--কি বেবি কেমন লাগলো আমার কেরামতি?
আমি সাদুকে কটমট করে বললাম,,,
--তোর এই কেরামতি ওয়ালা মাথার চুল যদি আমি একটাও রাখছি তো আমার নাম জুইঁ না।
ওকে কথাটা বলেই চুল ছেঁড়াছিঁড়ি অভিযানে নেমে পরলাম। ওর হিজাব টানাটানি করে খুলে ফেললাম। খাটের এপাশ ওপাশ করছি সাদুকে ধরার জন্য।একপর্যায়ে সাদু হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে বলে উঠলো,,,
--শোন শোন।আমার কথাটা শোন।
ওর সাথে আমিও হাঁপিয়ে উঠেছি।তাই ছোটাছুটি বন্ধ করে বড় বড় দম নিয়ে ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে বললাম,,,
--কি শুনবো?
--আরে রিলেক্স।দেখ তোরে পেতনি সাজ মানে কালো বর্ণের সাজ দিয়া কিন্তু তোরই উপকার করলাম।যে বা যারা তোরে দেখতে আইবো তাদের মন মানসিকতা কেমন তা এই কালো বর্ণ আমাদের বুঝাইয়া দিব।তার উপর প্লাস পয়েন্ট হইলো তারা যদি ধলা চামড়ার মানুষ পছন্দ কইরা থাকে তোরে তো তাইলে এমনেও পছন্দ করবো না।তোরে যে ভালোবাসার সে তামাটে বর্ণের তুইটাকেই ভালোবাসবে। এহন তুই খালি ওনাগো সামনে তোর এই আঁকাবাকা দাঁত কয়ডা নিয়ে না ভেটকাইলেই হইলো। কি বুঝলি?(সাদু)
সাদুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি হেসে বললাম,,,
--এইটাই বুঝলাম যে তোর মাথায় সার ইদানীংব একটু বেশি বেশি পড়তাছে।
আমাদের কথার মাঝেই রুমে ভাবি আর ভাইয়ার আগমন হলো।ভাইয়া বলল,,,
--শোন ওরা সবাই আসবে না। ওরা চায় ছেলেমেয়েরা আগে একজন আরেক জনকে দেখুক।ছেলে মেয়ের একে ওপরকে পছন্দ হলেই বড়রা আগাবে।ছেলে এখন আপাতত একা মিট করবে।
--কেবল ছেলেই একা আসবে বাসায়?
--আরে বলদ ছ্যামরি কোনদিন দেখছোস পাত্ররে একলা ঢেং ঢেং করতে করতে পাত্রীর বাড়ী আইতে? নিশ্চয়ই বাইরে কোথাও দেখা করার কথা কইছে।তাই না নিয়াজ ভাইয়া?(সাদু)
--কারেক্ট কথা।জুইঁ তুই আমার বোন হইলে কেমনে?(নিয়াজ ভাইয়া)
--আরে এতো কিছু ভাইবা বলছি নাকি। (আমি)
--আচ্ছা তাহলে বের হয়ে পর এখন।তোদের ভার্সিটির পাশের ****ক্যাফের এড্রেস আমি ছেলেকে পাঠিয়ে দিছি।(নিয়াজ ভাইয়া)
--এই সাজেই যাবি নাকি? (ভাবি)
--হ্যাঁ।কোন সমস্যা? (আমি)
--একদমই নয়।(ভাবি)
--আচ্ছা তাহলে আর ১০ টা মিনিট পরে বের হই?(আমি)
--আচ্ছা। কিন্তু একটু তাড়াতাড়ি করিস।(নিয়াজ ভাইয়া)
নিয়াজ ভাইয়া আর ভাবি চলে গেলো। সাদু আমার পিঠ চাপড়ে বলল,,,
--আরেকটু সাজাইয়া দিমু নাকি? (সাদু)
--হ।
বলেই আমি সযত্নে সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা আমার শাড়িটা বের করলাম।আমার হাতে শাড়ি দেখে সাদু বলল,,,
--বোইন এমন কিছু কইছ না যেন যাতে আমার কান শুনতে পায় তুই এই শাড়ি ডা পড়বি।
--আহা এই না হলি তুই আমার পরানের বান্ধবী। (আমি)
--তুই কি এই শাড়িডারে ত্যানাত্যানা না বানাইয়া রেহাই দিবি না?(সাদু)
--বেশি কথা কবি না।এইটা পড়লে আমার সুখ সুখ লাগে। (আমি)
--ওরে কইতোরি বেগম তোমার সুখ সুখ লাগে না? আমার কানা কানা লাগে। (সাদু)
-- কি লাগে তোর?(আমি)
--তোর এই শাড়ি ডা দেখতে দেখতে আমার চোখ দুইটাই নষ্ট হইয়া গেছে বুঝলি।(সাদু)
-- ভালো হইছে। আমার জামাইর দেয়া শাড়ির দিকে নজর দিছোস কেন?(আমি)
--ওহোওওওওও।জামাই?(সাদু)
শুরু হয়ে গেল সাদুর আমাকে নিয়ে কথা বলা।ওর এতো এতো কথার কিছু ই আমার মাথায় ঢুকছে না।আমার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘোরাঘুরি করছে।তাহলো আমি মুখ ফসকে এই কথাটাই কেন বললাম। আমার বর্ষণ সঙ্গীর সাথে তো দেখাটা পর্যন্ত হয়নি।নানা বিষয়ে চিন্তা মাথায় নিয়ে বেরিশে পরলাম আমি আর সাদু।
-- তুমি আসলে কি চাও বলতো?(ভাবি)
-- একটা ছোট্ট ডোজ দিলাম। এইটা দরকার ছিল।(নিয়াজ ভাইয়া)
--মানে? (ভাবি)
-- রুমে চলো বলছি।(নিয়াজ ভাইয়া)
রিকশার ভাড়া মিটিয়ে আমি আর সাদু ***ক্যাফেতে প্রবেশ করলাম। সমস্যা হলো পাত্রকে চিনবো কি করে? এখানে প্রায় সবগুলো টেবিলেই বসা আছে মানুষ। তখনি আমার মোবাইলের ম্যাসেজের টোন টা বেজে উঠে আমাকে জানান দিল কেউ হয়তো বা আমাকে স্মরণ করছে।তৎক্ষনাৎ ম্যাসেজ টা ওপেন করতেই দেখি নিয়াজ ভাইয়া মেসেজ করে একটা ফোন নাম্বার পাঠিয়েছে সেইসাথে বলেও দিয়েছে এটা পাত্রের নাম্বার।কল করার আগেই একটা ছেলে একেবারে কর্নার টেবিল থেকে আমাকে আর সাদুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ইশারা করছে। দুই তিনবার ইশারা করার পর মনে হলো এটা হয়তো বা আমাদের কাঙ্খিত ব্যক্তি। আমি আর সাদু গিয়ে ছেলেটার সামনে দাঁড়ালাম।
ছেলেটার পরনে হালকা আকাশি বর্ণের একটা টি-শার্ট। সাথে কালো প্যান্ট। যে কেউ তাকে এক পলকে দেখলে ভদ্র বলেই মনে করবে। আমাকে উদ্দেশ্য করে ছেলেটা খুব নম্র ভাবে বলল,,,
--আমি যদি ভুল না করি তাহলে আপনি জুইঁ। ঠিক তো?
আমি সৌজন্যমূলক হাসি হেসে বললাম,,,
--জ্বি।
ছেলেটা মুচকি হেসে করদমর্ন করার উদ্দেশ্যে আৃার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,,,
-- আমি রাইয়ান শেখ।
ভদ্রতার খাতিরে আমিও যখন হাত বাড়াতে যাবো ঠিক সেই সময় অন্য একটা হাত এসে রাইয়ান নামের ছেলেটার হাত ধরে ফেলল। আর সেইসাথে একটা পরিচিত কন্ঠ ভেসে আসল,,,
--আমি ওর রিলেটিভ।
প্রচুর আগ্রগ নিয়ে ঘাড় ঘুড়িয়ে পাশে তাকাতেই অনেকটা চমকে উঠলাম। কারণ এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে অসম্ভব ঘটনাটি ঘটেছে। আর তা ঘটিয়েছে আলআবি ভাইয়া। তাকে এখানে কোন কালেই আশা করিনি।সাদির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম সাদুও কিছুটা অবাক হয়েছে। এমন সময় রাইয়ান ছেলেটা বলে উঠলো,,,
--আসসালামু আলাইকুম বড় ভাই। আমাকে চিনতে পেরেছেন?
আলআবি ভাইয়ার দিকে লক্ষ্য করে দেখি তিনি মুচকি হাসলেন।আলআবি ভাইয়া কিছু বলার পূর্বেই রাইয়ান দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে বলে উঠলো,,,
--ওইযে ২৭ তারিখে ব্লাড দিয়েছিলাম। মনে আছে?
--ওয়ালাইকুম আসসালাম।মনে থাকবে না কেন। মনে আছে। আরও ভালো করে মনে রাখতে আর মনে করাতে এখানে আসা।(আলআবি ভাইয়া)
আলআবি ভাইয়া কথা বলার সময় আমি তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।একটা জিনিস খেয়াল করলাম সে আমার দিকে তাকিয়ে শেষের কথা টা বললেন।হুট করেই হাতে টান লাগায় খেয়াল করে দেখি আলআবি ভাইয়া আমার হাত ধরে আছেন।আর বললেন,,,
--চলো বসে কথা বলি।
বাক্যটা শেষ করতেই তিনি আমার হাত ধরে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলেন।সাথে নিজেও পাশের চেয়ার টায় বসলেন।তার কাজে আর কথায় আজ বেশ অবাক হচ্ছি। কিন্তু পরমুহুর্তেই ভাবলাম হয়তোবা নিয়াজ ভাইয়া তাকে আমাদের এখানে অভিভাবক হিসেবে পাঠিয়েছে। কিন্তু নিয়াজ ভাইয়া আমাকে তো বলল না। আলআবি ভাইয়া যখন আসবে তখন আমাকে বললে কি হতো?
সাদু আর রাইয়ান এখনো আগের জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্যাবড্যাব করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তখন আলাবি ভাইয়া ইশারা করল ওদের দুজনকে আমাদের সামনের দুটো চেয়ারে বসতে। ওরা ধীর পায়ে এসে বসে পড়ল। এই মুহূর্তে আমার পাশে বসা আলআবি হইয়া আর আমার সামনাসামনি বসা সাদু। সাদুর পাশে অর্থাৎ আলআবি ভাইয়ার সামনাসামনি বসা রাইয়ান।
আমরা চুপচাপ বসে আছি কেউই কোন কথা বলছি না। আলাবি ভাইয়া ফোন টিপছেন। নীরবতা কাটিয়ে রাইয়ান সর্বপ্রথম বলে উঠলো,,,
--জুই তাহলে আমরা কথা বাড়াই?
রাইয়ানের এই কথাটা শেষ হতে না হতেই আলআবি ভাইয়া উদ্ভট একটা কাজ করে ফেললেন। আমি চেয়ারের যে অংশে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছি সেখানে তার বাম হাত উঠিয়ে দিলেন অর্থাৎ আমার পিঠের পিছনে তার বাম হাত। আলআবি ভাইয়া এর এরকম একটা কাজে আমি কিছুটা সামনের দিকে ঝুঁকে বসলাম। তখন রাইয়ান বলে উঠলো,,,
--আপনার ছোট বোন হয়?
--আমার বোন হয় কিনা বলতে পারছি না। কিন্তু তোমার যে বউ হবে না তা নিশ্চিত। (আলআবি ভাইয়)
তার কথা শেষ হতেই আমি তড়িৎগতিতে তার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকালেন। বর্তমানে আমাদের তিনজনের দৃষ্টি আলআবি ভাইয়ার দিকে। তার দিকে যখন তাকিয়ে আছে ঠিক তখন সে আমার অনেকটা কাছে এসে কানে কানে ফিসফিসিয়ে বললেন,,,
-- বলে দিব নাকি তোমার বর্ষণ সঙ্গীর কথা?
তার কথা শুনে আমার ভিতর চিকন সূক্ষ্ম একটা ভয় বয়ে গেল।আলআবি ভাইয়ার প্রত্যেকটা শব্দ উচ্চারণের সময় তার মুখ থেকে বের হওয়া হালকা উত্তপ্ত বাতাস আমার কানে গিয়ে বারবার ধাক্কা দিচ্ছিল।
"বর্ষণ সঙ্গী" নামটা শুনেই বুকের বা পাশে দুই ইঞ্চি গভীরে থাকা বৈজ্ঞানিক ভাষায় যাকে বলে হৃদপিণ্ড,তার মধ্যে ধুকধুক শব্দটা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে।কিছু টা সময় শূন্য দৃষ্টিতে টেবিলে রাখা টিস্যু বক্সটা এর দিকে তাকিয়ে রইলাম।বুক কাঁপানো এই ধুকধুক শব্দটা তীব্র কষ্টের কারণ না হয়ে এমুহূর্তে আমার তীব্র সুখ এর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবনের সবচেয়ে ভালো লাগার মুহূর্তকে কাটিয়ে আলআবি ভাইয়ার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম।সাদু আর রাইয়ানের দৃষ্টি আমাদের দুজনের উপরই। এই মুহূর্তে আমি ওদের দেখা বা বিশেষ করে রাইয়ান আমাদের দুজনের ফুসুরফুসুর করে কথা বলায় কি মনে করবে বা করছে তা ভাবার প্রয়োজন বোধ করছি না।আমার মন আর মস্তিষ্কে কেবল একটা শব্দ ই বারবার প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসছে।তা হলো "বর্ষণ সঙ্গী"।আলআবি ভাইয়ার বলা কথাটা মস্তিষ্কে প্রেরণ হতেই মনে হলো আমি আমার বর্ষণ সঙ্গীকে পেয়ে গিয়েছি। আমার এই মুহুর্তের অনুভূতিটা বলে প্রকাশ করার মত নয়।
অন্যের সামনে কানে কানে কথা বলাটা খুবই দৃষ্টি কটু দেখায়।কিন্তু এমুহূর্তে আমার চুপ থাকলে হবে না।আমি একটু আস্তে করেই আলআবি ভাইয়াকে বললাম,,,
--আপনি তাকে চেনেন?
