লে তুরেল দুর্গ। দুর্গের প্রধান কমান্ডার কার্ডিনোস আহারে ব্যস্ত ছিল। দুজন দ্বাররক্ষী বল্লমহাতে দাঁড়িয়েছিল দরজার দুপাশে। দরজা দিয়ে প্রবেশ করলো একজন বার্তাবাহক। কার্ডিনোস কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে আহার চালিয়ে যেতে লাগলো। বার্তাবাহক মাথাটা ঝুঁকে বললো,
-কমান্ডার তালবুত এসে পৌঁছেছেন দুর্গে তাঁর কিছু সৈন্য নিয়ে। অরলিন্স নগরী আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে।'
কার্ডিনোস আহার শেষ করে উঠে দাঁড়ালো হাত মুছতে মুছতে। সেই মুহূর্তে দরজা ঠেলে হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করলো কমান্ডার তালবুত। কিছুটা উত্তেজিত হয়ে নিজে নিজেই মন্তব্য করলো,
-এটা খুবই লজ্জার, একটা অল্পবয়সী যোদ্ধার কাছে আমাদের সৈন্যরা হেরে গেছে।
-আর তুমি লেজ গুটিয়ে পালিয়ে এসেছো, এটা আরও বেশি লজ্জার।' কথাটি বলে কার্ডিনোস সরাসরি তাকালো তালবুতের দিকে। তালবুত বললো,
-পালিয়ে না এসে উপায় ছিল না। নয়তো আমাদেরও মরতে হতো সবার মতো।
-কে সেই যোদ্ধা?
-নাম বলেছিল জোয়ান অব আর্ক। অল্প বয়স, এখনও ষোলো বা সতেরো হবে বয়স। কী সাহস তার! আর যুদ্ধের কী তেজ! আমি এমন আক্রমণাত্মক যোদ্ধা আমার জীবনে আর দেখিনি।
-অরলিন্স হাতছাড়া হয়ে গেছে মানে ওরা এখন এই দুর্গে নজর দেবে। ওরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠবে। আমাদের প্রস্তুতি নেয়া উচিত। দুর্গের শক্তি বাড়াতে হবে।
-আমি রেইমসে বার্তা পাঠাচ্ছি, যেন আরও সেনা পাঠায় এখানে।' বলতে বলতে বের হয়ে গেল কমান্ডার তালবুত।
-কমান্ডার তালবুত এসে পৌঁছেছেন দুর্গে তাঁর কিছু সৈন্য নিয়ে। অরলিন্স নগরী আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে।'
কার্ডিনোস আহার শেষ করে উঠে দাঁড়ালো হাত মুছতে মুছতে। সেই মুহূর্তে দরজা ঠেলে হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করলো কমান্ডার তালবুত। কিছুটা উত্তেজিত হয়ে নিজে নিজেই মন্তব্য করলো,
-এটা খুবই লজ্জার, একটা অল্পবয়সী যোদ্ধার কাছে আমাদের সৈন্যরা হেরে গেছে।
-আর তুমি লেজ গুটিয়ে পালিয়ে এসেছো, এটা আরও বেশি লজ্জার।' কথাটি বলে কার্ডিনোস সরাসরি তাকালো তালবুতের দিকে। তালবুত বললো,
-পালিয়ে না এসে উপায় ছিল না। নয়তো আমাদেরও মরতে হতো সবার মতো।
-কে সেই যোদ্ধা?
-নাম বলেছিল জোয়ান অব আর্ক। অল্প বয়স, এখনও ষোলো বা সতেরো হবে বয়স। কী সাহস তার! আর যুদ্ধের কী তেজ! আমি এমন আক্রমণাত্মক যোদ্ধা আমার জীবনে আর দেখিনি।
-অরলিন্স হাতছাড়া হয়ে গেছে মানে ওরা এখন এই দুর্গে নজর দেবে। ওরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠবে। আমাদের প্রস্তুতি নেয়া উচিত। দুর্গের শক্তি বাড়াতে হবে।
-আমি রেইমসে বার্তা পাঠাচ্ছি, যেন আরও সেনা পাঠায় এখানে।' বলতে বলতে বের হয়ে গেল কমান্ডার তালবুত।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে ঘোড়া নিয়ে ছুটে চলেছে তালবুতের বার্তাবাহক সেনাটা। ফ্রেঞ্চদের চোখে না পড়ার জন্য সে গোপনপথে যাচ্ছিল রেইমস নগরীর দিকে। কিন্তু সে সফল হলো না। একটা ফ্রেঞ্চবাহিনীর সামনে পড়ে গেল সে। দ্রুত ঘোড়া ঘুরিয়ে অন্য পথ ধরতেই পেছনে তির এসে লাগলো তার। তবুও ক্ষান্ত হলো না সে। মুহূর্তেই নিজেকে সামলিয়ে আবারও ঘোড়া ছুটাতে লাগলো সে। তখন আরেকটা তির এসে লাগলো তার পিঠে। এবার আর নিজেকে সামলাতে পারলো না সে। পড়ে গেল ঘোড়া থেকে। ফ্রেঞ্চবাহিনী গিয়ে তাকে ধরতেই চিৎকার করে ওঠলো সে,
-ছেড়ে দাও আমাকে...'
তখন একজন তার মুখে একটা ঘুষি মেরে হাত পা বেঁধে ফেললো। তার হাত থেকে তালবুতের পত্রটা নিয়ে নিলো। তারপর তাকে বন্দী করে নিয়ে চললো সাথে।
-ছেড়ে দাও আমাকে...'
তখন একজন তার মুখে একটা ঘুষি মেরে হাত পা বেঁধে ফেললো। তার হাত থেকে তালবুতের পত্রটা নিয়ে নিলো। তারপর তাকে বন্দী করে নিয়ে চললো সাথে।
তালবুতের বার্তাটা জানার পর জোয়ান নতুন করে পরিকল্পনা করলো। তালবুত রেইমস থেকে যে সৈন্য চেয়েছে, তার বদলে নিজেদের সৈন্যরা যাবে ইংরেজ সেজে। তারা দুর্গে গিয়ে ওদের সৈন্যের সাথে মিশে যাবে। এতে দুর্গ জয় আরও সহজ হবে।
জোয়ান নিজের বেশকিছু সৈন্যকে ইংরেজদের পোশাক পরিয়ে প্রস্তুত করলো। আর জানিয়ে দিলো কীভাবে কী করতে হবে। জোয়ান সৈন্য নিয়ে আক্রমণ করার আগপর্যন্ত যেন কিছুতেই ইংরেজরা বুঝতে না পারে তারা ফ্রেঞ্চসেনা। তারা যেন গিয়ে দুর্গের ছাদটা আগে দখল করে, আর কিছু সেনা যেন গেইটের পাশেই অবস্থান করে, যাতে জোয়ান সেনা নিয়ে আক্রমণ করলেই দুর্গের দরজা খুলে দেয়। জোয়ানের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাছাইকৃত সেনারা প্রস্তুত হলো দুর্গে অনুপ্রবেশ করার জন্য।
জোয়ান নিজের বেশকিছু সৈন্যকে ইংরেজদের পোশাক পরিয়ে প্রস্তুত করলো। আর জানিয়ে দিলো কীভাবে কী করতে হবে। জোয়ান সৈন্য নিয়ে আক্রমণ করার আগপর্যন্ত যেন কিছুতেই ইংরেজরা বুঝতে না পারে তারা ফ্রেঞ্চসেনা। তারা যেন গিয়ে দুর্গের ছাদটা আগে দখল করে, আর কিছু সেনা যেন গেইটের পাশেই অবস্থান করে, যাতে জোয়ান সেনা নিয়ে আক্রমণ করলেই দুর্গের দরজা খুলে দেয়। জোয়ানের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাছাইকৃত সেনারা প্রস্তুত হলো দুর্গে অনুপ্রবেশ করার জন্য।
কমান্ডার কার্ডিনোস বসে আছে কক্ষে। পাশেই চিন্তিত অবস্থায় পায়চারি করছে কমান্ডার তালবুত। ব্যাপারটা তাকে একটু বেশিই ভাবিয়ে তুলেছে। প্রায় একশো বছর ধরে যে ফ্রেঞ্চদের তারা কোনঠাসা করে রেখেছে, তাদের কাছেই এভাবে শোচনীয় পরাজয় কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। তালবুতের এমন অস্থিরতা দেখে কার্ডিনোস বলে ওঠলো,
-এভাবে অস্থির হয়ো না তালবুত। রেইমস থেকে আমাদের আরও সেনারা আসছে। আমরা পুনরায় অরলিন্স দখল করে নেবো।
-পুনরায় দখল করবো সেটা বড় কথা না কার্ডিনোস। এ পরাজয় নিয়ে আমি ইংল্যান্ডে ফিরে যাবো কী করে? কী করে দাঁড়াবো রাজা হেনরির সামনে? আমার উপর থেকে তো ভরসা উঠে যাবে রাজা হেনরির।
-তুমি শান্ত হও তালবুত। আমাদের সৈন্যরা আসুক আগে। অরলিন্স পুনরায় দখল করতে পারলে রাজা হেনরির কাছে তোমার সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকবে।'
তবুও কমান্ডার তালবুতের অস্থিরতা কমলো না। একটু পর একজন এসে জানালো রেইমস থেকে সেনারা এসে উপস্থিত হয়েছে। কার্ডিনোস এবং তালবুত বের হলো কক্ষ থেকে। বাইরে সৈন্যরা দাঁড়িয়ে আছে অস্ত্রসজ্জিত হয়ে। কমান্ডারদের দেখে কুর্নিশ করে সম্মান জানালো ওরা। কমান্ডার কার্ডিনোস সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বললো,
-আমরা আন্দাজ করছি, যেহেতু অরলিন্স আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে, ফ্রেঞ্চরা এই দুর্গ দখল করতে চাইবে। আমাদের সাহসী সেনারা প্রস্তুত থাকো। ওরা আসলেই আমরা ওদের কাউকেই এখান থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে দেবো না। তারপর আমরা অরলিন্স দখল করতে যাবো পুনরায়।'
কার্ডিনোস থামতেই তালবুত বলে ওঠলো,
-তোমরা ভাগ হয়ে যাও। দক্ষ সেনারা গেইটের পাশেই থাকো, আর তিরন্দাজরা দুর্গের ছাদে অবস্থান করবে। ফ্রেঞ্চদের দেখলেই তির ছুড়বে উপর থেকে।
-যথা আজ্ঞা কমান্ডার তালবুত।' চিৎকার করে ওঠলো সৈন্যরা।
-এভাবে অস্থির হয়ো না তালবুত। রেইমস থেকে আমাদের আরও সেনারা আসছে। আমরা পুনরায় অরলিন্স দখল করে নেবো।
-পুনরায় দখল করবো সেটা বড় কথা না কার্ডিনোস। এ পরাজয় নিয়ে আমি ইংল্যান্ডে ফিরে যাবো কী করে? কী করে দাঁড়াবো রাজা হেনরির সামনে? আমার উপর থেকে তো ভরসা উঠে যাবে রাজা হেনরির।
-তুমি শান্ত হও তালবুত। আমাদের সৈন্যরা আসুক আগে। অরলিন্স পুনরায় দখল করতে পারলে রাজা হেনরির কাছে তোমার সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকবে।'
