দাদী আমার সাথে প্রচন্ড অভিমান করেছে। আমার সাথে কথাই বলে না। বারান্দায় বেতের চেয়ারে বসা ছিল, আমাকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিল। আমি দাদীর কাছে গেলাম। আমার দিকে একবার ফিরেও তাকায়নি। আমি হুট করে বললাম, দাদী বাবা নাকি কৈ মাছের ঝোল খুব পছন্দ করত? তোমাদের বাড়িতে এতদিন ধরে আছি, একদিন কৈ মাছের ঝোল খেতে পারলাম না।
দাদী এবার আমার দিকে ঘুরে বসলেন। জানতে চাইলেন, আর কী কী বলে তোর বাবা? আমার কথা বলেনি কখনো?
-এখনো মুখ ঘুরিয়ে রাখো। আমি বলব কেন?
-বল না। তোকে কালই আমি কৈ মাছের ঝোল করে খাওয়াব। তোর দাদাকে বলব গঞ্জ থেকে কৈ মাছ নিয়ে আসতে।
-হ্যাঁ তোমার কথা বলত। দাদার কথা বলত। দাদা অনেক রাগী। দাদা যখন বাবাকে মারতে আসত তুমি আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখতে। বাংলা ঘরে নিয়ে লুকিয়ে রাখতে।
-বাংলা ঘরটা এখন আর নেই। তোর দাদা কিচ্ছু রাখে না। এখানে ঘরটা থাকলে কী এমন হতো?
-এখনো মুখ ঘুরিয়ে রাখো। আমি বলব কেন?
-বল না। তোকে কালই আমি কৈ মাছের ঝোল করে খাওয়াব। তোর দাদাকে বলব গঞ্জ থেকে কৈ মাছ নিয়ে আসতে।
-হ্যাঁ তোমার কথা বলত। দাদার কথা বলত। দাদা অনেক রাগী। দাদা যখন বাবাকে মারতে আসত তুমি আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখতে। বাংলা ঘরে নিয়ে লুকিয়ে রাখতে।
-বাংলা ঘরটা এখন আর নেই। তোর দাদা কিচ্ছু রাখে না। এখানে ঘরটা থাকলে কী এমন হতো?
পরদিন দাদী আমাকে বলে দিলেন, তোর দাদাকে বলবি কৈ মাছ নিয়ে আসতে। কিন্তু আমি যখনই গঞ্জে দাদাকে বললাম, দাদী বলেছে কৈ মাছ নিয়ে যেতে। দাদা আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, তোর দাদী বলেছে কৈ মাছের কথা?
আমি বললাম হ্যাঁ। দাদীকে বলেছি কৈ মাছের ঝোল আমার পছন্দ। তখন দাদী আসার সময় বলে দিল যেন কৈ মাছ নিয়ে যাই।
দাদা কিছুক্ষন চুপ থেকে বললেন, তোর দাদী অনেক বছর হলো কৈ মাছ খায় না। তোর উছিলায় যখন খাবে, আজ অনেক মাছ কিনব।
আমি বললাম হ্যাঁ। দাদীকে বলেছি কৈ মাছের ঝোল আমার পছন্দ। তখন দাদী আসার সময় বলে দিল যেন কৈ মাছ নিয়ে যাই।
দাদা কিছুক্ষন চুপ থেকে বললেন, তোর দাদী অনেক বছর হলো কৈ মাছ খায় না। তোর উছিলায় যখন খাবে, আজ অনেক মাছ কিনব।
বিকেল সাড়ে তিনটা। দাদা চারটা অবধি ঘুমান। আজ তিনি ঘুমাননি। কৈ মাছ কাটাকুটি দেখছেন। দাদী কারো বারণ না মেনে চাচীর সাথে নিজেও মাছ কুটতে লাগলেন বটিতে। খড় কুটার ছাই দিয়ে মেখে কৈ মাছের বড় কাটাগুলো কাটা হচ্ছে। দাদা বললেন, হীরার মা আজ কত বছর পর কৈ মাছ কিনলাম বলো তো। আগে তো কৈ মাছ কিনতে হতো না। বৈশাখ মাসে ঝড় হলে উঠানেই কৈ মাছ আসত।
আমি অবাক হলাম দাদার মুখে কথাটি শুনে। কৈ মাছ নাকি আকাশের গুড়গুড় শব্দে বাড়ির উঠানে চলে আসত।
শানু ছোট বালতিতে করে পানি নিয়ে আসল। মাছ কেটে পানিতে ভিজানোর জন্য। দাদার কথাটির কোনো উত্তর দেয়নি দাদী।
দাদা এবার একটু রেগেই বললেন, গতকাল শানুর বিয়ের কথা বলার পর থেকে তোমরা কেউ ঠিকমত আমার কথার উত্তরই দেও না। কী এমন বলে ফেলেছি আমি? যা কিছুই ঘটেছিল তাতে তো শানুর কোনো দোষ নেই।
আমি বোকার মত প্রশ্ন করে ফেললাম, কী হয়েছিল দাদা?
