> এবার ভিন্ন কিছু হোক | বেলা ফুরাবার আগে বইয়ের ২য় কিস্তি | বেলা ফুরাবার আগে ২
-->

এবার ভিন্ন কিছু হোক | বেলা ফুরাবার আগে বইয়ের ২য় কিস্তি | বেলা ফুরাবার আগে ২

বই              : এবার ভিন্ন কিছু হোক 
                    বেলা ফুরাবার আগে বইটির দ্বিতীয় কিস্তি 
লেখক        : আরিফ আজাদ 
প্রকাশনী     : সমকালীন প্রকাশন
মূল্য            : ৩৩০ টাকা মাত্র
পৃষ্ঠা            : ১৯৪ টি  
প্রচ্ছদ         : সমকালীন গ্রাফিক্স টিম 
ধরন            : ইসলামিক আত্ম-উন্নয়নমূলক
প্রকাশকাল  :  একুশে বইমেলা ২০২২খ্রি
বইয়ের শব্দ : ৫০,০০০টি (প্রায়)
ISBN          : 978-984-95993-8-8


বইয়ের নামকরণ ও প্রচ্ছদ বর্ণনা:


আগের বইয়ের নামানুসারে এই বইটির নাম রাখা হয় নি অনেককিছু  বিবেচনা করে। এই বইগুলো  যেহেতু জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়াদি নিয়ে, তাই সিরিজের নামটা রাখা হয়েছে — 'জীবনের জাগরণ'। এই সিরিজের প্রথম বই 'বেলা ফুরাবার আগে', দ্বিতীয় বই 'এবার ভিন্ন কিছু হোক'। তৃতীয় বইটাও অন্য নামে আসবে, ইন শা আল্লাহ।'
লেখক বইটির প্রচ্ছদ  'বেলা ফুরাবার আগে' বইয়ের কাছাকাছি চেয়েছিলেন  , এটা অনেকটাই তা-ই৷ আগেরটায় কবরের আবহ, এটায় কবরের পাটাতন ব্যাকগ্রাউন্ডে।


[তথ্যঃ আরিফ ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া]


সংক্ষেপে বইটির মূল কথাঃ 

প্রথমেই জেনে নেই বইটি সূচিপত্রে কি আছে।
বইটির সূচীপত্র:

১. আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
২. যে সুঁতোয় বাঁধা জীবন
৩. গাহি নতুনের গান
৪. পতনের আওয়াজ পাওয়া যায়
৫. বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর
৬. কখনো ভুল হলে
৭. বন্দী শিবির থেকে
৮. যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে
৯. যে যাই বলুক পিছে
১০. খুলে যাক জীবনের বদ্ধ দুয়ার
১১. খেলাঘর পাতা আছে এই এখানে
১২. হৃদয়ের জানালাটা খুলে দাও না
১৩. জীবনের কম্পাস
১৪. ভালোবাসা ভালোবাসি
১৫. সমুদ্রের সাধ
১৬. এবার ভিন্ন কিছু হোক

প্রথমেই মুলত তিনটি বিষয় নিয়ে লেখা হয়েছে। 
সালাতের উপর জোরদার, মায়ের কথায় অবাধ্য না করা , বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করা।তারপর 
 মূসা আলাইহিসসালাম ইব্রাহিম আলাইহিসসালাম ইউসূফ আলাইহিসসালাম ইউনূস আলাইহিসসালাম এর জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা উল্লেখ আছে। আর এই ঘটনাগুলো থেকে যে মেসেজ টি দেওয়া হচ্ছে তা হলো সবর অর্থাৎ ধৈর্য্য ধারণ করা। 
 তারপর এ পর্দা করার ব্যাপার লেখা আছে। ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই পর্দার বিধান। 
লোক দেখানো কাজ বা আমল,  নিজের আমল দেখে মুগ্ধ হওয়া হোক তা ছোট বা বড় তা যে কত বড় ভয়ঙ্কর কাজ তা অনেকে জেনেও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তা বোঝানো হয়েছে। 
শিখার কোনো বয়স নেই। এটা হোক কম বয়স বা থুরথুরে বৃদ্ধ বয়স। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু , আবু হুরাইরা রাযিয়াল্লাহু  আনহুর মতো সাহাবিদের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। 
একটা কথা প্রায় সকলেরই জানা আছে,  মানুষ মাত্রই ভুল। তাই বলে ভুল হলে সেই ভুলের উপর জেদ ধরে বসে থাকবো তা কিন্তু না। অনুতপ্ত হয়ে সেই ভুল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে তওবাহ করতে হবে।
যখন আমাদের দুয়া কবুল হয় না, সুখ হারিয়ে যায় জীবন থেকে, কাজকর্মে, পড়াশোনায় আমাদের মন বসে না। কোথাও পাই না এইটুকু বারাকাহ তখন ইচ্ছে হয়,
আল্লাহ যদি আমার দোয়া কবুল করতো, বিপদ থেকে মুক্তি পেতাম, কেটে যেতো আমার এই বন্দিত্বটা,  খুলে যেতো মুক্তির পথ! আর এর থেকে মুক্তির পথ হলো তায়াক্কুল, গোপন আমল যা বিপদের দিনে বর্ম হয়ে দাঁড়াবে, দিবে নিরাপত্তা। পরিবার আর সমাজ আমাদের কথা শুনছে না, আমাদের ডাকে সাড়া দেয় না, আমাদের দাওয়াহকে তারা প্রত্যাখ্যান করে, দ্বীন পালন করতে দেখলে আমাদের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়– এতসব কিছুকে একটা পরিক্ষা হিসেবে নেওয়া যাক।
আমাদের দেখতে হবে -- সঠিক পন্থায় তাদের কাছে আমরা তা তুলে ধরতে পেরেছি কি না৷ আমাদের ডাকে কে সাড়া দিচ্ছে না তা বিবেচ্য নয় বরং বিবেচ্য হচ্ছে কাজ ও তার ধারাবাহিকতা। সমাজের, পরিবারের, বিভিন্ন মহলের নানান কথা, তিরস্কার,  আর উপেক্ষাগুলো আমাদের পরিবর্তনের পথে বড় বাধা বটে।  নিজেকে পরিবর্তন করতে চাইলেও অনেকসময় পারিপার্শ্বিক অবস্থা,  নিকটজন আর পরিচিতি মহল সেই পরিবর্তনকে কিভাবে না কিভাবে নেবে সেটা ভেবে আমরা বদলাতে পারি না।কিন্তু তা কি ঠিক? বিপদ আপদ থেকে বাঁচার উপায় ইস্তেগফার করা। প্রযুক্তি বদলে দিয়েছে জীবনের মোড়। আগে যেখানে তথ্য সরবরাহ করতে সময় লাগতো মাসের পর মাস। এখন সেখানে সময় লাগে এক ন্যানো সেকেন্ড। 
এই প্রযুক্তির কারণে মানুষের উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়। তা জেনেও আমরা তা ছাড়তে পারি না। তবে একবারে ছেড়ে দেওয়াও সম্ভব না কেননা সব কিছুই এখন পরিচালিত হয় প্রযুক্তির মাধ্যমে। তবে তা সীমিত করা উচিত। আর এখানে তাই লিখা আছে। কে আপনার অকল্যাণ সাধন করলো, কে আপনার দুঃসময়ে পাশে থাকলো না, কে আপনার পিছনে শত্রুতা করেছিলো— এসবের জন্য আপনার জীবন থেমে থাকে নি। তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আপনার পাশে ছিলো। তবে তার বিপদ এ তাকে আপনি সাহায্য করবেন। আর এটাই ইসলাম। কুরআনেও তা নিয়ে আয়াত আছে। জীবনে সময়ের দাম অনেক। এটাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে। রুটিনমাফিক চলতে হবে। নবিজির ভালোবাসা পেয়ে তার সুন্নাহ পালন না করা তার কথা মতো জীবন না সাজানো এটা কি আমাদের জন্য ব্যর্থতা নয়? কত আমল শিখিয়ে দিয়েছেন মুক্তির পথ বাতলে দিয়েছেন আমাদের জীবনে সে সব যদি না-ই জানি তাহলে আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কি? অনেক তো ঘোর লাগা সময় পার করা  হলো। সব কিছু ভেঙ্গে, জঞ্জাল ফেলে, আলোর পথে হেঁটে, পরবর্তী দের দেখানো পথে চলে সিরাতুল মুস্তাকিমের রাস্তা অনুসরণ করে চলতে হবে। তখনই জীবনের পরবর্তী সূর্যোদয় টা হবে আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন অধ্যায়। 


বইটির শিরোনামঃ 


একটি বইয়ের অন্যতম আকর্ষনীয়  অংশ হলো অধ্যায় অনুযায়ী তার শিরোনাম। যা দেখে পাঠক/ পাঠিকাদের  এই অধ্যায় টার প্রতি আগ্রহ জন্মে। আর এবার ভিন্ন কিছু হোক বইটির প্রতিটি আলোচনা সাথে সেই অধ্যায় এর শিরোনাম বা হেড লাইন একেবারেই মিলে গেছে।  আর এখানেও লেখক সেসবের প্রতিটি বিষয়েই  দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা, যা পাঠক/ পাঠিকাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে।
আমি এই অংশে লেখককে ১০-এ ১০  দেবো।

বইটির শুরু ও শেষ : 

একজন পাঠিকা হিসেবে আমি মনে করি, একটি বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শুরুটা। অনেক ভালো ভালো ইসলামিক বই আছে যেগুলো শুরুতে ভালো না-হওয়ায় পাঠক/পাঠিকা দুই-তিন পৃষ্ঠা পড়ে বিরক্তির রেশ জেগে উঠে। পড়তে ইচ্ছে করে না বলে  বইটি   রেখে দেয় ফলে দারুণ একটি বিষয় সেই সব পাঠক / পাঠিকাদের অগোচরেই থেকে যায়।
আবার বইয়ের শেষটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পাঠক/ পাঠিকা প্রেক্ষাপটি কে কতদিন মনে রাখবে কিংবা এটি পাঠক/ পাঠিকাদের মনে কতটা দাগ কাটবে তা নির্ভর করে  শেষটার উপর। এই হিসেবে এবার ভিন্ন কিছু হোক বইটির  বিশেষ করে, শেষ পর্যায়ে লেখকের বইয়ের নামানুসারে একটা অধ্যায়  উপস্থাপন  করেছে যা সত্যিই অসাধারণ লেগেছে।  তবে বইয়ের ভিতর এর লেখা যে ভালো নয় তা কিন্তু না।  লেখক যেভাবে বইটি লিখেছেন  তা পাঠক/ পাঠিকাদের  মনে দাগ কাটিয়ে রাখার মতোই। আমি কেবল আমার  নিজস্ব মতামত লিখলাম।
তাই এই অংশে লেখককে আমি  ১০-এ ১০-ই দিবো। তা না হলে অন্যায় হবে। 

বইটির শিক্ষা: 

নিজেকে পারফেক্ট ভাবে গড়ে ওঠা প্রতিটি  বইয়েই থাকে কিছু শিক্ষার বিষয়। এ বইটিও তার ব্যতিক্রম নয়। নিচে এ বইটির  কিছু শিক্ষা তুলে ধরা হলো-

১. বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করা।

২. মায়ের অবাধ্য কোনো ক্রমেই না হওয়া । 

৩. সালাত এর ব্যাপারে আরও সচেষ্ট হওয়া।  

৪. বিপদে আপদে সবর করা।

৫. ছেলে মেয়ে উভয়েরই পর্দা ফরয। এটাকে তুচ্ছ হিসেবে না দেখা।

৬. শিখার কোনো বয়স নেই। এটা হোক কম বয়স বা থুরথুরে বৃদ্ধ বয়স। 

৭. ভুল ছোট হোক কিংবা  বড়,  স্মরণ হওয়া মাত্রই আল্লাহর কাছে তাওবাহ করতে হবে। 

৮. দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নিজের যোগ্যতা,  দক্ষতা বাড়াতে হবে। 

৯. আশেপাশের মানুষের কটু কথা শেষ শুনে, পরিবারের লোকজন দূরে সরে গেলে মাঝপথে  থামলে চলবে না। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। 

১০. সকল সমস্যা সমাধান করতে হলে বেশি বেশি ইস্তিগফার করতে হবে। 

১১. এখন প্রযুক্তির যুগ। এই প্রযুক্তির আবহে গা ভাসিয়ে দিলে, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করলে জীবনে উন্নতির বিপরীতে অবনতি হবে।

১২. ক্ষুদ্র জীবনে যেটুকু সময় আছে তা রুটিনমাফিক শরিয়া মোতাবেক ভাবে অতিবাহিত করা।  

১৩. নবিজির ভালোবাসাকে হৃদয়ে ধারণ করে বদলানোর চেষ্টা করা।

১৪. এই জীবনটাকে কাজে লাগাতে হবে। অপচয় করার চিন্তা মুছে ফেলতে হবে। কেননা জীবন একটাই। বার বার আসার সুযোগ নেই।

বইয়ের যে লাইনগুলো ভালো লেগেছে:

১.আল্লাহর স্মরণ থেকে বিচ্যুত হলে আল্লাহ আমাদের জীবনকে কঠিন করে দিবেন আর নিরানন্দ করে দেবেন জীবনের সব কিছু।  

২. মায়ের অবাধ্য যারা, তারা সত্যিকার অর্থেই হতভাগা। তাদের জীবন থেকে হারিয়ে যায় শান্তি। জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে তা নিদারুণ ব্যর্থ হবেই। আর আখিরাতের চুড়ান্ত ব্যর্থতা তো আছেই।

৩. যে সুতোয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আপনার জীবন বাঁধতে চান,তাকে ধৈর্য্যের সাথে আলিঙ্গন করুন। বিশ্বাস করুন, রাত পোহালে একটা সুন্দর সকাল আপনার জীবনটাকেও রাঙ্গিয়ে দিবে।

৪. পর্দা হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার দেওয়া ফরজ বিধান। ফরযের আবশ্যিকতা এমন যে— এটা অক্সিজেন গ্রহণের মতোই। অক্সিজেন গ্রহণ না করলে যেভাবে আমাদের দেহের মৃত্যু হয়, তেমনই আল্লাহর নাজিলকৃত ফরজ ত্যাগ করলে মৃত্যু হয় আমাদের অন্তরের। 

৫. হিদায়াত আল্লাহর দেওয়া বড় এক নিয়ামত। আত্মম্ভরিতা সেই নিয়ামতের রাস্তাকে করে রুক্ষ ও খড়খড়ে। 

৬. নিজের যোগ্যতাকে এমন ভাবে প্রকাশ না করা, এমন কিছু না ভাবা যেখানে অহংকারের ছাপ ফুটে ওঠে। 

৭. শেখার শুরুটা আপনি কবে করেছেন তা বিবেচ্য নয়। করেছেন কি না, আর করলেও তাতে কতখানি আন্তরিকতা বিদ্যমান, তা-ই হচ্ছে ব্যাপার। 

৮. সময় ফুরিয়ে যায় নি। দরকার একটা ইস্পাত - কঠিন সংকল্প আর অদম্য ইচ্ছের।

৯. ভুল হয়ে গেলে, হোক সে ভুল একেবারে সামান্য কিংবা অনু পরিমাণ , তবুও তার জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হতে পারা,ক্ষমা লাভের আশায় অশ্রু বিসর্জন করতে পারা, মুনাজাতে দুহাত উত্তোলন করতে পারা একটা সবুজ সতেজ হৃদয়ের স্বাক্ষর বহন করে। 

১০. অন্তরে চাষ করি তাওয়াক্কুল আর তাকওয়ার বীজ,  যা মহীরুহ হয়ে একদিন রুখে দেবে জীবনের প্রতিকূলতা, বিপদের তপ্ত কঠিন সময়ে, যা আমাদের ছায়া দেবে আর দেবে নিরাপত্তা। 

১১. আমরা যারা আমাদের পরিবার ও সমাজে দ্বীন প্রতিষ্ঠা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকি, চিন্তা ভাবনা করি,  আমাদের উচিত নিজ নিজ যোগ্যতা ও দক্ষতা বাড়ানো। 

১২. দুনিয়ায় পেছনে ছুটতে গিয়ে আমরা যেনো আমাদের আখিরাত নষ্ট না করি। তাহলে আমরা দুনিয়া ও আখিরাত — দুটোকেই হারাবো। 

১৩. যে লেগে থাকে এবং প্রাণান্তকর চেষ্টা করে,  আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লাও তাকে সাহায্য করেন। অলস আর অকর্মণ্য লোকের জন্য কখনোই আল্লাহর সাহায্য আসে না। 

১৪. নিজেকে বদলানোর ব্যাপারে পাছে লোকে কি বলছে,  তা ভেবে সময় নষ্ট করবার মতো সময় আপনার হাতে থাকা উচিত? 

