-এই মুক্তা তোমার কি হয়ছে?(শুভ)
-মুক্তা তখন হাউমাউ করে শুভকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
-আরে কি হয়ছে বলবা তো?
-আমার মা আর বেচে নেই বলে শব্দ করে কান্না করে দেয়।শুভর চোখ ও তখন ভিজে যায়।
-মুক্তা সবাই তো চিরদিন বেচে থাকে না,প্লিজ এখন আর কান্না কইরো না।
-আমার এই একটা মানুষ ই ছিলো যে আমাকে সবসময় কেয়ার করতো।এখন এগুলো কে করবে? আল্লাহ তুমি এত নিষ্টুর কেনো? আমার মা রে কি না নিলে পারতে না? আমি এখন কি নিয়ে বেচে থাকবো কার আশায় বাচবো, আমাকে কে ভাত মেখে খাইয়ে দিবে রে মা? বলে কান্না করতে থাকে।
-শুভ ও তখন কান্না করে দেয়।
কতক্ষণ পরে শুভ মুক্তাকে ভেজা তোয়ালে দিয়ে নাক মুখ মুছে বসিয়ে প্লেটে ভাত এনে মুক্তাকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য হাত এগিয়ে নেয়।
-আমি খাবো না
-কেনো?
-জানেন না আপনি?
-মুক্তা তুমি এই পরিস্থিতির স্বীকার আজকে আর আমি সেই ৭ বছর থেকে মা-বাবা দুজনকে হাড়িয়ে এতিমখানাতে বড় হয়ছি।রাস্তাঘাটের সবাই আমাদের মতো মানুষগুলো কে আবর্জনা মনে করে।মানুষ জানেনা এই পথে আসার রহস্য টা কি? মানুষ সেটা জানার ও চেষ্টা করে না।
পৃথিবীতে সবাই চিরস্থায়ী না। সবাই কে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে।
এসব বলে বুঝিয়ে শুনিয়ে মুক্তাকে খাওয়ায়।
ঘুমানোর সময় গুন গুন আওয়াজে আবারো কান্না করতে থাকে।
শুভ তখন মুক্তাকে কাছে টেনে নিয়ে কিছু কথা বলে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
শুভ ও তখন ঘুমিয়ে যায়।
সকালে শুভ রান্না করে মুক্তাকে নাস্তা করিয়ে দেয়।
নাস্তা করিয়ে দেওয়ার পরে শুভ কাজে যায়।
মুক্তা বিকালের দিকে ছাদে গিয়ে হাটু পেতে বসে বসে ভাবে আমাকে কে স্বপ্ন দেখাবে?
আমাকে কে নিজের হাতে খাইয়ে দিবে।
আল্লাহ তুমি কি এই মানুষটারে নেওয়ার জন্য এত দরকার ছিলো? আমি কাকে নিয়ে বাচবো?
মা আমি তোমাকে শেষ বারের মতো ও দেখতে পারলাম না, মা আমাকে মাফ করে দিও।
মা কত ইচ্ছা ছিলো আমাদের একটা সুখি পরিবার হবে যেখানে কোনো অভাব থাকবেনা।সকাল হলে রান্না করার জন্য ভাবতে হবে না।
এসব বলে বলে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে আর ঐদিকে শুভ দরজায় নক করে বুঝতে পারছে হয়তো ছাদে গেছে তাই অন্য দরজা দিয়ে তালা খুলে ভিতরে ডুকে দেকে ছাদে গিয়ে দেখে মুক্তা এভাবে কান্না করছে।
শুভ পিছন থেকে মুক্তার কাধে হাত রাখে।মুক্তা তখন আরেকটু শব্দ করে কান্না করে দেয়।
রাতে ঘুমানোর সময়...
-মুক্তা
-হুম বলেন
-কালকে এক জায়গায় যাবো
-কোথায়?
-তুমি একদিন বলছো না বড় নদীর হাটতে ভালো লাগে আর বড় বড় ঢেউ দেখতে ভালো লাগে ?
-হ্যা
-কালকে সকালে আমরা কক্সবাজারে যাবো।
-আমার মন ভালো নেই
-সেখানে গেলে মন ভালো হয়ে যাবে
-না গেলে হয় না?
-আমি গাড়ি ঠিক করে আসছি,কালকে বাসার কাছে এসে থাকবে
-আচ্ছা
-যাওয়ার সময় কিন্তু নীল শাড়িটা পরবা
-ওকে
-শুভ তখন মুক্তার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
সকাল হওয়ার পরে মুক্তা পেটিকোট পরে শাড়ি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
শুভ রুমে এসে এসব দেখে বলে..
-শাড়ি পরতে পারো না?(শুভ)
-নাহহ
-আর কোনোদিন শাড়ি পরো নাই?
-মা পরাইয়া দিছে বলে অস্ফুট শব্দে চোখের পানি ফেলে দেয়।
শুভ তখন হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে..
- শাড়িটা এখানে দেও
-মুক্তা তখন হাত বাড়িয়ে শাড়িটা দেয়।
-শুভ তখন মুক্তাকে শাড়ি পরিয়ে দেয়।
-এই কান্না করবানা বলে দিলাম(শুভ)
-মুক্তা তখন শুভর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে
-সবকিছু নিছো
-হ্যা
-তাহলে চলো
-আপনার পান্জাবির বোতাল লাগানো হয় নাই
-তোমার জন্য রাখছি
-মানে?
-তুমি লাগিয়ে দিবে তাই
-মুক্তা তখন ভেজা চোখে মুচকি হেসে শুভর কাছে এসে উকি দিয়ে বোতামগুলো লাগিয়ে দেয়।
-শুভ তখন মুক্তাকে নিয়ে গাড়িতে উঠে।
গাড়ি তার নিজস্ব গতিতে চলছে আর মুক্তা জানালার পাশে বসে আছে।
খোলা চুলে শুভর দেখা শ্রেষ্ট সুন্দরি এখন তার পাশে বসে আছে।
কতক্ষণ পরে মুক্তা মাথা হেলিয়ে শুভর কাধে মাথা রাখে।
শুভ ও চুলের মাতাল করা ঘ্রানে সেও ঘুমিয়ে যায়।
গন্তব্য স্থানে আসার পরে মুক্তা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে শুভ...........
গন্তব্য স্থানে আসার পরে মুক্তা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে মুক্তা এক হাত দিয়ে শুভর ডান হাতটা জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা রেখে আছে।আর শুভ ও মুক্তার মাথার সাথে মাথা লাগিয়ে রাখছে।
মুক্তা তখন হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে হালকা করে শুভর মাথাটা উঠানোর সময় দুজনের চোখে চোখ পরে।
মুক্তা তখন নিচের দিকে লজ্জা পাওয়ার মতো চেয়ে থাকে।
মুক্তার এমন চাহনি দেখে শুভ মনে মনে বলে আল্লাহ কিভাবে একটা মানুষ এত সুন্দর হয়?
দুজন গাড়ি থেকে নামার পরে একটা ফ্লাটের দিকে যায় যেখানে কাপল দের রুম ভারা দেওয়া হয়।
-আমাদের একটা রুম লাগবে
-স্যার, কিছু মনে করবেন না, আপনাদের মধ্যে কিসের সম্পর্ক?
-শুভ তখন মুক্তার দিকে তাকায়
-আমরা স্বামী স্ত্রী বলে শুভর এক হাত জড়িয়ে ধরে (মুক্তা)
-শুভ তখন মুক্তার দিকে অবাক চোখে তাকায়।মুক্তা তখন শুভকে চোখের ভাষায় সামনের দিকে তাকাতে বলে।
রুম নেওয়ার পরে,রুমে প্রবেশ করার পরে
-ওখানে এটা বলছো কেনো?(শুভ)
-কি বলছি?
-আমরা স্বামী স্ত্রী
-এটা না বললে কি আমরা এখানে বাসা পাইতাম? সারা রাত রাস্তায় কাটানো লাগতো
-সত্যি সত্যি হওয়া যায় না?
