Leave a message
> আদহাম পর্ব ৪ সত্য ঘটনা অবলম্বনে
-->

আদহাম পর্ব ৪ সত্য ঘটনা অবলম্বনে


আপুর কনফেশন এ আদহামের কমেন্ট টা ছিলো এমন যে, যা বলার সরাসরি বলবেন পাবলিক প্লেসে এরকম বলার তো কোনো দরকার নেই।
আদহামের এরকম কমেন্ট দেখে মেজাজ আমার পুরাই খারাপ হয়ে গেলো।
আমি বুঝতেছিলাম না কি করবো।
আমি সরাসরি বলি ওকে যা বলার কারণ, আমি ওর কাছে নিজেকে গোপন রাখতে পারতাম না কখনো। কিন্তু আপু যে ওকে কোনো একটা কারণে ব্লক দিয়ে কনফেশন লিখছেন, এটা আমি জানতাম না।
আর ব্লক দিয়ে কনফেশন দেওয়ার কারণেই এমন একটা কমেন্ট ও করেছিলো।
এটা নিয়েও আমি অশান্তি করতে পারি, মন খারাপ করতে পারি বলে আগেই ও আমায় সব কথা বুঝিয়ে বলে দিয়েছিলো আর সঙ্গে ওর আর আপুর কনর্ভাসেশনের একটা শট।
সেখানে আদহাম কে কনভিন্স করার অনেক ট্রাই করেছিলেন আপু কিন্তু আদহামের উত্তর ছিলো এমন, "আমি একজন এর জন্য ই অনলাইনে আসি।সারাদিন শেষে একটা মানুষ এর জন্যই এত্ত পরিশ্রম করার পর ও অনলাইনে আসি,
সে মানুষটাও আমার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।আমাকে আর দয়া করে বিরক্ত করো না।
এমন অনেক কথা পরে আপু টা জানতে পেরেছিলো আমার সাথে ওর সম্পর্কের কথা আর তখনই নাকি ব্লক করে কনফেশন টা দিয়েছিলেন!
তারপর থেকে আপু আর কখন ও ওরে এসব কিছু বলেনি।
আর আমি আদহামের সঙ্গে অন্য কোনো মেয়েকে সহ্য করতেই পারতাম না।
তারপর আমাকে বলত বুঝাতো যে ও শুধু আমাকেই ভালোবাসে, অন্য কোনো মেয়ে ওর মনে কখনো জায়গা পাবেনা কখনো।
আমি ছিলাম হিংসুটে;
অন্য মেয়ের সাথে কথা বলা দূর ওর আইডিতে কমেন্ট করলেও আমি মুখ ফুলিয়ে বসে থাকতাম আর আমার দুইটা বান্ধবী ছিলো মুন আর মিমি ওদের সাথে শেয়ার করতাম।
ওরা প্রথম থেকেই সব জানতো, ওরা সেই মজা নিতো আবার সাপোর্ট ও করতো।
আমি যখন অভিমান করে গাল ফুলিয়ে থাকতাম তখন এমন কিছু কথা বলতো যে আমি গলে যেতাম একদম।
ও বলতো, আচ্ছা আদরীনি বলো তো,
রাঁতের আকাশে মাঝে মাঝে অর্ধেক চাঁদ কেনো উঠে? তুমি কিভাবে জানবা, তুমি তো তখন ঘুমিয়েই থাকো।
আচ্ছা আমি বলি শুনো, আকাশে মাঝে মাঝে অর্ধেক চাঁদ উঠে আর অর্ধেক চাঁদ যে আমার বুকে ঘুমায়! আমি আমার বুকের উপরের চাঁদ টাকে দেখে আকাশের চাঁদটাও বড্ড হিংসে করে।
ঠিক তোমার মতো হিংসুটে বুড়ি একটা।
আবার জিজ্ঞেস করি, তুমি কি ব্যস্ত?
ও বলে হ্যাঁ খুব ব্যস্ত। জিজ্ঞেস করলাম ফ্রি হবা কখন? বলে যে, সারাজীবনে ও না! আমিতো ব্যস্ত আর বন্দী খুব করে তোমার মায়ায় আর সারাজীবনে ও মুক্ত হতে চাইনা!
নিজেকে মাঝে মাঝে খুব ভাগ্যবতী মনে হতো, এমন একটা মানুষকে আমার জীবনে পাওয়ার জন্য! আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করে নফল নামাজ পড়তাম। প্রতি নামাজের শেষে আদহামের জন্য নফল নামাজ পড়তাম আর বলতাম ও খুব ভালো থাকুক, যেখানেই থাকুক যেমনই থাকুক এবং যার সাথেই থাকুক।
ও এদিকে নামাজ পড়তো না কখনো জুম্মার দিনেও না, শুধুমাত্র দুই ঈদ ছাড়া! ওর জীবনের কিছু ডিপ্রেশনের জন্য ও ড্রিংকস ও করতো মাঝে মাঝে। কিন্তু আমি ওর জীবনে যাওয়ার পর সেই মানুষটাই আমার অসুস্থতার জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজে কেঁদে আল্লাহর কাছে আমার সুস্থতার প্রার্থনা করতো! আমার ডিপ্রেশন এর একটাই মেডিসিন ছিলো, যার নাম আদহাম!
আমি পারিবারিক ডিপ্রেশনের কারণে অনেক সময় ওকে বলতাম আমি না থাকলে কষ্ট হবে তোমার?
আমাকে বলতো, এসব ভাবার আগে একবার ও আমার কথা মনে পরেনা তোমার? জানো, আমি নামাজ পড়ে দোয়া করেছি যেনো তোমার সব সমস্যা দূর হয়ে যায়।
আমার সব থাকলেও, তুমি না থাকলে মনে হয় আমার কিছুই নেই। তুমি আসার আগে আমি অনেক কিছু হারিয়েছি, আমার হারানোর কিছু নেই আর। কিন্তু তোমার কিছু হলে আমি হয়তো তোমার মতো আত্নহত্যা কথা কখনো চিন্তা করবো না আমি কিন্তু বেঁচে থেকেও জীবন্ত লাশ হয়ে যাব।
আমি অনেক সময় অনেক পাগলামি করতাম, একদম ছোটো বাচ্চার মতোন! আমার কষ্ট, আমার ডিপ্রেশন, আমার সব সমস্যার...

চলবে...

লেখনীঃ NI Shu (অপরিচিতা)
 

Delivered by FeedBurner

a