> রাগি মেয়ের প্রেমে পর্ব ৯ - রাগি মেয়ের গল্প - রাগি মেয়ে - রাগি মেয়ের সাথে প্রেম - Bangla New Story - Love Story
-->

রাগি মেয়ের প্রেমে পর্ব ৯ - রাগি মেয়ের গল্প - রাগি মেয়ে - রাগি মেয়ের সাথে প্রেম - Bangla New Story - Love Story

তারপর ওর কাছে গেলাম, ওরে পিছন থেকে ডাক দিলাম। ও পিছনে ফিরে আমাকে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে, মনে হচ্ছে এলিয়েন দেখতেছে.... 

তন্নিঃ কি ব্যাপার মিস্টার! আপনিতো আমাদের সহ্য করতে পারেন না, তো এখন ডাকতেছেন কেন? 

লিজাঃ ফ্রেন্ডশিপ করতে চাইছিলাম কি একটা রিয়েক্ট তুই আমাদের সাথে সেদিন দেখালি। এমন ভাবে উঠে চলে গেলি যেন আমরা চিড়িয়াখানার ভয়ংকর প্রাণী।

আমিঃ আমি রাজি,,,, 

লিজাঃ কি রাজি? 

আমিঃ আপনাদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে। 

তন্নিঃ সত্যি নাকি কোনো মতলব আছে? 

আমিঃ মতলব থাকলে প্রথমেই আপনাদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতাম। 

লিজাঃ আচ্ছা ঠিক আছে, আজ থেকে সবাই ফ্রেন্ড। বাকীরা কোথায়? 

আমিঃ ওরা এখনো আসেনি। 

তন্নিঃ আচ্ছা চল, ওদিকে গিয়ে বসি। 

আমিঃ হুম চলেন। 

তন্নিঃ ওয়েট!

লিজাঃ আবার কি হলো? 

তন্নিঃ তুই না আমাদের ফ্রেন্ড (আমাকে)

আমিঃ হুন। 

তন্নিঃ তাহলে আপনি করে বলতেছিস কেন? 

আমিঃ তো কি বলবো। 

তন্নিঃ তুই করে বলবি সবার মতো। 

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। 

তারপর ওদের সাথে গাছ তলায় গেলাম, সানি আয়মান সাদিয়া ফারিয়া সবাই আমার উপর কালকের ব্যাপার টা নিয়ে রেগে আছে। সেজন্য সকাল থেকে কেউই কল দেয়নি, কলেজেও আসতেছে না। 

লিজাঃ কিরে তোর কি মন খারাপ? 

আমিঃ না ঠিক আছি।

আমি শুধু বসে আছি তন্নি কখন একা হবে আর কখন আমি ওরে কথা গুলো বলবো। একটু পর লিজা বললো....

লিজাঃ এই তোরা থাক, আমি গেলাম। 

তন্নিঃ তোর আবার কি হলো? 

লিজাঃ বাবা আজকে তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে। 

তন্নিঃ ওকে যা তাহলে। এই তুইও যাবি? (আমাকে) 

আমিঃ নাহ, আরো কিছুক্ষণ আছি। 

তারপর লিজা চলে গেলো, আমি আর তন্নি চুপচাপ বসে আছি। ওর সাথে যে এইভাবে বসবো কখনো কল্পনাও করিনি। যেখানে সে আমাকে দেখলেই হুমকি দিতো আর সেখানে আমার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে। বাস্তবতা কি থেকে কি হয় বুঝাই মুশকিল।  আমার চুপ থাকা দেখে বললো....

তন্নিঃ কিরে চুপচাপ বসে থাকবি নাকি কিছু বলবি? 

আমিঃ আপনার সাথে সরি তোর সাথে একটা কথা ছিলো। 

তন্নিঃ তো বল, চুপ করে আছিস কেন? 

আমি এবার ফারিয়া আর তন্নির মামাতো ভাই ফয়সালের রিলেশনের কথা বললাম, এবং এর আগে যা যা হয়েছে সব কিছু বললাম এবং ওর মামাকে কি কি বলতে হবে সেটাও বলে দিলাম। 

তন্নিঃ আচ্ছা এই তাহলে আসল কথা? 

আমিঃ হুম। 

তন্নিঃ তুই সে কারণে ফ্রেন্ডশিপ করেছিস? আমি ঠিকই সন্দেহ করেছিলাম তোর ভিতরে কোনো একটা ঘাবলা আছে। যেই ছেলে আমাকে এক সেকেন্ডও সহ্য করতে পারেনা আর সেই নিজে থেকে এসেছে ফ্রেন্ডশিপ করতে। আমি প্রথমেই বুঝছি,,,

আমিঃ এই না,আমি এটার জন্য ফ্রেন্ডশিপ করিনি। 

তন্নিঃ তো কেন করলি? আগে করিস নি কেন? 

আমিঃ আসলে আমি ভাবছি কিছুদিন পর সব পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে ফ্রেন্ডশিপ করবো। আর যতোই হোক আমরা সেম ক্লাসে পড়ি, ফ্রেন্ডশিপ রাখা দরকার। 

তন্নিঃ হুম বুঝলাম, তো এখন কি করতাম? 

আমিঃ যদি তোর মামাকে বলে বিয়েটা বন্ধ করে দিতি তাহলে ভালো হবে। হাতে সময় নাই, আর কয়েকদিন পরেই বিয়ে। 

তন্নিঃ ওকে চল,,,

আমিঃ কোথায়? 

তন্নিঃ কোথায় আবার? মামার বাসায়। 

আমিঃ ওকে চল। 

তারপর ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে একটা রিক্সা নিয়ে ওর মামার বাসার দিকে রওনা দিলাম, কলেজ থেকে একটু দূরেই ওর মামার বাসা।  মেয়েটা যে এতো কথা জানে ওর সাথে নে বের হলে জানতাম না। 

একটুপর ওর মামার বাসায় গেলাম, সে আমাকে সোফা রুম দেখিয়ে বসতে বললো, তারপর নিজে অন্যদিকে চলে গেলো। আমি বসে বসে ভাবছি কাজটা হবে কিনা। 

তারপর তন্নি ওর মামাকে নিয়ে আমার কাছে আসলো,আমি সালাম দিলাম। বসে কিছুক্ষণ গল্প করলাম। তারপর তন্নি ফয়সালের বিয়ের ব্যাপারে বলে। কিন্তু ফয়সালের যে রিলেশন আছে সেটা বলেনি। 

তন্নি নিজে থেকে অনেক গুলো মিথ্যা কথা বলে প্রায় ওর মামাকে নিস্তব্ধ করে দিলো। মেয়েটার বুদ্ধি দেখে আমি রীতিমতো একটা টাসকি খেলাম। 

তারপর ওর মামা বললো.... 

মামাঃ তোরা এতো কিছু কি করে জানিস? 

তন্নিঃ আরে আমার ভাইয়ের বিয়ে আর আমি ভাবি সম্পর্কে একটু খবর নিবো না তা কি করে হয়? তাই খবর নিলাম,,, 

মামাঃ ওও,,, 

তন্নিঃ মামা প্লিজ তুমি ভাইয়ার জীবনটা এভাবে নষ্ট করে দিও না। একটা মাত্র ছেলে তোমার, ওর যদি কিছু হয়ে যায়। কি করবে এই টাকা, সম্পদ দিয়ে? 

বুঝা যাচ্ছে মামা পুরো ইমোশনাল হয়ে গেছে, বেচারা মনে হচ্ছে কেঁদে দিবে। 

মামাঃ লিমার (পাত্রী) বাবা আমার সাথে এতো বড় মিথ্যা কথা বলেছে, নিজের মেয়েকে আমার ছেলের কাঁধে ঝুলিয়ে দেওয়ার জন্য এসব করেছে? 

তন্নিঃ হুম মামা। 

মামাঃ কিন্তু মা, আমি তো সবাইকে দাওয়াত দিয়ে দিছি, আমি এক কথার মানুষ,  এখন কথার খেলাপ কি করে করি। 

তন্নিঃ খেলাপ কেন করবে? তুই ওই দিনই ভাইয়ার বিয়ে দাও।

মামাঃ আরে এতো তাড়াতাড়ি ওর জন্য মেয়ে কোথায় পাবো? 

আমিঃ সেটা আপনি আমাদের উপর ছেড়ে দেন। 

মামাঃ পারবে নাকি তোমারা? 

আমিঃ চেষ্টা করতে তো আর সমস্যা নাই। আপনি শুধু লিমার সাথে বিয়েটা ক্যান্সেল করেন। 

মামাঃ ওকে বাবা,,,

তন্নিঃ মামা বিকালবেলা রেড়ি থাকবে আমরা পাত্রী দেখতে যাবো। 

আমি আর মামা অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম। 

মামাঃ পাত্রী কে? 

