দাদী বলতো,
দাদু ভাই, যদি কখনো ভূত দেখো তাহলে কাপড় চোপর খুলে ফেলবে, ন্যাংটো হলে ভূত চলে যায়!
আমিও মন দিয়ে শুনতাম,
যেহেতু ছোটো বেলায় শেখানো কথা, তাই মনে গেথে গিয়েছিলো।
তো একদিন, রাত করে বাসায় ফিরছিলাম।
তখন রাত ১২,৩০ এর মত বাজে,
গ্রামে রাত ১২,৩০ মানে অনেক রাত।
বাসায় ফেরার পথে একটা গলি পরে,
বাসা থেকে একটু দুরেই গলিটা, গলিটা একটু লম্বা। তো পার হওয়ার জন্যে ঢুকেছি, আমি সোজা সামনে দিয়ে বের হয়ে যাবো।
একটু হাটলে
সামনে থেকে ডানদিকে আরেকটা গলি চলে গেছে, কিন্তু আমি যাবো সোজা।
গলিতে ঢুকেছি মাত্র ৩০ সেকেন্ড হয়েছে বোধয়, বেশ খানিক টা পার হয়ে এসেছি। হটাত করে লোড শেডিং, আশেপাশের সব আলো অফ।
ভয়ে গেলো আত্বা উরে, ধুমধাম করে শার্টের পকেটে হাত দিলাম ফোনের টর্চ জালানোর জন্যে, ফোন হাতে নিয়ে দেখি চার্জ নাই, অফ হয়ে গেছে।
কি আর করার। অন্ধকারেই হাতরে হাতরে এগোচ্ছি।
একটু যাওয়ার পরে ডানদিকে চলে যাওয়া গলি পড়লো, ওই গলি থেকে একদম সোজা অনেক খানি দুরে একটা আলো দেখা যাচ্ছিলো, আলো টা কিসের দেখার জন্যে তাকাতেই,
দেখি পাশের দেওয়ালের উপর মানুষের আকৃতির কি যেন ঝুলতেছে।
মনে হলো কেও যেন আমাকে বুকের ভেতর চাপ দিয়ে ধরলো, এত টা ভয় পেলাম।
আমি নিশ্চিত ওটা অশরীরী কিছু। হটাত করে দাদীর শেখানো কথা মনে পড়লো।
যেহেতু গ্রামে ছিলাম, তাই লুঙ্গি পরেই ছিলাম, তাই খুব একটা অসুবিধা হলো না, এক টানে লুঙ্গি খোলা শেষ, এদিকে ভয়ে আমি চোখ খুলে তাকাতেও পারতেছিলাম না! লুঙ্গি খুলে নিচে ফেলে চোখ বন্ধ করে আল্লাহ আল্লাহ করতেছিলাম,
তার ভেতেরেই হটাত করে কারেন্ট চলে আসলো।
চোখ বন্ধ থাকায় তখনো বুঝি নি, কিন্তু প্রায় সাথে সাথেই বুঝলাম যে কারেন্ট এসেছে। তাই সাহস করে চোখ টা খুলে দেখি ওখানে যা ছিলো তা নেই।
আমি যেন হাফ ছেরে বাচঁলাম। তারপর লুঙ্গি টা পরে নিলাম। আর দুরে তাকিয়ে দেখলাম৷ কেও একজন দৌরে চলে যাচ্ছে।
এমনি তেই ভয় পেয়েছি। তাই অত কিছু না ভেবে হন্ত দন্ত করে বাসায় এসে শুয়ে পরলাম।
******
পরের দিন সন্ধ্যায়, বাসা থেকে বেরিয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্যে বেরোবো, মা বলতেছে, রাত করে তো ঘোরা ফেরা করোই, একটু সাবধানে যেও।
আমি বললাম কেন?
মা বললো কাল রাতে ওই পাড়ার কালু নাকি আমাদের ওই গলিতে বসে ছিলো, ও নাকি ন্যাংটা ভুত দেখেছে।
আমি অবাক হয়ে বললাম কালু?
মা বললো
হ্যা, বেচারা খুব ভয় পেয়েছে, কাল রাতে নাকি ওকে পানি ঢেলেছে।
( সমাপ্ত )
লেখা: সিয়াম হোসেন