Leave a message
> হ্যালো
-->

হ্যালো


ফোনের ডাকে ঘুম ভেঙেছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ১১ টা বেজে ২৩ মিনিট। এই রাতে কে কল দিল? মা নাকি বাবা?

না তারা তো নয়। কারন সন্ধ্যা রাতেই মায়ের সাথে ফোনে কথা হয়েছে। কোন সমস্যা থাকলে তখনি জানতে পারতাম। তাহলে কে?
ফোনের কাছে যেতে না যেতেই ফোনকল কেটে গেল। গিয়ে দেখি অচেনা নম্বর। ব্যাক করবো কিনা ভাবছি- ওই মুহূর্তে আবার কল। সাথে সাথে রিসিভ করলাম....ওপাশ থেকে পুরুষের কন্ঠে শোনা গেল..
- 'হ্যালো, হ্যালো আমি নূর হাসান। আপনার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। অনেক বড় বিপদে পড়েছি। ভাই দরজাটা খুলুন,দয়া করুন............।'
খট করে লাইন কেটে গেল। মনে হল লোকটার ফোনের চার্জ বা ব্যালেন্স শেষ। কিন্তু,নূর হাসান নামের কেউতো আমার জানাশোনার পরিধির মধ্যে নেই।এই মুহূর্তে মাথায় কিছু প্রশ্ন চক্রাকারে ঘুরছে...
প্রশ্ন একঃ এতো রাতে নূর নামের লোকটা আমার বাসার সামনে কেন?
প্রশ্ন দুইঃ উনি কি আমায় চেনেন?
প্রশ্ন তিনঃ লোকটা চোর বা ডাকাত নয় তো?
প্রশ্ন চারঃ লোকটা আমার ফোন নম্বর পেল কোথা থেকে?
কিছু সময় নিয়ে ভাবতে হবে। যাইহোক, প্রথম ও দ্বিতীয় নম্বর প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আগে দরজা খুলতে হবে।অন্য দুটোর উত্তর পরিষ্কার হয়েছে।
প্রথমত, লোকটা শুরুতেই তার নাম বলেছে, সেহেতু তাকে আপাতত চোর বা ডাকাত মনে হচ্ছে না। সে চোর বা ডাকাত হলে, আগে অন্তত আমার বাসার চারপাশে চারবার চক্কর লাগাতো-কোথাও কোন ফাঁক ফোঁকর আছে কিনা! তাছাড়া আজ প্রচন্ড গরম পরেছে তাই মাথার কাছের জানালা খোলা। লোড শেডিং এর কারণে ফ্যানের তিন কর্মিকেও সক্রিয় করতে পারছিলাম না। সে জানালা দিয়ে অনায়াসে আমার রুমে ঢুকে পড়তে পারতো।
দ্বিতীয়ত, অনেক দিন ধরেই ভাবছি যে, বাড়িটা ছেড়ে দেব।তাই বাড়ির সামনে একটা ব্যানার টানিয়ে রেখেছিলাম আর সেখানে লিখে রেখেছিলাম..
" বাড়ি ভাড়া দেওয়া হবে। আগ্রহীরা এই নম্বরে যোগাযোগ করুন।
মোবাঃ 01818.............'
তার মানে লোকটা ওইখান থেকেই নম্বর পেয়েছে। যাইহোক এখন এতো কিছু ভাবলে চলবে না।
আপাতত লোকটা থেকে আগাম কোন বিপদের সংকেত পাচ্ছি না। তাছাড়া ঘরে রিভালভার জাতীয় একটা যন্ত্র আছে,বিপদের আঁচ পেলে ব্যবহার করা যাবে। ড্রইংরুমের আলো জ্বালিয়ে দরজা খুলে দিলাম।