তন্নিঃ সেটা না হয় বিকালে দেখবে। ফয়সাল ভাইয়াকেও বলো রেড়ি থাকতে ,,,, 

মামাঃ আচ্ছা ঠিক আছে। 

আমিঃ মামা আমরা তাহলে আসি, বিকালে দেখা হবে। 

মামাঃ খেয়ে যাও? 

তন্নিঃ না, আমাদের কাজ আছে। 

মামাঃ আচ্ছা ঠিক আছে সাবধানে যাবি। 

এরপর বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম,,, 

তন্নিঃ কিরে কেমন দিলাম? 

আমিঃ পুরাই ১০০, আপনি একটা জিনিষ মাইরি। 

তন্নিঃ দেখতে হবে না মেয়েটা কে? 

আমিঃ হইছে আর ঢং করতে হবে না, আরো একটা কাজ করতে হবে। 

তন্নিঃ কি কাজ? 

আমিঃ ফারিয়াদের বাসায় বলতে হবে, নাহলে ওরা জানবে কি করে। দাঁড়া আমি ওর আম্মুকে কল দিই। 

তন্নিঃ আচ্ছা দে। 

কল দিলাম,,,,, 

আমিঃ হ্যালো আসসালামু আলাইকুম আন্টি। 

আন্টিঃ ওয়ালাইকুম সালাম। কেমন আছো বাবা? 

আমিঃ এই তো আন্টি আছি মোটামুটি, আপনি? 

আন্টিঃ আছি আল্লাই রাখছে। 

আমিঃ আন্টি ফারিয়া কোথায় কলেজে আসেনি যে?

আন্টিঃ জানি না বাবা, মেয়েটা কালকে থেকে কিছু খাচ্ছে না, দরজা বন্ধ করে ভিতরে বসে থাকে। 

আমিঃ আন্টি একটা কথা ছিলো। 

আন্টিঃ হুম বলো....

আমি পুরো বিষয়টা বুঝিয়ে বললাম,এবং এটাও বললাম বিকালবেলা ওরা সবাই দেখতে আসবে। আন্টিও কেমন জানি একটু একটু খুশি আছে। 

আন্টিঃ তাহলে এই ব্যাপার? আর দেখো মেয়েটা আমাকে কিছু জানায় নি। 

আমিঃ আন্টি ফারিয়া ভয়ে জানায় নি। 

আন্টিঃ ভয়ের কি আছে, আমি তো ওর মা, ওর ভালোমন্দ তো আমাকেই দেখতে হবে। আমার আর ওর বাবারও প্রথমে প্রেম ছিলো তারপর বিয়ে। 

আমিঃ আন্টি আরেকটা কথা। 

আন্টিঃ বলো বাবা! 

আমিঃ আমি যে আপনাকে কথা গুলো বলেছি ফারিয়াকে কিছু বলবেন না, আর ফয়সাল যে ওরে দেখতে আসছে সেটাও বলবেন না। 

আন্টিঃ কেন বাবা? 

আমিঃ ওরে একটা সারপ্রাইজ দিবো। 

আন্টিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। 

কল কেটে দিলাম....

তন্নিঃ সব ঠিক আছে? 

আমিঃ তুই তাহলে যা, দুপুরে খেয়ে রেড়ি হয়ে নিস। 

তন্নিঃ দেখা কোথায় করবি? মানে ফারিয়াকে কোথায় দেখাবি? 

আমিঃ সিজলার রেস্টুরেন্ট এ দেখালে কেমন হয়? 

তন্নিঃ যেটা ভালো বুঝিস। 

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে এখন বাসায় যা। 

তারপর তন্নির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম, আজকে কেমন যেন একটা অন্যরকম আনন্দ লাগছে। 

খাওয়াদাওয়া করে আমি ফারিয়ার আম্মুকে কল দিয়ে সব কিছু বলে দিলাম, কোথায় আসতে হবে সেটাও বলে দিলাম। আরো বললাম সানি আয়মান আর সাদিয়াকে সাথে করে নিয়ে আসতে। 

তারপর রেড়ি হয়ে তন্নিদের বাসার সামনে চলে গেলাম, কিছুক্ষণ পর সে আসলো তারপর দুজনে ওর মামার বাসায় চলে গেলাম,সেখান থেকে সব কিছু ঠিকঠাক করে ওদেরকে সাথে নিয়ে সিজলারে চলে গেলাম। ফারিয়ার আম্মু আব্বু, ওর বাবা, ওর মামা আরো কয়েকজন লোক তারপর সানি আয়মান আর সাদিয়া সবাই আগে থেকেই এসে বসে আছে। 

