Romantic Love Story |
মাঝখানের দিনগুলো খুব দ্রুত কেটে যাচ্ছে। এখন হালকা শীত শীত পরেছে। সারাদিন পর সন্ধ্যা নামলেই ঠান্ডায় শরীর শিরশির করে। আবার সারা রাতের পর ভোরের আগমন ঘটলেও তাই। ভোরের আকাশ আচ্ছন্ন হয়ে থাকে কুয়াশায়।
তুরা এখন ধানমন্ডিতেই থাকে। সারাক্ষণ মায়ের নজরদারিতে দিন কাটে তার। বিছানা থেকে এক পা নামলেও কোথা থেকে যেন ছুটে আসে তার মা। উনার ধ্যান জ্ঞান এখন শুধুই তুরা। উনার দুনিয়া জুড়ে যেন আর অন্য কেউ নেই এখন।
আজ সকাল থেকেই তুরার ভীষণ উৎফুল্ল লাগছে। এত আনন্দের কারণ সে বুঝে উঠতে পারছে না।সে বিছানা ছেড়ে নামলো।ধীরে ধীরে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের প্রতি মনোযোগ দিয়ে তাকালো। খুঁটে খুঁটে নিজেকে দেখতে লাগলো সে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকতেই নিজেকে বড় রূপবতী মনে হলো তার।মনে হলো,নিজের এত রূপ সে আগে কখনো দেখে নি।আরও মনে হলো,সবুজ রঙের শাড়িটার থেকে আর কোনো সুন্দর শাড়ি বোধহয় হয় না।তুরা লাজুক হেসে দু'হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো।তারপর দ্রুত আয়নার সামনে থেকে সরে গেল।
বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো তুরা।বাইরে বেশ ভালোই রোদ।তুরা নিজের পেটে হাত রেখে কিছু অনুভব করার চেষ্টা করলো।তার এখন পাঁচ মাস চলছে।পেটটা আগের চেয়ে সামান্য উঁচু হয়েছে।যদিও শাড়ির আঁচলে ঢাকা থাকলে খুব একটা বোঝা যায় না।আজকাল তুরার দিনগুলো কাজলকে অনুভব করতে করতেই কেটে যায়।নিজের মাতৃসত্তার অনুভূতির সাথে সাথে মায়ের প্রতি ভালোবাসাও ভীষণভাবে বাড়ে তার।কাজলের নড়াচড়া একটুখানি টের পেলেই তার সারা শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে।মাঝে মাঝে চোখে জল আসে।এত অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতিও তার ভাগ্যে লিখা ছিল!যেদিন সে কাজলকে কোলে নিতে পারবে,কাজলের কোমল গালের সাথে নিজের গাল স্পর্শ করিয়ে দু ফোঁটা চোখের জল ফেলতে পারবে,কাজলের মুখে চুমু খেতে পারবে,সেদিন তার এক জীবনের সবকিছু পাওয়া হয়ে যাবে।এখন শুধু এই একটাই চাওয়া তুরার।কাজলের জন্য প্রতিদিন কতশত অনুভূতি সে লিখে রাখছে,তার ইয়ত্তা নেই।রায়না তাকে একটা ডায়েরি দিয়েছে।আর বলেছে, "যখন যা মনে আসবে,সব এখানে লিখে ফেলবি।"
.
তুরা চোখ বন্ধ করে বড় করে নিঃশ্বাস ফেললো।আবরারকে ফোন করার উদ্দেশ্যে ঘরের দিকে পা বাড়ালো।আবরার বেচারা ভালোই বিপদে পরেছে।না পারছে একেবারে শ্বশুর বাড়িতে এসে উঠতে,আর না পারছে বউকে ছেড়ে থাকতে।সপ্তাহে পাঁচদিন সে থাকে ধানমন্ডিতে তুরার কাছে,আর বাকি দু'দিন থাকে উত্তরায়।আজ বৃহস্পতিবার।আজ অফিস শেষ করে আবরারের সোজা ধানমন্ডি আসার কথা আছে।আর কাল সকালে তুরাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা।তুরা ফোন হাতে নিলো।কিন্তু আবরারকে কল করতে পারলো না।তার আগেই রত্না বেগম ঘরে এসে ঢুকলেন।উনার হাতে একটা বাটি।উনি তুরার সামনে সেটা রাখলেন।তুরা ভ্রু কুঁচকে তাকালো।বাটিতে নানান রকম ফল।রত্না বেগম বললেন,
"এগুলো তাড়াতাড়ি খেয়ে নে তো,তুরা।"
তুরা অসহায়ের মতো বলল,
"মা!একটু আগেই তো কতকিছু খাওয়ালে।"
"কোথায় একটু আগে?অনেকক্ষণ হয়ে গেছে,তুরা।বাচ্চার জন্য খেতে হয়।"
"মা,তুমি কিন্তু খাওয়াতে খাওয়াতে আমাকে মোটা বানিয়ে দিচ্ছো।"
রত্না বেগম তুরার মুখে খাবারটা তুলে দিয়ে বললেন,
"ভালো করছি।মোটা হলে হবি।সারাজীবন এমন পাটকাঠির মতো শরীর রেখে লাভ কি?"
তুরা কথা বলল না।বলেও লাভ নেই।রত্না বেগম মেয়েকে খাইয়ে দিতে দিতে বললেন,
"তুরা,তোর পায়ে কি পানি জমেছে?দেখি তো।"
তুরা হেসে ফেললো।হাসতে হাসতেই পা দুটো এগিয়ে দিলো।রত্না বেগম ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলেন।তারপর গম্ভীর স্বরে বললেন,
"তুই হাসছিস কেন?আমি হাসির কথা বলছি না।এসময় ওরকম হয়।এখনও হয় নি।তবে হতেও পারে।তুই এক কাজ করবি,এখন থেকেই শোবার সময় পায়ের নিচে বালিশ রাখবি।আর মাঝে মধ্যে হাঁটাহাঁটি করতে হবে।কিন্তু একা একা হাঁটতে যাস না আবার।আমি তোকে নিয়ে হাঁটবো।"
তুরা আবার হাসলো।মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে আদুরে গলায় বলল,
"মা,তুমি ভীষণ সুন্দর!"
"ধুর!ঢং করিস না।তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ কর।তারপর চল,আমরা বাগানে হাঁটাহাঁটি করবো।"
তুরা বাধ্য মেয়ের মতো খাওয়ায় মন দিলো।খাওয়া শেষ করতে পারার আগেই কমলা হন্তদন্ত হয়ে ঘরে এসে ঢুকলো।উদ্বিগ্ন গলায় বলল,
"ভাবি,বাড়িত একটা মাইয়া আসছে।তুরা মায়ের সাথে দেখা করতে চায়।"
রত্না বেগমের ভ্রু কুঁচকে গেল।উনি জিজ্ঞেস করলেন,
"কোন মেয়ে এসেছে?"
"জানি না।নামও কয় না।খালি কান্দে।"
তুরা বিস্ময় নিয়ে বলল,
"কাঁদছে?"
কমলা তড়িৎ গতিতে মাথা নেড়ে বলল,
"হ,তুরা মা।কি যে যন্ত্রণা!তোমার সাথে কথা না কইয়া নাকি যাইবো না।"
তুরার কপালে চিন্তার ভাঁজ পরলো।কে আসতে পারে তার সাথে দেখা করতে।কমলা বলল,
"তুরা মা,তারে কি তোমার ঘরে আসতে কমু?"
রত্না বেগম ধমক দিয়ে বললেন,
"ঘরে আসতে বলবি কেন?অচেনা একটা মেয়েকে ঘরে পাঠিয়ে দিবি?আশ্চর্য!"
কমলা মাথা নিচু করে বলল,
"তাইলে কি করুম?"
তুরা বিছানা থেকে নামতে নামতে বলল,
"চলো,খালা।আমি যাচ্ছি।দেখি কে এলো।"
রত্না বেগম তাড়াহুড়ো করে উঠে দাঁড়ালেন।হাতের বাটি কমলার হাতে দিয়ে বললেন,
"দাঁড়া তো।একা একা সিড়ি বেয়ে নামবি নাকি তুই?আয়,আমার হাত ধর।"
তুরা মৃদু হাসলো।মায়ের হাত আঁকড়ে ধরে ধীরে ধীরে বাইরে পা বাড়ালো সে।এই একটা হাতই তাকে আগলে রাখার জন্য যথেষ্ট।
________________
ড্রয়িং রুমে অল্পবয়সী একটা মেয়ে বসে আছে।তুরা সামনের সোফায় হেলান দিয়ে বসে সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে মেয়েটিকে দেখছে।মেয়েটি নিতান্তই কিশোরী।ধবধবে সাদা শরীর,নীল রঙের ব্লাউজটা সাদা হাত আঁকড়ে আছে,পরনের গোলাপি শাড়ির আঁচল দিয়ে সে বারবার চোখ নাক মুছছে।মেয়েটা ভীষণ রূপবতী।সোনার নাকফুল তার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।কিশোরী বয়স বলে হয়তো আরও সুন্দর লাগছে।মেয়েটাকে অনেকটা রিয়ার মতো লাগছে।সেই যে পুরান ঢাকায় আবরারের চাচাতো বোন,রিয়াকে দেখেছিল তুরা;তারপর আর মেয়েটার খোঁজই নেওয়া হয় নি।কিন্তু এই মেয়েটি কে?