দেখলাম... একজন মধ্য বয়সী লোক তাড়াহুড়ো করে ঘরে ঢুকলো। গায়ের রঙ জিল উঠার মত কালো,স্বাস্থ্য শরীর ভালো। হাতে বাদামী রঙের একটা ব্যাগ,দেখে মনে হচ্ছে ভিতরে ভারী কিছু আছে। আমি লোকটাকে বসতে বললাম। লোকটা বসলো না,বললো...
- " বাবু আমার সাথে আমার মেয়েও আছে। তাকে কি ভিতরে আসতে বলবো?"
আমি কিছুটা অবাক হয়ে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালাম। দেখলাম একজন ১৭ কি ১৮বছরের মেয়ে ঘরে প্রবেশ করলো। বুঝতে পারলাম লোকটা ইতিমধ্যেই আমায় একটা মিথ্যে বলেছে।এই মেয়ে যে এনার তা প্রমাণ করা লোকটার কাছে কষ্টকর ব্যাপার। মেয়েটিকে দেখেই আমি হকচকিয়ে গেলাম। তার ক্ষেত্রে সব গুলো ভালো ভালো বিশেষণ অনায়াসে প্রয়োগ করা যায় কিন্তু লোকটির ক্ষেত্রে তার উল্টোটা। মেয়েটি দেখতে অনেকটা কল্পনার পরীদের মতোই,তবে মুখটা হাসিখুশির পরিবর্তে বিষণ্ণ। হয়তো হাসিখুশিই ছিল আমায় দেখে বিষণ্ণ হয়েছে।
আমি তাদের দুইজনকে বসতে বলে তাদের জন্য চা-নাস্তার ব্যবস্থা করলাম। চা খেতে খেতে রহস্যের বেড়া উন্মোচন করবো ভাবছি,এমন সময়ে টের পেলাম বাইরের মেইনরোড দিয়ে শা শা বেগে হুইসেল বাজিয়ে দুটো পুলিশের গাড়ি চলে গেল। সাথে সাথে দুটো বিপরীত বিষয় দৃষ্টিগোচর হল।
প্রথমত, লোকটির মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল আর দ্বিতীয়ত মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার চোখ চকচক করছে,মনে হচ্ছে হাজারো কথা ভিড় করে আছে তার নিষ্পাপ চোখের চাহনিতে।
যাইহোক,গাড়ি দুটো চলে গেলে লোকটির সাথে মিনিট পনেরোর মত কথা বললাম এবং মেয়েটির কাছেও কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু লাভ হয় নি,সে কোন কথাই বলে নি। শুধু আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। লোকটার সাথে কথোপকথনের সারমর্ম অনেকটা এইরকম...
' লোকটার নাম নূর হাসান। মেয়েটি তার কন্যা,নাম ইরানী। তাদের দেশের বাড়ি বাগেরহাট। মেয়েটি এবার ইন্টারমিডিয়েট পরিক্ষা দিয়েছে,এখন সে ঢাকার কোন ভালো কলেজে ভর্তি হতে চায়। ইরানীকে নিয়ে লোকটি (তার বাবা) আজই প্রথম ঢাকায় আসে এবং বাসে তাদের ব্যাগ চুরি যায়, সাথে চুরি যায় তাদের গন্তব্যের ঠিকানা এবং ফোন নম্বর ।
তারা বাস থেকে নেমে কোন হোটেলের খোঁজে যখন রাস্তায় বের হয়, তখন ঘটে আরেক বিপত্তি। একদল ছিনতাইকারী তাদের পিছু নেয় এবং তারা( লোকটি ও তার মেয়ে) কোনক্রমে আমার বাসায় সামনে এসে পড়ে। তারপর বাসায় সামনে ব্যানারে লেখা নম্বরে ফোন করে এবং আমায় সাথে ফোনে কথা বলে।ঘটনাচক্রে বর্তমানে তারা আমার ঘরে।"
...

আমি আমার বিছানায় শুয়ে আছি আর একজনের ফোনের অপেক্ষা করছি। ' তার ' সাথে চার দিন কথা হয় না। যদিওবা মাঝে মাঝেই গায়েব হয়ে যাওয়া তার পুরোনো অভ্যাস।
লোকটা আর মেয়েটিকে গেষ্ট রুমের দুইটা ভিন্ন ঘরে আজকের রাত থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লোকটির ঘটনা বর্ণনা আর মেয়েটির করুন চাহনির মধ্যে মিল খোঁজার চেষ্টা করেও বারবার বিফল হচ্ছি,বারবার মনে হয়েছে কোথাও কোন একটা প্যাঁচ আছে! কিন্তু কোথায়?...ভাবছি আর ভাবছি। হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ানোর শব্দ পেলাম। আমি বললাম..
-"কে! বাইরে কে?"
-"আমি। দরজাটা খুলুন প্লিজ। আপনার সাথে আমার জরুরী কিছু কথা আছে।"
আমি দরজা খুলতেই দেখলাম ইরানী নামের মেয়েটা আমার সামনে দাঁড়িয়ে। তার চোখে মুখে ভয়,চেহারায় খারাপ লাগার ছাপ। তাকে ভিতরে এসে বসতে বললাম। মেয়েটি বসলো না। সে আমায় প্রশ্ন করলো...
- "কেমন আছেন?"
প্রশ্নটা এই পরিবেশে মোটেই মানানসই নয়। কিছুটা রহস্যের গন্ধ বাতাসে ভাসছে কিন্তু নাকে আসছে না-হয়তো এটা মেয়েটার সুরালো কন্ঠের গুণে। ভদ্রতার খাতিরে তাকে বললাম...
- "হ্যা,ভালো আছি! আপনি?"
- "জ্বী ভালোই। আসলে সারা দিনের জার্নির পরে এখন ঘুম আসছে না। তাছাড়া একা একা ভালোও লাগছে না। ব্যালকনিতে হাটতে বেড়িয়েছিলাম, আপনার ঘরে আলো দেখে ভাবলাম আপনার সাথে একটু গল্প করি। আপনি কিছু মনে করেন নি তো?"
মেয়েটির কথা বলার ভঙ্গিমা অনেকটা প্রধান শিক্ষকের কাছে ছুটি চেয়ে দরখাস্ত করার মত ছিল। মেয়েদের সুর যে এতো মিষ্টি আর আকর্ষণ ধর্মী হতে পারে- এই মেয়ের কথা না শুনলে হয়তো জানাই হতো না। আমি মুখে হাসি এনে বললাম..
-"না, না। কিছু মনে করি নি।"
- "আমি কি আপনাকে কিছু বলতে পারি?"
-"হ্যা! বলুন।"
- "আপনি কি কেউকে ভালোবাসেন?"
- "দুঃখিত, কিছু মনে করবেন না। এটা আমার পারসোনাল ব্যাপার। আপনার সাথে এসব এই সব ব্যাপারে কথা বলতে আমি ইচ্ছুক নই। কিন্তু আপনি হঠাৎ এ ধরনের প্রশ্ন করছেন কেন?"
মেয়েটা আমার কাছ থেকে মনে হয় এই ধরনের উত্তর আশা করে নি। আমার উত্তরে সে কিছুটা দমে গিয়েছে। সে নিচু গলায় বলল...
-"এমনিই বললাম। সমস্যা থাকলে বলার দরকার নেই। অন্য বিষয়ে কথা বলা যাক...."
-"না..না। সমস্যা নেই। আসলে আমার জীবনে স্বীকৃত কেউ নেই।"
- "স্বীকৃত কেউ" ব্যাপারটা বুঝলাম না।
- 'অর্পা' নামের একটা মেয়ের সাথে আমার অনেক দিনের পরিচয়। ফেসবুকেই তার সাথে আমার আলাপ। প্রথমে বন্ধুত্ব, বন্ধুত্ব থেকে ভালোলাগা আর ভালোলাগা থেকেই ভালোবাসা। অবশ্য ভালোবাসার রাস্তায় আমিই আগে 'পথিকবেশে' গিয়েছি। মেয়েটা থেকে কোন সাড়া এখনো পাই নি।
একটা মজার ব্যাপার কি জানেন? আমি এখনো তাকে দেখি নি। শুধু মেসেজ আর ফোনে কথা বলতাম। অবশ্যি আমি তাকে চোখে দেখার আবদার করেছিলাম।কিন্তু তার উত্তর ছিল.." সময় হলে আমি এসেই তোমার কাছে ধরা দেব।" মেয়েটার চিন্তাধারা তার কথা বলার ধরণ আমায় মুগ্ধ করেছিল। তাই তাকে ভালোবেসে ফেলেছি।"
-"তার সাথে কি আপনার প্রতি দিন যোগাযোগ হয়?"
-"না। আমাদের দেশে যেমন কিছুক্ষণ পর পর লোড শেডিং হয়,সেও মাঝে মাঝে গায়েব হয়ে যায়। তবে তা কিছুক্ষণের জন্য নয়,বরং কিছু দিনের জন্য। একটা মজার ব্যাপার শোনেন..এই নিয়ে চার দিন তার সাথে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।"
-"অনেক ভালোবাসেন তাকে?"
-"হ্যা।"
-"ও..ভালো। আপনার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো। আপনাকে এই রাতে অনেক ডিস্টার্ব করলাম! দয়া করে কিছু মনে করবেন না। যাই দেখি ঘুম বাবাজি আসে নাকি? ভালো থাকবেন...."
কথাগুলো এক নিশ্বাসে শেষ করে মেয়েটা আমার ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। তবে কথায় আছে," চুলার আগুন নিভে যাওয়ার পরেও অংগার( কয়লা) জ্বলে।" তার বলা কথাগুলো কানে বাজছিল তখনো। আমি রুমের আলো নিভিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করার আগেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
....

