আকাশ,আর রাফি দুজনে বসে বসে কথা বলছে,এমন সময় পিছন থেকে কেউ একজন এসে আকাশের চুলের মুঠি ধরে টান দেয়..
আকাশ,তো ব্যথার চিৎকার করে উঠে...
=কি এখন চেচাচ্ছিস কেন...?
আকাশ,তো পিছনে ফিরে যা দেখে তাতে তো তার চোখ কপালে উঠে গেছে,আল্লাহ এ তো সাদিয়া
সাদিয়া,এই বান্দর পোলা এখন যাবি কই...?
তোকে দূর থেকে দেখেই চিনে ফেলছি,তুই আমারে এতদিন আগডুম বাগডুম করে ঘুরিয়ে এখন অন্য মেয়ের সাথে লাইন মারছিস...?
আকাশ,এই সাদিয়া প্লিজ চুল ছেড়ে দাও আমার খুব লাগছে
সাদিয়া,চুপ একদম
একটাও কথা বলবি না,তোর আজকে বারোটা বাজিয়ে ছাড়বো,
তুই কত্তগুলা অপরাধ করেছিস তোর মাফ নাই,তোর সব কয়টা চুল আজ আমি ছিড়ে ফেলবো,আমাকে ব্লক দিস,আবার বলিস আমি নাহিদ কাক্কুর বউ
আকাশ,আল্লাহ এটা তো আমি এমনিতে বলেছি
তোমাকে রাগানোর জন্য
সাদিয়া,আচ্ছা যা মানলাম এমনিতে বলেছিলি,কিন্তু নতুন একটা বাবুর আম্মু পেয়ে গেছিস মানে...?
আকাশ,আল্লাহ এখন কি করবো
আল্লাহ সাদিয়া দেখ তোমার পিছনে একটা বিচ্ছু..?
সাদিয়া,ভয়ে আকাশকে তাড়াতাড়ি ছেলে দেয়,এই কই কই.....?
আকাশ,ছেমড়ি তোর নানির পুট* সই
আকাশেকে আর পায় কে,আকাশ সাদিয়াকে রেখে দৌড়ে ঘরে চলে আসে,
রাফি আগেই চলে গেছে...!
সাদিয়া,বান্দর পোলা তোরে খালি একবার পাই,তোরে উদুম কেলানি কেলামু
এতদিন সোনা,বাবু,চান্দু বইলা প্রেম করছে,আর এখন যখন অন্য একজনরে পাইছে আমার আর দরকার নাই..
এদিকে,
আকাশ হাঁপাইতে হাঁপাইতে বাসায় আসে,
আকাশের আম্মু,কিরে এমন হাঁপাস কেন..?
কোন ক্ষেতে চুরি করতে গিয়া ধরা খাইলি..?
আকাশ,আম্মু দেখ এমনিতে মাথা বিগড়ে আছে,উল্টা পাল্টা কিছু বইলা মাথা আরো নষ্ট করে দিও না,
আকাশ নিজের রুমে চলে যায়,গিয়ে আগে নিজেকে শান্ত করে পরে ফেসবুকে ঢুকে,ফেসবুকে ঢুকে দেখে মেসেজ দিয়ে পুরো মেজাঞ্জার ভরে গেছে,সে আস্তে আস্তে করে সবার মেসেজ গুলা ঘেটে দেখে,হটাৎ কেউ একজনের মেসেজ দেখে চোখ আটকে যায়,ভাই ভাবি তো দেখতে হেব্বি সুন্দর..
আর ভাবিকে রিকোয়েস্ট করেছিলাম,যে আপনাকে যেন বলে আমাদের টিমে কাজ করতে
আকাশের মাথায় যেন কিছুই ঢুকছে না,কে ভাবি কিসের ভাবি,সে মেসেজটা ইগনোর করে চলে যায়,পরে লক্ষ্য করে অনেক গুলো পেন্ডিং মেসেজ জমা হয়েছে,
পেন্ডিং মেসেজ গুলা কে দিয়েছে কেন দিয়েছে তা ঘেটে ঘেটে দেখছে,হটাৎ একটা আইডির উপরে নজর পরে,যেখানে মানহার ছবি দেওয়া,সে কৌতুহল করে আইডিতে ঢুকে,আইডিতে ঢুকে যা দেখে তাতে তো আবার বড় ধরনের একটা শকট খায়,আইডির নিক-নেম দেওয়া বিল্লা-ভাউ এর বউ...
এটা দেখে মাথার রক্ত যেন একদম টগবগ করছে,
ঐ আইডি থেকে একটা মেসেজ ও এসেছে কলিজা নতুন আইডি অপেন করেছি
আকাশের তো বুঝতে বাকি নাই এটা মানহা,এই মেয়ে কিসের কলিজা..?
আর তুই কোন সাহসে আইডির নিক-নেমে বিল্লা ভাউ এর বউ দিয়েছিস...?
মানহা,আমার ইচ্ছা আমি দিয়েছি,আর আমার হাসবেন্ডকে আমি কলিজা ডাকবো না তো কাকে ডাকবো...?
আকাশ,এই ছেমড়ি এমনিতে মাথা খারাপ আছে তার উপরে কেন প্যারা দিচ্ছিস...?
মানহা,কলিজা এমন রাগ করো কেন..?
আকাশ,এই তোর মুখে কলিজা নামটা শুনলে মেজাজটা একদম খারাপ হয়ে যায়,তুই কারোর কলিজা হওয়ার যোগ্য না,একটার পর একটা যারা ছেলে বদলায় তাদেরকে মেয়ে বলে না,তাদেরকে বলে ছেলেধরা,আর তুই তো একটা না রানিং বারোটাকে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছিস,তোকে তো ছেলেধরা বললে ভুল হবে,তুই হচ্ছিস ডাকাতের হেডমাস্টার....
মানহা,আকাশ তুমি আমায় এভাবে বলতে পারলে,আমি তো ঐ সব দুষ্টামি করে করেছি,কিন্তু এখন তো আমি তোমায় সত্যিকারে ভালোবাসি,
আকাশ,আরে রাখ তোর ছাইপাঁশ ভালোবাসা...?
আচ্ছা একটা সত্যি কথা বল তো....?
মানহা,হা কি বলো...?
আকাশ,তুই কি মানুষের কিডনি টিডনির ব্যবসার করিস...?
ওদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ওদের শরীরের অঙ্গ কেটে নিয়ে বেচাকেনা করিস...?
মানহা,এবার রেগে যায় আকাশের কথা শুন
এই কি বললি তুই...? তোর কত্ত বড় সাহস আমার নামে উল্টা পাল্টা অপবাদ দিস..?
কিচ্ছু বলিনা দেখে মনে করিস না আমি কিছু বলতে জানি না...!
আকাশ,হুহ আসছে আবার রাগ ও দেখায়
ডাকাতনি কোথাকার...?
মানহা,ছেমড়া আর একবার খালি তুই আমারে ডাকাত বইলা দেখ..?
তোর কি হাল করবো তুই নিজেও ভেবে কূল পাবি না...
আকাশ,একবার কেন একশো বার বলবো,ছেলেধরা ডাকাতনি -
মানহা,এই কুত্তা খবিশ তুই আমাকে মেসেজ দিবি না,দ্বারা বিকাল হোক তোর বাসায় গিয়ে তোর হাড্ডি গুড়ো করে ফেলবো আজকে...
আকাশ,এই যে দেখ তোমাকে কি আমি এমনি এমনি ডাকাতনি বলি নাকি,দিনে দুপুরে হুমকি দিচ্ছো সেই জন্যই তো বলেছি...!
মানহা,ওই বান্দর তোরে আজকে আমি শেষ করবো বলে অফলাইন হয়ে যায়
আকাশ,যাক মেয়েটাকে রাগিয়ে তো বেশ মজা পেলাম
কিন্তু মেয়েটা তো বললো বিকালে আমার বাসায় এসে আমার খবর করবে,নাহ ঐ সময় বাসায় থাকবো না আমি,সে যখন আসবে তার কিছু সময় আগে আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাবো,
অন্যদিকে
মানহার ভিতরে তো রাগে ফেটে যাচ্ছে,ওর ইচ্ছা করছে এখনি বাসায় গিয়ে আকাশকে উদুম কেলানি কেলানোর জন্য,বেটা বেয়াদ্দবের হাড্ডি,বিকালটা হতে দে তারপর তোর বাসায় গিয়ে তোকে কেলাবো,
আকাশ,এখনো ফেসবুকিং করছে,গতকাল যাদের যাদের আইডি হ্যাক করেছে,তাদের সবার আইডি সে ফিরিয়ে দিয়েছে খালি মানহার টা বাদে,তারপর ক্রুদের কিছু ঝামেলা হয়েছে কাজ নিয়ে সেগুলা দেখিয়ে দিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ে,ফোনে এলার্ম দিয়ে রাখে ৩ টা ৩০ এর,
বেশ জাঁকজমকপূর্ণ একটা ঘুম দেয়,পরে ৩টা ৩০ এলার্ম বাজতেই সে উঠে শার্ট পড়ে বাহিরে চলে যায়,কাকুর দোকানে বসে সে আর রাফি চা খাচ্ছে এমন সমস সাজ্জাদ ফোন দিয়ে বলে দোস্ত তোরা কোথায় রে...?
আকাশ,আছি কাকুর দোকানে...
সাজ্জাদ,আচ্ছা তোরা থাক আমি আসছি,কিছুক্ষণের মধ্যেই সাজ্জাদ চলে আসে,সে এসে আবার সবার জন্য রংচা এর অর্ডার করে,পরে তিন বন্ধু চা হাতে আড্ডা দিচ্ছে,এমন সময় সাজ্জাদ বলে দোস্ত বিল্লা- ভাউয়ের নাম শুনেছিস...?
সে নাকি গতকাল শহরের নাম করা হ্যাকিং গ্রুপ নিজের কবলে করে নিয়েছে...
রাফিরাও জানে না বিল্লা ভাউ যে আকাশ,তবে এটা জানে যে আকাশ কিছুটা হ্যাকিং ট্যাকিং করতে পারে,
আকাশ,কি বলিস..?
আমিও উনার নাম অনেক শুনেছি
সে নাকি শহরের নাম করা হ্যাকার
সাজ্জাদ,দোস্ত আমার না ওরে দেখার খুব ইচ্ছা,আকাশ তুই তো এই সব করিস হালকা পাতলা,ওর সাথে কি তোর পরিচয় আছে...?
আকাশ,পরিচিত একদম নাই বললে ভুল হবে,কারন আমার সাথে দুইবার কথা হয়েছিলো...
আর তুই টেনশন করিস না,উনাকে একদিন বলবো আমাদের সাথে একদিন বসে মিট করতে..
সাজ্জাদ,থেংকু উ দোস্ত,সেদিন তোরা যা খেতে চাইবি আমি খাওয়াবো সেদিন তোদের জন্য উন্মুক্ত...!
আকাশ,আচ্ছা এখন তোরা থাক আমি গেলাম,অনেক সময় হয়েছে বাসা থেকে বের হয়েছি,এখন বাসায় যাওয়া দরকার,তারপর দুজনের থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম..
বাসায় এসে দেখি সাদিয়া,মানহা আরো বেশ কয়েকজন লোক...?
আমার তো হুশ এই উড়ে গেছে দুই ডাইনিকে এক সাথে দেখে....!
চলবে...
Writer:- আকাশ মাহমুদ