আরও আগেই বের হতো ওরা তবে সাক্ষর কিনঞ্জলকে সামনে বসিয়ে পুরো নাস্তা শেষ করিয়ে তারপর ছেড়েছে।কিনঞ্জল আজকে জিন্সের সাথে বটল গ্রীন রঙের লং কুর্তি পরেছে।আর তার উপর একটা লেডিস জিন্স জ্যাকেট।শীতকাল হওয়ায় পায়ে লেডিস কেডস আর কাধে নিজের ব্যাকপ্যাকটা নিয়েছে।আর সাজ বলতে কেবল ঠোঁটে একটু লিপজেল দিয়েছে আর চুলটা উচু করে বেধেছে।ব্যাস এতটুকুই।আসলে ভারী সাজে কিনঞ্জলকে একদমই মানায় না।ওর মুখের আদলটাই এমন যে হালকা কাজল দিলেও মনে হয় অনেক সেজে ফেলেছে।প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যাবার মত রুপ নিয়ে কিনঞ্জল জন্মায়নি।কিংবা কোমর সমান লম্বা চুল,ঠোঁটের নিচে তিলও নেই কিনঞ্জলের যে ছেলেরা চলার পথে ওর দিকে বিশেষ নজরে তাকাবে।উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রঙ কিনঞ্জলের।তবে চোখদুটো কিনঞ্জলের ভারী হৃদয় কাড়া।ঘন পাপড়িযুক্ত চোখ দুটোতে এক চিলতে কাজলই যেনো প্রকৃত প্রেমিকের হৃৎস্পন্দন বন্ধ করতে যথেষ্ট।নাকটা মুখের সাথে বেশ মানানসই আর তার নিচেই কালচে গোলাপি ঠোঁট।এককথায় প্রথম দেখাতেই কেউ কিনঞ্জলকে রূপবতীদের তালিকায় ফেলতে পারবে না।তবে কেউ অসুন্দরও বলতে পারবে না।কেউ কেউ হয়ত দয়া করে মায়াবতী ট্যাগটা কিনঞ্জলের সঙ্গে জুড়ে দিতেই পারে।তাতে অবশ্য ভুল কিছু বলা হবে না।কিনঞ্জলের মুখের আদলটা আসলেই মায়াবী।দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
ড্রাইভিং সিটে সাক্ষর বসেই আগে গাড়ির কাচগুলো তুলে দিলো যাতে ঠান্ডা বাতাস না আসে।কিনঞ্জল এসে বসতেই দুজনেই নিজ নিজ সিটবেল্টটা বেধে নিয়ে গাড়ি স্টার্ট করলো।দশ মিনিটের মাথায় ওরা অফিসে পৌঁছে গেলো।কিনঞ্জল গাড়িতে বসেই ওয়েট করতে চাইলেও সাক্ষর জোড় করে কিনঞ্জলকে নিজের কেবিনে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে হাতে এক কাপ কফি ধরিয়ে দিয়ে নিজের কাজে লেগে পড়ল।পনেরো মিনিট বললেও সাক্ষরের কাজ শেষ হতে সময় লাগলো পাক্কা আধা ঘন্টা।আর এই আধা ঘন্টা সময়ে সাক্ষর একবারো কেবিনে আসেনি।তাই একাকীত্ব ঘোচাতে কিনঞ্জল পুরোটা সময় ফেসবুকে এতদিনের জমে থাকা নোটিফিকেশন চেক করছিলো।বেশির ভাগ নোটিফিকেশন ছিলো ওর ছবিতে রিয়াক্ট,কমেন্ট এইসবের।তবে হাতের বৃদ্ধা আঙুলটা থমকে যায় আজ থেকে দুই দিন আগের একটা নোটিফিকেশনে দেখে।সাক্ষর ওকে ট্যাগ করে ম্যারিড স্টাটাস দিয়েছে।স্ক্রিনে কালো অক্ষরে "Sakkhor Chowdhury married to Kinonjol Inayat লেখাটা জ্বলজ্বল করছে।কিনঞ্জল কতক্ষণ লেখাটার দিকে ঝিম ধরে তাকিয়ে থেকে কি যেনো ভেবে বেশ কনফিডেন্টলি এক্সেপ্ট বাটনে টাচ করল আর সাথে সাথে কিনঞ্জলের আইডির এবাউটেও Married to Sakkhor Chowdhury লেখাটা কালো গোটা গোটা অক্ষরে জুড়ে গেলো।ঠিক যেভাবে দিনকে দিন সাক্ষর কিনঞ্জলের জীবনে জড়িয়ে পড়ছে।কি যেনো মনে করে সাক্ষরের আইডিতে আজকে দ্বিতীয়বারের মতো ঢুকলো কিনঞ্জল।সাক্ষরকে আনফলো করে রাখায় ওর কোন পোস্ট কিনঞ্জলের নিউজফিডে আসে না।সাক্ষরের রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট না করায় যে রাম ধমক দিয়েছিলো সাক্ষর এখনো ভাবলেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠে।ফার্স্ট ইয়ারে উঠার পরেই এই আইডিটা ওপেন করেছিলো কিনঞ্জল।আর তার দিন তিনেক পরেই সাক্ষর ছোটবোন হিসেবেই রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছিলো কিনঞ্জলকে।কিন্তু কিনঞ্জল ভয় পেয়ে রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট না করে সাক্ষরকে ব্লক করে দিয়েছিলো।তারপরেই সাক্ষরের রাগের কবলে পড়ে আর ধমকানির চোটপাটে সাক্ষরকে আনব্লক করে নিজেই রিকুয়েষ্ট পাঠিয়েছিলো।
এসব ভাবতে ভাবতেই সাক্ষরের আইডিতে ঢুকেই কভারে ওদের দুজনের বিয়েতে সোফায় পাশাপাশি বসে লালগোলাপের পাপড়ি ছড়ানো টি-টেবিলে রাখা রেজিস্ট্রি খাতায় সাইন করার ছবিটা চোখের সামনে ভেসে উঠল।এই পিকটাও দুদিন আগেই পোস্ট করা হয়েছে।ক্যাপশন দেওয়া "Twenty six letter doesn't enough to describe the heavenly feelings to make a princess my own queen."(২৬টি অক্ষর এক রাজকন্যাকে নিজের রাণী বানানোর স্বর্গীয় অনূভুতিকে কখনোই বর্ণনা করতে পারে না।)[পাঠকদের সুবিধার্থে ইংরেজিটুকুর অনুবাদ করে দেওয়া হলো]
এরমধ্যেই সাক্ষর কেবিনে এসে হাজির হয়ে গেলো।কিনঞ্জল সাক্ষরের চেয়ারটায় বসেই ফোন ইউজ করছিলো।সাক্ষর এসেই টেবিলের সামনে রাখা দুটো চেয়ার থেকে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ল।
"স্যরি রে!একটু বেশিই লেট হয়ে গেলো।এক্ষুনি বেরোবো চল।কোন শপিং মলে যাবি?"
"একটায় গেলেই হলো!তেমন কিছু কিনবো না।"
"বেশ চল তবে।দে তোর ব্যাগটা আমার কাছে দে।তোর বইতে হবে না!"
সাক্ষরের কথায় কিনঞ্জল ভ্রু কুঁচকে বলল,
"সিরিয়াসলি!আপনি এখন আমার ব্যাগ মানে লেডিস ব্যাগ ক্যারি করবেন?লোকে কি বলবে?আর আপনার অফিসের স্টাফরাই বা কি ভাববে?"
সাক্ষর চুলগুলো ব্যাকব্রাশ করতে করতে বলল,
"কিছুই ভাববে না।আমি যদি একা একটা লেডিস ব্যাগ কাধে নিয়ে ঘুরতাম তাহলে হয়ত আমার মেয়েলী স্বভাব এটা ভাবতো।কিন্তু এখন যেহেতু তুই সাথে আছিস ভাববে ব্যাগটা হয়ত ভারী।তাই নিজের বউয়ের কষ্ট কমাতে আমি বইছি।আর যদি এদের চিন্তাভাবনা একটু বেশিই প্রখর হয় তাহলে আমাকে বউ পাগলা ভাবতে পারে।তাতে কি হবে?ওদের ভাবনা ওদের মনেই থাকবে আর তুইও আমারই থাকবি।কিছুই হবে না!তাই এখন ব্যাগটা দে।"
এই বলে সাক্ষর ব্যাগটা নিতে গেলেই কিনঞ্জল ছোঁ মেরে ব্যাগটা দূরে সরিয়ে বলল,
"না,ব্যাগটা আমিই নিয়ে যাবো।আপনি চলুন!"
এই বলেই কিনঞ্জল সাক্ষরের আগেই গটগট করে হেঁটে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।সাক্ষরও কোন উপায় না পেয়ে কিনঞ্জলের পেছন পেছন হাঁটতে লাগল।কিনঞ্জল বেশ দ্রুত পায়েই হাটছিলো তাই সাক্ষরও দ্রুত পায়ে হেটে এসে কিনঞ্জলের পাশাপাশি হাটতে লাগল।এর মধ্যেই সবাই জেনে গেছে আজকে এমডির একমাত্র ছেলের বৌ মানে সাক্ষর স্যারের স্ত্রী এসেছে।তাই নিজ নিজ ডেস্ক থেকে সবাই কমবেশি সাক্ষর কিনঞ্জলকে আড়চোখে দেখছিলো। রিশেপশনের কাছে আসতেই কিনঞ্জলের বাম পায়ের কেডসের ফিতার বাধন খুলে যায়।এই দেখে কিনঞ্জল নিচু হয়ে ফিতাটা বাধতে যাওয়ার আগেই সাক্ষর নিজেই এক পায়ে ভর দিয়ে বসে ফিতাটা স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই বেধে দিয়ে উঠে দাড়ালো।কিনঞ্জল কিছু বলতে গিয়েও একবার আশেপাশে তাকিয়ে দেখল সবাই ওদের দিকেই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর বিশেষ করে রিশেপসনিস্ট মেয়েটার চোখ তো কোটর থেকে বেরিয়ে যাবে এমন অবস্থা।কিনঞ্জলের এখন বেশ অস্বস্তি হচ্ছে।সবাই কি ভাবলো?এটা ভাবতে বসার আগেই সাক্ষর কিনঞ্জলের হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে এসে দুজনে গাড়িতে উঠে গেলো।কিনঞ্জল বার-বার সাক্ষরকে ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে যাচ্ছিলো।তবে সাক্ষর কিনঞ্জলের এমন ছটফটানি আর চোখমুখের অবস্থা দেখে নিজেই জিজ্ঞেস করল,
"কিছু বলবি?এমন হাঁশফাস করছিস কেন?"
অনেকক্ষন ধরেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলতে চাইছিলো কিনঞ্জল।সাক্ষর নিজেই জিজ্ঞেস করায় আর ধৈর্য রাখতে না পেরে ফট করে বলেই বসল,
"আপনি তখন আমার জুতায় হাত দিলেন কেনো?সবাই কেমন করে তাকাচ্ছিলো আমাদের দিকে।আপনার অফিসের সবাই বা কি ভাবলো?ছিঃ..ছিঃ...!"
সাক্ষর ব্যাঙ্গ করে বলল,
"ছিঃ..ছিঃ...সবাই কি ভাবলো?বলি কি ভাববে সবাই?আমি কি সবার সামনে তোকে চুমু খেয়েছি?নাকি কোলে নিয়ে নেচেছি যে কিছু ভাববে?জুতার ফিতা বেধে দেওয়ায় সবাই কি ভাবলো তা তো আমার জানার কথা না।আমি তো আর ফিল্মি স্টাইলে ন্যাকামি করে তোর জুতো নিজের পায়ে রেখে জিন্সে ময়লা ভরিয়ে জুতোর ফিতা বেধে দেইনি যে সবাই দেখে হাততালি দিবে বা কিছু ভাববে।স্বাভাবিকভাবে তোর কাজে একটু হেল্প করেছি।আর সবার চিন্তার যেহেতু এতই ধার ধারিস প্রেম করার সময় মনে ছিলো না লোকে কি ভাববে?তখন তো ড্যাংড্যাং করে ঠিকই চুটিয়ে প্রেম করেছিস।"
"সাক্ষর ভাই!"
