> রাতে ঘুম আসে না, জেনে নিন সমাধান - Health - ঘুম না হওয়ার কারণ - ঘুমের সমস্যা - ঘুমের সমস্যার সমাধান - যা করলে রাতে ঘুম হবে
-->

রাতে ঘুম আসে না, জেনে নিন সমাধান - Health - ঘুম না হওয়ার কারণ - ঘুমের সমস্যা - ঘুমের সমস্যার সমাধান - যা করলে রাতে ঘুম হবে

রাতে ভালো ঘুম হয় না, ঘুম আসতে দেরি হয়. বিছানায় এপাশ ওপাশ করি. এর সমাধান কি!? আমরা অনেকেই নিদ্রা হীনতায় ভুগি. এর ফলে দিনের বেলায় হাই তুলতে থাকি, কাজে মনোযোগ দিতে কস্ট হয়
সারাদিন মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে. আমি এই ভিডিও তে নিদ্রা হীনের চিকিৎসা নিয়ে কথা বলবো. উল্লেখ করবো ১৩ টি ভিন্ন ভিন্ন কারণ ও তার চিকিৎসা. এগুলোর কোনোটাই আমার মন গড়া কথা না.
সব গুলোই গবেষণা থেকে তুলে ধরা. কোন চিকিৎসা টি আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে সেটা শেষে বলবো, তাতে বুঝতে সুবিধা হবে. 

(১) গবেষণায় দেখা গেছে ঘুমাতে গেলে অনেকের নানা দুশ্চিন্তা মাথায় আসতে থাকে ফলে ঘুম আসে না. এই সমস্যা সমাধান এর জন্য একটা পদ্ধতি আছে. যাকে বলে ওয়ারী টাইম. 
বাংলায় এর অর্থ দাঁড়ায় দুশ্চিন্তার সময়. অর্থাৎ দুশ্চিন্তা গুলো নিয়ে ভাবার জন্য দিনের বেলাতেই একটা আলাদা সময় রাখা. ধরেন আপনি ঠিক করলেন প্রতিদিন বিকেল ৫ টা থেকে সাড়ে ৫ টা আপনার দুশ্চিন্তার সময়
এই সময়টাতে আপনি আপনার দুশ্চিন্তা গুলো নিয়ে ভাববেন. তাহলে এগুলোর দিনেই সমাধান হয়ে গেল. ঘুমাতে গেলে আর আপনাকে বিরক্ত করবে না. কিন্তু ঘুমাতে গেলে যদি আপনার নতুন 
দুশ্চিন্তা আসে নিজেকে বলবেন এটা আগামী কালের জন্য. এখন এটা নিয়ে ভাববার প্রয়োজন নেই.

(২) কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে. চা, কফি, কোমল পানীয় এর এনার্জি ড্রিঙ্কস. কারণ কি! কারণ এর মধ্যে আছে ক্যাফেইন. ক্যাফেইন কি করে?! ঘুম আসতে দেয় না. ঘুম আসলেও গভীর হতে দেয় না
তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে এগুলো না খাওয়াই ভালো. বিশেষ করে ঘুমের ৬ ঘন্টা আগে এগুলো খাওয়া যাবে না. তাহলে কি খাবেন সেটা নিয়েই পরের পয়েন্ট.

(৩) ঘুমের কাছাকাছি সময়ে গরম দুধ পান করতে পারেন. কারণ দুধে আছে ট্রিপটোফেম. গবেষণায় দেখা গেছে এটা ভালো এবং লম্বা সময় ধরে ঘুম হতে সাহায্য করে.

 (৪) নিদ্রা হীনতার রোগীদের চিকিৎসায় আরেকটি চিকিৎসা শেখানো হয় যেটা আপনার উপকারে আসতে পারে. তা হলো ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ ঘন্টা রিলাক্স করা. এটাকে বলে ওয়াইন ডাউন টাইম
দিনের ব্যস্ততা ও দুশ্চিন্তা গুলো থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে আনতে এই সময়টা ব্যবহার করতে বলা. এই ১ ঘন্টায় যেসব কাজ করার পরামর্শ দেয়া হয় সেগুলো হলো 
বই পড়া, ডায়েরি লেখা, গরম পানি দিয়ে গোসল করা. মনে প্রশান্তি আনে এমন শ্রুতি মধুর কিছু শোনা. যেমন ধর্ম গ্রন্থ বা কবিতা আবৃত্তি, গান যেটা আপনার জন্য কার্যকর হয়যেসব কাজ করতে মানা করা 
হয় সেগুলো হলো ঘুমানোর আগে টিভি দেখা, কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা. কারণ এই যন্ত্র গুলোর স্ক্রিন এর যে উজ্জ্বল আলো তা মস্তিস্ক কে সজাগ করে তোলে. ফলে ঘুম আসতে দেরি হয়

