রুমে ঢুকেই দ্বিধাগ্রস্ত কন্ঠে কথাটা বলল সাক্ষর।কিনঞ্জল বিছানায় বাবু হয়ে বসে লাগেজে একে একে নিজের প্রয়োজনীয় টুকিটাকি জিনিসগুলো গোছাচ্ছিলো।সাক্ষর কিনঞ্জলের উত্তরের অপেক্ষা না করে নিজেই এগিয়ে এসে বিছানার ধারে বসল।আর কিনঞ্জলের হাতে হাতে নিজেও লাগেজে একে একে নিজেদের ব্রাশ, টুথপেষ্ট, বডিওয়াশ এর বোতলগুলো গুছিয়ে রাখতে রাখতে বলল,
"তুই কি আমার উপর রেগে আছিস?"
কিনঞ্জল নিচের দিকে তাকিয়েই মাথা নাড়িয়ে না জানালো।এই দেখে সাক্ষর বললো,
"তাহলে তুই আজকে সাড়াটা দিন আমাকে এড়িয়ে চলছিস কেনো?সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি তুই রুমে নেই।ব্রেকফাস্ট ও ওজুহাত দেখিয়ে সোফায় বসে করেছিস।আমি রেডি হওয়ার আগেই একা একা কলেজে চলে গেছিস।বিকেলে ড্রয়িং-এ যখন সবাই পড়শু গ্রামে যাওয়া নিয়ে কথা-বার্তা বলছিলো তখনও আমাকে ছাড়া সবার সাথেই হাসি-ঠাট্টা করেছিস।তারপরও বলবি তুই আমার উপর রাগ করিস নি?"
কিনঞ্জল এবার মুখ খুললো।স্বাভাবিক ভাবেই বললো,
"আমি আবার আপনার সঙ্গে কোন জনমে হাসি-ঠাট্টা করেছি সাক্ষর ভাই?যে আজকে রাগ করে হাসি-ঠাট্টা করবোনা।সত্যি বলছি আমি একটুও রাগ করিনি আপনার উপর।"
"ঠিকাছে মানলাম!তবে আমাকে এড়িয়ে চলছিস কেনো?দেখ কিনঞ্জল আমি জানি তুই আমার উপর রেগে আছিস।তুই আমাকে কি ভাবছিস,কতটা খারাপ ছেলে ভাবছিস আমি জানিনা।তবে একটা অপরাধবোধ আমাকে গতকাল রাত থেকেই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।তাই আমি নিজের দিকটা তোর কাছে ক্লিয়ার থাকতে চাই।"
এই বলে কিছুটা দম নিয়ে সাক্ষর আবার বলতে শুরু করল,
"তোর জন্মের পর থেকেই তোর উপর আমি একটা অলিখিত অধিকার ফলানোর চেষ্টা করতাম কিনঞ্জল।অন্য কোন বাচ্চাকে তোর আশেপাশে একদম ঘেষতে দিতাম না।খেলার ছলে তোর চোখে-মুখে কতশত চুমু যে খেতাম আমি তার কোন ইয়াত্তা নেই।তবে সেই অধিকার গুলো আমি একজন বড়ভাই যেমন ছোটবোনের প্রতি ফলায় সেরকমই ফলাতাম।কিন্তু তোর বাবা মানে চাচ্চু আমার তোর প্রতি পজিসিভনেস দেখে মজা করে আমাকে জামাই বাবাজি বলে ডাকতো।কি যে লজ্জা পেতাম ওসব শুনে আমি কিন্তু আবার কিছু বলতেও পারতাম না।তুই আমার কাছে ছিলি একটা জলজ্যান্ত পুতুল।তেমন তুইও আমার বেশ ন্যাওটা ছিলি।আমার গলায়,পিঠে ঝুলে পুরো মহল্লা ঘুরে বেড়াতিস।আর নিজের আধো আধো বুলিতে মন্টু ভাই,মন্টু ভাই করে হেদিয়ে মরতিস।তারপরই তো ব্যাবসা সংক্রান্ত কিছু ঝামেলার কারণে দু পরিবারের মধ্যে দুরত্বটা বেড়ে গেলো।এর মাঝে আমিও আবার লন্ডন চলে গেলাম।মাঝের কয়েকটা বছরে দু'পরিবারের সমস্যাগুলো চাচ্চু আর বাবা মিলে মিটিয়েও নিলো।কিন্তু ফিরে এসে আমার আর তোর সেই বন্ডিংটা আর ছিলোনা।আমি টুকটুকির মন্টু ভাই থেকে হয়ে গেলাম তোর সাক্ষর ভাই।তুই আমাকে কেনো জানি সহ্যই করতে পারতিস না আবার ভয়ও পেতিস।যদিও কারণটা আজও আমার অজানা।সেসব যাই হোক!ভাগ্যের ফেরে তোর আর আমার বিয়েটাও হলো।কিন্তু আমি তখনো তোকে সেই ছোটবোনের নজরেই দেখতাম।"
