> বিশ্বাস পর্ব ১
-->

বিশ্বাস পর্ব ১


প্রতিরাতে আমার স্ত্রীকে দেখি বিছানা থেকে উঠে যায়। আমি ভাবি হয়তো ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে যায়। প্রতিরাতেই ১২টার কাছাকাছি দেখি উঠে যায়। আজকে সে কি করে তা দেখতে পিছনে পিছনে গেলাম। তাকে দেখলাম বারান্দায় গিয়ে মোবাইলে কথা বলে। তার মানে অরু কি পরকীয়ায় জড়ালো নাকি! না, এইসব কি ভাবছি। আমাদের ভালবেসে বিয়ে করে ৪বছরের সংসারে ২বছরের মেয়েও আছে। অরু এটা করতে পারে না।
তার মোবাইলের কথা বলা শুনতে দরজার কাছে কান দিয়ে দাঁড়ালাম।
---আমি পারবো না। আমার স্বামীর থেকে লুকিয়ে এটা করতে!
___
---বললাম তো। সে জানলে আমার সমস্যা হবে। আমি কালই লুকিয়ে দেখা করে সব খুলে বলবো।
___

---- নেকলেন পার্কেই এসো। সকাল ১০টা বাজে। রাখি সে আবার সজাগ হয়ে যাবে।
অরু মোবাইল রাখার আগেই আমি বিছানায় এসে শুয়ে পরলাম। আমি চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইলাম। অরুও চুপচাপ করে এসে শুয়ে পরলো।
আমি ভাবছি এই মানুষটা কি করে পরকিয়া করবে। ২বছর প্রেম করে যখন তার পরিবার রাজী ছিলো না, তখনই পালানোর স্বীদ্ধান্ত নিলাম। আর সেটা করেই দুজনের ঘর বাধঁলাম।
চারটা বছর কেটে গেলো তার পরিবার এখনো মেমে নিলো না। আমাদের একটা মেয়েও হয়ে গেছে। মুটামুটি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। নিজেরদের একটা বাড়ি করলাম। সংসার চাকুরী সব নিয়েই ভালোই আছি।যখন চাকুরী ছিলো না, বাসা ভাড়া করে থাকতে হতো তখন অরু আমাকে ছেড়ে যায় নি, বরং সব ছেড়ে চলে আসলো।
এইসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেলাম মনে নাই। সকালে অরুর ডাকেই ঘুম ভাঙলো। আমাকে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলে টেবিলে নাস্তা দিলো। অন্য দিন মেয়েকে নিয়ে অনেক দুষ্টুমি করি নাস্তা করার সময় আজকে চুপচাপ করে নাস্তা সেরে নিলাম।
আমি রেডি হয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। অরু আমাকে এসে সাহায্য করতে চাইলে আমি ধমক দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিলাম।
_আমার উপর কি নিয়ে রেগে আছো?(অরু)
_কিছু নিয়ে রেগে নাই। আমার সামনে থেকে যাও মাথা এমনেই গরম হয়ে আছে।
_আমি তোমার স্ত্রী! আমাকে সব বলার অধিকার আছে তোমার।
_সামনে থেকে যা। তা না হলে....
অরু চুপচাপ চলে গেলো। আমি অফিসে যাবো বলে বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে। আমাদে বাসাটা ২য় তালায়। এই ফ্ল্যাট আমি নিজেই নিয়েছি।
সিড়ি দিয়ে নামার সময় আবির সাহেবের সাথে দেখা। আমার উপরের তলায় থাকে। একজন ভালো বন্ধুও বলা যায়।
_রানা সাহেব এত রেগে আছেন কেনো?(আবির সাহেব)
_না, ভাই মনটা ভালো নেই।
_ভাবির সাথে কিছু নিয়ে ঝগড়া নাকি?
_না, ভালো লাগে না এমনেই।
_মাঝে মাঝে দেখি ভাবিকে বারান্দায় দাঁড়িয়ে গেইটের সামনে একটা লোক আসে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে!(আবির সাহেব)
_কি?
_হুম একটা ছেলেকে প্রায় দেখি।
_আপনার আজকে কাজ আছে? (আমি)
_না, কেনো কোথায় যাবেন নাকি ঘুরতে?
_তাহলে চলেন যাই একটু ডিটেকটিভের মতো কিছু বের করি।
_বুঝলাম না!
_দুজনে ঘুরে আসি সিগারেট খাবো আর আড্ডা দিবো।
আবির সাহেব আর কিছু না বলেই চললো আমার সাথে। আমি আর আবির সাহেব রাতে প্রায় সময় বসে বসে সিগারেট খাই ছাদে।