তুরা কোমল গলায় বলল,
"তুমি কান্না বন্ধ করো।পানি খাবে?"
মেয়েটি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুঝালো।তুরা পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো।মেয়েটি ঢকঢক করে পানি খেলো।তারপর গ্লাসটা সামনের টেবিলে রেখে হাতের পিঠ দিয়ে চোখ মুছলো।তুরা বলল,
"তুমি শান্ত হও।আমি তোমার জন্য চা দিতে বলি।"
মেয়েটি ভাঙা ভাঙা গলায় বলল,
"আমি চা খাব না।আপনাকে কয়েকটা কথা বলেই চলে যাব,আপু।"
তুরা শান্ত গলায় বলল,
"হুম,বুঝলাম।আগে বলো,তোমার নাম কি?"
"জ্বি,আমার নাম মধু।"
"তুমি আমাকে চিনলে কি করে?"
মেয়েটি এবার মাথা নিচু করলো।ফুঁপিয়ে উঠে বলল,
"আমার স্বামীর কাছে আপনার কথা শুনেছি।আমার স্বামী আপনাকে ভালোবাসেন।"
তুরা স্তব্ধ হয়ে গেল।মেয়েটার কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারলো না সে।কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বিভ্রান্ত গলায় প্রশ্ন করলো,
"মা..মানে?কি বলছো তুমি?"
মধু এবার খরগোশের মতো চোখ পিটপিট করে তাকালো।ঠোঁট ফুলিয়ে বলল,
"ইয়ে...আপু,আমার স্বামী নাকি আপনাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসেন।উনার বাবা জোর করেছিলেন বলেই আমাকে বিয়ে করেছেন উনি।কিন্তু উনি আমাকে মেনে নেন নি।"
মধু কেঁদে উঠলো।তুরা হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো।তারপর শীতল গলায় প্রশ্ন করলো,
"কে তোমার স্বামী?"
মধু চোখ মুছতে মুছতে বলল,
"আমার স্বামী আপনার স্বামীর সৎ ভাই।ওর নাম ফারাবী।"
তুরা স্তব্ধ হয়ে গেল।কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে বসে থাকলো সে।তারপর চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।স্বাভাবিক গলায় বলল,
"তুমি আমার কাছে এসেছ কি মনে করে?"
মধু আবার কাঁদতে শুরু করলো।বলল,
"আমি জানি না,আপু।কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।আপনার কাছে কেন এসেছি,তাও জানি না।"
মেয়েটি চুপ করে গেল।কিছু সময় নীরবতার পর তুরা বলল,
"মধু শুনো,আমি কখনো তোমার স্বামীকে ভালোবাসি নি।বরং তার নানান কর্মকান্ডে বিরক্ত হয়েছি বরাবরই।"
মেয়েটি ভেজা গলায় বলল,
"আমি সবটাই জানি।"
"তাহলে আমার কাছে এলে কেন?"
"আমি কেন কি করেছি,কিছুই জানি না।আসলে আমি খুব এলোমেলো হয়ে পরেছিলাম।কত স্বপ্ন নিয়ে স্বামীর ঘরে এসেছিলাম।অথচ স্বামী আমাকে মেনেই নিলো না।ভালোওবাসলো না।শ্বশুর শাশুড়ি সবাইকে আপন করে নিলাম।শাশুড়ি মা তো অসুস্থ।উনাকেও ভালোবেসে সামলাই আমি।তবুও স্বামীর মন পাই না।স্বামী অন্যের বউয়ের নাম জপে।আমার দিকে ফিরেও তাকায় না।এত কষ্ট আমি সহ্য করতে পারছি না।জানেন আপু?আমার ফুপু আমাকে বলেছে,এত রূপ দিয়ে যদি স্বামীকেই বাঁধতে না পারিস তাহলে রূপ দিয়ে করবি কি?"
তুরা এবার হেসে ফেললো।মধু বিভ্রান্তি নিয়ে তুরার দিকে তাকালো।তুরা হাসি থামিয়ে গম্ভীর স্বরে বলল,
"তোমার ফুপুর কথায় যুক্তি আছে।আচ্ছা?তোমাদের বিয়ে হয়েছে কতদিন?"
"সাত মাস।"
"তুমি কি তোমার স্বামীকে খুব ভালোবেসে ফেলেছ?"
মধু মাথা নিচু করে বলল,
"হুম।"
তুরা মৃদু হেসে বলল,
"স্বামীকে ভালোবাসো।খুব ভালোবাসো।নিজের ভালোবাসায় স্বামীকে বেঁধে ফেলো।তোমার ভালোবাসার কাছে যখন উনি হেরে যাবেন,তখন হুট করে হারিয়ে যাও।দেখবে,তোমার অভাবে সে হাঁসফাঁস করছে।"
মধু কিছু বুঝতে পারলো না।তুরা প্রশ্ন করলো,
"বুঝতে পারলে না?"
