> তৃণশয্যা পর্ব ১, ৫ - Bangal New Story - নিয়াজ মুকিত
-->

তৃণশয্যা পর্ব ১, ৫ - Bangal New Story - নিয়াজ মুকিত



চলন্ত বাসে হঠাৎ পিরিয়ড শুরু হয় চারুর।সে তার পাশের ছেলেটিকে উদ্দেশ্য করে বলে,-"আপনি একটু আমাকে জানালার দিকের সিটটা দিবেন।আমার একটু দরকার আছে।না হলে কিন্তু আপনার গায়েই বমি করে দিব।"চারু ছেলেটিকে মিথ্যা বলে পিরিয়ডের কথা চেপে যায়। ছেলেটা তার দিকে তাকিয়ে বলে,
---' এটা আমার সিট আর আমি এখানেই থাকবো,একটু নড়বো না।তাতে আপনি কি করবেন করুন?বেশি দরকার হলে আমার সামনেই পড়ুন না!'
ছেলেটাকে অনেক অনুরোধ করলেও ছেলেটা তার সিদ্ধান্তে অটল থাকে।এদিকে চারু কষ্ট বাড়তে শুরু করে।সে তার চোখ বন্ধ করে,এক ঠোট দিয়ে আরেক ঠোট কামড়ে ধরে সিটে হেলাম দিয়ে শুয়ে থাকে।তা দেখেও ছেলেটার মায়া হয় না।সেও সিটে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে।
দীর্ঘ ১দিনের জার্নির কেবল ১২ঘন্টা অতিবাহিত হলো।এখনো ১২ঘন্টা রয়েছে।চারুর কষ্টের পরিমাণ ধিরে ধিরে বাড়তে থাকে।চারু যদি জানতো এইরকম একটা লোক তার পাশে বসবে তাহলে খালার বাসা যাওয়ার প্লানটাই ক্যান্ছেল করে দিত।এদিকে ছেলেটার টের চোখে চারুর দিকে তাকাচ্ছে আর চোখ বন্ধ করে নিচ্ছে।
একপর্যায়ে চারুর পাজামা রক্তে ভিজতে শুরু করে সাথে ব্যাথায় বাড়তে শুরু করে।এটা তার জীবনের তৃতীয় পিরিয়ড।আগেও দুইবার এরকম ব্যাথা সহ্য করেছে তবে এবারের টা আগের বাড়ের তুলনায় ঢের বেশি।রক্ত আস্তে আস্তে দখল নিতে শুরু করেছে সমস্ত পাজামা।চারু এক ঠোট দিয়ে আরেক ঠোটকে কামড়ে ধরে নিরবে চোখের পানি ফেলছে।ছেলেটা চারুর রক্তাক্ত পাজামার দিকে তাকিয়ে আছে।
চারু এবার সিদ্ধান্ত নেয় শত কষ্ট করে হলেও ড্রাইভারকে বলে বাসটা থামাতে হবে।এজন্য সে উঠে দাড়ায়।সে উঠে দাঁড়াতেই ছেলেটা তার পাজামার দিকে তাকিয়ে বলে,
---' আমি আপনাদের মতো কমনসেন্স হীন মানুষ কখনো দেখিনি।এইরকম ইমপর্ট্যান্ট একটা মুহর্তে কিভাবে পারেন এভাবে জার্নি করতে।নিন আমি অন্যদিকে ঘুরছি? '
এই বলে ছেলেটা অন্যদিকে তাকায়।পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখদুটো বেধে নেয়।চারুর ভাগ্য ভালো যে সে বাসের সর্বশেষের কোণের সিটে বসেছে।নাহলে আজ তাকে বিশাল এক বিরম্মনায় পড়তে হতো।ছেলেটা অন্যদিকে তাকিয়ে চোখবাধা অবস্থায় চারুকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' নিন,তারাতারি শেষ করুন '
ছেলেটার আদেশ পেয়ে চারু খানিকটা কষ্ট করে হলেও তার ব্যাগটা নামায় উপর থেকে।তারপর ব্যাগের চেইন খুলে খুঁজতে শুরু করে এই মুহুর্তে তার কাঙ্খিত জিনিসটা।সে সমস্ত ব্যাগের কাপড় ওলট-পালট করেও খুঁজে পায় জিনিসটা।চারু বেশ চমকে ওঠে।এদিকে ছেলেটা বারবার তাকে তাগদা দিয়েই চলেছে।চারু শেষ পর্যন্ত উপায় না পেয়ে একটা মোটা কাপড়ের পাজামা বের করে নিজের ব্যাগ থেকে।তারপর ঝটপট এমনভাবে কমড়ে বেধে নেয় যাতে রক্তাক্ত পাজামাটা দেখা না যায়।চারু পাজামাটা ভালো করে বেধে নিয়ে ছেলেটাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' এবার চোখটা খুলুন '
চারুর নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথে চোখ খোলে ছেলেটা।প্রথমই অবাক হয়ে তাকায় চারুর পাজামার দিকে।তারপর উপর দিকে তাকিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' কাজ হয়েছে তো? '
চারু শুধু মাথা নাড়িয়ে হা বলে কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলে না।তার উত্তর পেয়ে ছেলেটা আবার ‌নিজের কানে হেডফোন গুজে সিটে হেলান দিয়ে বসে পড়ে।এদিকে চারু বুঝতে পারছে না কিছুই?সে নিজে স্যানিটারি প্যাডটা ব্যাগের ভিতরে রেখেছিল তাহলে এখন নাই কেন?এদিকে ব্যাথা খানিকক্ষ‌‌নের জন্য হালকা একটু কমলেও পরবর্তির কথা চিন্তা করে বেশ চিন্তিত হয় চারু।
২.