দুজন বের হয়ে। বাসার গলির মাথার চায়ের দোকানে বসে দুজনে চা খেয়ে সিগারেট খাচ্ছি আর কথা বলছি। সাড়ে নয়'টা বাজে তখনই চললাম সিগারেট টানতে টানতে পার্কের দিকে। দুজনে নানান কথা বলতে বলতে চললাম সে দিকে।
পার্কের কাছের একটা রাস্তার পাশে কাছের নিচে বসলাম। পার্কের গেইট থেকে অনেক দুরে যাতে দেখা যায় অরু আসলে।
আবির সাহেবের পিছনে অনেক বড় কাহিনী আছে। তিনি এই ফ্ল্যাটে থাকেন ৫বাছর আগে থেকেই। তিনি ছোট একটা ব্যবসা করতেন।
প্রায় সময়ই দেশের বাহিরে থাকেন তিনি। আর এই সুযোগে আমি যে ফ্ল্যাটে থাকি সেখানের এক পরিবারের ছেলের সাথে পরকীয়া করে। আর তার হাত ধরে চলে যায়।
আবির সাহেব তার পর থেকে চুপচাপ হয়ে যায়। তার স্ত্রী তখন গর্ববতী ছিলো। সেই সব পরে বলবো আরো কথা।
আমরা দুজন চুপ করে বসে আছি।
১০বেজে যাওয়ার কিছুক্ষন পরই। দেখির অরু আসতেছে একা। মেয়েটা নাই তার সাথে। আমার রাগে কি করবো বুঝতে পারতেছি না।
অরু সোজা ঢুকে গেলো পার্কের ভিতর। আমি আবির সাহেবকে নিয়ে ঢুকে গেলাম। দুজনে চুপচাপ করে হাটতেছি। আবির সাহেব,
-রানা সাহেব দেখেন। ভাবি ওই যে!
_আচ্ছা এখান থেকেই দেখি কি করে ও।
_রানা সাহেব, যার সাথে হেসে হেসে কথা বলতেছে এই সেই ছেলে।
_মানে?
_প্রায় সময় আমাদের বাসার সামনে দেখি তাকেই।
আমরা পার্ক থেকে বের হয়ে গেলাম। দুজনে তাড়াতাড়ি করে বাসায় ফিরে আসলাম। আমার কাছে থাকা চাবি দিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখি মেয়েটাকে ড্রয়িং রুমে রেখে দরজা দিয়ে রেখে গেছে।
একা একা অনেক কান্না করতেছে। আমি মেয়েটাকে কোলে নিয়ে বসে বসে টিভি দেখতেছি। প্রায় ঘন্টাখানিক পরই আসলো অরু। আমাকে রুমে দেখে সে যেনো ভূত দেখলো।
_আজকে অফিসে যাও নি?
_আমি চুপ।
_বাবুকে রেখে ছাদে গেছিলাম কাপড় রোদে দিতে। তার ভিতরই চলে আসছো।
_আচ্ছা।
এদিকে আসো।
মেয়েটাকে ঘুমানোর রুমে রেখে আসছি।
অরুর কাছে আসলাম। অরু ভয়ে থরথর করে কাপছে।
কোমড় থেকে বেল্ট খুলে মারতে শুরু করলাম অরুকে। মারতে মারতে যখন জ্ঞান হারালো সে তখন বন্ধ করলাম মারা।
আবির সাহেব কান্নার শব্দ শুনে দৌড়ে আসলো।
বাসার দরজা খুলা তাই তিনি সোজা বাসার ভিতরে চলে আসছে।
_রানা সাহেব কি করলেন? যদি মরে যায় (আবির সাহেব)
_মরলে লাশ গুম করে দিবো আর কি?
_মেয়ে কোথায়?
আমার মনে পরলো মেয়ের কথা। মেয়েকে কোলে করে নিয়ে আসলাম। আবির সাহেবের কোলে দিয়ে। অরুকে আমিই কোলে করে নিয়ে চললাম হাসপাতাল। আমরা যখনই বাসা থেকে বের হচ্ছি তখনই সেই ছেলেটা গেইটের সামনে আসছে। আমরা গাড়ি করে নিয়ে গেলাম সিটি হাসপাতালে।
ডাক্তার কারন জানতে চাইলো মারার। আর পুলিশের থেকে অনুমতি নিয়ে চিকিৎসা করবে তারা বলে। আবির সাহেব তার একজন বন্ধু পুলিশ অফিসারকে কল দিলো। আর ডাক্তারকে দিলো মোবাইল তারপরই তারা চিকিৎসা দিতে চাইলো।
৫ঘন্টা পর অরুর জ্ঞান ফিরলে।
_আমাকে মাফ করে দাও আর এমন কিছু করবো না (অরু)
_কিসের মাফ?
_ওই ছেলে আমাকে ব্লাক মেইল করে।
_মানে কি?
_আমার গোসল করার সময় কাপড়বিহীন শরীরের ভিডিও আছে তার কাছে। নগ্ন শরীরের ভিডিও দিয়ে আমাকে ব্লাকমেইল করে।
-কি?
_পুরো নগ্ন হওয়ার ভিডিও আছে আর.........



লেখা- সোলাইমান রানা
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner