ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে ড্র হলেও মাশরাফি ছিলেন প্রথম ম্যাচেই উজ্জল নক্ষত্র হয়ে মাত্র ১০৪ রানে নেন ৪ উইকেট। মজার ব্যাপার এটা একই সাথে ছিল মাশরাফির প্রথম ফার্সক্লাস ম্যাচ। ৩১তম খেলোয়ার হিসেবে এই কৃতিত্বের অধিকারী হোন ক্যাপটেন ম্যাশ। যা ১৮৯৯সালের পর তৃতীয়।
ওয়ান্ডে অভিষেক, একই বছর ২৩শে নবেম্বর ওয়ান্ডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার, অভিষেক ম্যাচে মোহাম্মদ শরীফের সাথে বোলিং অপেন করেন মাশরাফি, ৮ওভার বোলিং করে মাত্র ২৬রানের খরচে নেন ২ উইকেট।
ইনজুরি আর বার বার ফিরে আসার গল্প এক যোদ্ধার যার নাম মাশরাফি বিন মর্তুজা।
জীবনের তৃতীয় টেস্টেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হাঁটুতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন দেশ সেরা পেসার মাশরাফি। টানা দুই বছর নিজের সাথে যুদ্ধ করে মাঠে ফিরেন মাশরাফি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেষ্টে মাত্র ৬০রানে চার উইকেট নেয়ার পর আবারও সেই হাঁটুতেই আঘাত পান। ছিটকে যান মাঠ থেকে আবারও এ বছরের জন্য।
যোদ্ধারা কখনো থেমে যায় না মাশরাফিও থামতে শিখেননি, আবারও ফিরে আসেন ২০০৪ সালে ভারতের বিরুদ্ধে অডিয়াই সিরিজে নিজে স্বরূপে ফিরে আসেন। সর্বকালের অন্যতম সেরা ভারত দলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সে সিরিজে প্রথম জয় পায় যার নায়ক ছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।
সফল বছর,
২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তিনি ভালো বল করেন। বাংলাদেশী বোলারদের মধ্যে তার গড় ছিল সবচেয়ে ভাল। কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নাটকীয় জয়ে তিনি অবদান রাখেন। তিনি মারকুটে ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে শূন্য রানে আউট করেন এবং দশ ওভারে মাত্র ৩৩ রান দেন। সে বছর মাশরাফি ছিলেন অপ্রতিরুদ্ধ একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সে বছর সর্বাধিক উইকেট শিকারি ছিলেন মাশরাফি ৪৯টি উইকেট।
#২০০৭ বিশ্বকাপে একাই যেন ভারতকে উড়িয়ে দিলেন মাশরাফি ৩৮ রানে চার উইকেট নিয়ে।
ভারতের বিরুদ্ধে এক ওভারে ৪ বলে চার ৬ মেরে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের ভিতর প্রথম এ রেকড গড়েন তিনি, যা এখনো কোন ভারতীয় বলারের এক ওভারে নেয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। সে ওভারে ২৬ রান তুলেন তিনি।
১১বার ইনজুরির সাথে লড়াই করে ফিরে আসা এক মাত্র ক্রিকেটার মাশরাফি যা পৃথিবীর আর কোন ক্রিকেটারে নেই।
ভক্তদের চোখের জল,
বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১১ বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়েন ম্যাশ যার কারণে তিনি একাই কাঁদেননি কেঁদেছেন পুরো বাংলাদেশ।
২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন ২১৬ টি।
বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসিবে ২০১৭ সালের এপ্রিলে টি ২০ ক্রিকেট থেকে অবসর নেন অধিনায়ক হিসেবে। উনিই প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটা যিনি অধিনায়ক থাকা অবস্থায অবসর নেন।
সেরা সাফল্য ২৬ রানে ৬ উইকেট কেনিয়ার বিরুদ্ধে যা তার সেরা সাফল্য।
২০০৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর নড়াইল চিত্রাপাড়ের মেয়ে সুমনা হক সুমিকে বিয়ে করেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ মাশরাফি বিন মর্তুজা। নড়াইল শহরের রূপগঞ্জে একটি কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরেরদিন ৮ সেপ্টেম্বর চিত্রা নদীর কোল ঘেষে গড়ে ওঠা চিত্রা রিসোর্টে বৌভাত অনুষ্ঠিত হয়। এসব অনুষ্ঠান ঘিরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের তৎকালীন সভাপতি, কোচ, খেলোয়াড়, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের মিলন মেলা হয়েছিল। ১ যুগের বেশী সময় সফল জুটি মাশরাফি সুমি ভাবী। মাশরাফি-সুমির দাম্পত্য জীবনে হুমায়রা এবং সাহেল নামে দুই সন্তান রয়েছে।
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম মাশরাফি বিন মর্তুজা
জন্ম ৫ অক্টোবর ১৯৮৩ (বয়স ৩৪)
নড়াইল, বাংলাদেশ
ডাকনাম কৌশিক, নড়াইল এক্সপ্রেস, ম্যাশ, বস
উচ্চতা ৬ ফুট ০ ইঞ্চি (১.৮৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরন ডানহাতি
বোলিংয়ের ধরন ডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট
ভূমিকা বোলার, অধিনায়ক।
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় পার্শ্ব বাংলাদেশ
টেস্ট অভিষেক ৮ নভেম্বর ২০০১ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ টেস্ট ৯ জুলাই ২০০৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওডিআই অভিষেক ২৩ নভেম্বর ২০০১ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ ওডিআই ২৮ জুলাই ২০১৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
টি২০আই অভিষেক ২৮ নভেম্বর ২০০৬ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ টি২০আই ৬ এপ্রিল ২০১৭ বনাম শ্রীলঙ্কা।
পরিশেষে আরও একবার শুভ জন্মদিন বস মাশরাফি বিন মর্তুজা (কৌশিক)
Writer:- শাহরিয়ার