আলআবি ভাইয়া পুনরায় আমার কাছে এসে আস্তে করে বললেন,,,
--আমার সঙ্গে তোমার বর্ষণ সঙ্গীর আত্মার সম্পর্ক।
তার এমন বারবার আমার কাছে চলে আসায় আমার শরীরের লোম কেমন যেন ঝংকার দিয়ে উঠছে।এভাবে তার সাথে কথা বলা সম্ভব নয়।আর রাইয়ান ছেলেটাকেও তো সব বলতে হবে।আমি কালবিলম্ব না করে মনে একরাশ উৎসাহ নিয়ে হাসি হাসি মুখে জোরেই বলে উঠলাম,,,
--সে নিশ্চয়ই আপনার বন্ধু তাই না?
কথাটা বলেই শেষ মুহূর্তেও মুখে হাসি বজায় রাখলাম। আমার এরূপ উৎফুল্লতা দেখে সাদু ওর আগ্রহ মনে চেপে রাখতে না পেরে বলে উঠলো,,,
--কার কথা বলছিস।
--বর্ষণ সঙ্গী।(আমি)
সাদু কে কথাটা বলেই চোখ পরল ওর পাশে অবুঝের মতো নিশ্চুপ ভঙ্গিমায় বসে থাকা রাইয়ানের দিকে। বেচারার আমাদের কথার "ক" টাও যে বোধগম্য হচ্ছে না তা চেহারায় খুব সূক্ষ্মভাবে ফুটে উঠেছে।রাইয়ানের দিকে যখন তাকিয়ে ছিলাম তখন রাইয়ান আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,,
--জুইঁ আমি একটু তোমার সাথে কথা বলতে পারি?
--ওদিকে নয় এদিকে। আমার সাথে কথা বলো।(আলআবি ভাইয়া)
--জ্বি ভাই।(রাইয়ান)
--ব্লাড ডোনেশন করেছ ভালো কথা তা অন্যের বউ নিয়ে টানাটানি করো কেন?(আলআবি ভাইয়া)
-- ঠিক বুঝলাম না ভাই।(রাইয়ান)
--বোঝার বয়স হয় নাই মেয়ে দেখতে এসে পরেছ।(আলআবি ভাইয়া)
--ভাই একটু ক্লিয়ার করে বলবেন আসলে কি বিষয়ে বলছেন? (রাইয়ান)
--শোনো সোজা কথা হলো ও তোমাকে বিয়ে করবে না।এই দেখা পর্যন্তই শেষ।ওর হাসবেন্ড আছে। (আলআবি ভাইয়া)
উনার কথা শুনে আমি আকাশ থেকে ও নয় একেবারে চাঁদের দেশ থেকে পড়লাম। উনি যে গন্ডগোল পাকাতে এখানে এসেছেন তার আভাস পেয়েছি আগেই। কিন্তু এতো বড় গন্ডগোল পাকাতে কে বলেছে ওনাকে?আমি তড়িৎ গতিতে বললাম,,,
--না না আমার তো.....
আর বলতে পারলাম না। আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে আলআবি ভাইয়া বললেন,,,
--হ্যাঁ তোমার তো হাসবেন্ড আছে।
আমি অবাকের উপর অবাক হচ্ছি।সাদুর দিকে তাকিয়ে দেখি ওরও একি অবস্থা। রাইয়ান বলে উঠলো,,,
--কিন্তু নিয়াজ ভাই যে বলল জুইঁয়ের.....
