> রোমান্টিক অত্যাচার পর্ব ৭, ৮, ৯ | Romantic Love Story | Love Story Bangla | Bangla New Love Story
-->

রোমান্টিক অত্যাচার পর্ব ৭, ৮, ৯ | Romantic Love Story | Love Story Bangla | Bangla New Love Story

আমিঃ এই মূহুর্তে আমার নিজেরই মাথা কাজ করছেনা ওনাকে কিভাবে control করবো? হায় খোদা তুমি আমাকে কেমন পরিস্থিতে ফেললে.......
-স্যার আপনার sense স্বাভাবিক নেই নিজেকে control করার চেষ্টা করুন। আপনার অনেক নেশা হয়ে গেছে।
আশফিঃ নেশা হয়ে গেছে??? হ্যা,আমার মাহির ভালোবাসা পাওয়ার নেশা হয়ে গেছে, মাহিকে কাছে পাওয়ার নেশা হয়ে গেছে। 
আমিঃ আমি ওনার থেকে বারবার দুরে সরার চেষ্টা করছি আর উনি বারবার ই আমাকে কাছে টেনে নিয়াসছে।
-কি যা তা বলছেন আপনি এসব?ছাড়ুন আমাকে আপনি আপনার সীমার বাইরে চলে যাচ্ছেন।
আশফিঃ কি বললে তুমি? সীমার বাইরে? মাহি?তোমার মনে কি আমার জন্য একটুও ফিলিংস নেই? এতুটুকুও ভালোবাসোনা আমাকে? 
আমিঃ কথাটা বলেই আমার কোমোর ধরে উনি অনেক জোরে টেনে ওনার কাছে টেনে নিয়ে এনে বললেন,
- কি হলো বলো? (আশফি)
আমি তখন থেকেই আমার দু হাত দিয়ে গায়ের সবটুকু জোর দিয়ে ওনাকে ছাড়ানের চেষ্টা করছি। উনি তাতে খুব রেগে গিয়ে আমার দু হাত ওনার দুহাত দিয়ে সরিয়ে আমার পেছনে ধরে ওনার এক হাতের মুঠোই আমার দুটো হাত শক্ত করে ধরলেন। ওনার অনেক কাছে এগিয়ে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তার কিছুক্ষণ পর উনি আমার শার্টের বাটম এর দিকে তাকিয়ে ওটা খোলার জন্য হাত বাড়ালেন। আমি ভয় পেয়ে এটাই ভেবে নিলাম আজকেই আমার সবকিছু শেষ? আমি চিৎকার করে ওনাকে বলছি প্লিজ আমাকে ছাড়ুন। কিন্তু চারপাশে music এর আওয়াজে কেউ আমার চিৎকার শুনছেনা। আমি কান্না করে ওনাকে অনেকবার request করে বলছি 
-আপনার পায়ে পরি আমার এত বড় ক্ষতি করবেন না। কিন্তু উনি আমার কোনো কথাই কানে নিচ্ছেননা। হঠাৎ উনি আমার শার্টের ২য় আর ৩য় বাটম গুলো খুলে ফেললেন। আমি দেখলাম উনি আমার বুকের ডানপাশের লাল তিলটার দিকে তাকিয়ে আছেন। আস্তে আস্তে সেটার দিকে উনি মুখ বাড়াচ্ছেন ( তিলটাই কিস করার জন্য)
তখন খেয়াল করলাম আমার হাত দুটো উনি হালকা ভাবে ধরে আছে। আমি সেই সুযোগে হাত ছাড়িয়ে অনেক জোরে ওনাকে ধাক্কা দিয়ে বললাম আমি আপনাকে ভালোবাসিনা আর কোনোদিন বাসবোওনা । উনি নিজেকে সামলাতে না পেরে নিচে গিয়ে পরলেন।অনেকটা ব্যথাও পেয়েছেন।আমি সেখান থেকে দৌড়ে চলে আসতে গেলাম। পরে দাড়িয়ে গেলাম পেছন ঘুরে দেখলাম উনি ব্যথায় নিচে শুয়ে কাতরাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছিলামনা কি করবো? ওনাকে গিয়ে টেনে তুলবো নাকি চলে যাবো। তখন ওনার প্রতি আমার আলাদা একটা মায়া কাজ করলো আমি ওনার কাছে গিয়ে টেনে তুলতে চাইলাম উনি তখন আমাকে ধাক্কা দিয়ে উঠে পুল সাইডে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আমি সেখানে গেলাম। 
-আরে আশফি এতক্ষন কোথায় ছিলে? আমরা তোমার গান শোনার অপেক্ষায় আছি। তোমার জন্মদিনে তোমার কন্ঠে গান না শুনলে কেমন হয়।
আমিঃ আশফির হঠাৎ আমারদিকে চোখ পড়লো। (অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল) তারপর উনি একজন কে ডেকে গিটার নিয়ে আসতে বললো। অদ্ভুত মানুষ উনি এই sense এ উনি গান গাইবে? তারপর উনি গিটার নিয়ে পুলের পাশে চেয়ারে গিয়ে বসলেন।
আশফিঃ গানটা তোমাকেই ডেডিকেড করলাম ( মাহির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো)
-meri kismat ke har ek panne pe................ meri jeete ji baad marne ke, meri har ek kal har ek lamhe main...... tu likhde mera useeeeee................... har kahani main sari kisso main dil ki duniya ke sacchi rishtome zindegani ke sari hissome tu likhde mera useeeee..... ae khudaaaaaa ae khudaaaaa jab bana uska hi banaaa....
ae khudaaaaa ae khudaaa jab bana uska hi banaaa....
আমিঃ গানটি গাওয়ার সময় ওনার চোখ দিয়ে পানি পরছিল। গান গাওয়া শেষে উনি উঠে চলে গেলো বাসার ভেতর। আমি ও যখন ফিরে আসবো তখন হাতে ফাইলটা দেখে মনে হলো ফাইলটা খুবই important ওনাকে দিয়ে আসা উচিত। এদিকে নিজে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলামনা আবার অন্য কারো হাত দিয়ে পাঠানো ঠিক হবেনা কারন ফাইলটাতে কোম্পানির কিছু secret information আছে। তাই নিজেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ওনার ড্রয়িংরুমে দরজার কাছে গিয়ে দাড়ালাম দেখলাম উনি দেওয়ালে টাঙ্গানো একটা ছবির সামনে দাড়িয়ে আছে আর চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছে। ছবিটা দেখে মনে হলো ওনার বাবা-মা হবে হয়তো। উনি কিভাবে যেনো বুঝতে পারলো আমি দাড়িয়ে আছি। ছবিটার দিকে তাকিয়ে বললো
-অজস্র পরিমান Drinks করলেও আমার sense একেবারে অস্বাভাবিক হয়না
আমি শুনে কিছু না বলে সোফার ওপর ফাইলটা রেখে বেরিয়ে আসলাম বাইরে। তখন Driver এসে বললো ম্যাডাম স্যার আমাকে আপনাকে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছে। এতকিছুর ভেতরেও উনি এই খেয়ালটা রেখেছে?
আমি বাসায় চলে আসলাম। মা কে কিছু বলতে পারলামনা। 
মাঃ কিরে আমি চিন্তা করে মরে যাচ্ছি। এত দেরি করলি কেনো? 
আমিঃ অফিসের কাজ ছিল অনেক। তাই দেরি হলো। মা আমি রুমে গেলাম ভালো লাগছেনা।
মাঃ মাহি তুই ঠিক আছিস তো কিছু হয়েছে?
আমিঃ না,মা আমি ঠিক আছি। আমার খুব ক্লান্ত লাগছে। তারপর আমি ঘরে চলে আসলাম। কোনোরকম ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লাম। মা অনেকবার খেতে ডাকছিলো আমি গেলামনা। মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে আর বারবার কানে ওনার কথা গুলো বাঁজছে। একটা কথাই বেশি ভাবছি আমি উনি এটা কেনো বললো আমার জন্য দেশে আসা?? উনি কি আমাকে আগে থেকে চিনতেন কিন্তু কিভাবে? উনি তো থাকতেন জাপান উনি বড় হয়েছেন ওখানে তাহলে আমাকে কি করে আগে থেকে চিনবে? উনি কি নেশার ঘোরেই বললো। তা কি করে হয় উনি তো নিজেই বললো ড্রিংক করলেও ওনার সেন্স ঠিক থাকে। নাকি এটাও উনি নেশার ঘোরে বললেন। নাহ্ আর ভাবতে পারছিনা। সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।ঘুমোতে চাইলাম কোনো ভাবেই ঘুম আসছেনা। 
সকাল হয়ে গেলো আজ রাতে ঘুম টা ভালো হয়নি। উঠে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে ভাবছি হঠাৎ মা এসে বললো 
মাঃ তুই এখনো বসে আছিস রেডি না হয়ে? অফিস সময় পার হয়ে যাচ্ছে তো অফিস যাবিনা?
আমিঃ না। যাবোনা।
মাঃ কেনো কি হয়েছে? ছুটি নিয়েছিস শরীর ঠিক আছে তো?
আমিঃ না মা। এমনিই ভালো লাগছেনা। তুমি এতো টেনশন নিওনা আমি একদম ঠিক আছি।
মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ নিচে গাড়ি থামার শব্দ পেলাম। জানালা দিয়ে দেখলাম স্যার এর গাড়ি।
-সর্বনাশ উনি কি এখানে চলে আসলো?
আমি এক দৌড়ে নিচে চলে আসলাম। তারপর দেখলাম ড্রাইভার নামলো।
-ম্যাডাম স্যার আপনাকে নিয়ে যেতে বলেছেন।
-তোমার স্যারকে বলো আমি যাবোনা।
ড্রাইভার স্যারকে ফোন দিয়ে বললো।
মাঃ কিরে কে এসেছে আর তোর ফোন বাঁজছে। ধর।
আমিঃ স্যার ফোন করেছে। আমি রিসিভ করলাম।
-১০ মিনিটের ভেতর অফিসে দেখতে চাই। খুবই urgent. আর যদি না আসো তাহলে আমি চলে আসবো। আর আমি আসলে কি হতে পারে সেটা এখন একটু হলেও idea করতে পেরেছো? 
-ফোন টা কেটে দিল। যেভাবে threat করলো তাকে উনি অস্বাভাবিক কিছু করতেই পারে।
মাঃ কিরে কি সমস্যা? অফিসের বস তোর জন্য গাড়ি পাঠিয়েছে আবার ফোন করে কি বলছে তোকে?
আমিঃ মা আমি ফিরে এসে সবকিছু বলবো। এখন আমাকে যেতে হবে। আমি রেডি হয়ে অফিসে চলে গেলাম।আজকে আর morning জানানোর জন্য ওনার চেম্বারে যাইনি। উনিও আমাকে আজ আর ডেকে পাঠাননি। আর আজকে একবারের জন্য আমার দিকে তাকাননি। আমিই বারবার ওনাকে লক্ষ্য করছি। কেনো যেনো ওনার এই ব্যবহারটা আমি নিতে পারছিনা। তারপর দেখলাম নীলাকে ওনার চেম্বারে যেতে। আমি ওদেরকে লক্ষ্য করছি। স্যার ওর সাথে অনেক ফ্রি ভাবে কথা বলছে। অনেক হাসাহাসি করছে দুজনে। আমার চেম্বারের দিকে উনি একবারও দেখছেনা যে আমি ওনাদের দিকে তাকিয়ে আছি। আমার একদমই এই দৃশগুলো সহ্য হচ্ছেনা। এখন যেটা করলো সেটা দেখার জন্য আমি একেবারে প্রস্তুত ছিলামনা। স্যার ওকে একটা ছোটো giftbox দিলো। দেওয়ার সময় উনি আড়চোখে বারবার আমারদিকে তাকাচ্ছিলো। giftbox থেকে ঘড়ি বের করলো। সেটা উনি নিজে ওর হাতে পরিয়ে দিলো। আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। এটা একটু বেশি বেশি হয়ে গেলো মনে হচ্ছে।নীলা বেরিয়ে এলো।
ও আমার কাছেই আসছে। অনেক খুশি খুশি লাগছে ওকে।
নীলাঃ মাহি,(exited হয়ে). I'm so happy. এই দেখো স্যার আমাকে এই ঘড়িটা gift করেছে আর সেটা নিজেই পরিয়ে দিয়েছে। ঘড়িটা অনেক দামি brand এর তাইনা?
আমিঃ হুম। সুন্দর। তো এটা তোমাকে স্যার কি উপলক্ষে gift করলো? 
নীলাঃ আমাদের কোম্পানি অনেক বড় একটা অর্ডার পেয়েছে আমাদের কাজের দক্ষতার জন্য। তাই স্যার খুশি হয়ে এটা দিয়েছে।
আমিঃ তাহলে তো সবাইকেই দেওয়া উচিত তোমার একা কে দিল কেনো?
নীলাঃ তা তো জানিনা। may be স্যার আমার ওপর ইমপ্রেসড হয়েছে?
আমিঃ খুশিতে নাচতে নাচতে চলে গেলো। হুহ
একদিনেই ইমপ্রেসড হয়ে গেছে। ঢং। যা খুশি করুক আমার কি। কিন্তু আমি আর এখানে কাজ করবোনা। আজকে ছেড়ে দিবো। রেজিগলেশন লেটার নিয়ে ওনার কাছে গেলাম।
- আসতে পারি?
-হুম। (আশফি)
- আমি আর চাকরিটা করতে চাচ্ছিনা। দয়া করে আমার রেজিগলেশন লেটার টা গ্রহণ করুন।( উনি আমার দিকে একদম তাকাচ্ছেনা।
-হুম গ্রহণ করবো। কিন্তু এখন নয় সন্ধ্যার পর।
-কেনো? সন্ধ্যার পর কেনো?
-আজকে সন্ধ্যাই আমার বাসায় একটা পার্টির arrangement করেছি। সেদিনকার ঐ জাপানিজ ক্লাইন্টদের সাথে আমাদের অনেক বড় একটা ডিল ফাইনাল হবে যেটার জন্য আমাদের কোম্পানি দেশে 1st position এ থাকবে। আর সেখানে তোমাকে প্রয়োজন হবে। তাই সন্ধ্যার পরেই তোমার লেটারটা গ্রহণ করে তোমাকে এই এখান থেকে মুক্ত করে দিবো।
আমিঃ ওনার মুখে কথাটা এভাবে শুনে বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠলো। কিন্তু আমার তো খুশি হওয়ার কথা। উনিই বা কেনো আমাকে এভাবে কথাটা বললো? তারমানে উনি কি সত্যিই...................না এসব ভালোবাসা বলে কিছু নেই এগুলো আমি বিশ্বাস করিনা।
আশফিঃ কি হলো চুপ করে আছো কেনো?
আমিঃ হ্যা??? না কিছুনা এমনি। ঠিক আছে।(চিন্তার জগত থেকে ফিরে)
আশফিঃ আজকে lunch এ ছুটি দিয়ে দিবো সবাইকে। সন্ধ্যায় চলে এসো।
আমিঃ হুম। আসছি।
আশফিঃ হুম। আজকে তোমাকে সত্যিই মুক্ত করে দিব। আর এখানে আসতে হবেনা। (মাহি চলে যাওয়ার পর বললো)




মাহিঃ আমার এমন ফিলিং হচ্ছে কেনো মনে হচ্ছে কিছু একটা হারিয়ে ফেলছি।যেমনই লাগুক আমাকে আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে দুর্বল হলে চলবেনা। আমি আর আজকে কোনো কাজ করতে পারলামনা। কোনোভাবে সময়টা পার করে দুপুরে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে সোজা ঘরে চলে আসলাম।
মাঃ মাহি তুই এমন সময় বাসায়? কোনো সমস্যা হয়েছে অফিসে? সকালেই বা কি হয়েছিল?
আমিঃ তেমন কিছুনা urgent কাজ ছিল তাই ডেকে পাঠিয়েছিল।
মাঃ তুই কিছু লুকাচ্ছিস না তো? তুই তো আমার কাছে কিছু লুকাসনা।খুলে বল আমাকে কি সমস্যা।আজ দুইদিন দেখছি তুই গভীর চিন্তায় ডুবে থাকিস।
আমিঃ সত্যি বলছি কিছু হয়নি মা। আর শোনো আজ সন্ধ্যায় স্যারের বাসায় যেতে হবে। জাপান থেকে কিছু ক্লাইন্ট আসবে অনেক বড় একটা ডিল ফাইনাল করার জন্য সেই উপলক্ষেই একটা পার্টি থ্রো করেছে উনি। সেখানে আমাকে থাকতে হবে। আর তাই বলছি ফিরতে একটু লেট হবে তুমি টেনশন করবেনা।
মাঃ জাপান?? এই জাপানেই আমার জীবনের সব থেকে সুখের স্মৃতি আর সবথেকে ভীতিকর স্মৃতি রয়েছে। (দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে)
আমিঃ কি বললে তুমি?
মাঃ না কিছুনা। তুই যা গোসল করে খেতে আয়।
আমিঃ দাড়াও মা তুমি কিছু একটা লুকাচ্ছো আমাকে সত্যি করে বলো মা কি বললে তুমি? কি হল বলো?
মাঃ হুম বলছি। আমার আর তোর বাবার বিয়ের পর তোর বাবা আমাকে দেশে রেখে জাপান চলে যায় বিজনেস এর ভিসায়। কিন্তু আমি একা থাকবো বলে একটা বেবি দিয়ে যেতে চেয়েছিল। তোর বাবা ভেবেছিল ওখানে যাওয়ার পর সুখবরটা শুনবে। কিন্তু তিনি নিরাশ হয়েছিল কারণ কনসিভ করতে পারিনি আমি। এদিকে ওখানে যাওয়ার পর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছিলো ওর। কোনো কিছু করতে পারছিলনা কোনো কাজও খুজে পাচ্ছিলনা। তখন একজন প্রবাসীর সাথে দেখা হয় ওর।তাকে সবকিছু খলে বলে। একটা সময় তার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় তোর বাবার।উনি একটা ছোটোখাটো কাজের ব্যবস্থা করে ওকে। ওনার নাম ছিল আশরাফ চৌধুরী। আশরাফ ভাইয়ের কথা আমি আজও ভুলতে পারবোনা। সারাজীবন ঋণী হয়ে থাকবো ওনার কাছে। তারপর তোর বাবার আস্তে আস্তে কিছু পুঁজি বৃদ্ধি পায়। তখন আশরাফ ভাই ওকে প্রস্তাব দেয় দুজনে একসাথে একটা বিজনেস শুরু করবে। তোর বাবাও রাজি হয়ে যায়। একটা সময় বিজনেসটা অনেক বড় হয়। সেখানে অনেক বাঙ্গালি কাজের সুযোগ পায়। কিছু চাইনিজ ও সেখানে জয়েন করে। এরভেতর তোর বাবা দেশে আসলো আমার জন্য। অনেক চেষ্টা করলাম আমরা কিন্তু কোনো ভাবেই বেবি নিতে পারলামনা। ডাক্তারের কাছে গেলাম ডাক্তার বললো তোর বাবাকে আমার যে সমস্যা সেটা ঠিক হবে শুধুমাত্র ওর সাথে একটানা ৬ মাস/ ১ বছর একসাথে থাকতে পারলে। তাই ও ঠিক করলো আমাকে ওখানে নিয়ে যাবে। আমি ওখানে যাওয়ার পর আশরাফ ভাইয়ের ফ্যামিলি ও আমাদের কাছে চলে আসলো। আমরা সবাই একসাথে থাকা শুরু করলাম।তার ঠিক সাড়ে সাত মাস পর তুই আমার গর্ভে এলি।অনেক খুশি হয়েছিলাম আমরা। তুই হওয়ার পর তোর বাবার বিজনেসে অনেক সাফল্য আসতে শুরু করলো। আমার নামের ১ম অক্ষর দিয়ে তোর বাবা তোর নাম রাখলো মাহি। অনেক ভালোই যাচ্ছিল সময় গুলো।আশরাফ ভাইয়ের একটা ছেলে ছিল। ভারী মিষ্টি ছিল ও সবসময় তোর কাছে থাকতো। তোদের দুজনকে আমিই দেখাশুনা করতাম। আশরাফ ভাইয়ের বৌ ও বাইরে চাকরি করতো। তাই আমাকেই দেখতে হতো ওকে। ও খুব বাদ্ধ ছিল আমার। মামনি বলে ডাকতো আমাকে।ওর যখন ১১ বছর বয়স তখন তোর আর ওর বাবা ঠিক করলো তুই বড় হলে তোকেই ওনার ছেলের বৌ করবে। আস্তে আস্তে সুখের সময় গুলো পার হয়ে যাচ্ছিল। তোর বাবার ভেতরেও অনেক পরিবর্তন আসতে শুরু করলো। অনেক রাত করে বাড়ি আসা, আমার সাথে সবসময় ঝগড়া করা এমনকি কিছু কিছু রাত বাড়িতেও আসতোনা।এদিকে ওদের বিজনেসেও অনেক প্রবলেম শুরু হলো...............
আমিঃমা প্লিজ আর ভালো লাগছেনা শুনতে। ঐ লোকটার কোনো কথাই আমার শুনতে ইচ্ছা হয়না। এবার চুপ করো। আমি আর শুনবোনা।
মাঃ আমি কি বলতে চেয়েছি তুই তো শুনতে চাইলি।
আমিঃ হ্যা। এখন আমার শোনার সাধ মিটে গেছে।আমি গোসলে গেলাম।
মাঃ কিন্তু একটা বিষয় আজও আমার কাছে অজানা। সেদিন আশরাফ ভাই কিভাবে জানতে পারলো যে আমরা বিপদে পরেছি? আর কি বলতে চেয়েছিল আমাকে? ঐ দিন রাতে আশরাফ ভাইকে উপরওয়ালা না পাঠালে আমি মাহিকে নিয়ে আর বেঁচে ফিরতে পারতামনা দেশে।( একাই কথা গুলো ভাবছিল।)
(ইসস মাহি যদি একবার পুরো কথাগুলো শুনতো তাহলে আজকে ওর কাছে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যেতো।আর বিরক্তিকর নিয়ে কথাগুলো না শুনলে এটাও ওর খেয়ালে আসতো যে আশফিও জাপান থাকতো)
মাহিঃ মা খেতে দাও খিদে পেয়েছে।
মাঃ আমি খাবার বেরেছি তুই আয়।
মাহিঃ আমি খাওয়া শেষ করে বসে একটু টিভি দেখছিলাম মুডটা ভালো করার জন্য। দেখতে দেখতে কখন যেনো সোফায় ঘুমিয়ে পরেছি। সন্ধ্যা হয়ে হয়ে গেছে মা ডাকাডাকি করছে
মাঃ তোর নাকি পার্টিতে যাওয়ার আছে তো রেডি হবি কখন আর যাবি কখন। ক'টা বাজে দেখেছিস?
মাহিঃ মা তুমি আমাকে আরও আগে ডাকবেনা? অলরেডি সন্ধ্যা হয়ে গেছে। 
মাঃ আমি তো তোকে কখন থেকেই ডাকছি। যা তাড়াতাড়ি যা।
মাহিঃ আমি গিয়ে তাড়াহুরো করে ফ্রেশ হয়ে একটা ড্রেস পরলাম। সাজার সময়ও নেই আর মুডও নেই তাই না সাজার মত করে সেজেই বেরিয়ে পরলাম। গিয়ে দেখলাম আজকে তো কালকের থেকেও আরো বেশি জাঁকজমক করে সাজিয়েছে। মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ি। ভেতরে ঢুকে দেখলাম অফিসের সবাই চলে এসেছে শুধু আমিই লেট। ওনাকে কোথাও দেখছিনা। উনি কোথায়?
বলতে বলতেই হঠাৎ আমার পাশে এসে দাড়ালেন। আমার পা থেকে মাথা ওবদি দেখছে। এভাবে কি দেখছে বুঝতে পারলামনা। আমি নিজেকে একবার ভালো করে দেখলাম কোনো সমস্যা আছে নাকি। কৈ কোনো সমস্যা নেই তো তাহলে উনি এভাবে রেগে তাকিয়ে আছে কেনো?
আশফিঃ এটা কিভাবে এসেছো তুমি? কোনো চয়েস নেই তোমার? এতটা unsmart কেনো তুমি? কোথায় কিভাবে আসতে হয় জানোনা? 
মাহিঃ মানে কি? আমি খ্যাত?
কি সমস্যা আছে এখানে?
আশফিঃ কি?? খ্যাত মিন?
মাহিঃ উফফ উনি তো আবার ভদ্র মানুষ এগুলো বোঝেনা। খ্যাত মিন....!! খ্যাত মানে হচ্ছে.... কি বলি?? খ্যাত মানে হচ্ছে আনস্মার্ট।
আশফিঃ ওহহ...তাই বলো। কি মুখের ভাষা?? যাইহোক এখানে দাড়াও আমি আসছি।
মাহিঃ হুহ নিজে যেনো প্রাইম মিনিস্টার!!
কিছুক্ষণ পর দুজন মহিলা আসলো। 
-ম্যাম আমাদের সাথে ভেতরে আসুন
-ভেতরে যাবো মানে? কোথায় কেনো যাবো?
-স্যার আপনাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে রেডি করে দিতে বলেছে।
-রেডি মানে? আমি তো রেডিই। এই আমি কোথাও যাবোনা যাও তোমরা।
আশফিঃ এটাকে রেডি বলে? সবাইকে দেখো আর নিজেকে দেখো তাকিয়ে। একটা পার্টিতে আসার জন্য কতটুকু সাজগোজ প্রয়োজন সেটাও তোমার জানা নেই?
মাহিঃ ওনার জন্যই তো আমার সাজগোজের মুড নষ্ট হয়ে গেছে। অসহ্য।
এই শুনুন আমি যাবোনা যাবোনা যাবোনা। আমি এভাবেই অনেক কমফর্ট ফিল করছি।
আশফিঃ বাড়িতে বাইরে থেকে অনেক গেস্ট আসবে। আর তাদের সামনে তুমি আমার পি.এ হয়ে যদি এরকম তোমার ভাষায় খ্যাত হয়ে যাও তাহলে আমি সেটা মেনে নিবোনা। তাই ভালোভাবে বলছি ওদের সাথে যাও।( হাত ধরে টেনে দূরে নিয়ে গিয়ে বললো)
মাহিঃ ওনার কথাগুলো শুনে আমি অনেক ইনসাল্ট ফিল করছিলাম। আমি মোটেও খ্যাত না। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে ওদের সাথে গেলাম।ওরা আমাকে একটা রুমে নিয়ে আসলো। রুমটা বেশ বড়। ওরা একটা গর্জিয়াস শাড়ি পরাতে আসলো আমাকে।
-এই এটা কি শাড়ি কেনো? আমি এসব শাড়ি টারি পরতে পারবোনা।
-ম্যাম স্যার এটা আপনাকে পরতে বলেছে। প্লিজ পরুন না হলে আমাদের এসে খুব বকবে।
আমিঃ এগুলো উনি একটু বেশি বেশি করছেনা????
বেশ কিছুক্ষন পর আয়নাই নিজেকে দেখলাম
-ইইই তোমরা এটা কি সাজিয়েছো? সাজ তো দেখে মনে হচ্ছে আজকে আমার বিয়ে।
আশফিঃ আমি ওদের এভাবে সাজিয়ে দিতে বলেছি। এ কি নেকলেস টা কোথায়? কি হলো তোমাদের কাছে একটা নেকলেস দিয়েছিলাম ওকে পরানোর জন্য সেটা কোথায়?(চিৎকার করে রেগে বললো)
-স্যার এইযে এখানেই আছে।আসলে বিছানার ওপর ছিল তো খেয়াল করিনি
shut up যাও এখান থেকে তোমাদের আর কিছু করতে হবেনা।
মাহিঃ উনি একটা নেকলেস বের কররো বক্স থেকে। একি
এটা তো ডায়মন্ড নেকলেস।এটা কেনো উনি আমাকে পরাবে?
উনি ওটা নিয়ে
আমার কাছে আসছে। আমাকে যখন পরাতে আসলো আমি পিছু সরে আসলাম।
-এটা আমি পরতে পারবোনা। কেরো পরাচ্ছেন এটা আমাকে?
আশফিঃ আচ্ছা তোমার কি সব বিষয় নিয়ে ঝামেলা না করলেই হয়না? পরতে বলেছি পরবা ব্যাস আর কোনো কথা শুনতে চাইনা আমি। এটা বলেই ওর হাত ধরে টেনে এনে পরিয়ে দিলাম। এটা পরে ওকে এখন পরিপূর্ণ লাগছে। 
-যাও এখন বাইরে যাও।
মাহিঃ এটা কি খুব দরকার ছিল? আজব মানুষ একটা। আমি বাইরে আসলাম। সবাই অনেক ডান্স করছে। আমি ওদের নাচ দেখছি দাড়িয়ে।মুড ঠিক থাকলে এতক্ষণ আমিও গিয়ে নাচা শুরু করে দিতাম।উনি আমার পাশে এসে দাড়ালো।
আশফিঃ কি নাচতে ইচ্ছে করছে? 
মাহিঃ না। আমি চলে আসলাম ওনার কাছ থেকে। উনি সামনে চলে গেলো।
- আরে মাহি তোমাকে তো অসাধারণ লাগছে। মনে হচ্ছে আজকেই বিয়ে করে ফেলি।(আসিফ)
মাহিঃ চুপ করো তো কি বলছো এসব?
-সত্যিই বলছি। আচ্ছা কমপক্ষে একটা সেলফি তো নিতে দাও। 
মাহিঃ আমি হঠাৎ সামনে খেয়াল করলাম উনি আমার দিকে রেগে তাকিয়ে আছে আর আসিফের দিকে যেভাব দেখছে তাতে মনে হচ্ছে বেচারাকে আজকেই গোরোস্থানে পাঠাবে। আমি ভয়ে আসিফকে বললাম,না থাক কোনো প্রয়োজন নেই ওদিকে চলো সবার সাথে গিয়ে কথা বলি। আমি সবার সাথে কথা বলছি হাসাহাসি করছি। আসিফ আমার পাশেই দাড়িয়ে ছিল। ওনারদিকে চোখ পরলো। উনি এদিকেই আসছে।ভয়ে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এসে সবার সাথে একটু কুশলাদি বিনিময় করলো। 
আশফিঃ মাহি আমার সাথে এসো।
-আমি গেলাম।
- অনেক হাসাহাসি করেছেন এবার চলেন আমার সাথে ওরা চলে এসেছে।
-তারপর আমরা ওদের সাথে কথা বললাম।তারপর ডিলটাও কমপ্লিট করলাম।
আমি ওদের সাথে কথা বলছি উনি চলে গেলেন।
আশফিঃ attention guys. আমার এই পার্টিতে আসার জন্য সবাইকে ম্যানি ম্যানি থ্যাংকস। আজকের এই পার্টিটা দুটে অনারে দেওয়া। একটা তো আপনারা আগে থেকেই জানেন আর একটা কারন আছে সেটা হল আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে আমার life partner এর পরিচয় করিয়ে দেবো। ইনফ্যাক্ট তার সাথে আজকে আমার engagement.
মাহিঃ ও। লাইফ পার্টনার ও খোঁজা হয়ে গেছে? আর আমার সাথে কি নাটকটাই না করলো। উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো?
আশফিঃ নিশ্চই চমকে গেছো। আরো চমকাবে। ধৈর্য্য ধরো।
মাহিঃ ছেলে মানুষ জাত টাই খারাপ। কি ব্যাপার উনি আমার দিকে এগিয়ে আসছে কেনো?
আশফিঃ আজ থেকে সবাই জানবে মাহি শুধু আশফির।আমি ওর কাছে এসে হাত ধরে সবার সামনে নিয়ে এলাম। ও আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। ওকে নিয়ে সবার সামনে দাড়ালাম।
মাহিঃ আমি স্বপ্নেও ভাবিনি উনি আমার সাথে এটা করবে। এর জন্যই উনি আমাকে বলেছিল আমাকে আর অফিসে আসতে হবেনা।উনি ওনার সবটুকু লিমিট ক্রস করেছে আমাকে না জানিয়ে এতকিছু করে ফেলেছে। এর ফল কি মারাত্বক হবে সেটা ওনাকে আমি এখন বোঝাবো।
আশফিঃ মাহি হাতটা দাও। কি হলো হাতটা দাও।
.................................
মাহি সবাই তাকিয়ে আছে হাত টা দাও বলছি।
মাহিঃ উনি নিজেই আমার হাতটা নিয়ে পরিয়ে দিতে চাইলো আমি হাতটা সরিয়ে নিলাম।
- যথেষ্ট হয়েছে।(চিৎকার করে) আপনি একদম আপনার সীমার বাইরে চলে এসেছেন।কি মনে ভেবেছেন কি আপনি আপনার সবকিছু আমি মুখ বুজে সহ্য করবো? আপনি কিভাবে ভাবলেন আপনাকে আমি বিয়ে করবো? সবসময় সবকিছু মেনে নিয়েছি বলে এটা ধরে নিলেন যে আমি আপনার ওপর weak হয়ে পরেছি? কি দারুণ আপনার ভাবনা।
আশফিঃ মাহি তুমি কিন্তু আমাকে সবার সামনে অপমান করছো।সবাই দেখছে।
মাহিঃ থামুন আপনি। আপনার কোনে অপমানবোধ আছে? থাকলে আজকে এটা করার সাহস পেতেননা। এটা করার আগে অন্তত ২ বার ভাবতেন।আপনাদের এই ২ দিনের প্রেম ভালোবাসা নেওয়ার জন্যই আমাদের জন্ম তাইনা? যেদিন ফুল থেকে মধু নেওয়া হয়ে যাবে সেদিন আবার ছুড়ে ফেলে দিবেন তারপর আবার হয়তো নতুন ফুল গ্রহণ করবেন। এটাই তো আপনাদের রীতি। একটা কথা ভলো করে জেনে নিন আমি আপনাদের ছেলেদের এই মিথ্যে বিয়ে,প্রেম ভালোবাসার নাটকে কখনোই ভুলবনা।কথা গুলো বলে ওনার বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম।
- কি বলে গেলো এই মেয়েটা? আশফির মতো ছেলে কে পাওয়ার জন্য সব মেয়েরা পাগল। আর এ কি সব বলে গেলো? আশফিও চুপ করে দাড়িয়ে শুনলো। ও তো চুপচাপ অপমান সহ্য করা ছেলেনা।(আশফির বন্ধুরা)
( আশফি ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দিল। বাইরে থেকে শুধু ভাঙচুরের শব্দই আসছিল)
মাহিঃ অনেক আগেই ওনার জায়গা টা বোঝানো উচিত ছিল আমার। বাসায় চলে আসলাম। মা আমাকে এই পোশাকে দেখে অনেক প্রশ্ন শুরু করলো। আমি আর মায়ের থেকে কোনোকিছু গোপন রাখতে চাইনা।তাই মাকে আজকের ঘটনা সব খুলে বললাম।
মাঃ হুম। ছেলেটা তোকে কিছু না বলে কাজটা করে ঠিক করেনি। তবে তুইও সবার সামনে এভাবে অপমান করে ঠিক করিসনি।কিন্তু আজ না হয় কাল তোকে তো বিয়ে করতে হবে। সারাজীবন তো আর এভাবে থাকা সম্ভব নয় তাইনা??
মাহিঃ না মা। কোনোদিনও সেটা সম্ভব না। সম্পর্ক, বিয়ে, ভালোবাসা এগুলো আমি কোনোদিও বিশ্বাস করিনা।
মাঃ তা বললে কি হয়? পৃথিবী টা তো এগুলোর ওপরেই টিকে আছে।
মাহিঃ তাই যদি হয় তাহলে তোমার সাথে এমন হলো কেনো? কেনো তুমি সারাজীবন একা থেকে গেলে। ঐ লোকটাও তো তোমাকে ভালোবেসেছিল তাহলে সে কেনো তার স্ত্রী কন্যাকে ছেরে অন্য এক মহিলার সাথে.............
মাঃ মাহি(ধমক দিয়ে)চুপ কর।
মাহিঃ মাফ করে দিয়ো মা। কথা গুলো এভাবে বলতে চাইনি। ছোটোবেলা থেকে তোমাকে এভাবে দেখে সবার মুখে ঐ লোকটার কথা শুনে আমার সব পুরুষ জাতির ওপর ঘৃণা থরে গেছে। সেই ছোটো থেকে এখন পর্যন্ত দেখছি এমন কোনো রাত যাইনি তুমি কাদোনি। সমাজের মানুষ তোমাকে নানান রকম কথা বলেছে। এরপর আমার আর এদের ওপর কোনো বিশ্বাস নেই। আমি ঘরে চলে আসলাম। অনেক্ষন পর ঘর থেকে বেরিয়ে মায়ের ঘরে গেলাম। আজকে রাতে মায়ের কাছেই ঘুমোবো। মায়ের কোলে মাথা রাখলাম। আজকে অনেক কান্না করকে ইচ্ছে করছে।
মাঃ মাহি আমি জানি তোর কতটা খারাপ লাগছে। নিজেকে শান্ত কর। আয় তোকে ঘুম পারিয়ে দেই। 
(পরেরদিন দুপুরে)
মাঃ মাহি আমার ওষুধ গুলো ফুরিয়ে গেছে সামনে মোড়ের দোকান থেকে একটু এনে দে মা।
মাহিঃ ওষুধ ফুরিয়ে গেছে সেটা আগে বলবে তো। যাচ্ছি। আজকে friday ভেবেছিলাম মাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো। তা আর হলোনা। দোকানে ওষুধ আনতে গেলাম। রাস্তার পাশে একটা সাদা গাড়ি দাড়িয়ে আছে । গাড়িটা থেকে অনেক জোড়ে গানের আওয়াজ আসছে।পিকনিকে যাচ্ছে হয়তো।ওষুধ কিনে যখন ফিরছিলাম তখন গাড়ির ভেতর ২/১ টা ছেলে আমাকে দেখে কি যেনো বলাবলি করছিল। আমি গাড়ি টাকে ক্রস করে তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করলাম। হঠাৎ ৩ টা ছেলে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার মাঝেই সবার সামনে আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেলো। একটা বাসার সামনে থেমে ছোটো একটা ঘরে নিয়ে গেলো। আমার মুখটা বেঁধে দিয়েছিল।অনেক ছাটাছাটি করছি আর মনে মনে আল্লাহ্ কে ডাকছি এত বড় সর্বনাশ যাতে না হয় আমার। রুমে নিয়ে আমাকে তালা মেরে আটকে রাখলো। পালানোর চেষ্টা করলাম পারলামনা। রাত হয়ে গেলো আমি ফ্লোরে বসে কাঁদছি। ঘরটাও খুব অন্ধকার হয়ে আছে। হঠাৎ দরজাটা কেউ খুললো ভয়ে আমার হাত পা অবস হয়ে আসছিলো। আমি উঠে দাড়ালাম। অন্ধকারে মুখটাও দেখতে পাচ্ছিলামনা।আমি দৌঁড়ে পালাতে গেলাম।আমাকে ধরে গা থেকে ওরনা টা ফেলে দিল। তারপর দেওয়ালের সাথে মিশিয়ে দু হাত চেপে ধরে আমার ঠোঁটে তার ঠোঁটের স্পর্শ পেলাম।অনেকক্ষণ ধরে এভাবে চুমো দিয়েই যাচ্ছিল। আমার চোখ দিয়ে শুধু পানিই পরছিল কিছু বলতে পারছিলামনা। সে আমার মুখে ঘারে গলাই এভাবেই চুমো দিয়ে যাচ্ছিল। তারপর সে নিজেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে সামনে দাড়ালো। সে হাপাচ্ছিল আমি তার নিঃশ্বাসের শব্দ পাচ্ছিলাম। আমি আবারও পালানোর চেষ্টা করলাম। সে আমার হাত ধরে টেনে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর সে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে গেলো। আমি চিৎকার করে কান্না শুরু করলাম। অনেক রাত হয়ে আসছিল তার ওপর ঘর অন্কার। একা একা বসে আছি। খুব ভয় লাহছিল। হঠাৎ রুমের বাইরে থেকে কেউ বললো
-ভয় পাবেননা আমি পাশেই আছি।কথাটা শুনে অবাক হবো নাকি ভয় পাবো বুঝতে পারছিনা। কন্ঠ শুনে মনে হলো মুখে কিছু চেপে ধরে কথা বললো।আমি কাঁদতে কাঁদতে কখন যেনো ঘুমিয়ে পড়লাম। মুখে আলো পরে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখলাম দরজা খোলা সকালের রোদ চোখে এসে পরেছে। আমি কিছু না ভেবেই দৌঁড়ে বেরিয়ে আসলাম। আশেপাশে ও কেউ ছিলনা।বাসায় এসে পৌঁছালাম দেখলাম মা সোফায় বসে কাদছে। আমাকে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে আদর করা শুরু করলো। আমিও কাদছিলাম। মা কে সব বললাম। মা কেদেই যাচ্ছে। এলাকার সবাই জেনে গেছে এই ঘটনা। নানান রকম কথা বলছে আমাকে দেখতে আসছে। সবার কথা একটাই আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।আমি শুধু ঘরের দরজা আটকিয়ে কান্না করছি।মা আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। আর আমি ভাবছি এরকমটা কেনো করলো আমার সাথে আর সে কে ছিল? জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেলো। নিজেকে বহু কষ্টে শান্ত করলাম ভাবলাম কারো কথায় আর গায়ে মাখবোনা।কারন আমি তো জানি আমার সাথে কি হয়েছে। পরেরদিন সকার ৯ টায় ম্যানেজার ফোন করলো।
-মাহি তুমি যে কাজ গুলো পেনডিং রেখেছো সেগুলো স্যারকে ইনর্ফম করতে বলেছে। আর রেজিগলেশন টা নিয়ে আসতে বলেছে। 
মাহিঃ ঠিক আছে আসছি। ওনার দেওয়া শাড়ি গয়না গুলোও ফেরত দিব। তাই মাকে বলে অফিসে গেলাম। এখানে এসেও সমালোচনার পাত্রি হলাম। এখানেও কারোর বাকি নেই জানতে। খুব কান্না পাচ্ছে নিজেকে সামলাতে পারছিনা। উনি ওনার চেম্বার থেকে বেরিয়ে এলো।
আশফিঃ কি হয়েছে এখানে এত শব্দ কেনো? যে যার কাজে যান।(ধমকিয়ে)
মাহিঃ আমার দিকে একবার তাকালো। তারপর চলে গেল। আমি ওনার চেম্বারে গেলাম। 
-এই কাজগুলো বাকি আছে দেখিয়ে বললাম। উনি শুধু হুম হুম বলছে। তারপর রেজিগলেশন দিলাম। উনি সেটাতে সাইন করে একসেপ্ট করলো। সবশেষে শাড়ি গয়না গুলো ফেরত দিলাম।তখন আমার দিকে রেগে তাকালো। ওনার রাগে এখন আমার ভয় লাগছেনা।
আশফিঃ কাউকে কিছু দিলে আমি সেটা আমি কখনো ফেরত নিইনা। না নিলে কোথাও ফেলে দাও।
মাহি চলে গেলো।
-এবার নিশ্চই বুঝতে পেরেছো মাহি? অপমান জিনিসটা কেমন লাগে। আমি তোমাকে যতই ভালোবাসি মাহি কিন্তু তোমার অপমান আমি হজম করতে পারিনি। সবার সামনে তুমি আমাকে refeused করেছো অপমান করেছো। আমি সেটা মেনে নিতে পারিনি।সেদিন রাতেই আমি প্রমিস করেছিলাম এর কি শাস্তি আমি তোমাকে দিব। অপমানটা আমি করছি এর সমাধান ও আমিই করবো।বেশিদিন এই অপমান তোমাকে সহ্য করতে হবেনা।অবশ্য এর পেছনের মূল উদ্দেশ্য ছিল তুমি যাতে আমাকেই বিয়ে করতে বাদ্ধ্য হও। I'm sorry dear.(মাহির দিকে তাকিয়ে)
মাহিঃ আমি চলে আসলাম আমার চেম্বারে। জিনিস গুলো ওখানেই ফেলে বাসায় চলে আসলাম। মা এখন সারাদিন গম্ভীর হয়ে থাকে। এত দ্রুত আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে ভাবিনি। সন্ধ্যায় কে একজন বাসায় আসলো। মায়ের সাথে কথা বলছে
মাঃ জি বসুন। আপনাকে তো চিনতে পারলামনা।
-আমি আরমান চৌধুরী। আশফি চৌধুরীর চাচা।
মাঃ ওহ আচ্ছা।
-আমি আশফির কাছে মাহির ব্যাপারে সবটাই শুনেছি। আর আপনিও নিশ্চই জানেন আমার ভাতিজা ওকে পছন্দ করে। আর এত কিছুর পরও আশফি ওকে বিয়ে করতে চাই। আশফির ব্যাপারে আমি আপনাকে সবকিছু বলছি।
মাঃ হুম। বুঝতে পারছি ও অনেক ভালো ছেলে। আমার কোনো আপত্তি নেই এই বিয়েতে।
মাহিঃ আমি তাদের কথাগুলো শুনে আর ঘরে থাকতে পারলামনা।বেরিয়ে এলাম।
-মা তুমি কিভাবে এই বিয়েতে রাজি হলে। তুমি তো সবকিছুই জানো আমি কেনো বিয়েটা করতে চাইনা। তারপরেও.....
মাঃ চুপ কর তুই। তুই যা ভাবিস তা একদমই অযৌক্তিক। আর আমি চাই তুই এই বিয়েটা কর এটাই আমার শেষ কথা।
-মা তুমি আমার আশফিকে যা ভাবছো ও একদমই সেরকম না। ওর মত ছেলে লাখে একটা মিলো। নিজের ভাতিজা বলে বলছিনা। 
মাহিঃ এটাই তোমার শেষ ইচ্ছে তাইনা মা। আমার জন্য তুমি মুখ দেখাতে পারছোনা সমাজে তাইনা? ঠিক আছে আমি তোমার সিদ্ধান্ত মেনে নিলাম। আর কিচ্ছু বলবোনা আমি। বলেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসলাম রেগে।
মাঃমাহি কোথাই যাচ্ছিস। দাড়া।
-হ্যালো,আশফি মাহি রেগে বাইরে বেরিয়ে গেছে।
আশফিঃ কি? ঠিক আছে আমি দেখছি।
-ভাবি আপনি চিন্তা করবেন না। আশফি ওকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছে।
মাহিঃ আত্মহত্যা পাপ না হলে এতক্ষণ জীবনটা শেষ করে দিতাম। মা ই যখন আমাকে বুঝলোনা তখন আর এখানে থেকে কি করবো?
-আহ্.........চারপাশ অন্ধকার লাগছে আমার কেউ মনে হচ্ছে মাথার পেছনে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করলো।
আশফিঃ এতো রাতে মেয়েটা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লো? এত সাহস? কিসের এত রাগ তোমার? মেয়ে মানুষ এত জেদ কিভাবে করো সেটাই আমি দেখবো।(গাড়ি চালাতে চালাতে বলছে)
রাস্তার মাঝখানে এত ভীড় কেনো? উফফ অসহ্য লাগছে আমার। ওকে খুঁজতে আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। না পেরে গাড়ি থেকে নামলাম। সামনে এগিয়ে ভীড় ঠেলে ভেতরে ঢ়ুকলাম। কাছে গিয়ে যা দেখলাম,
-মাহি!!!(চিৎকার করে) ওর দেহটা নিচে পড়ে আছে। আর চারপাশে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।মনে হচ্ছে এখনি পড়ে যাবো। খুব কষ্টে নিজেকে সামলে ওকে কোলে করে গাড়িতে আনলাম। কাঁদতে কাঁদতে চাচ্চুকে ফোন দিয়ে জানালাম। আমি ওকে তাড়াতাড়ি Hospital এ আনলাম। O.T নিয়ে গেলো ওকে। আমি বসে বসে কাঁদছি। চাচ্চু ওর মা কে সাথে নিয়ে আসলো। নিজেকে সামলাতে পারছিনা এর মধ্যে ওর মা বারবার senseless হচ্ছে। ওনাকে সামলানোর জন্য কাছে গেলাম। আজ নিজেকে অনেক বড় অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি এতকিছু না করলে ওর আজকে এতবড় ক্ষতি হতোনা। ওর কিছু হয়ে গেলে আমি থাকতে পারবোনা,মরেই যাবো। মিনিমাম সাড়ে তিন ঘন্টা পর ডাক্তার বেরিয়ে এলো আমরা দৌঁড়ে গেলাম ওনার কাছে।
-ও কেমন আছে? ও ঠিক আছে তো? কি হলো কথা বলুন।
-আসলে ওর যা অবস্থা তাতে ওর ৮৫% বাঁচার আশংকা নেই। অনেক ভারী জাতিয় মানে রড বা লোহা জাতিয় কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। আর এমন জায়গায় আঘাতটা করেছে যেখানে ওর এর আগেও অনেক বড় একটা অপারেশন হয়েছে। আর সেটাও অনেক বড় একটা আঘাত ছিল।
আশফিঃ কথা গুলো শুনেই আমি পাথরের মত হয়ে গেলাম।



ডাক্তারঃ আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আর এই অপারেশনে সব থেকে expert যিনি ডঃ দুপুর হাসান তিনি আসছেন। আল্লাহ্ পাক সহায় থাকলে উনি পারবেন অপারেশন টা successful করতে। আপনারা ভেঙ্গে পরবেননা এখনও কিছুটা আশা রাখছি আমরা।
আশফিঃ আমি কাঁদতে কাঁদতে পাশে তাকালাম দেখলাম মাহির আম্মু ও কষ্টে পাথরের মত হয়ে গেছে। 
-আশফি? বাবা তুই নিজেকে সামলা। তোকে তো শক্ত হতেই হবে। তুই মাহির মায়ের কাছে যা ওনাকে গিয়ে দেখ।(চাচ্চু)
আশফিঃ চাচ্চু। আমি জাস্ট 1 hour এর ভেতর তার লাশ চাই যে ওর এই অবস্থা করেছে। (স্বাভাবিক কন্ঠে)
-হুম আমি এখনি খোঁজ নিচ্ছি। তুই ওনার কাছে যা।
আশফিঃ আমি ওনার পাশে গিয়ে বসলাম। 
-মামনি?উনি আমার দিকে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকালো।কিন্তু কোনো প্রশ্ন করলোনা। হয়তো করলে আমি এখনি বলে দিতাম আমি তোমার সেই বাদ্ধ্য আশফি। মানুষ টা আঘাত পেতে পেতে তার সব অনুভূতি নষ্ট হয়ে গেছে। আমি বলা শুরু করলাম।
-মাহি এর আগেও মাথার পেছনে আঘাত পেয়েছিল। কিন্তু সেটা কিভাবে। এবার মামনি কেঁদেই দিল। তারপর চোখটা মুছে বলা শুরু করলো।
- সেদিন রাতে আমি আর আশরাফ ভাই মাহি কে নিয়ে পালাচ্ছিলাম পেছনের সিড়ি দিয়ে এয়ারপোর্ট যাবো বলে। ঐদিন যারা আমাদের ওপর হামলা করেছিল ওরা আমাদের আটকানোর জন্য সামনে আসলো। মাহিকে আমার কোল থেকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। এদিকে আশরাফ ভাই ওদের আটকানোর চেষ্টা করছিল কিন্তু পারছিলনা। এক সময় একজন মাহিকে আমার কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মাহিকে নিয়ে চলে যাচ্ছিল আমি আটকাতে গেলে সে মাহিকে কোল থেকে নিচে ফেলে দেয়। আমি দৌঁড়ে ওর কাছে গেলাম। আশরাফ ভাই বললো ভাবি তুমি ওকে নিয়ে পালাও আমি সামলাচ্ছি ওদের। আমি ওকে নিয়ে পালালাম। তখন মাহির মাথা থেকে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। তাড়াতাড়ি hospital এ নিয়ে গেলাম। ওরা ওকে O.T. তে নিয়ে গেলো। অনেক্ষণ পর আশরাফ ভাইকে ফোন করলাম ওনার খোঁজ নেওয়ার জন্য। উনি ঠিক আছে আমি ওনাকে Hospital এর ঠিকানা দিয়ে দিলাম। ঐদিন আর আমরা দেশে ফিরতে পারিনি। তারপর ডঃ বেরিয়ে এলো, আজকের মত ঐদিন ও ডঃ এসে বললো ওর বাঁচার আশ্ঙকা কম। আশরাফ ভাই এসে আমাকে সামলাচ্ছিল। অনেক্ষন পর অপারেশন শেষ হলো। সেদিন খোদা তা'য়ালা ওর সহায় ছিল। ডঃ এসে বললো ও বেঁচে গেছে কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ ভাবে না। ওর মস্তিষ্ক ...... (বলতে গিয়ে কেঁদে দিল)
ওকে স্বাভাবিক ভাবে পাইনি। ও পাগল হয়ে গেছিল। তার ১ মাস পর ওকে নিয়ে দেশে চলে আসি। অনেক সময় লেগেছিল সুস্থ হতে। সুস্থ হলেও ওর আগের কোনো কিছুই মনে ছিলনা। অনেক অল্প বয়সে এত বড় আঘাত ও নিতে পারিনি। তাই এই অবস্থা হয়ে গেছিল। আমি ওর মা আমাকে ও চিনতে পারেনি।সবসময় ওর কাছে থাকতাম বলে এইটুকু বুঝতে পেরেছিল আমি ওর আপন কেউ। নতুন করে ওকে আমাকে চেনালাম আমি ওর মা।
আশফিঃ এতো কিছু বললো বাবা কিন্তু এই ঘটনাটা তো আমাকে বলনি? অবশ্য বলার সময়টুকু ও যে সে পাইনি।(মনে মনে ভাবলো)। ভাবতেই ভাবতেই ফোন বেজে উঠলো। চাচ্চু ফোন করেছে। আমি ফোন নিয়ে উঠে চলে আসলাম।
-হ্যা চাচ্চু বলো।
কি??.............এতদূর চলে এসেছে? 
ওর আর বেচেঁ থাকার কোনো অধিকার নেই just shoot him. 
ও তাই? আল্লাহ্ পাক ও বুঝতে পেরেছে ওর আর বাঁচার প্রয়োজন নেই। তাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মরেছে।(পালাতে গিয়ে)
আচ্ছা ঠিক আছে তুমি চলে এসো দরকার আছে। কথা বলা শেষ করেই দেখলাম আমার বয়সি একজন ডঃ অপারেশন থিয়েটারে ঢ়ুকলো।
-হায় খোদা তুমি ওর সহায় থেকো। এতো কষ্ট আর নিতে পারছিনা। যাকে safe করার জন্য এখানে আসা আমি আর সেই নিজেই তার এত বড় ক্ষতি করে দিলাম। আমি কোনোদিও চাইনি এটা করতে পাগলের মত ভালোবাসি ওকে। 
এখন অলরেডি ১২:৩০ টা বাজে এখনও ওর অপারেশন শেষ হয়নি।চাচ্চু কে ফোন করে বললাম এত রাতে আসার প্রয়োজন নেই। মামনি কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই আমি জোর করেই কেবিনে ভর্তি করে দিলাম রেস্ট নেওয়ার জন্য। আর বললাম ডঃ বেরোলে আমি তাকে জানাবো। আমি এসে বসলাম। মাথা নিচু করে বসে আছি। 
-মাহি আপনার কি হয়। 
-ডঃ বেরিয়েছে আমি উঠে দাড়ালাম। আমি বললাম মাহি আমার বাগদত্তা।
উনি কেমন গম্ভীরভাবে তাকিয়ে থাকলো।
-ওহ্ আচ্ছা। অপারেশন successful. আর হ্যা এটা আমার কার্ড। এখানে আমার নাম্বার আছে ও কেমন আছে সেটা আমাকে জানাবেন। আসলে আমি কিছুক্ষণ পরই লন্ডন চলে যাবো। তাই......
-আমি প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকালাম. উনি বুঝতে পেরেছে সেটা।
-ও হ্যা আমার পরিচয়টা দেই। আমি দুপুর হাসান। আমরা একই কলেজে পড়তাম।তবে আমি ওর সিনিয়র ছিলাম।যাই হোক মাহির বিপদ টা এখনও কাটেনি। sense ফেরার পর বোঝা যাবে ও কতটুকু সুস্থ। আমি যে ভয়টা পাচ্ছি সেটা যেনো আল্লাহ্ সত্য না করে।
-কি ভয় পাচ্ছেন আপনি? বলুন।
-কোমায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে সেটা 50% সম্ভবনা। বাকি 50% পুরোপুরি সুস্থ। একমাত্রই উপরওয়ালাই ভরসা। ওর খেয়াল রাখবেন আমি আসছি।
দুপুরঃ আমি কোনোদিও ভাবিনি মাহি তোমাকে এই অবস্থায় দেখবো। আমি যখন তোমাকে দেখলাম তখন আমার দেহ থেকে প্রাণটা বেরিয়ে আসতে চাইছিল। মাহি? আজকে তুমি অন্য কারোর হয়ে গেলে। আমিও তো তোমাকে ভালোবেসেছিলাম। কিন্তু সেদিন তুমি আমাকে গ্রহণ করোনি।তুমি বলেছিলে তোমার জীবনে এগুলোর কোনো স্থান নেই। আমি সেদিনই promise করেছিলাম তুমি যদি কাউকে কোনোদিন গ্রহণ করো তাহলে আমিও সেদিনই অন্য কাউকে বিয়ে করবো। কিন্তু তোমাকে দেখার পর যে আমি আমার প্রমিস রাখতে পারছিনা। আমি পারবোনা অন্য কাউকে গ্রহণ করতে। তবে তোমার হবুবরটা অনেক সুন্দর।আর তোমাকে খুব ভালোবাসে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তোমার মঙ্গল কামনা করি ভালো থেকো।
আশফিঃ মামনির কাছে গেলাম।সবকিছু বললাম। মামনি মাহির কাছে গেলো। তারপর নিজেকে সামলে তাহাজ্জুদের নামায পড়া শুরু করলো। আমিও মামনির কেবিনে এসে নামায পড়তে বসলাম। সারারাত জেগে পড়লাম। অনেক্ষন ধরে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে মোনাজাত করছিলাম ওর জন্য। মোনাজাত শেষ করে উঠে দাড়ালাম তখন দেখলাম মামনি পিছে দাড়িয়ে আছে। আমার কাছে দাড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলো।
- আমি জানিনা আমি জীবনে কি পাপ করেছি যার জন্য আল্লাহ্ আমার থেকে সব কেড়ে নিতে চাইছে। তবে আমি এই প্রথম নিজেকে ছাড়া অন্য কারোর ওপর ভরসা করছি। যেমনটা আশরাফ ভাইয়ে ওপর করেছিলাম আর আজকে তারই ছেলের ওপর করছি।
আশফিঃ আমি কিছুটা অবাক হয়েই গেলাম।
-তুমি তোমার পরিচয় না দিলেও আমি তোমাকে ঠিকই চিনেছি যখন তুমি আমাকে মামনি বলে ডাকলে।
আশফিঃ আমি মামনিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম। মামনি, তোমরা চলে আসার পর আমি তোমাদেরকে ভুলে থাকতে পারিনি। মাহিকে ভুলতে পারিনি। ছোটোবেলাই বাবার কাছে অনেক শুনেছি তোমরা কোথায়? কেনো এখান থেকে চলে গেলে? তুমি জানো বাবা......???(বলতে গিয়েও থেমে গেলাম। এই মূহুর্তে এসবকিছু বলা ঠিক হবেনা)
- আমি বুঝতে পেরেছি তোর ভালবাসা মিথ্যে হতে পারেনা। তুই পারবি ওকে ওর ভুল ধারনা থেকে বের করতে। ও ওর বাবার আর কিছু না পেলেও তার দুটো জিনিস পেয়েছে। রাগ আর জেদ। যে ভাবেই হোক তুই ওকে বুঝিয়ে দিবি যে সব পুরুষেরাই এক না।
আশফিঃ মামনি আমিও যে জেদের বসে ওর সাথে একটা অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি শুধুমাত্র ও যাতে বিয়ে করতে বাধ্য হয়।মামনিকে সব বললাম মাহিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা। মামনি শুনে কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে থাকলো কিছুক্ষণ। তারপর বললো,
- যেটা নষ্ট হয়ে গেছে সেটা আর ফিরে আসার নয়। কিন্তু ওকে বিয়ে করার এই পদ্ধতিটা ভুল ছিল তোর। যাইহোক এটা যেনো কোনোদিও ও জানতে না পারে। জানলে ও আর তোর কাছে থাকতে চাইবেনা। ওর যে ভুল ধারনা আছে তাহলে সেটাই ওর কাছে সত্যি বলে মনে হবে। 
আশফিঃ কথা বলতে বলতে ভোর হয়ে গেলো। ফজরের আযান দিয়েছে। আমি আর মামনি নামায আদায় করলাম। খুব সকালে চাচ্চু চলে এসেছে। 
-চাচ্চু মামনি আমাকে চিনতে পেরেছে। আর মাহির কথাগুলোও বললাম।
-যাক,আল্লাহ্ ভরসা। উনি সব কিছু ঠিক করে দেবে।
-হুম। তুমি এক কাজ করো মামনি কে আমার বাসায় নিয়ে যাও। ওখানেই থাক মামনি। 
আমি মামনিকে গিয়ে বললাম আমার বাসায় যেতে। মামনি যেতে রাজি হচ্ছিলনা। তারপর অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। আর আমি এখানেই থেকে গেলাম। কারণ এখনও মাহির life risk আছে। যেকোনো সময় আবার attack করতে পারে ওরা।
(৩ দিন পর)
আশফিঃ মামনি তুমি ওর কাছে যাও। আমি এখন ওর সামনে যাবোনা।
- ঠিক আছে।(মামনি)
আশফিঃ আজকে ভোরেই ও sense ফিরে পেয়েছে। ও একদম সুস্থ আছে। আল্লাহ্ পাকের অশেষ ক্রিপা। তার পরেরদিন ওকে ওর বাসায় নিয়ে গেলো। আমার বাসায় ওকে নিয়ে যেতে চাইলাম ও আসতে চাইলোনা। ও সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমি ওর বাসায় থাকা শুরু করলাম। যদিও ওর সেটা পছন্দ ছিলনা। আমি সেবা করতে গেলেও ও আমাকে বাঁধা দেই।আমি জোর করেই করি। একদিন ওকে ওষুধ খাইয়ে দিচ্ছি,
ও তখন বললো,
মাহিঃ এগুলো করে আপনি কি প্রমাণ করতে চাইছেন। অনেক বেশি ভালোবাসেন?? কিন্তু সেটা ঠিক কতদিনের জন্য??? 
আশফিঃ আমি ওর কোনো কথার উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে আসতে গেলাম তখন দেখলাম মামনি দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে। আমি শুধু একবার তাকিয়ে চলে আসলাম।
মাঃ মাহি? এখন কেমন লাগছে মা? 
মাহিঃ হুম। আগের থেকে বেটার ফিল করছি।
মাঃ মা, আজকে তোকে আমি কিছু কথা বলবো। তুই শুধু শুনবি। ভালো খারাপ উভয়ের মিশ্রণে পৃথিবী তৈরি। সেখানে কিছু ভালো মানুষ বাস করে আর কিছু খারাপ। তাই বলে সবাই খারাপ না।এখানে কেউই একা বাস করতে পারেনা। আমাদের আদি পিতা আদম(আঃ) এর জন্য ও আল্লাহ্ পাক একজন সঙ্গী সৃস্টি করেছিল তার একাকিত্ব দূর করার জন্য। আমি কি বলতে চাইছি তুই সেটা বুঝতে পারছিস?
মাহিঃ হুম। তার মানে আমাকে বিয়েটা করতেই হবে তাইতো? ঠিক আছে। 
মা আমার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো। কিন্তু আমি যে নিজের মনকে কোনোভাবেই তোমার মত করে বুঝ দিতে পারছিনা মা। জানিনা কি হবে। কিন্তু আমি শুধু তোমার কথা রাখার জন্যই বিয়েটা করবো। 

( ২ মাস পর)

আশফিঃ আজকে মাহিকে বিয়ে করে নিজের ঘরে নিয়াসছি। তবে আর সবার মত ও বৌ সাজেনি। যেভাবে ছিল সেভাবেই বিয়ে করেছে। তাই নিজেকেও বরের মত করে উপাস্থাপন করিনি। মামনি ওকে অনেক বকাবকি করছিল এভাবে থাকার জন্য। তারপর আমি মামনি কে বলেছি ও যেভাবে থাকতে চাই সেভাবেই থাকুক। মামনি আমাকে পরে ডেকে কিছু কথা বললো। কথা গুলোর সারমর্ম এটাই ছিল আমি যেনো ওকে নিজের মত করে চলতে না দিই। ভালোবাসা+শাসনের ওপর রাখি। শুনে ভালোই লাগছিল। আর আমারও অলরেডি ভাবা হয়ে গেছে বিয়ের পর আমি ওকে কিভাবে রাখবো। কিন্তু একটা জায়গায়ই চিন্তা ওর কথা+কার্যকলাপে আমার মাথা গরম হয়ে গেলে ওর সাথে কি করবো সেটা জানিনা। মাথা গরম হয়ে গেলে হাজার চেষ্টা করলেও নিজেকে কনট্রোল করতে পারিনা। নেহাৎ সেদিন ও অসুস্থ ছিল তাই ওর কথা মুখ বুজে সহ্য করে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। না হলে ঐ মূহুর্তে ওকে যে কি করতাম?????? যাই হোক আমি এখন গাড়িতে বসে আছি। ওকে নিয়ে আমার বাড়িতে যাচ্ছি 
-সোনা তোমার খুব গরম লাগছে?
মাহিঃ গরম লাগবে কেনো। এসি চলছে আর আমি তো simple পোশাকেই আছি।
আশফিঃ ওওও..... আসলে আমার কাছে মনে হলো পোশাকটা খুব ভারী হয়ে গেছে। তুমি যদি বলো আমি এখনি সর্ট টপস্ কিনে নিয়াসছি।
মাহিঃ মানে কি? ফাজলামি করছেন আমার সাথে?
আশফিঃ একদম না(মাথা নাড়িয়ে)
ওকে রাগানোর জন্যই বললাম। বিয়ের দিনেও কেউ এমন পোশাক পরে সেটা বোঝালাম। আজকে কোনো আয়োজন করিনি বাড়িতে। কাল করবো। আমি নিজেই আগে ঘরে গিয়ে ওকে বরণ করলাম। ও তো চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। ওকে আমার ঘরে নিয়ে এলাম।ও আমাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি বললাম,
- দেখো তুমি তো এটাই বলবে আমি যেনো তোমার ঘরে না থাকি, এক বিছানায় না শুই, তুমি আমাকে স্বামির অধিকার না দেওয়া পর্যন্ত তোমার কাছে না আসি.....etc.....
আমি আগে থেকেই বলে রাখছি এর কিছুই আমি মানতে পারবোনা। আর তুমি আমার কাছে এটা আশাও কোরোনা। এতদিনে আমাকে নিশ্চই চিনে গেছো আমি কেমন? আর আমি তোমাকে বিয়ের আগেই টাচ্ করেছি। তাই আমার যখনই মন চাইবে তখনি আমি তোমার কাছে আসবো। কারণ তুমি আমার স্ত্রী তোমার ওপর আমার পূর্ণ হক আছে। আর কিসব নিয়ম নীতি যেনো আছে দেনমোহর কাবিন কি কি....যাইহোক সবকিছুই আমি পরিশোধ করে দিয়েছি তাই তুমি যে কজ ই দেখাও আমাকে আটকাতে পারবেনা। বুঝেছো বাচ্চা?
মাহিঃ কি বলবো আপনাকে ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। লুচু কোথাকার
আশফিঃ কি বললে তুমি? ওর দিকে এগিয়ে গেলাম ও ভয়ে পিছিয়ে গেলো?
-ও কাম অন ডিয়ার(শান্ত গলায় বললাম) ছেলে মানুষ লুচু হবে না তো কি মেয়ে মানুষ হবে? আর ছেলে মানুষ লুচু না হলে তাকে ছেলে মানুষ 
বলেনা।
মাহিঃ তো কি বলে?
আশফিঃ থাক বললাম না। হয়েছে এখন চলো খেতে দাও আমাকে।
মাহিঃ কি? বাড়িতে তো একশো কুড়ি কাজের লোক। এক একটা কাজের জন্য আলাদা আলাদা মানুষ। তো আমি কেনো খেতে দিব?
আশফিঃ হুম। কিন্তু রান্না করা আর খেতে দেওয়া এটা বাড়ির বৌদের করতে হবে। এটাই আমাদের বাড়ির নিয়ম।
মাহিঃ তো এতদিন কিভাবে খেলেন? 
আশফিঃ এবার আমার সত্যিই রাগ হয়ে গেলো। এতদিন বৌ ছিলনা তাই খেতে বাদ্ধ্য হয়েছি। আর এত কথা আমি শুনবোনা দিতে বলেছি দিবে।
মাহিঃ পারবোনা। একদিন আসতে না আসতেই অর্ডার করা শুরু হয়ে গেছে। অসহ্য।
আশফিঃ তুমি sure তুমি দিবেনা? ভেবে দেখো।
মাহিঃ Damn sure. দে....বো...না।
আশফিঃ আমি এখন সেটাই করবো যেটা তুমি চাওনা। আমি ওকে একটানে কাছে নিয়ে এসেই.................
হ্যাঁ যেটা ভাবছেন সেটাই। অনেক্ষন ধরে ওর ঠোঁটে চুমু দিয়ে ঠৌঁটটাকে একদম লাল করে দিলাম। এরপর ওকে ছেরে দিয়ে বললাম
-কি মজা পেয়েছো??? নিশ্চই অনেক মিষ্টি! এরপর ও যদি খেতে না দাও তাহলে এরপরে যেটা বাকি আছে সেটাই করবো। তারপর ও রেগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। বেচারি
বাহ্ কি সুন্দর পরিবেশন করছে। আমি গিয়ে খেতে বসলাম। আর বললাম আমি যতক্ষণ খাবো ততক্ষণ আমার পাশে ওকে বসে থাকবে।
মাহিঃ উনি কি মানুষ নাকি অন্যকিছু। আমি প্লেট টা এগিয়ে দিয়ে বসে আছি। কি হলো প্লেট টা এরকম সামনে নিয়ে বসে আছে কেনো?
আশফিঃ খাবার বাড়ো।
মাহিঃ ওহ এর জন্য বসে আছে?যাক এইটুক দয়া হলো আমার জন্য। আমি একটা প্লেট নিয়ে খাবার বাড়লাম। ওনার দিকে চোখ পড়লো আবার এভাবে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে কেনো? 
-কি হয়েছে?
-আমি আমার প্লেটে খাবার বাড়তে বলেছি। তোমার প্লেটে না।
মাহিঃও আচ্ছা। আমি তো ভাবলাম...... 
দিচ্ছি। আমি ওনাকে খাবার বেড়ে দিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। মনে হলো উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে না খেয়ে। oh god এখন কি আবার খাইয়ে দিতে বলবে নাকি।
-আবার কি হলো?
-আমি কি খাওয়া শুরু করেছি? 
-না ( মাথা নাড়িয়ে)
-তাহলে তুমি আগেই কি কারনে আগে খাওয়া শুরু করলে?
-তার মানে?
-তার মানে আমরা এক সাথে খাওয়া শুরু করবো কেউ আগেনা। বুঝেছো? কথাটা মাথায় থাকে যেনো।
মাহিঃ ও মা এ আমি কোথায় পরলাম। 
খাওয়া শেষ করে ঘরে গেলাম ওনার সাথে। এখন দেখছি উনি কি করে। ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় বসলো। আমি ওনার পাশে গিয়ে কিছুটা দূরে শুতে গেলে তখন উনি আমাকে থামিয়ে দিলেন।
আশফিঃ ওয়েট আগে এটা দেখো। (ল্যাপটপ টা এগিয়ে দিয়ে) এখানে আমার সাথে আর আমার বাড়িতে থাকার জন্য কিছু রুলস আছে এটা ফলো করবে কাল সকাল থেকে।
মাহিঃ এটা কি লিখেছে উনি। দেখেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো।এ তো রুলসের কারখানা। আর কি সব রুলস। তার ভেতর একটা রুলস হলো উনি যখনই বাইরে যাবে তার আগে আমি যেনো ওনার সামনে থাকি উনি আমাকে আদর করে তারপর বাইরে যাবে। এরকম আরও অনেক বিদঘুটে রুলস লিখে রেখেছে। 
আশফিঃ থাক এখনই সব দেখতে হবেনা। কাল দোখো। এখন কিছুই তোমার মাথায় ঢুকবেনা। শুয়ে পড়ো।
ও আমার দিকে কেমন ভয়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
-আরে কি হল এরকম ভয় পাচ্ছো কেনো?
হুম বুঝেছি। ভয় নেই এখন কিছুই করবোনা। তবে পুরোপুরি surity ও দিতে পারছিনা।
মাহিঃ আমি ওনার কথা গুলো শুনে চুপ করে শুয়ে পরলাম।
আশফিঃ এই তুমি মাঝে এরকম ২ হাত ফাঁকা রেখে শুয়েছো কেনো? আমার কাছে সরে এসো। এটাও কি রুলসে দিতে হবে? এসো বলছি।
মাহিঃ কি মহা জালায় পরলাম। আমি ওনার কাছে সরে গেলাম।
আশফিঃ এটাকে কাছে আসা বলে?? তুমি কি চাচ্ছো এখন আমি তোমাকে..............
মাহিঃ না না এইতো আসছি। আরও সরে আসলাম।
আশফিঃ আজব? আমাকেই সব শেখাতে হবে তোমাকে। কথাটা বলেই ওকে একটানে আমার বুকের কাছে নিয়ে আসলাম। 
-হুম এখন জড়িয়ে ধরো আমাকে। কি হলো? first.
মাহিঃ হুম ধরছি তো। তারপর ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম হলকা করে। উনি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আশফিঃ রোমান্স কাকে বলে আজ থেকে শিখিয়ে দিব।

মাহিঃ সকালে উনি গোসল করে বাথরুম থেকে বের হলো।শুধু টাওয়াল টা পরা ছিল। চুল হাত দিয়ে মুছতে মুছতে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালো। আমি বসে ফোন টিপছিলাম।বডিটার দিকে নজর গেলো আমার। তাকিয়ে দেখছি কি ফিগার! একদম Jiang chao এর মতোই। তারপর তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে নিলাম। তারপর বাইরে চলে যেতে যাবো তখন উনি আমার হাত ধরে কাছে টেনে কোমোর জড়িয়ে ধরলো। 
আশফিঃ কি লজ্জা পাচ্ছো?
মাহিঃ হুম।
আশফিঃ উহহ... আমি তো দেখলাম তুমি আমার দিকে তাকিয়ে আমার body shape দেখছিলে।
মাহিঃ কোথায়? আমি তো ফোন টিপছিলাম।
আশফিঃ আমি কি দেখিনি? আয়নায় সব দেখা যাচ্ছিল। ওকে আরও কাছে টেনে এনে ওকে আদর করা শুরু করলাম ওর গলা আর ঘারে। ও আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে আমার খুব রাগ হয়ে গেলো। তখন আমি ওকে....






চলবে...






Writer:- Israt Jahan

Idea:- Kashnir Mahi

NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner