আগে জানলে অবশ্য সে ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকতো।
কাল স্কুল থেকে ফেরার পথে তিথি সেঁজুতির বাংলা বইটা নিয়ে গিয়েছিলো আর সেটা নিতেই এই সাঁঝের বেলা সেঁজুতি হাঁজির হলো তিথিদের বাড়ি কিন্তু এসে প্রথমেই এমন লজ্জা পাবে সে ভাবতেই পারেনি।
চটপট তিথিকে ঢেকে বইটা হাতে নিয়েই বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো সেঁজুতি,পাছে তিথি আর তিথির মা যে ওকে এতো ডাকলো তা সেঁজুতি কানেই তুললো না।
একটু সামনে এগুতেই পিছন থেকে কারো গলার কন্ঠ শুনতে পেলো সেঁজুতি।
হঠাৎ মায়ের কথা মনে পড়লো তার,
"মা বলেছিলো সাঁঝের বেলা নাকি ভুত, পেত্নীর উপদ্রব বাড়ে এমনকি তারা নাকি মানুষের কন্ঠ নকল করে পিছন থেকে ডাকে।"
পেছন থেকে কারো কন্ঠ শুনে সেঁজুতির হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেলো। ও আরো দ্রুত হাঁটতে লাগলো। সাথে পিছনের হাঁটার শব্দও দ্বিগুণ বেড়ে গেলো।
সেঁজুতি প্রচন্ড ঘামতে লাগলো ভয়ে। ঐ তো একটু সামনেই ওদের বাড়ির উঠোন দেখা যাচ্ছে।রহমত চাচাদের বাড়ির পিছনেই ওদের বাড়ি।বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাটা কেমন যেনো পিচ্ছিল হয়ে আছে তাই সেঁজুতি দ্রুত হাঁটতে পারছেনা।
সেঁজুতি প্রচন্ড ঘামতে লাগলো ভয়ে। ঐ তো একটু সামনেই ওদের বাড়ির উঠোন দেখা যাচ্ছে।রহমত চাচাদের বাড়ির পিছনেই ওদের বাড়ি।বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাটা কেমন যেনো পিচ্ছিল হয়ে আছে তাই সেঁজুতি দ্রুত হাঁটতে পারছেনা।
হঠাৎ সেঁজুতি উপলব্ধি করলো পিছন থেকে কেউ একজন তার সামনে এসে দাঁড়ালো। সাথে সাথে সেঁজুতি ভয়ে চোখ বন্ধ করে কাঁদতে লাগলো।
হঠাৎ সেঁজুতি শুনতে পেলো কে যেনো বলছে,
"তুই এতো ভীতু কেন সেঁজুতি? আমি সেই কখন থেকে তোকে ডাকছি তুই শুনতে পাচ্ছিস না?"
সেঁজুতি মনে মনে ভাবে আরে এতো উৎপল ভাই! ওদের স্কুলের হেডমাস্টারের ছেলে।
এই ছেলেটাকে সচরাচর কেউই দেখে না কারণ সে সারাদিন লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে।তাছাড়া ছেলেটা অনেক ভদ্র এই গ্রামের সবাই ছেলেটার প্রশংসা করে।হাবিবা,সাবিনা সবার গল্পের নায়ক সে! সবাই এককথায় তাকে মনে মনে পছন্দ করে। তবে একমাত্র সেঁজুতি কেন যেনো উৎপলের নাম শুনলেও কেমন যেনো লজ্জা পায়। কখনো ছেলেটার চোখের দিকে তাকায়নি সেঁজুতি। কিন্তু এমুহূর্তে উৎপল সেঁজুতিকে কেন ডাকলো সেটা সেঁজুতি বুঝতে পারলো না এবং উৎপলের প্রশ্নের উত্তরও দিলো না। কয়েক মিনিট নিরবতার পর উৎপল বললো,
এই ছেলেটাকে সচরাচর কেউই দেখে না কারণ সে সারাদিন লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে।তাছাড়া ছেলেটা অনেক ভদ্র এই গ্রামের সবাই ছেলেটার প্রশংসা করে।হাবিবা,সাবিনা সবার গল্পের নায়ক সে! সবাই এককথায় তাকে মনে মনে পছন্দ করে। তবে একমাত্র সেঁজুতি কেন যেনো উৎপলের নাম শুনলেও কেমন যেনো লজ্জা পায়। কখনো ছেলেটার চোখের দিকে তাকায়নি সেঁজুতি। কিন্তু এমুহূর্তে উৎপল সেঁজুতিকে কেন ডাকলো সেটা সেঁজুতি বুঝতে পারলো না এবং উৎপলের প্রশ্নের উত্তরও দিলো না। কয়েক মিনিট নিরবতার পর উৎপল বললো,
"খেয়াল করলাম তিথিদের বাড়ি থেকে এই সন্ধ্যাবেলা তুই একা বেরিয়েছিস।কিভাবে বাড়ি ফিরবি একা একা তাই তোকে এগিয়ে দিতে আসলাম আর তুই নাকি সারাপথ একা একাই হেঁটে চলে আসলি একবারও পিছনে ফিরেও তাকালি না।"
সেঁজুতি কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না তার ভুতের ভয়ের বোকামিটার জন্য এখন তার বড্ড রাগ হচ্ছে,সাথে হাসিও পাচ্ছে।
উৎপল সেঁজুতির চোখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলতে লাগলো ওদিকে সেঁজুতি একবারের বেশি তাকাতে পারলো না উৎপলের দিকে তাই কিছু না বলেই সেঁজুতি উৎপলের সামনে দিয়ে দিলো এক দৌঁড়। ওদিকে উৎপল অবাক হয়ে সেঁজুতির দৌড়ে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইলো।
উৎপল সেঁজুতির চোখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলতে লাগলো ওদিকে সেঁজুতি একবারের বেশি তাকাতে পারলো না উৎপলের দিকে তাই কিছু না বলেই সেঁজুতি উৎপলের সামনে দিয়ে দিলো এক দৌঁড়। ওদিকে উৎপল অবাক হয়ে সেঁজুতির দৌড়ে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইলো।
সেঁজুতি দৌড়ে ঘরের দিকে পা রাখতেই তার মা সালেহা বানু রেগে বলতে লাগলেন সারাদিন পুরো গ্রামে টইটই করিস রাতে তো একটু বিরতি নে! না রাতেও দৌড়াদৌড়ি করিস! তুই কবে বুঝতে শিখবি যে তুই বড় হয়েছিস!
সালেহা বানুর আর কোনো কথা শোনা যায় না কারণ সেঁজুতির বাবা করিম আলী মেয়েকে পরম আদরে হাত ধরে সেঁজুতির ঘরে দিয়ে আসলো।করিম আলী বিল থেকে অনেকগুলো তাজা মাছ ধরে কিছুক্ষণ আগে বাড়ি ফিরলো। তাজা কই,টাকি আর শোল মাছ মাটির মেঝেতে লাফালাফি করছে এগুলো দেখতে সেঁজুতির বড্ড ভালো লাগে।সেঁজুতি আর কিছু বলে না শুধু দৌঁড়িয়ে বটি এনে মাছ কাটতে যায়।
রাতে বসে বসে পড়ছিলো সেঁজুতি হঠাৎ বাহিরে উৎপলের কন্ঠ শুনে চমকে গেলো সেঁজুতি তাই চুপিচুপি পা বাড়ালো উঠোনের দিকে।বাহিরে পা রাখতেই দেখা গেলো সেঁজুতির ভাই জহির, মিহির,শাওন আর উৎপল দাঁড়িয়ে কথা বলছে। হঠাৎ উৎপলের চোখে চোখ পড়তেই দেখা গেলো সে সেঁজুতিকে দেখে মুচকি মুচকি হাসছে আর দাঁড়ায় না সেঁজুতি সেখানে, দৌড়ে ঘরে চলে আসে। ঘরে আসতেই মা বলে উঠলো এই চায়ের কাপগুলো উঠোনে দিয়ে আসতে।না করা সত্ত্বেও সেঁজুতির চা নিয়ে উঠোনে যেতে হলো। গিয়ে দেখে উৎপল সেখানে একা বেঞ্চের উপরে বসে আছে বাকি সবাই শ্রাবণকে এগিয়ে আনতে গেছে। সেঁজুতিকে দেখে উৎপল বললো,
"চোখে সবসময় কাজল পড়বি।কাজল পড়া চোখে তোকে দেখতে দারুণ লাগে।"
সেঁজুতি কিছু বলে না কাপগুলো রেখে দৌড়ে ঘরে চলে আসে আর ভাবতে থাকে উৎপল আজকাল এমন করে কেন ওকে দেখলে?
রাতে খাবার খেতে সবাই একসাথে বসলো।সেঁজুতির দুই ভাই জহির আর মিহির,সেঁজুতি ছোটো। আজ খাবার টেবিলে সবাই জহিরের বিয়ের ব্যাপারে আলোচনা করতে লাগলো। এরমধ্যে
হঠাৎ সেঁজুতির দাদা বলে উঠলো,
হঠাৎ সেঁজুতির দাদা বলে উঠলো,
"উত্তরপাড়ার জামালের একটা মেয়ে আছে নাম আঁখি।মেয়েটা আমার পছন্দ তোরা চাইলে দেখতে পারিস।"
সবার চোখের দিকে তাঁকিয়ে বোঝা গেলো কথাটা সবার একটু আধটু পছন্দ হয়েছে জহির ছাড়া কারণ কথাটা শোনার পর জহির কপালটা কুঁচকিয়ে ফেলেছে কারণ জহির মনে মনে জাকিয়াকে পছন্দ করে।
জাকিয়া উত্তরপাড়ার ইউসুফ চাচার মেয়ে।মেয়েটাকে মনে মনে জহির আনন্দময়ী বলে ডাকে কারণ মেয়েটাকে দেখলেই জহিরের মনে এক অজানা আনন্দ ঢেউ খেলে যায় যে আনন্দের অনুভূতি কখনো ভাষায় বোঝানো সম্ভব না।
রাতে খাওয়ার পরে সবাই যার যার ঘরে ঘুমাতে গেলো তবে আজ কেন যেনো সেঁজুতির চোখে ঘুম আসছে না কেবল উৎপলের ছবিটা
চোখে ভাসছে। ওদিকে উৎপল ও আজ রাত জেগে আছে। চারিদিকে প্রকৃতির নিস্তব্ধতা।সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন কেবল ওদের চোখেই আজ ঘুম নিখোঁজ।
চোখে ভাসছে। ওদিকে উৎপল ও আজ রাত জেগে আছে। চারিদিকে প্রকৃতির নিস্তব্ধতা।সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন কেবল ওদের চোখেই আজ ঘুম নিখোঁজ।
ফজরের আযানের সাথে সাথে আজ ঘুম ভাঙ্গলো সেঁজুতির কারণ একটু আগে সেঁজুতি স্বপ্ন দেখলো তার কোলে একটা ফুটফুটে মেয়ে হেঁসে হেঁসে খেলা করছে আর মুখ দিয়ে কেমন যেনো আহ্লাদী শব্দ করছে। একটুপরে উৎপল এসে সেই ছোট মেয়েটাকে কোলে নিলো এবং মেয়েটা যেনো আরো একটু বেশী আহ্লাদী হয়ে উঠলো।সেঁজুতি পরম আদরে ওদের দু'জনের দিকে তাঁকিয়ে রইলো। সেই স্বপ্নের মধ্যেই বড্ড মায়া আর দরদ জন্মেছিলো সেঁজুতির মনে ওদের জন্য। এরমধ্যেই হঠাৎ আজানের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় সেঁজুতির।স্বপ্নটার কথা মনে পড়তেই লজ্জা পেয়ে মুঁচকি হাসলো সেঁজুতি।সেঁজুতি মনে মনে ভাবে এইসময়ে স্বপ্ন দেখলে নাকি সেই স্বপ্ন সত্যি হয় আবার অনেকে বলে নিজের উপর দিয়ে স্বপ্নে দেখলে সেটা নাকি অন্যের উপর দিয়ে যায়।
এই দুইয়ের দ্বিধাদ্বন্দ্ব করতে করতে বাহিরে অন্ধকার ভেদ করে ভোরের আলো ফুটতে লাগলো।দূরে হঠাৎ কয়েকটা মোরগ জোরে ডেকে উঠলো।
এই দুইয়ের দ্বিধাদ্বন্দ্ব করতে করতে বাহিরে অন্ধকার ভেদ করে ভোরের আলো ফুটতে লাগলো।দূরে হঠাৎ কয়েকটা মোরগ জোরে ডেকে উঠলো।
বাহিরে সকালের রোদের আলোয় ভরে গেলো। সেঁজুতি রওনা দিলো তিথিদের বাড়িতে।হাঁটতে হাঁটতে পথে হঠাৎ দেখা হয়ে গেলো তিথির সাথে। তিথিও নাকি সেঁজুতিদের বাড়ির দিকেই যাচ্ছিলো।ওরা হাঁটতে হাঁটতে কৃষ্ণচূড়া নদীর পাড়ে চলে এলো। দূরে বয়ে যাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া নদী।বর্ষায় নদীর দূকুল পানিতে টুইটুম্বর। সেঁজুতি নদীরদিকে তাঁকিয়ে ভাবে এই নদীর উপর দিয়ে কত মানুষ চলে যায় অজানার পথে, কেউ চলে যায় তার প্রিয়জন ছেড়ে কাজের উদ্দেশ্য
অনেকদূরে আবার কেউ জীবিকা নির্বাহের জন্য এই নদীর বুকেই ঘুরে ফিরে। সে খবর কেউ রাখে না।
অনেকদূরে আবার কেউ জীবিকা নির্বাহের জন্য এই নদীর বুকেই ঘুরে ফিরে। সে খবর কেউ রাখে না।
তিথি হঠাৎ বলে উঠলো ঐ দেখ ঘাটে একটা নৌকা বাঁধা আছে, চল ওটা নিয়ে আমরা শাপলার বিলে যাই ওখানে নাকি অনেক শাপলা ফুটেছে।কথাটা শোনা মাত্রই সেঁজুতি এক লাফ দিলো।তার আগে সেঁজুতির হঠাৎ মনে পড়লো সেদিনের দেখা পেয়ারাগুলোর কথা,যেগুলো চৈতী বুবুদের পুরনো বাড়ির বাগানে হয়েছে। তাই সবার আগে ওরা সিদ্ধান্ত নিলো সেখান থেকে চুপিচুপি কিছু পেয়ারা পেরে আনবে তারপর সেগুলো খেতে খেতে নৌকায় ঘুরবে।পুরনো বাড়ির পথে চলতে চলতে হঠাৎ সেঁজুতির ভাই জহিরের সাথে দেখা হয়ে গেলো। জহির সেঁজুতিকে দেখে কিছু বললো না তবে তিথি কেন যেনো জহিরের দিকে তাকাতেই পারেনি।জহিরকে দেখামাত্র তিথির বুকে ধুকপুকানি শুরু হলো। ভাগ্যিস বুকের হৃৎস্পন্দনের গতি বাহির থেকে কেউ শুনতে পায় না!
একটুদূরে যেতেই জহিরের সাথে জাকিয়ার দেখা হয়ে গেলো।জাকিয়া এসেছে ওর ছোট ভাইকে নিয়ে মাছ কুড়াতে। জাকিয়াকে দেখে আজ জহির সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললো, তার মনের কথাটা বলার তাই জাকিয়ার সামনে গিয়ে সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো কিন্তু কিছু বলতে পারলো না। হঠাৎ নিরবতা ভেঙে জাকিয়া বললো,
-"কেমন আছো জহির ভাই?"
-"ভালো আছি। তোকে লাল শাড়িতে খুব মানিয়েছে, মনে হচ্ছে যেনো সিনেমার নায়িকা।"
-"ভালো আছি। তোকে লাল শাড়িতে খুব মানিয়েছে, মনে হচ্ছে যেনো সিনেমার নায়িকা।"
জাকিয়া কিছু বলে না,কেবল হাসে।
জহির মনে মনে সিদ্ধান্তে নেয় সামনের হাট থেকে জাকিয়ার জন্য সে একমুঠো লাল কাঁচের চুড়ি কিনবে। একটুপরে জহির আবার বলে উঠলো,
"বিশ্বাস কর তোকে আজ একেবারে সিনেমার নায়িকার মতো লাগতাছো তয় সিনেমার নায়িকা গো একজন করে নায়ক থাকে তর কি তেমন কোন পছন্দ আছে?"
জহিরের কথার কোনো উত্তর দেয় না জাকিয়া।কেবল মুচকি হাসে।এরপরে হঠাৎ জহিরকে অবাক করে দিয়ে বলে,
"হ,একজন আছে তারে আমি খুব ভালবাসি কিন্তু এইডা এই পৃথিবীর কেউ জানে না বলে সে মাছের টুকরি নিয়ে দ্রুত চলে গেলো।জহির কিছুই বুঝলো না তবে মনে মনে ভেবে নিলো জাকিয়া মনে হয় ওকেই পছন্দ করে এই ভেবে মুচকি হাসতে হাসতে সে ও পা বাড়ালো কৃষ্ণচূড়া নদীর দিকে।
ওদিকে সেঁজুতি আর তিথি পৌঁছে গেলো সেই পুরনো বাড়িতে, এ বাড়িতে এখন আর কেউ থাকে না আর এখন কেউ আসবেও না তাই সেঁজুতি তরতর করে গাছে উঠে গেলো।কতগুলো পেয়ারা পেরে সামনের দিকে তাকাতেই দেখা গেলো উৎপল আসছে এই বাড়ির দিকে।উৎপলকে দেখে তিথি দিলো এক দৌঁড় কেননা এই চুরির কথা স্যারকে বললে স্যার বারোটা বাজিয়ে দিবে। কিন্তু সেঁজুতি বেচারা দ্রুত নামতে গিয়েও নামতে পারলো না বরং তার ওড়নায় বাঁধা সব পেয়ারাগুলো ছুটে গিয়ে পড়লো উৎপলের মাথায়। উৎপল বেচারা সরাসরি উপরের দিকে তাঁকিয়ে দেখতে পেলো সেঁজুতিকে। চৈতি উৎপলের বড় বোন আর এটা তাদের বাড়ি। উৎপলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সেঁজুতি আস্তে-ধীরে গাছ থেকে নেমে এলো। লজ্জায় এমুহূর্তে সেঁজুতির মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
উৎপল সেঁজুতিকে বললো,
উৎপল সেঁজুতিকে বললো,
"আর কখনো গাছে উঠবি না। দাঁড়া তোকে আমি পেয়ারা পেরে দিচ্ছি এইবলে উৎপল গাছে উঠে সেঁজুতিকে অনেকগুলো পেয়ারা পেড়ে দিলো।তারপর উৎপল সেঁজুতিকে বললো,
-"আয় আমার সাথে।"
ওদিকে তিথি দৌড়াতে দৌড়াতে নদীর পাড়ে চলে এলো এবং দেখতে পেলো জহির এখানে বসে বসে গান গাচ্ছে,
"নদীর বুকে নৌকা চলে ঢেউয়ের তালে তালে,
আমার হৃদয় কান্দে বন্ধু তোর অপেক্ষাতে।
একবার যদি আসতি বন্ধু তুই আমার সনে,
এই মনেতে রাখতাম বেঁধে তোরে আপনমনে,
বন্ধু একবার আয় না কাছে.........
আমার হৃদয় কান্দে বন্ধু তোর অপেক্ষাতে।
একবার যদি আসতি বন্ধু তুই আমার সনে,
এই মনেতে রাখতাম বেঁধে তোরে আপনমনে,
বন্ধু একবার আয় না কাছে.........
জহিরের গান শুনে মাঝপথে জহিরকে থামিয়ে দিয়ে তিথি বলে উঠলো,
"দাদা আমিও তোমার অপেক্ষায় থাকি, তোমারে বড্ড ভালবাসি। তোমার হৃদয় দিয়ে আমার হৃদয়টা তুমি শক্ত করে বানবার পারো না? যেনো কোনদিন এ বাঁধন কেউ এসে ছিন্ন করতে না পারে।"
কথাগুলো বলে তিথি নিজ থেকেই অবাক হলো।
কিভাবে সে এ কথাগুলো আজ জহিরকে বলতে পারলো!
কিভাবে সে এ কথাগুলো আজ জহিরকে বলতে পারলো!
আর কিছু বলতে পারেনা তিথি, এক দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো ওদিকে জহির অবাক হয়ে তার চলে যাওয়ার পথে তাঁকিয়ে রইলো। একটুপরে জহিরও সেখান থেকে চলে গেলো।
ওদিকে উৎপল সেঁজুতিকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে এলো আবারো সেই নদীর পাড়ে।হাতের আঙ্গুল দিয়ে নৌকাটা ইশারা করে উঠে বসতে বললো সেঁজুতিকে।
সেঁজুতিও নৌকায় পা রাখলো। তরতর করে নৌকা বয়ে চলছে নদীর বুক চিড়ে।একটুপরে ওরা চলে এলো শাপলার বিলে।বিলে অসংখ্য শাপলার ছড়াছড়ি দেখে সেঁজুতির মনে যেনো আনন্দ ধরে না,কিশোরী এক মেয়ে যেনো আজ এই বিলের রানী হয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে। একটুপরে উৎপল হঠাৎ পিছন থেকে এসে সেঁজুতির হাতটা ছুঁয়ে দিলো। সেঁজুতি পিছন ফিরে তাকাতেই...
চলবে...
লেখাঃ- হামিদা ইমরোজ