আমি জানি এমন সময় এই প্রশ্ন করাটা উচিত হয়নি। কিন্তু ঐ যে ছোট বেলা থেকে সব কিছু আগ্রহ ভরে জানতে চাই। যে কারণে জানতে চেয়েছিলাম দাদীর কাছেও, গত রাতে।
দাদা বললেন, মাস ছয়েক আগে শানুর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। এই বাড়ির উঠানে বড় প্যান্ডেল করা হয়েছিল। রায়পুর শ্রীরামপুর বাজার থেকে লাইটিং এনেছিল শানুর বাবা। মেহমানরা ছিল বাড়ি ভর্তি। গায়ে হলুদে শানুর দুই হাত ভর্তি মেনদিও ছিল। কিন্তু সে বিয়েটা শানুর ভাগ্যে ছিল না। তার হাতের মেহেদীর রং চলে গেছে। স্বামীর ঘর করা হয়নি।
-কেন দাদা? বিয়েটা হয়নি কেন?
-বিয়েটা কাছেই ছিল। শ্যাওড়াতলী ফটিক মাস্টারের ছেলের সাথে। গায়ে হলুদের রাতে ছেলের বাড়িতে ডেকসিট বাজাতে চেয়েছিল। ডেকসিট চিনোস? স্পীকার নাকি কয়। ঐগুলা বাজাইতে কারেন্ট লাগব। তো জামাই কারেন্টের খাম্বায় উঠছিল। আর নাইমা আসতে পারে নাই। কারেন্টের শটে মারা গেছে। পরে এই সব আয়োজন শেষ। মেহমানরা যার যার ভাবে চলে গেল। বাবুর্চিও বড় পাতিলে আর রান্না বসায়নি। দই বসানো ছিল ঘর ভর্তি, সব নষ্ট হইছে। আমার নাতনির কপাল পোঁড়া।
আমি অবাক হলাম দাদার মুখে কথাটি শুনে। কৈ মাছ নাকি আকাশের গুড়গুড় শব্দে বাড়ির উঠানে চলে আসত।
শানু ছোট বালতিতে করে পানি নিয়ে আসল। মাছ কেটে পানিতে ভিজানোর জন্য। দাদার কথাটির কোনো উত্তর দেয়নি দাদী।
দাদা এবার একটু রেগেই বললেন, গতকাল শানুর বিয়ের কথা বলার পর থেকে তোমরা কেউ ঠিকমত আমার কথার উত্তরই দেও না। কী এমন বলে ফেলেছি আমি? যা কিছুই ঘটেছিল তাতে তো শানুর কোনো দোষ নেই।
আমি বোকার মত প্রশ্ন করে ফেললাম, কী হয়েছিল দাদা?
আমি জানি এমন সময় এই প্রশ্ন করাটা উচিত হয়নি। কিন্তু ঐ যে ছোট বেলা থেকে সব কিছু আগ্রহ ভরে জানতে চাই। যে কারণে জানতে চেয়েছিলাম দাদীর কাছেও, গত রাতে।
দাদা বললেন, মাস ছয়েক আগে শানুর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। এই বাড়ির উঠানে বড় প্যান্ডেল করা হয়েছিল। রায়পুর শ্রীরামপুর বাজার থেকে লাইটিং এনেছিল শানুর বাবা। মেহমানরা ছিল বাড়ি ভর্তি। গায়ে হলুদে শানুর দুই হাত ভর্তি মেনদিও ছিল। কিন্তু সে বিয়েটা শানুর ভাগ্যে ছিল না। তার হাতের মেহেদীর রং চলে গেছে। স্বামীর ঘর করা হয়নি।
-কেন দাদা? বিয়েটা হয়নি কেন?
-বিয়েটা কাছেই ছিল। শ্যাওড়াতলী ফটিক মাস্টারের ছেলের সাথে। গায়ে হলুদের রাতে ছেলের বাড়িতে ডেকসিট বাজাতে চেয়েছিল। ডেকসিট চিনোস? স্পীকার নাকি কয়। ঐগুলা বাজাইতে কারেন্ট লাগব। তো জামাই কারেন্টের খাম্বায় উঠছিল। আর নাইমা আসতে পারে নাই। কারেন্টের শটে মারা গেছে। পরে এই সব আয়োজন শেষ। মেহমানরা যার যার ভাবে চলে গেল। বাবুর্চিও বড় পাতিলে আর রান্না বসায়নি। দই বসানো ছিল ঘর ভর্তি, সব নষ্ট হইছে। আমার নাতনির কপাল পোঁড়া।
শানু এখান থেকে চলে গেল। চলে যাবার মতই ঘটনা ঘটেছে। শানুর মন যে খুব খারাপ হয়েছে তা আমি বুঝতে পেরেছি। আর এতগুলো দিন কেন মেয়েটা চুপচাপ থাকত তারও একটা ধারণা জন্মে গেল। শানুর মা বা দাদীর মুখেও কোনো কথা নেই। এ যেন জীবনের এক বিরহ গাঁথা। আমি এখানে বড়দের মত একটি কথা বলে ফেললাম,
-আচ্ছা দাদা, শানুর তো আর বিয়ে হয়নি। আর এখানে শানুরও কোনো দোষ নেই। তাহলে এটা নিয়ে কেনই বা এই পরিবারের সবার মন খারাপ থাকবে। ওর তো আবার বিয়ে হবে, তাই না?
দাদা বললেন, নাতিরে। বাড়ি ভর্তি মেহমান ছিল। হাতে মেহেদী পরানো হয়েছিল। তার মধ্য এমন অঘটন ঘটে যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়। আর গ্রামের মানুষের সাথে তো তোর পরিচয় নেই। মানুষের স্বভাব চরিত্রও তোর জানা নেই। এই পুরো নয়াচরে প্রতিটি ঘরে জানে মফিজ উদ্দিন খন্দকারের নাতনির বিয়ের আগের দিন তার জামাই মরছে। এত সহজে নতুন করে বিয়ে হয়ে যাবে সেটাও ভাবিস না। চেষ্টা তো আমরা কম করছি না।
-এই নয়াচরেই বিয়ে দিতে হবে এমন তো কথা নেই।
-এই গ্রাম ছাড়াও আরো দুইটা বিয়ে আসছিল। ঐ যে বললাম না, গ্রামের মানুষদের তো তুই চিনিস না। ছেলে পক্ষ শানুকে দেখে চলে যাবার পর কেউ কেউ সেই ছেলে পক্ষকে অর্ধেক পথ গিয়ে শানুর বিয়ের অঘটনের কথা বলে আসে। যে মানুষগুলো সকাল সন্ধা আমাদের সম্মান করে, সারাজীবন যাদের উপকার করে এসেছি তারাও আমার ক্ষতি করে মজা পায়রে নাতি।
-আচ্ছা দাদা, শানুর তো আর বিয়ে হয়নি। আর এখানে শানুরও কোনো দোষ নেই। তাহলে এটা নিয়ে কেনই বা এই পরিবারের সবার মন খারাপ থাকবে। ওর তো আবার বিয়ে হবে, তাই না?
দাদা বললেন, নাতিরে। বাড়ি ভর্তি মেহমান ছিল। হাতে মেহেদী পরানো হয়েছিল। তার মধ্য এমন অঘটন ঘটে যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়। আর গ্রামের মানুষের সাথে তো তোর পরিচয় নেই। মানুষের স্বভাব চরিত্রও তোর জানা নেই। এই পুরো নয়াচরে প্রতিটি ঘরে জানে মফিজ উদ্দিন খন্দকারের নাতনির বিয়ের আগের দিন তার জামাই মরছে। এত সহজে নতুন করে বিয়ে হয়ে যাবে সেটাও ভাবিস না। চেষ্টা তো আমরা কম করছি না।
-এই নয়াচরেই বিয়ে দিতে হবে এমন তো কথা নেই।
-এই গ্রাম ছাড়াও আরো দুইটা বিয়ে আসছিল। ঐ যে বললাম না, গ্রামের মানুষদের তো তুই চিনিস না। ছেলে পক্ষ শানুকে দেখে চলে যাবার পর কেউ কেউ সেই ছেলে পক্ষকে অর্ধেক পথ গিয়ে শানুর বিয়ের অঘটনের কথা বলে আসে। যে মানুষগুলো সকাল সন্ধা আমাদের সম্মান করে, সারাজীবন যাদের উপকার করে এসেছি তারাও আমার ক্ষতি করে মজা পায়রে নাতি।
আমি কিছু বলতে গিয়েও বলিনি। দাদাও আমার কথা কিছু বলতে গিয়ে আবার আটকে গেল। শুধু বলল, আমার নাতনিটা অনেক ভালো। এমন মেয়ে পুরো গ্রামে হাতে গোনা দুই চারটা পাওয়া যাবে না। তোর মত কোনো ভালো ছেলে যদি পেয়ে যেতাম আমি সেই ছেলেকে এই বুকটার মধ্যে জায়গা দিতাম।
এবার চাচী আর দাদী দু'জনেই দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তবে কিছু বলছেন না। আমারো এখানে কিছু বলা ঠিক হবে বলে মনে হয় না। কিন্তু দাদা আবারো বললেন, নাতি তুই তো বিয়ে শাদি করিসনি। তোর বাবা মায়ের কেমন ছেলের বউ লাগবে? আমার নাতনিটারে পছন্দ করবে?
দাদার চোখ ছলছল করছে। আমি দাদার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিয়েছি। কিছু বলতেও পারছি না। দাদী এবার মুখ খুলে বললেন, বুড়া বয়সে তোমার বুদ্ধি কমে নাকি? নাতিটাকে কেমন লজ্জায় ফেলছ। কথা বলতে হলে ওর বাবা মায়ের সাথে বলবে। আর নাতি যদি চায় তার বাবা মায়ের সাথে কথা বলবে। তুমি আগ বাড়িয়ে তারে এসব কী বলা শুরু করছ?
দাদা বললেন, ঠিকই তো। নাতি নরসিংদী কোথায় তোদের বাড়ি? শানুর বাপ তো প্রায়ই যায় নরসিংদীতে।
আমি বললাম, নরসিংদী শাপলা চত্তরের কাছে। বলে সেখান থেকে কিছু না বলে চলে এসেছি। দাদী ফিসফিস করে বলছে, শরম পাইছে।
এবার চাচী আর দাদী দু'জনেই দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তবে কিছু বলছেন না। আমারো এখানে কিছু বলা ঠিক হবে বলে মনে হয় না। কিন্তু দাদা আবারো বললেন, নাতি তুই তো বিয়ে শাদি করিসনি। তোর বাবা মায়ের কেমন ছেলের বউ লাগবে? আমার নাতনিটারে পছন্দ করবে?
দাদার চোখ ছলছল করছে। আমি দাদার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিয়েছি। কিছু বলতেও পারছি না। দাদী এবার মুখ খুলে বললেন, বুড়া বয়সে তোমার বুদ্ধি কমে নাকি? নাতিটাকে কেমন লজ্জায় ফেলছ। কথা বলতে হলে ওর বাবা মায়ের সাথে বলবে। আর নাতি যদি চায় তার বাবা মায়ের সাথে কথা বলবে। তুমি আগ বাড়িয়ে তারে এসব কী বলা শুরু করছ?
দাদা বললেন, ঠিকই তো। নাতি নরসিংদী কোথায় তোদের বাড়ি? শানুর বাপ তো প্রায়ই যায় নরসিংদীতে।
আমি বললাম, নরসিংদী শাপলা চত্তরের কাছে। বলে সেখান থেকে কিছু না বলে চলে এসেছি। দাদী ফিসফিস করে বলছে, শরম পাইছে।
আমার বুকের ভিতরটা কেমন যেন করছে। কেমন এক গোলক ধাঁধাঁয় পড়েছি আমি। শানু আমার চাচাত বোন হয়। এই জগতে চাচাত ভাই বোনের বিবাহ আইন ও মুসলিম ধর্মীয় রীতিতে স্বীকৃত। কিন্তু দাদা তো জানেন না আমি তার আপন নাতি। জানার পর কি তিনি বিয়ে দিতে রাজী হবেন? আর শানুই কি রাজী হবে মন থেকে? আমিই বা কতটুকু রাজী? আমি তো শুধু শানুর চোখের গল্পটা পড়তে চেয়েছিলাম। গল্প পড়তে না পারলেও দাদার মুখে শুনেছি। কিন্তু সেই গল্পে কি আমি কখনো জড়াতে চেয়েছিলাম? আমার এখন কী করা উচিত? জোনাকিকে বলেছিলাম আমি একদিন এক রাজকুমারী নিয়ে আসব অনেক দূর থেকে। শানুই কি তবে সেই রাজকুমারী? শানু জোনাকির মত সুন্দরী না। তবে কেন যেন শানুর মধ্যে এক গভীর মায়া আছে। আমি কি সেই মায়ায় পড়েছিলাম কখনো? আমার মনকে প্রশ্ন করলে মন অনেক প্রশ্নেরই কোনো উত্তর দেয় না। আমার এখনকার প্রশ্নেরও কোনো উত্তর নেই আমার মনে। জীবনকে মানুষ কখনো নিজের মত করে সাজাতে পারে না। জীবন কখনো হয়ে যায় নাটকের মত। আবার নাটকও তৈরী হয় মানুষের জীবন থেকে। আবার বাস্তবতা মানুষকে মাঝেমধ্যে এমন পরিস্থিতীতে নিয়ে দাঁড় করায় যা সে কখনো এমনটা ভেবেও দেখেনি।
পাটের গুদামে বসে আছি। কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছে। রাতের অনেকটা সময় ঘুম হয়নি আমার। এরই মধ্যে দাদা ঘুরে ফিরে আবার এসে আমার পাশে বসলেন। এবার সরাসরি বলতে লাগলেন, বুঝলি নাতি, জগতে মানুষ চেনা বড় দায়। তবে আমি মানুষের চেহারা দেখে মানুষ চিনতে পারি। যেমন প্রথমদিন দেখা মাত্রই তোকে সাথে করে নিয়ে এসে চাকরি দিয়ে দিলাম। কারণ আমি তোর চেহারার দিকে তাকানোর পর মন বলছিল, তুই ভালো একটা ছেলে। আসলেও তাই, আমি তোকে নিজের নাতির মতই ভাবি।"
আমি কিছু বলছি না। দাদা কেন আমার প্রশংসা করছে আমি কিছুটা টের পেয়েছি। দাদা আবার বললেন, শানুও কিন্তু অনেক ভালো মেয়ে। বললাম না আমি মানুষ চিনি। বয়স তো কম হয়নি, সত্তরের উপর আরো দুই।
দাদা আবারো একটু থামলেন। তবুও আমি চুপ করেই আছি। দাদা চেয়ার টেনে আরেকটু কাছে এলেন। বললেন, জানিস নাতি আমার কিন্তু অনেক সম্পত্তি। তিন ছেলে ছিল। এক ছেলে তো মারা গেল। তবুও কিন্তু আমার সম্পত্তি দুই ছেলের নামেই লিখে দিয়েছি, তোর দাদী ছাড়া কেউ জানে না।
এবার আমি জানতে চাইলাম, সত্যি করে বলেন তো দাদা আজ কী হয়েছে আপনার?
-তুই এখনো বুঝোস না আমি কি বলতে চাই?
-না দাদা, আমার বয়স তো সত্তর না। এত জ্ঞান তো নেই আপনার মত। ইঙ্গিতের কথা বুঝতে পারি না।
-দেখ নাতি, বললামই তোকে আপন নাতির মতই ভাবি আমি। শানুর বিষয়টা এতদিন তুই জানতি না, নতুন করে তোর সাথে সাথে বিষয়টা বাড়িতেও আবার সবার মনে পড়েছে। সবারই মন খারাপ। আমি বাড়িতে ঢুকে একেকজনের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। হঠাৎই তোর কথা আমার মনে হলো। বৃদ্ধ বয়সেও তোকে আমার বন্ধু মনে হয়। একটা লাঠি মনে হয়। যাতে ভর করে, ভরসা করে আমি চলতে পারি। তাই বলে সরাসরি বলতে পারি না তুই শানুকে বিয়ে কর। কিন্তু এত কিছু বলার উদ্দেশ্য একটাই, আমার নাতনীটা অনেক ভালো। আমার জানার ইচ্ছে তোর কি একটুও পছন্দ হয় না শানুকে?
আমি কিছু বলছি না। দাদা কেন আমার প্রশংসা করছে আমি কিছুটা টের পেয়েছি। দাদা আবার বললেন, শানুও কিন্তু অনেক ভালো মেয়ে। বললাম না আমি মানুষ চিনি। বয়স তো কম হয়নি, সত্তরের উপর আরো দুই।
দাদা আবারো একটু থামলেন। তবুও আমি চুপ করেই আছি। দাদা চেয়ার টেনে আরেকটু কাছে এলেন। বললেন, জানিস নাতি আমার কিন্তু অনেক সম্পত্তি। তিন ছেলে ছিল। এক ছেলে তো মারা গেল। তবুও কিন্তু আমার সম্পত্তি দুই ছেলের নামেই লিখে দিয়েছি, তোর দাদী ছাড়া কেউ জানে না।
এবার আমি জানতে চাইলাম, সত্যি করে বলেন তো দাদা আজ কী হয়েছে আপনার?
-তুই এখনো বুঝোস না আমি কি বলতে চাই?
-না দাদা, আমার বয়স তো সত্তর না। এত জ্ঞান তো নেই আপনার মত। ইঙ্গিতের কথা বুঝতে পারি না।
-দেখ নাতি, বললামই তোকে আপন নাতির মতই ভাবি আমি। শানুর বিষয়টা এতদিন তুই জানতি না, নতুন করে তোর সাথে সাথে বিষয়টা বাড়িতেও আবার সবার মনে পড়েছে। সবারই মন খারাপ। আমি বাড়িতে ঢুকে একেকজনের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। হঠাৎই তোর কথা আমার মনে হলো। বৃদ্ধ বয়সেও তোকে আমার বন্ধু মনে হয়। একটা লাঠি মনে হয়। যাতে ভর করে, ভরসা করে আমি চলতে পারি। তাই বলে সরাসরি বলতে পারি না তুই শানুকে বিয়ে কর। কিন্তু এত কিছু বলার উদ্দেশ্য একটাই, আমার নাতনীটা অনেক ভালো। আমার জানার ইচ্ছে তোর কি একটুও পছন্দ হয় না শানুকে?
দাদার চোখ ছল ছল। আমার এই মূহূর্তে কী বলা উচিত ঠিক বুঝতেছি না। তবুও বললাম, দাদা শানু অনেক ভালো একটি মেয়ে। তাকে অপছন্দ করার মত কোনো কারণ নেই। কিন্তু বাবা...
-তোর বাবার সাথে আমি কথা বলব। নিয়ে আয় একদিন। দরকার হলে শানুর বাবাকে পাঠাব নরসিংদী কথা বলার জন্য।
-দাদা আপনি বুঝতে পারছেন না। আসলে বাবাকে আপনি বাড়িতেই ঢুকতে দিবেন না।
-কী বলিস এসব? বাড়িতে ঢুকতে দেব না কেন? এই নাতি বল কেন বাড়িতে ঢুকতে দেব না?
আমি হঠাৎ দাদার হাত ধরে ফেলেছি। তারপর বললাম, দাদা বিশ্বাস করেন আমি আগে জানতাম না আপনি মফিজ উদ্দিন খন্দকার। আমি যখন জেনেছি তখন চলে যেতেও পারিনি।
দাদা আমার হাতদুটো চেপে ধরে বললেন, চলে যাবি মানে? কী হয়েছে?
-কারণ আমার দাদার নাম মফিজউদ্দিন খন্দকার, বাবার নাম রতন খন্দকার।
-তোর বাবার সাথে আমি কথা বলব। নিয়ে আয় একদিন। দরকার হলে শানুর বাবাকে পাঠাব নরসিংদী কথা বলার জন্য।
-দাদা আপনি বুঝতে পারছেন না। আসলে বাবাকে আপনি বাড়িতেই ঢুকতে দিবেন না।
-কী বলিস এসব? বাড়িতে ঢুকতে দেব না কেন? এই নাতি বল কেন বাড়িতে ঢুকতে দেব না?
আমি হঠাৎ দাদার হাত ধরে ফেলেছি। তারপর বললাম, দাদা বিশ্বাস করেন আমি আগে জানতাম না আপনি মফিজ উদ্দিন খন্দকার। আমি যখন জেনেছি তখন চলে যেতেও পারিনি।
দাদা আমার হাতদুটো চেপে ধরে বললেন, চলে যাবি মানে? কী হয়েছে?
-কারণ আমার দাদার নাম মফিজউদ্দিন খন্দকার, বাবার নাম রতন খন্দকার।
দাদা অনেক্ষন চুপ ছিলেন। তারপর কিছু না বলে বের হয়ে গেলেন। একটু পর পাতিলে করে কী যেন নিয়ে এসে বললেন, চল বাড়িতে। আজ দোকান বন্ধ।
আমি মনে মনে ভাবলাম আজ হয়তো আমাকে বাড়ি থেকেই বের করে দেবে। দাদা গেইট দিয়ে ঢুকেই সবাইকে ডাকছে, হীরার মা কই তুমি? শানু কই গেলিরে বইন?;
দাদী এল, শানু আর চাচীও এল। আমি পেছন পেছন গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। দাদা পাতিলের উপর থেকে কাগজ ছিঁড়ে মিষ্টি বের করে বললেন, সবাই মিষ্টি খাও। এই শাওন এই নে খা।
সবাই মিষ্টি খাচ্ছে। দাদী মিষ্টি হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করল কিসের মিষ্টি?
দাদা বললেন, আমি শানুর বিয়ে ঠিক করেছি আবার।
সবাই মোটামোটি একটু অবাক হলো। শানু পিছিয়ে চলে যেতে চাইলে দাদা বললেন, হীরার মেয়ে শানুর সাথে রতনের ছেলে শাওনের বিয়ে। শাওন রাজী, শুধু তার বাবা মা'কে নিয়ে চিন্তা। শাওনকে পাঠিয়ে দাও ওর বাবা মা'কে নিয়ে আসুক আমরা কথা বলি।
দাদার চোখে পানি, কেন যেন পানি। দাদীর চোখও ছলছল। শানু পেছন ফিরে আর তাকায়নি। তাই বুঝতে পারিনি শানু বিয়ের কথারশুনে লজ্জা পেয়েছে নাকি মন খারাপ করে চলে গেছে। আমি স্তব্ধ হয়ে আছি, জগতে এভাবেও বিয়ের কথা হয়।
দাদী বললেন, নিজের নাতিকে চিনতে এত সময় লাগলো?
দাদা বললেন, প্রথমদিন হাঁটুভাঙ্গা স্টেশন থেকে আশার পথে তাকে পথম দেখেই কেমন যেন আপন মনে হলো। সাথে করে নিয়া আসলাম। এতটা আপন এটা ভাবিনি হীরার মা।
আমি মনে মনে ভাবলাম আজ হয়তো আমাকে বাড়ি থেকেই বের করে দেবে। দাদা গেইট দিয়ে ঢুকেই সবাইকে ডাকছে, হীরার মা কই তুমি? শানু কই গেলিরে বইন?;
দাদী এল, শানু আর চাচীও এল। আমি পেছন পেছন গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। দাদা পাতিলের উপর থেকে কাগজ ছিঁড়ে মিষ্টি বের করে বললেন, সবাই মিষ্টি খাও। এই শাওন এই নে খা।
সবাই মিষ্টি খাচ্ছে। দাদী মিষ্টি হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করল কিসের মিষ্টি?
দাদা বললেন, আমি শানুর বিয়ে ঠিক করেছি আবার।
সবাই মোটামোটি একটু অবাক হলো। শানু পিছিয়ে চলে যেতে চাইলে দাদা বললেন, হীরার মেয়ে শানুর সাথে রতনের ছেলে শাওনের বিয়ে। শাওন রাজী, শুধু তার বাবা মা'কে নিয়ে চিন্তা। শাওনকে পাঠিয়ে দাও ওর বাবা মা'কে নিয়ে আসুক আমরা কথা বলি।
দাদার চোখে পানি, কেন যেন পানি। দাদীর চোখও ছলছল। শানু পেছন ফিরে আর তাকায়নি। তাই বুঝতে পারিনি শানু বিয়ের কথারশুনে লজ্জা পেয়েছে নাকি মন খারাপ করে চলে গেছে। আমি স্তব্ধ হয়ে আছি, জগতে এভাবেও বিয়ের কথা হয়।
দাদী বললেন, নিজের নাতিকে চিনতে এত সময় লাগলো?
দাদা বললেন, প্রথমদিন হাঁটুভাঙ্গা স্টেশন থেকে আশার পথে তাকে পথম দেখেই কেমন যেন আপন মনে হলো। সাথে করে নিয়া আসলাম। এতটা আপন এটা ভাবিনি হীরার মা।
বিকেলে আমি বের হবো নরিংদীর উদ্দেশ্যে। দুপুরে খাবার পর নিজের ঘরেই পায়চারি করছিলাম। মনে মনে আশা করছিলাম শানুর সাথে দেখাটা হোক। শানু পানি আনতে যাচ্ছিল নলকূপে। আমি ডাকলাম, শানু দাঁড়ালো কিন্তু ঘরে আসেনি। শানু নিজেই বলল, বেঞ্চের কাছে আসেন।
আমি বুঝে নিলাম, শানু বেশ বুদ্ধিমতিও বটে। এখানে কথা বললে কেউ না কেউ দেখবে। পূর্ব দিকের বেঞ্চটিতে বসে মাঝে মাঝে আমি বই পড়ি। বেশ নিরিবিলি জায়গা
"শানু দাঁড়িয়ে আছে পানির জগ নিয়ে। আমি বললাম, আসলে কী থেকে কী হয়ে গেল বা হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। তুমি তো জানো, চোখের সামনেই হারানো তোমাদের সবাইকে খুঁজে পেলাম। কিন্তু তোমাদের খুঁজে পাওয়ার সাথে তোমাকে খুঁজে পাব বা পাবার দরকার ছিল সেটা ভেবে দেখিনি কখনো। দাদা আমাকে আমাদের বাড়ি পাঠাচ্ছেন বাবা মা'কে নিয়ে আসতে। আমি এখানে অতিথী হয়ে এসেছিলাম। এখন পরিচিত, আত্মীয়। তুমি যদি চাও তাহলে আমি বাবা মা'কে নিয়ে আসব। আর যদি তোমার আপত্তি থাকে, আমি যাব ঠিকই কিন্তু আর ফিরে আসব না।"
আমি বুঝে নিলাম, শানু বেশ বুদ্ধিমতিও বটে। এখানে কথা বললে কেউ না কেউ দেখবে। পূর্ব দিকের বেঞ্চটিতে বসে মাঝে মাঝে আমি বই পড়ি। বেশ নিরিবিলি জায়গা
"শানু দাঁড়িয়ে আছে পানির জগ নিয়ে। আমি বললাম, আসলে কী থেকে কী হয়ে গেল বা হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। তুমি তো জানো, চোখের সামনেই হারানো তোমাদের সবাইকে খুঁজে পেলাম। কিন্তু তোমাদের খুঁজে পাওয়ার সাথে তোমাকে খুঁজে পাব বা পাবার দরকার ছিল সেটা ভেবে দেখিনি কখনো। দাদা আমাকে আমাদের বাড়ি পাঠাচ্ছেন বাবা মা'কে নিয়ে আসতে। আমি এখানে অতিথী হয়ে এসেছিলাম। এখন পরিচিত, আত্মীয়। তুমি যদি চাও তাহলে আমি বাবা মা'কে নিয়ে আসব। আর যদি তোমার আপত্তি থাকে, আমি যাব ঠিকই কিন্তু আর ফিরে আসব না।"
শানু কিছুক্ষন পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে থেকে বলল, আমি আগে খুব চঞ্চল ছিলাম। এখন শান্ত হয়ে গেছি। কিছু দুর্ঘটনা অল্প দিনের না, সারাজীবনের। আমি আপনাকে দুইটা কথা বলব, এক, যদি আমাকে করুণা করে, আমার বিয়ে হবে না ভেবে আমাকে বিয়ে করতে রাজী হোন বা ইচ্ছে পোষণ করেন তাহলে আপনার ফিরে আসার দরকার নেই। আর আমার যে বিয়ে হবে না, এটা ভুল ধারণা। আজ হোক কাল হোক বিয়ে আমার হবে। হোক ভালো উচ্চ ঘর কিংবা কোনো গরীব ঘরে। সুতরাং আমাকে করুণা করার কিছু নেই এখানে।
দুই, আপনি যদি আমাকে পছন্দ করে থাকেন। তাতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। বা যদি মনে করেন দাদা আপনাকে প্রস্তাব করেছে আমাকে বিয়ে করার জন্য। আপনি যদি ভেবে থাকেন, আমাকে বিয়ে করলে রতন চাচা ফিরে আসবে। বা দাদা রতন চাচাকে বুকে টেনে নিবে। দাদা দাদী শেষ বয়সটাতে একটু সুখ দেখতে পাবে। সেটা মনে করেও যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজী হোন, তাতেও আমার আপত্তি নেই আমি রাজী। একটি পরিবারের সুখ ফিরিয়ে দিতে, ভাঙ্গা পরিবারকে জোড়া লাগাতে গিয়ে নতুন সম্পর্কের বন্ধনকে তখন করুণা বলব না আমি।
দুই, আপনি যদি আমাকে পছন্দ করে থাকেন। তাতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। বা যদি মনে করেন দাদা আপনাকে প্রস্তাব করেছে আমাকে বিয়ে করার জন্য। আপনি যদি ভেবে থাকেন, আমাকে বিয়ে করলে রতন চাচা ফিরে আসবে। বা দাদা রতন চাচাকে বুকে টেনে নিবে। দাদা দাদী শেষ বয়সটাতে একটু সুখ দেখতে পাবে। সেটা মনে করেও যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজী হোন, তাতেও আমার আপত্তি নেই আমি রাজী। একটি পরিবারের সুখ ফিরিয়ে দিতে, ভাঙ্গা পরিবারকে জোড়া লাগাতে গিয়ে নতুন সম্পর্কের বন্ধনকে তখন করুণা বলব না আমি।
রাধাগঞ্জ বাজার থেকে সিএনজিতে উঠলাম, নামলাম গিয়ে সোজা আরশীনগর। সেখান থেকে রিক্সা নিয়ে শাপলা চত্ত্বর বাজার।
গেইট দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকার সময় জোনাকির ছোট ভাইটা আমাকে দেখেছে। এখন দৌড়ে তাদের বাড়ি যাচ্ছে, নিশ্চয় জোনাকিকে বলবে আমার আসার কথা।
মা রান্না ঘরে। বাবা চেয়ারে বসে ছিলেন। আমাকে দেখে বাবা কোনো অবাক হয়নি এমন ভাব ধরেছেন। রাগী মানুষদের স্বভাবই এমন। বাবা বললেন, শাওনের মা। তোমার গুণধর ছেলে বউ নিয়ে এসেছে।
আমি তো অবাক, কোথায় আমি বউ নিয়ে আসলাম?
মা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেলেন। গেইট খুলে বাইরে চুপি দিয়ে দেখে এলেন কেউ নেই। বাবাকে মা জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় বউ? কেউ তো নেই।
বাবা বললেন নেই কেন? আমি তো ভেবেছি কোনো মেয়ের সাথে লাইন ছিল তাই আমি বিয়ে ঠিক করাতে মেয়ে নিয়ে পালিয়েছে। সেজন্য ভেবেছি বউ নিয়ে ফিরেছে। যেহেতু বউ নিয়ে ফিরেনি, জোনাকির বাবা মা'কে খবর দাও আর ছেলেকে বুঝাও। মেয়েটার বিয়ে ঠিক হওয়ার পর সে পালিয়ে গেছে। সুতরাং বিয়েটা আবার হবে, তাতে কোনো দোষের নেই।
মা বললেন, এতদিন পর ছেলেটা এলো, ওকে একটু শান্তিমত বসতে দাও।
বাবা বললেন, বসলেও আমার কথা এটাই থাকবে। আর আবারো যদি চলে যায় তাহলে কথা এটাই থাকবে।
গেইট দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকার সময় জোনাকির ছোট ভাইটা আমাকে দেখেছে। এখন দৌড়ে তাদের বাড়ি যাচ্ছে, নিশ্চয় জোনাকিকে বলবে আমার আসার কথা।
মা রান্না ঘরে। বাবা চেয়ারে বসে ছিলেন। আমাকে দেখে বাবা কোনো অবাক হয়নি এমন ভাব ধরেছেন। রাগী মানুষদের স্বভাবই এমন। বাবা বললেন, শাওনের মা। তোমার গুণধর ছেলে বউ নিয়ে এসেছে।
আমি তো অবাক, কোথায় আমি বউ নিয়ে আসলাম?
মা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেলেন। গেইট খুলে বাইরে চুপি দিয়ে দেখে এলেন কেউ নেই। বাবাকে মা জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় বউ? কেউ তো নেই।
বাবা বললেন নেই কেন? আমি তো ভেবেছি কোনো মেয়ের সাথে লাইন ছিল তাই আমি বিয়ে ঠিক করাতে মেয়ে নিয়ে পালিয়েছে। সেজন্য ভেবেছি বউ নিয়ে ফিরেছে। যেহেতু বউ নিয়ে ফিরেনি, জোনাকির বাবা মা'কে খবর দাও আর ছেলেকে বুঝাও। মেয়েটার বিয়ে ঠিক হওয়ার পর সে পালিয়ে গেছে। সুতরাং বিয়েটা আবার হবে, তাতে কোনো দোষের নেই।
মা বললেন, এতদিন পর ছেলেটা এলো, ওকে একটু শান্তিমত বসতে দাও।
বাবা বললেন, বসলেও আমার কথা এটাই থাকবে। আর আবারো যদি চলে যায় তাহলে কথা এটাই থাকবে।
চলবে...
Writer:- ওমর ফারুক শ্রাবণ