> রাগি মেয়ের প্রেমে পর্ব ৭ - রাগি মেয়ের গল্প - রাগি মেয়ে - রাগি মেয়ের সাথে প্রেম - Bangla New Story - Love Story
-->

রাগি মেয়ের প্রেমে পর্ব ৭ - রাগি মেয়ের গল্প - রাগি মেয়ে - রাগি মেয়ের সাথে প্রেম - Bangla New Story - Love Story

ভাবতেছি, ট্রান্সফার কিভাবে নিবো? হঠ্যাৎ করে কেউ একজন আমার কাঁধে হাত দেয়, পিছনে তাকাতেই আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, তাকিয়ে দেখি এটা তন্নি..... 

তন্নিঃ তুমি এখানে? জানো আমি তোমাকে কতো খুঁজেছি!

ঘটনা কি! যে মেয়ে আমাকে তুই ছাড়া/ ছোটলোক ছাড়া কথা বলে না। আর সেই আমাকে তুমি করে বলছে, আবার নাকি অনেক খুঁজতেছে। ব্যাপার টা কেমন জানি অদ্ভুত লাগলো। 

তন্নিঃ কি ব্যাপার চুপ কেন? 

আমিঃ কেন খুঁজতেছেন? আবার মারার জন্য নাকি? আমি তো আপনার আর কোনো ক্ষতি করিনি, কলেজেও যাই না। 

তন্নিঃ দেখো আগের সব গুলো ঘটনার জন্য সরি,,,, 

আমিঃ..........

তন্নিঃ কথা বলছো না যে? 

আমিঃ কি বলবো? আপনার আর কোনো কথা থাকলে বলতে পারেন। 

তন্নিঃ আচ্ছা বাদ দাও, Thanks....

আমিঃ থেংক্স কেন? 

তন্নিঃ সেদিন আমার জন্য এতো কিছু করার জন্য। 

আমিঃ.........  

তন্নিঃ তুমি আগের মতো রিগুলার কলেজে যেতে পারো, আমি আর কোনো কিছু বলবো না। আচ্ছা যাইহোক এই নাও এটা তোমার জন্য। (একটা ব্যাগ বাড়িয়ে দিয়ে) 

আমিঃ কি এখানে? 

তন্নিঃ সেদিন তুমি তোমার শার্ট টা দিয়ে আমার মাথা বেঁধে দিয়েছিলে, রক্তে পুরো শার্ট লাল হয়ে গেছে। তোমার শার্টটা নষ্ট হয়ে গেছে, তাই আমি তোমার জন্য সেম কালারের একটা শার্ট নিয়ে এসেছি। 

আমিঃ ওটা আপনার কাছেই রেখে দিন, আমি কারো জন্য কিছু করলে সেটার বিনিময় নিই না। 

এ কথা বলেই সেখান থেকে উঠে হাটা দিলাম, তন্নি কয়েকবার আমাকে ডেকেছে বাট আমি কোনো উত্তর না দিয়ে চলে আসছি। 

ফকিন্নি এখন এসেছে থেংক্স বলার জন্য, দরদ দেখানোর জন্য। তোর আগের দিন গুলোর কথা আমি ভুলিনি। কোনো কারণ ছাড়াই তুই আমার সাথে এতো বাজে ব্যবহার করলি। তোকে জীবনেও ক্ষমা করবো না। 

এরপর বাসায় চলে আসলাম, এসে কিছুক্ষণ পড়ালেখা করে ঘুমিয়ে গেলাম, পরের দিন ঘুম থেকে উঠে কলেজে গেলাম। গেইটে ফারিয়ার সাথে দেখা..... 

ফারিয়াঃ কিরে হারামী, কই ছিলি এতো দিন।

আমিঃ বাসায় তো ছিলাম। 

ফারিয়াঃ তাহলে কলেজে আসিস নি কেন? ও আচ্ছা ভালো কথা তুই নাকি ট্রান্সফার নিয়ে নিবি? 

আমিঃ নিবো ভাবছিলাম, কিন্তু এখন আর নিবো না। 

ফারিয়াঃ যাক ভালোই হবে, তো বল এখন কি অবস্থা? 

আমিঃ এইতো ঠিকঠাক। সাদিয়া কোথায় আসবে না? 

ফারিয়াঃ ও ভিতরে আছে। চল,,, 

আমিঃ ওকে। 

তারপর ভিতরে চলে গেলাম, আয়মানও আছে, দুজনে প্রেম করতেছে। আমাদের দেখে দুইজন দুই দিকে তাকালো। 

আমিঃ হইছে আর ভাব ধরতে হবে না। 

আয়মানঃ আরে বন্ধু তুই কলেজে আসবি অথচ বললি না। 

ফারিয়াঃ কেন তোদের প্রেমের ডিস্টার্ব হচ্ছে নাকি? 

সাদিয়াঃ এই তুই সব সময় খোঁচা মেরে কথা বলিস কেন? তুইও প্রেম কর। 

ফারিয়াঃ করবো, করবো। একটু ওয়েট কর,,, আমার প্রেম হবে অনেক রোমান্টিক।

আয়মানঃ কচুর রোমান্টিক।

আমিঃ এই থাম, সানি কই? 

আয়মানঃ ওয়াশরুমে গেছে। 

আমিঃ আচ্ছা চল, আজকে ক্লাস করবো না। অনেক দিন তোদের সাথে আড্ডা দিই না। ক্যান্টিনে চল,,,, 

আয়মানঃ আচ্ছা চল। 

আমিঃ সানিকে কল দিয়ে আসতে বল। 

এরপর সবাই ক্যান্টিনে চলে গেলাম, একটু পর সানিও আসছে। আমরা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় সাদিয়া ইশারা দিয়ে পেছনে তাকাতে বললো, তাকিয়ে দেখি তন্নি ওর গুণ্ডি ফ্রেন্ড গুলা নিয়ে এদিকেই আসছে। আমি চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে আছি..... 

তন্নিঃ এই তোমরা এখানে? জানো আমি তোমাদের কতো খুঁজেছি?

সবাই যেন আকাশ থেকে পড়লো, একে অন্যের দিকে তাকাতে লাগলাম, সবাই ভুত দেখার মতো তন্নির দিকে তাকিয়ে রইলো.... 

তন্নিঃ কি ব্যাপার এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? 

সানিঃ আমাকে একটা চিমটি দেতো, স্বপ্ন নাকি বাস্তব?

তন্নিঃ ওই বাস্তবই, ওকে? আচ্ছা যাইহোক আমি কি তোমাদের ফ্রেন্ড হতে পারি, মানে তোমাদের এই গ্রুপের একজন হতে পারি? 

সবাই আমার দিকে তাকালো, কারনটা হয়তো জেনে গেছে, ওই দিন তন্নিকে বাঁচানোর জন্যই সে এখন আমাদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে চায়। 

আমি কোনো কথা না বলে সেখান থেকে উঠে সোজা বাইরে চলে আসলাম, বাইরে এসে গাছ তলায় বসে আছি। 

একটু পর, সানি এসে আমার কাঁধে হাত দিয়ে বললো....

সানিঃ কিরে তুই এখানে? 

পিছনে তাকিয়ে দেখি সবাই চলে আসছে। 

আমিঃ হুম, তোরা চলে আসলি কেন? 

আয়মানঃ তো কি করবো? 

আমিঃ যা ফ্রেন্ডশিপ কর। 

সাদিয়াঃ তুই পাগল হইছিস? 

আমিঃ তোদের সাথে তো ওর কোনো কিছু হয়নি, সো তোরা তো ফ্রেন্ডশিপ করতে পারিস। 

ফারিয়াঃ তোর মাথা খারাপ? তুই না করলে আমরাও করবো না। 

সানিঃ হুম, ও আগে যে যে কাজ গুলো করেছে আমরা এখনো ভুলিনি, আর এতো সহজে ফ্রেন্ডশিপ করবো তুই ভাবলি কি করে? 

আয়মানঃ সেদিন বাঁচানোর জন্যই আজকে ফ্রেন্ডশিপ করতে এসেছে, নাহলে আজকেও তোর উপর আক্রমণ করতো। 

আমিঃ আচ্ছা বাদ দে তো, এই গুলো আর ভালো লাগছে না। 

ফারিয়াঃ এই চল, ওইদিক থেকে ঘুরে আসি। সময়ও কাটবে, ভালোও লাগবে। 

সানিঃ আচ্ছা ঠিক আছে চল। 

এরপর ওদের সাথে অনেক ঘুরাঘুরি করলাম, তারপর বাসায় চলে আসলাম। দুপুরবেলা খেয়ে ঘুমিয়েছি মাত্র দেখলাম একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো... 

আমিঃ হ্যালো কে? 

অপরিচিতাঃ আমি! তুমি জুয়েল না?

আমিঃ আরে আজব আমিটা কে? হুম আমিই জুয়েল,,,,

অপরিচিতাঃ ওই যে তুমি প্রাইভেট পড়াতে লিজা ওর আম্মু। 

আমিঃ ও আচ্ছা আন্টি কেমন আছেন? 

আন্টি; এইতো বাবা ভালো, তুমি কেমন আছো? 

আমিঃ আছি আলহামদুলিল্লাহ। হঠাৎ কল দিলেন কোনো সমস্যা? 

আন্টিঃ আসলে বাবা আমাদের ভুল হয়ে গেছে, তুমি চাইলে লিজাকে আবার পড়াতে পারো। 

আমিঃ সরি আন্টি, আমি ছ্যাছড়া না যে আপনাদের বাসায় আবার যাবো, যার কথা শুনে আমাকে বাদ দিছেন তাকেই বলেন পড়াতে, বা অন্য একটা টিউটর ঠিক করে দিতে। 

আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দিলাম। ফকিন্নি কোনো কিছু না জেনে সেদিন আমাকে নিষেধ করেছিলি এখন আবার কল দিয়ে ন্যাকামো করতেছে। 

সেদিন বিকালে আর বাসা থেকে বের হয়নি, পরের দিন কলেজে গেলাম, সবাই মিলে ক্লাসে গেলাম, ক্লাসে খেয়াল করলাম তন্নি আমার পাশের টেবিলে বসছে, আমি সানিকে আমার জায়গায় দিয়ে অন্য টেবিলে গিয়ে বসলাম। ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছি এমন সময় তন্নি পিছন থেকে ডাক দিলো....

তন্নিঃ ওই দাঁড়া! 

আমি দাঁড়িয়ে গেলাম, আজকে না জানি আবার কি করে। ভয়েজ শুনে তো মনে হচ্ছে রেগে আছে..... 

তন্নিঃ তোর এতো ভাব কিসের? 

আমিঃ মানে? 

তন্নিঃ কচি খোকা মানে বুঝনা তাই না? এই আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে তোর সমস্যা কোথায়? 

আমিঃ সমস্যা আছে বলেই তো করছি না। 

তন্নিঃ কি সমস্যা আমাকে বল। তুই জানিস কতো ছেলে আমার পিছে ঘুরে আমি পাত্তা দিই না। 

আমিঃ তো আমি কি করবো? 

তন্নিঃ তোর কিছু করতে হবে না। তুই শুধু বল ফ্রেন্ডশিপ করতে তোর সমস্যা কোথায়? 

আমিঃ আপনার যখন এতো ফ্রেন্ডশিপ করার ইচ্ছা তো অন্যদের সাথে গিয়ে করেন। আমার মধ্যে কি পাইছেন? 

তন্নিঃ তোরে ভালোবাসি তাই (আস্তে করে)

আমিঃ কিছু বললেন? 

তন্নিঃ তোর জন্য, ওই ফকিন্নি গুলাও তো আমার সাথে কথা বলছে না। 

আমিঃ আচ্ছা আমি বলে দিবো ওদের, যাতে আপনার সাথে কথা বলে। 

তন্নিঃ তোর এতো দালালি করতে হবে না। বল তোর সমস্যা কি? 

ধুর এই ফালতুর সাথে কথা না বলাই বেটার হবে। আমি কোনো কথা না বলে ক্যান্টিনে চলে গেলাম। ওখানে গিয়ে দেখি ফারিয়া একা বসে আছে। 

আমিঃ কিরে তুই একা কেন? ওরা কই। 

ফারিয়াঃ জানি না। 

আমিঃ তোর কি মন খারাপ? 

ফারিয়াঃ আরে না,,,

আমিঃ মিথ্যা বলিস কেন? কি হইছে বল। 

ফারিয়াঃ দোস্ত তোকে একটা কথা বলবো, তুই প্লিজ কাওকে বলিস না। 

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে বল। 

ফারিয়াঃ আমার একটা ছেলের সাথে রিলেশন আছে। 

আমিঃ বাহ! এতো খুশির খবর, তুই এতো দিন বলিস নি কেন? 

ফারিয়াঃ বলিনি অনেক সমস্যা ছিলো তাই। 

আমিঃ আচ্ছা বুঝলাম, এখন মন খারাপ কেন? 

ফারিয়াঃ ফয়সালের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে অন্য একটা মেয়ের সাথে। আমি ওরে ছাড়া থাকতে পারবো না। (বলেই কান্না করতে লাগলো)

আমিঃ আরে থাম থাম, এখানে অনেক লোক কান্নার দরকার নেই, এখন বল ছেলেটা কি তোকে সত্যি সত্যি ভালোবাসে? 

ফারিয়াঃ হুম।

আমিঃ তো ছেলেটাকে বল তোকে নিয়ে পালিয়ে যেতে, আর এতো দিন ছেলেটার কথা বলিস নি কেন? ছেলেটা কে,,,,, 

ফারিয়াঃ তন্নির মামাতো ভাই। আমাদের নবিন বরণের দিন সে কলেজে আসে, আমাকে সেদিন প্রথম দেখেছিলো, অনেক দিন আমার পিছে ঘুরেছে, তারপর প্রপোজ করে,আমিও ওর অনেক খবর নিলাম। তারপর রাজি হয়ে গেলাম। 

আমিঃ এতো ছেলে থাকতে তন্নির মামাতো ভাই? তো আমাদের বলিস নি কেন? 

ফারিয়াঃ তোর সাথে তন্নি যা করলো তখন যদি আমি ওর মামাতো ভাইয়ের কথা বলি তোরা সবাই আমাকে রিয়েক্ট করতি, তাই। 

আমিঃ তাহলে এখন বললি কেন? 

ফারিয়াঃ আর কোনো উপায় নেই। 

আমিঃ তারমানে আমরা তোর উপকারের বন্ধু, রিয়েল বন্ধু না? 

ফারিয়াঃ না দোস্ত, আমি সেটা মিন করিনি। এখন কিছু একটা কর,আমি ওরে ছাড়া থাকতে পারবো না। 

আমিঃ আচ্ছা সানি, আয়মান, সাদিয়া আসুক। দেখি কি করা যায়,,,, 

এমন সময় পিছনে থেকে কেউ একজন কাঁধের উপর একটা থাপ্পড় দেয়, পিছনে তাকাতেই......

চলবে...


Writer:- এম এইচ জুয়েল 

NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner