বাসায় এসে দেখি সাদিয়া আর মানহা আরো বেশ কয়েকজন লোক,
আমার তো হুশ এই উড়ে গেছে দুই ডাইনিকে এক সাথে দেখে,
দুজনেই আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,
মনে হয় এখনি কাঁচা গিলে খাবে,
কিন্তু বাসায় এত লোক কেন সেটাই বুঝে আসছে না,আর সাদিয়া বা এখানে কেন,নাহ ঘরে যাই ঘটনা কি আগে বুঝতে হবে,
বাসায় ঢুকতেই আব্বু আম্মুকে বলছে এই যে তোমার নালায়েক ছেলে এসেছে,আম্মুও আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,কিরে ভাই কি করলাম আমি সবাই এমন অদ্ভুত আচরন কেন করছে আমার সাথে,
আম্মু,কাছে এসে কিরে কয়টা মেয়ে লাগে তোর...?
আকাশ,আম্মু মানে....?
আম্মু,তুই নাকি সাদিয়ার সাথে বেশ দীর্ঘদিন রিলেশন করেছিস..?
আকাশ,হা সেটা তো দুষ্টামি ছিলো...
আম্মু,আমার কানটা মলে দিয়ে এই বান্দর দুষ্টুমি কি রে হা...?
রিলেশন কি মজা নাকি...?
যে আজ করবি কাল ছেড়ে দিবি...?
আকাশ,আরে আম্মু আমার খুব লাগছে ছেড়ে দাও,আমি তো ফেসবুকে প্রেম করেছি,কিন্তু মেয়ে যে সিরিয়াসলি নিয়ে নিবে আমি কখনো ভাবি নাই,আম্মু ছেড়ে দাও না প্লিজ কতগুলো মানুষের সামনে তুমি আমার কান মলে দিচ্ছো,সম্মান একদম ধুলোয় মিশিয়ে দিলে আমার...
আম্মু,এই বান্দর চুপ একদম..?
যা করেছিস এমনিতেও কি সম্মান আর বেঁচে আছে নাকি,
সাদিয়ার পরিবার তোর সাথে ওর বিয়ের কথা বলতে এসেছে,এদিকে আমি মানহার আম্মুর সাথে তোর বিয়ের কথা বলে ফেলেছি,তালগোল একেবারে ভালো করে পাকিয়েছিস...?
আকাশ,ওওওওওওও
তোবা তোবা কি বলো এই সব
আমি তো এই দুই ডাইনির এক ডাইনিকেও বিয়ে করবো না,
আম্মু,তুই করবি তোর ঘাড় করবে,যা এখন ফ্রেশ হয়ে নে,আর তোর রুমে পাঞ্জাবি রেখে এসেছি সেটা পড়ে এখানে আসবি,
আকাশের তোর মাথা ঘুরতেছে আল্লাহ কোন চিপায় ফাঁসতে চলেছি কে জানে,এই দুইজনের একজনের সাথেও বিয়ে হলে আমার জীবন নড়ক বানিয়ে দিবে,আকাশ ফ্রেশ হতে চলে যায়...!
এদিকে আকাশের আম্মু দেখেন আপনারা সাদিয়া আর আমার ছেলের সম্মন্ধ পাকা করতে এসেছেন,অন্যদিকে আমি এই মেয়ের সাথে আমার ছেলের সম্মন্ধ ঠিক করে ফেলেছি,মানহাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়,
সাদিয়া,না আমি আকাশকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো না,
সাদিয়ার পাগলামো দেখে সাদিয়ার আব্বু প্লিজ আমি আপনার কাছে হাতজোড় করছি..?আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের সম্মন্ধটা পাকা করেন,না হয় আমার মেয়ে কখন কি দূর্ঘটনা ঘটিয়ে বসে আল্লাহ ভালো জানেন,আমার একটাই মাত্র মেয়ে সে আকাশকে খুব ভালোবাসে,ওর কিছু হয়ে গেলে আমরা কি নিয়ে বাঁচবো..
আকাশের আম্মু,প্লিজ এভাবে বলবেন না,দেখুন বিয়েটা ছেলে খেলা না,এখানে দুইটা জীবন জড়িত,আমার ছেলে যাকে গ্রহণ করবে আমি তার উপরেই খুশী,আগে সে আসুক পরে সমস্তটা দেখা যাবে,
এদিকে মানহার তো চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে,কুত্তাটা আমাকে রেখে এই মেয়েকে বিয়ে করবে হা,এমন যদি করে তাহলে নিজের জীবন দিয়ে দিব..
আকাশ,ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে পাঞ্জাবি পড়ছে,এমন সময় ওর আব্বু আসে,
আব্বু,বাহ তুই তো দেখি একদম সেই লেভেলের একটা জিনিস রে মানুষ একটা পারে না,আর তুই দুই তিনটা জিএফ একসাথে লালনপালন করতি,এখন কই যাবি দুইটাই একসাথে ঘাড় মটকে ধরেছে,হা হা হা
আকাশের মাথায় এমনিতেই তো দুই মন বোঝা তার উপরে সালা হিটলার বাপটা প্যারা দিতে চলে আসছে,আব্বু শুনো এইসব ক্রিয়েটিভিটি আমার মত লিজেন্ডদের কাছেই থাকে
এইসব কিছু তোমাদের মত হিটলাররা পারবে না বলে পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে নিচে চলে যায়...
আকাশের আব্বু তো থ
ওরে আমার বদমাইশ পোলা বাপের উপরে বাটপারি
আসছিলাম একটু ব্যান্ড বাজাবো উল্টো আমাকে বাজিয়ে দিলো
আকাশ,নিচে গিয়ে ওর আম্মু পাশে বসে,
আকাশের আম্মু,বাবা তুই কি করবি বল এই দুইজন থেকে কাকে বিয়ে করবি...?
সাদিয়া,বলে উঠে আকাশ আমাকে বিয়ে করো..?
তোমায় তো আমি খুব ভালোবাসি..
আকাশ,নাহ কোনদিন ও না এই মেয়ে আস্ত একটা ডাইনি,আমাকে আজকে নদির পাড়ে উদুম কেলানি কেলিয়েছে -
আকাশের আম্মু,তাহলে মানহাকে বিয়ে করবি...?
আকাশ,আম্মু এটা আরো বড় ডাইনি,তোমার সামনে এখন ভালো সেজে বসে আছে,কিন্তু এটা কোন লেভেলের মাল সেটা একমাত্র আমি জানি,পুরো একটা ডাকাত...!
আকাশের আম্মু,নাহ তা বললে হয় না,তোমার সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি এই দুইজন থেকে কাকে বিয়ে করবে...?
আকাশ,নাহ আম্মু আমি এই দুই জনের কাউকেই বিয়ে করবো না,
সাদিয়া,এমন সময় বলে উঠে আন্টি আমি আকাশের সাথে একটু পার্সোনালি কথা বলতে চাই..?
মানহা,নাহ এটা হবে না,আমিও আকাশের সাথে পার্সোনালি কথা বলবো তাহলে...?
আকাশের আম্মু,আচ্ছা তোমরা দুইজন এই আকাশের সাথে উপরের রুমে যাও,আর নিজেরা ঠিক করো কে কাকে বিয়ে করবে,
উপরের রুমে আকাশ সাদিয়া মানহা তিনজন এই দাঁড়িয়ে আছে,কারোর মুখে কোন কথা নাই,
আকাশ,কি কারোর মুখে কোন কথা নাই কেন...?
সাদিয়া,আচ্ছা আকাশ আমি এমন কি করেছি যে তুমি আমায় বিয়ে করতে চাচ্ছো না...?
আকাশ,দেখো তোমার সাথে ফাজলামো করে রিলেশন করে ছিলাম,আর তা ছাড়া তুমি সারাদিন আমায় প্যারা দিতে এটা ওটার জন্য,পরে বিরক্ত হয়ে এই মেয়ের সাথে রিলেশনে জড়িয়ে পরেছি,কিন্তু সে যে ডাকাত সেটা আমি পরে জানতে পারি,তাই ওকেও ছেড়ে দিয়েছি,শুনো দুজনকেই বলে দেই,তোমারদের দুজনের একজনকেও আমার দরকার নাই,
সাদিয়া,কলিজা প্লিজ আমি আর কোন ধরনের প্যারা দিব না তোমাকে,প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না..?
মানহা,এই মেয়ে এত নেকামো কেন করছিস হা,সে তো বলেছে সে তোকে বিয়ে করবে না,
সাদিয়া,এই মেয়ে তুই চুপ থাক,আমাদের মধ্যে কথা হচ্ছে তুই কেন বাম হাত দিচ্ছিস..?
মানহা,কি বললি তোদের মধ্যে মানে..?আমি ওর জিএফ আমি বলবো না তো কে বলবে.?
এক কথায় দুই কথায় দুজনের মধ্যে ঝগড়া লেগে যায়,
আকাশ,এই Stop তোমরা কি শুরু করেছো হা...?
আমি বলেছি তো আমি দুজনের কাউকেই বিয়ে করবো না,
নিচে গেলাম আমি বলে আকাশ নিচে চলে আসে...
আকাশের পিছনে পিছনে মানহা আর সাদিয়াও নিচে চলে আসে,
আকাশের আম্মু,কিরে কাকে পছন্দ হয়েছে তোর...?
আকাশ,আম্মু দেখো আমার কাউকেই পছন্দ না আমি বিয়ে করবো না,
আকাশের আম্মু,এবার রেগে যায়,এই বদমাইশ পোলা প্রেম করতে দুইটার সাথেই করেছিস,কিন্তু যখন বিয়ে করার পালা তখন কাউকেই বিয়ে করবি না,মামার বাড়ির আবদার নাকি,
আচ্ছা সাদিয়ার আব্বু শুনেন আপনার মেয়ের সাথেই আমার ছেলের বিয়ে হবে এটাই ফাইনাল,আর মানহার বাসায় আমি বুঝিয়ে বলবো...
আকাশের আম্মুর কথা শুনে সাদিয়া তো সেই খুশী,কিন্তু মানহার ভিতরে যেন তুফান শুরু হয়ে গেছে,নাহ তারো আকাশকে চাই,না হয় সে নিজের জীবনের বারোটা বাজিয়ে দিবে,ঘরে মেহমান আসায় আকাশের আম্মু সবার জন্য মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে,মানহা তার নাস্তার প্লেট থেকে কাঁটাচামচ টা উঠিয়ে নিয়ে তার হাতের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়,
সবাই তো অবাক,আকাশের আম্মু আল্লাহ এই মেয়ে কি করলে তুমি এটা..?
আকাশের আম্মু মানহাকে ধরতে যায়...
মানহা,এই কেউ সামনে আসবেন না,সামনে আসলে কাঁটাচামচ টা একদম গলার মধ্যে ঢুকিয়ে দিব...
আকাশের আম্মু,মানহা প্লিজ এমন পাগলামো করে না,আমার লক্ষ্যি মা না তুই...?
মানহা,নাহ আমার আকাশকে চাই..?
ব্যাছ ওকে চাই..?
না হয় এখন খুব খারাপ কিছু ঘটে যাবে
সাদিয়ার আব্বু-আম্মু আরো উপস্থিত যারা আছে সবাই ঘাবড়ে যায়,
আকাশের আম্মু,মামনী তুই আমার কথা শুনবি না..?
মানহা,না আমি কারোর কথা শুনবো না,
সাদিয়ার আব্বু,মানহা মামনী এমন করে না,আচ্ছা যাও আকাশের সাথে তোমার বিয়ে হবে,আমার মেয়েকে আমরা সামলে নিব...
আকাশ,হাবলার মত হা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
মানহা,আপনারা সবাই মিথ্যা বলছেন...?
সাদিয়ার,আব্বু নাহ মামনী সত্যি বলছি,তোমার সাথেই আকাশের বিয়ে হবে,এবার প্লিজ ওটা ফেলে দাও,
পরে মানহা কাঁটাচামচ টা ফেলে দেয়,ওর হাতের হাত থেকে ঝরঝর করে রক্ত পড়ছে,আকাশের আম্মু দৌড়ে মানহার কাছে যায়,আর নিজের শাড়ির আঁচল ছিড়ে মানহার হাত বেঁধে দেয়,এই পাগল মেয়ে এমনটা কেউ করে...?
মানহা,আমার আকাশকে চাই ওর জন্য আমি সব করবো,
আকাশের আম্মু,আচ্ছা যা তোর সাথেই আকাশের বিয়ে হবে,
আকাশের আম্মু,আপনাদের সবাইকে কষ্ট দিলাম,প্লিজ ক্ষমা করবেন,
সাদিয়ার,আব্বু না না কি বলছেন,আমরা এসে উল্টো আরো ঝামেলা বাড়িয়ে দিলাম,আচ্ছা চললাম ভালো থাকবেন,সাদিয়া তো ফু্ঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে,কিন্তু সাদিয়ার আব্বু ওকে নিয়ে চলে গেছে,
আকাশের সাথে মানহার বিয়ে ঠিক হয়,আগামী শুক্রবার ওদের বিয়ে,
আকাশের কোন কিছুই ভালো লাগছে না,এই মেয়ের সাথে কিভাবে জীবন কাটাবে সে,দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসে,ভালোয় ভালোয় বিয়ে টা হয়ে যায়,বাসর রাত আকাশ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,ভিতরের মানুষটা একটা ডাকাত,সেটা ভাবতেই ওর কলিজা কেঁপে উঠছে,তাও কি করার ভিতরে তো যেতে হবে,
আকাশ,দরজা ঠেলে ভিতেরে ডুকে,মানহা বড় একটা ঘোমটা দিয়ে খাটের উপরে বসে আছে,আকাশ আস্তে আস্তে খাটে গিয়ে বসে,মানহার কোন সারা শব্দ নাই,সে চুপচাপ ঘোমটা দিয়ে বসে আছে,
আকাশ,এই কিরে চুপ করে বসে থাকবে নাকি..?
মানহা,ঘোমটাটা উঠিয়ে আকাশের দুইগালে দুইটা ঠাসসস করে থাপ্পড় বসিয়ে দেয় আর ওকে বিছানায় ফেলে দিয়ে ওর গায়ের উপরে উঠে বসে,
আকাশ তো তাজ্জব হয়ে আছে
এটা কি মেয়ে বাসর রাতে স্বামীর পায়ে ধরে সালাম করবে কই উল্টো আরো কেলানি শুরু করেছে,
মানহা,এই লুইচ্ছা পোলা এবার যাবি কই বলে আকাশের চুল ধরে টানতে থাকে,আমারে কষ্ট দেওয়া হা সব আমি এখন উশুল করবো,কি বলছিলি আমি ডাকাত...?
আকাশ,চুপ করে আছে
কথা বলিস না কেন বলে আরো দুইটা থাপ্পড় মারে আকাশের গালে,
আকাশ,আল্লাহ ও আল্লাহ আজকে আমি শেষ
মানহা,যা সব মাফ করে দিলাম,কিন্তু আজকের পর থেকে কোন মেয়ের দিকে নজর দেওয়া তো দূরের কথা,এমনটা ভাবলেও তোকে আমি শেষ করবো,
আকাশ,অবুঝ একটা শিশুর উপরে এত অত্যাচার আল্লাহ কখনোই সহ্য করবে না দেখিও বলে মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখে,
মানহা,এই তুই কি বুঝিস না আমি তোকে কত্ত ভালোবাসি..?
আকাশ,হুহ হয়েছে আর বলতে হবে না,এই তোমার ভালোবাসা বাসর রাতে স্বামীকে মারা..?
লাগবে না আমার এমন ভালোবাসা.....
মানহা,এই কলিজা রাগ করে না,আচ্ছা দাঁড়াও এখন আদর করে দিচ্ছি বলে শাড়িটা খুলতে থাকে,
আকাশ,এই এই কি করছো..?
মানহা,জামাইকে আদর করবো তাই প্রিপারেশন নিচ্ছি,
মানহা,শাড়িটা খুলে খাটের একপাশে ছুড়ে মারে,
তারপর একে একে সমস্ত কিছু খুলে ফেলে...
আকাশের তো হুশ এই উড়ে গেছে মানহাকে এই অবস্থায় দেখে,সে যেন কোন এক ভবের দেশে হারিয়ে গেছে,তার যেন নেশা লেগে গেছে মানহার প্রতি..!
মানহা,নিজের সমস্তটা দিয়ে আকাশকে নিজের করে নেয়,
আকাশ,এখনো ভবের দেশে,সে ভবের দেশ থেকে ফিরে আসলে হয়তো কি হয়েছিলো এরপর সব জানা যাবে,তবে আমার যা মনে হয় এখন জয়বাংলা কনসার্ট এই টাইপের কিছু হবে আকাশের রুমে,বাকি আর কিছু আমি জানি না.....
সমাপ্তি...
Writer:- আকাশ মাহমুদ