ঘুম থেকে উঠেই নিজের মুখ ফোনের স্কিনে দেখার অভ্যাস আমার । সাধারণত মাথার ডান পাশে রাখি ফোনটাকে। আজ সারা বিছানা খুঁজেও ফোনের নাগাল পেলাম না। ঘরের আলো জ্বালিয়ে আমার চোক্ষু চড়কগাছ।
আলমারির দরজা খোলা,ঘরে টিভি উধাও, টেবিলের ড্রয়ার ভাঙা, মেঝেতে আমার জামাকাপড় ছড়ানো ছিটানো। ঘর থেকে বেরিয়ে দ্রুত গেষ্ট রুমে গেলাম। সেখানেও এক অবস্থা। সব কিছু এলোমেলো, ঘরের মূল্যবান সব জিনিস গায়েব। কিন্তু, ইরানি আর তার বাবা কোথায়?
সারা ঘরে খুঁজলাম তাদের,কিন্তু একটা চিরকুটের মত ভাজ করা কাগজ আর একটা ছোট কাচের বোতল ছাড়া নতুন কিছুই পেলাম না। বোতলটার গায়ে যে লেবেল লাগানো আছে, তাতে বুঝতে বাকি রইলো না যে -ওতে ক্লোরোফর্ম ( চেতনা নাশক) ছিল। তার মানে কি মেয়েটা আর তার বাবা.....!
না...! সব কিছু কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছি, মাথার নিউরনের কোষগুলো বর্তমান পরিস্থিতি নিতে পারছে না- যেকোনো সময় মাথা ঘুরে মেঝেতে পড়ে যেতে পারি।
কোনমতে নিজেকে সামলে মেঝেতে পরে থাকা একটা চেয়ার টেনে বসলাম। কাগজটা টেবিলের উপর রাখা, হয়তো এতে কিছু প্রশ্নের উত্তর আছে। শিরোনামহীন কাগজটা হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম।
"আমরা সাধারণত কাজ শেষে- যারা আমাদের দেখে এবং আশ্রয় দেয় তাদের প্রত্যেককে মেরে ফেলি। কারণ এতে পরবর্তীতে ঝামেলার ভয় থাকে না। তোমাকেও খুন করার পরিকল্পনা সাজিয়েছিল ওরা। কিন্তু আমার কথায় তোমার শারীরিক কোন ক্ষতি করে নি। আমার কথা কিভাবেই বা ফেলবে? আমি যে ওদের সাথে দীর্ঘ নয় বছর ধরে কাজ করছি,আমার কথার একটা দাম আছে তো!
আর শোনো,নূর হাসান নামের লোকটা আমার বাবা না,আমার চাচা। এই লোকটা আমার চোখে পৃথিবীর সবথেকে জঘন্য লোক। আমি অল্প বয়সে বাবা -মা কে হারাই। তারপর থেকেই ওনার কাছে মানুষ। মানুষ বলা ভুল হবে ;বলতে পারো তিনি আমার মধ্যে ভাল মানুষের কোন গুণই অবশিষ্ট রাখেন নি। নিজের আর নিজের গ্যাং এর খারাপ দিকগুলোই আমার মধ্যে খুব যত্ন করে তিলে তিলে ঢুকিয়ে দিয়েছেন।
তোমার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে,আমরা প্রত্যেকবার লুটপাট শেষে আমাদের শিকারকে মেরে ফেললেও, আমি তোমাকে মারতে বাধা দিয়েছি কেন?..
ভালোবাসার মানুষকে কি চোখের সামনে মরতে দেখা যায়? না.. যায় না। এটা যে তোমার বাড়ি সে কথা আগে জানতাম না। আমাদের কাজের ধারা হল- আমরা কোন বিশেষ পরিকল্পনা ছাড়াই অসহায় বেশে কোন বাড়িতে রাতে আশ্রয়ের প্রার্থনা করি। গভীর রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে, বাইরে ওত পেতে থাকা গ্যাং এর বাকি লোকদের ভিতরে ডেকে এনে শুরু হয় আমাদের তাণ্ডবলীলা।
আমায় চিনেছো তো?.... হ্যা,আমিই তোমার অর্পা। যাকে তুমি ভালোবাসো। জানো,আমি ওদের কাছে অনেক মিনতি করেছিলাম যেন ওরা আমায় এই অন্ধকার জগৎ থেকে মুক্তি দেয়। আমি বলেছিলাম,আমার কিছুই লাগবে না। ভেবেছিলাম আমি তোমার কাছে থেকে যাব, ভালোবাসার মানুষ হিসাবে না পারি -অন্তত চাকরানীর বেশে। কিন্তু না,ওরা আমায় মুক্তি দেয় নি।
জানি না আর কবে দেখা হবে। হয়তো এই জীবনে আর হবে না। আমায় প্লিজ ভুল বুঝো না। এই অন্ধকার জগতে প্রথম আসি পেটের দায়ে আর এখন থাকছি সম্পূর্ণ বাধ্য হয়ে। তুমি সবসময় ভালো থেকো আর আমাকে ভুলে যেও।
ক্ষমাপ্রার্থী
অর্পা"
...

চিঠিটা শেষ করে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছি। মাথার ব্যাথাটা বেড়েছে। আকাশে মেঘ জমেছে,যেকোনো মুহূর্তে বৃষ্টি শুরু হবে। এই মাসে এটাই মনে হয় প্রথম বৃষ্টি। সকালে যে পাখি গুলো খাবারের খোঁজে বেড়িয়েছিল,তাদের আবার নিজ ঘরমুখো হতে দেখা গেল। বৃষ্টি শেষ হলে এরা আবার খাবারের খোঁজে বের হবে। এদের কোন তাড়া নেই,এরা সব প্রকার বন্ধন থেকে মুক্ত-শুধু খাওয়া ছাড়া। আচ্ছা মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে "মুক্তি " বা " অন্যের দাসত্ব থেকে মুক্তি" নামের কোন অধিকার লিপিবদ্ধ নেই?
থাকলে ভালোই হত। অন্তত 'অর্পারা' মুক্ত পাখির মত মুক্তির স্বাদ পেতো।
***

মুক্তি

লেখক:- অভ্রনীল অভি
 

Delivered by FeedBurner

a