এরপর আমরাও গেলাম, আমাকে আর তন্নিকে একসাথে দেখে সানি আয়মান সাদিয়া ফারিয়া এমন ভাবে তাকালো যেন তারা আকাশ থেকে পড়েছে। 

আমি ওদের সাথে কোনো কথা বলে ফয়সালের পাশে গিয়ে বসলাম। ফয়সাল আর ফারিয়া একে অন্যকে দেখে খুশিতে শেষ, বার বার আমাদের দিকে তাকাচ্ছে। তন্নি এসে আমার পাশে বসলো, আজকে একটা কালো শাড়ি পড়েছে, দেখে অন্যরকম একটা ভালো লাগ কাজ করতেছে। আমার এই অবস্থা দেখে সানি শুধু এপাশওপাশ করতেছে মনে হয় ওর জ্বলতেছে। 

যাইহোক কথাবার্তা শুরু হলো, সবাই সবার সম্পর্কে জানলো, খবর নিলো। ফয়লাকে আর ফারিয়াকে কথা বলার জন্য একটা রুমে পাঠিয়েছে। একটু পর দুজনে আবার রুমে আসলো, দুজনেই হেসে হ্যা সূচক সম্মতি দিলো। যাক সবাই রাজি বিয়ের তারিখটা শুনার পর ফারিয়ার বাবা প্রথমে না করলেও পরে রাজি হয়ে যায়। 

সব ঠিকঠাক, আমি আস্তে করে উঠে বাইরের বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। সাদিয়া পিছনে এসে..... 

সাদিয়াঃ কিরে এখানে কি করিস? 

আমিঃ........ 

সানিঃ কিরে শালা একা একা এতো দূর, একবার বললিও না। 

আমিঃ........

আয়মানঃ সরি দোস্ত আমরা না বুঝে তোর সাথে এই দুই দিন বেডভিহ্যাব করেছি। 

আমিঃ........ 

একটু পর ফারিয়া আসলো....

ফারিয়াঃ থেংক্স দোস্ত, তুই না থাকলে কিছুই হতো না। 

আমিঃ আমি কারো বন্ধু না, শুধু মাত্র ব্যবহারের পাত্র মাত্র। 

ফারিয়াঃ প্লিজ এভাবে বলিস না, আমি ভাবছি তুই তন্নির সাথে কথা বলবি না তাই তোর উপর একট রাগ হলো। 

তন্নিঃ আচ্ছা তোরা তাহলে আগে থেকেই প্ল্যান করে রাখছিলি। 

সানিঃ আরে না, ওর রাগ ভাঙ্গতেছি। 

তন্নিঃ আচ্ছা শোন, উনারা চলে যাক। আমরা চল কোথাও গিয়ে বসি, একটু আড্ডা দিই, ফয়সাল ভাইয়াও থাকবে। 

আয়মানঃ ওকে চল। 

তারপর সবাই মিলে একটা কফিশপে গেলাম। সাদিয়া জিজ্ঞেস করলো....

সাদিয়াঃ এবার বল এতো কিছু কি করে করলি?

তন্নিঃ...... (প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সব বললো)

সানিঃ তোর মাথায় বুদ্ধি আছে মাইরি। জুয়েল! দোস্ত বলছিলাম কি, তুই তো সাদিয়া আর আয়মানকে সিস্টেম করে দিলি। এখন ফারিয়াকেও করে দিলি।এবার আমার ব্যাপারে একটু চিন্তা কর। 

আয়মানঃ চুপ কর শালা, তোর কপালে প্রেম নাই। 

ফয়সালঃ তন্নি, জুয়েল তোমাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ। আর তোমাদের কেও ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে সব কিছু করার জন্য।

আমিঃ আরে এখানে ধন্যবাদ এর কি আছে। আপনারা হলেও তো এই কাজটাই করতেন। 

তন্নিঃ আচ্ছা চল উঠি। অনেক দেরি হয়ে গেছে। 

তারপর বাসায় চলে গেলাম, রাতের বেলা তন্নি কল দিলো, অনেকক্ষণ কথা বললাম, তারপর কালকে সকালে একা দেখা করার জন্য বললো। 

সকালে ঘুম থেকে উঠে ওর দেওয়া ঠিকানায় চলে গেলাম। 
তারপরেই....

চলবে...



Writer:- এম এইচ জুয়েল 



NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner