Leave a message
> তিতুমীর
-->

তিতুমীর


‘সারফারোসী কি তামান্না আব হামারে দিল মে হ্যায়’- বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় বিসমিল আজিমাবাদী’র লিখা এই কবিতাটি প্রতিটা দেশপ্রেমিককে প্রবল নাড়া দিয়েছিলো। ১৯২২ সালে লিখা এই কবিতার মূল কথা ছিলো- যে জাতি দেশের জন্য আত্মত্যাগ করতে মরিয়া- সেই জাতিকে কেউ পরাধীন রাখতে পারেনা। কবিতাটি লিখার আরও প্রায় একশত বছর আগেই এক বাঙালী বীর বাঁশের কেল্লা তৈরি করে, লাঠি হাতে বুক চিতিয়ে বৃটিশদের সাথে মরণপন লড়াই করে জানিয়ে দিয়েছিলেন ‘বাঙালী আত্মসমর্পন জানেনা’। তাঁর নাম তিতুমীর। আজ ১৯ নভেম্বর, শহীদ তিতুমীরের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৩১ সালে বৃটিশদের সাথে লড়াই করে তিনি গুরুতরভাবে জখম হোন এবং যুদ্ধের মাঠেই শাহাদত বরণ করেন। আল্লাহ যেনো এমন আত্মত্যাগকে কবুল করে নেন।
শহীদ তিতুমীরের পুরো নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী। পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলায় এক অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত, সম্মানিত পরিবারে তাঁর জন্ম ১৭৮২ সালে। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ মীর হাসান আলী এবং মা’য়ের নাম আবিদা রুকাইয়া খাতুন।বহুকাল আগে তিতুমীরের পূর্বপুরুষেরা আরব দেশ থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলেন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে। তারা তাদের স্থায়ী আবাস করেন এই বাঙ্গাল মুলুকে। মোঘল শাসনামলে তিতুমীরের এক পূর্বপুরুষ ছিলেন জাফরপুরের প্রধান কাজী। তিতুমীরের শৈশবের শিক্ষা শুরু হয় স্থানীয় স্কুলে। শৈশবেই তাঁর মেধা ও স্মৃতিশক্তি ছিলো প্রখর। তাঁর বাবার একান্ত ইচ্ছা ছিলো ছেলে কোরআনে হাফেজ হবে। তাই তিতুমীরকে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় মাদ্রাসায়। বাবার স্বপ্ন অপূর্ণ থাকেনি। কিশোর বয়সেই কোরআনে হাফেজ হোন তিতুমীর, সেই সাথে হাদিস বিষয়ে ব্যাপক পান্ডিত্য অর্জন করেন। হাদিসের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে তাঁর প্রজ্ঞা ছিলো অসাধারণ। তাঁর ভাষাজ্ঞানও ছিলো চমৎকার। তিনি একই সাথে বাংলা, আরবী ও ফারসীতে দক্ষ হয়ে উঠেন। শুধু বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ ছিলেননা তিতুমীর। তিনি খেলাধুলাতেও ছিলেন ভীষণ আগ্রহী। বিশেষত তিনি পরিচিতি পান শক্তিশালী এক কুস্তিগীর হিসেবে। আবার লাঠি খেলাতেও ছিলো তাঁর তুমুল আগ্রহ। ঐ সময়ে ছাত্র সমাজের মাঝে কুস্তি খেলা এবং লাঠি খেলার ব্যাপক প্রচলন ছিলো। পাড়া-মহল্লায় কিংবা স্কুল-মাদ্রাসায় কুস্তি এবং লাঠি প্রতিযোগীতা হতো। সুঠাম দেহের তিতুমীরকে কুস্তি খেলায় হারানো ছিলো প্রায় অসাধ্য। একই সাথে তাঁর অনন্য কৌশলের কারণে লাঠি খেলায়ও তিনি ছিলেন অপরাজেয়।
তরুন বয়সেই তিতুমীর ছিলেন অন্যায়ের বিপক্ষে প্রচন্ড প্রতিবাদী। সেই সময়ে জমিদারদের যন্ত্রনায় কৃষকেরা ছিলো বিপর্যস্ত। ইচ্ছেমতো খাজনার বোঝা চাপানো হতো কৃষকদের উপর। ঘটনাগুলো খুব নাড়া দিতো তিতুমীরের হৃদয়ে। তিনি জমিদারের লোকজনের সাথে প্রায়ই সংঘর্ষে লিপ্ত হতেন। জমিদারের লোকজন শরীরের শক্তিতে কখনোই পারতোনা তিতুমীরের সাথে। বেশ মার খেতো তারা। এমনই এক তুচ্ছ হাতাহাতির ঘটনা থেকে একবার লংকাকান্ড বেঁধে গেলো। জমিদারের লোকজন জমিদারের কাছে নালিশ করলে ঐ জমিদার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছে তিতুমীরের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ করেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর লোকজনও খুপ ক্ষেপে ছিলো যুবক তিতুমীরের উপর। কারণ বৃটিশরা তখন গরীব কৃষকদের জমিতে ফসলের চাষ না করে নীল চাষ করতে বাধ্য করতো। এর উপর আবার বড় অংকের করও আদায় করতো। এতে যুবক তিতুমীরই ছিলেন বড় বাঁধা। বৃটিশ নীলকরেরা তাই তিতুমীরের বিরুদ্ধে জমিদারের অভিযোগকে পুঁজি করে তাকে আইনী ঝামেলায় জড়িয়ে ফেললো। বিচারে জেল হলো তিতুমীরের। তাকে অনেক দিন কারাভোগও করতে হলো।
কারাগার থেকে মুক্তির পর তিতুমীর হজ্জ করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৮২২ সালে ৪০ বছর বয়সে তিনি পবিত্র হজ্জ পালন করতে মক্কায় যান। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় বিখ্যাত সুফী সৈয়দ আহমদ বারেলীর সাথে। সৈয়দ আহমদের সান্নিধ্যে তিতুমীর ৫ বছর কাটান। এই সময়ে তিনি ইসলামের মৌলিক বিষয়ে দীক্ষা লাভ করেন। শিক্ষক সৈয়দ আহমদ বারেলীর পরামর্শে তিতুমীর নিজের দেশে ফিরে আসেন। বাংলার মুসলমানরা তখন জেনে কিংবা না জেনে বিভিন্ন ধরনের শিরক ও বেদআতে অভ্যস্ত ছিলো। তিতুমীর পরম যতনে একজন ইসলামী সংস্কারক হিসেবে কাজ করতে থাকেন। মুসলমানদের মাঝে ধর্মের প্রকৃত বাণী পোঁছে দিতে তিনি নিরলসভাবে চেষ্টা করেন। তিনি ছিলেন অনন্য সাধারণ বক্তা।তাঁর বক্তৃতা মানুষকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করতো। ধর্ম প্রচার করতে গিয়ে তিতুমীর বুঝতে পারেন যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া মানুষের কষ্ট কমানো যাবেনা, আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের তাগিদে বৃটিশদের তাড়াতে হবে। বৃটিশদের বড় শক্তি ছিলো তাদের আজ্ঞাবহ জমিদারেরা। তাই জমিদারদের সাথে আবারও সংঘাত শুরু হলো তিতুমীরের। গ্রামে গ্রামে গিয়ে তিনি কৃষকদের সংগঠিত করলেন এবং তাঁতীদেরও এক করলেন। কৃষক ও তাঁতীদের নিয়ে শুরু করলেন লাগাতার আন্দোলন। তিতুমীরের আগে আর কেউ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বিরুদ্ধে এতো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। দলে দলে মানুষ তিতুমীরের কাছে আসতে থাকলো। তাঁর বিদ্রোহী দলে হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ ছিলোনা। দেখতে দেখতে ১৫০০০ বিদ্রোহীর এক বিশাল বাহিনীতে পরিণত হলো তিতুমীরের বাহিনী।
বাঙলার ক’জন অত্যাচারী জমিদার তখন একজোট হলো তিতুমীরের বিরুদ্ধে। তারা বুঝতে পারলো যে, তিতুমীরকে ঠেকানো না গেলে তাদের জমিদারীই থাকবেনা। তারা যুদ্ধের জন্য সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করলো কিন্তু তিতুমীরের বাহিনী যুদ্ধে জয়লাভ করলো। এরপর জমিদারেরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছে সাহায্য চাইলো। কিছুদিন পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বৃটিশ সৈন্য পাঠালে জমিদারদের সৈন্যদের সাথে নিয়ে যৌথবাহিনী গঠিত হয়। শুরু হয় তিতুমীরের সেনাদের সাথে দ্বিতীয় যুদ্ধ। এইবারও জমিদার ও বৃটিশদের যৌথ বাহিনী তিতুমীরের বাহিনীর কাছে পরাজয় স্বীকার করে। তিতুমীর তখন স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর। তিনি তাঁর সেনাবাহিনীকে লাঠি চালনায় প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। সৈন্যদের নিরাপত্তার জন্য তৈরি করেন তাঁর বিখ্যাত বাঁশের কেল্লা। এটি ছিলো দুই স্তর বিশিষ্ট দূর্গ যা কেবলমাত্র বাঁশ ও কাদামাটি দিয়ে তৈরি করা। নীচের দিকে নামমাত্র ক’খানা ইট ব্যবহার করা হয়েছিলো। ঐ সময় আকস্মিকভাবে অত্যাচারী জমিদারেরা দাঁড়ি রাখার উপর ট্যাক্স নির্ধারণ করে। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং কোরআনে হাফেজ হিসেবে তিতুমীরের দাঁড়ি ছিলো। তাঁর সেনাদেরও অনেকেই দাঁড়ি রাখতেন। তিতুমীর এতোদিন তবু অত্যাচার সহ্য করেছেন কিন্তু ধর্মের উপর এই আঘাত মানতে পারলেন না। তিনি সরাসরি বিদ্রোহ করলেন এবং স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন। তিনি বাংলার যে অংশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করেছিলেন তা হলো বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা এবং নদীয়া জেলা। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছ থেকে ভারতবর্ষের কোনো অংশে এর আগে আর কেউ স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারেননি। তিতুমীরই প্রথম। এটা ছিলো ১৮৩১ সাল।
বৃটিশদের রাজত্ব যেনো পুরো কেঁপে উঠলো। তারা বুঝতে পারলো- যদি তিতুমীরকে আটকানো না যায় তবে খুব দ্রুতই ভারতবর্ষের আরও বিভিন্ন স্থান থেকে স্বাধীনতার ডাক আসবে। তাই তিতুমীরকে শায়েস্তা করতে ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল স্টুয়ার্টের নেতৃত্বে এক বিশাল বাহিনী গঠিত হলো। সেই দল ছিলো একদম আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত এবং চৌকশ। তাদের কাছে বেশ ক’টি কামান ছিলো, ছিলো বন্দুক। সেই সাথে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ছিলো অনেকগুলো ঘোড়া, বিপুল তীর-ধনুক ও তলোয়ার। বেশিদিন হয়নি কামান ও বন্দুক যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার শুরু হয়েছে। আর তিতুমীরের বাহিনীর সেই আর্থিক অবস্থা ছিলোনা যা দিয়ে এমন সব অস্ত্র তৈরি করা যায়। তাদের সম্বল ছিলো ঐ বাঁশের কেল্লা, লাঠি, বল্লম আর পনের হাজার মুক্তকামী মানুষের ঈমানের শক্তি। যেন-তেন ঈমান নয়, সত্যিকার ঈমান। যার সামনের কাতারে হাজির পাগড়ী মাথায় তিতুমীর।
যুদ্ধ শুরু হলো। ভয়াবহ সেই যুদ্ধ। বিনা যুদ্ধে নাহি দেবো সূচ্যগ্র মেদিনী! তবে বৃটিশদের কামানের গোলার আঘাত সয়ে বাঁশের কেল্লা কতদিন আর থাকতে পারে? একসময় হেরে গেলো তিতুমীরের বাহিনী। ধ্বংস করে দেওয়া হলো বাঁশের কেল্লা। সবটুকু রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করলো সেনারা। শহীদ হলেন হাজারেরও উপর। তিতুমীর গুরুতর জখম হয়ে মারা গেলেন। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৪৯ বছর। তাঁর প্রধান সেনাপতি গোলাম রসূলসহ অনেকে বন্দী হলেন। বিচারে গোলাম রসূলের ফাঁসি হলো। আরও অনেককে ফাঁসি দেওয়া হলো। আজীবন কারাদন্ড এবং নির্বাসন দেওয়া হলো অনেককে। বৃটিশরা ভাবলো তাদের জয় হয়েছে। কিন্তু আসলেই কি তাই? কক্ষনো না। তিতুমীর ও তাঁর সাথীদের এই আত্মত্যাগ বৃথা গেলোনা। সারাটা ভারতবর্ষে আগুনের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়লো তিতুমীরের সাহসের কথা। ছড়িয়ে পড়লো বাঁশের কেল্লা তৈরি করে বুক চিতিয়ে ইংরেজদের সাথে লড়াই করার গল্প। অনুপ্রেরণা পেলো লক্ষ লক্ষ মুক্তিকামী মানুষ। যার ফলশ্রুতিতে তিতুমীরের মৃত্যুর ২৬ বছর পর ১৮৫৭ সালে বৃটিশদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয় সিপাহী বিদ্রোহ। এককালে ১৯৪৭ সালে আসে স্বাধীনতা।
তিতুমীরের সাহসিকতা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। ইতিহাসের পাতায় মাতৃভূমির জন্য লড়াই করা সৈনিকদের নামের তালিকায় উপরের দিকেই আছে তাঁর নাম। তিতুমীরের মৃত্যুর পর তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনাকারী ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল স্টুয়ার্ট তার অফিসিয়াল স্টেটম্যান্টে তিতুমীর ও তাঁর অনুসারীদের সাহসের প্রশংসা করতে কার্পন্য করেননি। ভাবা যায়! এক সেনানায়ক তারিফ করছে প্রতিপক্ষ সেনানায়কের! এতো কিংবদন্তী। তিতুমীরের নাম আজীবন রবে সকল বাঙালীর হৃদয়ে। রবে শ্রদ্ধায়, রবে ভালোবাসায়। বিবিসি পরিচালিত জরিপে সর্বকালের সেরা বাঙালীর নামের তালিকায় তাঁর নাম আছে এগারোতে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরপরই ১৯৭১ সালে ঢাকার জিন্নাহ কলেজের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ’। বিখ্যাত বুয়েটের একটা ছাত্রহলের নাম ‘তিতুমীর হল’। খুলনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটা ঘাঁটির নাম আছে তাঁর সম্মানে ‘বিএনএস তিতুমীর’। আমি সিলেট ক্যাডেট কলেজে পড়তাম। সেখানে ক্যাডেটদের তিনটা হাউসের মাঝে একটা তাঁর নামে, ‘তিতুমীর হাউস’।
তিতুমীর কি জানতেন না যে বাঁশের কেল্লা দিয়ে কামানের সামনে বেশি দিন দাঁড়ানো যাবেনা? হয়তো জানতেন। তবু জীবনের বিনিময়েও দেশের স্বার্থের সাথে আপোস করেননি তিনি। তিতুমীরের আত্মত্যাগ থেকে আমরা কি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শিখতে পারিনা? আমরা কি পারিনা সত্যকে সত্য বলা শিখতে আর মিথ্যাকে মিথ্যা? আমরা কি শপথ নিতে পারিনা- যে মাটির সন্তান শহীদ তিতুমীর, সেই মাটিতে আমরা কোনোদিন দূর্নীতি করবোনা, কোনোদিন সন্ত্রাস করবোনা, কোনোদিন অসৎ হবোনা? আমরা দেশটাকে নিয়ে এতোটুকু না ভেবে শুধু দেশের সম্পদ লুটপাট করার প্ল্যান করবো বলেই কি তিতুমীর জীবন দিয়েছিলেন? নিশ্চয়ই না। এসব ভাববার প্রয়োজন আছে। আমাদেরও বলার সময় এসেছে- আমরা অন্যায়ের কাছে আত্মসমর্পণ জানিনা। মৃত্যুদিনে তিতুমীরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। তাঁর এবং তাঁর বাহিনীর প্রত্যেকের আত্মত্যাগ আল্লাহ কবুল করুন, শহীদদের কাতারে তাদের জায়গা হোক- আজকের দিনে এই কামনা...

Writer:- Rumel M S Pir
 

Delivered by FeedBurner

a