* যাদের হার্ট দূর্বল ও ভীতু টাইপের তাদের এই মুভিটি না দেখার জন্য অনুরোধ করব। কেননা, এই মুভিতে এমন কিছু সিন রয়েছে যেগুলো হয়তো অতি ভয়ংকর নয়তো অতি ঘৃণিত।
* প্লট: এক কসাই/মাংসবিক্রেতা একের পর এক নৃশংসভাবে হত্যা করেই যাচ্ছে। বলতে গেলে যুবতীর বক্ষঃস্থলের মাঝখান বরাবর ধারালো কাঁচি নিক্ষেপ করে পুরো শরীর দ্বি-খণ্ডে বিভক্ত করে নেয়। এটা কিভাবে সম্ভব? আর কেনই বা এমন হল? যা আজও রহস্যময়।
* লোককাহিনী: হরর, থ্রিলার রহস্যকাহিনি, নিঃসঙ্গতা, মধ্যরাতের ট্রেন!
১৮+ সতর্কতাঃ গুরুতর চিত্রগুলি জড়িত নগ্নতা | যৌন সামগ্রী | শক্তিশালী রক্তাক্ত সহিংসতা!
* মুভির রিভিউ সংক্ষেপে!
* মুভির শুরুতে এক ভদ্রলোককে চলন্ত ট্রেনের মধ্যে আনমনা হয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর লোকটির খেয়াল হল। ট্রেনটি অন্য গন্তব্যে যাত্রা করছে। যার কারণে নিজ গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তার চেয়ে বেশি হতবাক হল। ট্রেনের যাত্রী শূন্য। তাই লোকটি উঠে সামনের কাবিনের দিকে এগোতে চেষ্টা করে। হঠাৎ লোকটি রক্তাক্তের মধ্যে পিচ্ছিল খেয়ে পড়ে যায়। আর তখুনি কেবিনের দিকে লক্ষ্য করে দেখতে পেল। এক কসাই জ্যন্ত মানুষদের শরীর টুকরো টুকরো করে ট্রেনের মধ্যে টাঙ্গিয়ে দিচ্ছে?
* এবার মূল কাহিনীতে আসা যাক:-
* কাহিনীর সূত্রপাত ঘটে লিওন'কে নিয়ে। "লিওন" ছিল মূলত এক ফটোগ্রাফার। আর লিওনের গার্লফ্রেন্ড ছিল "মায়া"। আর মায়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল "স্যাম"। কিন্তু লিওন ফটোগ্রাফার হলেও কর্মজীবন ছিল বেকার। তাই মায়া তার এক ফ্রেন্ডকে রিকুয়েষ্টে করে যেন লিওনকে চাকরি দেয়। সকালে লিওন চাকরির উদ্দেশ্য শহরে রওনা দেয়। তারপর লিওন ইন্টারভিউ হিসাবে কিছু ছবি দেখায়। কিন্তু ছবিগুলো গ্রহনযোগ্য না হওয়ায় লিওন আনমনা হয়ে ওখান থেকে ফিরে আসতে লাগলো। হঠাৎ মাঝপথে দেখতে পেল। একটি রমনীকে তিনজন যুবক একসাথে মিলে শারীরিক টর্চার করছে। লিওন এসব দেখার সাথে সাথে সবকিছু ক্যামেরা বন্দী করে নেয়। আর রমনীকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করে। তখন রমণী খুশি হয়ে লিওনকে একটা কিস দেয়। তারপর দৌড়ে ট্রেনের ভেতর প্রবেশ করতে চেষ্টা করে। কিন্তু ট্রেনের সব দরজা বন্ধ থাকায় সম্ভব হচ্ছে না। শেষমেশ, এক ব্যক্তি রমণীকে হাত ধরে তুলে নেয়। লিওন তারও একটা পিক তুলে নেয়। ছবির ক্যাপশনে দেখা গেল। ব্যক্তির হাতে একটি রিং বিদ্যমান। কিন্তু লিওন জানতো যে সেই ব্যক্তি কে?? আসলে ওনি হল এক কসাই বা সিরিয়াল কিলার। যার নাম ছিল "লুইস"। সকালে পত্রিকায় রমণীর নিখোঁজের খবর আসে। এতে লিওনের মনে সন্দেহ জাগে। হয়তো এই কাজটি ওই যুবকদের কাজ। তারা হয়তো রমণীকে হত্যা করেছে। তার জন্য লিওন জেলে গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়। কিন্তু পুলিশ অফিসার এসব কিছুতেই বিশ্বাস করতে রাজি নয়। পরেরদিন একই রকমভাবে লিওন ট্রেনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। হঠাৎ লুইসকে দেখতে পাই। তাছাড়া লুইসের হাতে স্পষ্টভাবে রিং দেখা যাচ্ছে। ততক্ষণে, লিওনের মধ্যে সন্দেহ জাগে লুইসকে নিয়ে। কেননা, সেদিন রমণীকে লুইস ট্রেনে তুলে নিয়েছিল। এটা কোন লুইসের কাজ নয়তো। তাই লিওন লুইসের পিছু নেই। কিন্তু লুইস মধ্যরাতের ট্রেনের অপেক্ষায় স্টেশনে বসে আসে। লিওন যখন লুইসের সাথে ট্রেনে প্রবেশ করতে চাই। তখুনি একটি পুলিশ এসে লিওনকে বাধা দেয়। আর লিওনের ট্রেনের রহস্য জানা সম্ভব হয়নি। তারপর লুইস ট্রেনে উঠে পড়ে। ট্রেনের মধ্যে দু'টি ভদ্রলোক ও একটি ভদ্রমহিলা বসে আসে। ভদ্রলোক দুটির মধ্যে একজন ছিল ভদ্রমহিলাটির স্বামী। একটুখানি পর, ভদ্রমহিলাটি স্বামীকে বলে।
