ওদিকে তাকাতেই বাবুকে দেখে চমকে উঠে মজনু,মজনুর চমকে উঠার কারণ শুধু বাবু না,বাবুর সাথে থাকা মজনুর বোন নিশি,,,,
কোন এক অজানা ভয়ে মজনুর বুকটা কেঁপে উঠে,তাহলে কি নিশিও বাবুর ফাঁদে পা দিয়েছে।
এদিকে বাবুকে দেখে নেহার বুকে সেই শুঁকে যাওয়া ক্ষতটা আবার ভিজিয়ে উঠলো,তার মন শুধু অস্থির হয়ে আছে বাবুর সাথে কথা বলার জন্য।
মজনু আর এক মূহুর্ত দেরী না করে নেহাকে নিয়ে পাশের ছাঁদে চলে যায়,এখনো বাবু আর নিশি কথা বলছে।
মজনু আর নেহাকে যেতে দেখে বাবু সেখান থেকে চলে যায়।বাবু চলে যাওয়ার পর মজনু নিশিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে,,,
মজনু -বাবুর সাথে তোর কি সম্পর্ক,,
নিশি-বাবুর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই,সম্পর্ক আছে ভাবির সাথে, যা তুমি আমার কাছ থেকে গোপন রেখেছ।
মজনু-তুই এসব কি বলছিস,পাগল হয়েছিস নাকি,,
নিশি-না আমি পাগল হয়নি পাগল হয়েছ তুমি ভাবির প্রেমে,
মজনু -কি বলতে চাইছিস তুই,,,
নিশি-বাবু আমার এক বান্ধবীর বড় ভাই,আমিই তোমার বিয়ে উপলক্ষে ওকে আর বাবু ভাইকে আসতে বলি,কাল যখন তুমি বর সেজে বিয়ে করার জন্য অপেক্ষা করছিলে।
তখন বাবু ভাই আমাকে তার কাছে ডাকে,আর পুরো ব্যাপারটা আমাকে খুলে বলে।
মজনু-তার মানে তুই সবকিছু জানিস,,,
নিশি-হুম জানি,আর হ্যা আরেকটা কথা,বাবু ভাইয়া নেহা ভাবির সাথে কথা বলতে চায়।
মজনু-আচ্ছা তুই যা এখন,আমি বাবুর সাথে পরে কথা বলবনি।
তারপর নিশি সেখান থেকে চলে যায়, নেহার দিকে তাকাতেই চমকে উঠে মজনু,কারণ নেহার দুচোখ বেয়ে অঝোর ধারায় পানি পরছে।
নেহার কাঁদার কারণটা মজনুর কাছে ঠিক ক্লিয়ার না,,
আচ্ছা নেহা কি বাবু চলে যাওয়ার জন্য কাঁদছে নাকি এতদিন পর হারিয়ে যাওয়া সেই ভালোবাসার মানুষটাকে দেখে।
মজনু-তুমি কি বাবুর সাথে কথা বলতে চাও,,,
নেহা-............(কাঁদছে)
মজনু-আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি নেহা,তুমি কি বাবুর সাথে কথা বলতে চাও,,
নেহা-হুমমম(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
মজনু-ওকে দুপুরে বাবুকে আমি আসতে বলবো,,
তারপর নেহা আর মজনু আমার নিজের বাসায় চলে আসে,নেহা রুমে এসে সোজা ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
মজনু মাথায় হাত দিয়ে ফ্লোরে বসে পরে,আর ভাবতে থাকে,এতবছর পর হারিয়ে যাওয়া সেই ভালোবাসাটা ফিরে পেয়ে, আবার কি হারিয়ে ফেলতে হবে ।
এদিকে ওয়াশরুম থেকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার আওয়াজ আসছে,আচ্ছা ওয়াশরুমের ভিতর নেহা এখন কার জন্য কাঁদছে মজনুর জন্য নাকি বাবুর জন্য।
চলতে থাকে কিছুক্ষন এভাবেই,মজনু বারান্দায় গিয়ে একটা সিগারেট লাগায়,বিষাক্ত নিকোটিনের ধোঁয়ার মাঝে বিলিয়ে দেয় নিজেকে।
একটু পর নেহা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে, চোখগুলো লালা টকটকে হয়ে গেছে আর ফুলে উঠছে খুব।
অনেকটা টমেটোর মতো হয়ে গেছে, দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেকক্ষন ধরে কান্না করছে।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে নেহা,পরনে নীল শালী,চোখে কাজল,হাতে নীল চুড়ি,
কপালে টিপ এক কথায় পরীর মত সুন্দর লাগছে নেহাকে,মনে হচ্ছে সর্গ থেকে নেমে আসা সদ্য পরী।
কিন্তু একটা জিনিস দেখে মজনু মুচকি মুচকি হাসছে,আর সেটা হলো নেহা এখনো শাড়ির কুঁচিটা ঠিক করতে পারেনি।
বারবার শুধু ব্যার্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে,না এভাবে আর থাকা যায়না,মজনু এইবার ডাইরেক্ট নেহাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
চুলের মাঝে নাক ডুবিয়ে সদ্য ভেজা চুলের ঘ্রাণ নেয়,তারপর নেহাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে একটা লিপকিছ দেয়।
মজনুর কোমল ঠোঁটের শীতল স্পর্শ পেয়ে নেহার শরীরটা কেঁপে উঠে, মজনুর ইচ্ছা করছে আরেকটু রোমাঞ্চ করার।
সেজন্য মজনু নেহার হাতদুটো আয়নার সাথে চেপে ধরে,কিছু একটা করতে যাবে ঠিক তখনই মজনুর মনে পরে যায় সকালের ঘটনার কথা।
তারমানে নেহা মজনুর জন্য সাজে নি,নেহা সেজেছে বাবুর জন্য,মূহুর্তেই মজনুর মনটা খারাপ হয়ে যায়।
নেহাকে ছেড়ে দিয়ে আবারও বারান্দায় গিয়ে আরেকটা সিগারেট লাগায়,
এদিকে নিশি মেসেজ করে বললো বাবু বাসায় এসে গেছে, মজনু বাবুকে ছাঁদে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিশিকে বলে।
নিশি বাবুকে সোজা ছাঁদে নিয়ে যায়,আর মজনু সিগারেটটা শেষ করে নেহাকে নিয়ে ছাঁদে চলে যায়।
এই মূহুর্তে ছাদের উপরে চারজন মানুষ নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, মজনু, নেহা,বাবু,নিশি।
কারো মুখে কোন কথা নেই,সবাই যেনো কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছে,নিরবতা ভেংগে বাবুই প্রথম কথা বলা শুরু করলো,,,
বাবু-আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি নেহা,তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি,
প্লীজ আমাকে মাফ করে দাও,আমি তোমাকে আমার করে পেতে চাই,মানে বিয়ে করে নিজের করে নিতে চাই।
নেহা-আমার কাছে মাফ চাওয়ার মতো কোন অপরাধ তুমি করোনি,কিন্তু আমাকে একটা কথা বলবা প্লীজ,কি এমন অপরাধ আমি করেছিলাম যার জন তুমি আমাকে এতবড় শাস্তি দিলে(কাদঁতে কাঁদতে)
বাবু-.......
নেহা-নিজের থেকে ও বেশী ভালোবাসতাম তোমায়,অন্ধের মত বিশ্বাস করতাম তোমাকে,
নিজের মন প্রাণ উজার করে ভালোবাসতাম তোমাকে,এটাই কি ভুল ছিল আমার,,,(কাঁদতে কাঁদতে)
বাবু-প্লীজ নেহা আমাকে একটা বার সুযোগ দাও,আমি তোমাকে আপন করে নিব,প্লীজ শেষবারের মতো তোমাকে ভালোবাসার একটা সুযোগ দাও,,,(কাদঁতে কাঁদতে)....!
চলবে,,,
Writer:-
Md Mojnu Islam