এইটুকু বলেই কিনঞ্জলের দিকে তাকালো সাক্ষর।কিনঞ্জল সাক্ষরের দিকে তাকিয়েই বলল,
"কিন্তু এইসব এখন বলছেন কেনো সাক্ষর ভাই?
"বলছি।তার আগে আমাকে এটা বল তোর কি আমাকে অসুস্থ মনে হয় নাকি সুস্থ স্বাভাবিক একজন মানুষ মনে হয়?"
"অসুস্থ ভাববো কেনো?আপনি তো দিব্যি সুস্থ আছেন।"
এবার সাক্ষর কিনঞ্জলের হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলল,
"আমাদের বিয়ের বয়স প্রায় চারমাস ছুইছুই।কিন্তু এই এতগুলো দিনে তোর অসম্মান হয় বা তুই অকয়ার্ড ফিল করিস এমন কোন আচরণ আমি তোর সঙ্গে করিনি কিনঞ্জল।আমি তোকে সময় দিচ্ছিলাম সেই সাথে নিজেও নিজেকে সময় দিচ্ছিলাম।নিজেকে সময় দেওয়ার কারণটা একটু আগেই বলেছি আমি তোকে এতগুলো বছর নিজের বোনের মতো ভাবতাম।তাই তোকে নিজের লাইফ পার্টনার হিসেবে মেনে নেওয়া আমার জন্যও বেশ টাফ ছিলো।কিন্তু এখন আমি তোকে নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছি।তোর হকের ভালোবাসা,কেয়ার সবই তোকে দেওয়ার চেষ্টা করছি।তা হয়ত তুই নিজেও ফিল করতে পারছিস।অনেকেই হয়ত বলে 'ভালোবাসার মানুষটাকে না ছুয়েই সারাজীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়।' কিন্তু আদোও কি কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে এটা সম্ভব।যাকে ভালোবাসি তার প্রতি দুর্বল হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না।তেমনি আমিও গতকাল রাতে তোর উপর দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম।বিয়ের প্রথম মাস দেড়েক আমি নিজেই আমাদের সম্পর্কটাকে নিয়ে কনফিউজড ছিলাম।তখন তোকে নিজের জীবনে মানিয়ে নেওয়ার সর্বচ্চো চেষ্টায় আমি।তোকে স্ত্রী হিসেবে কল্পনা করার আগে বোন হিসেবে ভাবতাম।তাই ওইসব দিনে তোর প্রতি উইক হওয়া বা কিছু ফিল করার প্রশ্নই আসে না।কিন্তু যেদিন থেকে আমি তোকে মনে-মনে মেনে নিয়েছি তারপর এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যখন আমি তোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছি কিন্তু সেই সাথে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পেরেছি।কারণ আমি তোকে সময় দিতে চেয়েছি,স্পেস দিতে চেয়েছি।কিন্তু দিনশেষে আমি একটা ছেলে কিনঞ্জল।প্রকৃতির নিয়মমাফিক আমারও কিছু চাহিদা আছে।তাই হয়ত গতকাল রাতে নিজেকে চেয়েও কন্ট্রোল করতে পারিনি আমি।কিন্তু গতকাল তোর চোখে পানি দেখার পর থেকে আমি ভীষণ অস্বস্তিতে ভোগছি।তুই নিজেও হয়ত জানিস না কি বাজে ভাবে ঘুমাস তুই কিনঞ্জল।হাত-পা ছুড়াছুঁড়ি তো আছেই মাঝেমধ্যে তোর শরীরের কাপড়ও ঠিক থাকে না।মাঝরাতে উঠে তোর শরীরে কাপড় ঠিক করে দিয়ে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়েছি এতদিন।আর তুইও বুকে মুখ গুজে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিস।এই তো তিন-চার দিন আগেই আমার টি-শার্টে ঘুমের ঘোরে নাক মুছে ঘাড়ে মুখ গুজে ঘুমিয়েছিস।ঘুমের ঘোরেই আমার টি-শার্ট যখন পরম নির্ভরতায় আঁকড়ে ধরেছিস তোকে গভীরভাবে ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছেটা তখনই মনের মধ্যেই পিষে মেরেছি।কারণ তোর উপর কোন প্রেশার ক্রিয়েট করতে চাইনি।কিন্তু গতকাল রাতে ঘুম থেকে উঠে যখন তোকে এলোমেলো অবস্থায় দেখি অজান্তেই তোর কাছে চলে গিয়েছিলাম।অন্যদিন গুলোর মতন তোকে গুছিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে বুকে আঁকড়ে ধরেছি।নেশাগ্রস্থের মতন তোর গালে,চোখে,ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়িয়েছি।আর যখনই গলার ভাজে মুখ ডোবাতে গিয়েছি তোর ক্রন্দনরত গলার আওয়াজে বুকটা কেঁপে উঠেছিলো।জানিনা তুই আমাকে কতটা নীচ ভাবছিস।তুই বিশ্বাস করবি কিনা জানি না কিন্তু 'আমি তোর শরীরের ভাঁজগুলো পড়ার আগে তোর মন পড়তে চাই কিনঞ্জল'।গতকাল থেকে বারবার মনে হচ্ছে তোকে আমার আরও সময় দেওয়া উচিত ছিলো।কিংবা তুই হয়ত আমাকে কোনদিনও স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবি না।এখন তুই যদি বলিস হ্যাঁ তুই আমাকে মেনে নিতে পারবি তোকে আমি আরও সময় দিতে প্রস্তুত।এতে আমার কোন সমস্যা নেই।কিন্তু যদি বলিস যে,না!তুই মানতে পারবি না তাহলে সম্পর্কটাকে না হয় এখানেই শেষ করে দেওয়া যাবে।এখন ডিসিশন তোর কিনঞ্জল।ইটস টোটালি আপ টু ইউ।তুই আমাকে নিজের স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবি কি পারবি না তোকে আগে এই সিদ্ধান্তে এসে দাঁড়াতে হবে।আমি নিজের দিকটা তোর কাছে ক্লিয়ার করে দিলাম।"
"তুই কি আমার উপর রেগে আছিস?"
কিনঞ্জল নিচের দিকে তাকিয়েই মাথা নাড়িয়ে না জানালো।এই দেখে সাক্ষর বললো,
"তাহলে তুই আজকে সাড়াটা দিন আমাকে এড়িয়ে চলছিস কেনো?সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি তুই রুমে নেই।ব্রেকফাস্ট ও ওজুহাত দেখিয়ে সোফায় বসে করেছিস।আমি রেডি হওয়ার আগেই একা একা কলেজে চলে গেছিস।বিকেলে ড্রয়িং-এ যখন সবাই পড়শু গ্রামে যাওয়া নিয়ে কথা-বার্তা বলছিলো তখনও আমাকে ছাড়া সবার সাথেই হাসি-ঠাট্টা করেছিস।তারপরও বলবি তুই আমার উপর রাগ করিস নি?"
কিনঞ্জল এবার মুখ খুললো।স্বাভাবিক ভাবেই বললো,
"আমি আবার আপনার সঙ্গে কোন জনমে হাসি-ঠাট্টা করেছি সাক্ষর ভাই?যে আজকে রাগ করে হাসি-ঠাট্টা করবোনা।সত্যি বলছি আমি একটুও রাগ করিনি আপনার উপর।"
"ঠিকাছে মানলাম!তবে আমাকে এড়িয়ে চলছিস কেনো?দেখ কিনঞ্জল আমি জানি তুই আমার উপর রেগে আছিস।তুই আমাকে কি ভাবছিস,কতটা খারাপ ছেলে ভাবছিস আমি জানিনা।তবে একটা অপরাধবোধ আমাকে গতকাল রাত থেকেই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।তাই আমি নিজের দিকটা তোর কাছে ক্লিয়ার থাকতে চাই।"
এই বলে কিছুটা দম নিয়ে সাক্ষর আবার বলতে শুরু করল,
"তোর জন্মের পর থেকেই তোর উপর আমি একটা অলিখিত অধিকার ফলানোর চেষ্টা করতাম কিনঞ্জল।অন্য কোন বাচ্চাকে তোর আশেপাশে একদম ঘেষতে দিতাম না।খেলার ছলে তোর চোখে-মুখে কতশত চুমু যে খেতাম আমি তার কোন ইয়াত্তা নেই।তবে সেই অধিকার গুলো আমি একজন বড়ভাই যেমন ছোটবোনের প্রতি ফলায় সেরকমই ফলাতাম।কিন্তু তোর বাবা মানে চাচ্চু আমার তোর প্রতি পজিসিভনেস দেখে মজা করে আমাকে জামাই বাবাজি বলে ডাকতো।কি যে লজ্জা পেতাম ওসব শুনে আমি কিন্তু আবার কিছু বলতেও পারতাম না।তুই আমার কাছে ছিলি একটা জলজ্যান্ত পুতুল।তেমন তুইও আমার বেশ ন্যাওটা ছিলি।আমার গলায়,পিঠে ঝুলে পুরো মহল্লা ঘুরে বেড়াতিস।আর নিজের আধো আধো বুলিতে মন্টু ভাই,মন্টু ভাই করে হেদিয়ে মরতিস।তারপরই তো ব্যাবসা সংক্রান্ত কিছু ঝামেলার কারণে দু পরিবারের মধ্যে দুরত্বটা বেড়ে গেলো।এর মাঝে আমিও আবার লন্ডন চলে গেলাম।মাঝের কয়েকটা বছরে দু'পরিবারের সমস্যাগুলো চাচ্চু আর বাবা মিলে মিটিয়েও নিলো।কিন্তু ফিরে এসে আমার আর তোর সেই বন্ডিংটা আর ছিলোনা।আমি টুকটুকির মন্টু ভাই থেকে হয়ে গেলাম তোর সাক্ষর ভাই।তুই আমাকে কেনো জানি সহ্যই করতে পারতিস না আবার ভয়ও পেতিস।যদিও কারণটা আজও আমার অজানা।সেসব যাই হোক!ভাগ্যের ফেরে তোর আর আমার বিয়েটাও হলো।কিন্তু আমি তখনো তোকে সেই ছোটবোনের নজরেই দেখতাম।"
এইটুকু বলেই কিনঞ্জলের দিকে তাকালো সাক্ষর।কিনঞ্জল সাক্ষরের দিকে তাকিয়েই বলল,
"কিন্তু এইসব এখন বলছেন কেনো সাক্ষর ভাই?
"বলছি।তার আগে আমাকে এটা বল তোর কি আমাকে অসুস্থ মনে হয় নাকি সুস্থ স্বাভাবিক একজন মানুষ মনে হয়?"
"অসুস্থ ভাববো কেনো?আপনি তো দিব্যি সুস্থ আছেন।"
এবার সাক্ষর কিনঞ্জলের হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলল,
"আমাদের বিয়ের বয়স প্রায় চারমাস ছুইছুই।কিন্তু এই এতগুলো দিনে তোর অসম্মান হয় বা তুই অকয়ার্ড ফিল করিস এমন কোন আচরণ আমি তোর সঙ্গে করিনি কিনঞ্জল।আমি তোকে সময় দিচ্ছিলাম সেই সাথে নিজেও নিজেকে সময় দিচ্ছিলাম।নিজেকে সময় দেওয়ার কারণটা একটু আগেই বলেছি আমি তোকে এতগুলো বছর নিজের বোনের মতো ভাবতাম।তাই তোকে নিজের লাইফ পার্টনার হিসেবে মেনে নেওয়া আমার জন্যও বেশ টাফ ছিলো।কিন্তু এখন আমি তোকে নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছি।তোর হকের ভালোবাসা,কেয়ার সবই তোকে দেওয়ার চেষ্টা করছি।তা হয়ত তুই নিজেও ফিল করতে পারছিস।অনেকেই হয়ত বলে 'ভালোবাসার মানুষটাকে না ছুয়েই সারাজীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়।' কিন্তু আদোও কি কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে এটা সম্ভব।যাকে ভালোবাসি তার প্রতি দুর্বল হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না।তেমনি আমিও গতকাল রাতে তোর উপর দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম।বিয়ের প্রথম মাস দেড়েক আমি নিজেই আমাদের সম্পর্কটাকে নিয়ে কনফিউজড ছিলাম।তখন তোকে নিজের জীবনে মানিয়ে নেওয়ার সর্বচ্চো চেষ্টায় আমি।তোকে স্ত্রী হিসেবে কল্পনা করার আগে বোন হিসেবে ভাবতাম।তাই ওইসব দিনে তোর প্রতি উইক হওয়া বা কিছু ফিল করার প্রশ্নই আসে না।কিন্তু যেদিন থেকে আমি তোকে মনে-মনে মেনে নিয়েছি তারপর এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যখন আমি তোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছি কিন্তু সেই সাথে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পেরেছি।কারণ আমি তোকে সময় দিতে চেয়েছি,স্পেস দিতে চেয়েছি।কিন্তু দিনশেষে আমি একটা ছেলে কিনঞ্জল।প্রকৃতির নিয়মমাফিক আমারও কিছু চাহিদা আছে।তাই হয়ত গতকাল রাতে নিজেকে চেয়েও কন্ট্রোল করতে পারিনি আমি।কিন্তু গতকাল তোর চোখে পানি দেখার পর থেকে আমি ভীষণ অস্বস্তিতে ভোগছি।তুই নিজেও হয়ত জানিস না কি বাজে ভাবে ঘুমাস তুই কিনঞ্জল।হাত-পা ছুড়াছুঁড়ি তো আছেই মাঝেমধ্যে তোর শরীরের কাপড়ও ঠিক থাকে না।মাঝরাতে উঠে তোর শরীরে কাপড় ঠিক করে দিয়ে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়েছি এতদিন।আর তুইও বুকে মুখ গুজে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিস।এই তো তিন-চার দিন আগেই আমার টি-শার্টে ঘুমের ঘোরে নাক মুছে ঘাড়ে মুখ গুজে ঘুমিয়েছিস।ঘুমের ঘোরেই আমার টি-শার্ট যখন পরম নির্ভরতায় আঁকড়ে ধরেছিস তোকে গভীরভাবে ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছেটা তখনই মনের মধ্যেই পিষে মেরেছি।কারণ তোর উপর কোন প্রেশার ক্রিয়েট করতে চাইনি।কিন্তু গতকাল রাতে ঘুম থেকে উঠে যখন তোকে এলোমেলো অবস্থায় দেখি অজান্তেই তোর কাছে চলে গিয়েছিলাম।অন্যদিন গুলোর মতন তোকে গুছিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে বুকে আঁকড়ে ধরেছি।নেশাগ্রস্থের মতন তোর গালে,চোখে,ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়িয়েছি।আর যখনই গলার ভাজে মুখ ডোবাতে গিয়েছি তোর ক্রন্দনরত গলার আওয়াজে বুকটা কেঁপে উঠেছিলো।জানিনা তুই আমাকে কতটা নীচ ভাবছিস।তুই বিশ্বাস করবি কিনা জানি না কিন্তু 'আমি তোর শরীরের ভাঁজগুলো পড়ার আগে তোর মন পড়তে চাই কিনঞ্জল'।গতকাল থেকে বারবার মনে হচ্ছে তোকে আমার আরও সময় দেওয়া উচিত ছিলো।কিংবা তুই হয়ত আমাকে কোনদিনও স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবি না।এখন তুই যদি বলিস হ্যাঁ তুই আমাকে মেনে নিতে পারবি তোকে আমি আরও সময় দিতে প্রস্তুত।এতে আমার কোন সমস্যা নেই।কিন্তু যদি বলিস যে,না!তুই মানতে পারবি না তাহলে সম্পর্কটাকে না হয় এখানেই শেষ করে দেওয়া যাবে।এখন ডিসিশন তোর কিনঞ্জল।ইটস টোটালি আপ টু ইউ।তুই আমাকে নিজের স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবি কি পারবি না তোকে আগে এই সিদ্ধান্তে এসে দাঁড়াতে হবে।আমি নিজের দিকটা তোর কাছে ক্লিয়ার করে দিলাম।"
সাক্ষরের কথাগুলো শুনে কিনঞ্জল তেমন কোন রিয়েক্ট করলনা।তবে ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভেতরে ভেতরে কিনঞ্জলও এবার বেশ দোটানায় ভুগছে।এই দেখে সাক্ষর কিনঞ্জলের গালে হাতটা ছুঁয়িয়ে বলল,
"বি নরমাল!নিজের উপর এত প্রেশার দেওয়ার কিছুই হয়নি।তোর কাছে আমি এখনি কোন উত্তর চাইনি।কাল তো গ্রামে যাচ্ছি আমরা।সপ্তাহ খানেক বাদে যখন ফিরব তখন না হয় উত্তরটা দিস।
'তুই শুধু এক কদম এগিয়ে আয়,বাকি জীবনটা দুজন পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটার দ্বায়িত্বটা আমার!'
"বি নরমাল!নিজের উপর এত প্রেশার দেওয়ার কিছুই হয়নি।তোর কাছে আমি এখনি কোন উত্তর চাইনি।কাল তো গ্রামে যাচ্ছি আমরা।সপ্তাহ খানেক বাদে যখন ফিরব তখন না হয় উত্তরটা দিস।
'তুই শুধু এক কদম এগিয়ে আয়,বাকি জীবনটা দুজন পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটার দ্বায়িত্বটা আমার!'
ও ভালো কথা!গ্রাম থেকে ফিরেই দুই-তিনদিনের ভেতর মাস খানেকের জন্য ব্যবসার কাজে আমি জাপান যাচ্ছি।তাই তোর কোচিং ক্লাস,কলেজে একাই যাতায়াত করতে হবে।তবে ইনশাআল্লাহ তোর বোর্ড এক্সামের আগেই ফিরতে পারব বলে আশা করি।"
(চলবে)
লেখা~ নাজমুন নাহার তৃপ্তি