ভদ্রমহিলাঃ আজ আমার খুব ভয় করছে। কেননা, এই ট্রেনের যাত্রীরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে না।
ভদ্রলোকঃ আমি থাকতে এত টেনশন কিসের। এবার তেমন সমস্যা হবে না।
এটা বলতে না বলেই লুইস হাতুড়ি দিয়ে ভদ্রলোকটির পেছনে এত জোরে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে চোখ দুটি বাহির হয়ে যায়। এবার ভেবে দেখুন কতটা বাজেভাবে আঘাত করছিল। তারপর ভদ্রমহিলাটি চিৎকার দিয়ে উঠে। লুইস তাদেরকেও হাতুড়ি দিয়ে হত্যা করে নেয়। তারপর লাশের ডেড-বডি গুলো ট্রেনের মধ্যে টাঙ্গিয়ে দেয়। একদিন লিওন লুইসের পিছুপিছু ট্রেনে ওঠে পড়ে। তারপর লিওন লক্ষ্য করে দেখতে পেল। লুইস কেবিনের ভেতর একটা যুবককে হাতুড়ি দিয়ে প্রথমে দাঁতগুলো তুলে নেয়। এরপর মুখের মধ্যে কাটা শিকল বেঁধে জ্যন্ত অবস্থায় ধারলো কাঁচি দিয়ে পুরো শরীর টুকরো টুকরো করে নেয়। লিওন এসব দেখার পর ভয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু লুইস দেখে পেলে। তাতে, লিওনকেও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে বুকের মধ্যে একটা চিহ্ন করে দেয়। তারপর ছেড়ে দেয়। কিন্তু কেন ছেড়ে দিল ওটা শেষে জানা যাবে??? লিওন রক্তমাখা শরীর নিয়ে মায়ার কাছে চলে আসে। মায়া লিওনের এমন অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করে। এটা কিভাবে হল? লিওন সবকিছু ক্লিয়ার করে বলে দেয়। তারপর মায়া স্যামকে নিয়ে লুইসের বাসায় যায়। আর লুইসের প্রতিটা রুম তল্লাশি করে একটা ডায়েরী খুঁজে পায়। এই ডায়েরীতে কোন সময় কোন লোকটিকে হত্যা করা হয়েছে সবকিছু তারিখ সহকারে লিখা রয়েছিলো। মায়া ডায়েরী'টি নিয়ে পালাতে চেষ্টা করায় লুইস এসে স্যামকে ধরে পেলে। আর মায়া অনেক কষ্টের বিনিময়ে ওখান থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর ডায়েরী'টি নিয়ে সোজা পুলিশের কাছে আসে। কিন্তু পুলিশ অফিসার ডায়েরী'টি লুইসকে দিয়ে দিতে বলে। আশ্চর্য ব্যাপার। পুলিশের কর্তব্য হচ্ছে হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা। কিন্তু মায়া আজ যেটি বুঝতে পারলো। ওটা সম্পূর্ণ উল্টো। হয়তো এর পিছনে পুলিশেরও হাত রয়েছে। তারপর মায়া হাতে একটা গুলি নিয়ে স্যামকে বাঁচাতে মধ্যরাতের ট্রেনে উঠে পড়ে। ওঠে দেখতে পেল। স্যামের লাশটি রক্তাক্ত শরীরে ঝুলতেছে। মায়া বাঁচাতে চেষ্টা করায় লুইস এসে ধারালো কাঁচি দিয়ে স্যামের পেটে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে রক্তক্ষরণের মধ্যে দিয়ে নাড়িভুঁড়ি সব বেরিয়ে আসে। তারপর শুরু হয়!
* এবার প্রশ্ন আসতে পারে:-
১, এই মধ্যরাতের ট্রেনটির গন্তব্যস্থল কোথায়???
২, পুলিশ সবকিছু জানার পরও কেন হত্যাকারীকে রেহাই দেয়?
৩, লুইস নিরীহ যুবক/যুবতীদের হত্যা করে কি বুঝাতে চেয়েছে? তাছাড়া এর পেছনে কি রহস্য ছিল??? আর লাশগুলো নিয়ে তারা কিবা করতে চাই?
৪, হত্যা করা কি লুইসের কর্ম ছিল নাকি মেন্টেলি কোন সমস্যা ছিল?
৫, লিওনকে হত্যা না করে ছেড়ে দেওয়ার কারণ কি?
* এই মুভিটি গুরুত্বপূর্ণ দুটি পয়েন্ট রেয়েছেঃ
১, ওই লাশগুলো মূলত রাক্ষসের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হত।
২, শেষমেশ লুইসের মৃত্যুর পর কসাই বা সিরিয়াল কিলারের দ্বায়িত্ব লিওনের কাছে এসে পড়ে।
* Movie Name: The Midnight Meat Train 2008
* কাহিনি এখানে শেষ নয়। আরও অনেক অজানা রহস্যে রয়েছে। বিস্তারিত জানতে হলে লাইক/কমেন্ট করে সাথে থাকবেন।
Author:- Arman Chowdhury