১. তোমরা চাও মেয়েরা তোমাদের জন্য প্রাণ ঢেলে সবকিছু করবে কিন্তু তাদের যদি সামান্য বিচ্যুতি ঘটে তোমরা সহ্য করতে না।
সমরেশ মজুমদার
২. বাঙালি নারী জাতির সবচেয়ে বড় শত্রু নারীরাই।নিজের জীবনের অপ্রাপ্তি হতাশা তাহারা বুকে বহন করিয়া চলেন যতদিন না আর কোন নারীর ওপর তাহা বর্ষণ করিতে সক্ষম হইতেছেন।
সমরেশ মজুমদার
৩. নদীর একদিকে বাঁধ দিলে অন্যদিক ভেসে যেতে পারে। কিন্তু দুটো দিক যদি বেঁধে ফেলা যায় তাহলে জল নিয়ন্ত্রিত হবেই। আপনি যদি আমাকে সেই সুযোগ দেন তাহলে। সোনার সিংহাসন আর টুকরো-টুকরো হবে না।
সমরেশ মজুমদার
৪. অনিমেষ সোজা মুখের দিকে তাকাল। ট্রেনটা এবার ছাড়ছিল। মেয়েটা হাসল, "নিজে কখনো ছোট হইনি, আজ হচ্ছি। আমার নাম মাধবীলতা মুখার্জী।"
"মাধবী? উঁহু, ফুল নয়, আমি শুধুই লতা, মাধবীলতা।
সমরেশ মজুমদার
৫. সম্পর্ক যখন বোঝা হয়ে যায় তখন তাকে নামিয়ে ফেলাই ভালো।
সমরেশ মজুমদার
৬. তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না বলো?
‘পাগল’‘ আচ্ছা, তুমি আমাকে কতখানি ভালবাস’ ?
‘কি প্রমান চাও? আমি যদি কোনও অন্যায় কাজ করে এসে বলি, ক্ষমা করো, করবে? আমি সেটাকে অন্যায় বলে ভাববই না ‘আমি যদি বলি পাঁচ বছর আমার জন্য অপেক্ষা করো, আমি তোমার কাছে আসব, আসব , আসব । তুমি অপেক্ষা করবে? হ্যাঁ, আমি করবো।
সমরেশ মজুমদার
৭. একজীবনে কত কি ঘটে তখন মনে হয় সেটা সহ্য করা কি কষ্টকর। কোন সুখ এলে তা কত বিশাল বলে মনে হয়। কিন্তু সময় যখন তাকে অনেক পেছনে ফেলে দেয় তখন তার চেহারা কী ক্ষুদ্র হয়ে যায়। এমন কি নিশ্বাস ভারি হবার সুযোগও হয় না অনেক ক্ষেত্রে।
সমরেশ মজুমদার
৮. রাগারাগি, বকাবকির কারনে উত্তেজনা তৈরি হলে মেজাজ নিশ্চয়ই খারাপ হয় কিন্তু একেবারে শীতল ব্যবহার, নিরাসক্ত চাহনি যে আরও বেশি পীড়াদায়ক।
সমরেশ মজুমদার
৯. আচ্ছা, এত ছেলে থাকতে তুমি আমাকে ভালোবাসলে কেনো?
কী মনে হয় তোমার?
'জানি না।
কেন, তুমি কেন ভালোবাসলে?