তবুও কমান্ডার তালবুতের অস্থিরতা কমলো না। একটু পর একজন এসে জানালো রেইমস থেকে সেনারা এসে উপস্থিত হয়েছে। কার্ডিনোস এবং তালবুত বের হলো কক্ষ থেকে। বাইরে সৈন্যরা দাঁড়িয়ে আছে অস্ত্রসজ্জিত হয়ে। কমান্ডারদের দেখে কুর্নিশ করে সম্মান জানালো ওরা। কমান্ডার কার্ডিনোস সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বললো,
-আমরা আন্দাজ করছি, যেহেতু অরলিন্স আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে, ফ্রেঞ্চরা এই দুর্গ দখল করতে চাইবে। আমাদের সাহসী সেনারা প্রস্তুত থাকো। ওরা আসলেই আমরা ওদের কাউকেই এখান থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে দেবো না। তারপর আমরা অরলিন্স দখল করতে যাবো পুনরায়।'
কার্ডিনোস থামতেই তালবুত বলে ওঠলো,
-তোমরা ভাগ হয়ে যাও। দক্ষ সেনারা গেইটের পাশেই থাকো, আর তিরন্দাজরা দুর্গের ছাদে অবস্থান করবে। ফ্রেঞ্চদের দেখলেই তির ছুড়বে উপর থেকে।
-যথা আজ্ঞা কমান্ডার তালবুত।' চিৎকার করে ওঠলো সৈন্যরা।
দুর্গ থেকে কিছুটা দূরে নিজ সৈন্য নিয়ে অবস্থান করলো জোয়ান। একটা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে দেখে নিলো সে দূর্গে সৈন্যদের অবস্থান। একটা তিরের ডগায় লাল কাপড় বেঁধে জোয়ান উপর দিকে ছুড়লো, যাতে ওটা দেখে দুর্গে অবস্থিত নিজেদের সৈন্যরা বুঝতে পারে তাদের উপস্থিতি। তিরটা ছুড়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো জোয়ান। এবার দুর্গ থেকে সিগন্যাল পেলেই ওরা আক্রমণ করতে যাবে৷ একটু পর দুর্গ থেকে একটা তির আকাশে ছুড়া হলো। তার মানে তাদের সৈন্যরা দুর্গে ঠিকঠাক অবস্থান নিয়েছে। জোয়ান পাহাড় থেকে নেমে ঘোড়ায় চড়ে বসলো। তারপর সৈন্যদের আদেশ দিলো,
-চলো সৈন্যরা, সময় হয়েছে ঝাঁপিয়ে পড়ার।
-চলো সৈন্যরা, সময় হয়েছে ঝাঁপিয়ে পড়ার।
দুর্গের উপর থেকে তিরন্দাজরা দেখলো ফরাসিরা আক্রমণাত্মক হয়ে এগিয়ে আসছে। ওরা সাথে সাথে প্রস্তুত হয়ে ধনুকে তির লাগালো। তির তাক করলো ফরাসিদের দিকে। ওরা যখন তির ছুড়তে যাবে, তখন কিছু সেনা তিরের লক্ষ ঘুরিয়ে নিলো।
-কারা তোমরা? নিজেদের সৈন্যের দিকে তির তাক করলে কেন?' উত্তেজিত হয়ে ওঠলো একজন। সাথে সাথে তির ছুড়লো ওরা ইংরেজ সৈন্যদের উপর। তারপর নিজেদের ইংরেজ পোশাকটা খুলে ফেললো, বেরিয়ে এলো ফরাসি যুদ্ধ পোশাক। ওদের একজন বলে ওঠলো,
-আমরা ফরাসি সেনা।' তারপর তরবারি বের করে দু পক্ষের মাঝে যুদ্ধ চলতে লাগলো। ইংরেজ সেনারা তিরবিদ্ধ হওয়ায়, ফরাসিদের সাথে পেরে ওঠলো না। ফরাসিদের তরবারির আঘাতে এক একটা ইংরেজের রক্তে লাল হতে লাগলো দুর্গের ছাদ। ওদেরকে ওখানে শেষ করে ওরা দুর্গ থেকে নামতে লাগলো। দুর্গের বাকি ইংরেজরাও জেনে গেল তাদের পরিচয়। 'ফরাসি কুত্তারা' বলেই ছুটে এলো কয়েকজন। তরবারি দিয়ে ওদেরকে ঠেকাতে লাগলো ফরাসি সেনারা।
ওদিকে জোয়ান দুর্গের গেইটের কাছে সৈন্য নিয়ে আসতেই খুলে গেল গেইট। ইংরেজ সেনারা অবাক হয়ে গেল নিজেদের সৈন্যরাই গেইট খুলে দিতে দেখে। গেইট খুলে দিয়েই ওরা নিজেদের ইংরেজ পোশাক খুলে ফেললো। সাথে সাথে ইংরেজরা তরবারি হাতে চিৎকার করে ওঠলো,
-এরা ফরাসি। আমাদের বোকা বানিয়েছে।' বলতে বলতে ঝাঁপিয়ে পড়লো ওরা তরবারি নিয়ে। জোয়ান তার বিশাল বাহিনী নিয়ে প্রবেশ করলো ভেতরে। কিছু সৈন্য অবস্থান করলো দুর্গের বাইরে। কোনো ইংরেজ পালিয়ে গেলেই যেন ধরতে পারে।
-কারা তোমরা? নিজেদের সৈন্যের দিকে তির তাক করলে কেন?' উত্তেজিত হয়ে ওঠলো একজন। সাথে সাথে তির ছুড়লো ওরা ইংরেজ সৈন্যদের উপর। তারপর নিজেদের ইংরেজ পোশাকটা খুলে ফেললো, বেরিয়ে এলো ফরাসি যুদ্ধ পোশাক। ওদের একজন বলে ওঠলো,
-আমরা ফরাসি সেনা।' তারপর তরবারি বের করে দু পক্ষের মাঝে যুদ্ধ চলতে লাগলো। ইংরেজ সেনারা তিরবিদ্ধ হওয়ায়, ফরাসিদের সাথে পেরে ওঠলো না। ফরাসিদের তরবারির আঘাতে এক একটা ইংরেজের রক্তে লাল হতে লাগলো দুর্গের ছাদ। ওদেরকে ওখানে শেষ করে ওরা দুর্গ থেকে নামতে লাগলো। দুর্গের বাকি ইংরেজরাও জেনে গেল তাদের পরিচয়। 'ফরাসি কুত্তারা' বলেই ছুটে এলো কয়েকজন। তরবারি দিয়ে ওদেরকে ঠেকাতে লাগলো ফরাসি সেনারা।
ওদিকে জোয়ান দুর্গের গেইটের কাছে সৈন্য নিয়ে আসতেই খুলে গেল গেইট। ইংরেজ সেনারা অবাক হয়ে গেল নিজেদের সৈন্যরাই গেইট খুলে দিতে দেখে। গেইট খুলে দিয়েই ওরা নিজেদের ইংরেজ পোশাক খুলে ফেললো। সাথে সাথে ইংরেজরা তরবারি হাতে চিৎকার করে ওঠলো,
-এরা ফরাসি। আমাদের বোকা বানিয়েছে।' বলতে বলতে ঝাঁপিয়ে পড়লো ওরা তরবারি নিয়ে। জোয়ান তার বিশাল বাহিনী নিয়ে প্রবেশ করলো ভেতরে। কিছু সৈন্য অবস্থান করলো দুর্গের বাইরে। কোনো ইংরেজ পালিয়ে গেলেই যেন ধরতে পারে।
কমান্ডার তালবুত এবং কমান্ডার কার্ডিনোসও বের হয়ে এলো তরবারি হাতে। ফ্রেঞ্চদের বিপক্ষে প্রাণপণ লড়তে লাগলো ওরা। তবে নিজেদের বেশিরভাগ সৈন্যকে তরবারির আঘাতে লুটিয়ে পড়তে দেখে আশাহত হতে লাগলো ওরা। জোয়ানের আক্রমণাত্মক যুদ্ধের সামনে তাদের সৈন্যরা টিকতেই পারছে না। যে করে হোক আগে এই জোয়ানকেই শেষ করতে হবে, নয়তো দুর্গটাও হাতছাড়া হয়ে যাবে।
হঠাৎ একটা তির এসে লাগলো জোয়ানের কাঁধে। জোয়ান পড়ে গেল নিচে। দেখে কার্ডিনোসের মুখে হাসি ফুটে ওঠলো। জোয়ানকে এভাবে পড়ে যেতে দেখে তার সৈন্যরা মনোবল হারিয়ে ফেললো। অর্ধেক শক্তি যেন কমে গেল ওদের। ইংরেজরা মুহূর্তেই বেশ কজন ফ্রেঞ্চ সৈন্যের বুকে তরবারি চালালো। আহত জোয়ানকেও মারতে গেলে কয়েকজন ফ্রেঞ্চ সেনা জোয়ানকে ঘিরে দাঁড়ায়। জোয়ানের গায়ে আর একটাও আঘাত লাগতে দেবে না ওরা। জোয়ান কাঁধ থেকে তিরটা অর্ধেক ভেঙে ফেলে দিলো। বাকি অর্ধেক তির তার কাঁধে গেঁথে আছে। ওটা এখন বের করলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে। জোয়ান নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করলো। শেষ মুহূর্তে এসে এভাবে হেরে যেতে চায় না সে। তরবারিটা পড়ে আছে হাত থেকে একটু দূরে। হাত বাড়িয়ে শক্ত করে ধরলো সে তরবারিটা। তারপর শরীরের সব শক্তি দিয়ে গর্জে ওঠলো। তাকে পুনরায় উঠে দাঁড়াতে দেখে ফ্রেঞ্চরা তাদের হারানো মনোবল ফিরে পেলো। জোয়ান আবারও তরবারি চালাতে লাগলো দ্বিগুণ গতিতে। কার্ডিনোস চমকে ওঠলো তার এই রূপ দেখে। তরবারি উঁচু করে জোয়ানকে মারতে গেল সে, জোয়ান নিজের তরবারিটা ছুড়ে মারে তার দিকে। তরবারিটা গিয়ে কার্ডিনোসের গলা ভেদ করে বের হয়ে যায়। আর কার্ডিনোসের দেহ থেকে মাথাটা ছিটকে পড়ে। দেহটা এসে পড়ে জোয়ানের সামনে। জোয়ান লাফ দিয়ে নিজের তরবারিটা তুলে নেয় আবার। ক্ষিপ্র গতিতে তরবারি চালাতে থাকে সে শত্রুদের উপর। পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে তালবুত পালিয়ে যাওয়ার জন্য দৌড় দিলো ভেতরে। পেছন পেছন দৌড় দিলো জোয়ানও। দুর্গের গোপন পথ দিয়ে বের হয়ে গেল তালবুত। ঘোড়ায় চড়ে পালাতে চাইলে জোয়ান তির ছুড়ে তার দিকে। তিরটা গিয়ে গেঁথে যায় তার পিঠে। তালবুত পড়ে যায় ঘোড়া থেকে। জোয়ান তার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। তালবুত ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকায় জোয়ানের দিকে। জোয়ান দ্বিতীয়বার না ভেবে সকল আক্রোশ আর ঘৃণা নিয়ে তরবারি চালায় তালবুতের ঘাড়ে। মাথাটা আলাদা হয়ে যায় তালবুতের। কিছুক্ষণ ছটফট করে নিস্তেজ হয়ে যায় তালবুত।
জোয়ান একটা ফরাসি পতাকা বের করে। তারপর ওটা নিয়ে দুর্গের ছাদে যায়। দুর্গের ছাদে তখন উড়তে থাকে ফরাসি পতাকা। নিচ থেকে ফ্রেঞ্চ সৈন্যরা চিৎকার করে ওঠে, 'জয়, জোয়ান অব আর্কের জয়।'
হঠাৎ একটা তির এসে লাগলো জোয়ানের কাঁধে। জোয়ান পড়ে গেল নিচে। দেখে কার্ডিনোসের মুখে হাসি ফুটে ওঠলো। জোয়ানকে এভাবে পড়ে যেতে দেখে তার সৈন্যরা মনোবল হারিয়ে ফেললো। অর্ধেক শক্তি যেন কমে গেল ওদের। ইংরেজরা মুহূর্তেই বেশ কজন ফ্রেঞ্চ সৈন্যের বুকে তরবারি চালালো। আহত জোয়ানকেও মারতে গেলে কয়েকজন ফ্রেঞ্চ সেনা জোয়ানকে ঘিরে দাঁড়ায়। জোয়ানের গায়ে আর একটাও আঘাত লাগতে দেবে না ওরা। জোয়ান কাঁধ থেকে তিরটা অর্ধেক ভেঙে ফেলে দিলো। বাকি অর্ধেক তির তার কাঁধে গেঁথে আছে। ওটা এখন বের করলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে। জোয়ান নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করলো। শেষ মুহূর্তে এসে এভাবে হেরে যেতে চায় না সে। তরবারিটা পড়ে আছে হাত থেকে একটু দূরে। হাত বাড়িয়ে শক্ত করে ধরলো সে তরবারিটা। তারপর শরীরের সব শক্তি দিয়ে গর্জে ওঠলো। তাকে পুনরায় উঠে দাঁড়াতে দেখে ফ্রেঞ্চরা তাদের হারানো মনোবল ফিরে পেলো। জোয়ান আবারও তরবারি চালাতে লাগলো দ্বিগুণ গতিতে। কার্ডিনোস চমকে ওঠলো তার এই রূপ দেখে। তরবারি উঁচু করে জোয়ানকে মারতে গেল সে, জোয়ান নিজের তরবারিটা ছুড়ে মারে তার দিকে। তরবারিটা গিয়ে কার্ডিনোসের গলা ভেদ করে বের হয়ে যায়। আর কার্ডিনোসের দেহ থেকে মাথাটা ছিটকে পড়ে। দেহটা এসে পড়ে জোয়ানের সামনে। জোয়ান লাফ দিয়ে নিজের তরবারিটা তুলে নেয় আবার। ক্ষিপ্র গতিতে তরবারি চালাতে থাকে সে শত্রুদের উপর। পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে তালবুত পালিয়ে যাওয়ার জন্য দৌড় দিলো ভেতরে। পেছন পেছন দৌড় দিলো জোয়ানও। দুর্গের গোপন পথ দিয়ে বের হয়ে গেল তালবুত। ঘোড়ায় চড়ে পালাতে চাইলে জোয়ান তির ছুড়ে তার দিকে। তিরটা গিয়ে গেঁথে যায় তার পিঠে। তালবুত পড়ে যায় ঘোড়া থেকে। জোয়ান তার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। তালবুত ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকায় জোয়ানের দিকে। জোয়ান দ্বিতীয়বার না ভেবে সকল আক্রোশ আর ঘৃণা নিয়ে তরবারি চালায় তালবুতের ঘাড়ে। মাথাটা আলাদা হয়ে যায় তালবুতের। কিছুক্ষণ ছটফট করে নিস্তেজ হয়ে যায় তালবুত।
জোয়ান একটা ফরাসি পতাকা বের করে। তারপর ওটা নিয়ে দুর্গের ছাদে যায়। দুর্গের ছাদে তখন উড়তে থাকে ফরাসি পতাকা। নিচ থেকে ফ্রেঞ্চ সৈন্যরা চিৎকার করে ওঠে, 'জয়, জোয়ান অব আর্কের জয়।'
পরপর দুটো বিজয়ের পর জোয়ানের প্রতি ভরসা বেড়ে গেল রাজা চার্লসের। জোয়ানকে একদিন ডেকে একসাথে খাবার খেল চার্লস। জোয়ানের প্রশংসা করে চার্লস বললো,
-আমার সাহসী যোদ্ধা, তোমার হাত ধরেই আমরা আমাদের হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাচ্ছি এক এক করে। এবার আমাদের লক্ষ্য রেইমস নগরী। রেইমস নগরী পুনরুদ্ধার করতে পারলেই, আমি রাজা হিসেবে অভিষেক নেবো। রেইমস নগরীতেই আমার অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। রাজা হিসেবে মুকুট পরবো আমি।
-আশীর্বাদ করবেন। রেইমস নগরীও আমরা পুনরুদ্ধার করে নেবো আমাদের সাহস আর শক্তি দিয়ে।' দৃঢ়কণ্ঠে বললো জোয়ান।
-আমার সাহসী যোদ্ধা, তোমার হাত ধরেই আমরা আমাদের হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাচ্ছি এক এক করে। এবার আমাদের লক্ষ্য রেইমস নগরী। রেইমস নগরী পুনরুদ্ধার করতে পারলেই, আমি রাজা হিসেবে অভিষেক নেবো। রেইমস নগরীতেই আমার অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। রাজা হিসেবে মুকুট পরবো আমি।
-আশীর্বাদ করবেন। রেইমস নগরীও আমরা পুনরুদ্ধার করে নেবো আমাদের সাহস আর শক্তি দিয়ে।' দৃঢ়কণ্ঠে বললো জোয়ান।
চলবে...
লেখা: ShoheL Rana