' রাউজান আইসা পড়ছি,কেডা কেডা নামবেন? '
হেলপারের এই কথাটায় চারু আর তার পাশের ছেলেটা দুজনেই জেগে যায়।দুজ‌নে ব্যাগ গুছিয়ে নামার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।প্রথমে ছেলেটা নেমে পড়ে বাস থেকে তারপর চারু।তারা বাস থেকে নামতেই বাসটা চলতে শুরু করে।
চারু আস্তে করে গিয়ে বসে পড়ে একটা দেয়ালে।দেয়ালটা অনেকটা নিচু হওয়ায় বসতে বিন্দুমাত্র সমস্যা হয় ‌না তার।ছেলেটা চারুকে এক হাত নাড়িয়ে বিদায় জানিয়ে বলে,
---' বাই,বাই।ভাগ্যে থাকলেও দেখা হবে আবার। '
এই বলে ছেলেটা হাটতে শুরু করে।চারু ধুমমম মেরে সেখানেই বসে থাকে।কিছুক্ষন পরই পশ্চিম আকাশে সন্ধ্যা নামবে।চারদিকে নামতে শুরু করবে ঘন কালো অন্ধকার।কিন্তু এখনো কোনো খবর নেই তার খালা কিংবা খালুর।এদিকে সে তার খালার বাসার ঠিকানাও জানেনা।বাসায় যে ফোন দিয়ে ঠিকানাটা জেনে নিবে তারও উপায় নেই।ফোনে নাম্বার ডায়াল করে কল দিতেই ওপাশ থেকে নারীকণ্ঠ সুন্দর করে বলছে,
' আপনার ফোনে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যালে‍‌ন্স নেই,অনুগ্রহ করে রিসার্জ করুন অথবা ডায়াল করুন এত এত নাম্বারে।আরো ইত্যাদি ইত্যাদি কথা বলছিল '
এদিকে পাজামার রক্ত শুকিয়ে গিয়ে এক বিরক্তিকর পরিবেশ তৈরি করেছে।চারু বুঝতে পারছে না তার এখন কি করা উচিত?সে মোবাইলের স্কিনের দিকে তাকিয়ে খানিকটা চমকে ওঠে।এত তারাতারি কিভাবে আটটা বেজে গেল বুঝতে পারছে না।চারু সিদ্ধান্ত নেয় আর এখানে বসে থাকবে না।সামনে আগাবে খানিকটা।তারপর কোনো এক মোবাইল রিসার্জের দোকানে দিয়ে মোবাইল রিসার্জ করে বাসায় ফোন দিয়ে ঠিকানাটা জে‌নে নেবে।
চারু তার ব্যাগটা নিয়ে আস্তে আস্তে এগোতে শুরু করে।বেশ কিছুটা কষ্ট হলেও থেমে থাকে না।চারু খানিকটা সামনে একটা দোকান দেখতে পায়।ঠোটে ঠোট চেপে সেই দোকানকে লক্ষ্য করে হাটতে শুরু করে।একপর্যায়ে সে এসে দাঁড়ায় দোকানের সামনে।দোকানি একজন মহিলা।চারু মহিলাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' এখানে কি ফেক্সিলোড করা হয়? '
মহিলা একবার চারুর দিকে তাকিয়ে কিছুটা শুস্ক গলায় বলে,
---' হ্যাঁ।করবেন নাকি?নাম্বার দিন '
চারু আর কোনো কথা না বলে মহিলাকে নাম্বারটা দিয়ে দেয়।মহিলা চারুর কথা অনুযায়ী তার ফোনে ৫০টাকা রিচার্জ করে দেয়।চারু টাকা পরিশোধ করে মোবাইল বের করে প্রথমে বাসায় ফোন দেয়।প্রায় ৫-৬ বারের মতো রিং হওয়ার পর তার ছোট বোন মারিয়া ফোন ধরে।চারু মারিয়াকে বলে ফোনটা তার বাবাকে দিতে।ছোট্ট মারিয়া বড় বোনের কথা অনুযায়ী ফোনটা তার বাবাকে দেয়।চারু এবার তার বাবার কাছ থেকে ঠিকানাটা শুনে একরকম মুখস্থ করে ফেলে।তারপর ফোন কেটে দিয়ে খুঁজতে শুরু করে ঠিকানাটা।
৩.
' এই ধর মেয়েটাকে,রক্তভেজা গোলাপ।আজকের রাতটা মনে হয় খুব মজায় কাটবেরে। '
বিচিত্র এরকম কথা শুনে চমকে পিছনে তাকায় চারু।কয়েকটা ছেলে তার দিকে এগোচ্ছে।ভয়ে কলিজা শুকিয়ে যায় তার।এদিকে ব্যাথা আগের ন্যায় একটু বেড়েছে।চারু বুঝতে পারছে সে দৌড়াতে পারবেনা।তবুও দৌড়ানোর ব্যার্থ চেষ্টা করে সে।একহাতে ব্যাগ অন্যহাতে মোবাইল নিয়ে দৌড়াতে শুরু করে সে।দৌড়ানোর মাঝে লক্ষ করে কমড়ের পাজামাটা খুলে পড়ে গেছে।বেড়িয়ে এসেছে রক্তাক্ত পাজামাটা।চারু সেদিকে ভ্রু-কুটি না করে দৌড়াতেই থাকে।ছেলেগুলো তার খুব কাছে চলে এসেছে।চারু মনে মনে দোয়া দরুদ পড়ছে।হঠাৎ সে ধাক্কা খায় একজন লোকের সাথে।লোকটা তাকে না দেখে বলে ওঠে,
---' আজকাল রাস্তায় এইসব পাগল যে কোথা থেকে বেড়োয়,ধুর। '
এই বলে লোকটা চারুর দিকে তাকায়।চারুও তাকায় লোকটার দিকে।দুজনে চমকে ওঠে দুজনকে দেখে।চারু আর লোকটা একসাথে বলে ওঠে,
---' আপনি এখানে? '
দুজন একসাথে বললেও ছেলেটার কথাই শোনা যায়।চারু ঝটপট গিয়ে ছেলেটার পিছনে দাঁড়ায়।পিছনের ছেলেগুলো ততক্ষনে এসে পৌছেছে তাদের সামনে।ছেলেটাকে দেখামাত্র অন্য ছেলেগুলো ভয়ে দৌড়াতে শুরু করে।চারু অবাক হয়ে লোকটার দিকে তাকায়।চারু কিছু বলার আগেই ছেলেটা চারুকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' আপনি এখানে কেন?এখনো যান নি। '
চারু এবার সব বলে ছেলেটাকে।ছেলেটা চারুর দেওয়া ঠিকানা শুনে বেশ অবাক হয়।সাথে সাথে জিজ্ঞাসা করে,
---' ওই বাড়ির লোকটা আপনার কি হয়? '
চারু মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়,'খালু'
চারুর উত্তর শোনার সাথে সাথে ছেলেটা চারুর পিঠে খুব জোরে একটা মাইর দেয়।চারু কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছেলেটা চারুকে...


