আমি তো আগে থেকেই জানি এই বাড়ি খালি।
তাও দ্রুত গিয়ে এই দারোয়ানকে বলতেই সে হেসে উড়িয়ে দেয়। তারে টেনে হিচরে ওখানে আনতেই দেখি সব অন্ধকার।
মানে আগুন নাই। আমি আর বোন বেকুব হয়ে গেলাম একেবারেই।
তারপর... আমি অনেক ভাবে দারোয়ানকে বোঝানোর চেস্টা করলাম উনি আমার কথা কোনোভাবেই আমলে না নেওয়াই অবশেষে বাধ্য হয়েই বললাম শুধু আমি না আমার বোনও দেখেছে। সেই মূলত আমাকে দেখিয়েছে আমি দেখেছি পরে মনে হলো আমার আপনাকে জানানোর দরকার বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগে।আর আপনি মজা নিচ্ছেন!!
থাক বাদ দেন...!
তারপর দারোয়ান বললো ভাই এ বাসায় কেউ থাকে না আগুন কিভাবে লাগবে এছাড়া পৃথিবীতে অনেক কিছুই ঘটে যা আমরা জানি নয় যার কোনো ভিত্তি নেই আর কিছু জিনিস এমন হয় যা হয়তো জানার থেকে না জানাটাই আমাদের জন্য মঙ্গল।
ভাই চলে যান এখান এত রাতে বাইরে থাকা ভালো না এছারা আপনার সাথে একজন নারী।
এটা বলে উনি সিগেরেট টানতে টানতে চলে গেলেন। কতবার ডাকলাম একটিবার পিছন পিছন ফিরেও চাইলেন না। আমারতো এমন মনে হলো উনি আমার কথা এড়াতে যখন পালিয়ে গেলেন আমার অনেক রাগ হলো....
ঘটনা ২:
ঈদ কেটে যাওয়ার ২ দিন পর কোনো এক দরকারে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেছিলো। রাত তখন ১১ টা। গাড়ি পাইনি। হেটে বাসায় যাচ্ছি।
যখন এই বাড়িটার সামনে আসলাম তখন দেখলাম একটি মেয়ে দরজা খোলে বাড়িটার ভিতরে প্রবেশ করছে পরে ঐ দারোয়ানের কথা মনে হয়ে গেলো সে বলছিলো বাসায় কেউ থাকে না!
দারেয়ানকে ডাকলাম জিজ্ঞাস করলাম আপনি না বলছিলেন এ বাসায় কেউ থাকে না। তাহলে আজ যে দেখলাম একটি মেয়ে বাসায় ডুকছে..?
দারোয়ান ঐ দিনের মতো হাসি দিয়ে বললো, এ বাসায়তো দিনেই কেউ আসে না রাতে কে আসবে তারপরো একটা মেয়ে?
একবার ভেবে দেখেনতো একটা মেয়ে এত রাতে এখানে কেন আসবে? আমি বললাম তাহলে কি আমি ভুল দেখেছি?
দারোয়ান বললো, দেখেন ভাই ভুল কি ঠিক তাতো আমি জানি না আপনি আর কখনো আমাকে এইসব নিয়ে প্রশ্ন করবেন না। আপনার সন্দেহ লাগলে আপনি গিয়ে দেখে নিবেন আর আমারতো মনে হয় আপনার জন্য এটাই ভাল হবে যদি আপনি আর এই বাসার আশে পাশে না আসেন।
এটা বলে লোকটা ঐদিনের মতো চলে গেলো। মনের ভিতর রাগ পোষে আমিও বাড়ি চলে আসলাম আর রাতে ভাবতে লাগলাম কি এমন হলো যে এই বাড়িটা বিষয়ে যাকেই প্রশ্ন করি এড়িয়ে যায় কেউই ঠিকমতো উওর দেয় না, এছাড়া বাড়িটিতে লোক কেন থাকে না?
আমার সন্দেহ আর জানার আগ্রহ ক্রমশ বাড়তে লাগলো...
আমি আমার এক কাছের বন্ধুকে বিষয়টা শেয়ার করলাম।তার নাম রাকিব (ছদ্মনাম)। সে বললো এটা আবার হয় নাকি? এছারা তুই ভুল দেখছিস মনে হয় বলে হাসতে লাগলো, আমার রাগ হলো আমি তাকে ধমক দিয়ে বললাম আমি ভুল দেখতে পারি আমার বোনো কি ভুল দেখেছে? পরে আমার ঐ বন্ধু বললো হ্যা, ঠিক বলছিস ব্যাপারটা ভাবার বিষয়...!
তারপর রাকিব বললো আমারো বিষয়টা জানার আগ্রহ হচ্ছে। ঐ বিল্ডিংয়ের কাছাকাছিই একটা বাসায় আমার এক বন্ধু তার পরিবার নিয়ে ভাড়ায় থাকে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো যদি তোর কথা ঠিক হয় এমন অলৌকিক কিছু ঘটে থাকে তাহলে সে নিশ্চয় এটা জানবে।
আমি বললাম সবাই এড়িয়ে যায় কেউ বলতে চায় না জানি না কেন!!
তোর বন্ধু যে বলবে তার নিশ্চয়তা আছে তোর কাছে? অস্বীকারোতো করতে পারে! রাকিব বললো, না অস্বীকার করবে না সে তার অনেক ভাল একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু যদি সে জানে তাহলে নিশ্চয় বলবে। আর যেহেতু সে কয়েকবছর যাবত এই কাছাকাছি ভাড়া বাসায় থাকে তাই তেমন কিছু হলে নিশ্চয় জানবে।
তুই চিন্তা করিস না আমি দেখছি বিষয়টা। যদি কিছু জানতে পারি তাহলে অবশ্যই জানাবো।
আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে। তার ৩ দিন পর রাকিব আমায় ফোন দিয়ে বললো আমার বাসায় একটু আয়তো...
তারপর গিয়ে দেখি রাকিবের সাথে আরো একজন। রাকিব পরিচয় করিয়ে দিলো সে সোহান (ছদ্মনাম)। আমার বন্ধু যার কথা তোকে বলেছিলাম। পরে আমি বললাম, হটাৎ! আমাকে তোর বাসায় ডাকলি যে...!
রাকিব বললো হে ডেকেছি কারন এত কথাতো বাইরে বলা যাবে না তাই ভাবলাম ২ জনকেই বাসায় ডেকে নেই।
আমি বললাম, কি কথা? রাকিব বললো সব ভুলে গেলি? ঐ যে ঐ অদ্ভুদ বাড়িটা যেটার খোজ তুই আমাকে নিতে বলছিলি। আমি বললাম, ওহ আচ্ছা। তো কি জানতে পারলি?
রাকিব বললো এ বাসার ঘটনা সোহান তোকে সব বলবে।
সোহান আমাকে বললো ভাই আপনি যা যা দেখেছেন সব সত্যি ছিলো। এমন ঘটনা আমার সাথেও যে ঘটে নি তা নয়।
ঘটনা ৩:
(যা সোহানের সাথে ঘটেছিলো)
সোহান বললো এই বাসার অনেক কাহিনী। যারা প্রথম দেখতে আসে সবার আগ্রহ এই বিষয়েই যে বাসাটা এত বড় অথচ মানুষ কেন থাকে না এটার কারনটা কি...?
আসে পাশের সব মানুষ এড়িয়ে কেন যায়? আর কারন কিছু যদি নাই থাকে তাহলে দিনের বেলায়ও মানুষ প্রবেশ কেন করে না...?
আমরা তখন নতুন এসেছি ভাড়া বাসায়। আমি আর আমার ছোট ভাই একদিন প্ল্যান করলাম নতুন এসেছি এলাকাটা একটু ঘুরে দেখি। ঘুরাঘুরি করতে করতে তখন প্রায় সন্ধ্যা, মাগরিবের আজান দেওয়ার পর যে গোধুলী লঘ্ন থাকে না আলো না অন্ধকার!! না দিন না রাত এমন সময় আমরা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু আমাদের বাড়ির কাছেই ঐ বাড়িটা তাই ঐ বাড়িটার সামনে দিয়েই আমাদের সবার আনাগোনা...
মাগরিবের আজানের কিছুক্ষণ পর আমি আর ভাই বাসায় ফিরে যাচ্ছি হঠাত দেখতে পেলাম এই বাড়িটি। আমার ছোট ভাইটি বায়না ধরলো আয় একটু সামনে যাই একটু দেখি তারপর বাড়ি চলে যাবো। আমারো যেতে মন চাইলো তাই আর না করলাম না। দেখলাম বাড়িটা কেমন জানি অদ্ভুদ কেমন জানি নিরিবিলি মনে হলো একটা পাখিও এখানে থাকে না বিদঘুটে একটা পরিবেশ...!!!
আমরা আশে পাশে দেখছিলাম তখন প্রায় সন্ধা নেমে এসেছে। হঠাত যা দেখলাম তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না!! দেখলাম একটা কালো ছায়া মুর্তি যে আমাদের পাশ দিয়ে এসে চোখের পলকে দৌরে গিয়ে লাফ দিয়ে এত উপরে উঠে কোথায় যেন মিলিয়ে গেলো!!!
এটা আমরা ২ জনই দেখলাম আর ভয় পেয়ে গেলাম আমাদের আওয়াজ শুনে হঠাত দারোয়ান আসলো এসে আমাদের দেখলো আর তারিয়ে দিলো বললো আর যেন এভাবে সন্ধ্যা বেলায় একলা না আসি, আমি বললাম কেন আপনি নিষেধ করছেন?
দারোয়ান কথাটি ঘুরিয়ে বললো এখানে সবসময় আসার অনুমতি দেওয়া নেই। আমরা আর কথাটি বাড়াতে পারলাম না দারোয়ান কোনো কথা না শুনে আমাদের বের করে দিলো...
চলে আসলাম কিন্তু মনের আগ্রহ কিছুতেই কমলো না যে কি আছে যে উনি নিষেদ করলো। তাই সীদ্ধান্ত নিলাম কাল দুপুরে যখন দারোয়ান না থাকবে কেউ না থাকবে তখন আসবো, এসে ভালভাবে দেখবো কারন আমার হরর বিষয়ে প্রচুর আগ্রহ ছিলো আর আমি সম্ভবত ভুতে বিশ্বাস করতাম না খুব একটা। তাই তার পরের দিন দুপুর ২ টায় বাড়িতে আসলাম, আসার পর যা দেখলাম তা আমার পুরো ধারনাটাকেই পাল্টে দিলো। দেখলাম...
চলবে...
Writer:- Akiluz Zaman