"নাথিং চল তুই। "
আরফার নয়য়ের মুখে নাম্বারের কথাটা শুনে একটু অবাক লাগে নি। এসবের সাথে আরফা পরিচিত অনেক আগে থেকেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো রিজবির খরব সে কিভাবে জানলো?
এত কিছু লুকিয়ে রাখার পরও রিজবির এই সমস্যায় পড়তে হলো। ইফাত চলে যাওয়ার পর আরফা অনেক সাহসী হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আজ রিজবির যদি কিছু হয়ে যায়। এই ভয়টা শেষ করে দিচ্ছে আরফাকে।
এত কিছু লুকিয়ে রাখার পরও রিজবির এই সমস্যায় পড়তে হলো। ইফাত চলে যাওয়ার পর আরফা অনেক সাহসী হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আজ রিজবির যদি কিছু হয়ে যায়। এই ভয়টা শেষ করে দিচ্ছে আরফাকে।
মেইন গেটে নক নক। নয়ন এসেছে এভাবে দরজা খুললে দেখে রনি এসেছে। ওর চোখ মুখ দেখেই বুঝাচ্ছে নোংরা চাহনি৷
"ভাইয়া তুমি?"
"হুম, তোর ভাবি কোথায় যেন গেছে। বাসা একা তু...."
"একদম বাজে কথা বলবা না। আমি এখন একটা কাজে যাবো। "
"কি কাজ রে?"
"এমন একটা ঢং করছো কিছু জানো না?"
"সত্যিই জানিনা!"
"ভালো তাহলে "
নয়ন এসে*
"আরফা চল, আর দেরি করা যাবে না বের হই। তাড়াহুড়োর রাস্তা যেন ফুরায় না। কত সময় লেগে গেল। "
"চল যাই। দাড়া ভাইয়া্ে নিয়ে নেই৷ রিজবিকে নিয়ে কোনো রিস্ক নিতে চাচ্ছি না। "
"ভালো বলেছিস নিয়ে নেয়। "
"ভাইয়া চলো আমাদের সাথে৷ বাড়ির পাশে ঐ ব্যাজমেন্টে যাবো। "
"তুই ঐ ব্যাজমেন্ট সম্পর্কে কিভাবে জানিস আরফা?"
"অনেক কিছুই জানি। সারা দুনিয়াকে জানানো বাকি।"
"মানে!"
"চলো কথা পরে হবে"
তিনজন মিলে ব্যাজমেন্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো। মিঃ রহমান হোসেন (সাইকোলজিস্ট) তিনিও পুলিশ নিয়ে ব্যাজমেন্টের বাহিরে অপেক্ষা করছে৷
"স্যার আমার মনে হচ্ছে এই মুহুর্তে পুলিশ নিয়ে সরাসরি ব্যাজমেন্টে যাওয়াটা ঠিক হচ্ছে না। আপনারা বরং এখানে থাকুন৷ আমি একা যাই। আপনারা ফোনে কানেন্ট থাকুন। কোনো কিছু নরমাল না মনে হলে চলে আসবেন। নয়ন ব্যাজমেন্টের সব চিনে ভালো করে"
"ওকে, তুমি যাও। "
আরফা ভোঁ দৌড় দিয়ে ব্যাজমেন্টের গেটের দিকে এগিয়ে গেল৷ তালা খুলে ব্যাজমেন্টে ঢুকলো। ব্যাজমেন্টে বেশ কয়েকটা রুম আছে। ইফাতের জিনিস গুলো যেখানে রাখা সেই রুম টা ভালো করে দেখলো। কিন্তু নাহ কিছুই নেই। সময় নষ্ট না করে পাশে রুমের দিকে ছুটে গেল। সেই রুমে একটা ইয়া বড় আলমারি আছে৷ যেখানে সব মিশরীর বইপত্র দিয়ে ভরা৷ রহস্যের ঘেরা সেই মানুষটা নিঃসন্দেহ বই পোকা। মাঝে মাঝে অবশ্য এখানে এসে আরফারও বই পড়া হয়৷ প্রথম যখন ডায়রির শেষ পাতায় এই ব্যাজমেন্টের দুই ছবি আঁকা দেখে! তখন থেকে ব্যাজমেন্টের প্রতি আর্কষণ বেড়ে যায় আরফার। ছবি দুইটার একটায় আঁকা ছিলো এই আলমারিটা আর একটায় ব্যাজমেন্টের বাহিরে রাখা একটা ভ্যান গাড়ি। ভ্যান গাড়ির রহস্য আছে একটা।
ভাইয়া যখন ঢাকায় আসে তখন এই বাড়িটা কিনে এক দারোয়ানের থেকে। এই বাড়ির মালিক যে ছিলো আার নিজস্ব কোনো ছেলে মেয়ে ছিলো না। বউও অন্য কারো সাথে চলে যায়৷ তারপরও সেও আমেরিকায় চলে যায় তখন থেকে এই বাড়ি দারোয়ানের নাম দিয়ে দেয়।
দারোয়ানও বাড়ি বিক্রি করে দেয় ভাইয়ার কাছে। তখনকার সময় নাকি এই ভ্যানে করে বাড়ির সবার জরুরি কাজ কমপ্লিট করা হতো।
নয়ন বলে উঠলো-
"পেলি কিছু আরফা?"
এবার টেনশন আরো বেড়ে গেল। এই ব্যাজমেন্টের সব জায়গায়ই আরফার চিনা। কোথায় গেল রিজবি?
সারা ব্যাজমেন্ট খুঁজলো রিজবি নেই।
"নয়ন রিজবি নাই এখানে!"
"ভালো করে দেখ। ও আছে।"
দে... বলতে বলতে ওর পা কিসের সাথে যেন আটকে গেল। নিচের দেকি তাকিয়ে দেখলো ওর পা একটা ছিটকুনির সাথে আটকে গেছে। ছিটকুনি টা খুলতে গেলে খুললো না।
"নয়ন পুলিশ নিয়ে আয়। জলদি"
নয়ন পুলিশকে ইশারা দিয়ে ভোঁ দৌড় দিলো ব্যাজমেন্টের দিকে।
"কিছু পাইলি?"
"হুম অফিসার দরজা ভাঙগেন। ফাস্ট প্লিজ"
অফিসার গান দিয়ে গুলি করে দরজা ভেঙে দিলো। বিশাল বড় একটা সিড়ি সামনে চলে আসলো। আরফা প্রথমে তারপর সবাই এক এক করে নামলো সেখানে।
সেখানের কাহিনীটা চোখে বিশ্বাস করার মতো ছিলো না। একটাই রুম চেয়ারে রিজবির মুখে টেপ মেরে বেধে রাখা। চার পাশে সব কঙ্কাল দিয়ে ভরা৷
আরফা দৌড়ে গিয়ে রিজবির মুখের টেপ খুলে দিলে -
রিজবি বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে বললো-
রিজবি বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে বললো-
"আর একটা ঘন্টা দেরি হলে আমিও এই কঙ্কাল হয়ে যেতাম। "
"তোমার কাছে কল আসলো আর ওমনি চলে আসতে হলো?"
" আমায় বলছে তুমি অসুস্থ। তাই নয় পাঁচ না ভেবে চলে আসছি"
"আচ্ছা চলো আগে বের হই। "
"তাকে ধরবা না?"
"তোমার মনে হয় সে আর এই শহরে আছে?"
"তোমার ভাইয়া।? "
"আছে আমাদের সাথেই। চলো তো বের হই"
সবাই বের হলো সেখান থেকে। পুলিশ সহ সবার চোখে মুখে প্রশ্ন কঙ্কাল কিসের?
নয়ন বললো-
"তুই এত কিছু দেখে নরমাক কিভাবে আছিস?"
"ব্যাজমেন্টের আলমারিতে মিশরীর বই গুলোর সাথে আমি আরো দশটা ডায়রি পেয়েছি৷ অদ্ভুত বিষয় হলো সব কয়টা ডায়রির একটা পৃষ্ঠা করে লিখা। বাকি গুলোতে কিছু নাই।"
"কি লিখা?"
" যেই কঙ্কাল গুলো দেখেছিস এগুলো সব প্যালাস্টিকের। শুধুই ভয় দেখানোর। আমার যা মনে হচ্ছে আমায় ব্যাজমেন্টের এই অংশটা জানাতে রিজবিকে কিডন্যাপ করার নাটক সাজানো হয়েছে।"
পুলিশ রনির মাথায় গান ঠেকিয়ে বললো-
"আপনি এসবে জড়িত?"
রনি বলার আগে আরফাই বললো-
"নাহ অফিসার, কাজ গুলো আমার ভাবির করা৷ রনি ভাইয়ার বউয়ের"
মিঃ রহমান হোসেন বললেন-
"ইয়েস অফিসার। সি ইজ রাইট। আমাদের কাছে প্রুভ আছে। "
অফিসার বললো-
"মিঃ রনি আপনার ওয়াইফকে কোথায় পাবো?"
"স্যার আমি এগুলো সম্পর্কিত কিছুই জানিনা মাত্র শুনছি সব। "
"হুম অফিসার ভাইয়া কিছু জানে না৷ ভাইয়া এই জন্য তোমায় বলেছিলাম সব হজম করতে পারবা কি না।"
"তুই এসব জানলি কেমন করে?"
"বাসায় চলো দেখাচ্ছি। "
পুকিশরা সহ সবাই আরফাদের বাসায় গেল।
"এই যে এই ডায়রিটা তোমার রুম থেকে পাই। আমি তো ভাবছিলাম তুমি মনে হয় খুন করছো। তারপর যখন এই
ডায়রির শেষ পাতায় পুক গুলো দেখে ব্যাজমেন্ট খুঁজে পাই। সেখানের আলমারির এক ডায়রিতে তোমার বউয়ের নাম লিখা দেখি৷ তারপর বুঝলাম কাজ গুলো ভাবির। আমার প্ল্যান ছিলো ভাবিকে ডাক্তার দেখিয়ে সুস্থ করে তুলবো। কেননা ভাবিও এসব কারো না কারো জন্য করছে। "
ডায়রির শেষ পাতায় পুক গুলো দেখে ব্যাজমেন্ট খুঁজে পাই। সেখানের আলমারির এক ডায়রিতে তোমার বউয়ের নাম লিখা দেখি৷ তারপর বুঝলাম কাজ গুলো ভাবির। আমার প্ল্যান ছিলো ভাবিকে ডাক্তার দেখিয়ে সুস্থ করে তুলবো। কেননা ভাবিও এসব কারো না কারো জন্য করছে। "
"কি বলচ্ছিস এগুলো তুই?"
"তোমার আমার সাথে নোংরামি করার জন্য আমি কিছু করি নি। কেননা ভাবিকে ডাক্তাররা নিয়ে গেলে তুমি আমার সাথে মোংরামি আরো বেশি করে করতে। আর আমার স্টাডিটা ইমপোরটেন্ট। সেটার জন্য চুপ ছিলাম।"
"আমায় মাফ করে দে বোন! বোন যে বোনই হয় সেটা আমি ভুলে গিয়েছিলাম রে। বোন শুধু একা মায়ের পেটের-ই হয় না। যদি আমি নিজেকে সামলে নিতাম তাহলে আজ আমার ইশা (ভাবি)ভালো হয়ে যেত।"
সাইকোলজিস্ট বললো-
"আমাদের খুব বেশি দেরি হয় নি। ইচ্ছে করলে এখনো সব ঠিক করতে পারবো। রিজবি তুমি মিসেস ইশাকে দেখছো যখন তোমায় কিডন্যাপ করা হয়?"
রিজবি বলা শুরু করলো-
"আরফার ভাবি আমায় কল করে জানায় আরফার পায়ে ব্যথা নাকি বেড়েছে। সাথে জ্বরও আসছে। রনি ভাইয়া বাসায় নেই মেডিসিন নিয়ে যেন তাড়াতাড়ি তাদের বাসায় যাই। সে আরফাকে একা রেখে বের হতে পারবে৷ না।
আমি বাড়ির পাশের দোকান থেকে মেডিসিন নিয়ে বাইক নিয়ে বের হয়ে গেলাম৷ মোবাইল যে নেই নি মনে নেই। আমি ওদের বাড়ির পিছনের রাস্তা দিয়ে আসছিলাম। কারন ওদের বাড়িতে আসার শটকাট রাস্তা ছিলো ওটা তাই আর কি৷ ব্যাজমেন্টের রুমের সামনে ভাবিকে দাড়ানো দেখলাম।
আমি বাইক সাইড করিয়ে বললাম!
আমি বাড়ির পাশের দোকান থেকে মেডিসিন নিয়ে বাইক নিয়ে বের হয়ে গেলাম৷ মোবাইল যে নেই নি মনে নেই। আমি ওদের বাড়ির পিছনের রাস্তা দিয়ে আসছিলাম। কারন ওদের বাড়িতে আসার শটকাট রাস্তা ছিলো ওটা তাই আর কি৷ ব্যাজমেন্টের রুমের সামনে ভাবিকে দাড়ানো দেখলাম।
আমি বাইক সাইড করিয়ে বললাম!
লেখা:- সানজিদা রিয়া