চারু কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছেলেটা চারুর পিঠে একটা মাইর দেয়।তারপর গালটা টেনে দিয়ে বলে,
---' তারমানে তুই আমার সেই পিচ্চি খালাতো বোন '
চারু বুঝতে পারছে না ছেলেটা কি বলছে?অচেনা একটা ছেলে তাকে খালাতো বোন বলে দাবি তুলছে।ছেলেটা এবার চারুর হাত ধরে বলে,
---' চল আমার সাথে। '
এই বলে সে চারুকে টানতে টানতে নিয়ে যায়।চারু হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও পারেনা।অনেক শক্ত করে ধরে রেখেছে তাকে।এক পর্যায়ে চারু হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করা বাদ দিয়ে দেয়।জানে চেষ্টা করেও ফল হবে না।প্রায় ৬মিনিটের মতো হাটার পর তারা এসে পৌঁছায় একটা বাসার সামনে।ছেলেটা এবার চারুর হাত ছেড়ে দিয়ে দরজায় মারতে শুরু করে।সাথে সাথে দরজা খুলে যায়।ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে চারুর খালাতো বোন রিমি।রিমি চারুকে দেখেই জড়িয়ে ধরে।ভিতর থেকে রিমির মা রিমিকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' কেরে রিমি? '
রিমি খানিকটা চিল্লিয়ে উত্তর দেয়,' চারু '
রিমি চারুর পাজামার দিকে তাকিয়ে ভরকে যায়।সে তারাতারি চারুকে ভিতরে নিয়ে যায়।চারুকে নিয়ে নিজের রুমে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দেয়।তারপর সে নিজেই চারুর ব্যাগ থেকে একটা পাজামা বের করে চারুকে দিতে দিতে বলে,
---' আগে পাজামা চেঞ্জ করে আয় '
চারুও আর কোনো কথা না বলে ব্যাগ থেকে আরেকটা জামা বের করে পাজা‌মা সমেত জামা নিয়ে ওপাসরুমে প্রবেশ করে।লক্ষ্য শাওয়ার নিয়ে পরিষ্কার হয়ে বের হওয়া।
প্রায় ২০মিনিটের মতো শাওয়ার নেওয়ার পর বের হয় চারু।সে বের হয়ে দেখে রিমি বিছানায় বসে আছে।চারু গিয়ে রিমির পাশে বসে পড়ে।রিমি কিছু বলে ওঠার আগেই চারু তাকে বলে,
---' আমি জানি তুই কি ভাবছিস?যে জিনিসটা তোর শুরু হয়েছে ১৩বছর বয়সে সেটা আমার শুরু হয়েছে ১৬বছর বয়সে।তাইনা? '
রিমি চারু কথায় মাথা নাড়িয়ে বলে,
---' হুম,সাধারণত ১০-১৪বছরের মধ্যে শুরু হয় কিন্তু তোর ১৬কেন? '
চারু এবার তার মাথাটা নিচে করে বলে,
---' প্রথমে ব্যাপারটা নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম।তারপর ডাক্তারকে দেখালে ডাক্তার বলে,আমি অতিরিক্ত চিকন হওয়ার কারনে আমার এই অবস্তা।আর আমার প্রথম হয়েছে ৩মাস আগে।এটা ছিল ৩য়।বুঝছিস। '
রিমি এবার হাসি মুখে বলে,
---' আচ্ছা এখন এসব বাদ দে।শোন কলেজ তো ১মাসের ছুটি।এবার ছুটিটা আমরা জমিয়ে কাটাবো।ভাইয়াও আজকে ফিরে আসলো।এবারের ছুটিটা অনেক মজায় মজায় কাটবে মনে হয়।কি বলিস তুই? '
চারু উত্তর দেওয়ার আগেই দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ হয়।রিমি তারাতারি উঠে দরজা খুলে দেয়।দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে চারুর খালামনি আর তার গুনধর ছেলে।তাদের দেখে চারু উঠে দাঁড়ায়।চারুর খালা এসে চারুকে বসিয়ে দিয়ে নিজে পাশে বসেন।তারপর শুরু করে দেন হাউ ডু ইউ ডু।একপর্যায়ের হাউ ডু ইউ ডুর পালা শেষ হলে তিনি ডিনারের জন্য আসতে বলে সেই স্থান ত্যাগ করেন।এতক্ষন থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব শুনছিল ছেলেটা আর রিমি।রিমি এবার তার ভাইকে বলে,
---' আদনান ভাইয়া,কালকে আমরা বেড়াতে যাব। '
চারু বুঝতে পারে তার গুনধর খালাতো ভাইয়ের নাম আদনান।আদনান একবার চারুর দিকে আরেকবার রিমির দিকে তাকিয়ে বলে,
---' আমার ঠ্যাকা পড়ে নাই তোদের মতো থার্ড ক্লাস মেয়েদের সাথে ঘুরতে বের হওয়ার। '
এই বলে মেয়েদের মতো মুখ ভেংচি কেটে সেই স্থান ত্যাগ করে আদনান।রিমি আর চারু তার যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে থাকে।
৪.
চারুকে নিয়ে ডিনার টেবিলে হাজির হয় রিমি।চারু সেখানে গিয়ে দেখতে পায় তাদের আগে থেকেই সেখানে বসে আসে আদনান ও তার মা।চারু গিয়ে আদনানের পাশের চেয়ারটায় বসে পড়ে।রিমি বসে পরে চারুর পাশের চেয়ারটায়।রিমির মা সবাই ভাত দিতে শুরু করে।চারু তার খালামনিকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' খালামনি,খালু বাসায় নাই? '
তার খালা মনি তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,
---' তোর খালু কয়েকদিনের জন্য ঢাকা গেছে। '
তারপর কেউ আর কোনো কথা না বলে খেতে শুরু করে।খাওয়ার শেষপর্যায়ে চারু অনুভব করে কেউ তার পায়ের মধ্যে সজোড়ে লাথি মেরেছে।সে বহু কষ্টে মুখ দিয়ে শব্দ করা হতে বিরত রাখে নিজেকে।তারপর তার কড়া চোখ দিয়ে টেবিলের প্রত্যেকটা ব্যাক্তির দিকে তাকায় চারু।সবার মনোযোগই নিজ নিজ প্লেটের দিকে।চারু বুঝতে পারেনা কে এই অকাজটা করলো?
সেদিনের মতো ডিনার শেষ করে চারু।পানি খেয়ে রিমির ঘরকে উদ্দেশ্য করে হাটতে শুরু করে।তার আগেই রিমি নিজের ঘরে চলে গেছে।
চারু রিমির ঘরে যাওয়ার সময় মাঝে একটা সুন্দর ঘর লক্ষ্য করে।কৌতুহল বশত ভিতরে প্রবেশ করে চারু।ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের চারদিকটা দেখতে শুরু করে চারু।তার চোখ আটকে যায় বিছানার উপরে থাকার মোবাইলটার দিকে।চারু ভয় নিয়ে মোবাইলটা হাতে নেয়।তারপর কোণের বাটনটাতে চাপ দিয়ে মোবাইলটা অন করে।
মোবাইলটা অন করে ওয়ালপেপারটা দেখে চিল্লিয়ে ওঠে চারু।সাথে সাথে রুমের ভিতরে আগমন ঘটে আদনানের।বিছানার উপর চারুকে মোবাইল হাতে দেখে তারাতারি এসে চারুর হাত থেকে মোবাইলটা ছিনিয়ে নেয় সে।তারপর খানিকটা কড়া গলায় বলে,
---' তুই আমার রুমে কেন?এসেছিস এসেছিস আবার মোবাইলেও হাত দিয়েছিস।তোর সাহস তো কম নয়! '
চারু ঘৃণিত চোখে তাকায় আদনানের দিকে।তারপর আদনানকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' আপনি এত বেহায়া আমি জানতাম না।ছি. ছি.।আপনি কিভাবে এত বেয়াদপ হইলেন।আপনার বাবা-মা দুইজনেই ভালো কিন্তু ছেলেটা নাম্বার ওয়ান বেয়াদপ।ছি. পাশে দুইটা মেয়ে নিয়ে কিভাবে ছবি তুলছে... '
চারু আর কিছু বলার আগেই আদনান চারুর মুখটা টিপে ধরে।তারপর খানিকটা রেগে বলে,
---' খুব কথা বলস তুই।আমি বেয়াদপ।আরো দেখবি এরকম ছবি।এই দেখ.. '
এইবলে মোবাইলের লক খুলে গর্বের সহিত আরো ছবি দেখাতে শুরু করে আদনান।এসব ছবি দেখে নিজের চোখ বন্ধ করে নেয় চারু।আদনান এবার চারুকে দার করায়।তারপর এক রহস্যময়ী গলায় বলে,
---' আমি তোর মতো সারাদিন বই নিয়ে পড়ে থাকি না।পড়তে পড়তে নিজের শরিরটাকে তো ডান্ডানাচুনি বানিয়ে ফেলেছিস।আমার কাছে লাইফ মানে চিল।তোর মতো বই‌ নিয়ে পড়ে থাকা নয়।আরো দেখবি নাকি পিক গুলা। '
চারু আর কোনো কথা না বলে তৎক্ষণাৎ আদনানের রুম ত্যাগ করে।চারু খুব রেগে গেছে।এই ছেলের সাহস কম নয় তাকে কিনা বলে ডান্ডানাচুনি।এর প্রতিশোধ সে নিবেই।এরকম আরো নানা কথা বিরবির করতে করতে রিমির রুমে প্রবেশ করে চারু।দেখে রিমি ঘুমিয়ে পড়েছে।চারুও গিয়ে শুয়ে পড়ে রিমির পাশে।ঘুমিয়ে পড়ে সেদিনের মতো।
৫.
