আমি তোমাকে এতবার কল করেছি, আর তুমি আমার ফোন ধরছো না কেন?
হিমুরা কারো ফোন ধরে না!
মানে?
আমি হিমু।
তোমার নাম হিমু হলো কবে থেকে? তোমার নাম তো জয়া!
আগে ছিলো, এখন আমি হিমু, লেডি হিমু!
এই তুমি আমার সাথে মজা করছো?
হিমুরা কারো সাথে মজা করে না!
পাগল হয়ে গেছো নাকি? আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড না? তুমি আমার ফোন রিসিভ করবা না?
না! কারন আমি লেডি হিমু! আর আজ থেকে তোমার সাথে আমি ব্রেকাপ করবো! কারন হিমুদের কোনো পিছুটান থাকে না!
এই তুমি কি বলছো এসব? মেয়েরা কখনো হিমু হয় নাকি?
হ্যাঁ হয়, আমি লেডি হিমু।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে ওখান থেকে চুপচাপ চলে এলাম!
অন্তিক আমার চলে যাওয়া হা করে তাকিয়ে দেখছে। ওর যেন সব মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে, আসলে আমাদের রিলেশন প্রায় ৫বছরের। কিন্তু হঠাৎ করে আমার হিমু হওয়ার ভীষণ ইচ্ছে হইছে! আর হিমুরা কখনো ভালোবাসার ডাকে সাড়া দেয় না।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে ওখান থেকে চুপচাপ চলে এলাম!
অন্তিক আমার চলে যাওয়া হা করে তাকিয়ে দেখছে। ওর যেন সব মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে, আসলে আমাদের রিলেশন প্রায় ৫বছরের। কিন্তু হঠাৎ করে আমার হিমু হওয়ার ভীষণ ইচ্ছে হইছে! আর হিমুরা কখনো ভালোবাসার ডাকে সাড়া দেয় না।
বাসায় বসে আছি! এর মধ্যে অন্তিক অনেকবার ফোন দিয়েছিলো! টেক্সটও করেছে! তাতে আমার কি? আমি তো লেডি হিমু।
আমি টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ আম্মু এসে বলল কিরে, এতোগুলা হলুদ সালোয়ার আর শাড়ি অর্ডার দিয়েছিস কেন?
কেনো আবার? আমি এখন থেকে ওগুলোই পড়বো!
মানে? একি রকম জামা তো তুই পরিস না! আর হলুদ রঙ তো তুই একদম সহ্য করতে পারিস না তাহলে কি হয়েছে তোর?
আগে করতাম না কিন্তু এখন থেকে করি, কারন আমি লেডি হিমু।
লেডি হিমু? সেটা আবার কি জিনিষ?
তুমি বুঝবা না আম্মু! এখান থেকে যাও! আমাকে বিরক্ত করো না।
সন্ধ্যায় আব্বু অফিস থেকে এসে আমাকে ড্রয়িংরুমে ডেকেছে। পাশে আম্মুও আছে, আর আমার ছোট বোন মুখ চেপে হাসছে! বুঝলাম আমার কপালে দুঃখ আছে!
জয়া তুমি নাকি তোমার আম্মুকে বলছো তুমি লেডি হিমু? এসবের মানে কি? আবার নতুন কি পাগলামো শুরু করছো?
আমি কোনো কথার উত্তর দিচ্ছি না।
কি হলো? চুপ করে আছো কেন?
আমি এই প্রশ্নের জবাব দিলাম না।
হঠাৎ আব্বু রেগে গিয়ে আমার গালে একটা কষে থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো।
আমি তাও কিছু বললাম না, অন্য সময় হলে কাঁদতে কাঁদতে পুরো বাসায় বন্যা বইয়ে দিতাম। কিন্তু যেহেতু আমি লেডি হিমু তাই সেখান থেকে নিজের রুমে চলে আসলাম, এটা দেখে আব্বু ভীষন রেগে গেলো। কিন্তু তাতে আমার কিছু যায় আছে না কারন আমি লেডি হিমু!
হিমু জীবন আমার বেশ ভালো কাটছিলো!
আজ সকালে উঠে আলমারি খুলে দেখি আমার হলুদ সালোয়ার কামিজ, শাড়ি কিছুই নেই! আমি প্রচন্ড রেগে গিয়ে আম্মুকে ডাকলাম,
আম্মু আমার হলুদ শাড়ি আর সালোয়ার গুলো কই?
দান করে দিয়েছি!
মানে? তুমি জানো না আমি লেডি হিমু? আর হিমুরা হলুদ রঙের ড্রেস পড়ে!
আম্মু আমার হাতে একটা গোলাপি রঙের শাড়ি দিয়ে বলল, আমি ওতো কিছু জানিনা তুই এই শাড়িটা পড়ে নিচে আয়! আমরা তোর জন্যে অপেক্ষা করছি।
অপেক্ষা করছো মানে?
শাড়িটা পড়ে নিচে আসলেই বুঝবি।
আমি বেশি কৌতূহল দেখালাম না! কারন হিমুরা কৌতূহল দেখায় না।
আমি শাড়িটা পড়ে নিতে যেতেই দেখলাম অন্তিক ওর বাবা-মা সাথে দাঁড়িয়ে। আমি আশ্চর্য হলাম না! হিমুরা আশ্চর্য হয় না।
আমি শাড়িটা পড়ে নিতে যেতেই দেখলাম অন্তিক ওর বাবা-মা সাথে দাঁড়িয়ে। আমি আশ্চর্য হলাম না! হিমুরা আশ্চর্য হয় না।
আব্বু বলল, অন্তিক আমাদের তোদের রিলেশনশিপের বিষয়ে আমাদের সবটা বলেছে। আমার অন্তিককে ভালো লেগেছে! ভালো ছেলে! ভালো চাকরী করে, ফ্যামিলি ভালো। অন্তিকের বাবা-মার খুব তাড়াতাড়ি তোমার আর অন্তিকের বিয়ে দিতে চান।
কিন্তু আমি তো বিয়ে করবো না। কারন হিমুরা বিয়ে করে না। আর আমি লেডি হিমু।
এবার আমার আব্বু ভীষণ রেগে গেলেন। রেগে গিয়ে বললেন, আজকেই তোমার বিয়ে হবে অন্তিকের সাথে।
আমার আর লেডি হিমু হওয়া হলো না।
Writer:- জেবুননেছা জ্যোতি