আলআবি ভাইয়া আমার মতো রাইয়ানকেও কথা শেষ করতে না দিয়ে থমথমে গলায় বলে উঠলেন,,,
--একবার না বললাম ওর হাসবেন্ড আছে।
--কিন্তু.... (রাইয়ান)
--বাইরে যাওয়ার রাস্তা ওইদিকে।(আলআবি ভাইয়া)
এতোদিনে বুঝে গিয়েছি আলআবি ভাইয়া রেগে গেলেই কিছু টা গম্ভীর আর থমথমে হয়ে কথা বলেন।রাইয়ান আর কিছু না বলেই চলে গেল। রাইয়ান চলে যাওয়ার পর মুহূর্তেই আমি আলআবি ভাইয়াকে বললাম,,,
-- আপনি কি আমার বর্ষণ সঙ্গীর সাথে দেখা করিয়ে দিতে পারবেন? আচ্ছা সে এখন কোথায় আছে? কেমন আছে সে? আর আপনার সাথে পরিচয় হলো কীভাবে? আপনার সাথে তো নিয়াজ ভাইয়ার বন্ধুত্ব খুব ভালো। বলতে গেলে বেস্ট ফ্রেন্ড এর মতো। তাহলে আমার বর্ষণ সঙ্গীর সঙ্গে আপনার আত্মার সম্পর্ক হয় কি করে? তাহলে কি আপনার দুইটা বেস্ট ফ্রেন্ড?
কথাগুলো একদমে বলে তারপর নিশ্বাস ছাড়লাম। এতক্ষণ এই প্রশ্নগুলো আমার মাথায় ঘুরপাক খেতে খেতে মাথা ব্যথা বানিয়ে ফেলেছিল। মনে হচ্ছে কথাগুলো বলে এখন একটু প্রশান্তি পাচ্ছি। আমার কথা শেষ হতেই আলআবি ভাইয়া বললেন,,,
-- তোমার কি এই শাড়িটা ছাড়া আর কোন শাড়ি নেই? ছেলেদের সামনে শুধু একটাই শাড়ি পড়ে ঘুরঘুর করো কেন?
আমি প্রশ্ন করলাম কি আর সে উত্তর দিল কি। এতগুলো কথাই আমার বেকার গেল। তার বলা উত্তরে আমার প্রচন্ড রাগ হল। কত সময় ধরে জানতে চাইছি তার থেকে। কিন্তু সে আছে তার ভাব নিয়ে। আমি একটু ঝাঁঝালো কন্ঠেই বলে উঠলাম,,,
-- আপনার কি শোনায় সমস্যা?
আলআবি ভাইয়া আমার দিকে চোখ পাকিয়ে হুংকার দিয়ে বলে উঠলেন,,,
--কী?কী বলতে চাও?
--শোনায়! শোনায়! আপনার কি শোনায় সমস্যা?আই মিন শুনতে পান তো? এতগুলো কথা বললাম এতগুলো প্রশ্ন করলাম আপনাকে। আপনি উত্তর কি দিলেন আমাকে?(আমি)
-- তোমার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মুডে এখন আমি নেই। যখন হবে তখন বলব। এবার আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। একটাই শাড়ি কেন পরো তুমি বারবার?(আলআবি ভাইয়া)
--সেম টু ইউ। এখন মুড নেই যখন মুড হবে তখন বলব।(আমি)
আমার কথাটা শেষ হতেই উনি হুট করে দাঁড়িয়ে কোথায় যেন হেঁটে চলে গেলেন। তার প্রস্থানের সাথে সাথেই সাদু এসে আমার পাশের চেয়ারটায় বসে পড়ল আর বলল,,,
--দোস্ত তাইলে তোর ভাগ্য খুইলা গেল। প্রেমিক পুরুষ এর লগে দেখা করার জন্য আর বেশি দিন দেরি করা লাগব না।কি আমি বলছিলাম না আলআবি ভাইয়াই নাটের গুরু।সে তোর বর্ষণ সঙ্গী কে চিনে।কি দেখলি তো আমার বাথরুম থট'স টাই ঠিক।
ওর কথায় আমি এক গাল হেসে বললাম,,,
--সত্যি আজ মনে হচ্ছে আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। বাসায় যাইয়া নিয়াজ ভাইয়ারে একটা থ্যাংক ইউ দিতে হইব। যদি নিয়াজ ভাইয়া রাইয়ান নামের ছেলেটার সাথে দেখা করার জন্য এখানে না পাঠাই তো তাইলে তো আলআবি ভাইয়ার সাথে দেখা হইতো না আর আমার বর্ষণ সঙ্গীর কথাও জানতে পারতাম না। শোন! শোন! নিয়াজ ভাইয়ার জন্যে তার পছন্দের ডোনাট নিয়া যামু নে।
--বাহ বাহ।এমনে ফাল পাড়তাছোস মনে হয় তোর প্রমিক পুরুষ এর লগে বিয়ে ঠিক হইয়া গেছে।(সাদু)
-- চুপ থাক তোর নাক চাঁপলে এখনো ঝোল পড়ে। তুই এইডি বুঝবার পারবি না।(আমি)
--বোইন আমার নাক দিয়া ঝোল পরুক,ঘি পরুক,দুধ পরুক।যা ইচ্ছা পরুক।আমার দেখার টাইম নাই।এখন খালি খাওয়ার টাইম।আগে কিছু অর্ডার কর বোইন।তোর বাতিল হওয়া হবু জামাই যে কিপটারে পানিও শেষ কইরা থুইয়া গেছে।দেখ!
ওর কথায় আমি হেঁসে উঠলাম। তারপর আমরা কফি অর্ডার করলাম। সাথে এখানে চকলেট রোল পাওয়া যায়। দুইটা চকলেট রোল অর্ডার করলাম। আমি আর সাদু গল্প করছিলাম আর মনের সুখে আয়েশ করে কফি খাচ্ছিলাম। মাঝে মাঝে সাদু ছবি তুলছিল। আমার মগের কফি যখন অর্ধেক হয়ে এলো তখন সামনে চোখ পড়তেই দেখি আলআবি ভাইয়া তার দলবল নিয়ে ভিতরে ঢুকছেন। তাকে দেখে বুঝতে পারছি না রেগে আছেন নাকি শান্ত ভাবে আছেন। তবে এইটুকু বুঝতে পারছি এই ব্যক্তি নিজের বিয়ের দিনেও সাদা পাঞ্জাবি পড়ে ঘুড়ে বেড়াবে। একটু আগে যখন আমাদের সাথে বসে ছিল তখনও সেই সাদা পাঞ্জাবিই গায়ে ছিল।
তিনি সোজা দলবল নিয়ে আমাদের টেবিলের সামনে এসেই দাঁড়িয়ে পরলেন। কোন প্রকার টু শব্দ ছাড়াই আমার হাত ধরে টান দিয়ে আমাকে দাড় করিয়ে দিলেন। তার কাজে কিছুটা বিরক্ত হয়েই ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকালাম। কোনো কথা না বলে যন্ত্রমানবের মত আমাকে নিয়ে গট গট করে হেঁটে চললেন।আমি বারবার পিছনের দিকে তাকাচ্ছি। দেখলাম সেই দিনের শাফিন নামের ছেলেটা সাদুর সঙ্গে কি যেন কথা বলছে।
আলআবি ভাইয়া আমার ডান হাত তার বাম হাত দিয়ে ধরে রেখেছেন। তাই আমি আমার হাত ছুটানোর জন্য আমার বাম হাত দিয়ে তার হাত সরানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।হাত কিছুটা ছুটতেই আবার পর মুহূর্তেই আলআবি ভাইয়া আরো জোরে বল প্রয়োগ করে হাত ধরে ফেলেছেন এমন করতে করতে গিয়ে আমরা তার গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম। গাড়ির সামনে এসে আমি তাকে তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললাম,,,
-- কি সমস্যা আপনার? এমন করছেন কেন?
--অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। দেড় বছরে অনেক উরেছ। এখন আর কোন ছাড়াছাড়ি নেই।(আলআবি ভাইয়া)
--মানে?(আমি)
-- তোমার বর্ষণ সঙ্গীর তরফ থেকে কথাগুলো আমিই বলে দিলাম।(আলআবি ভাইয়া)
-- আপনি জানলেন কিভাবে? আপনার কাছে নিশ্চয়ই তার নাম্বার রয়েছে। তাড়াতাড়ি আমাকে তার নাম্বার দিন।(আমি)
-- তোমার তো দেখছি আইকিউ লেভেল খুবই কম। তখন তো আমি তোমাকে বলেই দিলাম, তোমার বর্ষণ সঙ্গীর সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। আমাদের কথা বলতে কোন মোবাইলের দরকার হয় না বুঝলে।(আলআবি ভাইয়া)
আমার হাতটা সে এখনো ধরে আছেন।তাই হাতের দিকে ইশারা করে বললাম,,,
-- আমার বর্ষণ সঙ্গী হাতটাও নিশ্চয়ই এভাবে ধরে রাখতে বলেনি আপনাকে।
আমার বলা কথাতেও তিনি আমার হাত ছাড়লেন না। বরং হাত ধরে আমাকে গাড়ির মধ্যে বসিয়ে দিলেন। তারপর নিজে এসে আমার পাশে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লেন। আমি আর কোন কথা বাড়ালাম না। সে যেহেতু আমাকে এর আগেও বাসায় পৌছে দিয়েছিলেন তাই আজও ভেবে নিলাম আমাকে হয়তোবা বাসায়ই পৌঁছে দেবেন। একমনে আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলাম। আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট ফেলে আমরা এগিয়ে চলছি।বাইরে দৃষ্টি রেখে রাস্তাঘাট মানুষজন দেখতে দেখতে চোখটা বারবার লেগে আসছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি ঘুমাতে চাচ্ছি না। তাই জোরপূর্বক চোখের পাতা দুটো কে মেলে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ করে আমার চলমান অবস্থা স্থির হয়ে যাওয়ায় ঘুম ঘুম ঘোর টা কেটে গেলো। চারপাশে তাকিয়ে দেখি এটা আমাদের বাড়ি নয় বরং একটা শপিং মল। আমি পাশে আলআবি ভাইয়ার দিকে তাকাতেই দেখি তিনি ইতিমধ্যে গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছেন। আমিও শীঘ্রই সিট বেল্ট টা খুলে গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। নেমে তাকে জিজ্ঞেস করলাম,,,
--আমরা এখানে কেন? আপনি না আমাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন?
-- কখন বললাম আমি তোমাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি।(আলআবি ভাইয়া)
-- তাহলে আমরা এখানে কেন?(আমি)
-- বিয়ে করতে এসেছি।(আলআবি ভাইয়া)
--কি? কি উল্টাপাল্টা বলছেন এসব। শপিংমলে কি কেউ বিয়ে করতে আসে? (আমি)
--নিজেই যখন জানো তাহলে এতো কথা বলছো কেন?(আলআবি ভাইয়া)
পুনরায় তিনি আমার হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে শপিংমলে ঢুকলেন।আমার মস্তিষ্ক কোন ভাবেই চিন্তা করে কোন কিছুই মিলাতে পারছেনা।হঠাৎ করেই আলআবি ভাইয়ার কি হলো? আর সে আমার বর্ষণ সঙ্গীর কথাই বলছে না কেন আমায়?
আলআবি ভাইয়া শপিংমলে ঢুকে ঘুরছেনতো ঘুরছেনই থামার কোনো নামই নেই। অবশেষে একটা বোরখা হাউজের ভিতরে ঢুকে পড়লেন। তখন মনে হল লোকটাকে কয়েকটা কথা শুনিয়ে দেই। আমাকে বললে কি হতো যে তিনি বোরখা হাউজ খুঁজছিলেন। আমাকে বললেই তো হতো। এখান থেকে আমি আর সাদু বেশিরভাগ শপিং করে থাকি। এই বোরখা হাউজ টায় বোরখার সাথে সাথে হিজাবজ বিক্রি করে। এখান থেকেই আমি আর সাদু বেশিরভাগ হিজাবগুলো কিনে থাকি।
আমার কৌতূহল মেটানোর জন্য আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করে বসি,,,
--কার জন্য বোরখা কিনবেন?
--আমি তো আর বোরখা পড়বো না তাই না।তোমাকে সাথে যেহেতু এনেছি তাই নিশ্চয়ই তোমার জন্যই নিব।(আলআবি ভাইয়া)
--না না আমার লাগবে না।(আমি)
--হ্যাঁ তা কেন লাগবে। যদি শাড়ি কিনে দেয়ার কথা বলতাম তাহলে তো লাফিয়ে লাফিয়ে শাড়ি নিতে। ছেলেদের সামনে তো শাড়ি পড়ে শুধু ঘুরঘুর করতে ইচ্ছা করে তোমার।(আলআবি ভাইয়া)
আমি তার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মাথানিচু করে বললাম,,,
-- আমার বাসায় বোরখা আছে। তাই কিনতে বারণ করেছিলাম।
এরপর আর কোন কথা বললাম না। আলআবি ভাইয়ার দিকে তাকালামও না। তার কথাটায় খুব খারাপ লেগেছে আমার। না জেনে শুনে আমার নামে খারাপ একটা কথা বলবেন কেন তিনি? তাই তার সাথে আর কোন প্রকার কথা বলতে ইচ্ছে হলো না। এখন বুঝলাম সে মনে মনে আমাকে ভালো মেয়েদের কাতারে দেখেনা। আলআবি ভাইয়া নিজের পছন্দমত একটা বোরখা আর তার সাথে হিজাব কিনে নিলেন। তারপর আগের ন্যায় আমার হাত ধরতে আসলে আমার হাত ধরতে দিলাম না। আমি গটগট করে শপিং মল থেকে বের হয়ে সোজা গাড়ির সামনে এসে দাড়িয়ে পড়লাম। আলআবি ভাইয়া গাড়ির সামনে আসলে আমরা দুজনে গাড়িতে উঠে বসলাম। আমার এই নীরবতা আর ভাঙলো না। বাসাযর সামনে এসে গাড়ি থেকে নেমে বোরখা না নিয়েই দ্রুত পা ফেলে চলে আসলাম। বাসার দরজার সামনে এসে কলিংবেল চাপতেই নিয়াজ ভাইয়া দরজা খুলে দিল। ভাইয়া কে দেখেই আমার ডোনাটের কথা মনে পড়ে গেল। ওই আলআবি নামের খবিশ টার জন্য আমি ডোনাট টাও কিনতে পারিনি। ড্রইংরুমে দেখলাম বাবা বসে বসে চা খাচ্ছে আর টিভিতে খেলা দেখছে।পাশে আরেকটা চায়ের কাপ থাকায় বুঝতে পারলাম বাপ-ছেলে দুজন মিলে খেলা দেখছে আর চা খাচ্ছে। ভাইয়ার সাথে কথা না বলে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলাম।
ওইদিনের ঘটনার পর আরো দুইদিন চলে গিয়েছে। আমাকে ভাইয়া কেবল জিজ্ঞেস করেছিল আলাবি ভাইয়া সেদিন ক্যাফেতে এসেছিল কিনা? আশ্চর্যের ব্যাপার হলো আমি বাসায় আসার পর নিয়াজ ভাইয়া আমাকে আর রাইয়ানের সম্পর্কে কিছুই বলেনি। কিন্তু রাইয়ানের সাথে দেখা করে আসার পরের দিন নিয়াজ ভাইয়া শুধু এতোটুকুই বলেছিল "রাইয়ানকে নিয়ে আর কোন চিন্তা নেই। আলআবি আমাকে সব বলেছে"।
সাদুর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছিলাম শাফিন নামের ছেলেটা আলআবি ভাইয়ার সেক্রেটারি। আর ওই ছেলেটাই সাদুকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছিল। রাতে ঘুমানোর আগে ওয়াশরুমে এর বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভালোভাবে মুখটা ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে নিচ্ছিলাম। ঠিক তখন মনে হলো কেউ আমার ঘরের মধ্যে বসে গিটার বাজিয়ে গান গাইছে।
Khairiyat poocho
Kabhi to kaifiyat poocho
Tumhaare bin deewane ka kya haal hai
Dil mera dekho
Na meri haisiyat poocho
Tere bin ek din jaise sau saal hai
Anjam hai tai mera
Hona tumhein hai mera
Jitni bhi ho dooriyan filhaal hain
Yeh dooriyan filhaal hain....
আমি একটু তাড়াতাড়ি করে মুখটা ধুয়ে ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে আসলাম এসে রুমে কারোই অস্তিত্ব পেলাম না। কিন্তু গানটা এখনো আমার কানে বেজে যাচ্ছে। দ্রুত বারান্দায় গিয়ে দেখতেই আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল। কারন বারান্দায় বসে আলআবি ভাইয়া এক মনে আকাশে উদিত হওয়া চকচকে থালার ন্যায় চাদঁটার পানে তাকিয়ে আছেন। এই মুহূর্তে আলআবি ভাইয়াই কেন কোনো মানুষেরই আমার বারান্দায় আসা অবাস্তব একটা ঘটনা। কিন্তু চোখের সামনে যা দেখছি তা মিথ্যেও দেখছি না।হঠাৎ মনে হলো এটা হয়তো বা আলআবি ভাইয়ার রূপ ধারণ করে কোন জিন পরী এসেছেন। পরে দেখই আলআবি রূপি জিনটা বসে বসে গান গাইছে তাই যত দোয়া-দুরুদ আছে পড়তে লাগলাম। আল্লাহাফেজ ভাইয়ার ঝিম বৃষ্টি যখন আবার ওপর পরল তখন জোরে জোরে কি কি যেন দোয়া দুরুদ পড়তে লাগলাম কি পরিচিত আমি নিজেও বুঝতে পারছি না
চলবে...
Writer:- হুমাশা এহতেশাম