কিনঞ্জলের আহত স্বরের ডাক শুনেই সাক্ষরের খেয়াল হলো কি ব্লান্ডারটাই না সে করে ফেলেছে এইমাত্র।নিশ্চিত কিনঞ্জল এখন ভেজা চোখে ওর দিকেই করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তবে সাক্ষর পরিস্থিতি সামাল দিতে কিনঞ্জলের দিকে না তাকিয়েই বলল,
"আমি কারো ভাই-টাই না।আমার মাত্র দুটো বোন।তাহা আর তাহি।আর প্রেম করেও তো কোন এক্সপেরিয়েন্স হয়নি দেখছি তোর।কিছুই তো জানিস না।রোমান্টিকতার র টাও তোর মধ্যে নেই।বেরসিক মহিলা একটা।"
এই বলে ভয়ে ভয়ে সাক্ষর কিনঞ্জলের দিকে তাকাতেই দেখলো কিনঞ্জল চোখে পানি নিয়েই ফিক করে হেসে দিয়েছে ওর কথা শুনে।আর টিস্যু দিয়ে নাকের পানি চোখের পানি সমানে মুছে যাচ্ছে।এই দেখে সাক্ষর একটা শান্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো।খুব জোড় বাঁচা গেছে এ যাত্রায়!
"স্যরি রে!একটু বেশিই লেট হয়ে গেলো।এক্ষুনি বেরোবো চল।কোন শপিং মলে যাবি?"
"একটায় গেলেই হলো!তেমন কিছু কিনবো না।"
"বেশ চল তবে।দে তোর ব্যাগটা আমার কাছে দে।তোর বইতে হবে না!"
সাক্ষরের কথায় কিনঞ্জল ভ্রু কুঁচকে বলল,
"সিরিয়াসলি!আপনি এখন আমার ব্যাগ মানে লেডিস ব্যাগ ক্যারি করবেন?লোকে কি বলবে?আর আপনার অফিসের স্টাফরাই বা কি ভাববে?"
সাক্ষর চুলগুলো ব্যাকব্রাশ করতে করতে বলল,
"কিছুই ভাববে না।আমি যদি একা একটা লেডিস ব্যাগ কাধে নিয়ে ঘুরতাম তাহলে হয়ত আমার মেয়েলী স্বভাব এটা ভাবতো।কিন্তু এখন যেহেতু তুই সাথে আছিস ভাববে ব্যাগটা হয়ত ভারী।তাই নিজের বউয়ের কষ্ট কমাতে আমি বইছি।আর যদি এদের চিন্তাভাবনা একটু বেশিই প্রখর হয় তাহলে আমাকে বউ পাগলা ভাবতে পারে।তাতে কি হবে?ওদের ভাবনা ওদের মনেই থাকবে আর তুইও আমারই থাকবি।কিছুই হবে না!তাই এখন ব্যাগটা দে।"
এই বলে সাক্ষর ব্যাগটা নিতে গেলেই কিনঞ্জল ছোঁ মেরে ব্যাগটা দূরে সরিয়ে বলল,
"না,ব্যাগটা আমিই নিয়ে যাবো।আপনি চলুন!"
এই বলেই কিনঞ্জল সাক্ষরের আগেই গটগট করে হেঁটে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।সাক্ষরও কোন উপায় না পেয়ে কিনঞ্জলের পেছন পেছন হাঁটতে লাগল।কিনঞ্জল বেশ দ্রুত পায়েই হাটছিলো তাই সাক্ষরও দ্রুত পায়ে হেটে এসে কিনঞ্জলের পাশাপাশি হাটতে লাগল।এর মধ্যেই সবাই জেনে গেছে আজকে এমডির একমাত্র ছেলের বৌ মানে সাক্ষর স্যারের স্ত্রী এসেছে।তাই নিজ নিজ ডেস্ক থেকে সবাই কমবেশি সাক্ষর কিনঞ্জলকে আড়চোখে দেখছিলো। রিশেপশনের কাছে আসতেই কিনঞ্জলের বাম পায়ের কেডসের ফিতার বাধন খুলে যায়।এই দেখে কিনঞ্জল নিচু হয়ে ফিতাটা বাধতে যাওয়ার আগেই সাক্ষর নিজেই এক পায়ে ভর দিয়ে বসে ফিতাটা স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই বেধে দিয়ে উঠে দাড়ালো।কিনঞ্জল কিছু বলতে গিয়েও একবার আশেপাশে তাকিয়ে দেখল সবাই ওদের দিকেই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর বিশেষ করে রিশেপসনিস্ট মেয়েটার চোখ তো কোটর থেকে বেরিয়ে যাবে এমন অবস্থা।কিনঞ্জলের এখন বেশ অস্বস্তি হচ্ছে।সবাই কি ভাবলো?এটা ভাবতে বসার আগেই সাক্ষর কিনঞ্জলের হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে এসে দুজনে গাড়িতে উঠে গেলো।কিনঞ্জল বার-বার সাক্ষরকে ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে যাচ্ছিলো।তবে সাক্ষর কিনঞ্জলের এমন ছটফটানি আর চোখমুখের অবস্থা দেখে নিজেই জিজ্ঞেস করল,
"কিছু বলবি?এমন হাঁশফাস করছিস কেন?"
অনেকক্ষন ধরেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলতে চাইছিলো কিনঞ্জল।সাক্ষর নিজেই জিজ্ঞেস করায় আর ধৈর্য রাখতে না পেরে ফট করে বলেই বসল,
"আপনি তখন আমার জুতায় হাত দিলেন কেনো?সবাই কেমন করে তাকাচ্ছিলো আমাদের দিকে।আপনার অফিসের সবাই বা কি ভাবলো?ছিঃ..ছিঃ...!"
সাক্ষর ব্যাঙ্গ করে বলল,
"ছিঃ..ছিঃ...সবাই কি ভাবলো?বলি কি ভাববে সবাই?আমি কি সবার সামনে তোকে চুমু খেয়েছি?নাকি কোলে নিয়ে নেচেছি যে কিছু ভাববে?জুতার ফিতা বেধে দেওয়ায় সবাই কি ভাবলো তা তো আমার জানার কথা না।আমি তো আর ফিল্মি স্টাইলে ন্যাকামি করে তোর জুতো নিজের পায়ে রেখে জিন্সে ময়লা ভরিয়ে জুতোর ফিতা বেধে দেইনি যে সবাই দেখে হাততালি দিবে বা কিছু ভাববে।স্বাভাবিকভাবে তোর কাজে একটু হেল্প করেছি।আর সবার চিন্তার যেহেতু এতই ধার ধারিস প্রেম করার সময় মনে ছিলো না লোকে কি ভাববে?তখন তো ড্যাংড্যাং করে ঠিকই চুটিয়ে প্রেম করেছিস।"
"সাক্ষর ভাই!"
কিনঞ্জলের আহত স্বরের ডাক শুনেই সাক্ষরের খেয়াল হলো কি ব্লান্ডারটাই না সে করে ফেলেছে এইমাত্র।নিশ্চিত কিনঞ্জল এখন ভেজা চোখে ওর দিকেই করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তবে সাক্ষর পরিস্থিতি সামাল দিতে কিনঞ্জলের দিকে না তাকিয়েই বলল,
"আমি কারো ভাই-টাই না।আমার মাত্র দুটো বোন।তাহা আর তাহি।আর প্রেম করেও তো কোন এক্সপেরিয়েন্স হয়নি দেখছি তোর।কিছুই তো জানিস না।রোমান্টিকতার র টাও তোর মধ্যে নেই।বেরসিক মহিলা একটা।"
এই বলে ভয়ে ভয়ে সাক্ষর কিনঞ্জলের দিকে তাকাতেই দেখলো কিনঞ্জল চোখে পানি নিয়েই ফিক করে হেসে দিয়েছে ওর কথা শুনে।আর টিস্যু দিয়ে নাকের পানি চোখের পানি সমানে মুছে যাচ্ছে।এই দেখে সাক্ষর একটা শান্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো।খুব জোড় বাঁচা গেছে এ যাত্রায়!
(চলবে)...
লিখা:~ নাজমুন নাহার তৃপ্তি