অনিমেষ মাধবীলতার চোখের দিকে তাকাল। সেই চোখ হাসছে। মনে মনে সে বলল, তোমায় না ভালোবাসলে আমি মরে যেতাম। কিন্তু মুখে কিছু বলল না সে। কারণ মাধবীলতার চোখের হাসি এখন ঠোঁটে ছড়িয়েছে। অনিমেষ হেসে ফেলল শব্দ করে। ওদের দশটা আঙুল এখন পরস্পরকে আঁকড়ে ধরেছে বিশ্বাসে।
সমরেশ মজুমদার
১০. যখন স্রোত উত্তাল হয় তখন কচুরিপানা ভেসে যায় তাতে।
সমরেশ মজুমদার
১১. চোখ যখন বন্ধ হয় তখন মন কাজ করে যায়। মন দিয়ে দেখা শুরু হয়। সারাজীবন ধরে এই চোখদুটো যা দেখেছে তা বুকের মধ্যে সাজানো আছে। দৃষ্টি অচল হলেই সেগুলো মনের সামনে চলে আসে।
সমরেশ মজুমদার
১২. নদী তো একই থাকে , আকাশ পাল্টায় । পাল্টায় বলেই নদীর জলকে এক এক সময় এক এক রকম দেখায় । তোমরা, মেয়েরা হলে ওই আকাশের মতো।”
সমরেশ মজুমদার
১৩. অপেক্ষা করা অত্যন্ত বিরক্তিকর, কিন্তু তার সঙ্গে যদি যন্ত্রনা মেশে তাহলে যা দাঁড়ায় তা অনুভব করছিলাম প্রতিটি মুহূর্তে।
সমরেশ মজুমদার
১৪. মৃতদেহ, যত প্রিয়জনের হোক, মাটির তলায় শুইয়ে দেওয়ার পর প্রথম মাসের কষ্টটা দ্বিতীয় মাসে তত তীব্র থাকে না। প্রথম বছরের স্মৃতি দ্বিতীয় বছরে ঝাপসা হয়ে আসে।
সমরেশ মজুমদার
১৫. দু’রকমের ভালোবাসা হয় । একটা ওপর ওপর, সেটা ভালো লাগা এবং ভালোবাসার ঠিক মাঝামাঝি । দায়িত্ব নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকে না । আর একটা প্রাণ থেকে, যে লোকলজ্জাকেও ভয় পায় না।
সমরেশ মজুমদার
১৬. আমাদের চারপাশে কত সাপ প্রতিদিন হাঁ করে বসে আছে দুর্বল মানুষকে গিলে ফেলতে, দেখেও মুখ ঘুরিয়ে থাকি। এগিয়ে গিয়ে আটকাবার চেষ্টা করি না।
সমরেশ মজুমদার
১৭. মানুষের কথা বলার সময় হুশ থাকে না বলেই কথা না রাখতে পারার সময়ের কথা ভাবে না।
সমরেশ মজুমদার
১৮. মেয়েদের বন্ধুত্ব ভাঙার সবচেয়ে বড় কারণ তাদের কেন্দ্রচ্যুতি । বিয়ের পর যেন তাদের আর এক জীবন এসে যায়।
সমরেশ মজুমদার
১৯. আমরা সবাই ভালবাসার কাঙাল হই, কেউ ভালবাসা দেবার জন্য পাগল হই না।
সমরেশমজুমদার
২০. সংসার থাকবে মাছের মত। সাঁতার কাটবে, ঘুরবে ফিরবে কিন্তু গায়ে জল লাগাবে না।
সমরেশ মজুমদার
২১. খুব কম মানুষ নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন।
সমরেশ মজুমদার
২২. চট করে কাছে গিয়ে কিছু দাবি করা যায় না , ভালবাসি শব্দটা সেই দূরত্ব অবধি পৌঁছায় না।
সমরেশ মজুমদার
২৩. দেখুন এমন অনেক প্রশ্ন আছে যার উত্তর জানতে না চাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
সমরেশ মজুমদার
২৪. ভুলতে চেয়েছিলাম। ভুলেও গিয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম সেটাই ভুল ভেবেছি।
সমরেশ মজুমদার
২৫. পণ্ডিতজনদের সঙ্গে সময় কাটালে জ্ঞানের পরিধি হু হু করে বেড়ে যায়।
সমরেশ মজুমদার
২৬. অল্প বয়সের রোমান্টিসিজম , বয়স বাড়লে আর থাকে না।
সমরেশ মজুমদার
২৭. পুরুষদের কাছে হৃদয় নিয়ে কোনও আকাঙ্ক্ষা একমাত্র নির্বোধ মেয়েরাই করে থাকে।
সমরেশ মজুমদার
২৮. তখন এখানে কিছু প্রজাপতি উড়ছিল। মেঘ ভাঙা ভাঙা রোদ ঘলে ঘলে পড়ছিল। আকাশের নীল শাড়িতে জড়িয়ে তুমি এলে। উড়ুক্কু চুল কপাল থেকে সরালে। বললে, ভালোবাসা নয়, অন্য কথা বলো।
সমরেশ মজুমদার
২৯. জল যত গভীর হোক, যত চাপ আমাদের ওপর থাকুক, চেষ্টা না ছাড়লে আমরা একসময় জলের ওপরে উঠে এসে বাতাস বুক ভরে নিতে পারবই।
সমরেশ মজুমদার
৩০. সাধারণ মানুষেরা চেনা মানুষের গল্প অসাধারণভাবে না লিখতে পারলে পাঠক-লেখকের মধ্যে আত্মীয়তা তৈরি হয় না। পাঠক শুধু দর্শক হয়েই হাততালি দেয়, বন্ধু হয়ে হাত জড়িয়ে ধরেন না। এই মুহূর্তে সেটাই আমার একমাত্র চিন্তার বিষয়।
সমরেশ মজুমদার
৩১. তোমাদের মেয়েদের এটা একটা মহৎ দোষ জানো তো–একটা ব্যাপার পেলে কিছুতেই তাকে তোমরা ছাড়তে চাও না।
সমরেশ মজুমদার
৩২. আজ আকাশ পরিষ্কার। একটু হিম বাতাস বইছে। রোদ ওঠেনি , চারধার বেশ ছায়াছায়া। প্রথমেই চোখ পড়ল গোলাপ কুঁড়িটার ওপর। ডাউস কুঁড়িটাকে গতকালও বেশ টাইট দেখাচ্ছিল। আজ মুখ খুলেছে। হয়তো বিকেলের মধ্যেই ফুল হয়ে দোল খাবে। দেখে মন ভালো হয়ে গেলো। বেতের চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিতেই হাওয়া বইল। শীত শীত হাওয়া। ওপরের পাহাড়টা এখন সাদা মেঘে ঢেকে গিয়েছে। আকাশের সঙ্গে প্রায় মিশে গিয়েছে ওর শরীর।
সমরেশ মজুমদার
৩৩. এই 'সময়' ওই একটা কাজ যথাযথভাবে করতে পেরেছে। মানুষের মন থেকে বিশ্বাস করার ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে স্বচ্ছন্দে।
সমরেশ মজুমদার
৩৪. আমরা খুব দ্রুত ভুলে যেতে ভালবাসি।
সমরেশ মজুমদার
৩৫. পৃথিবীতে এত চেনা মুখ যে সব মুখ মনে রাখা মুশকিল।
সমরেশ মজুমদার
৩৬. বিয়েটা জীবনের এমন কোনও একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নয় যে ওটা নিয়ে এত বেশি ভাবতে হবে।
সমরেশ মজুমদার
৩৭. খারাপ অভ্যাস মানেই সর্বনাশ।
সমরেশ মজুমদার
৩৮. সাহস আর হঠকারিতা এক জিনিস নয়।
সমরেশ মজুমদার
৩৯. এমন এক-একটা কন্ঠ আছে যা শুনলে মনে হয়, বুকের ভিতর কোথাও কিছু খালি জায়গা নেই, এক বিন্দুও না।
সমরেশ মজুমদার
৪০. ভালোবাসা হল বেনারসি শাড়ির মত, ন্যাপথালিন দিয়ে যত্ন করে, আলমারিতে তুলে রাখতে হয়। তাঁকে আটপৌরে ব্যবহার করলেই সব শেষ।
সমরেশ মজুমদার