"শাড়ির আঁচলটা ভালোভাবে শরীরে জড়িয়ে কাজ কর।গতকাল তোকে বিয়ে করেছি বলেই তোর বুকের ডানপাশের তিলটা দেখার জন্য আমি মরে যাচ্ছি না।"
কথাটা কানে আসতেই মূহুর্তেই কিনঞ্জল হাতে থাকা শার্ট-পাঞ্জাবিগুলো ফেলেই মূর্তির মতো দাড়িয়ে পরল।লজ্জায় রীতিমতো কিনঞ্জলের নাক-কাল লাল হয়ে গেছে।সাক্ষর কিনঞ্জলকে দিয়ে হাত-পা টেপানোর পরপরই তিনটে শার্ট আর একটা পাঞ্জাবি বের করে ইস্ত্রি করতে দিয়েছিলো।মনে মনে সাক্ষরের চৌদ্দ গুষ্টির পিন্ডি চটকালেও কিনঞ্জল বাধ্যমেয়ের মতই কাপড়গুলো ইস্ত্রি করতে শুরু করেছিলো।তখনই হয়তোবা বেখেয়ালে শাড়ির আঁচলটা একটু সরে গিয়েছিলো আর সে কথাটাই সাক্ষর বিছানায় একদম বিন্দাস টাইপ আধশোয়া হয়ে নিজের চুলগুলো আঙুল দিয়ে ব্যাকব্রাশ করতে করতে বলল।
লজ্জায় কিনঞ্জলের এই মূহুর্তে মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।বলতে ইচ্ছে হচ্ছে'হে ধরণী দ্বিধা হও,আমি তোমার মধ্যেখানে টুপ করে ঢুকে যাই'।এখন আর যাই হোক না কেনো এই অসম্ভব রকমের বজ্জাত মানুষটার সামনে কিনঞ্জল আর এক মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না।তাই হাতের সামনে থাকা শার্ট পাঞ্জাবিগুলো হাতে নিয়ে এক দৌড়ে রুম থেকে বেরোনোর জন্য পাঁ বাড়াতেই আইরন টেবিলের পাশে থাকা মাল্টিপ্লাগের তারের সাথে পা পেচিয়ে ধপাস করে নিচে পরে গেলো কিনঞ্জল।তবে এবার হয়েছে মহা বিপদ।ফ্লোরে পরে যাওয়ায় তেমন ব্যাথা না পেলেও শাড়ির আঁচলটা এবার একদম গা থেকেই পরে গেছে।লজ্জায় এইবার কিনঞ্জল কেঁদেই দিলো।গতকাল রাতের জমিয়ে রাখা কান্নাটাও যেনো এখন গলা পাকিয়ে আসছে।সাক্ষর হুড়মুড় করে বিছানা থেকে নেমে কিনঞ্জলের শাড়ির আঁচলটা শরীরে উঠিয়ে দিয়েই ধমকে বলে উঠলো,
"অলিম্পিকে নাম লিখিয়েছিস যে দৌঁড়ে দেশের জন্য মেডেল নিয়ে আসবি?আর এমন ছিঁচকাঁদুনীর মতো কান্না করছিস ক্যানো?শরীরে তো তেমন ব্যাথা পাসনি?"
কিনঞ্জল কিছু বলতে চাইলেও কান্নার কারনে বলতে পারছিলো না।
"সেফটিপিন নামেও একটা বস্তু পৃথিবীতে আছে জানিস তো।তোর মতো যারা নিজে হাটার আগেই শাড়ির আঁচল দৌড় দেয় বস্তুটা তাদের জন্য ওয়াজিব।ঢং করে শাড়ি পড়তে পেরেছিস আর সেফটি পিন লাগাতে পারিস নি?"