রাত ২ কি ৩টার সময় এক আজব চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গে চারু আর রিমি দুজনেরই।দুজনে তারাহুরো করে দরজা খুলে বের হয়।বের হয়েই বুঝতে পারে কতবড় ভুল করে ফেলেছে।এই গভীর রাতে তাদের বাড়িতে হানা দিয়েছে একদল ডাকাত।দুজন ডাকাত এসে রিমি আর চারুর গলায় ছুরি ধরে...


মধ্যে রাতে আদনানদের বাড়িতে হানা দিয়ে একদল ডাকাত।দলনেতার কথা অনুযায়ী তিনজন ডাকাত যথাক্রমে রিমির মা,রিমি ও চারুর গলায় চুরি ধরে আছে।এখানে অবাক করার বিষয় হচ্ছে বাড়িতে এত কিছু ঘটে যাচ্ছে অথচ আদনা‌নের রুমের দরজা এখনো বন্ধ।দলনেতার নির্দেশে একজন গিয়ে আদনানের দরজায় থাবা মারতে শুরু করে।প্রায় ২মিনিটের মতো থাবা মারার পর হঠাৎ খুলে যায় দরজা।দরজার ওপাশে ভেসে ওঠে সদ্য ঘুম থেকে ওঠা আদনানের মুখখানা।সে চোখ ডলতে ডলতে বলে,
---' কে রে?এত রাতে কেউ এভাবে ডাকা-ডাকি করে নাকি? '
তার এই কথার জবাবে একজন ডাকাত বলে ওঠে,
---' আমরা ডাকাত।আজ তোমাদের বাড়ি ডাকাতি করবো! '
আদনান তাদের চমকে দিয়ে উত্তর দেয়,
---' ডাকাতি করবে তা করো,আমার দরজায় থাবা মারছো কেন?তোমরা যা করার করো কিন্তু আমার ঘুমের ডিষ্টার্ব দিও না। '
এই বলে সে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়।তার এরকম কথাবাত্রায় ডাকাত দল সহ উপস্থিত সবাই বোকা হয়ে যায়।এবার ডাকাত দলনেতার কথা অনুযায়ী অন্যান্য লোকেরা এক এক করে চলে যায় সব কিছু আনতে।এদিকে সবারই গলায় ছুড়ি ধরা।এই অবস্থায় কেটে যায় ১০মিনিট।হঠাৎ তাদের ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে কয়েকজন ছেলে।তারা সংখ্যায় ২০।ডাকাত দলনেতা তাদের দেখে চমকে যায়।তাদের হাতে পিস্তল রয়েছে।সাথে সাথে খুলে যায় আদনানের ঘরের দরজা।ধরে ফেলা হয় ডাকাতদের।
৬.
বাসায় উপস্থিত সব আত্মীয়-স্বজনরা আদনানকে নিয়ে মেতে আছে যা মোটেও সহ্য হচ্ছে না চারুর।কালকে সংবন্ধ একটা ডাকাত দলকে ধরিয়ে দেওয়ার পর আদনানের কথা মতোই সবাইকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।সবাই আদনানের প্রসংশা করছে শুধুমাত্র চারু আর রিমি বাদে।এবার আদনান সবার মাঝ থেকে উঠে এসে রিমি আর চারুর সামনে দাঁড়ায়।রিমি তাকে দেখে মুখটা সড়িয়ে নেয়।
আদনান এবার নিজের কনুইটা ডলতে ডলতে বলে,
---' বুঝলি!তোরা দুইটা হইলে গবেট। '
গবেট কথাটা শুনে রিমি আর চারু দুজনেই প্রচন্ড রেগে যায়।তাদের রাগ দেখে আদনান আবার বলতে শুরু করে,
---' সারাজীবন গবেট থাকলে হবে না,আমার মতো বুদ্ধিমান হতে শেখো।দেখ আমি কিভাবে কালকে ডাকাতদলকে ধরিয়ে দিলাম?ওহ শিট,তোরা দেখবি কি করে?তোরা তো আস্ত কানা। '
আদনান যে তাদের অপমান করছে সেটা ঢের বুঝতে পারছে দুজনেই কি‍ন্তু কিছু বলতে পারছে না শুধু ভিতরে ভিতরে রেগে যাচ্ছে।এমন সময় আদনানের পাশে এসে দাঁড়ায় তার ফুফাতো বোন।শুরু করে দেয় ন্যাকামি।এই মেয়েটাকে উষালঘ্ন থেকে দেখতে পারেনা রিমি।শুধু ছেলেদের সাথে ঢলাঢলি করে।মেয়েটা আদনানের কাধে হাত রাখে।আদনানও তার কাধে হাত রাখে।এবার মেয়েটা রিমি আর চারুর দিকে তাকিয়ে বলে,
---' এদের দাঁড় করে রেখেছো কেন আদু? '
মেয়েটার এমন ন্যাকামি দেখে চারুর ইচ্ছা করতেছে কষে দুইটা থাপ্পর মারতে কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে সেই ইচ্ছাটাকে দমন করে চারু।আদনান এবার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলে,
---' কাদের কথা বলছো,এই গবেট গুলোর?আরে এই গুলাতো আস্ত একটা অবুদ্ধিমানের ঢিপি।তাই তাদের কিছু টিপস দিচ্ছি বুদ্ধিমান হওয়ার।আর তুমিতো জানো আমি কতো বুদ্ধিমান '
নিজ সম্পর্কের আদনানের এত অহংকার সহ্য করতে পারেনা চারু আর রিমি দুজনেই।তারা দুজনে আর এক মুহুর্ত দেরি না করে সেখান থেকে চলে যায়।দুজনেই রিমির রুমে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দেয়।রেগে গিয়ে বসে পড়ে বিছানায়।দুজন দুদিকে মুখ করে তাকিয়ে থাকে।দুজনের মনেই আদনানের প্রতি সীমাহিন রাগ বিরাজ করছে।দুজনে দুদিকে মুখ করে প্রায় ৪মিনিট বসে থাকার পর রিমি প্রথমে চারুর দিকে তাকায়।চারুও তাকায় রিমির দিকে।দুজনের মধ্যে চোখাচোখি হয়ে যায়।
---' চারু তোকে একটা গোপন কথা বলতে চাই '-রিমি বললো।চারু খানিকটা আগ্রহ নিয়ে বলে,' কি গোপন কথা? '
রিমি তার মাথাটা নিচু করে ফেলে।তারপর গলার আওয়াজ টা কিছুটা নিচু করে এক নিশ্বাসে বলতে শুরু করে,
---' তোকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে একটা ছেলেকে দেখানোর জন্য।ছেলেটা বাবার বন্ধুর ছেলে।আমেরিকাতে থাকে।তোর সাথে তার বিয়ের কথা চলছে।এতে তোর বাবা মাও রাজি আছে।আজকে তারা আসতেছে।আজকে তোকে ছেলেটা দেখতে আসবে।খুব তারাতারি তোর বিয়ে দিবে তোর বাবা মা।আমাকে বলতে নিশেধ করলেও আমি তোকে বলে দিলাম। 'কথাগুলো এক নিশ্বাসে বলে ফেলে রিমি।
চারু অবাক হয়ে রিমির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।রিমি মজা করছে নাকি সত্ত্যি বলছে বোঝার চেষ্টা করছে।চারু আর ভাবতে পারছে না।এত তারাতারি তাকে বিয়ে দেয়ার চিন্তা করেছে তার বাবা এটা মানতে পারছে না।চারু দুই হাত দিয়ে নিজের মাথাটা চিপে ধরে।এই মুহুর্তে তার মাথা গরম করলে চলবে না।শান্ত মাথায় ভাবতে হবে কি করে বিয়েটা ভাঙ্গা যায়।এই নিয়ে সে রিমির সাথে কথা বলতে শুরু করে।তারপর দুজনে মিলে ঝাক্কাস একটা প্লান করে ফেলে।প্লানটা সফল হলে বিয়ে ভাঙ্গবে নিশ্চিত।দুইজনের মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়ে।
৭.
' রিমি চারুকে একটু সাজিয়ে নিয়ে বাহিরে বের হয়ে আয়তো! '
দরজার ওপাশ থেকে কথাটা বলে রিমির মা।রিমি এই কথার জবাবে বলে,' যাচ্ছি মা! '
তারপর রিমিকে চারুকে বেশি ভালো করে না সাজিয়ে বাহিরে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসিয়ে দেয়।চারু অবাক হয়ে দেখছে চারুর বাবা-মা ও সেখানে উপস্থিত রয়েছে।বাসার সবাই সেখানে উপস্থিত শুধুমাত্র আদনান ছাড়া।কথা শুরু আগেই রিমি বলে ওঠে,
---' আপনারা এখানে কথা বলুন,তারা আলাদা ভাবে কথা বলুক। '
রিমির এই কথাটা শুনে চারু অবাক হয়ে রিমির দিকে তাকায়।এমন একটা ভাব নেয় যেন সে কিছুই জানেনা।রিমির কথায় সায় দেয় উপস্থিত সবাই।তারপর রিমি ছেলেটাকে আর চারুকে নিয়ে নিজের রুমে যায়।ছেলেটাকে বসিয়ে রাখে বিছানায়।তার পাশে বসে চারু।আর রিমি যায় দরজার আড়ালে।
ছেলেটা যে খানিকটা ভ্যাবলাকান্ত সেটা বুঝতে পেরেছে রিমি পর চারু উভয়ই।একপর্যায়ে ছেলেটা চারুর কাছে এক গ্লাস পানি চায়।চারু উঠে যায় বেলকনির দিকে।এই মুহুর্তে একটা বাক্স হাতে ভিতরে প্রবেশ করে রিমি।ছেলেটা তাকে দেখে মাথা নিচু করে নেয়।রিমি বাক্সটা নিয়ে গিয়ে রাখে ছেলেটার সামনে।ছেলেটা আস্তে করে রিমিকে জিজ্ঞাসা করে,
---' বাক্সটাতে কি? '
রিমি বাক্সটা খুলে দিয়ে বলে,
---' আপুর পোষা সাপ '
এই বলে রিমি সেখান থেকে চলে যায়।যাওয়ার সময় দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে যায়।এদিকে সাপটা আস্তে আস্তে মাথা তুলে তাকাতে থাকে।কালো রংয়ের এই সাপটা দেখে ভিষন ভয় পেয়ে যায় ছেলেটা।বার বার পকেট থেকে টিস্যু বের করে কপালের ঘাম মুছতে থাকে।সাপটা আস্তে আস্তে ছেলেটার দিকে এগোতে থাকে।ছেলেটা দরজার দিকে তাকায়।দরজা বন্ধ করা।পালিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ ব্যালকনিটা।দৌড়ে সেদিকে যায় ছেলেটা।লাফ দিয়ে ব্যালকনির পাশের গাছটাতে উঠে পড়ে।এদিকে সাপটাও যেন তার পিছু ছাড়ছে না।ছেলেটা গাছ দিয়ে নামতে শুরু করে।নামতে নামতে একপর্যায়ে...


সাপের ভয়ে গাছ দিয়ে পালাতে ধরে গাছে ঝুলে আছে চারুকে দেখতে আসা নিষ্পাপ ছেলেটা।না পারছে নামতে,না পারছে উঠতে।এদিকে বেলকনি থেকে সাপটা তাকিয়ে আছে তার দিকে।মোবাইল বের করে ভিডিও করছে আর হাসাহাসি করছে চারু আর রিমি।একপর্যায়ে ধপাস করে পড়ে যায় ছেলেটা।দৌড়ে বেলকনিতে যায় রিমি আর চারু।ছেলেটা পড়ে গিয়ে যে পায়ে ব্যাথা পেয়েছে সেদিকে ভ্রু-ক্ষেপ করছে না।সে পা খোঁড়াতে খোঁড়াতে দৌড়াচ্ছে।রিমি আস্তে করে সাপটা তুলে নিয়ে গিয়ে বাক্সতে ভরে রাখে।এবার চারু গিয়ে বসে পড়ে বিছানার উপর।রিমি খানিকটা দৌড়াতে দৌড়াতে যায় নিচে বসার ঘরে।গিয়ে হাপানোর অভিনয় শুরু করে সে।তাকে এভাবে হাঁপাতে দেখে তার মা জিজ্ঞাসা করে,
---' কিরে,এভাবে হাপাচ্ছিস কেন? '
রিমি হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,
---' মা,দুলাভাইয়া বেলকনি দিয়ে পালিয়ে গেছে।আমরা তাকে এত আটকানোর চেষ্টা করেও পারলাম না।খালি দৌড়াচ্ছে আর সাপ সাপ বলে চেচাচ্ছে।অথচ ঘরে সাপ কেন,সাপের বংশও নেই। '
রিমি এই কথা শুনে ছেলেটার বাবা-মা নিজেদের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে।তারপর ছেলেটার বাবা মাথা নিচু করে বলে,
---' আমরা সত্ত্যিই লজ্জিত।ছেলেটা যে এরকম কিছু করবে ভাবিনি।আজ আমরা উঠছি। '
এই বলে তারা কাউকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে চলে যায়।রিমি মা আর চারুর বাবা-মা পরস্পরের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে।একপর্যায়ে চারুর মা বলে ওঠে,
---' চলোতো একটু উপরে যাই দেখি কি হয়েছে? '
তার এই কথায় সবাই উঠে দাঁড়ায় উপরে যাওয়ার জন্য।রিমি আগাচ্ছে আর ভাবছে এই মুহুর্তে যদি চারু খুশিতে নাচানাচি করে আর খালা-খালু যদি তা দেখে তাহলে শেষ।রিমি এসব ভাবছে আর এগোচ্ছে।
হঠাৎ চারু সিড়িতে শব্দ শুনতে পায়।তারাতারি দরজায় গিয়ে দেখে দলবেধে উপরে উঠছে সবাই।চারু কি করবে ভেবে পায় না?হুট করে তার মাথায় একটা বুদ্ধির আগমন ঘটে।চারু নিজের জামাটা খানিকটা এলোমেলো করে ফেলে।তারপর মুখ থেকে থুতু বের করে চোখের নিচে লাগিয়ে দেয়।তারপর শুরু করে দেয় কান্না করার একটিং..
সবাই রুমে প্রবেশ করে।সবার শেষে চোখ বন্ধ করে রুমে প্রবেশ করে রিমি।কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে থাকার পর চোখ খুলে রিমি।চোখ খুলে এক অবাস্তব দৃশ্য দেখতে পায় যা সে আশা করেনি।চারু কাঁদছে,আর তার পাশে বসে তাকে সান্তনা দিচ্ছে তার মা।রিমি অবাক হয়ে চারুর দিকে তাকালে চারু রিমিকে উদ্দেশ্য করে চোখ মারে।চকিতে রিমি বুঝে নেয় এটা কি?
৮.
ছেলের বাসা থেকে ফোন দিয়েছে।ফোন রিসিভ করে লাউড স্পিকার দেয় চারুর বাবা।রিমি আর চারু দুজনেই ভরকে যায়।ছেলেটা যদি সব বলে দেয় তাহলে দুজনেই শেষ।কিন্তু সে রকম কিছুই ঘটলো না।উল্টো তারা বলে,
---' আবার নাকি কালকে আসবে।এসে সব কিছু পাকা করে যাবে। '
এই কথাটা শুনে চারুর বাবা-মায়ের মনে সস্তি আসলেও অসস্তি দেখা দেয় চারুর মনে।তার মনের সঙ্গে রিমির মনেও দেখা দেয় একই রোগ।তৎক্ষণাত সেখান থেকে চলে যায় দুজনেই।রিমি তার রুমে গিয়ে বিছানায় বসে পড়ে।চারু ভিতরে প্রবেশ করে খানিকটা জোরেই লাগিয়ে দেয় দরজাটা।তারপর গিয়ে বসে পড়ে রিমির পাশে।দুজনের এর মধ্যে চোখা-চোখি হলে দুজনেই হেসে ফেলে।তারপর পুনরায় গম্ভীর হয়ে চারু বলে,
---' একবার ভাগাইলাম আবার নাকি আসবে।এবার কি করবো বুঝতে পারছি না?তোর মাথায় কি কোনো বুদ্ধি আসছে? '
রিমি নিরবে মাথা নাড়িয়ে বলে,'নাহ'
এই মুহুর্তে দরজায় ঠক ঠক শব্দ হয়।চারু উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে আদনান।
আদনান চারুকে সড়িয়ে দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে।তারপর ধপ করে শুয়ে পড়ে বিছানাটাতে।রিমি অবাক হয়ে আদনানকে দেখছে।আদনান এবার রিমি আর চারু দুজনকেই উদ্দেশ্য করে বলে,
---' ছেলেটা নাকি পালিয়ে গেছে? '
আদনানের এই কথায় রিমি আর দুজনেই মাথা নাড়ায়।আদনান এবার শোয়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
---' আমার মনে হচ্ছে তোরা কিছু করেছিস।নাহলে একটা ছেলে এমনি পালাবে? '
চারু মুখটা খানিকটা মলিন করে বলে,
---' আমরা কি করবো বলো?আমার ভাগ্যই এরকম। '
আদনান এবার উঠে চারুর সামনে দাঁড়ায়।তারপর খানিকটা শুষ্ক গলায় বলে,
---' মন খারাপ করিস না,কালকে তো আবার আসবে কালকে আমিও থাকবো ছেলেটার সাথে।দেখি কি করে পালায়? '
এই বলে আদনান ডেবিল মার্কা একটা হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।রিমি আর চারু দুজন দুজনের দিকে তাকায়।তারা কি ইচ্ছা করেই এই বিপদটাকে ডাকিয়ে আনলো নাকি?আদনান যদি ছেলেটার সাথে থাকে তাহলেতো তাদের প্লান খাটবে না।আবার নতুন উদ্যমে ভাবতে থাকে চারু আর রিমি।সেদিনের মতো রাতে ডিনার করে শুয়ে পড়ে বাসার সবাই।চারু আর রিমি দুজনেই শুয়ে পড়ে।রিমির চোখে ঘুম আসলেও চারুর চোখে আসেনা ঘুম।অনেকক্ষন শুয়ে থাকার পরেও যখন ঘুম আসতেছেনা তখন চারু সিদ্ধান্ত নেয় ছাদে যাবে।আস্তে করে উঠে ছাদের পথে রওনা হয় চারু।
ছাদে লাইট থাকার সুবাদে এই অন্ধকার রাতে আলোকিত ছাদটা।তবে একদিকে কিছুটা অন্ধকার রয়েছে।চারু ছাদের চারদিকে পায়চারি করতে থাকে।পায়চারী করার সময় চারু দেখতে পায় দোলনাতে ঘুমিয়ে আছে আদনান।বুকের উপরে মোবাইলটা পড়ে আছে।চারু আস্তে আস্তে আদনানের দিকে এগোতে থাকে।একপর্যায়ে চারু আদনানের সামনে গিয়ে তার মোবাইলটা নেওয়ার চেষ্টা করে।হালকা একটু নড়ে ওঠে আদনান।চারু মনে করে আদনান জেগে গেছে তাই ছাদ থেকে ভো দৌড় দিয়ে চলে যায় নিজের ঘরে।তারপর ঝটপট বিছানায় শুয়ে পড়ে।সাথে সাথে তার চোখে দেখা দেয় ঘুমরাজ।
৯.