১৫. জীবনে বদ্ধ দুয়ার গুলো খোলার জন্য আপনার হাতে একটা চাবি আছে। সেই চাবির নাম ইস্তিগফার। চাবিটার ব্যবহার করে নিজের আখেরাত গুছিয়ে নেওয়ার জন্য আজ থেকেই তৎপর হয়ে পড়ুন।  আস্তাগফিরুল্লাহ শব্দটি কে বানিয়ে নিন জীবনের নিত্য সঙ্গী।

১৬. জীবনটা বড় ক্ষুদ্র! ক্ষুদ্র এই জীবনের বড় একটা অংশ যদি অযথা, অহেতুক কোনো আসক্তির পিছনে খরচ হয়ে যায়, কতটাই বা তবে বিকশিত হতে পারে মানবজীবন? 

১৭. সালাতকে জীবনের ক্যাম্পাস বানিয়ে নিয়ে, জীবনটাকে একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমে নিয়ে আসুন। জীবন বড়ই সংক্ষিপ্ত এক সফরের নাম।  জীবনের এই অপর্যাপ্ত সময় গুলো যেনো অকাজে নষ্ট না হয়। 

১৮. নবিজির ভালোবাসাকে যদি ভালোবাসে থাকি, তাহলে আমাদের কি উচিত নয় জীবনটাকে নিয়ে আরেকবার ভাবতে বসা? সেই মহামানবের ভালোবাসার প্রতিদানে আরেকবার বদলে যাওয়ার চেষ্টা করা? 

১৯. আমাদের রবের কোন ওয়াদাই মিথ্যে নয়।

২০. চোখের সামনে একটা মানবজীবন এমন ব্যর্থতায় কেটে যাবে, তা কি দেখে সহ্য করা যায়? 

২১. আমরা ছেড়ে আসবো সমস্ত অন্ধকার। হৃদয়ে জমে থাকা সকল কালিমা দূর করে আমরা ছুটবো হেরার আলোর পানে। আমরা ধরবো তাদের পথ, যারা আমাদের আগে আগে চলে গেছেন সিরাতুল মুস্তাকিমের রাস্তা ধরে। আমার ত্যাগ করবো সমস্ত পিছু টান। ছুঁড়ে ফেলবো সমস্ত জঞ্জাল।জীবনের পরবর্তী সূর্যোদয়টা হবে আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন অধ্যায়। 

বইয়ে কি বানান ভুল আছে?:-
 
একটি বই পড়ার সময় অতিরিক্ত বানান ভুল পেলে পাঠ বিঘ্নিত হয়ে যায়। পড়তে  অসহ্য লাগে। তাই বই বের করার আগে সকল লেখক,  প্রকাশক ও প্রুফ রিডারের অধিক যত্নশীল হওয়া আবশ্যক। এ বইটিতে আমি কোনো টাইপিং মিস্টিং পাই নি
এছাড়াও কোনো  বানান ভুল পাই নি।  তবে যদি কেউ পেয়ে থাকে তাহলে তা স্বাভাবিক ভাবেই নিতে হবে। আমি আবার কয়েকটা শব্দ বুঝি নি। আমার শব্দ ভান্ডারে এগুলো নতুন। তাই ঐ শব্দ গুলো ভুল নাকি সঠিক সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।

বইটি কেন পড়বেন:-

সবখানে সব কিছু ঠিক ঠাক,  কেবল আমাদের জীবনের কোথাও যেনো এক নিরব ছছন্দপতন।  সেখানে সব কিছুই বেসুর। কোনো কিছুই মিলছে না।  এভাবে একটা জীবন চলতে পারে? কি পাওয়ার বদলে কি হারাচ্ছি জীবন থেকে? এভাবে কি ক্ষয়ে যাওয়ার কথা আস্ত একটা জীবন? 
অনেক প্রশ্ন কিন্তু উত্তর সাজানো নেই। জীবন টা বদলানো দরকার। কিন্তু কিভাবে শুরু করবো? ঠিক কোথা থেকে যাত্রা করবো এক নতুন দিনের?  এসব উত্তর পেতে হলে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে । 

কারা বইটা পছন্দ করবে না বা পড়বে না:

বিশেষ করে যারা ইসলামি সাহিত্য  বোঝে না, বুঝতে চায় না! যারা ইসলামি ক্যারেক্টারের বই পছন্দ করে না এবং যারা এরকম বই ভালোবাসে না, তাদের কাছে অবশ্যই ভালো লাগবে না এই বইটি! তাই তারা না-পড়তে চাইলে অবাক বা ক্ষুব্ধ  হওয়ার কিছুই নেই। আরও বিভিন্ন পাঠকের কাছেই ভালো বা খারাপ লাগতেই পারে, সেটি প্রত্যেকের ব্যাক্তিগত  ব্যাপার যা আসলে বলা কঠিন । তাই আমি কেবল আমার মতামত জানান দিলাম।

এবার ভিন্ন কিছু হোক বইয়ের প্রাপ্তি হোক:

এবার ভিন্ন কিছু হোক বইটি প্রকাশিত হয়েছে সমকালীন  প্রকাশনী থেকে। আমি আশা রাখি গতবারের ন্যায় এবারও প্রিয়  আরিফ ভাইয়ের  বইটি সমকালীন  প্রকাশনীর বেস্টসেলার বই হিসেবে স্থান পাবে। 

অন্যান্যঃ

সমকালীন প্রকাশনীর বই বরাবরই
প্রশংসাযোগ্য; বইয়ের মান, পৃষ্ঠার মান,
প্রিন্টিং, প্রচ্ছদ, সব দিক থেকেই। এই বইও
তার ব্যাতিক্রম নয়।

বইটি পড়ে আমার প্রতিক্রিয়াঃ 

যখন বইটির সব ডিটেইলস আরিফ ভাইয়া পোস্ট করে জানায় অন্যদের মতো আমারও বইটি পড়ার জন্য মন আকুপাকু করেছিলো। কিন্তু আমি এখন কিনবো না বলেই মনস্থির করি। ১সপ্তাহ পর হঠাৎ চিন্তা বদলে গেলো আর( ২১শে ফেব্রুয়ারি) আমি সাথে সাথেই ওয়াফিলাইফে অর্ডার করে ফেলি। বইটি অর্ডার করার পর থেকেই আমার ফোনের প্রতি আকর্ষণ কমতে থাকে। ফোন ধরতেই ইচ্ছে করতো না। কিন্তু কেনো তা জানি না। বইটি হাতে পেয়েই আরিফ ভাইয়ের চিঠি টা আগে পরি। আহ!! কি ভালোলাগা তখন কাজ করছিলো আমি লিখে তা প্রকাশ করতে পারবো না। চোখ ছলছল করতে থাকে। আমি বইটি পড়া শুরু করে দেই প্রতিটি লাইন যেনো আমার জন্যই লেখা। আমি পড়ি আর হু হু করে কাদতে থাকি। পড়া শেষে আমি আম্মুর কাছে ক্ষমা চাই এতো দিন যে অবাধ্য হয়েছি সে কারণে। সময়টাকেও কাজে লাগাতে শুরু করি।  দক্ষতা বাড়ানো সব কিছু প্রফুল্ল চিত্তে করা শুরু করি। নিজের মধ্যে আরও অনেক গুণ সন্নিবেশ করার সংকল্প করি। প্রযুক্তির অপব্যবহার যাতে না হয় সেদিকে সচেতন হতে থাকি। আমি মুসলিম হয়েও দ্বীনে ফিরেছি ২ বছরও হয় নি। আমার আকস্মিক পরিবর্তনে সবাই বিস্মিত। পরিবারও তা সাপোর্ট করতো না। শিক্ষকরাও আমাকে নিয়ে আলোচনা করতো। এখন মোটামুটি পরিস্থিতি স্বাভাবিক কিন্তু তাও গায়রে মাহরাম, মাহরাম এসব বিষয় মানতে তারা নারাজ। অনেক সময় চুপ করে থাকতে না পেরে উচু স্বরে কথা বলে ফেলি। কিন্তু পরক্ষণে ভাবি এটা ঠিক হই নি। আর এমন সময় গুলো তে কি করণীয় তা বইটি পড়ে বুঝলাম। আমার জন্য বইটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করা শুরু করে । এমন একটি বই আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য লেখকের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ লেখকের লেখায় বারাকাহ দিক। আর এই বইটির সব অধ্যায় আমার কাছে সেরা মনে হয়েছে আলাদা করে ইন্ডিকেট করা মুশকিল। 








লেখিকা:- ইসরাত জাহান মারজিয়া
                                               
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
NEXT ARTICLE Next Post
PREVIOUS ARTICLE Previous Post
 

Delivered by FeedBurner