- বিড় বিড় করে কি বলছেন?
-না কিছু না।
-হুমম এটা-ই ভালো
দুজনে শুয়ার পরে
-আজকে কেনো জানি ঘুম আসছে না(মুক্তা)
-কেনো?
-জানিনা
-ওহহ
-হ্যা, আপনি কি কোনো গল্প পারেন না?
-হুম পারি
-তাহলে বলেন
-এখন?
-তো কখন?
-পরে হলে হয় না?
-আমার এখন ভালো লাগছে না, আর আপনি পরে গল্প শুনিয়ে কি করবেন? এখন শোনালে শুোনান না শুনালে নাই বলে ঠোট বাকিয়ে ভ্যাংচি কেটে অন্যপাশে মুখ করে চিত হয়ে শুয়ে থাকে।
-আচ্ছা বলি
-ওকে বলেন
-কিছু মনে করা যাবে না
-ওকে, আগে বলেন
-তাহলে শুনো
ক্লাস টু-তে এক পিচ্চি মেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলছে, সবার আগে গল্প পড়তে গল্পগুলো ভালোবাসার পেজে লাইক করুন টিচার টিচার, আমার আম্মু কি প্রেগন্যান্ট হতে পারবে?
টিচার বললেন, তোমার আম্মুর বয়স কত সোনা?
পিচ্চি বললো, চল্লিশ।
টিচার বললেন, হ্যাঁ, তোমার আম্মু প্রেগন্যান্ট হতে পারবেন।
পিচ্চি এবার বললো, আমার আপু কি প্রেগন্যান্ট হতে পারবে?
টিচার বললেন, তোমার আপুর বয়স কত সোনা?
পিচ্চি বললো, আঠারো।
টিচার বললেন, হ্যাঁ, তোমার আপু প্রেগন্যান্ট হতে পারবে।
পিচ্চি এবার বললো, আমি কি প্রেগন্যান্ট হতে পারবো?
টিচার হেসে বললেন, তোমার বয়স কত সোনা?
পিচ্চি বললো, আট।
টিচার বললেন, না সোনা, তুমি প্রেগন্যান্ট হতে পারবে না।
এ কথা শোনার পর পেছন থেকে ছোট্ট বাবু পিচ্চিকে খোঁচা দিয়ে বললো, শুনলে তো? আমি তো তখনই বলেছি, আমাদের চিন্তা করার কিছু নেই
-হি হি হি(মুক্তা)
-শুভ মুক্তার এই হাসিটা আজ প্রথম দেখছে।ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরে অনেক কাছ থেকে বাকা দাতের হাসি দেখতে আর ঠোটের কোনে তিলটাতে চুমু খেতে।
-এই কি ভাবছেন?(মুক্তা)
-কিছু না
-এগুলো শিখছেন কোথায় থেকে?
