Romantic Love Story |
শরতের শুভ্র দুপুর। ঘড়িতে প্রায় তিনটা। অফিসের সবার চোখে আলসেমি ভর করেছে। সবাই নিজের নিজের চেয়ারে বসে ঝিমিয়ে চলেছে। কেউ কেউ আবার ক্লান্ত গলায় গল্পও জুড়েছে। বাইরে ঝকঝকে রোদ।আকাশে তুলোর মতো মেঘপুঞ্জ।তবে শহরের মানুষগুলোর সেই শুভ্র সুন্দর মেঘ দেখার সময় খুব একটা নেই।বিশাল বিশাল কংক্রিটের দালানগুলোর পর্দা ঢাকা কাঁচের জানালা দিয়ে আকাশ খুব একটা চোখে পরে না।আবরার ঝিম ধরে নিজের ডেস্কে বসে আছে।দুপুরবেলা আবরারের অলস লাগে।একেক দিন ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসতে চায়।সে বুঝে উঠতে পারে না আজকাল এমন কেন হয়।দুপুরবেলা ঘুমিয়ে পরা তুরার অভ্যাস।তার এধরণের অভ্যাস আগে ছিল না।হয়তো তার উপর তুরার প্রভাব পরেছে।আবরারের সামনের দুজন ব্যক্তি আজকের তাপমাত্রা নিয়ে তুমুল আলোচনা করছেন।গরমে নাকি সবার প্রাণ হাঁপিয়ে উঠছে।আবরার এসব কথায় একেবারে যোগই দিলো না।তার আজ মনটা খুব খারাপ।তার ছুটি এখনও মঞ্জুর হয় নি।দু'মাস ধরে সে ছুটির আবেদন করে চলেছে।অথচ কিছুতেই ছুটি মিলছে না।এটা কেমন অফিস?সে তো কাজটাও ঠিকঠাক মতোই করে।তবুও কি ছুটি পাবে না?তবে কি তুরাকে নিয়ে তার পাহাড়ে বেড়ানো হবে না?আবরার দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
অফিসের পিয়ন একটা খাম হাতে নিয়ে আবরারের সামনে এসে দাঁড়ালেন।আবরারের সামনে খামটা রেখে বললেন,
"স্যার,এইটা আপনার।"
তারপর সাথে সাথেই তিনি প্রস্থান করলেন।আবরার খামটা হাতে নিলো।খাম খুলতেই সাথে সাথে তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।সাত দিনের ছুটি।আবরার প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো।শেষ অব্দি ছুটি মিললো।তার তো তাহলে এখন অনেক কাজ।বেড়াতে যাওয়া তো চাট্টিখানি কথা নয়।কত আয়োজনের ব্যাপার আছে!আজ থেকেই তোড়জোড় শুরু করতে হবে।তুরা তো খুশিতে পাগলই হয়ে যাবে বোধহয়।
.
আবরারের ফোন বেজে উঠলো।রিং টোন শুনে আবরার ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে এলো।তুরা ফোন করছে।আবরার উচ্ছ্বাস নিয়ে ফোন ধরলো।বলল,
"হ্যালো,তুরা!"
ওপাশ থেকে তুরার কন্ঠস্বর শোনা গেল না।তার বদলে কানে ভেসে এলো চাপা কান্নার শব্দ।আবরার হকচকিয়ে গেল।স্ত্রীর কান্নার আওয়াজ কানে যেতেই সে নড়েচড়ে বসলো।সে ভেবেছিল প্রতিদিন দুপুরের মতোই আজও তুরা তাকে ফোন করেছে তার খাওয়া হয়েছে কিনা জানতে।হঠাৎ কান্নাকাটির কারণ সে বুঝে উঠতে পারলো না।আবরার হতভম্ব গলায় প্রশ্ন করলো,
"তুরা!তুমি কাঁদছো?"
ফোনের ওপাশ থেকে এবার ফোঁপানোর আওয়াজ পাওয়া গেল।উত্তর না পেয়ে আবরার ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে উঠলো।ব্যস্ত গলায় বলল,
"তুরা,কি হয়েছে?আমাকে বলো।ঠিক আছ তুমি?কি হয়েছে তোমার?"
তুরা এবার কাঁদতে কাঁদতে জবাব দিলো,
"তু..তুমি বাসায় এসো।এক্ষুণি এসো।"
"এখন?"
"হ্যাঁ,এখন।আমি কিছু শুনতে চাই না।তুমি আসবে মানে আসবে।"
আবরার কোমল গলায় বলল,
"ঠিক আছে।তুমি কান্না বন্ধ করো।আমি আসছি,তুরা।আসছি।"
আবরার কল কেটে দিলো।তারপর তাড়াহুড়ো করে সব জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে পরলো অফিস থেকে।
_____________________
তুরা ফোন হাত থেকে নামিয়ে শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখমুখ মুছে ফেললো।রায়না তুরার সামনে বসে আছে।সে তুরার গায়ে হাত বুলিয়ে বলল,
"এত খুশির সময়ে কেউ কাঁদে নাকি বোকা?"
তুরা মাথা নিচু করে বলল,
"আমি কেন যে কাঁদছি!কিছুই বুঝতে পারছি না, আপু।খবরটা জানার পর থেকে....."
তুরা কথা শেষ করতে পারলো না।তার চোখ আবার জলে ভরে উঠেছে।আজ সকালে তুরা অফিসে যায় নি।অফিসের বদলে সে রায়নাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল।কয়েকদিন ধরেই তার শরীর খারাপ লাগছিল।অযথা ক্লান্ত লাগা,সারাদিন ঘুম পাওয়া,মাথা ঘোরা,বমি বমি লাগা,আরও কিছু লক্ষণ দেখে তুরার মনে হচ্ছিলো ডাক্তার দেখানো দরকার।কিন্তু অফিসের কাজে সময় হয়ে উঠছিল না।গতকাল বিকালে মাছ কুটতে গিয়ে হড়হড় করে বমি করে দিয়েছিল তুরা।আবরারকে বলতে চেয়েও বলে নি।আজ রায়নার পায়ের প্লাস্টার খোলার দিন ছিল।তাই তুরাও সেই সুযোগে রায়নার সাথে হাসপাতালে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিল।রায়না তুরার রিপোর্ট নিয়ে উত্তরায় এসে হাজির হয়েছে দুপুরের দিকে।তারপর থেকেই তুরা কেঁদে চলেছে।
রায়না হাত বাড়িয়ে তুরার চোখ মুছে দিতে দিতে বলল,
"তুই এত কাঁদিস!আমার টুকুনও এত কাঁদে না।"
তুরা চোখে জল নিয়েই হেসে ফেললো।জানতে চাইলো,
"টুকুন কই?"
"ওকে বাড়িতে রেখে এসেছি।মায়ের কাছে।"
তুরা চোখ মুছতে মুছতে হেসে বলল,
"মাওয়াই মা তোমাদের সাথে আছেন সেটা দেখতেও ভালো লাগে,আপু।"
রায়না মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,
"মা তো মাত্র কয়েকদিনের জন্য এসেছিলেন।আমার পা ভেঙে গেল,তাই আর গেলেন না।আসলে....মা মুখে যাই বলুন না কেন,মনে মনে আমাকে ঠিকই ভালোবাসেন।"
কথাগুলো বলতে গিয়ে রায়নার চোখেমুখে সুখের ঝিলিক খেলে গেল।তুরা রায়নার হাত ধরে বলল,
"উনাকে বুঝিয়ে বলো।তোমাদের সাথেই যেন থেকে যান।"
রায়না মৃদু হেসে বলল,
"এবার আমি মাকে কিছুতেই যেতে দেবো না।আচ্ছা যাই হোক,তুই কিছু খাবি?"
তুরা চোখের কোণা মুছে ফেলে বলল,
"না,এখন আমার কিছু খেতে ইচ্ছা করছে না।তুমি বসো।আমি বরং চা আনি।দুজন মিলে চা খাই।"
রায়না বাধা দিয়ে বলল,
"উঁহু,তুই বস।আমি চা করে আনছি।তুই মাওয়াই মাকে ফোন কর,অথবা তুলিকে।সবাইকে খবরটা জানাতে হবে না?"
কথা শেষ করে প্রশস্ত হেসে রায়না রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেল।তুরার ফের কান্না পাচ্ছে।সে নিজেকে সামলে নিয়ে ফোন হাতে নিলো।
_________________________
আবরার হন্তদন্ত হয়ে দরজার সামনে দাঁড়ালো।উৎকন্ঠায় পরপর চারবার বেল বাজিয়ে ফেললো।দ্রুত বাসায় ফেরার চেষ্টা করেও সে ব্যর্থ হয়েছে।এর কারণ হলো,বিশ্রী ট্রাফিক জ্যাম।আধঘণ্টার রাস্তা সে এসেছে দেড় ঘন্টায়।অস্থিরতায় আবরারের বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে।ঘামে ভিজে গেছে তার কপাল,গায়ের শার্টটাও ঘামে ভিজে লেপ্টে আছে শরীরে।
.
তুরা দরজা খুলে দিলো।দরজা খুলেই প্রচন্ড গতিতে আবরারের বুকে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পরলো সে।আবরার স্তব্ধ হয়ে গেল।কিছুক্ষণ থম মেরে দাঁড়িয়ে থাকলো সে।তারপর আলতো করে তুরার মাথায় হাত রেখে বলল,
"কি হয়েছে,তুরা?আর চিন্তায় রেখো না প্লিজ।বলো!"
তুরা আর সামলাতে পারলো না নিজেকে।হুহু করে কেঁদে উঠে বলল,
"আমার কাজল আসছে।আমার কাজল আবার আসছে।আমাদের কাছে আসছে।"
আবরারের ভেতরে অদ্ভুত শিহরণ হলো।তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো।আশ্চর্য হয়ে সে লক্ষ্য করলো যে তার চোখ ভিজে উঠেছে।সে এক হাত দিয়ে তুরাকে জড়িয়ে নিলো।কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারলো না।সব কথা কেমন গুলিয়ে গেছে তার।
তুরা মাথা তুলে আবরারের চোখের দিকে তাকালো।তার চোখে ভয়।আবার তার কাজলকে হারিয়ে ফেলার ভয়!স্ত্রীর চোখের ভাষা আবরার বুঝলো কিনা কে জানে?সে ভরসার হাসি হাসলো।তারপর স্ত্রীর কপালে চুমু খেয়ে বলল,
"তুমি ভয় পেয়ো না।আমরা দুজন মিলে আমাদের কাজলকে আগলে রাখবো।চলো,ঘরে চলো।"
তারপর তুরার হাত ধরে ভেতরের দিকে পা বাড়ালো।
.
সন্ধ্যা ছয়টা।রত্না বেগম উত্তরায় মেয়ের বাসায় এসেছেন।সাথে এনেছেন তুলিকেও।উনি এসে থেকে তুরাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছেন।সামনে বসে আছে আবরার আর রায়না।তুলি চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছিলো।কাপ নামিয়ে রাখতে রাখতে বলল,
"মা,মেজ আপাকে এবার ছাড়ো।বেচারির দম বন্ধ হয়ে গেল।"
রত্না বেগম তুলিকে ধমক দিতে গিয়েও থেমে গেলেন।এই মেয়ের বিশ্বাস নেই।ধমক টমক দিলে সবার সামনে আবার কি না কি বলে বসবে কে জানে?একে কিছু না বলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
রত্না বেগম তুলিকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে আবরারের দিকে তাকালেন।কোমল গলায় বললেন,
"বাবা আবরার,তোমাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই আমি।"
আবরার মাথা নাড়িয়ে বলল,
"জ্বি,মা।বলুন।"
রত্না বেগম ছোট করে নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,
"দেখো,বাবা।আমি তো মা।সারাক্ষণ ভীষণ চিন্তায় থাকি আমি।এবারে আমি তুরাকে নিয়ে কোনোরকম কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না।তাই আমি ওকে এই কয়েকটা মাস নিজের কাছে রাখতে চাই।"
তুরা চকিত হয়ে একবার মায়ের দিকে,আরেকবার আবরারের দিকে তাকালো।আবরার শান্ত গলায় বলল,
"আমার উপরে কি ভরসা করতে পারছেন না,মা?"