(৫) যাদের বিছানায় শুয়ে থাকার পরেও ঘুম না আসার সমস্যা আছে  তাদের জন্য স্ত্রীমিলেস কন্ট্রোল নামক একটা চিকিৎসার পরামর্শ দেয়া হয়. উদ্দেশ্য হলো আপনার মস্তিস্ক যাতে সবার ঘর এবং বিছানা 
দেখলে ঘুমের কথা চিন্তা করে. সবার ঘরের সাথে যেনো অনিদ্রার কথা মাথায় না আসে. এই চিকিৎসার বেশ কয়েকটা নির্দেশনা আছে এর মধ্যে একটা হলো ঘুম না আসলে জোর করে বিছানায় শুয়ে না থাকা
যদি ১০ থেকে ২০ মিনিট ধরে বিছানায় শুয়ে থেকেও ঘুম না আসে তাহলে বিছানা থেকে উঠে পাশের রুমে যাবেন. রিলাক্স লাগে এমন কিছু কাজ করবেন. যতক্ষন ঘুম না আসে. তারপর ঘুম আসলেই কেবল
বিছানায় ফেরত যাবেন. পাশের রুমে কি কি করতে পারেন?! হালকা আলোতে বই পড়তে পারেন, গান শুনতে পারেন. তবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না. কারণ ফোন এর উজ্জ্বল আলো ঘুম আসতে বাধা 
দিতে পারে.

(৬) স্টিমুলেস কন্ট্রোল চিকিৎসা পরামর্শের আরেকটা নির্দেশনা হলো বিছানা শুধু ঘুমের জন্য ব্যবহার করা. বিছানায় অন্য কোনো কাজ না করা.আমরা অনেকেই বিছানায় খাবার খাই, পড়াশোনা করি, 
মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করি, বাসায় থাকলে দিনের অনেকটা সময় বিছানায় কাটাই. ঘুমের সমস্যা কমাতে চাইলে এগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে. 

(7) অনেক নিদ্রা হীনতার রুগী বারবার সময় দেখে দুশ্চিন্তা গ্রস্থ হয়ে পরে. এটা তাদের ঘুমের ওপর খারাপ একটা প্রভাব ফেলে. তাই তাদের ঘড়ির দিকে না তাকানো পরামর্শ দেয়া হয়.
কিকি উপায় এটি করা যেতে পারে?! ঘড়ির মুখ উল্টো দিকে ঘুরিয়ে রাখা, দেয়াল ঘড়ি থাকলে সেটাকে নামিয়ে নেয়া আর ফোন টা দূরে রেখে ঘুমানো. আবার এসব ব্যবস্থা নিতে গিয়ে ঘড়ি 
একদম লুকিয়ে রাখবেন না. সকালে সময় মতো জেগে উঠতে হবে. ঘড়ি দূরে আছে কিন্তু সকাল বেলা অ্যালার্ম বাজবে আর আপনি শুনতে পারবেন এমন ব্যবস্থা করে ঘুমাবেন.
আর বাসায় যদি ঘুম থেকে ডাকার মতো কেউ থাকে তাহলে তো আর অ্যালার্ম নিয়ে এত চিন্তা করার প্রয়োজন নেই. (৮) গবেষণায় দেখা গেছে অনেকের মনে ঘুম নিয়ে এমন কিছু ধারণা 
থাকে যা দুশ্চিন্তার উদ্রেক করে এবং ভালো ঘুম হতে ব্যাঘাত ঘটায়. কি সেই চিন্তাগুলো? যেমন প্রতিদিন আমাকে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে যেখানে আপনার ৮ ঘন্টা ঘুমানো সম্ভব নয়.
আবার ঘুমাতে গেছেন ঘুম আসছে না এর মধ্যে দুশ্চিন্তা শুরু করলেন আজ রাতে ভালো ঘুম না হলে  কালকে কাজ খারাপ করবো বা পরীক্ষায় ফেল করব. আবার মাঝ রাতে চিন্তা শুরু 
করলেন নিদ্রা হীনতা কোনোদিন সারে না আপনার এটা সারাজীবন থাকবে. আপনার মাথায় যদি এমন চিন্তা আসে তাহলে সেটাকে ধরে ফেলবেন এবং ঠাণ্ডা মাথায় নিজেকে বোঝাবেন এই চিন্তা গুলোর কোনো
ভিত্তি আছে কিনা. 

