করোনার কোন লক্ষণ দেখা দিলে আপনি বাসায় থাকবেন, আর কোন লক্ষণ দেখা দিলে আপনি দ্রুত হাসপাতালে যাবেন সেগুলো খুব সহজে এই ভিডিও তে তুলে ধরবো. আমি তাসনিম যারা,
ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড এ এভিডেন্স স্পেস মেডিসিন নিয়ে পোস্ট গ্রাডুয়েশন করছি. ব্রিটেন এ করোনা মহামারীর শুরু থেকে রোগী দেয় চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি ফরমড আইডি থেকে.
করোনায় আক্রান্ত সিংহ ভাগ মানুষই সুস্থ হয়ে ওঠে বিশেষ কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া.হাসপাতালে ভর্তি লাগে না. তবে কিছু রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়. তাই আপনাকে জানতে হবে
কোন লক্ষণ থাকলে বাসায় থেকে নিজের পরিচরজা করবেন, আর কখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন. বরাবরের মতো নাইস রেফারেন্স আসতে থাকবে কমেন্ট এ লিংক গুলো থাকবে সেগুলো ঘটলে
আপনি আরো জানতে পারবেন
যেসব লক্ষন গুলো দেখা দিলে আপনি বাসায় থাকবেন সেগুলো আগে বলছি তাতে বুঝতে সুবিধা হবে.
(১) জ্বর
বাসায় থার্মোমিটার থাকলে সেটা দিয়ে মাপবেন. না থাকলে বুকে পিঠে হাত দিয়ে যদি মনে হয় স্বাভাবিকের চেয়ে গরম তাহলে ধরে নেবেন জ্বর এসেছে.
(২) কাশি
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুকনো কাশি হয় অর্থাৎ কাশির সাথে কফ্ বের হয় না. ফুসফুসের বা হার্ট এর রোগের কারণে যাদের এমনিতেই কাশি থাকে তাদের কাশি স্বাভাবিকের চেয়ে খারাপ হয়ে যায়.
(৩) ঘ্রাণ শক্তি আর মুখের স্বাদ চলে যাওয়া
অনেক কোভিড রোগী কোনো কিছুর গন্ধ শুকতে পারে না, খাবারের স্বাদ বুঝতে পারে না অথবা ঘ্রাণ ও সাধ আগের চেয়ে ভিন্ন হয়ে যায়
(৪) ফাটিগে বা ক্লান্তি
শরীর খুব ক্লান্ত লাগে
আরো কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো একটু কম দেখা যায় যেমন: সর্দি বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, শরীরে আর মাংস পেশীতে ব্যথা.
কংজুনেক্টিভিটিস বা চোখের ইনফেক্শন. এটা একটু ব্যাখ্যা করে বলি, কংজুনেক্টিভিটিস হলে কক্ষ দুটো লাল হয়ে যায়. পুঁজ বের হয়ে চোখের পাতা একটা আরেকটার সাথে লেগে যায়.
এটা সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজে নিজেই সেরে যায়. র্যাশ, গায়ে র্যাশ উঠতে পারে, হাতে পায়ের রং বদলে যেতে পারে. এই লক্ষণ দেখা দিলে একজন চিকিৎসক দেখিয়ে নেয়াই শ্রেয়.
তিনি বলতে পারবেন এটি করোনা নাকি অন্য কোন কারণে হয়েছে.
এবার একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলছি মনোযোগ দিয়ে শুনবেন. যেই লক্ষন গুলো বললাম তার কোনো একটা দেখা দেয়ার মানেই করোনা হয়েছে তা নিস্চিত নয়.
করোনা আসার আগেও মানুষের জ্বর সর্দি হতো. তবে এখন লক্ষণ দেখা দিলে করোনার কথা চিন্তা করতে হবে আর সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে. যেমন বাসার বাইরে না যাওয়া.
যদি পরীক্ষা করার সুযোগ থাকে তাহলে তো নিস্চিত হতে পারবেন. হাসপাতালে না যেয়ে বাসায় থাকার এই পরামর্শ তে আপনার খটকা লাগতে পারে. আমরা সাধারণত অসুস্থ হলে ডাক্তার এর কাছে যেতে বলি
কিন্তু করোনার ক্ষেত্রে বলছি উল্টো. আসলে হালকা উপসর্গের জন্য আলাদা কোনো চিকিৎসা নেই. তাই হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন পরে না. বরং হাসপাতালে গেলে অন্নান্ন ইনফেক্শন এ আক্রান্ত হতে পারেন.
বাসায় নিজেদের পরিচরজা নিয়ে আমি আরেকটা ভিডিও তে বিস্তারিত বলেছি.
তবে কিছু লক্ষণ দেখা দিলে আপনাকে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে. এখন সেগুলো বলছি. শুরুতেই বলে নেই এসব লক্ষণ দেখা দিলেই ঘাবড়ে যাবেন না.
বরং ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করুন রোগীকে কিভাবে হাসপাতালে নেয়া যায়.
(১) শ্বাস কষ্ট
দম আটকে যাচ্ছে, কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে. হাঁটতে গেলে শ্বাস কষ্ট হচ্ছে
(২) ঠোঁট চেহারা নিল হয়ে যাওয়া
এটার মানে আপনার শরীরে অক্সিজেন এর পরিমান মারাত্মক ভাবে কমে গেছে. রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা আগেই ধরে ফেলার জন্য বাসায় পাল্স অক্সি মিটার ব্যবহার করতে পারেন
অনেক কোভিড রোগীর শ্বাস কষ্ট হয়না তবে দেখা যায় তাদের অক্সিজেন লেভেল অনেক কম.
(৩) পস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া বা খুব কমে যাওয়া
এটা কিডনি আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ
(৪)বুকে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা
এটা হার্ট এটাক এর লক্ষন তীব্র স্বাস কষ্টেও হতে পারে. বুকের ব্যথাকে কখনোই ইগমরে করবেন না প্লিজ
(৫) হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে, খুব ঘামছেন, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে
এটাও হার্ট এটাক এর লক্ষন. হার্ট এটাকে যে সবসময় বুকেই ব্যথা করবে এটা সঠিক না.
(৬) এমন রাশ উঠেছে যেটাকে গ্লাস দিয়ে চাপ দিলে মিলিয়ে যায় না
এটা ব্রেইনের ইনফ্যাক্ৰীণ এর লক্ষণ হতে পারে
(৭) মুখে কথা আটকে যাচ্ছে বা হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে নাড়াতে পারছেন না
অনেকেই জানেন এটা স্টক এর লক্ষন, আর কাশির সাথে রক্ত যাচ্ছে
শেষ যে তিন টি লক্ষন এর কথা বলব সেটা হয়তো রোগী নিজে বুঝতে পারবে না, রোগী কে যারা সেবা দেবে তাদের খেয়াল রাখতে হবে
(৮) ঝিমুতে থাকা
রোগী একে বারেই জেগে থাকতে পারছে না যে সময় স্বাভাবিক ভাবে জেগে থাকতে পারে.ডেকেও জাগিয়ে তোলা যাচ্ছে না বারবার ঝিমিয়ে যাচ্ছে
(৯) ভুলে যাচ্ছে রোগী কিছুই মনে রাখতে পারছেন না যেটা রোগীর জন্য স্বাভাবিক না স্বাভাবিক না
(১০) আর শেষটা হচ্ছে অজ্ঞান হয়ে পড়া
এসব লক্ষণ ছাড়াও যদি অন্য কোনো কারণে মনে হয় রোগী দ্রুত খারাপ হয়ে যাচ্ছে অথবা যাদের অন্যান্য রোগ আছে যেমন ডায়বেটিকস বা উচ্চ রক্ত চাপ ইত্যাদি যেগুলো বাসায় কন্ট্রোল এ রাখা যাচ্ছে না
শুরুতে বলেছি যেসব লক্ষণ দেখা দিলে বাসায় থাকা যাবে সেগুলোর কোনোটা যদি গুরুতর হয়ে যায় যেমন ধরুন বমি কিছুতেই থামছে না, তখন হাসপাতালে যেতে হবে।