-তোমার দাদা এসে শিখেয়েছিলো আর বলছিনো আমার নাত্নিটাকে সবসময় হাসি মুখে রাখবি।
-হয়ছে আর বানিয়ে বানিয়ে বলা লাগবে না এখন ঘুমিয়ে যান,গুড নাইট
-তখন দুজন ঘুমিয়ে যায়।
মাঝরাতে মুক্তা দেখে শুভ মুক্তার কাছে এসে মুক্তাকে জড়িয়ে ধরে মুক্তার ঠোট কামড়ে ধরছে।মুক্তা তখন ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে।ঘুম থেকে উঠে দেখে শুভ মুক্তার কোমড়ের দিকে একহাত দিয়ে আরেকটা পা মুক্তার পায়ের উপর দিয়ে অঘোরে ঘুমাচ্ছে।
মুক্তা শুয়ে শুভর দিকে চেয়ে নিজে নিজে একটা হাসি দেয়।
মুক্তা তখন ভাবে ওর মতো কোনো মানুষ হয় না।
আল্লাহ যদি ওর বউ হওয়ার মতো কোনো সুযোগ দিতো, কতো ভালো হতো।সারাদিন রাত একে অপরকে জড়িয়ে ধরে রাখতাম।ধূর এসব কি ভাবছি? একটা মেয়ের যেটা সবচেয়ে দামি জিনিস আমি তো সেটা ই হাড়িয়ে ফেলছি।
কেনো ওর জীবনে গিয়ে ওকে ঠকাবো।সব মেয়েদের একটা স্বপ্ন থাকে ভালো একটা ছেলেকে স্বামী হিসাবে পেতে।কিন্তু আমি এমন স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকলে চলবে না। ওকে দেওয়ার মতো আমার কিছু নাই।
যতদিন পারি পেটে ভাতে থাকি তারপর না হয় কোনো বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসাবে থাকবো, এটা ভেবে মুক্তার চোখ ভিজে যায়।
তখন মুক্তার তল পেট থেকে হাতটা নিজে সরিয়ে দিয়ে পা গুলো ঠিক করে বিছানার একপাশে গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকে।এক সময় ঘুমিয়ে যায়।
আবার সকালে উঠে খেয়াল করে দেখে শুভ তার পিঠের দিকে বুক লাগিয়ে কোল বালিশের মতো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখছে।
মুক্তা তখন নিজকে ছাড়িয়ে নিয়ে গোসল করে এসে শুভকে উঠায় গোসল করে আসার জন্য।
শুভ ও তখন গোসল করে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বেড় হয়।
সকালে নদীর তীরে হাটছে।
সদ্য উঠা সূর্যের আলোটা পানিতে ঝিলিক ঝিলিক করছে।
মুক্তা হাটছে আর শাড়ির কুচিটা এক হাতে হালকা করে ধরে রাখছে।
-দেখেন নদীর ঢেউ টা কতো সুন্দর, ইচ্ছে করে ঢেউয়ের সাথে করে দূর অজানায় হাড়িয়ে যায়।
-হুমম দূর অজানায় হাড়িয়ে গেলে আমি তোমাকে পাবো কি করে?
-ধূর আপনি কিছুই বুঝেন না
-কিহ?
-একটু কবি হতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটা হতে দিলেন না
-হা হা হা, চলো নৌকায় উঠি
মুক্তা নৌকায় উঠার পরে অনেক খুশি হয়।
শেষবারের মতো নৌকায় উঠছিলো তার বাবার সাথে।আজ প্রায় ১২-১৩ বছর আগে।বাবা মারা যাওয়ার পরে নৌকায় আর উঠা হয় নি।
মু্ক্তা তখন পা পানিতে দিয়ে পানির সাথে বাচ্চাদের মতো খেলা করছে।
শুভ মুক্তার হাসি মুখটা দেখতে পেরে অনেক খুশি।
শুভর ইচ্ছা ছিলো আপাতত সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়ে মন ভালো করে দেওয়ার।শুভর কাছে মনে হচ্ছে সেটা শুভ পেরেছে।
দুজন দুপুরের দিকে রুমে আসে।রুমে আসার কতক্ষণ পরে ওয়াশ রুমে গিয়ে দেখে........
দুজনে দুপুরের দিকে রুমে আসে।
রুমে আসার পরে মুক্তা ওয়াশরুমে যায়।
শুভ তখন বাহির থেকে গিয়ে খাবার কিনে নিয়ে আসে।
বাহির থেকে এসে কোনোদিকে না তাকিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখ কপালে উঠে যায়।
শুভ সাথে সাথে দুই হাত দিয়ে চোখে ঢেকে ফেলে।
মুক্তা ততক্ষণে নিজকে সামলে নেয়।
মুক্তা গোসল শেষে বেড় হয়ে...