সকালবেলা থেকেই বাড়ির সবাই ব্যাস্ত।এখনি ছেলেপক্ষ দেখতে এলো বলে।এদিকে চারুকে সাজানোর ভার পড়েছে রিমির উপরে।তাই চারুকে নিয়েই মেতে আছে রিমি।একপর্যায়ে ছেলেপক্ষ এসে পড়ে বাড়িতে।তাদেরকে ভিতরে নিয়ে আসে আদনান।চারুর বাবা আমজাদ সাহেব তাদের বসতে বলে।তারা বসতে বসতে বলে,আজকে বেশি দেরি করবে না।সব কিছু ঠিকঠাক করেই এখনি চলে যাবে।আদনান গিয়ে বসে পড়ে ছেলেটার পাশে।
কথাবলার একপর্যায়ে ছেলের বাবা বলে,
---' তো কালকে তো আপনার মেয়েকে ভালো করে দেখতেই পেলাম না।আজকেও কি দেখতে দিবেন না? '
আমজাদ সাহেব মুচকি হেসে বলে,
---' অবস্যই দেখবেন।আদনান যাওতো চারুকে নিয়ে আসতে বলো! '
এই আদেশ পেয়ে মুহুর্ত দেরি না করে সেখান থেকে উঠে পড়ে আদনান।রওনা দেয় রিমির রুম লক্ষ করে।সে রুমে প্রবেশ করে রিমিকে উদ্দেশ্য করে বলে,
---' চারুকে নিয়ে যেতে বলছে। '
রিমি আদনানের সাথে কোনো‌ কথা না বলে চারুকে নিয়ে নিচে আসে।নিচে এসে চারুকে বসিয়ে দেয় ছেলেটার পাশে।তারপাশে বসে রিমি।ছেলেটা যে লজ্জা পাচ্ছে তা বুঝতে কষ্ট হচ্ছেনা কারো।
সব কাজ শেষ হলে তারা সবাই উঠে দাঁড়ায়।এক এক করে বিদায় নিতে শুরু করে।চারু আর রিমি দৌড়ে ছাদে যায়।প্লান অনুযায়ী ছাদে সবকিছু রেডিই আছে।যখন বের হবে শুধু মাত্র কাজটা করা বাকি।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয় ছেলের বাবা-মা আর ছেলে।তারা বের হতেই তাদের মাথা লক্ষ্য করে পচা কুমড়ো ছুড়ে মারে রিমি আর চারু।তারপর টপ করে বসে পড়ে দুজনে।আস্তে আস্তে করে রওনা দেয় নিজেদের রুমে।
এদিকে পচা কুমড়ো মাথায় পড়ায় রেগে বোম হয়ে গেছে ছেলের বাবা-মা।তাদের বাসায় ডেকে এনে এভাবে অপমান করা হচ্ছে।গা দিয়ে দুর্গন্ধ ছুটছে সবার।এমনকি একটা কাকও এসে বসেছে ছেলের বাবার মাথায়....


বাসার সামনে দাঁড়িয়ে রাগে কাঁপতেছে ছেলের বাবা,তাদেরকে বাসায় এনে এভাবে অপমান করা হলো সেটা মানতে পারছে না।এদিকে আদনান সদর দরজাও বন্ধ করে দিয়েছে।ওই অবস্থা নিয়ে তিনজনই হাটতে শুরু করে।কো‌নো রিকসাওয়ালাই তাদের তুলছে না।মোটকথা কোনো ড্রাইভারই তাদের নিজের গাড়িতে তুলছে না।রাগে মাথার তার ছিড়ে যাচ্ছে ছেলের বাবার।
এদিকে নিজের রুমে বসে দরজা বন্ধ করে দিয়ে হাসতেছে রিমি আর চারু।তারা বুঝতে পারছে বিয়ে ভেঙ্গে গেছে যদি তাদের অপমানবোধ থেকে থাকে।অপেক্ষায় আছে কখন ফোন দিয়ে জানিয়ে দিবে যে,বিয়ে ক্যান্সেল।এই মুহুর্তে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে আদনান।ধপ করে বসে পড়ে সিঙ্গেল সোফাটাতে।তারপর এক এক করে রিমি আর চারুর দিকে তাকিয়ে খানিকটা গম্ভীর হয়ে বলে,
---' পঁচা কুমড়ো ফেলাটা ঠিক করিসনি।লোকগুলো কষ্ট করে হেটে যাচ্ছে।কোনো ড্রাইভারই তাদের গাড়িতে তুলছে না গন্ধের কারনে। '
আদনানের মুখে এই কথাটা শুনে ভিষন চমকে ওঠে রিমি আর চারু দুজনেই।রিমি তোতলাতে তোতলাতে বলে,
---' তু-তু-মি জা-জা-জান-লে কেমন ক-রে? '
আদনান এবার একটা ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে বলে,
---' আমাকে চিনলি না তোরা।তোদের এসব কান্ডকারবার আমার মোবাইলে ভিডিও করা আছে।দেখ...'
এই বলে আদনান তাদের সামনে তার মোবাইলটা ধরে।একটা ভিডিও দেখা যাচ্ছে।ভিডিওটাতে রিমি আর চারু পচা কুমড়ো তুলে নিচে ফেলে দেয়।
চারু অবাক হয়ে বলে,
---' কিন্তু তুমিতো তখন নিচে ছিলে? '
আদনান আবার সেই রমস্যময়ী হাসিটা দিয়ে বলে,
---' কিন্তু মোবাইলতো উপরে ছিল।দোলনার এক কোণায়।আচ্ছা বাদদে ভিডিওটা সবাইকে দেখানো দরকার কি বলিস? '
এই কথা বলার সাথে সাথে রিমি আর চারু দুজনই আদনানের দুই হাত চেপে ধরে অনুরোধ করতে শুরু করে।আদনান একপর্যায়ে রাজি হয় তবে একটা শর্ত দিয়ে।শর্তটা হলো চারু আর‌ রিমি প্রত্যেকদিন আদনানকে ৩০০করে টাকা দিবে।যেদিন দিতে পারবে না সেদিন ভিডিওটা দেখাবে সে।এই বলে হন হন করে রুম ত্যাগ করে আদনান।চারু আর রিমি তাকিয়ে আছে তার যাবার পথে।
৯.
দুপুর ১২টার দিকে বিছানায় অলস ভাবে শুয়ে আছে রিমি আর চারু।এই মুহুর্তে ভিতরে প্রবেশ করে চারুর বাবা-মা আর রিমির মা।দুইজনেই শোয়া থেকে উঠে বসে।চারু বাবা বসে সিঙ্গেল সোফাটাতে আর চারু মা আর রিমির মা বিছানায়।চারুর বাবা এবার মাথা নিচু করে বলতে শুরু করে,
---' আমি কিছুই বুঝলাম না,ওরা এখানে সব কিছু ঠিকঠাক করে বাড়িতে যেতে যেতেই মত পাল্টালো কেন?জিজ্ঞেস করলে বলে কিনা আমরা মানুষকে বাসায় ডেকে এনে অপমান করেছি। '
চারু বুঝতে পারে বিয়ে ভেঙ্গে গেছে।তাই কাদোকাদো গলায় তার বাবাকে বলে,
---' বাবা,আমার বিয়েটা আবার ভেঙ্গে গেল।আমি শেষ পর্যন্ত তোমাদের কুলক্ষী হলাম। '
এই বলে সে বিছানা থেকে উঠে ছাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।রিমি তার একটিং দেখে মুচকি মুচকি হাসছে।এদিকে ছাদে প্রবেশ করেই নাচতে শুরু করেছে চারু।কি মজা আকাশে বাতাসে,বিয়ে ভেঙ্গে গেছে!নাচতে শুরু করে দিয়েছে চারু।নাচতে নাচতে সে খেয়াল করে ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে আদনান।
চারু চুপিচুপি আদনানের দিকে এগোতে থাকে।সম্পুর্ন নিঃশব্দে সে পৌছে যায় আদনা‌নের ঠিক পিছনে।কানটা এগিয়ে দিয়ে শুনতে চেষ্টা করে আদনান কি বলছে?আদনান ফোনে কথা বলতেছে।চারু অবাক হয় আদনানের চোখের পানি নিচে পড়তে দেখে।চোখের পানি দেখে তার আগ্রহ দ্বিগুন হয়ে যায়।আদনান চোখের পানি ফেলতেছে আর বলছে,
---' আমি ভাবতে পারিনি তোমার বাবা এতটা নিষ্ঠুর।তুমি চিন্তা করিওনা আমি কালকেই তোমাকে নিয়ে পালাবো।আমার এতদিনের ভালোবাসা কখনো বি-ফলে যাবে না। '
ফোনের ওপাশ থেকে কথা শোনা গেলেও ততটা ভালোভাবে শুনতে পারতেছেনা চারু।তবুও আধো আধো শোনা যাচ্ছে যে,তুমি এসোনা প্লিজ।এনি আমার নিজের বাবা নয় সৎ বাবা।জানো আমাকে না শিকল দিয়ে বেধে রাখছে।একমুহুর্তের জন্য মনে হচ্ছে তোমার বুকটাতে যেন আমার শেষ নিশ্বাস যায়।আমার যাই মনে হোক না কেন তুমি আসিও না?আমাকে যেমন শিকল দিয়ে বেধে রেখেছে তোমাকে দেখলে গুলি করে ফেলবে।তারচেয়ে সেই মদখোর ছেলেটাকে বিয়ে করি।
আদনান ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে,
---' আমাকে এত তারাতারি ভুলে গেলে।মনে নেই‌ আমরা কি শপথ করেছিলাম।আমি তোমাকে নিয়ে আসবোই ওখান থেকে।প্লিজ তুমি আর একটু কষ্ট করো। '
ওপাশ থেকে আবার বলতে শুরু করে,
নাহ তুমি আসবে না।এই বলে কান্না করছে।তারপর শোনা যায় খুব জোরে কান্নার আওয়াজ।আদনান বার বার বলছে কি হয়েছে কিন্তু কোনো জবার আসে না।শুধু সোনা যাচ্ছে কান্না আর মাইরের আওয়াজ।
আদনান পিছনে ঘোরার আগেই চারু সেখান থেকে চলে আসে।তারপর রওনা দেয় নিচের উদ্দেশ্যে।ছাদের মধ্যে দোলনাতে বসে কাঁদছে আদনান।চারু নিচে নামতে নামতে চোখে হাত দিয়ে চমকে ওঠে।তার চোখেও পানি।সত্যি তার জানা ছিল না এমন ভালোবাসাও হয়।চারু কোনো কথা না বলে রিমির রুমে প্রবেশ করে।রিমি বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েছে।ঘরে আর কেউ নেই।চারুও গিয়ে নিঃশব্দে রিমির পাশে শুয়ে পড়ে।এখনও তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।কেউ কতটা পরিমানে ভালোবাসলে শিকলে বাধা থেকেও মনের মানুষটাকে ফোন দেয়।সত্ত্যি চারু অবাক হয়েছে এই কথাগুলো শুনে।চারুর ইচ্ছা করছে আদনানের পাশে দাঁড়াতে কিন্তু কিভাবে?
চারু ঘুমানোর চেষ্টা করলেও তার চোখে ঘুম আসছে না।একপর্যায়ে সে উঠে বসে।তারপর কি ভেবে রওনা দেয় আদনানের ঘর লক্ষ্য করে।আদনানের ঘরে প্রবেশ করেই সে একটা অদ্ভুত গন্ধ পায়।প্রথম যেদিন ঢুকেছিল এই গন্ধটা তার নাকে আসেনি।গন্ধটা যেন চারুকে নিজের দিকে টানছে।চারু গিয়ে বিছানার উপর বসে পড়ে।পাশে টেবিলটাতে তার চোখ আটকে যায়।একটা নীল ডায়েরী।চারু ভাবতে থাকে ডায়েরীটা পড়বে নাকি পড়বে না।না না করতে করতে সে প্রথম পাতাটা উল্টায়।চোখে পড়ে অবাক করা একটা ফটো।একটা ছেলের বুকে শুয়ে আছে মেয়েটা।মেয়েটার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে আর ছেলেটা তার মাথায় হাত বুলাচ্ছে।চারু ছেলেটাকে চিনতে পারে আদনান।তাহলে এইটাই সেই মেয়ে।চারু‌ মনে ম‌নে মেয়েটার কপাল ভেবে খুশি হয়।মেয়েটা সত্ত্যি একটা রাজপুত্র পেয়েছে।
এই মুহুর্তে বাহির থেকে কারো পায়ের শব্দ ভিতরে আসছে।আগন্তুক যে এদিকেই আসছে সেটা চারু বুঝতে পারে।সে তারাতারি ডায়েরীটা রেখে উঠে দাঁড়ায়।ভিতরে প্রবেশ করে আদনান তার মা আর চারুর বাবা-মা।আদনানের চোখটা লাল টকে-টকে রং ধারন করেছে।চারু মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
এবার চারুর বাবা বলে ওঠে,
---' দুজনেই শোন আমরা আদনান আর চারুর বিয়ে ঠিক করেছি‌ এ‌বং সেটা কালকেই। '
এই কথাটা শুনে আদনান পর চারু দুজনেই তাকায় আমজাদ সাহেবের দিকে।তারপর চারু আর আদনানের চোখা-চোখি হয়ে যায়।চারু ভাবছে সে কিছুতেই এই বিয়ে করবে না।একজনের পবিত্র ভালোবাসা কিছুতেই নষ্ট করবে না কিন্তু আদনান ভাবছে অন্যকিছু।তার মুখে ফুটে উঠেছে হাসি কিন্তু সেটা কেন?





Writer:- নিয়াজ মুকিত 
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner