Leave a message
> সোনার আংটি
-->

সোনার আংটি


 --মিস মিতা, অনুগ্রহ করে আমার সাথে একটু মার্কেটে যাবেন?

কথাটা শুনে ভীষণরকম বিব্রত হয়ে আমার কলিগ আরাবির দিকে তাকালাম।মাসখানেক আগে ভদ্রলোক আমাদের অফিসে নতুন জয়েন হয়েছেন।প্রায় টুকটাক কথাবার্তা হয়, তা ঠিক আছে।তাই বলে মার্কেটে যাওয়ার অফার করছে! 

কিছুক্ষণ চুপ থেকে উত্তর দিলাম,

--স্যরি আরাবি সাহেব,আমার বাড়িতে একটু কাজ আছে। তাই আপনাকে সঙ্গ দিতে পারছি না।

--আপনার কবে সময় হবে? আপনার সময় অনুযায়ী না হয় আমাকে একটু সময় দিন,প্লিজ।

খানিকটা বিরক্ত হয়েছি ভদ্রলোকের আচরণ দেখে।আমি কেন উনাকে সময় দিতে যাবো? আশ্চর্য!

--আমি কিভাবে সময় দিবো বলুন তো!

--প্লিজ, নিষেধ করবেন না।আমার খুবই প্রয়োজন আপনাকে সাথে নিয়ে যাওয়াটা।

এত বেশি অনুরোধ করছে যে সরাসরি নিষেধও করতে পারছিলাম না।অবশেষে বাধ্য হয়ে আরাবির সাথে মার্কেটে আসি।

আমাকে নিয়ে ভদ্রলোক একটা জুয়েলারি দোকানে ঢুকে। এবং সেখান থেকে আংটি পছন্দ করার জন্য অনুরোধ করছে।অসম্ভব বিরক্ত হওয়া সত্ত্বেও সিনক্রিয়েট করিনি।চুপচাপ ওখান থেকে একটা আংটি নিয়ে উনাকে দেখিয়ে বললাম,

--এটা সুন্দর।

ভদ্রলোক ভীষণ খুশি হয়ে আমাকে বলছে,

--দেখুন আপনার হাতের আঙ্গুলে লাগে কিনা।

--মানে?

অসম্ভব রকম বিরক্ত নিয়ে প্রশ্ন করলাম।

--আসলে আমার মায়ের খুব শখ ছিলো একটা সোনার আংটি পরার জন্য।কিন্তু আমার বাবার পক্ষে কখনোই সম্ভব হয়নি আমাদের সংসার ও লেখাপড়া চালিয়ে আমার মা'কে একটা আংটি কিনে দেওয়ার।তার জন্যই জীবনের প্রথম উপার্জনের টাকা থেকে মায়ের জন্য একটা আংটি কিনবো বলেই আপনাকে নিয়ে এসেছি।

কারণ মেয়েদের কেনাকাটা আমি খুব একটা বুঝিনা।তার উপর আপনার হাতের আঙুলের সাথে আমার মায়ের হাতের আঙুলের অনেকটা মিল।তাই আপনাকে সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।

আমি আরাবির কথা শুনে অবাক হয়ে ছেলেটাকে দেখছি।সে তড়িঘড়ি করে ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে দোকানীকে দিতে ব্যস্ত।তার চেহারায় একরাশ আনন্দ লেগে আছে।মায়ের একটি শখ পূরণের আনন্দ।

একটা ছেলের মায়ের প্রতি ভালোবাসাটা মুগ্ধ হয়ে অনুভব করছি।ভাবছি,এভাবেও মা'কে ভালোবাসা যায়!




( সমাপ্ত )





লেখা: উম্মে হাবিবা তানহা

 

Delivered by FeedBurner

a