-ওয়াশরুমে প্রবেশ করতে হলে সবসময় সাবধানে প্রবেশ করতে হয়।
-ওয়াশরুমের দরজা তো হালকা একটু খোলা ছিলো তাই মনে করছি কেউ নেই(শুভ)
-দরজার মধ্যে ছিটকানি নেই,তাই ভিতর থেকে দরজা দেওয়া যায় না
-স্যরি
-হয়ছে স্যরি বলে কি হবে? যা দেখার সব তো দেখেই নিছেন
-না না আমি কিচ্ছু দেখিনি
-হুম খুব ক্ষিধা লাগছে,খাবার খাবো
-তুমি খেয়ে নাও,আমি গোসল করে এসে খেয়ে নিবো
-আপনি গোসল করে আসার পরে দুজনে একসাথে খাবো
-তুমি খেয়ে নাও।
-নাহহ
-ওকে ৫ মিনিট ওয়েট করো বলে শুভ ওয়াশরুমে ডুকে যায়।
গোসল শেষে খাবার খেয়ে দুজনে ঘুমায়।
সন্ধ্যার দিকে দুজনে বেড় হয়।
দুজনে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে হাটছে।
মুক্তা একসময় একটা ইটের সাথে পা লেগে রাস্তায় পরে যায়।
শুভ তখন মুক্তাকে উঠিয়ে দেখে মুক্তার পায়ের নখের কোনা দিয়ে রক্ত বেড় হচ্ছে।
মুক্তায় ব্যাথায় কান্না করে দেয়।
শুভ তখন মুক্তাকে পাজাকোলে করে নিয়ে রিক্সায় উঠে রুমে আসে।
রুমে আসার পরে শুভ মুক্তার পা টা শুভর হাটুর উপরে রেখে একটা বরফের টুকরা দিয়ে পায়ে লাগিয়ে দেয়।
বরফ লাগানোর পরে একটা মেডিসিন দিয়ে দেয়।
শুভ তখন মুক্তাকে শুয়িয়ে দিয়ে বাহিরে যায় ঔষধ আনার জন্য।
মুক্তা তখন মনে মনে ভাবে এই মানুষটা না থাকলে আমি মুক্তা হয়তো এখানে থাকতাম না।আমি তো ওর কেউ না, তা-ও আমাকে এত কেয়ার করে।আর ওর নিজের বউরে জানি কেমন কেয়ার করে।
ওর বউ যে হবে তার কপাল অনেক ভালো।
শুভ আসার পরে শুভ নিজ হাতে মুক্তাকে খাইয়ে দেয়।
তারপরে শুভ ও খেয়ে ঘুমিয়ে পরে।
মাঝরাতে মুক্তার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
মুক্তা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে শুভ একটা হাত মুক্তার নাভির উপরে রাখছে।
মুক্তার তখন অনেক ইচ্ছা হয়তাছে শুভকে জড়িয়ে ধরে শুভর লোমশওয়ালা বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে।
তখন শুভর মোবাইলে একটা ফোন আসে।
-হ্যালো শুভ কেমন আছিস?
-শুভ ঘুমাচ্ছে
-আপনি কে?
-আমি শুভর বউ
-কিহহ শুভ বিয়ে করছে আর আমিই জানিনা?
-মুক্তা তখন চুপ মেরে থাকে
-ভাবি কেমন আছেন?
-হুম ভালো,আপনি?
-ভালো
-আচ্ছা সকালে ফোন দিয়েন বলেআবার ঘুমিয়ে যায়।
মুক্তা সকালে বিছানা ছেড়ে উঠতে যাবে এমন সময় শুভ মুক্তার হাত ধরে
মুক্তা তখন শুভর দিকে তাকিয়ে বলে...
-কিছু বলবেন?(মুক্তা)
-হুমম
-কি বলবেন বলেন
-না থাকে আজকে না
-আরে বলেন
-বললে রাগ করতে পারো
-কি এমন কথা যে বললে রাগ করবো?
-আচ্ছা আমি যদি তোমাকে বিয়ে করতে বলি তুমি করবা?
-কি বলছেন? স্পষ্ট করে বলেন
-আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই
-করুনা নাকি?
-করুনা মনে হয়?
-জানিনা
-এতদিনের চলাফেরা তে ও কি মনে হয়না যে আমি তোমার জন্য পারফেক্ট?
