কিনঞ্জলের পায়ের কাটা জায়গায় ড্রেসিং করে দিয়ে ফাস্টএইড বক্সটা লাগাতে লাগাতে সাক্ষর কথাটা বলতেই চমকে উঠল কিনঞ্জল।হ্যাঁ,এটা সত্যি যে কিনঞ্জলের ডান পায়ে একটা কালো কুচকুচে তিল আছে।তবে তা টাখনুর একটু উপর না বেশ খানিকটা উপরে যা সাধারণত কারো দেখার কথা না।কেননা কিনঞ্জল এ যুগের মেয়ে হয়েও সবসময় টাখনু ঢেকেই পোষাক পরে।তাহলে সাক্ষর ভাই জানলো কিভাবে?তাই সাক্ষরের মুখ থেকেই ব্যাপারটা শোনার জন্য কিনঞ্জল বললো,
"কই না তো!আমার পায়ে তো কোন তিলটিল নেই সাক্ষর ভাই।আপনি এসব আজগুবি খবর কই পান?
কিনঞ্জল কথাটা বলতে দেরি হলেও সাক্ষরের কিনঞ্জলের মাথায় গাট্টা মারতে দেরি হলো না।ঠাসস করে কিনঞ্জলের মাথায় একটা গাট্টা মেরে বলল,
"সাক্ষর কখনো আজগুবি কথা বলে না।আর আমি শোনা খবরে বিশ্বাসী না,চোখে দেখেছি বলেই জিজ্ঞেস করলাম।"
কিনঞ্জল ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,
"চোখে দেখেছেন মানে?আমার তিল আমিই দেখলাম না আর আপনি কিভাবে দেখলেন?
সাক্ষর এবার প্রায় ধমকে বলে উঠল,
"তুই আমাকে ভূগোল বুঝাস?তোর শরীরের প্রতিটা তিলের খবর আমি জানি।"
এবার যেনো কিনঞ্জলের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার দশা হয়েছে।কারন কিনঞ্জল খুব ভালো করেই জানে সাক্ষর ভাই মিথ্যা বলার মানুষ না।কিন্তু সে কিভাবে জানে ওর শরীরের তিলের খবর?
কিনঞ্জল একটা ঢোক গিলেই বলল,
"ইসস!বললেই হলো নাকি?আমি বিশ্বাস করি না আপনার কথা।"
"বিশ্বাস করা না করা তোর ব্যাপার।তবে তুই যদি আমার প্রশ্নের উওর দিস তাহলে আমি প্রমান করে দিতে পারি।"
কিনঞ্জল এবার ধৈর্যহারা হয়ে বলেই দিলো,
"হ্যাঁ,আছে।তবে তা টাখনুর একটু উপর না বেশ খানিকটা উপরে।এবার আপনি প্রমান করুন।"
এই বলেই কিনঞ্জল সাক্ষরের দিকে শকুনির মতো চোখ ছোট ছোট করে তাকালো।সাক্ষর বেশ আয়েশ করে হেলান দিয়ে বসে বলল,
"ওহ্!বড় হয়েছিস তো তাই হয়ত তিলটা উপরে উঠে গেছে।আর তোর শরীরে মোট তিল আছে হলো গিয়ে নয়টা।একটা তিল হলো গিয়ে তোর বাম কাধে,একটা ডান হাতের কনুইয়ের একটু নিচে,একটা বাম হাতের বাহুতে সেখানে আবার একটা টিকার চিহ্নও আছে,একটা হলো তোর ডান পায়ে টাখনুর উপর,একটা হলো কপালে চুলের গোড়ায়,একটা হলো তোর ডান পাশে কোমর আর পেটের মাঝামাঝি ,একটা পিঠে।আর বাকি দুটো হলো গিয়ে তোর....."
এইটুকু বলতেই কিনঞ্জল ঘুরে পাশে বসা সাক্ষরের মুখটা ঠাসস করে ধরে ফেলল।হিংস্র বাঘিনীর মতো হুংকার ছেড়ে কিনঞ্জল প্রায় ধমকেই বলল,
"আপনার মুখে কি কিছুই আটকায় না সাক্ষর ভাই।এত লাগাম ছাড়া কথাবার্তা কেনো আপনার।যে আপনি ওই দুই তিলের কথাও মেনশন করতে যাচ্ছিলেন?ছিঃ!"
সাক্ষর কিনঞ্জলের হাতটা নিজের মুখ থেকে ছাড়িয়ে ধমকে বলল,
"এক চড় দিবো ভ্যাবলি কোথাকার!তুই আমাকে তেজ দেখাস?তুই প্রমান চাইলি বলেই তো আমি বলিছিলাম নইলে আমার কি ঠ্যাকা তোর তিলের হিসেব করার।"
"কই না তো!আমার পায়ে তো কোন তিলটিল নেই সাক্ষর ভাই।আপনি এসব আজগুবি খবর কই পান?
কিনঞ্জল কথাটা বলতে দেরি হলেও সাক্ষরের কিনঞ্জলের মাথায় গাট্টা মারতে দেরি হলো না।ঠাসস করে কিনঞ্জলের মাথায় একটা গাট্টা মেরে বলল,
"সাক্ষর কখনো আজগুবি কথা বলে না।আর আমি শোনা খবরে বিশ্বাসী না,চোখে দেখেছি বলেই জিজ্ঞেস করলাম।"
কিনঞ্জল ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,
"চোখে দেখেছেন মানে?আমার তিল আমিই দেখলাম না আর আপনি কিভাবে দেখলেন?
সাক্ষর এবার প্রায় ধমকে বলে উঠল,
"তুই আমাকে ভূগোল বুঝাস?তোর শরীরের প্রতিটা তিলের খবর আমি জানি।"
এবার যেনো কিনঞ্জলের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার দশা হয়েছে।কারন কিনঞ্জল খুব ভালো করেই জানে সাক্ষর ভাই মিথ্যা বলার মানুষ না।কিন্তু সে কিভাবে জানে ওর শরীরের তিলের খবর?
কিনঞ্জল একটা ঢোক গিলেই বলল,
"ইসস!বললেই হলো নাকি?আমি বিশ্বাস করি না আপনার কথা।"
"বিশ্বাস করা না করা তোর ব্যাপার।তবে তুই যদি আমার প্রশ্নের উওর দিস তাহলে আমি প্রমান করে দিতে পারি।"
কিনঞ্জল এবার ধৈর্যহারা হয়ে বলেই দিলো,
"হ্যাঁ,আছে।তবে তা টাখনুর একটু উপর না বেশ খানিকটা উপরে।এবার আপনি প্রমান করুন।"
এই বলেই কিনঞ্জল সাক্ষরের দিকে শকুনির মতো চোখ ছোট ছোট করে তাকালো।সাক্ষর বেশ আয়েশ করে হেলান দিয়ে বসে বলল,
"ওহ্!বড় হয়েছিস তো তাই হয়ত তিলটা উপরে উঠে গেছে।আর তোর শরীরে মোট তিল আছে হলো গিয়ে নয়টা।একটা তিল হলো গিয়ে তোর বাম কাধে,একটা ডান হাতের কনুইয়ের একটু নিচে,একটা বাম হাতের বাহুতে সেখানে আবার একটা টিকার চিহ্নও আছে,একটা হলো তোর ডান পায়ে টাখনুর উপর,একটা হলো কপালে চুলের গোড়ায়,একটা হলো তোর ডান পাশে কোমর আর পেটের মাঝামাঝি ,একটা পিঠে।আর বাকি দুটো হলো গিয়ে তোর....."
এইটুকু বলতেই কিনঞ্জল ঘুরে পাশে বসা সাক্ষরের মুখটা ঠাসস করে ধরে ফেলল।হিংস্র বাঘিনীর মতো হুংকার ছেড়ে কিনঞ্জল প্রায় ধমকেই বলল,
"আপনার মুখে কি কিছুই আটকায় না সাক্ষর ভাই।এত লাগাম ছাড়া কথাবার্তা কেনো আপনার।যে আপনি ওই দুই তিলের কথাও মেনশন করতে যাচ্ছিলেন?ছিঃ!"
সাক্ষর কিনঞ্জলের হাতটা নিজের মুখ থেকে ছাড়িয়ে ধমকে বলল,
"এক চড় দিবো ভ্যাবলি কোথাকার!তুই আমাকে তেজ দেখাস?তুই প্রমান চাইলি বলেই তো আমি বলিছিলাম নইলে আমার কি ঠ্যাকা তোর তিলের হিসেব করার।"
সাক্ষরের এক ধমকেই কিনঞ্জল আবার হিংস্র বাঘিনী থেকে একদম মেনি বিড়ালের মতো ভয়ে চুপসে গেলো।এই জল্লাদটাকে কিনঞ্জল কেনো যে এত ভয় পায় সেটা নিজেও জানে না কিনঞ্জল।মুখটা নিচু করেই কাঁদোকাঁদো গলায় মিনমিনিয়ে বলল কিনঞ্জল,
"আপনি এসব জানেন কি ভাবে সাক্ষর ভাই?আপনি কি....."
এইটুকু বলতেই সাক্ষর আবারো ধমকে বলে উঠল,
"এখন বল,তোকে আমি চুপিচুপি লুকিয়ে দেখেছি বা তোর অজান্তেই কোনভাবে সুযোগ নিয়েছি।তোরা মেয়েরা তো আবার এসব বিষয়ে সবসময় এক লাইন বেশি বুঝিস।বাট গড প্রমিজ কিনঞ্জল,তুই যদি এইসব কথা ভুলে মাথাতেও এনেছিস চড়িয়ে তো আক্কেল ঠিকানায় এনে দিবো।"
"না না সাক্ষর ভাই।আমি ওসব ভাবছি না কিন্তু..."
সাক্ষর কিনঞ্জলকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
”কিন্তু আবার কি?তুই আমার থেকে প্রায় ৭-৮ বছরের ছোট।ছোটবেলায় তোর দুই তিন বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত তুই সারাদিন বাদরের মতো আমার গলাতেই ঝুলে থাকতি।আর বড় হয়ে এখন একদম পার্মানেন্টলি পেত্নীর মতো ঝুলে পরেছিস।ছোট বেলায় তো তুই মন্টু ভাই বলতে অজ্ঞান ছিলি সারাক্ষন আমার কোলে কোলেই থাকতি।তোর সারা শরীরে একবার ভীষণ র্যাশ হয়েছিলো।দাদি আর চাচিআম্মা তোর শরীরে এ্যালোভেরার জেল বের করে লাগিয়ে দিয়েছিলো আর তাছাড়া দিনে ঘন্টা তিনেক পরপর তোর শরীরে ঠান্ডা নারিকেল তেল দিতে হতো যাতে শরীরে ব্যাথা/টনটনে ব্যাথাটা কম পাস।আর তুই আমার হাতেই তেল দেওয়ার জন্য বায়না ধরেছিলিস।তখন যেহেতু আমিও ছোট ছিলাম তাই খেলার ছলেই মূলত তিলগুলো গুনেছিলাম।আর আমি যেহেতু তোর মতো ভ্যাবলি না আর আমার ব্রেন অনেক শার্প তাই কথাটা এখনো মনে আছে।"
"আপনি এসব জানেন কি ভাবে সাক্ষর ভাই?আপনি কি....."
এইটুকু বলতেই সাক্ষর আবারো ধমকে বলে উঠল,
"এখন বল,তোকে আমি চুপিচুপি লুকিয়ে দেখেছি বা তোর অজান্তেই কোনভাবে সুযোগ নিয়েছি।তোরা মেয়েরা তো আবার এসব বিষয়ে সবসময় এক লাইন বেশি বুঝিস।বাট গড প্রমিজ কিনঞ্জল,তুই যদি এইসব কথা ভুলে মাথাতেও এনেছিস চড়িয়ে তো আক্কেল ঠিকানায় এনে দিবো।"
"না না সাক্ষর ভাই।আমি ওসব ভাবছি না কিন্তু..."
সাক্ষর কিনঞ্জলকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
”কিন্তু আবার কি?তুই আমার থেকে প্রায় ৭-৮ বছরের ছোট।ছোটবেলায় তোর দুই তিন বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত তুই সারাদিন বাদরের মতো আমার গলাতেই ঝুলে থাকতি।আর বড় হয়ে এখন একদম পার্মানেন্টলি পেত্নীর মতো ঝুলে পরেছিস।ছোট বেলায় তো তুই মন্টু ভাই বলতে অজ্ঞান ছিলি সারাক্ষন আমার কোলে কোলেই থাকতি।তোর সারা শরীরে একবার ভীষণ র্যাশ হয়েছিলো।দাদি আর চাচিআম্মা তোর শরীরে এ্যালোভেরার জেল বের করে লাগিয়ে দিয়েছিলো আর তাছাড়া দিনে ঘন্টা তিনেক পরপর তোর শরীরে ঠান্ডা নারিকেল তেল দিতে হতো যাতে শরীরে ব্যাথা/টনটনে ব্যাথাটা কম পাস।আর তুই আমার হাতেই তেল দেওয়ার জন্য বায়না ধরেছিলিস।তখন যেহেতু আমিও ছোট ছিলাম তাই খেলার ছলেই মূলত তিলগুলো গুনেছিলাম।আর আমি যেহেতু তোর মতো ভ্যাবলি না আর আমার ব্রেন অনেক শার্প তাই কথাটা এখনো মনে আছে।"
কিনঞ্জল নাক কুচকে বলল,
"সিরিয়াসলি!আপনি আমাকে কোলে নিয়ে ঘুরতেন?এটাও বিশ্বাস করতে হবে?"
সাক্ষর এক ধমক দিয়ে বলল,
"বিশ্বাস করলে কর না করলে নাই।আর আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে প্রায় সপ্তাহখানেক হয়ে এলো আর তোর পায়ের ক্ষতটাও তো শুকিয়ে এসেছে প্রায়।কলেজে যাবি কবে থেকে?সামনেই তো টেস্ট এক্সাম আর তারপরেই বোর্ড এক্সাম।আমার এখানে থাকলে কিন্তু পড়ালেখায় কোন অবহেলা চলবে না।"
সাক্ষর কথাটা বলতেই কিনঞ্জলের মনটা হুট খারাপ হয়ে গেলো।বিষন্ন গলায় বলল,
"আমি আর কলেজে ক্লাস করব না সাক্ষর ভাই।এক্সামের সময় গিয়ে শুধু এক্সাম দিয়ে আসবো।আপনি কি প্লিজ আমাকে কিছু নোটের ব্যাবস্থা করে দিতে পারবেন?"
"কেনো,ক্লাস করবি না কেনো?পায়ের জন্য যদি হয়,সেরকম হলে আমি তোকে কোলে করে ক্লাসে বসিয়ে দিয়ে আসব।আর লাঞ্চের টাইমে আবার বাসায় দিয়ে যাবো কিন্তু ক্লাস তোকে করতেই হবে।নো ফাঁকিবাজি!"
কিনঞ্জল খানিকটা জোড় করে হেসেই বলল,
"পাগল নাকি?এখন অসুস্থ হাঁটতে পারি না বলে বাসাতেই কোলে করে ওয়াশরুম,ড্রয়িংরুমে নিয়ে যান।তাই বলে কি বাইরেও কোলে নিবেন নাকি সাক্ষর ভাই?"
সাক্ষর এবার একটু মজা করেই কিনঞ্জলকে চোখ টিপ মেরে বলল,
"সমস্যা কি?ছোটবেলায় তো পুরো মহল্লা তোকে কোলে নিয়ে ঘুরেছি।তখন ভাইয়া মনে করে কোলে বসে থাকতি,এখন সাইয়্যা ভেবে বসে থাকবি।"
কথাটা বলতেই কিনঞ্জল আর সাক্ষর দুজনেই হেসে দিলো।কিনঞ্জল এবার নিজেই সাক্ষরের গা ঘেষে বসল।সাক্ষর নিজেও কিনঞ্জলের গা ঘেষে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
"কি হয়েছে কিনঞ্জল?কলেজে যাবি না কেনো?নিয়মিত ক্লাস না করলে তো এক্সামে তেমন মার্কস তুলতে পারবি না।আর এইচএসসির রেজাল্ট ভালো না হলে ভালো কোন ইউনিভার্সিটিতেও ভর্তি হতে পারবি না।"
এই বলেই সাক্ষর কিনঞ্জলের বাহুতে নিজের হাত দিয়ে জাপটে ধরে রেখে মাথার তালুতে চুমু খেলো।এবার কিনঞ্জলও ছোট্ট বিড়ালছানার মতো সাক্ষরের গা ঘেষেই বলল,
"সবাই আমাকে নিয়ে মজা করবে কলেজে গেলে।"
"কেনো?মজা করবে কেনো?"
"সবাই আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করবে কারন আমার এখনি বিয়ে হয়ে গেছে।আমাদের ক্লাসের কারো বিয়ে হয়নি একমাত্র আমি ছাড়া।আর আমি নাকফুল পরে,হাতে চুরি পরে বউ সেজে কলেজে গেলে তো আমাকে নিয়ে সবাই মজা করবেই।"
এই বলেই কিনঞ্জল আবারো আরেক দফা মন খারাপ করে নিলো।সাক্ষর কিনঞ্জলের ভাবমূর্তি দেখে কিনঞ্জলকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল,
"তোর আর নুহাশের সম্পর্কের কথাতো মোটামুটি তোর ক্লাসের সবাই জানতো তাই না?"
কিনঞ্জল মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।এই দেখে সাক্ষর আবার বললো,
"তখন কি তোকে নিয়ে কেউ হাসিঠাট্টা করেছে?"
কিনঞ্জল আবারো মাথা নাড়িয়ে 'না' জানালো।এবার সাক্ষর কিনঞ্জলের হাতদুটো জড়িয়ে ধরে বলল,
"তাহলে চিন্তা করছিস কেনো?বিয়ে কি কোন খারাপ জিনিস নাকি যে তোর বিয়ে হয়েছে বলে তোকে নিয়ে হাসি মশকরা করবে?তোর আর নুহাশের হারাম সম্পর্ক নিয়ে যেহেতু কেউ হাসিঠাট্টা করেনি তাহলে তোর আর আমার বিয়ের মতো পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে মজা করবে কেনো?আর করলেও তুই কানে তুলবি না?ইচ্ছে হলে মুখের উপর উচিত জবাব দিয়ে দিবি নয়ত টোটালি ইগনোর করবি।"
সাক্ষর আবারো বলল,
"আর ইসলামে নারীর শরীরে স্বামীর কোনো চিহ্ন বহন করা জায়েজ না।তুই নাকফুল,চুড়ি পরবি কি পরবি না তা সম্পূর্ন তোর ইচ্ছা।মনে চাইলে পরবি না চাইলে নাই।"
"কিন্তু দাদিতো ওসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করে যে নাকফুল খুললে নাকি স্বামীর অকল্যান হয়।দাদির বিশ্বাসে আঘাত করাটা কি ঠিক হবে?
এবার সাক্ষর বেশ কিছুক্ষন কি যেনো ভেবে ফোনটা হাতে নিলো। অনলাইনে একটা ডাইমন্ড জুয়েলারি পেইজে সেদিন কিছু হীরের নাকফুলের কালেকশন দেখেছিলো সাক্ষর।তাই পেইজটাতে ঢুকে কিনঞ্জলকে বলল,
"এক কাজ করা যায় স্বর্ণের নাকফুল না পরে একদম ছোট সাইজের হীরের নাকফুল পরতে পারিস।এখনতো এগুলোর ট্রেন্ড চলছে।আমার অফিসের কয়েকজন অবিবাহিতা মেয়ে কলিগরাও এখন এই ডাইমন্ড নোজপিন পরে।এই যে দেখ কি সুন্দর সুন্দর কালেকশন আছে এখানে।এখান থেকে একটা চুজ কর।কাল পড়শুর মধ্যেই হাতে পেয়ে যাবি।এতে তোর নাকফুল পরাও হবে,আর দাদির মন রাখাও হবে।আর তোকে নাকফুলেই কিন্তু বেশ লাগে দেখতে।বুঝলি ভ্যাবলি!”
কিনঞ্জল হাসি হাসি মুখ করে সাক্ষরের দিকে তাকিয়ে হ্যাঁ বললো।এই দেখে সাক্ষর আবারো বললো,
" তাহলে কলেজে ক্লাস করবি তো?"
কিনঞ্জল হাসি মুখে সম্মতি জানাতেই
সাক্ষর মিষ্টি হেসে কিনঞ্জলের নাক চেপে দিলো।আর কিনঞ্জলও খুশিমনে নাকফুল পছন্দ করতে বসে গেলো।আর এদিকে সাক্ষর মনে মনে ভাবছে ঔষধ তাহলে কাজে লেগেছে।এই যে সাক্ষর কিনঞ্জলের সঙ্গে একটু ফ্রেন্ডলি হয়ে কথা বললো,প্যাম্পার করলো সেজন্যই তো কিনঞ্জল এত সহজেই নিজেই পেটের সব উগরে দিলো নইলে এ মেয়ের পেটে বোম ফাটালেও কথা বের হতো না।এই ভেবেই মিটমিটিয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো সাক্ষর।আর কিনঞ্জল ভ্যাবলিটা ঘূনাক্ষরেও বুঝতেও পারলোনা সে আবারো 'দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথায় পেটের সব উগরে দিলো পিশাচটার কাছে।'
"সিরিয়াসলি!আপনি আমাকে কোলে নিয়ে ঘুরতেন?এটাও বিশ্বাস করতে হবে?"
সাক্ষর এক ধমক দিয়ে বলল,
"বিশ্বাস করলে কর না করলে নাই।আর আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে প্রায় সপ্তাহখানেক হয়ে এলো আর তোর পায়ের ক্ষতটাও তো শুকিয়ে এসেছে প্রায়।কলেজে যাবি কবে থেকে?সামনেই তো টেস্ট এক্সাম আর তারপরেই বোর্ড এক্সাম।আমার এখানে থাকলে কিন্তু পড়ালেখায় কোন অবহেলা চলবে না।"
সাক্ষর কথাটা বলতেই কিনঞ্জলের মনটা হুট খারাপ হয়ে গেলো।বিষন্ন গলায় বলল,
"আমি আর কলেজে ক্লাস করব না সাক্ষর ভাই।এক্সামের সময় গিয়ে শুধু এক্সাম দিয়ে আসবো।আপনি কি প্লিজ আমাকে কিছু নোটের ব্যাবস্থা করে দিতে পারবেন?"
"কেনো,ক্লাস করবি না কেনো?পায়ের জন্য যদি হয়,সেরকম হলে আমি তোকে কোলে করে ক্লাসে বসিয়ে দিয়ে আসব।আর লাঞ্চের টাইমে আবার বাসায় দিয়ে যাবো কিন্তু ক্লাস তোকে করতেই হবে।নো ফাঁকিবাজি!"
কিনঞ্জল খানিকটা জোড় করে হেসেই বলল,
"পাগল নাকি?এখন অসুস্থ হাঁটতে পারি না বলে বাসাতেই কোলে করে ওয়াশরুম,ড্রয়িংরুমে নিয়ে যান।তাই বলে কি বাইরেও কোলে নিবেন নাকি সাক্ষর ভাই?"
সাক্ষর এবার একটু মজা করেই কিনঞ্জলকে চোখ টিপ মেরে বলল,
"সমস্যা কি?ছোটবেলায় তো পুরো মহল্লা তোকে কোলে নিয়ে ঘুরেছি।তখন ভাইয়া মনে করে কোলে বসে থাকতি,এখন সাইয়্যা ভেবে বসে থাকবি।"
কথাটা বলতেই কিনঞ্জল আর সাক্ষর দুজনেই হেসে দিলো।কিনঞ্জল এবার নিজেই সাক্ষরের গা ঘেষে বসল।সাক্ষর নিজেও কিনঞ্জলের গা ঘেষে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
"কি হয়েছে কিনঞ্জল?কলেজে যাবি না কেনো?নিয়মিত ক্লাস না করলে তো এক্সামে তেমন মার্কস তুলতে পারবি না।আর এইচএসসির রেজাল্ট ভালো না হলে ভালো কোন ইউনিভার্সিটিতেও ভর্তি হতে পারবি না।"
এই বলেই সাক্ষর কিনঞ্জলের বাহুতে নিজের হাত দিয়ে জাপটে ধরে রেখে মাথার তালুতে চুমু খেলো।এবার কিনঞ্জলও ছোট্ট বিড়ালছানার মতো সাক্ষরের গা ঘেষেই বলল,
"সবাই আমাকে নিয়ে মজা করবে কলেজে গেলে।"
"কেনো?মজা করবে কেনো?"
"সবাই আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করবে কারন আমার এখনি বিয়ে হয়ে গেছে।আমাদের ক্লাসের কারো বিয়ে হয়নি একমাত্র আমি ছাড়া।আর আমি নাকফুল পরে,হাতে চুরি পরে বউ সেজে কলেজে গেলে তো আমাকে নিয়ে সবাই মজা করবেই।"
এই বলেই কিনঞ্জল আবারো আরেক দফা মন খারাপ করে নিলো।সাক্ষর কিনঞ্জলের ভাবমূর্তি দেখে কিনঞ্জলকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল,
"তোর আর নুহাশের সম্পর্কের কথাতো মোটামুটি তোর ক্লাসের সবাই জানতো তাই না?"
কিনঞ্জল মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।এই দেখে সাক্ষর আবার বললো,
"তখন কি তোকে নিয়ে কেউ হাসিঠাট্টা করেছে?"
কিনঞ্জল আবারো মাথা নাড়িয়ে 'না' জানালো।এবার সাক্ষর কিনঞ্জলের হাতদুটো জড়িয়ে ধরে বলল,
"তাহলে চিন্তা করছিস কেনো?বিয়ে কি কোন খারাপ জিনিস নাকি যে তোর বিয়ে হয়েছে বলে তোকে নিয়ে হাসি মশকরা করবে?তোর আর নুহাশের হারাম সম্পর্ক নিয়ে যেহেতু কেউ হাসিঠাট্টা করেনি তাহলে তোর আর আমার বিয়ের মতো পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে মজা করবে কেনো?আর করলেও তুই কানে তুলবি না?ইচ্ছে হলে মুখের উপর উচিত জবাব দিয়ে দিবি নয়ত টোটালি ইগনোর করবি।"
সাক্ষর আবারো বলল,
"আর ইসলামে নারীর শরীরে স্বামীর কোনো চিহ্ন বহন করা জায়েজ না।তুই নাকফুল,চুড়ি পরবি কি পরবি না তা সম্পূর্ন তোর ইচ্ছা।মনে চাইলে পরবি না চাইলে নাই।"
"কিন্তু দাদিতো ওসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করে যে নাকফুল খুললে নাকি স্বামীর অকল্যান হয়।দাদির বিশ্বাসে আঘাত করাটা কি ঠিক হবে?
এবার সাক্ষর বেশ কিছুক্ষন কি যেনো ভেবে ফোনটা হাতে নিলো। অনলাইনে একটা ডাইমন্ড জুয়েলারি পেইজে সেদিন কিছু হীরের নাকফুলের কালেকশন দেখেছিলো সাক্ষর।তাই পেইজটাতে ঢুকে কিনঞ্জলকে বলল,
"এক কাজ করা যায় স্বর্ণের নাকফুল না পরে একদম ছোট সাইজের হীরের নাকফুল পরতে পারিস।এখনতো এগুলোর ট্রেন্ড চলছে।আমার অফিসের কয়েকজন অবিবাহিতা মেয়ে কলিগরাও এখন এই ডাইমন্ড নোজপিন পরে।এই যে দেখ কি সুন্দর সুন্দর কালেকশন আছে এখানে।এখান থেকে একটা চুজ কর।কাল পড়শুর মধ্যেই হাতে পেয়ে যাবি।এতে তোর নাকফুল পরাও হবে,আর দাদির মন রাখাও হবে।আর তোকে নাকফুলেই কিন্তু বেশ লাগে দেখতে।বুঝলি ভ্যাবলি!”
কিনঞ্জল হাসি হাসি মুখ করে সাক্ষরের দিকে তাকিয়ে হ্যাঁ বললো।এই দেখে সাক্ষর আবারো বললো,
" তাহলে কলেজে ক্লাস করবি তো?"
কিনঞ্জল হাসি মুখে সম্মতি জানাতেই
সাক্ষর মিষ্টি হেসে কিনঞ্জলের নাক চেপে দিলো।আর কিনঞ্জলও খুশিমনে নাকফুল পছন্দ করতে বসে গেলো।আর এদিকে সাক্ষর মনে মনে ভাবছে ঔষধ তাহলে কাজে লেগেছে।এই যে সাক্ষর কিনঞ্জলের সঙ্গে একটু ফ্রেন্ডলি হয়ে কথা বললো,প্যাম্পার করলো সেজন্যই তো কিনঞ্জল এত সহজেই নিজেই পেটের সব উগরে দিলো নইলে এ মেয়ের পেটে বোম ফাটালেও কথা বের হতো না।এই ভেবেই মিটমিটিয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো সাক্ষর।আর কিনঞ্জল ভ্যাবলিটা ঘূনাক্ষরেও বুঝতেও পারলোনা সে আবারো 'দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথায় পেটের সব উগরে দিলো পিশাচটার কাছে।'
(চলবে)...
লিখা:~ নাজমুন নাহার তৃপ্তি