Leave a message
> ক্লিভল্যান্ড টর্সো মার্ডারস পর্ব ২
-->

ক্লিভল্যান্ড টর্সো মার্ডারস পর্ব ২


এই পর্বে আমরা ক্লিভল্যান্ড টর্সো মার্ডারস এর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করব। কিন্তু, সমাধান খোঁজার আগে কিংসবেরি রানের কিছু ব্যাকগ্রাউন্ড জেনে নেয়া যাক। তাহলে খুনগুলোর ব্যাপারে বুঝতে আমাদের সুবিধা হবে।
.
১৯৩০ সালের দিকে ক্লিভল্যান্ডের কিংসবেরি রানের বেশিরভাগ মানুষের আর্থিক অবস্থা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে একে "Hobo Jungle" নামে ডাকা হতো। এদের বেশিরভাগই আবার গেম্বলিং, সেক্স বিজনেসের সাথে যুক্ত ছিল। কিংসবেরি রানের কাছেই ছিল "The Roaring Third" নামে স্কেচি একটা এরিয়া যেটা গেম্বলার আর সেক্স ওয়ার্কারদের আস্তানা ছিল বলা চলে। আর এইখানেই সেক্স ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করত ফোর্থ ভিক্টিম ফ্লোরেন্স পলিলো।
.
তো, ১৯৩৯ সালের জুলাই মাসের দিকে প্রথম সাসপেক্ট ফ্রাংক ডোলেজলকে অ্যারেস্ট করে পুলিশ। তাদের মতে, ডোলেজল ফোর্থ ভিক্টিম ফ্লোরেন্স পলিলোর খুনের সাথে জড়িত। এই ডোলেজলের সাথে পলিলোর আবার বেশ কয়েকবছরের সংসার ছিল। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলে সে স্বীকার করে যে, সে-ই পলিলোকে খুন করেছে। পাশাপাশি সে এডওয়ার্ড এন্ড্রাসি আর রোস ওয়ালেস নামে আরো দুইজন ভিক্টিমের ব্যাপারে জানে।
.
কিন্তু ব্যাপারটা জলঘোলা হয় তখনই যখন ডোলেজল পরবর্তীতে একটা নিউপেপারে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলে, পলিলোর খুনের ব্যাপারটা তাকে জোরপূর্বক স্বীকার করানো হয়েছে। এর প্রমাণও অবশ্য পাওয়া গেছে। রিমান্ড শেষে ডোলেজলের মেরুদন্ডের ছয়টা পাজর ভাঙা ছিল (!)
.
কেস এক্সপার্ট জেমস ব্যাডেল তার আত্মজীবনীতে এব্যাপারে লিখেছিলেন, "আমি প্রথম এমন সাসপেক্টকে দেখলাম যে কিনা নিজেই জানে না সে কোন খুনের ব্যাপারে কনফেস করছে।"
.
তারপরও ডোলেজলকে এই সিরিয়াল কিলিংসের প্রাইম সাসপেক্ট হিসেবে জেলে বন্দি করে রাখা হয়। একমাস পরে, ১৯৩৯ সালের আগস্ট মাসে ফ্রাংক ডোলেজল কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় আত্মহত্যা করে।
.
ব্যাপারটা এতটুকুতে শেষ হয়ে গেলে বোধহয় ভালোই হত। কিন্তু এই সিরিয়াল কিলিংসের ব্যাপারে আমি যতই পড়েছি ততই এর মারপ্যাঁচে মুগ্ধ হয়েছি। তো ব্যাপারটা হল, কারাগারের যে সেলে ডোলেজলের লাশ সিলিংয়ের যে হুক থেকে ঝুলানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল ফ্লোর থেকে সে হুকের উচ্চতা ছিল ৫ফুট ৭ইঞ্চি। মজার ব্যাপার হলো, ডোলেজলের উচ্চতা ছিল ৫ফুট ৮ইঞ্চি। প্রশ্ন হচ্ছে, একটা মানুষ কিভাবে তার চেয়ে কম উচ্চতার কোনো স্পেসে ঝুলে থাকতে পারে?
ফরেনসিক রিপোর্টও কিন্তু শো করেছিল যে, ডোলেজল সুইসাইড করেনি বরং তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল!
.
এরপর প্রায় অনেক অনেক বছর পর, ১৯৭০ সালের দিকে এসে এলিয়ট নেস তার সিক্রেট সাসপেক্ট হিসেবে ডক্টর ফ্রানসিস-ই-সুইনির নাম প্রকাশ করেন। তার মতে সুইনিই থার্টিজের দিকে করা ওই ১৩টা খুনের সঙ্গে জড়িত। মোর ইম্পর্টেন্টলি, যেহেতু সুইনি একজন ডাক্তার, সেহেতু খুনের ব্যাপারে তার যথেষ্ট এনাটমিকাল নলেজ আছে বলে ধারণা সেফটি ডিরেক্টর এলিয়ট নেসের।
.
স্বভাবতই এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, সুইনিই কেন এইসব খুনের সাথে জড়িত?
ওয়েল, সুইনির ওয়াইফ জবানবন্দিতে বলে যে, সুইনি বেশিরভাগ সময়ই মাতাল থাকত, পাশাপাশি সে মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিল। প্রায় সময়ই সুইনি গভীর রাতে বাড়ি এসে তাকে(স্ত্রীকে) এবং তাদের দুই সন্তানকে মারধর করত।
.
এদিকে ১৯৫৬ সালের একটা মেডিকেল রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, সুইনি স্ক্রিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। তাই, কোনো কোনো এক্সপার্টের মতে সুইনি মেন্টালি ফিট না থাকার কারণে + তার এনাটমিকাল জ্ঞান থাকার কারণেই এসব খুন করেছিল।
.
তবে অনেকদিন পর জানা যায় যে, ১৯৩৮ সালের দিকেই এলিয়ট নেস (যার কাঁধে এই সিরিয়াল কিলিংসের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ক্লিভল্যান্ড মেয়র) তার সিক্রেট সাসপেক্ট হিসেবে সুইনিকে ক্লিভল্যান্ডের একটা হোটেল রুমে প্রায় ১০-১৪দিন আটকে রেখেছিল। যদিও অনেক চেষ্টার পরও নেস সুইনির মুখ থেকে প্রমাণযোগ্য কিছু বের করতে পারেনি।
.
মজার ব্যাপার হলো, ওই ১৪ দিন আটক থাকার পর সুইনি ছাড়া পাওয়ার তিন মাসের মধ্যেই শেষ দুইটা ভিক্টিমের লাশ উদ্ধার করা হয়, তাও নেসের অফিস রুমের বারান্দা থেকে। তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ায়?
নেসকে তাচ্ছিল্য করার উদ্দেশ্যেই কি তাহলে শেষ দুইটা খুনের নমুনা সুইনি নেসের অফিস রুমের বারান্দায় রেখে গিয়েছিল?
.
এদিকে, ওই সিরিয়াল কিলিংস অনগোয়িং থাকা অবস্থাতেই ১৯৩৮ সালের দিকে এমিল ফ্রোনেক নামে এক ব্যক্তি অথোরিটির কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল যে, তাকে কোনো এক ডাক্তার ড্রাগড করার চেষ্টা করেছিল। He told the exact location of Dr. Sweeney's practice chamber to the authority but the authoritiy didn't take his claim seriously as fronek was a vagrant. প্রায় অনেকদিন পর এসে কেইস এক্সপার্ট জেমস ব্যাডেল ইনভেস্টিগেশন করে জানতে পেরেছিলেন যে, ফ্রোনেক এক্সেক্টলি সুইনির চেম্বারের কথাই বলেছিল।
.
ইন্টারেস্টিং পার্ট ইজ, "The Roaring Third" নামে যে ক্যাসিনোর কথা আমি শুরুতেই উল্লেখ করেছি, তার দূরত্ব সুইনির চেম্বার থেকে খুব একটা দূরে ছিলনা।
.
ব্যাডেলের মতে, সুইনি এই ক্যাসিনোতে গিয়ে ড্রাগের লোভ দেখিয়ই তার ভিক্টিমদেরকে চেম্বারে নিয়ে আসত আর তাদের ড্রাগড করেই খুনগুলো করত। এন্ড দ্য মোর ইন্টারেস্টিং পার্ট ইজ, দুই আর তিন নাম্বার ভিক্টিমের লাশ যেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল সেখান থেকে সুইনির চেম্বারের দূরত্ব ছিল মাত্র কয়েক মিনিটের পথ। পাশাপাশি, নয় নাম্বার ভিক্টিমের লাশে ড্রাগের অস্তিত্বও খুজে পেয়েছিল পুলিশ (!)
.
কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, জেমস ব্যাডেলের এসব রিসার্চের অনেক বছর আগেই সুইনি মারা যায়।
.
ওয়েল, এতটুকুতে এসে অনেকেই হয়ত হাফ ছেড়ে বাঁচলেন, "যাক সুইনিই তাহলে মার্ডারার।" অন্তত জেমস ব্যাডেল আর এলিয়ট নেসের মতে তাই-ই।
.
কথা হচ্ছে, যদি এলিয়ট নেস জানতই যে সুইনিই সিরিয়াল কিলার তাহলে নেস কেন সুইনিকে ১৪দিন বন্দি রাখার পর ছেড়ে দিয়েছিল?
প্রশ্নটার উত্তর হল, সুইনি ছিল সেসময়ের মার্কিন কংগ্রেসম্যান "মার্টিন এল সুইনি"-র কাজিন। যার কারণে নেস আর তার পরিবারকে চরম হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। শেষমেশ, সুইনিকে ছেড়ে দিতে এক প্রকার বাধ্যই করা হয়েছিল।
.
এইকারণে, আজও পর্যন্ত এই ক্লিভল্যান্ড টর্সো মার্ডারস অফিসিয়ালি "UNSOLVED"!
.
১৯৫০ সালের দিকে নেসের কাছে একটা অজ্ঞাত চিঠি আসে; উইথআউট দা নেম অফ দ্য সেন্ডার। শেষ করার আগে সেই চিঠিটাই আপনাদেরকে পড়ে শুনাই,
" Hey bruh, it's ya boi Sweeney"

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

লেখা:- ফাহাদ বিন জাহেদ
অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
 

Delivered by FeedBurner

a