সকালে ঘুম ভেংগে অবাক হয়ে যায় নেহা,সত্যি সত্যি বাসায় তিন চারটা উকিলকে দেখা যাচ্ছে,তাহলে কি মজনু সত্যিই আজ নেহাকে তালাক দিবে।
এসব ভাবতে ভাবতে ঘেমে একাকার হয়ে গেছে নেহা,সকাল থেকে মজনু কেউ কোথাও দেখতে পাচ্ছে না সে।
এদিকে মজনুর ছোট বোন নিশি এসে নেহাকে খাওয়ার টেবিলে যেতে বললো।
নতুন বউ তার উপর আবার বাসর রাতের পরেরদিন, কিভাবে মজনুকে ছেড়ে একা একা খাবার টেবিলে যাবে নেহা।
খিদের জালায় পেটের মধ্যে চো চো করছে নেহার।মনে মনে মজনুর চোদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে সে।
এমন সময় পিছন থেকে মজনু এসে আলতো করে জড়িয়ে ধরে নেহাকে,আচমকাই চমকে উঠে নেহা।
তারপর একটানে নেহাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে কপালে আলতো করে একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয়।
মজনু-কি ব্যাপার আমার লক্ষি গুলুমুলু বউটা এরকম ভয় পেয়ে আছে কেনো,,
নেহা-সকাল থেকে কোথায় গিয়েছিলেন আপনি,,
মজনু-ও সব কথা পরে হবে,আগে চলো খেয়ে নেই,খুব খিদে পাইছে,,
নেহা-হুম চলুন।
তারপর নেহা আর মজনু খাবার টেবিলে যেতেই শাড়ীর আচলের সাথে হোঁচট খেয়ে পরে যায় নেহা,
হোঁচট খেয়ে নেহার পা ব্যাথা হয়ে গেছে,খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছে সে,কিন্তু এভাবে গেলে তো মানুষ খারাপ ভাববে কারণ বাসা ভর্তি মেহমান।
তাই মজনু নেহাকে কোলে করে নিয়ে খাবার টেবিলে যায়,সবাই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মজনু নেহার দিকে,এ যেনো সর্গ থেকে সদ্য নেমে আসা একটা জুটি।
এদিকে নেহাকে কোলে তোলার কারণে ওর পেটের অংশ থেকে শাড়ীটা হালকা সরে যায়,
আর পেটের উপর কাটা দাগটা নিশি দেখে ফেলে,কাটা দাগের কথা মনে হতেই নেহা তাড়াতাড়ি শাড়ীটা আবার ঠিক করে নেয়।
কিন্তু তার মনে অজানা এক ভয় কাজ করছে, প্রথমত উকিলদের কে নিয়ে আর ২ য়ত নিশিকে নিয়ে, নিশি যদি এখন ওর বাবা মা কে সব কিছু বলে দেয়,তাহলেই তো সব শেষ।
খাবার খাওয়া শেষে মজনু নেহাকে সাথে নিয়ে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
পরিচয় পর্ব শেষ করে উকিলদের কাছে যেতেই আবার কোন এক অজানা ভয়ে নেহার বুকটা কেপে উঠে,কিন্তু সেটা ক্ষণিকের জন্য।
কারণ বাসায় যে উকিলগুলো আসছে তারা সবাই নেহার শশুড়ের বন্ধু।
ক্লানতির একটা শ্বাস নেয় নেহা,কিন্তু নিশি তো দেখে ফেলছে ও যদি সবাইকে বলে দেয়।
তারপর মজনু নেহাকে নিয়ে আবার নিজের রুমে চলে আসে,এক ঝটকায় নেহাকে বিছানায় ফেলে দেয়,রোমান্টিকতা একটা ভাব নিয়ে নেহার দিকে এগোতে থাকে,এমন সময় নিশি রুমে প্রবেশ করে,,,
নিশি-ভাইয়া তোমাকে আমার একটা কথা বলার ছিলো,,
মজনু-তো বল,এখানে পারমিশন নেওয়ার কি দরকার,,,
নিশি-না মানে,আলাদা ভাবে কিছু কথা ছিলো।
তারপর মজনু নিশিকে নিয়ে আলাদা রুমে চলে যায়,,,
তারপর মজনু নিশিকে নিয়ে আলাদা রুমে চলে যায়,,,
মজনু-এখন বল কি বলবি,,,
নিশি-ভাইয়া তুমি কি কাল ভাবির শরীরে কিছু দেখনি (মজনুর সাথে নিশি অনেকটা ফ্রী,তাই সোজা ভাবেই বলে দিলো)
মজনু-হুম দেখছি তো,কিন্তু তোকে এত চিন্তিত মনে হচ্ছে কেনো,,,
নিশি-ভাইয়া ভাবির পেটের নিচে আমি একটা কাটা দাগ দেখছি,এই দাগটা সম্ভবত যারা বাচ্চা নষ্ট করে তাদের পেটে থাকে,,,
মজনু-এটা কি শুধু তুই একাই দেখছিস নাকি আর কেউ দেখছে,,,
নিশি-না শুধু আমি ই দেখছি,,,
মজনু-তাহলে শোন,নেহার সাথে বিয়ের আগেই আমার সম্পর্ক ছিলো,এক পর্যায়ে সম্পর্কটা অনেক গভীর হয়।
আর আমি নেহার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করি,কিন্তু তখন বিয়ে করার মতো কোন পজিশন আমার ছিলোনা,তাই আমি নিজেই ওকে নিয়ে গিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে নিয়ে আসি,,,
নিশি-ভাইয়া আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে তুমি আমাকে মিথ্যা কথা বলছো(সন্দেহের দৃষ্টিতে)
মজনু-মিথ্যা না রে এটাই সত্যি,প্লীজ লক্ষি বোন আমার,কাউকে যেনো এটা বলিস না,,,
নিশি-ঠিক আছে ভাইয়া,তুমি রোমাঞ্চ কন্টিনিউ করো(বলেই একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে গেলো)
এদিকে নেহা তো রুমের মধ্যে ভয়ে আর আতংকে পুরো লাল হয়ে গেছে,এসি রুমের মধ্যে ও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে।
মজনু নিশিকে বিদায় করে আবার নিজের রুমে চলে আসে,টেনশনের কারণে রোমান্টিক মুড টায় নষ্ট হয়ে গেছে ওর।
রুমে ঢুকেই নেহাকে বললো এক গ্লাস শরবত দিতে,,,
নেহা খুব সুন্দর করে শরবত বানিয়ে মজনুকে দেয়,মজনু শরবতটা মুখে দিবে এমন সময় নেহা বলে উঠলো,,,
নেহা-আমাকে নিয়ে আপনার যদি কোন সমস্যা হয়ে থাকে,তাহলে আমাকে তালাক দিতে পারেন।
নেহার মুখে তালাকের কথা শুনে মজনুর হাত থেকে শরবতের গ্লাসটা মাটিতে পরে যায়,নেহার কোথায় কি উত্তর দিবে ভেবে পায়না সে।
তবু ও অনেক কষ্টে আস্তে করে শুধু একটা কথাই বললো,,আমি তোমাকে ভালোবাসি নেহা,তোমার সাথে আমি সারাজীবন কাটাতে চাই,শেষ বয়সে দুজন এক সাথে পান চিবুতে চিবুতে গল্প করতে চাই।
মজনুর কথায় একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে থাকে নেহা,নেহাকে অবাক করে দিয়ে মজনু বললো।
তোমার মনটা মনে হয় খারাপ হয়ে আছে,চলো ছাঁদে বসে গল্প করা হোক।
তারপর মজনু নেহাকে নিয়ে ছাদে চলে যায়,আকাশটা মেঘলা হয়ে আছে,যেকোন সময় অঝোড় ধারায় বৃষ্টি নামতে পারে।
নেহার চুলগুলো ছেড়ে দিয়া ছিলো, হালকা বাতাসে চুলগুলো বার বার মুখের উপর এসে পরছে,মজনু চুলগুলো সড়িয়ে কানের পাশে গুজে দেয়।
তারপর পকেট থেকে বেলীফুলের মালাটা বের করে নেহাকে পড়িয়ে দেয়,মজনু আগে থেকেই জানতো বেলীফুলের মালা নেহার খুব পছন্দ।
ছাদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছে নেহা,পাশেই দাড়িয়ে আছে মজনু,দুজনের মাঝেই এক ধরনের রোমান্টিকতা কাজ করছে।
মজনুর খুব ইচ্ছে করছে,নেহার ওই লাল টকটকে ঠোট দুটোকে হালকা শীতল ভসলোবাসার পরশ দিতে।
এক পর্যায়ে নিজের ইচ্ছা পূরণ করতে নেহার ঠোঁটের দিকে এগোতে থাকে মজনু,
ঠোটের সাথে ঠোট মিশাবে এমন সময় নেহা বাবু বাবু বলে চিৎকার করে উঠে,,,
মজনু-কি হলো তোমার,কিসের বাবু,কোথায় বাবু,,,
নেহা নিজের আঙ্গুল দিয়ে অন্য একটা ছাদের দিকে ইশারা দিয়ে মজনুকে দেখিয়ে দেয়।
ওদিকে তাকাতেই বাবুকে দেখে চমকে উঠে মজনু,মজনুর চমকে উঠার কারণ শুধু বাবু না,বাবুর সাথে থাকা মজনুর বোন নিশি,,,,
(দয়া করে কেউ বাজে কমেন্ট করবেন না,পুরো গল্প পড়ে তারপর আপনার মতামত জানাবেন।আর হ্যা যারা গল্প কপি করেন তাদের বলছি,ভাইয়া/আপুরা আপনারা গল্প কপি করেন কোন সমস্যা নেই,কিন্তু দয়াকরে লেখকের নাম চেন্জ করবেন না।আপনাদের কারণে আমার নিজের লেখা গল্পে আমাকেই কপিবাজ বলে গালি শুনতে হয়)
চলবে,,,
Writer:- Md Mojnu Islam