লজ্জায় কিনঞ্জলের এই মূহুর্তে মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।বলতে ইচ্ছে হচ্ছে'হে ধরণী দ্বিধা হও,আমি তোমার মধ্যেখানে টুপ করে ঢুকে যাই'।এখন আর যাই হোক না কেনো এই অসম্ভব রকমের বজ্জাত মানুষটার সামনে কিনঞ্জল আর এক মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না।তাই হাতের সামনে থাকা শার্ট পাঞ্জাবিগুলো হাতে নিয়ে এক দৌড়ে রুম থেকে বেরোনোর জন্য পাঁ বাড়াতেই আইরন টেবিলের পাশে থাকা মাল্টিপ্লাগের তারের সাথে পা পেচিয়ে ধপাস করে নিচে পরে গেলো কিনঞ্জল।তবে এবার হয়েছে মহা বিপদ।ফ্লোরে পরে যাওয়ায় তেমন ব্যাথা না পেলেও শাড়ির আঁচলটা এবার একদম গা থেকেই পরে গেছে।লজ্জায় এইবার কিনঞ্জল কেঁদেই দিলো।গতকাল রাতের জমিয়ে রাখা কান্নাটাও যেনো এখন গলা পাকিয়ে আসছে।সাক্ষর হুড়মুড় করে বিছানা থেকে নেমে কিনঞ্জলের শাড়ির আঁচলটা শরীরে উঠিয়ে দিয়েই ধমকে বলে উঠলো,
"অলিম্পিকে নাম লিখিয়েছিস যে দৌঁড়ে দেশের জন্য মেডেল নিয়ে আসবি?আর এমন ছিঁচকাঁদুনীর মতো কান্না করছিস ক্যানো?শরীরে তো তেমন ব্যাথা পাসনি?"
কিনঞ্জল কিছু বলতে চাইলেও কান্নার কারনে বলতে পারছিলো না।
"সেফটিপিন নামেও একটা বস্তু পৃথিবীতে আছে জানিস তো।তোর মতো যারা নিজে হাটার আগেই শাড়ির আঁচল দৌড় দেয় বস্তুটা তাদের জন্য ওয়াজিব।ঢং করে শাড়ি পড়তে পেরেছিস আর সেফটি পিন লাগাতে পারিস নি?"
এর মধ্যেই রুমে দৌড়ে দাদি আর সাক্ষরের তিন কাজিন (তাহা,তাহি,মৃতিশা)এসে পড়েছে।কিনঞ্জলের কান্না তারা শুনতে না পেলেও সাক্ষরের উঁচু গলার আওয়াজ শুনেই মূলত এসেছিলো।সাক্ষরের কাজিনরা এসেই কিনঞ্জলকে ফ্লোর থেকে উঠিয়ে বিছানায় বসালো।কিনঞ্জল এখনো কেদেই চলেছে।দাদি কিনঞ্জলের কান্নার কারন জানতে চাইলেই সাক্ষর গড়গড় করে সব বলে দিলো।এমনকি তিল দেখার ব্যাপারটার।সাক্ষরের কথা শুনে ওর কাজিনগুলো হেসেই খুন।আর কিনঞ্জলতো পারলে কেদেই বন্যা বানিয়ে দেয়।এই সাক্ষর ভাইয়ের মুখে কি কিছুই আটকায় না।সে দেখেছে তো দেখেছে এটা কি এখন সারা বাড়ি ঢাকঢোল পিটিয়ে বলে বেড়াতে হবে।ভেবেই আরও কান্না পাচ্ছে কিনঞ্জলের।সাক্ষর বেশ বিরক্ত হয়েই ওর দাদিকে বলে বসল,
"এই ছিঁচকাঁদুনীটাকে আমার রুম থেকে বের করো তো দাদি।এর কান্নার চোটে তো রুমে টেকা যাচ্ছে না।আর নিজের দোষে আছাড় খেয়ে এমন ভ্যাবলানোর কি আছে বুঝলাম না।আর কাল থেকে তোর আর শাড়িটাড়ি পরার দরকার নেই।নইলে বাড়িসুদ্ধ সবাইকে গলার,বুকের,পিঠের না জানি আরও কত জায়গার তিল দেখিয়ে বেড়াবি।ছোটবেলায় যে গোল ফ্রকগুলো পরতি ওগুলো পড়বি কাল থেকে।ভ্যাবলি একটা!"
