ে গেলো। তারপর মুখের ওপর থেকে পাতলা সাদা কাপড় টা সরিয়ে দিল। আমি আইডল টার মুখটা দেখে শুধু তাকিয়েই আছি। কারণ আইডল টা কে এতোটাই সুন্দর ভাবে তৈরি করেছে যে আমি নিজেও এতোটা সুন্দর না।
আশফিঃ এটা আমার White Angel. একে দেখেই আমার দিন টা শুরু হতো আর শেষ হতো।
মাহিঃ আমি কি আপনার White angel টা কে ছুঁয়ে দেখতে পারি??
-ও আমার কথাটা শুনে শুধু একটা হাসি দিল। আইডল টার ঠোঁটের নিচের তিল টাকে দেখে মনে হচ্ছে নতুন করে দেওয়া হয়েছে।
আশফি তোমার এই আইডল টা দেখছি তোমার মাহির থেকেও অনেক সুন্দর। কথা গুলো বলার সময় আমি যখন ওর দিকে ঘুরে দাড়ালাম ও তখন আমার কপাল সোজা Gun তাক করে আছে। ওর মুখটা দেখে আমি ভীষণ ভয় পাচ্ছি অনেক ভয় করছে। ওকে দেখে আমি বুঝতে পারছিনা ও ঠিক কি করতে চাইছে। ওর এরকম চেহারা দেখে আমার মুখ থেকে কথা বের হচ্ছেনা। শুধু চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে। গলা কাঁপা অবস্থায় অনেক আস্তে করে ওর নাম টা উচ্চারণ করলাম
-আশফি?
ও তখন gun টা একদম আমার কপালের সাথে ঠেঁকিয়ে ধরলো। আমি ভয়ে চোখ টা বন্ধ করে ফেললাম। আমি ওকে চিনতে পারছিনা। ও কি সত্যিই আমার আশফি? (মনে মনে) ও এমন করছে কেনো?
২ মিনিট হয়ে গেলো আমি চোখ বন্ধ করে আছি। সামনে থেকে কোনো সাড়া শব্দ পাচ্ছিনা। আমি চোখটা খুললাম। দেখলাম ও দাত বের করে নিঃশব্দে হাসছে।
আশফিঃ এতোটা করুণ অবস্থা হবে তোমার? কেউ যদি তোমার সামনে এভাবে তোমার কপালে গান ধরে তুমি একদম silently তার সামনে surrender করবে? আরও একটা বিষয় আমাকে খুব hurt করেছে। এখন পর্যন্ত তুমি আশফি কে বিশ্বাস করোনা। আমি তোমার সামনে গান ধরলাম আর তুমি ভয়ে চোখ টা বন্ধ করে ফেললে? এটা ভেবে নিলে যে আমি তোমাকে মেরে ফেলবো? মাহি তুমি যেদিন আমার গলায় ছুরি ধরেছিলে সেদিন কিন্তু আমি একটু ও ভয় পাইনি। কারণ আমি জানি তুমি আমার সাথে আর যাই করো আমাকে কখনো মারতে পারবেনা। সেটাই ছিল বিশ্বাস।
মাহিঃ ওর এই ফাজলামি টা আমার একটুও ভালো লাগেনি। ও আমাকে অন্যভাবে বোঝাতে পারতো এই বিষয় গুলো। আমি তো সত্যি ভয় পেয়েছি। রাগে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে। আমি ওর হাত থেকে গান টা কেড়ে নিয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে দিলাম। তারপর ওর বুকে গান টা ঠেঁকিয়ে ধরলাম।
-সেদিন ভয় পাওনি তো কি হয়েছে? আজকে ভয় পাবে। এভাবে আমাকে ভয় দেখানোর মজা তুমি এখন টের পাবে। এটা বলেই আমি ওর বুকের সামনে থেকে গান টা সরিয়ে চোখ টা বন্ধ করে অন্য পাশে এক নাগাড়ে গুলি চালাতে থাকলাম।
কি ব্যাপার গুলির শব্দ হয়না কেনো? তার মানে এটা খেলনা ছিল?
এই তুমি আমাকে এই খেলনা গান দিয়ে ভয় দেখাতে এসেছো? কি হলো ওভাবে হাসছো কেনো?
আশফিঃ হাসবোনা তো কি করবো? তুমি যা করছো । আমি ওর হাতটা ধরে আমার বুকের কাছে টেনে নিয়েলাম। তারপর ওর কাছ থেকে গান টা নিয়ে ওটাকে লোড করে দেখালাম।
-এবার বুঝেছেন এটা খেলনা নাকি সত্যি?
মাহিঃ ও তার মানে এখন নিশ্চই গুলি চালালে গুলি বের হবে?
আশফিঃ Yes.My white angel. তাই বলে আপনি এখন এটাকে নিয়ে খেলনার মত করে খেলবেন না। না হলে যখন তখন murder হতে পারি।
মাহিঃ আরে ধুর এটাকে নিয়ে আমি খেলবো কেনো? এটা নিয়ে তো এখন আমার নাচতে ইচ্ছা করছে। আচ্ছা ঐ song টা প্লে করো তো "Dil kiye goli chali nyano ki banduk se"( Raamleela movie's song). আমি এখন ঐ গানটা তেই নাচবো।
আশফিঃ আমার কাছে ঐ গান নেই। তুমি সিরিয়াসলি নাচবে?
মাহিঃ ইয়েস মাই ডিয়ার। ঠিক আছে আমি আমার ফোনেই বাজাচ্ছি।
তারপর গান প্লে হলো....
Dil kiye goli chali nyano ki banduk se, bum bhi girenge aab pyar ki sanduk se............
Dil kiye goli chali nyano ki banduk se, bum bhi girenge aab pyar ki sanduk se......
Haaa dil kiye goli chali nayno ki banduk se bum bhi girenge aab pyar ki sanduk se.... ishqiye tera mera ishqyaunge dhishqiyaoun ke dhishqiyaoun....... yaah ishqyaun waha dhishqiyaoun....
আশফিঃ গান টার সাথে ওর নাচ টা ভালোই দেখাচ্ছে। নাচার মাঝেই বার বার ও আমার কাছে আসছে আর নাচছে। ভালোই এনজয় করছি। কিন্তু যেভাবে গান টা নিয়ে নাচছে তাতে তো যখন তখন......
আরে মাহি সাবধানে। ওর কাছে গিয়ে বলতে গেলাম। কিন্তু ও আমার কোনো কথাই শুনছেনা। পাগলের মতো নেচেই যাচ্ছে।
-মাহি???
মাহিঃ আআআ( চিৎকার করে)
ইসসস আর একটু হলেই তো আশফির গায়ে গিয়ে লাগছিল। ভাগ্যিস মাথা নিচু করেছিল। নাচতে নাচতে চাপ লেগে গুলি বেরিয়ে গেছে। এর জন্যই অতিরিক্ত কিছু ভালোনা। ও আমার আমার সামনে চোখ রাঙিয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি মাথা নিচু করে sorry বলে গান টা ওর কাছে দিয়ে দিলাম।
আশফিঃ গান টা ওর হাত থেকে নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। ও ভয় ভয় চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছে। কিছু বললাম না। কারণ ভয় টা আমার থেকে বেশি ও পেয়েছে। আর এদিকে গার্ড গুলো গুলির শব্দ পেয়ে দৌঁড়ে এসেছে। তাদেরকে ইশারা করে চলে যেতে বললাম।তারপর ওর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে দিয়ে গান টা ড্রয়ারে রেখে দিলাম। অবশ্য আমার হাসিটা ও দেখেনি। মাথা নিচু করেই আছে। আমি ওর সাথে কোনো কথা না বলে মামনি কে ফোন দিলাম। পৌছানোর কথা জানালাম। ওর সাথে ও কথা বলিয়ে দিলাম। তারপর ওকে বললাম,
- এইযে এখন যান গোসল করে আসুন অনেক Dhishqiyaoun করেছেন। আর একটু হলেই তো.......
মাহিঃ sorry sorry sorry সোনা আমি সত্যি একদম বুঝতে পারিনি। আর তোমার কিছু হলে আমি নিজেকেও shoot করে দিতাম। ওকে জড়িয়ে ধরে কথা গুলো বললাম
আশফিঃ হুম আমি বুঝেছি। এখন যাও ফ্রেশ হয়ে আসো ডিনার এর সময় হয়ে গেছে।
মাহিঃ ওকে জানু......উমমমম
মমমমমম্মাহহহ। ওর গালে একটা লম্বা চুমু দিয়ে গোসলে গেলাম। তারপর আশফি ও ফ্রেশ হয়ে দুজন ডিনার করে নিলাম।
-আচ্ছা আশফি বেডরুমে আমার যে ছবি গুলো তুমি টাঙিয়ে রেখেছো সেগুলো তো মে বি ৩ বছর আগের ছবি আমার। আর এই ছবি গুলো তো আমাদের এলবাম এ ছিলোনা তাহলে তুমি পেলে কি করে?
আশফিঃ এতক্ষণ ধরে এই গুলোই ভাবছিলে বুঝি।
মাহিঃ হুম।বলোনা। আমার এই বিষয় টা একদমই মাথায় কাজ করছেনা। তখন তুমি দেশে আসোনি তাই না? আর একটা প্রশ্ন জানিনা তুমি ঠিক কিভাবে নিবে তবুও জানতে ইচ্ছা করছে।
আশফিঃ বলো সমস্যা নেই।
মাহিঃ তোমার আর আমার মাঝে তো অনেক বছরের distance ছিল। আমাদের দেখাও হয়নি এত গুলো বছরের ভেতর। তাহলে তুমি কিভাবে আমাকে এতো ভালোবাসতে পারলে?
আশফিঃ অনেক দারুণ একটা প্রশ্ন করেছো। লাখ টাকার প্রশ্ন। তাহলে আপনাকে বলেই ফেলি। তোমাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পরেও বাবা তোমাদের খোঁজ খবর সবসময় রাখতো। এমনকি ২ জন বডি গার্ড তোমাদের জন্য ওখানে রেখেছিল। যারা তোমাদের সব সময় আড়ালে থেকে তোমাদের সিকিউরিটি দিতো। আর বাবা তো এমন কোনো দিন নেই যে তোমাদের কথা আমার কাছে গল্প করতোনা। সবসময় আমাকে বলতো যে ভাবেই হোক তোমাকেই যেনো আমি তার পুত্রবধূ করে আনি। আমি বাবা কে বলতাম যে তোমাকেই আমি আমার বৌ করে আনবো আর সেটা তুমি না চাইলেও। বাবার কাছে বাইনা করতাম তোমার ছবি দেখার জন্য। ওরা যেনো তোমার ছবি তুলে পাঠাই।এমন কি তুমি রেগুলার কি করো সেটাও দেখার জন্য বাইনা করতাম বাচ্চাদের মতো। বাবা ওদের বলে দিয়েছিল। ওরা তোমার ছবি তুলে দিতে পারলেও ভিডিও টা করতে পারতোনা। তারপর ওরা একদিন তোমাদের বাড়িতে যাই ইলেকট্রিক এর লোক হয়ে। সেখানে তোমার বেডরুম ছাড়া সব জায়গায় ক্যামেরা ফিট করে রেখে আসে। তারপর থেকেই তোমাকে প্রতিদিন আমি ভিডিও তে দেখতে পেতাম।
সব থেকে মজার ব্যাপার কি জানো প্রতিদিন তোমাকে দেখতে দেখতে তোমার সম্পর্কে এতো কিছু জেনে গেছিলাম যা তুমি নিজেও তোমার সম্পর্কে জানোনা।
মাহিঃ Haaa এতদূর? তো কি কি জানো আমার সম্পর্কে যা আমি নিজেও জানিনা।
আশফিঃ আচ্ছা তুমি বলো তো তুমি সব থেকে কোন টিভি শো গুলো বেশি পছন্দ করো?
মাহিঃ আমি তো টিভির সামনে গেলে শুধু চ্যানেল ঘুরাই। বুঝতেই পারিনা কি দেখবো।
আশফিঃ তুমি এ্যাকশন মুভি বেশি লাইক করো।
মাহিঃ আরে হ্যা। এরকম মুভি পেলে তো আমার কিছুই লাগেনা।
আশফিঃ আরও বলছি। তুমি তোমার নিজের চয়েস নিয়ে সবসময় কনফিউজড থাকো। কোথাও যেতে গেলে কি ড্রেস পরবে কিভাবে যাবে সেটা নিয়ে তুমি সবসময় মামনি কে জ্বালাতে। রাইট?
আর তুমি তো অনেক বোকা। তুমি যে কোল্ড কফি খাও সেটা আমি জেনেছি আরও ৩ বছর আগে। আমি আসার পর তুমি কাজ নিয়ে এতোটাই বিজি থাকতে যে কফি খাওয়ার সময় টুকু ও তুমি পাওনি। আর সেটা তোমার মাথায় একদম কাজ করেনি। আমি তোমাকে যেভাবে বলেছিলাম তুমি সেটাই বিশ্বাস করেছিলে।
মাহিঃ তাইতো? তার মানে তুমি সত্যি আমাকে প্রতিদিন দেখতে? আর হ্যা আমাদের মনে হতো যে সবসময় কেউ আমাদের ফলো করে। ওরা তোমাদেরই লোক ছিল?
আশফিঃ না। ওরা আমার লোক ছিলোনা। আমি দেশে যাওয়ার পর ওদের কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমি থাকতে ওদের আর কোনো প্রয়োজন হবেনা। কিন্তু সেটাই ছিল আমার বড় ভুল। ওরা ওদের লোক ছিল। ঐ ভুল টা না করলে সেদিন তোমার এত বড় ক্ষতি হতোনা।
মাহিঃ আচ্ছা বাদ দাও তো। তার মানে আমার আশফি আমাকে প্রতিদিন দেখতো অথচ আমি ই তাকে দেখতে পাইনি কতগুলো বছর।
আশফিঃ তো এখন দেখো। এখন তো সামনেই আছি।
মাহিঃ আমি তো আপনাকে দেখিই। আপনিই তো আজকাল আমাকে সেভাবে লক্ষ করেন না। তাই আজকে আমি আপনাকে কিছু রুলস দিবো। যেটা প্রতিদিন আপনাকে মেনে চলতে হবে। তারপর আমি আমার রুলস গুলো বলা শুরু করলাম।
আশফিঃ বাবা......... এই রুলস গুলো তো দেখি আমার রুলস গুলোর থেকেও বেশি কড়া।
ওর রুলস গুলোর মাঝে এরকম কিছু রুলস আছে যেমন ঘুম থেকে সকালে ওঠার আগে ওকে আমার আদর করে তারপর উঠতে হবে। বাইরে যতুটুকু সময় আমি থাকবো প্রতিটা সেকেন্ড আমি যেনো ওনার মুখ দেখি (ভিডিও কল) যাতে অন্য কোনো মেয়ে আমার চোখে না পড়ে। যাই হোক এই রুলস গুলো আমি খুবই এনজয় করবো। আর এখন যে রুলস টা মানতে হবে সেটা আর নিশ্চই আমাকে বলে বোঝাতে হবেনা।
মাহিঃ এখানে আমি আর তুমি ছাড়া কেউ নেই তাই তোমাকে আমি এখন যা খুশি তাই করতে পারবো। নাও শুরু করো আমাকে আদর করা।
আশফিঃ তারপর আর কি আমি আমার বৌ এর আদেশ মাথা পেতে নিলাম।
চলবে...
Writer:- Israt Jahan
Idea:- Kashnir Mahi