রত্না বেগম ইতস্তত করে বললেন,
"ব্যাপারটা তা নয়,বাবা।আসলে আমার মনে ভয় তৈরি হয়েছে।তাই সবসময় মেয়েকে চোখের সামনে রাখতে চাইছিলাম।তবে আমি জোর করছি না মোটেও।তোমাকে বললাম,এখন তুমি যা বলবে তাই হবে।"
আবরার স্বাভাবিকভাবে বলল,
"আমি কি বলবো,মা?তুরার যা ভালো লাগে,ও তাই করবে।"
তুরা মায়ের হাত ধরে বলল,
"মা,আমি এই কয়েকটা মাস তোমার কাছে থাকলে আমার বাড়ির দেখভাল কে করবে?আর ও কিভাবে এতদিন একা একা থাকবে?"
রায়না বলল,
"আমি খেয়াল রাখবো,তুরা।আমারও মনে হয় যে তোর মায়ের কাছেই থাকা উচিত।"
রত্না বেগম খানিকটা ভরসা পেলেন।বলে উঠলেন,
"হ্যাঁ,রায়না তো আছেই।আর তাছাড়া আবরার তো আমাদের ওখানেও থাকতে পারে।আমি কি ওর মা না?"
আবরার কোনো কথা বলল না।তুরা শীতল গলায় বলল,
"মা,ও নিজের বাসায় থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।"
রত্না বেগম মলিন মুখে বললেন,
"না যেতে চাইলে যাস না।আসলে তোকেও তো আমি নয় মাস পেটে ধরেছি,তাই তোর জন্য খুব চিন্তা হয়।তারপর গতবারের দূর্ঘটনায় মনে ভয় হয়ে গেছে।তোর জন্য যে কত অস্থির হয়ে থাকি আমি,তা তো শুধু আমিই জানি।যাই হোক,যা ভালো বুঝিস কর।তোকে তো এখন আর জোর করার কোনো অধিকার আমার নেই।"
রত্না বেগমের চোখ ভিজে উঠেছে।মায়ের কথাগুলো তুরার বুকে তীরের মতো বিঁধলো।সে মাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
"ও মা!আমি কি যাব না বলেছি?তুমি কষ্ট পেয়ো না,মা।আমি তো যাব।শুধু বলছি যে,কয়েক মাস পরে যাব।"
রত্না বেগম কথা বললেন না।উনার মনের দুশ্চিন্তা কাটছে না।আগের বারেও মেয়েটা এই কথাই বলেছিল।আবরার বলে উঠলো,
"তুরা,তুমি মায়ের কাছে গিয়েই থাকো।"
তুরা হতচকিত হয়ে বলল,
"কিন্তু,তুমি....."
আবরার তুরাকে বলতে দিলো না।তার আগে নিজেই বলল,
"জেদ করো না,তুরা।আমরা সবাই যা বলছি,তাই শুনো।"
আবরার এবার উঠে দাঁড়ালো।মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
"মা,আপনি তুরাকে নিয়ে যেতে পারেন।শুধু একটা কথা।"
"কি,বাবা?"
"আমি অফিস থেকে সাতদিনের ছুটি পেয়েছি।এই সাতটা দিন ও আমার কাছে থাকুক।তারপর না হয় যাবে।"
রত্না বেগম মৃদু হেসে বললেন,
"তোমাদের যা ইচ্ছা।"
আবরার কিঞ্চিৎ হেসে বলল,
"ঠিক আছে,মা।আপনারা বসুন।আমি একটু আসছি।"
বলেই ঘরের দিকে চলে গেল।তুরা ইতস্তত করে বলল,
"মা,আমি একটু আসছি।"
তুরা দ্রুত পায়ে নিজের ঘরে গিয়ে ঢুকলো।আবরার অফিসের ব্যাগটা ঘাটাঘাটি করছিল।তুরা পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
"অফিস থেকে সাতদিনের ছুটি নিয়েছ কেন?"
আবরার পাশে তাকালো।হেসে বলল,
"তোমাকে নিয়ে পাহাড়ে বেড়াতে যেতে চেয়েছিলাম না?সেজন্য।"
তুরা উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলল,
"সত্যি বলছো?কবে যাব বলো না?"
আবরার ইতস্তত করে বলল,
"ইয়ে....তুরা,এই সময় ঘুরে বেড়ানো ঠিক হবে না।এত দূরের জায়গায় ভ্রমণ করা তো আরও ঠিক হবে না।"
তুরার মুখ মলিন হয়ে গেল।তবে কি আবরারের সাথে হাত ধরে পাহাড়ে হাঁটা হবে না তার?
তুরার মলিন মুখ দেখে আবরার তাকে কাছে টেনে আনলো।হাসার চেষ্টা করে বলল,
"আরেহ!তুমি মন খারাপ করছো নাকি?মন খারাপ করো না।আমাদের কাজল আসুক।তারপর আমরা তিনজনে মিলে বেড়াতে যাব।"
তুরা এবার আবরারের দিকে তাকিয়ে অভিমানী গলায় প্রশ্ন করলো,
"আমি মায়ের কাছে চলে গেলে তোমার অসুবিধা হবে না?"
আবরার মৃদু হেসে বলল,
"তুরা,আমার থেকে মা তোমার অনেক বেশি খেয়াল রাখতে পারবেন।অনেক বেশি ভালো যত্ন করতে পারবেন।তাই মায়ের কাছে থাকাটাই ভালো হবে বলে মনে হয়েছে আমার।আর আমার কাছে এখন নিজের সুবিধার চেয়ে তোমার আর বাবুর সুস্থ থাকাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।বুঝলে?"
তুরা হঠাৎ কেঁদে উঠলো।আবরার হতভম্ব হয়ে গেল।ব্যস্ত গলায় বলল,
"আরেহ!কাঁদছো কেন তুমি?"
তুরা চট করে আবরারকে জড়িয়ে ধরলো।কাঁদতে কাঁদতে বলল,
"আমি তোমাকে ছেড়ে থাকতে চাই না।"
আবরার তুরার চুলে বিলি কেটে বলল,
"আমাকে ছেড়ে আবার কি?আমি তো যাবই তোমার কাছে।"
"ওই যাওয়াতে কি হবে?আমি চাই তুমি সবসময় আমার কাছে থাকো।"
"সবসময়?তাহলে কি অফিস থেকে পুরো নয় মাসের ছুটি চেয়ে নেবো?"
তুরা হেসে ফেললো।আবরারের বুক থেকে মাথা তুলে বলল,
"না।আমি বলেছি অফিসের সময় বাদে বাকি সব সময়টা।"
আবরার বিভ্রান্ত হয়ে বলল,
"তাহলে কি তুমি মায়ের কাছে যেতে চাও না?"
"চাই তো।আমি মায়ের কাছেও থাকতে চাই।আর তোমার কাছেও।সবাইকে একসাথে চাই আমি।চাই মানে চাই।আমি কিছু জানি না।"
কথাটা বলেই তুরা ফুঁপিয়ে উঠলো।আবরার চিন্তায় পরে গেল।এই পাগল মেয়েটাকে নিয়ে কি যে সে করবে?
.
চলবে...........
Writer: Alo Rahman