ইংরেজিতে কথা বলা, নিজের মত করে যে কোনো বাক্য ব্যাকরণ-শুদ্ধভাবে বলা, এমকি নেটিভদের সাথে ওদের মত করেই ইংরেজি বলা - সবাই সম্ভব।
হ্যাঁ, সব কিছুই সম্ভব যদি আপনি সঠিক ভাবে সময় কাজ লাগান। মনে রাখবেন, শুধু পড়তে থাকলেই কিন্তু হবে না, কৌশলে আগাতে হবে, যেন আপনি কম সময়েই হয়ে উঠতে পারেন ইংরেজিতে সেরা! আজকে কিছু কথা বলি, চলুন…
১. বড় অর্জন মানে বড় ত্যাগ
আমরা বাঙালি। বাংলায় কথা বলে অভ্যস্ত আমরা। ইংরেজি ভিন্ন একটি ভাষা, শুধু যে ভাষাগত পার্থক্য, এমনটা কিন্তু নয়, ভাষার ধাচ ও ভিন্ন।
এখন যদি বলি এখানেই শেষ নয়? অবাক হবেন? অবাক হওয়ার কিছু নেই আসলে। বাংলা আর ইংরেজির ব্যবহারে, অর্থে পার্থক্য রয়েছে, সাংস্কৃতিক একটা পার্থক্যও রয়েছে। আমরা কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের চেয়ে বড় অপরিচিত কাউকে নাম ধরে ডাকি না, মামা, খালা, চাচা ডাকি। ইংরেজিতে কিন্তু এটা চলে না। এরকম আরও অনেক অনেক সাংস্কৃতিক পার্থক্য রয়েছে দুই ভাষার মধ্যে। তাই অনেক সময়ই যেমন অর্থগত দিকে দিয়ে অনুবাদ করা যুক্তিপূর্ণ নয়, আবার অনেক সময় দেখা যেতে পারে যে কিছু কিছু জিনিস শুধু একটি ভাষায় সম্ভব।
এখন কি তাহলে হাল ছেড়ে বসে থাকবো? একদমিই না, বরং আপনার অভ্যাসে আনুন পরিবর্তন। ইংরেজিকে একটা শেখার জিনিস হিসেবে না ভেবে আপনার দৈনন্দিন প্রয়োজন বানিয়ে ফেলুন। তখন দেখবেন, ইংরেজি কষ্ট করে শিখতে হবে না, আপনার দরকারেই আপনি ইংরেজিকে আপন করে নিতে বাধ্য। নিজেকে একটা প্রশ্ন করুন, এই মুহূর্তে আপনি লন্ডনে বা নিউ ইয়র্কে থাকলে কীভাবে মানুষের সাথে কথা বলতেন? একটা সংবাদপত্র পড়তে হলে কীভাবে পড়তেন?
২. ইংরেজিতে যত বেশি সম্ভব কথা বলুন
এই কথা শুনে অনেকে হেসে হেসে ভাবতে পারেন, "ইংরেজিতে কথা বলতে হবে এটা আমি আরও আগে থেকেই জানি!"
কিন্তু বিশ্বাস করুন, এই সাধারণ কাজটি করতে আমরা প্রায়ই ভুলে যাই। ইংরেজি শিখতে হলে বেশি করে ইংরেজিতে কথাও বলতে হবে। আমরা আর যাই করি না কেন, সব কিছু কিন্তু এই ইংরেজিতে কথা বলতে পারা নিয়েই। তবে আমাকে একটা প্রশ্ন প্রায়ই করা হয়," কার সাথে কথা বলবো?"
আপনার ভাই বা বোনের সাথে। এতে দুই জনেই লাভ হবে।
অনলাইন ক্লাস বা সেমিনারে মিউট না করে থেকে প্রশ্ন করুন।
আপনার বন্ধুটিও নিশ্চয়ই ইংরেজি শিখতে চায়। তাই বন্ধুদের সাথে স্পিকিং প্র্যাক্টিস করা যায়।
আমাদের ফোনে এবং ল্যাপটপে বিভিন্ন ভয়েস এসিস্টেন্ট থাকে, যেমন গুগল এসিস্টেন্ট বা কোর্টানা, তাদের সাথে।
এবং, সব চেয়ে উপকারী, আয়নার সামনে নিজের সাথে কথা বলুন।
৩. মেনে নিন যে ইংরেজি শিখতে অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন
একটা ভাষা শেখা কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়। নতুন কিছু শিখতে হলে আমাদের মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই একটা ভয় কাজ করে। কথা বলার প্র্যাক্টিস করতে গিয়ে ভুল হবে, একটা বলতে গিয়ে অন্যটা হয়ে যাবে। খুব স্বাভাবিক।
ইংরেজিতে এমন অনেক শব্দ বা বাক্য আছে যা কনফিউজিং মনে হতে পারে। দেখা গেলো বানান খুবই কাছাকাছি, কিন্তু অর্থ ভিন্ন। বা বানান দেখে উচ্চারণ যেমনটা হওয়ার কথা, তেমনটা নয়। ইংরেজি শিখতে গিয়ে আমরা সবাই কম বেশি এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি। তাই হ্যাঁ, ইংরেজি শিখতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু, কষ্ট না করে কে কবে কিছু করতে পেরেছে?
৪. শুধু গ্রামার শিখে দিন শেষ করে দিবেন না
একটা চমৎকার তথ্য দেই আপনাদের, ব্রিটিশ স্কুলগুলোতে কিন্তু গ্রামার শেখানোই হয় না। দেখা গেলো, ওরা 'Phrasal Verb' কী জানে না, যদিও এটা সব সময় ব্যবহার করে থাকে।*
সত্যি বলতে, এখানে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ওদের ইংরেজি শিখতে গ্রামার পড়তে হয় না। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে স্পিকিং। কিন্তু তাই বলে যে গ্রামার একদমই পড়তে হবে না, এটাও কিন্তু না। গ্রামার এবং স্পিকিং - এর মধ্যে একটা ব্যালান্স করতে হবে।
৫. কোর্সে এনরল করলেই হবে না, সম্পূর্ণ কোর্সটি শেষ করতে হবে
অনেকেই হয়তো ঘরে বসে স্পোকেন ইংলিশ কোর্স কিনেছেন, কিন্তু সার্টিফিকেট পাওয়া পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছে অল্প সংখ্যক মানুষ।
তার মানে কী? শেখার আগ্রহ অনেকেরই আছে কিন্তু সেটা আমরা ধরে রাখতে পারি না। অনেক উৎসাহ নিয়ে শেখ শুরু করার পর আসলে সমস্যাটা হয় কোথায়? আমরা ভয় পাই। আগ্রহ ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলি। এটা করা যাবে না। এর জন্য নিজেকে উপহার দিতে হবে।
কী? অবাক হচ্ছেন? না, একদমই ভুল কিছু বলিনি। নিজেকে উপহার দেওয়া সম্ভব। প্রতিদিনের টার্গেট যখন আপনি ধরতে পারবেন তখন ছোট হলেও নিজেকে কিছু উপহার দিবেন, সেটা হতে পারে কোনো খাবার বা হয়তো কিছু সময় টিভি দেখা, ইত্যাদি।
দিন শেষে দেখবেন আপনার নিজের কাছে খুব ভালো লাগছে এবং ইংরেজি শেখায় আপনি আরও একটি ধাপ এগিয়েছেন!
Writer:- Munzereen Shahid