(৯) ঘুমানোর আগে অনেক বেশি খাবার খেলে কারো কারো ঘুম ভালো নাও হতে. যাদের রাতে ঘুমানোর সমস্যা আছে তাদের জন্য ঘুমানোর ৩-৪ ঘন্টা আগেই রাতের খাবার সেরে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়.

(১০) ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে. কারণ নিকোটিন একটি উত্তেজক পদার্থ. যারা ধূমপান করে তারা সহজে ঘুমাতে পড়ে না. ঘন ঘন ঘুম থেকে জেগে ওঠা এবং প্রায় তাদের ঘুম ব্যাহত হয়. একদম সম্পূর্ণ ভাবে 
পরিহার করা সম্ভব না হলে অন্তত পক্ষে ঘুমানোর ১ ঘন্টা আগে থেকে ধুম পান থেকে বিরত থাকবেন.

(১১) আরেকটা গুরুত্ব পূর্ণ নির্দেশনা হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা. শরীর সচল রাখলে রাতে ঘুম ভালো হয়. তবে ঘুমানোর ৩ ঘন্টা আগে বিয়াম পরিহার করতে হবে

(১২) শরীরকে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে অভভস্থ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় ঘুমানো আর ঘুম থেকে জেগে ওঠা প্রয়োজন. যেমন আপনি যদি ঠিক করেন প্রতিদিন ১১ টার সময় ঘুমাতে যাবেন আর সকল 
৭ টায় ঘুম থেকে উঠবেন. তাহলে এইযে রাত ১১ টা থেকে সকল ৭ টা পর্যন্ত সময়ে আপনার শরীর একটা ভালো ঘুম দিতে অভভস্থ হয়ে. জেগে ওঠার সময়টা প্রতিদিন একই রাখার চেষ্টা করবেন
শুক্রবারে বা কোনো ছুটির দিনে আমরা একটু দেরি করে উঠতে পছন্দ করি. এটা পরিহার করতে হবে.

(১৩) নিদ্রাহীনতার চিকিৎসায় দিনের বেলায় ঘুমাতে নিরুৎসাহিত করা হয়. আর দিনের বেলায় যদি ঘুমাতেই হয় তাহলে দুপুরের আগে আগে ঘুমিয়ে নেবেন তাও ৪০ মিনিট এর বেশি নয়.


এখন বলছি কোন চিকিৎসা টা আপনার জন্য প্রয়োজন. এতোক্ষনে তো নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন নিদ্রা হীনতা অন্যান্য রোগ থেকে একটু ভিন্ন. যেমন টাইফয়েট বা করোনা ভাইরাস হলে 
আমরা নিশ্চিত জানি যে শরীরে একটা জীবাণু প্রবেশ করেছে. নিদ্রা হীনতার কারণে এমন কোনো নিশ্চিত কারণ নাও থাকতে পারে. একেক জনের জন্য একেকটা হতে পারে
আমি যে ১৩ টি কারণ ও তার চিকিৎসা বলেছি তার সব গুলো আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে না. যেটা যেটা আপনার জন্য প্রযোজ্য শুধু সেটা আপনি পালন করবেন. যদি এসব ব্যবস্থা নিয়েও 
ঘুমের সমস্যার সমাধান না হয়, ঘুমের অভাব নিয়মিত সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়. আপনার দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়, ঘুম নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা হতে থাকে তবে ডাক্তার এর সহায়তা নেবেন. 
নিজে নিজে ঘুমের ওষুধ খাবেন না.






NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner