১. তোমাকে দু'চোখ মেলে
দেখেছি যে মাত্র একবার,
সমস্ত জীবনের শুধু
এইটুকু সাফল্য আমার!
মহাদেব সাহা
২. হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো সংবিধান নেই
হৃদয় যা পারে তা জাতিসংঘ পারে না
মহাদেব সাহা
৩. আমি তো দেখতে চাই কাছের জীবন
তুমি আমাকে দেখাতে চাও দূর নীহারিকা সমুদ্র সৈকত
মহাদেব সাহা
৪. তুমি যে আজ বিমুখ এমন
সে দোষ আমারই বুঝেছি এখন।
মহাদেব সাহা
৫. তোমার চোখে তো নেমেছিল মেঘ, ঝরেছিল বহু জল
আমার বক্ষ শিশিরসিক্ত, বেদনায় টলমল;
মানুষের মনে অনন্ত প্রেম চিরদিন উজ্জ্বল।
মহাদেব সাহা
৬. ভিজেছে চোখের পাতা, ভেজে নাই চোখ
তাতেই কাতর তুমি কতটুকু পেয়েছ বা শোক?
অনেক ভিজাবে চোখ, অনেক ঝরবে চেখ জল,
তাহলে হয়তো পাবে ভালোবাসা, ফুটবে কমল!
মহাদেব সাহা
৭. কেন ভালোবাসি, কেন কষ্ট পাই
তুমি ও যেমন জানো আমিও তাই!
তবু ভালোবাসি, তবু ভেজা চোখ
এভাবেই বেঁচে থাকা, এভাবেই শোক!
মহাদেব সাহা
৮. তোমাকে দুচোখ মেলে
দেখেছি যে মাত্র একবার
সমস্ত জীবনে শুধু
এটুকু সাফল্য আমার!
মহাদেব সাহা
৯. শরীর জুড়ে আমার শুধু
ভালোবাসার গন্ধ
কেউ বা তাকে ভাল বলে
কেউ বা বলে মন্দ;
আকাশে মেঘ হৃদয়ে ঝড়ে
যতই চলে দ্বন্দ্ব
তুমি ঠিকই জানো আমি
ভালোবাসায় অন্ধ!
মহাদেব সাহা
১০. আমাকে তোমার মনে নেই তবু
ভুলতে পারো না,
ভুলে গেছ তাই হয়ে আছি আরো
স্বচ্ছ ধারণা!
মহাদেব সাহা
১১. ভালোবাসা, এই ভালোবাসা এক নাম
জানি না তাহার প্রকৃতি ও পরিণাম;
তবু তার পায়ে নিজেকেই রাখি জমা
বিনিময় যদি পাই আমি তার ক্ষমা।
মহাদেব সাহা
১২. ফুটেছে ফুল ঠোঁটের মতো লাল
আকাশে চাঁদ বিরহী চিরকাল।
মহাদেব সাহা
১৩. কোথায় পেয়েছ তুমি এই হাসি, প্রাণ কেড়ে নেয় দুটি চোখ।
মহাদেব সাহা
১৪. তুমি দিয়ে শুরু একটি বাক্য
শেষ তার তুমিহীন
একেই আমরা বলেছি তো প্রেম,
বিচ্ছেদ চিরদিন।
মহাদেব সাহা
১৫. অবশেষে সবই ঝরে যায়
সময়ের হলুদ হাওয়ায়,
স্মৃতি মাত্র লিখে রাখে নাম
সেইখানে আমিও ছিলাম!
মহাদেব সাহা
১৬. হারাই যাকে তাকে তো পাই
তাকে তো আগে পাই,
পাই বলে তো হারাই আমি
পাই বলে তো হারাই!
মহাদেব সাহা
১৭. যদি তুমি
আমার এ ওষ্ঠ থাকো চিরদিন
বৃষ্টিহীন তপ্ত মরুভূমি,
যদি না কখনো এই বর্ষার
মেঘ হও তুমি।
মহাদেব সাহা
১৮. আমার আকাশ জুড়ে
আর কোন চাঁদ নেই,
আমার আকাশ জুড়ে তুমি,
আলোকিত হয় তাতে
এই সত্তা, এই পটভূমি।
মহাদেব সাহা
১৯. আর যে -ই হোক, ভালোবাসা, আমি
তোমার যোগ্য নই—
তুমি যে বিমুখ সে -দুঃখ তাই
নিজেই নিরবে সই ৷
মহাদেব সাহা
২০. খুব বেশি চাই না কিছুই
নিজের যে টুকু আছে ভুঁই,
তুমি তাতে দিলে স্নিগ্ধ জল
ফুটবে কি ব্যথিত কমল!
মহাদেব সাহা
২১. তোমার বিষণ্ণ মুখ দেখে মনে হয়,
সব ফুল ঝড়ে গেছে পৃথিবীতে
বড়ো দুঃসময় ৷
মহাদেব সাহা
২২. কবির কি আছে আর
ভালোবাসা ছাড়া,
সমস্ত উজাড় করে
হাতে একতারা ৷
মহাদেব সাহা
২৩. আমি নিরিবিলি একলা বকুল
তাতে কার ক্ষতি সামান্য ফুল
যদি ঝড়ে যাই!
ভালোবাসে তবু এই উপহার
ঝড়া বকুলের ঝড়া সংসার
যেন রেখে যাই ৷
মহাদেব সাহা
২৪. কারো হাতে বাঁশি নেই, নিজেকে বাজাও
নিজেই পাখির শিস, নিজেকে শোনাও,
কোনোখানে মেঘ নেই, নিজে মেঘ হও
পৃথিবী ফেরায় মুখ, নিজে কথা কও।
মহাদেব সাহা
২৫. মেসেজ কেন ?
আমি তোমার হাতের লিখা চিঠিখানা চাই
ভুল বানান, বাঁকা অক্ষর,
কিচ্ছু ক্ষতি নাই।
মহাদেব সাহা
২৬. মনে রেখো আমার ভ্রমণ, চলে যাওয়া মনে রেখো এই পথ, এই দুঃখ পাওয়া!
মহাদেব সাহা
২৭. একেবারে তছনছ হয়ে গেছে ভিতর-বাহির
কিছুই আগের মতো নেই, ওলটপালট
ছত্রখান সবকিছু ; মেলে না কিছুই আর
মুহূর্তে পড়েছে ঝরে সহস্র গোলাপ ।
আকাশটা উল্টে গেছে, বনভূমি হয়ে গেছে
পাথর-কংক্রিট ; কী উদ্ভট স্বপ্নে দেখি
স্তব্ধ প্রেতপুরী ; এ কেমন বেঁচে থাকা --
কিছুই সচল নেই, ঘূর্ণাবর্ত, মুখ জলে ঢাকা ।
মহাদেব সাহা
২৮. তোমাকে রাখবো আমি কোনখানে এই অবেলায়
যা ছিলো আমার সব বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজে যায়
তোমাকে কোথায় রাখি অবেলায় ফোটা পদ্মফুল
আমার কিছুই নাই শূন্যহাত বিষণ্ণ ব্যাকুল
তোমাকে কোথায় রাখি, তোমাকে কোথায় বলো রাখি
এমন সাধ্যও নাই তোমাকে দুয়ার খুলে ডাকি
তোমাকে রাখবো আমি কোনখানে এই অবেলায়
আমার যা ছিলো সব বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজে যায়।
মহাদেব সাহা
২৯. কাগজ পড়ার মতো খুঁটিয়ে খুটিয়ে
আমাকে যখন তুমি পড়ো,
তখন আমার কি হয়, তুমি জানো ?
ভয় হয়, লজ্জা হয়, হৃদকম্প হয়,
হই ভয়ে আরো জড়সড়।
মহাদেব সাহা
৩০. একমাত্র তুমি মুখ তুলে চাওনি বলেই
ভিতরে-বাহিরে এই অপার ব্যর্থতা
শুধু তুমি মুখ তুলে চাওনি বলেই
মরুভূমি গ্রাস করে এখন আমাকে।
মহাদেব সাহা
৩১. তুমি একটু কাছে এসো,
তোমাকে একটু ভালো করে দেখি,
সারাজীবন এতো কিছু হলো,
কিন্তু তোমাকে দেখাই হলো না।
মহাদেব সাহা
৩২. আর একটা দিনও যদি বাঁচি
তোমাকেই ভালোবেসে যাবো
ঘাসে ও লতায় মিশে এইখানে
মাটিতেই শরীর নোয়াবো।
মহাদেব সাহা
৩৩. আমাদের সেই কথোপকথন,
সেই বাক্যালাপগুলি টেপ করে রাখলে
পৃথিবীর যে-কোনো গীতি কবিতার
শ্রেষ্ঠ সংকলন হতে পারতো।
মহাদেব সাহা
৩৪. তোমার সাথে রাগ করা মানে
পৃথিবীর সব আনন্দ হারানো, তোমার
সাথে রাগ করা মানে, ধ্বংসের পথে দুই পা বাড়ানো।
মহাদেব সাহা
৩৫. বেঁচে আছি এইতো আনন্দ,
এই আনন্দে আমি সব আঘাত মাথা পেতে নিবো।
মহাদেব সাহা
৩৬. টেলিফোন ঘােরাতে ঘােরাতে আমি ক্লান্ত। ডাকতে ডাকতে একশেষ; কেউ ডাক শােনে না, কেউ ফিরে তাকায় না এই হিমঘরে ভাঙ্গা চেয়ারে একা বসে আছি। এ কী শাস্তি তুমি আমাকে দিচ্ছাে ঈশর। এভাবে দগ্ধ হওয়ার নাম কি বেঁচে থাকা।
মহাদেব সাহা
৩৭. আমি পাথর সরাতে পারি, উপেক্ষা পারি না।
মহাদেব সাহা
৩৮. এক কোটি বছর হয় তােমাকে দেখি না একবার তােমাকে দেখতে পাবাে এই নিশ্চয়তাটুকু পেলে বিদ্যাসাগরের মতাে আমিও সাঁতরে পার হবাে ভরা দামােদর।
মহাদেব সাহা
৩৯. ও আমার অসুখ নাই আর; কাল সারারাত থােকা থােকা মৃত্যু পান করে আমি সুস্থ হয়ে গেছি আর কোন অসুস্থতা নেই আজ, আজ ভালাে আছি।
মহাদেব সাহা
৪০. তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে রৌদ্রদগ্ধ | হয়ে গেছে - হৃদয়ের ঘন বনাঞ্চল। বর্ষণ-অভাবে সেখানে দিয়েছে দেখা ব্যধি, ও মড়ক। একমাত্র তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে এই গ্লানি এই পরাজয়।
মহাদেব সাহা