শুভ কাজ করে রাত ১২ টার দিকে নির্জন রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে বাসার দিকে যাচ্ছে এমন সময় শুভর কানে একটা চাপা গোঙ্গানির আওয়াজ আসে।
শুভ তখন আওয়াজটাকে লক্ষ্য করে সেদিকে যেতে থাকে।
শুভ গিয়ে দেখে দুইটা লোক একটি মেয়েকে জোর করে কি সব করতেছে কিন্তু মেয়েটা বাচার জন্য অনেক চেষ্টা করতাছে। শুভ বুঝতে পারে যে এটা জোর করে করা হচ্ছে।শুভ তখন পকেট থেকে মোবাইল টা বেড় করে ফ্লাস জ্বালিয়ে যখন উচ্চ স্বরে বলে কে রে?
দুইটা লোক তখন মেয়েটিকে ছেড়ে সাথে সাথে দৌড়ে পালায়।
শুভ তখন মেয়েটিকে উদ্ধার করে।
-আপনার নাম কি আর বাসা কোথায়?(শুভ)
-মেয়েটি কান্নার জন্য কোনো কথা বলতে পারে না।
-প্লিজ কান্না করবেননা, যা হওয়ার হয়ে গেছে
-তা-ও কান্না বন্ধ করছে না।
শুভ খেয়াল করে দেখছে মেয়েটি ভয়ে কাপতাছে।
-আপনি কোথায় যাবেন?(শুভ)
-যাওয়ার জায়গা নেই(মেয়েটি কান্না সুরে)
-এই শহরে কোথায় থাকবেন? এটা ঠিক না করেই এই শহরে চলে আসলেন?
-আসছিলাম কিন্তু তারা রাখে নাই
-কে সে?
-আমার কাকা
-ওহহ
-হুমম
-আচ্ছা এখন কোথায় যাবেন?
-জানিনা, রাস্তায় এভাবে হাটতে থাকবো আবার কিছু মানুষ এসে ঝাপিয়ে পরবে বলে আওয়াজ করে কান্না করে দেয়।
আপনি কিছু মনে না করলে আমার বাসায় যেতে পারেন।
-আপনার মা বাবা কিছু বলবে না?
-আমার মা-বাবা নাই
-স্যরি
-আরে সমস্যা নাই,আসতে পারেন আমার সাথে
-কিন্তু
-আপনি আমাকে নিয়ে ভয় পাবেন না,আমি ওদের মতো না। আর যদি এমন ভাবেন তাহলে আসার দরকার নাই বলে শুভ সামনে হাটতে থাকে।তখন দেখে মেয়েটি শুভর পিছন পিছন হাটতে থাকে।
মেয়েটিকে নিয়ে বাসায় যাওয়ার পরে......
-এবার কি আপনার নাম জানতে পারি?
-মুক্তা
-ওহহহ
-আপনার নাম কি?
-শুভ
-ওহ
-আপনার মা-বাবা কোথায়?
-মা আছে কিন্তু বাবা নাই
-ওহহ
-হ্যা
-আচ্ছা এগুলো খেয়ে নেন।
-খাবো না
-কেনো?
-এমনি
-সারাজীবন কি না খেয়ে থাকতে পারবেন?
-মুক্তা তখন চুপ হয়ে আছে
-খেয়ে নিন
মুক্তা তখন ভেজা চোখগুলো উড়না দিয়ে মুছে খেয়ে নেয়।
খাবার খাওয়ার পরে
-আপনি এখন কি করবেন ভাবছেন? (শুভ)
-জানিনা
-পড়ালেখা করছেন?
-হ্যা
-কতটুকু?
-ইন্টার পরীক্ষা দিছি
-ওহহ,আচ্ছা আমি দেখবো কোন চাকরি ঝোগাড় হয় কি না।
-ওকে
-আপনি এখানে শুয়ে পরেন আমি সোফায় ঘুমাবো বলে একটা কম্বল নিয়ে সোফায় শুয়ে পরে।
সকালে শুভ উঠার আগেই মুক্তা উঠে বসে আছে।
শুভ উঠে রান্না করতে যাবে এমন সময় মুক্তা শুভর কাছে গিয়ে বলে আমি রান্না করতে পারি।
-আপনার মন খারাপ, এখন শুয়ে থাকুন
-আমরা গরিব,এমন কিছু ঘটতেই পারে বলে মুক্তা আবার চোখের পানি ছেড়ে দেয়।
-এই আমি বলছিনা আমার সামনে কান্না না করতে?
-মুক্তা ভেজা চোখে শুভর দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে
-এখন যাও
-নাহ আমি রান্না করবো বলে শুভ কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চুলার দিকে গিয়ে দাড়ায়।
শুভ তখন মুক্তার পিছনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে রান্না করা দেখছে।
রান্না শেষে নাস্তা করে শুভ কাজের জন্য বের হবে এমন সময় মুক্তা সামনে গিয়ে দাড়ায়...
-কিছু বলবেন?(শুভ)
-আবার কখন আসবেন?
-রাতের ১০/১১টায়
-এত রাত কেনো?
-কাজ করি তাই
-কিসের কাজ?
-মোটর মেকানিক
-ওহহ,সাবধানে করিয়েন
-ওকে,আপনিও সাবধানে থাকবেন।দরজা লাগিয়ে রাখবেন।
-আচ্ছা
-যদি বোরিং ফিল করেন তাহলে টিভি লাগিয়ে কিছু দেখবেন।
-আচ্ছা
শুভ এসব বলে বেড়িয়ে যায়।
শুভ বেড়িয়ে যাওয়ার পরে মুক্তা মনে মনে বলে ছেলেটা অনেক পরিশ্রমী আর অনেক ভালো।
বিকালের দিকে মুক্তা রান্না করে শুয়ে থাকে।
১০ টার দিকে শুভ আসে।শুভ আসার পরে রান্না করতে গিয়ে দেখে সব কিছু রান্না করে টেবিলে সাজিয়ে রাখছে।
-তুমি এসব রান্না করতে গেলে কেনো?
-কেনো, রান্না করলে কি অসুবিধা, নাকি রান্না ভালো না?
-না ঠিক তা না
-তাহলে
-আচ্ছা খেয়েছেন?
-নাহ আপনার জন্য বসে আছি
-কাল থেকে আর এমন করবেননা,খেয়ে নিবেন।
-একা একা খেতে ভালো লাগেনা বলে মুক্তা শুভকে প্লেটে ভাত দিয়ে দেয়।
দুজন খাওয়া-দাওয়া করার পরে শুভ সোফায় ঘুমাতে যায় এমন সময়...
-এই কোথায় যাচ্ছেন?(মুক্তা)
-সোফায় ঘুমাবো
-এখানে ঘুমালে সমস্যা কি?
-কিছু না
-তাহলে মাঝখানে একটা বালিশ দিয়ে শুয়ে পরেন।
তখন মাঝখানে একটা বালিশ দিয়ে শুয়ে পরে।
সকালে ঘুম থেকে উঠার পরে দেখে শুভর হাত মুক্তার.............
মুক্তার যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন খেয়াল করে দেখে শুভর এক হাত তার তলপেটে আর মুক্তার উপুর হয়ে এক পা শুভর শরীরে রাখা।মুক্তার তখন কেমন যেনো অদ্ভুত ভালো লাগছিলো,
মুক্তা তখন শুভর হাতে হাত ধরে হাতটা তার তল পেট থেকে নামিয়ে দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে।
মুক্তা ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করে নাস্তা রেডি করে আয়নার সামনে বসে বসে সাজছে। শুভর তখন ঘুম ভাঙ্গে।
শুভ তখন চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে যেনো একটা পরী তার রুমের আয়নার সামনে বসে আছে। এভাবে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকার পরে,
-এভাবে কি দেখছেন?(মুক্তা)
-নাহ কিছু না
-হুমম এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে আসুন।
শুভ তখন বিছানা ছেড়ে নাস্তা করে তার কাজে যায়।
রাতের দিকে শুভ আসার পরে ....
-খাবার খেয়ে শুয়ে পরেন(মুক্তা)
-একটু পরে খাবো,আপনি খাইছেন?
-নাহ
-কেনো?
-আপনার জন্য অপেক্ষা করতেছি
-খেয়ে নিন
-আগে আপনাকে খাওয়াবো তারপরে আমি খাবো।
শুভ তখন মুক্তাকে সাথে করে নিয়ে টেবিলে বসে দুজনে খাওয়া-দাওয়া করার পরে বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে যায়।
শুভ মাঝরাতে সজাগ হওয়ার পরে দেখে মুক্তাকে সে কোল বালিশের মতো জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। শুভ তখন সাথে সাথে নিজকে ছাড়িয়ে নেয়।
শুভ তখন মুক্তাকে খেয়াল করে দেখে সে অঘোরে ঘুমাচ্ছে।
ঘুমের মধ্যে কাউকে এত সুন্দর লাগে সে জানতো না।
শুভ এসব ভেবে অপর পাশ হয়ে শুয়ে পরে।
প্রতিদিনের মতো নাস্তা রেডি করার পরে মুক্তা শুভকে ডেকে ঘুম থেকে উঠায়।
শুভ নাস্তা করে সে তার কাজের উদ্দেশ্যে বেড় হয়ে যায়।
রাতে ১২.৩০ বেজে গেছে শুভ এখনো আসছে না,মুক্তার খুব ভয় আর চিন্তা হচ্ছে।
রাত ১ টার সময় দরজায় নক করার পরে মুক্তা দৌড়ে এসে দরজা খুলে দেখে শুভ হাতে ব্যান্ডেজ করা।
-হাতে কি হয়ছে?(মুক্তা)
-কেটে গেছে
-কিভাবে?
-গাড়ির ধাক্কা লাগছিলো
-সাবধানে থাকতে পারেন না?
-সাবধানেই ছিলাম
-সাবধানে থাকলে এসব কিভাবে হলো
-গাড়ির ড্রাইভারের চোখে হয়ত ঘুম এসে পরছে।
মুক্তা তখন শুভকে দুই হাত দিয়ে ধরে বিছানায় বসায়।বিছানায় বসানোর পরে একটা ভেজা গামছা দিয়ে শুভর সারা শরীর মুছে দিচ্ছে।শুভর কাছে মনে হচ্ছে যেনো এটা তার বউ।
-হয়ছে তো আর মুছতে হবে না
-এখানে বসেন আমি খাবার নিয়ে আসছি
-খেতে মন চাইছে না
-না খেলে ঔষধ কিভাবে খাবেন?
-শুভ চুপ হয়ে থাকে।
মুক্তা তখন প্লেটে সবকিছু নিয়ে এসে নিজের হাতে মেখে শুভকে খাইয়ে দিচ্ছে।
শুভ প্রথম না করছিলো কিন্তু এখন মনে চাইছে শুধু আজকের জন্য না সারাজীবনের জন্য মুক্তার হাতে খেতে।
শুভকে খাইয়ে দেওয়ার পরে মুক্তা ও খেয়ে শুভকে সাথে করে নিয়ে শুয়ে পরে।
এভাবে কয়েকদিন চলার পরে একদিন শুভ মুক্তাকে বলে...
- আমার সাথে এক জায়গায় যেতে পারবেন?(শুভ)
-কোথায়?
-একটা বিয়ের অনুষ্টানে
-আমি যাবো কেনো?
-ওরা বলছিলো যেনো তোমাকে নিয়ে যায়।
-আমি যে আপনার সাথে থাকি এটা কি ওরা সবাই জানে?
-হ্যা
-মুক্তা তখন শুভর দিকে রাগি চোখে তাকায়
-কি হয়ছে?
-কিছু না বলে মুক্তা রান্না ঘরের দিকে যেতে থাকে এমন সময় শুভ একটু জোরে বলে কালকে দুপুরের দিকে সময়মত রেডি হয়ে নিয়েন বলে শুভ কাজে চলে যায়।
দুপুরের দিকে শুভ বাসায় এসে দেখে মুক্তা শাড়ি পরে সেজে বসে আছে।
নীল শাড়িতে মুক্তাকে একদম অপ্সরীর মতো লাগছিলো।
-এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?
-না এমনি
-ওহহ
-ওখানে গিয়ে আমাকে তুমি করে বলতে হবে
-কেনো?
-তুমি করে বলবা
-আচ্ছা।
বিয়েতে যাওয়ার পরে
শুভর ফ্রেন্ড এসে
-ভাবি কেমন আছেন?
মুক্তাকে ভাবি বলে ডাকার পরে মুক্তা শুভর দিকে তাকায়।
শুভ তখন অন্যদিকে চেয়ে থাকে
-হ্যা ভালো, আপনি কেমন আছেন?
-হ্যা ভালো।
শুভর বন্ধু শুভ আর মুক্তাকে একটা রুমে নিয়ে যায়।রুমে নিয়ে যাওয়ার পরে...
-শুভ ভাবিরে নিয়ে এখানে বসে গল্প কর, বলে শুভর বন্ধু শুভ আর মুক্তাকে রুমে রেখে চলে যায়।।
-এই আমি আপনার কি হয়?
-শুভ তখন চুপ হয়ে আছে।
-কথা বলেননা কেনো?
-কি বলবো?
-আমার পরিচয় ওদের কাছে কি বলছেন?
-এখন চুপ করো প্লিজ
-না না আগে বলেন
-বাসায় গিয়ে বলবো
-না এখন বলতে হবে না হলে আমি কিছু খাবো না বলে ঠোট বাকিয়ে অন্য দিকে চেয়ে থাকে
-ওরা জানে তুমি আমার............
-ওরা সবাই জানে তুমি আমার বউ(শুভ)
-মানে?
-হ্যা
-কিন্তু এটা কেনো বললেন?
-এই সমাজে একটা যুবকের সাথে একা রুমে একটা মেয়ে বিয়ে ছাড়া থাকে সেটা জানলে এই সমাজের মানুষগুলো মেনে নিবে না।
-তার জন্য এটা বলতে হবে?
-শুভ তখন মুক্তার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।
শুভর এমন চাহনি দেখে মুক্তা হেসে দেয়।
-হাসো কেনো?
-তুমি ভয় পাইছো তাই
-আমি ভয় পাই না
-হয়ছে হয়ছে আর ভাব নিতে হবে না। বলে খেয়ে গাড়ি করে বাসায় চলে আসে।
বাসায় আসার পরে শুভ সন্ধ্যার দিকে বাসার বাহিরে যাবে তখন মুক্তা দরজায় দুই হাত দিয়ে আটকিয়ে
-এখন কোথায় যান?(মুক্তা)
-কাজে
-কেনো?
-এমনি
-এত কাজ করে যে টাকা জমাচ্ছেন সেগুলো কার জন্য?
-ভবিষ্যতের কথা ভেবে
-নিজকে নিয়ে একটু ভাবেন, আর এখন থেকে সকাল ১০ টায় কাজে যাবেন আর বিকাল চারটার আগে বাসায় ফিরবেন।
মুক্তার মুখ থেকে এসব কথা শুনে শুভ মুক্তার দিকে চেয়ে আছে
-হনুমানের মতো এভাবে না তাকিয়ে থেকে শুয়ে থাকেন।
-তুমি এখন কি করবা?
-ছাদে গিয়ে বসে থাকবো
-তাহলে আসো দুজনই ছাদে যায়।
এরপর শুভ আর মুক্তা দুজন ছাদে গিয়ে বসে থাকে।
ছাদে যাওয়ার পরে মুক্তা কথা বলছে আর শুভ মুক্তার ঠোট নাড়ানি দেখছে।
মুক্তা এটা খেয়াল করে হঠাৎ চুপ হয়ে মুখে মুচকি হাসি রেখে শুভর চোখে চোখ রেখে ভ্রু কুঁচকিয়ে চোখের ভাষায় জানতে চাইছে কি জন্য এভাবে চেয়ে আছে।
শুভ তখন একটা হাসি দিয়ে অন্য দিকে চেয়ে আছে।
-এই শুনেন(মুক্তা)
-হ্যা বলো
-আমার না একা একা থাকতে ভাল্লাগেনা
-আমার তো আর কেউ নেই
-হুমমম
-থাকলে কাউকে নিয়ে আসতাম তোমার একাকীত্ব দূর করার জন্য
-আচ্ছা এখন আজান দিবে তুমি মসজিদে যাও,আমি বাসায় নামাজ পরে নিবো।
-ওকে
শুভ যখন পান্জাবি পরে তখন হাতের বোতাম লাগানোর জন্য কয়েকবার করে চেষ্টা করতাছে কিন্তু পারছে না।
মুক্তা তখন এসে শুভর পান্জাবির বোতাম ঠিকঠাক ভাবে লাগিয়ে দিচ্ছে আর শুভ ভাবছে মুক্তা যদি সারাজীবন এভাবে বোতাম লাগিয়ে দিতো।
-এই মিস্টার হয়ে গেছে।সাবধানে রাস্তা চলাচল করবেন
-আচ্ছা
-নামাজ পরে একদম সোজা বাসায় আসবেন,আবার কোথায় দেরি করবেন না
-ওকে
শুভ তখন বের হয়ে আর মুক্তা দরজায় দাড়িয়ে শুভকে দেখছে আর ভাবছে আল্লাহ এমন সহজ সরল মানুষটা না থাকলে হয়তো আমি আজ এই পৃথিবীতে বাচতে পারতাম না। মুক্তা নিজকে নিজে প্রশ্ন করছে, আমি ওর সাথে সারাক্ষণ থাকি,সারারাত এক বিছানায় ঘুমায় কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয় নাই বা কোনো লোভী দৃষ্টিতে দেখে নাই।
আল্লাহ তুমি ওরে ভালো রাইখো বলে নিজে নিজে চোখের পানি ফেলে দেয়।।
মুক্তা ফ্রেশ হয়ে নামাজ পরে শুভর অপেক্ষায় বসে আছে।
শুভ নামাজ পরে রাস্তা দিয়ে হাটছে আর ভাবছে,মুক্তার মতো এমন একটা মায়াবী মেয়েকে জীবনসঙ্গী হিসাবে পেলে কতো ভালো হতো?
সারাজীবন ওর সাথে থাকতে পারতাম, আর ওর চোখের চাহনিতে হাড়িয়ে যেতাম। এসব ভাবতে বাসায় এসে দরজা নক দেওয়া পরে মুক্তা দরজা খুলে।
-এগুলো কি আনছেন?(মুক্তা)
-তোমার পছন্দের জিনিস
-মানে?
-আচার আর চকোলেটি
-সত্যিইইই
-হ্যা
-মুক্তা তখন শুভর হাত থেকে নিজে নিজেই এগুলো নিজের হাতে নিয়ে শুভর দিকে চেয়ে একটা হাসি দেয়।।
সন্ধ্যার পরে দুজন বসে আড্ডা দিচ্ছে এমন সময় শুভ হঠাৎ মুক্তাকে বলে,তুমি তোমার মার খবর নাও না কেনো?
-কিভাবে নিবো?
-মোবাইল নাম্বার নাই?
-মা মোবাইল চালায় না কিন্তু একটা ভাবির নাম্বার আছে
-তাহলে ঊনার মোবাইলে ফোন দিয়ে হলেও তো জানতে পারো
-কিন্তু কার মোবাইল দিয়ে ফোন করবো?
-তুমি খুজলে কি আমি মোবাইল দিতাম না?
-মুক্তা তখন চুপ হয়ে আছে
-শুভ তখন মোবাইলটা হাত বাড়িয়ে দেয়।
মুক্তা তখন মোবাইল হাতে নিয়ে ভাবির নাম্বারে ফোন দেয়।
-ভাবি কেমন আছো?
-হ্যা ভালো, কিন্তু আপনি কে?(মুক্তাদের বাড়ির সম্পর্কে ভাবি লাগে)
-ভাবি আমি মুক্তা
-কিহহহ তুই মুক্তা?
-হুমমম
-কেমন আছিস?
-ভালো
-কি করিস এখন?
-নামাজ পরে বসে আছি,তুমি কি করো?
-আমিও
-ভাবি মা কেমন আছে, একটা মার কাছে দেও না, মার কন্ঠে মুক্তা ডাকটা শোনার জন্য অনেক ইচ্ছা হচ্ছে
-এটা শুনে মুক্তার ভাবি কান্না করে দেয়
-ভাবি তুমি কান্না করছো কেনো? সানির বাবা কি তুমাকে কিছু বলছে?
-মুক্তারে চাচি আম্মা আর বেচে নেই,তোর মা তখন একটা কথা বলছিলো আল্লাহ তুমি আমার মুক্তারে দেখে রাইখো,সানির বাবা তোরে অনেক জায়গায় খোজ করছে কিন্তু কোথায় পাই নাই
-এই কথা শুনে মুক্তার হাসি মুখটা নিমিষেই কালো হয়ে যায়।
মুক্তার হাত থেকে মোবাইলটা আপনাআপনি পরে যায় আর মুক্তার চোখ ভিজে যায়
-এই মুক্তা তোমার কি হয়ছে?
-মুক্তা তখন হাউমাউ করে কান্না করে শুভকে...............
চলবে...
Writer:- মো. নীল চৌধুরী