"এই ছিঁচকাঁদুনীটাকে আমার রুম থেকে বের করো তো দাদি।এর কান্নার চোটে তো রুমে টেকা যাচ্ছে না।আর নিজের দোষে আছাড় খেয়ে এমন ভ্যাবলানোর কি আছে বুঝলাম না।আর কাল থেকে তোর আর শাড়িটাড়ি পরার দরকার নেই।নইলে বাড়িসুদ্ধ সবাইকে গলার,বুকের,পিঠের না জানি আরও কত জায়গার তিল দেখিয়ে বেড়াবি।ছোটবেলায় যে গোল ফ্রকগুলো পরতি ওগুলো পড়বি কাল থেকে।ভ্যাবলি একটা!"
সাক্ষর কথাটা বলতেই দাদি ওর কান টেনে বলল,
"বদমাইশ ছেলে,ওর শরীরের তিল তোকে দেখাবে না তো কি পাড়ার ছেলেদের দেখাবে মন্টু?আর খুব যে শাড়ি পরতে মানা করছিস দেখতো শাড়িটা পরে বিয়ের পর মেয়েটার ভোলটাই বদলে গেছে।একদিনেই যেনো কত্ত বড় হয়ে গেছে।পুরো পুতুলের মতন লাগছে দেখতে আমার মন্টুর বউকে।"
"ছাই লাগছে!যতসব প্রতিবন্ধী,নইলে কেউ এমন শুকনা জায়গায় আছাড় খায় কখনো?"
এই বলেই হনহন করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো সাক্ষর।দাদি এসে কিনঞ্জলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
"ওর কথায় কিছু মনে করিস না।জানিসই তো ও কেমন।সারা পৃথিবীতে একমাত্র তোর উপরই ওর যত অধিকার ফলানো,রাগ দেখানো,বকাবকি করা।তোদের বাড়ির সাথে আমাদের বাড়ির ঝামেলা হওয়ার আগে সারাটা দিন তোদের বাসায় পরে থাকতো।তুই তখন একদম ছোট্টটি।ওসব কথা তোর মনে নেই।সারাদিন তোকে সামনে নিয়ে বসে থাকতো,এই গাল টিপে দিতো তো আবার চুমুতে মুখ ভরিয়ে দিতো।অন্য কোন ছোট বাচ্চা তোকে ছুঁলেই একদম লংকা কান্ড বাধিয়ে দিতো।তোর বাবাতো মজা করে সাক্ষরকে ছোটবেলায় জামাই বাবাজি বলেই ডাকতো।আর সেই ডাক শুনে আমার সাক্ষর দাদুভাই সে কি লজ্জা পেতো।দেখ, আজকে সত্যিই সাক্ষর ও বাড়ির মেয়ে জামাই।জীবনটা বড্ড অদ্ভুত তাই না!কখন কোন দিকে যে মোড় নেয় কেউ বলতে পারে না।"
"বদমাইশ ছেলে,ওর শরীরের তিল তোকে দেখাবে না তো কি পাড়ার ছেলেদের দেখাবে মন্টু?আর খুব যে শাড়ি পরতে মানা করছিস দেখতো শাড়িটা পরে বিয়ের পর মেয়েটার ভোলটাই বদলে গেছে।একদিনেই যেনো কত্ত বড় হয়ে গেছে।পুরো পুতুলের মতন লাগছে দেখতে আমার মন্টুর বউকে।"
"ছাই লাগছে!যতসব প্রতিবন্ধী,নইলে কেউ এমন শুকনা জায়গায় আছাড় খায় কখনো?"