মধু মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো।তুরা বলল,
"আসলে ব্যাপারটা হলো,তোমার স্বামী আমাকে ভালোবাসে না।সে একটা ঘোরের মধ্যে আছে।তাই বুঝতে পারছে না।সে আসলে তোমাকেই ভালোবাসে।কারণ এই সাত মাসে সে তোমার কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছে।বুঝলে?"
মধু হেসে বলল,
"আপনি আমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন,আপু।"
"না,মধু।এটাই সত্যি।যার কাছ থেকে মানুষ কখনো ভালোবাসা পায় নি,সে কখনো জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয় না।যার থেকে ভালোবাসা পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ।"
মধু দীর্ঘশ্বাস ফেললো।সত্যিই ফারাবী তাকে ভালোবাসে?তাহলে এত অবহেলা করে কেন?কখনো কাছে টানে না কেন?মধু মুখে এসব কিছুই বলল না।কথা না বাড়িয়ে সে উঠে দাঁড়ালো।বলল,
"আমি যাই,আপু।বাড়িতে কাউকে বলে আসি নি।যদিও আমার জন্য চিন্তা করার কেউ নেই,তবুও এবার বাড়ি যাওয়া প্রয়োজন।আপনাকে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত।আসলে খুব বেশি আবেগী হয়ে চলে এসেছিলাম।"
তুরাও উঠে দাঁড়ালো।জানতে চাইলো,
"মা কেমন আছেন?"
"মা ভালো আছেন।আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে,আপনি সন্তানসম্ভবা।আপনার আর আপনার সন্তানের জন্য শুভকামনা,আপু।ভালো থাকুন আপনারা।"
তুরা হেসে বলল,
"ধন্যবাদ।তোমার বিবাহিত জীবনের জন্যও শুভকামনা।সাবধানে যেও।আর তাড়াতাড়ি যাও।তোমার বর নিশ্চয়ই চিন্তা করছে তোমাকে দেখতে না পেয়ে।"
মধু তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।তারপর বেরিয়ে চলে গেল।তুরা ধীরে ধীরে সোফায় বসে গা এলিয়ে দিলো।তারপর ফোন হাতে নিয়ে আবরারের নাম্বারে ডায়াল করলো।
____________________
মধু ফুটপাত ধরে হাঁটছে।মাথার উপরে প্রচন্ড রোদ।তার ফর্সা টকটকে মুখটা রোদে লাল হয়ে উঠেছে।হাঁটতে হাঁটতেই অনেকটা পথ চলে এসেছে সে।আর হাঁটা সম্ভব না।এবার একটা রিকশা নেওয়া দরকার।সে রাস্তার ধারে দাঁড়ালো।রিকশার খোঁজে এদিক ওদিক তাকালো।হঠাৎ করে তড়িৎ গতিতে কেউ তার সামনে এসে দাঁড়ালো।মধু মাথা তুলে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল।তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে ফারাবী।মধু তাকাতেই সে রাগী গলায় বলল,
"এক থাপ্পড়ে তোমার সব দাঁত ফেলে দেবো।কাউকে কিছু না বলে কোথায় গিয়েছিলে তুমি?খুঁজতে খুঁজতে পাগল হওয়ার দশা আমার।আমাকে পাগল বানাতে চাও নাকি?"
মধু থতমত খেয়ে বলল,
"আ...আমি তো..."
"চুপ!স্টুপিড মেয়ে!কোনো যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করবে না।সোজাসুজি বলো কোথায় গিয়েছিলে?"
মধু মাথা নিচু করে বলল,
"আমার কিছু ভালো লাগছিল না।তাই ঘুরতে বেরিয়েছিলাম।"
"একা একা ঘুরতে বেরিয়ে এলে কোন সাহসে?আমাকে বলে আসা যেতো না?"
"আপনাকে বলে কি লাভ?আপনি তো আমার কোনো কথাই শুনতে চান না।আর তাছাড়া আমি কোথায় যাই,না যাই তাতে আপনার কি?"
ফারাবী চোখমুখ শক্ত করে বলল,
"আমার কি সেটা তোমাকে বুঝতে হবে না।এরপর থেকে না বলে এভাবে হারিয়ে গেলে থাপ্পড় দিয়ে গাল ফাটিয়ে দেবো।চলো,বাড়ি চলো।"
ফারাবী মধুর হাত ধরে সামনে এগিয়ে যেতে শুরু করলো।মধু বাধা দিলো না।সে মাথা নিচু করে স্বামীর পাশাপাশি হাঁটছে।তার চোখ শুধু শুধু জলে ভরে উঠছে।
.
চলবে...........
Writer: Alo Rahman