সেজুতি লজ্জাই দৌড়ে উপরে চলে গেলো।তারপর আমি চলে এলাম বাসার।ইসস ছুটির দিনে ছাত্রির বাড়ির সামনে কী একটা অবস্থা।
পরেরদিন এতটা জ্বর আসলো বিছানা থেকে উঠতেই পারছি না।তবুও মায়াকে পড়াতে গেলাম।শুধুমাত্র সেজুতিকে একবার দেখার জন্য।গিয়ে দেখি সেজুতি মায়াদের ড্রইং রুমে বসে কথা বলছে মায়ার মায়ের সাথে।আমি ভেতরে ঢোকা মাত্রই সেজুতি আমাকে দেখে হাসতে লাগলো মিচ মিচ করে।সাথে মায়ার মাও।আমি লজ্জাই মাথা উচু করতে পারছি না।
মায়াকে পড়ানো শেষে চলে আসছি ঠিক তখনি সেজুতিদের বেলকনির দিকে তাকিয়ে দেখি সেজুতি তাদের বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।আমাকে দেখছে ও দাড়িয়ে দাড়িয়ে।
ওকে কি জিঙ্গাসা করবো? কেনো কাল কল করবে বলে করলো না? জিঙ্গাসা করাটা কি ঠিক হবে? না থাক।
সেদিন রাতে আমি সুয়ে আছি ঠিক তখনি একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসলো।
-হ্যালো,আসসালামু-হ্যালো,আসসালামুআলাইকুম।কে?
-ওয়ালাইকুমআসসালাম।জ্বী আমি -ওয়ালাইকুমআসসালাম।জ্বী আমি বলছি।
-আমি কে?
-আমি সেজুতি।
-সেজুতি তুমি।কেমন আছো?জানো কাল সারারাত তোমার কলের অপেক্ষাই ছিলাম।ও সরি আপনাকে তুমি বলে ফেললাম সরি।
-it's ওকে।কাল একাবার দেখা করতে পারবেন আমার সাথে।আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
-হ্যাঁ অবশ্যই বলুন কোথাই দেখা করতে চান?
-ঠিক আছে আমি ঠিকানা আপনাকে ম্যাসেজ করে পাঠিয়ে দিচ্ছি।কাল বিকাল ৫টার সময় চলে আসবেন।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
-আচ্ছা বাই তাহলে এখন।কাল সময় মত চলে আসবেন।
আমি জীবনে এত খুশি হয়নি।কাল মনে হয় সেজুতি ওর মনের কথা বলবে আমাকে।আমিও বলবো,'আমি খুব ভালোবাসি সেজুতি তোমাকে,"।ইসসসস ভাবলেই কেমন হচ্ছে মনের ভেতরে।
কিছুক্ষন পর সেজুতি একটা রেস্টুরেন্টের ঠিকানা ম্যাসেজ করে দিলো।
আজ রাতে আর আমার ঘুম হবে না।
পরেরদিন উঠে ফ্রেশ হয়ে মায়াকে পড়াতে গেলাম আজ সকালে।কারন বিকালে সেজুতির সাথে দেখা করতে হবে।আজ আর মায়াকে পড়ানোর সময় সেজুতিকে দেখলাম না।মায়াকে পড়ানো শেষ করে বাড়ি এসে তাড়াতাড়ি খাওয়াদাওয়া শেষ করে একটু সুলাম।সেজুতির কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারিনি।হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ৪,৫০ বাজে।ও সিট এখন কি হবে।১০ মিনিটে আমি রেডি হবো কখন, আর পৌছাব কখন?তাড়াতাড়ি কোনোরকম রেডি হয়ে বের হলাম।কেবল নিচে নেমে বের হলাম ঠিক তখনি বাবা পেছন থেকে ডাক দিলো।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ৪,৫০ বাজে।ও সিট এখন কি হবে।১০ মিনিটে আমি রেডি হবো কখন, আর পৌছাব কখন?তাড়াতাড়ি কোনোরকম রেডি হয়ে বের হলাম।কেবল নিচে নেমে বের হলাম ঠিক তখনি বাবা পেছন থেকে ডাক দিলো।
-দাড়াও সৌরভ।তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।
-জ্বী বলুন তাড়াতাড়ি আমার হাতে বেশি সময় নেই।
-সৌরভ তোমাকে আর কতদিন বলবো এভাবে বাইরে চলাফেরা করবে না।তোমার জন্য আমি ১টা বাইক দুটো গাড়ি কিনে রেখেছি তুমি কোনোটাই ব্যাবহার করো না কেনো?
তারপর বাবা আমার কাছে এসে আমার গায়ের সার্টটা টেনে ধরে বললেন'আর এটা কি? কি পরেছো এসব তুমি?তোমার জন্য আমার মান সম্মান কিছুই থাকবে না।তুমি কি জানো তোমার এই সব উদ্ভট আচারনের জন্য আমার বন্ধু বান্ধব আমাকে টিটকারি করে? তুমি কি জানো? এই শহরে ধনীদের তালিকায় তোমার বাবা এক ২ নম্বরে আছে? আর তার ছেলে হয়ে তুমি মিডিলক্লাস ফ্যামিলির ছেলেদের মত চলাফেরা করো।অবশ্য তোমাকে এসব বলে কি লাভ তুমিতো এটাই জানোনা তোমার বাবার এই শহরে কতগুলো অফিস আছে।জীবনে তো কখনো উকি দিয়েও দেখোনি।
-আপনার আর কিছু বলার আছে?আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
-কি এমন রাজ কার্য করতে যাচ্ছ যে বাবার কথা শোনার সময় নেই?
-বাবা? হা হা হা।
-যেখানেই যাও। যাবার সময় গাড়ি নিয়ে বের হবে।
-আপনার ঐ পাপের টাকার কোনো জীনিস আমার চাই না।ওগুলো আপনি আপনার কাছেই রাখুন।
-কি বললে তুমি?এই কোথাই যাচ্ছ? দাড়াও বলছি।দাড়াও।বেয়াদপ ছেলে একটা। বাবার মুখে মুখে তর্ক করে।
ইসস অনেকটা দেরি হয়ে গেলো। ৩টা ১৫ বেজে গেছে সেজুতি মনে হয় আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমি পৌছে দেখি সেজুতি দাড়িয়ে আছে কালো কালারের একটা শাড়ি পরেছে ও আজ।চুল গুলো খোলা। কি যে সুন্দর লাগছে ওকে বলে বোঝাতে পারবো না।
-হাই সেজুতি।সরি আসতে একটু দেরি হয়ে গেলো।
-ঠিক আছে সমস্যা নেই আমিও কেবল এসে দাড়ালাম ভেতরে।চলুন ভেতরে চলুন।
-হ্যাঁ চলো।
আমরা ভেতরে গিয়ে বসলাম।
আমরা ভেতরে গিয়ে বসলাম।
-মায়ার আম্মুর মুখে শুনলাম আপনি নাকি খুব ভালো পড়ান।
-ঐ আর কি।
-হুম জানি আমি।এবার আসল কথাই আসা যাক।যেটা বলার জন্য আপনাকে এখানে ডেকেছি।
-জ্বী বলো।মানে বলুন।
-ক্লাস ৫এর একটা মেয়েকে পড়াতে পারবেন?
-কোথাই পড়াতে যেতে হবে?
-অবশ্যই আমাদের বাসায়।
-হ্যাঁ অবশ্যই পারবো।বলুন কখন পড়াতে যেতে হবে?
-মায়াকে পড়ানোর পর যাবেন পড়াতে।পাশাপাশি বাসা তো আপনার ভালো হবে।
-হ্যাঁ তা ঠিক।একটা কথা বলি?
-হ্যাঁ বলুন।
-আপনি এই কথা বলার জন্য ডেকেছিলেন আমাকে এখানে?
-হ্যাঁ,কেনো?
-সত্যি এটা বলার জন্যেই ডেকেছিলেন?
-আরে হ্যাঁ।
-ধুর এটা শোনার জন্য আমি এতদুর ছুটে আসলাম।
-কিছু বললেন?
-না না কি আর বলবো।
-তা আপনি সপ্তাহে কয়দিন আসতে পারবেন পড়াতে?
-৭দিনি আসতে পারবো।
-তাহলে তো খুবি ভালো হয়।
-হ্যাঁ তুমি বললে শুক্রবারেও আসতে পারি সমস্যা নেই।
-কি?কিছু বললেন।
-না, ইয়ে মানে বলছিলাম যে।
-জ্বী বলুন।
-বলছিলাম যে ইয়ে, আমি কিন্ত ৩ হাজারের নিচে পড়াতে পারবো না।(কথা খুজে পাচ্ছিনা তাই এটা বললাম আর কি)।
-হা হা হা, এই কথা বলতে এত লজ্জা।ওকে আপনাকে ৩ হাজারি দেবো।তাহলে আগামি মাসের এক তারিখ থেকে আসুন বিকালে।
-না কাল থেকেই আসি।
-কাল থেকেই, এমাসের তো এখনো ১০ দিন বাকি।
-থাক সমস্যা নেই।এ মাসটা আমি এমনি পড়িয়ে দেবো।টাকা দিতে হবে না।
-ঠিক আছে আজ আমি আসি তবে।
-আরে আরে এভাবে চলে গেলে হবে নাকি।কিছু তো খেতেই হবে।
-না আজ থাক অন্য একদিন।
কথাটা বলে সেজুতি চলে গেলো।আর আমি ওর পিছে পিছে বাইরে এলাম।দেখি সেজুতি দাড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য।আমি তাড়াতাড়ি একটা রিক্সাই উঠে ওর সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
-আপনি চাইলে আমি আপনাকে আপনার বাসার সামনে ছেড়ে দিতে পারি। (আমি)।
-না সমস্য নেই।আমি চলে যেতে পারবো।
-আরে আসুন না।আমি তো ঐ দিকে যাচ্ছি। আপনাকে ছেড়ে দেবো।
-আচ্ছা ঠিকআছে চলুন।
সেজুতি আমার পাশে এসে বসলো।ওর খোলা চুলের গন্ধ যেনো আমাকে মাতাল করে তুলছে।ওর চুলগুলো বার বার বাতাসে আমার মুখে এসে পড়ছে।আহ্ মনে হচ্ছে এই সময়টা যদি থেমে যেতো।তাহলে আরো কিছু সময় সেজুতিকে এতটা কাছ থেকে দেখতে পেতাম।একটা শ্যামবর্ণে ময়ে যে এতটা সুন্দরী হতে পারে আগে জানতাম না।
আমি সেজুতির দিকে হা করে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ ঝুমঝুম করে বৃষ্টি নমলো।রিক্সা থামিয়ে আমরা একটা গাছের নিচে গিয়ে দাড়ালাম।বর্ষা কাল, তাই যখন তখন বৃষ্টি চলে আসছে।ধ্যাত ছাতাটা যে কেনো আনলাম না।
-আপনি ছাতা আনেন নি আপনি?(সেজুতি)।
-না মানে, মনে ছিলো না।
-কি আর করবেন ভিজুন এখন দাড়িয়ে দাড়িয়ে।(সেজুতি)।
দুজন কাক ভেজা হয়ে বাড়ি ফিরলাম।
পরেরদিন মায়াকে একটু তাড়াতাড়ি পড়াতে গেলাম।মায়াকে পড়ানো শেষ করে সেজুতিদের বাসায় গেলাম।গিয়ে দরজায় নক করলাম।
পরেরদিন মায়াকে একটু তাড়াতাড়ি পড়াতে গেলাম।মায়াকে পড়ানো শেষ করে সেজুতিদের বাসায় গেলাম।গিয়ে দরজায় নক করলাম।
দরজা খুলে দিলো ছোট্ট একটা মেয়ে দেখতে ভীষন কিউট।দরজা খুলে মেয়েটা বললো,
-কে আপনি?
-সেজুতি আছে?
-হ্যাঁ আছে তো।ভেতরে আসুন।মেয়েটা এত কিউট করে কথা বলে শুনতে ইচ্ছা করছে।
আপনি বসুন আমি সেজুতিকে ডেকে দিচ্ছি।
আপনি বসুন আমি সেজুতিকে ডেকে দিচ্ছি।
আমি ঘুরে ঘুরে সেজুতির বাসাটা দেখতে লাগলাম।সারা বাড়িতে সেজুতি আর এই মেয়েটার ছবি।মনে হয় মেয়েটা সেজুতির ছোট বোন।
মেয়েটা ভেতরে গিয়ে সেজুতিকে ডেকে আনলো।
-এই যে শুনছেন।(সেজুতি)।
-হ্যাঁ,ইয়ে মানে আপনি আসছিলেন না তাই একটু বাসাটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম।কেমন আছেন?(আমি)
-জ্বি ভালো। আপনি।
-জ্বী আমিও ভালো আছি।
হঠাৎ মেয়েটা বলে উঠলো,'আম্মু এটা কি আমার নতুন টিচার?
আর সেজুতি বললো, হ্যাঁ মা এটা তোমার নতুন টিচার।
-ও আপনাকে তো বলাই হয় নি, এটা আমার মেয়ে অণু।একেই পড়ানোর কথা বলেছিলাম আপনাকে।(সেজুতি)।
আমি তো সেজুতির কথা শুনে এক হাত মাটির নিচে পুতে গেলাম।
-মেয়ে মানে?(আমি)।
-মেয়ে মানে।অণু আমার একমাত্র মেয়ে।আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
সেজুতির কথা শুনে আমার মাথা ঘুরছিলো।কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিলাম। না। না জেনে একটা বিবাহিত মেয়েকে ভালোবেসে ফেললাম।
মাথা ঘুরছে আমার।সজুতিকে দেখলে মনে হয় না।যে সে বিবাহিতা। মাথাই কাজ করছে না।আর এক মিনিট এখানে থাকলে মাথা ঘুরে পড়ে যাবো মনে হয়।
মাথা ঘুরছে আমার।সজুতিকে দেখলে মনে হয় না।যে সে বিবাহিতা। মাথাই কাজ করছে না।আর এক মিনিট এখানে থাকলে মাথা ঘুরে পড়ে যাবো মনে হয়।
-আমি আজ আসছি।(আমি উঠে দাড়িয়ে বললাম)।
-কেনো কি হলো? আপনি এত ঘামছেন কেনো?আপনার শরীর ঠিক আছে তো?(সেজুতি)।
-হ্যাঁ আমি একদম ঠিক আছি।হঠাৎ একটা কাজের কথা মনে পড়ে গেলো।কাল থেকে আসবো পড়াতে এখন আসি আমি।কথাটা বলে আর এক মিনিটো দাড়ালাম না সেখানে।সোজা বাড়ি চলে এলাম। গায়ে জ্বর তবুও টপ টপ করে ঘাম ঝরছে।
চলবে...
Writer:- আতিকা জাহান