-হুমম
-তাহলে করুনা বলছো কেনো?
-মুক্তা তখন........
-এতদিনের চলাফেরাতে ও কি মনে হয় না আমি তোমার জন্য পারফেক্ট?(শুভ)
-হুমম(মুক্তা)
-তাহলে করুনা বলছো কেনো?
-আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না
-কেনো?
-আপনি আমাকে বিয়ে করলে ঠকবেন
-মানে?
-একটা মেয়ের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো ইজ্জত যেটা আমার নেই
-এটা একটা দূর্ঘটনা
-কয়েকদিন পর আপনিই এটা বলে কথা দেখাবেন
-আমাকে এতদিনে এতটুকু চিনছো?
-মুক্তা তখন চুপ হয়ে থাকে
-মুক্তা আমি তোমাকে ভালোবাসি,তোমার শরীরকে নয়। আমি তোমার হাসি টা কে নিয়ে বাচতে চাই, তোমার দেহ নিয়ে নয়।
সারাজীবন তুমি নামক মানুষটার সাথে জীবন কাটাতে চাই।
-মুক্তা তখন অস্ফুট শব্দে কান্না করে দেয়
-কান্না করছো কেনো?
-কেউ আমাকে এত ভালোবাসে তাই খুশিতে কান্না চলে আসছে বলে মুক্তা শুভকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
-শুভ তখন মুক্তাকে ওয়াশরুমে নিয়ে ফ্রেশ করিয়ে বাহিরে বেড় হয়।
-এই নদীর দিকে যাবো,প্লিজ চলেন(মুক্তা)
-হুমম চলো,কিন্তু এরপর থেকে সমসময় তুমি করে বলতে হবে
-কেনো?
-আমার কাছে আপনি কেমন জানি লাগে,তা যদি আবার প্রিয় মানুষের মুখ থেকে আপনি ডাক শুনি তখন কেমন জানি লাগে
-হয়ছে কেমন জানি লাগতে হবে না,বললেই পারেন আপনি বললে খারাপ লাগে
-আবার আপনি?
-হি হি হি চলো বলে শুভর হাত জড়িয়ে ধরে শরীরের সাথে শরীর লাগিয়ে লাগিয়ে হাটতে থাকে।
পড়ন্ত বিকালের সবার আগে গল্প পড়তে গল্পগুলো ভালোবাসার পেজে লাইক করুন দিকে পশ্চিম দিকের আকাশটা হালকা লাল রঙ্গের হয়ে আছে।
তাতে পানি টা আরো ফুটে উঠেছে।
রবীন্দ্রনাথ নদীর পানি আর ঢেউয়ের সাথে মানুষের সুখ দুঃখের জীবনটাকে তুলনা করেছিলেন।
আসলেই মন যখন খারাপ থাকে তখন নদীর তীরে হাটাহাটি করলে মন খারাপ থাকার কথা না।
- চলো ঐ দিকটা তে বসি(মুক্তা)
ওখানে যাওয়ার পরে একটা বেঞ্চিতে দুজন বসে।
মুক্তা তখন শুভকে কাছে টেনে মাথাটা তার কোলে রাখে।শুভ তখন বেঞ্চিতে লম্বা হয়ে শুয়ে পরে।মুক্তা তখন শুভর কপালে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।
পরেরদিন
সকালে উঠে সবকিছু গুছিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে বেড় হয়।
গাড়িতে উঠার পরে মুক্তা জানালার পাশে বসে আর শুভ তার পাশেই বসে।।
গাড়ি তার আপন গতিতে চলছে আর মুক্তার অবাধ্য চুলগুলো উড়ে এসে শুভর পুরো মুখ ডেকে দেয়।
কতক্ষণ পরে মুক্তা শুভর কাধে একহাত দিয়ে বুকে মাথা রাখে।
শুভ তখন মুক্তাকে জড়িয়ে ধরে।
এভাবে পুরো রাস্তা আসার পরে শুভ মুক্তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে সবকিছু বের করে গাড়িকে বিদায় করে শুভ মুক্তাকে পাজাকোলে করে নিয়ে নেয়
-আরে আরে করছো কি?
-কোথায় কি করছি?
-কোলে নিলা কেনো?
-তুমি ঘুম থেকে এখন উঠছো তাই সাথে সাথে হাটতে সমস্যা হতে পারে এই জন্য কোলে নিয়ে নিলাম
-মুক্তা তখন শুভর গলা জড়িয়ে শুভর ঠোঁটে চুমু দেয়।
শুভ ও হাটার মাঝে কপালে একটা চুমু দিয়ে রুমে নিয়ে সোফায় বসিয়ে বাহির থেকে সবকিছু নিয়ে দুজনে গোসল করার পরে খেয়ে দুজন ক্লান্ত শরীর নিয়ে শুয়ে পরে।
বিছানায় শুয়ার পরে শুভ মুক্তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে
-এই এই ছাড়ো
-কেনো?
-আজকে এভাবে ঘুমানো যাবে না
-কেনো?
-তা তো নিজেই জানো বলে মুচকি হাসি দেয়
-শুভ তখন মন খারাপ করে অন্যদিকে মুখ করে শুয়ে পরে।
মুক্তা তখন পাশ থেকে পিঠে জড়িয়ে ধরে
-আমার কলিজা টা কি রাগ করছে(মুক্তা)
-নাহহহ
-তাহলে এভাবে শুয়ছো কেনো?
-এমনি
-এদিকে চাও
-কেনো?
-আমি তোমার বুকে মাথা রাখবো
-শুভ তখন মুক্তাকে জড়িয়ে বুকে নিয়ে নেয়।
-এর চেয়ে বেশি কিছু যেনো না হয়
-ওকে বলে দুজনে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করার পরে দুজনে কাজী অফিসে যায়।
কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পরে দুজনে গাড়ি করে বাসায় আসার পরে দুপুরে খাবার খেয়ে শুতে যাবে এমন সময় শুভ মুক্তাকে ডাক দেয়।
-মুক্তা তখন শুভর কাছে এসে, আজকে তুমি একা একা ঘুমাও
-কেনো?
-রাতে আমাদের বাসর হবে
-দিনে হলে সমস্যা কি?
-চুপ শয়তান
-আচ্ছা চলো দুজনে গল্প করতে করতে সময় কাটিয়ে দেয়।।
এভাবে সময় কাটানোর পরে এশার আজান দেয়।
মুক্তা তখন শুভকে নামাজ পড়তে পাঠায়।
শুভ নামাজ পরে আসতে আসতে নয়টা বাজে।মুক্তা ততক্ষণে নামাজ পরে বিছানা গুছিয়ে ঠিক করে।
দরজায় নক করার পরে মুক্তা দরজা খুলে।
মুক্তা শাড়ি পরে দাড়িয়ে আছে,আর শুভ ড্যাবড্যাব করে বড় চোখে তাকিয়ে থাকে।
-এভাবে চেয়ে থাকতে হয় নাকি?(মুক্তা)
-তোমাকে অনেক অনেক সুন্দর লাগছে,একটা মানুষ এত সুন্দর হয় সেটা কেউ না দেখলে বুঝতে পারবে না
-কেউ দেখতে হবে না,তুমি দেখলেই হবে বলে মুক্তা হাসি দেয়।
-শুভ তখন ঠোটের কোনের তিলের সাথে, বাকা দাতের হাসিটা দেখে আর কন্ট্রোল করতে না পেরে মুক্তাকে জড়িয়ে ধরে
-মুক্তা ও শুভকে জড়িয়ে ধরে। শুভ মুক্তাকে পাজাকোলে করে নিয়ে বিছানায় নিয়ে ফেলানোর পরে মুক্তা শুভর পান্জাবির কলারে ধরে ঠোটের সাথে ঠোট মিলিয়ে নেয়।
ভালো থাকুক এমন পবিত্র ভালোবাসা।
সমাপ্ত...
Writer:- মো. নীল চৌধুরী