এই বলেই হনহন করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো সাক্ষর।দাদি এসে কিনঞ্জলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
"ওর কথায় কিছু মনে করিস না।জানিসই তো ও কেমন।সারা পৃথিবীতে একমাত্র তোর উপরই ওর যত অধিকার ফলানো,রাগ দেখানো,বকাবকি করা।তোদের বাড়ির সাথে আমাদের বাড়ির ঝামেলা হওয়ার আগে সারাটা দিন তোদের বাসায় পরে থাকতো।তুই তখন একদম ছোট্টটি।ওসব কথা তোর মনে নেই।সারাদিন তোকে সামনে নিয়ে বসে থাকতো,এই গাল টিপে দিতো তো আবার চুমুতে মুখ ভরিয়ে দিতো।অন্য কোন ছোট বাচ্চা তোকে ছুঁলেই একদম লংকা কান্ড বাধিয়ে দিতো।তোর বাবাতো মজা করে সাক্ষরকে ছোটবেলায় জামাই বাবাজি বলেই ডাকতো।আর সেই ডাক শুনে আমার সাক্ষর দাদুভাই সে কি লজ্জা পেতো।দেখ, আজকে সত্যিই সাক্ষর ও বাড়ির মেয়ে জামাই।জীবনটা বড্ড অদ্ভুত তাই না!কখন কোন দিকে যে মোড় নেয় কেউ বলতে পারে না।"
কথাটা বলে দাদিও বাকি তিন নাতনিকে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।কান্না করতে করতে কিনঞ্জলের প্রায় হিঁচকি উঠে গেছে।কিনঞ্জল হিঁচকি তুলতে তুলতেই বিড়বিড়িয়ে বলল,
"আমি জানি তুমি আমাকে শান্তনা দিয়ে গেলে দাদি।ওই জল্লাদটা কখনোই আমাকে পছন্দ করতো না।পছন্দ করলে কি আর আমার সাথে এমনটা করতে পারত?"
হুট করেই কিনঞ্জলের নুহাশের কথা মনে পরে গেলো,নুহাশের কথা মনে পরতেই কান্নারা যেনো আবারও দলা পাকিয়ে গলায় এসে আটকে গেলো,
"আমি জানি তুমি আমাকে শান্তনা দিয়ে গেলে দাদি।ওই জল্লাদটা কখনোই আমাকে পছন্দ করতো না।পছন্দ করলে কি আর আমার সাথে এমনটা করতে পারত?"
হুট করেই কিনঞ্জলের নুহাশের কথা মনে পরে গেলো,নুহাশের কথা মনে পরতেই কান্নারা যেনো আবারও দলা পাকিয়ে গলায় এসে আটকে গেলো,
সাক্ষর ভাই আর নুহাশের মধ্যে কত পার্থক্য।এই এক শাড়ি পরার জন্য সাক্ষর ভাইয়ের কাছে কত কথা শুনতে হলো আজকে আর যেদিন কিনঞ্জল প্রথম পহেলা ফাল্গুনে এই একই রঙের শাড়ি পড়েছিলো,নুহাশ কিনঞ্জলের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো আর কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে কয়েকটা লাইন কিনঞ্জলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলো ।লাইনগুলো আজও কিনঞ্জলের কানে স্পষ্ট বাজে।
"পরনে তার গঙ্গা-যমুনা শাড়ি,আর চিবুকে তৃষ্ণা দগ্ধময়
দেখেছিলেম এক মায়াবতীকে,কনে দেখা আলোয়।
কপালের উপর তার একগাছি অবাধ্য চুল পরে রয়
দেখেছিলেম সেই হৃদয় হরণীকে,কনে দেখা আলোয়।"
দেখেছিলেম এক মায়াবতীকে,কনে দেখা আলোয়।
কপালের উপর তার একগাছি অবাধ্য চুল পরে রয়
দেখেছিলেম সেই হৃদয় হরণীকে,কনে দেখা আলোয়।"
সেই স্বর্গীয় মূহুর্তটুকু কিনঞ্জল কখনো ভুলতে পারবে না।ওরা তখন এক বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলো আর সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে অস্তায়মান।ঠিক সেই সময়টাতে নুহাশ একেকটা লাইন ফিসফিসিয়ে কিনঞ্জলের কানে কানে বলছিলো,নুহাশের উত্তপ্ত শ্বাস-প্রশ্বাস কিনঞ্জলের কান,ঘাড় বরাবর বারবার বারি লাগছিলো।লাইন চারটা বলেই নুহাশ কিনঞ্জলের চিবুকে হাত রেখে কপালের উপর পরে থাকা চুলগুলো কানের পিঠে গুজে দিয়েছিলো।
অতীতের কথা ভাবতেই কিনঞ্জলের ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল।সেই সাথে মনের কোণে হাজারটা প্রশ্নেরাও সমানে ঘুরতে লাগলো।আচ্ছা,নুহাশ এখন কোথায় আছে?সে কি জানে তার রেণু এখন অন্য কারো ঘরেও বউ।
(চলবে)
লিখা~ নাজমুন নাহার তৃপ্তি