Leave a message
> ভালোবাসাকে দিলাম ছুটি পর্ব ২
-->

ভালোবাসাকে দিলাম ছুটি পর্ব ২


অনেকক্ষণ থেকে উঠানে বসে সিগারেট খেয়ে চলেছে আরহাম। বাকী সবাই যে যার ঘরে শুয়ে পড়েছ। হয়তো ঘুমিয়েও পড়েছে, একা জেগে রয়েছে আরহাম। বাসর ঘর নামক যে ঘরে তাকে আর তৃতিকে থাকতে দেওয়া হয়েছে সেখানে যেতে আরহামের মোটেও ইচ্ছা করছে না। তৃতি হয়তো এখনও আরহামের জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে নয়তো অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে, জানে না আরহাম জানতেও চায় না। এখন এই মুহু্র্তে তার সব কিছুই বিরক্ত লাগছে।
মন চাইছে ছুটে কোথাও পালিয়ে গেলে হয়তো একটু শান্তি পেত। কিন্তু তা করলে ওর বাবাকে অপমান করা হবে। খুব ইচ্ছা করছে ফিয়ানাকে একটা কল করতে। সেখানে এখন মনে হয় সকাল হবে। কেন জানি মনে হচ্ছে ফিয়ানার সাথে কথা বললে ওর এই অশান্ত মনটা একটু শান্ত হবে।
হঠাৎ দক্ষিণ পাশের ঘর থেকে বের হয়ে এলেন আশফাক সাহেব। এসে আরহামের পাশে দাড়িয়ে বললেন, ঘরে যাও নি এখনও?
এতোক্ষন ভাবনার জগতে ছিল আরহাম। আশফাক সাহেবের কথায় কিছুটা কেপে উঠল। পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নিয়ে হাতের সিগারেটটা চট করে ফেলে দিল কিন্তু বাবার কথার কোন উত্তর দিল না সে। আগের মতোই উদাস ভঙ্গীতে দাড়িয়ে রইল। কেন দেবে, ওর বাবা কি ওর এতো এতো প্রশ্নের কোন উত্তর দিয়েছেন যে সে এখন উত্তর দিতে বাধ্য।
আশফাক সাহেব এবার আরও কিছুটা কাছে এসে দাড়ালেন আরহামের। ঘাড়ে একটা হাত রেখে তিনিও আকাশের দিতে তাকিয়ে বলতে থাকলেন,
- রেজওয়ানের সাথে আমার প্রথম দেখা ভার্সিটিতে। সে আর আমি আলাদা ডিপাটমেন্টের স্টুডেন্ট ছিলাম কিন্তু এক হলে থাকার জন্য আমাদের বন্ধুত্বটা ছিল বেশ গাড়। ওকে আমি যত দেখতাম ততই যেন অবাক হয়ে যেতাম। একটা মানুষ এতো সহজ সরল হয় কেমনে? সবসময় একটা বোকা বোকা চেহারা নিয়ে ঘুরত কিন্তু কোন বন্ধুর যে কোন সমস্যায় তাকেই দেখা যেত অগ্রগামী। পড়াশোনাতেও ছিল তুখোড়। সেসময় সে প্রথমবারেই বি সি এস দিয়ে টিকে গেছিল। আমরা সবাই খুশি ছিলাম কারন ওর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড খুব একটা ভাল ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে ওর টাইফয়েড হয়ে যাওয়াতে সে বি সি এস এর ভাইবা দিতে যেতে পারল না। ফলে তার সপ্নের বি সি এস আর তার হাতে এলো না।
একটা মেয়ে ছিল যাকে ও খুব ভালোবাসত। মেয়েটাও বাসত কিন্তু বি সি এস টা হাত থেকে চলে যাওয়ার পর মেয়েটা পাল্টে গেল। সেও তার পরিবারের পছন্দের এক ছেলেকে বিয়ে করে সুখি হয়ে গেল কিন্তু রেজওয়ান, সে পারল না সুখি হতে। মেয়েটার বিয়ের পর শহর ছড়ল সে। চেষ্টা করলে ওর যা রেজাল্ট তাতে সে বেশ ভাল কোন চাকরি পেতেই পারতো কিন্তু তা না করে সে গ্রামে এসে একটা প্রাইমারী স্কুলে চাকরি নিল। পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করেছিল ভাবীকে।
ভাবী মানুষটাও অসাধারণ। বিয়ে রাতেই রেজওয়ান তাকে তার অতীত জীবনের কথা বলেছিল। কিন্তু মানুষটা তাতে ভ্রুক্ষেপ করে নি। সে আকড়ে ধরে রয়েছে রেজওয়ানকে। এতো ঝড় ঝাপটা এতো দরিদ্রতা তবুও দেখ মানুষ দুজনকে এখনও কতো সুখি।
তখন থেকেই রেজওয়ানের জন্য আমার বুক ফাটত। সে আমার বন্ধুর থেকে বেশী ভাই ছিল। আমি বেশ কয়েকবার ওর জন্য চাকরির ব্যবস্থা করে ওকে শহরে ডেকেছি কিন্তু তার পরে ও আর কোনদিনও শহরমুখি হয় নি। এখানে এসে বন্ধুর এমন করুন অবস্থা দেখে আমার যে মনের মধ্যে কি হয়েছে তোরা তা বুঝবি না।
কথাগুলো বলতে বলতে আশফাক সাহেব কেদে দিলেন। চোখের পানি মুছে আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকলেন,,,,
আমি চাইলেই পারতাম ওই মেয়েটার জন্য একটা যোগ্য পাত্রের খোজ করতে। কিন্তু ওই যে বললাম ভাই সম বন্ধু, তার মেয়েকে নিজের ঘরে নেওয়ার লোভটা আমি কিছুতেই সামলাতে পারি নি। বিশ্বাস কর মেয়েটা খারাপ হবে না। ও রেজওয়ান আর ওর মায়ের শিক্ষায় বড় হয়েছে। হয়তো তোর মতো অত বিদ্যে তার পেটে নেই কিন্তু বিপদের সময় তোর হাতটা দেখবি সে আকড়ে ধরে থাকবে তোকে ছেড়ে যাবে না।
আমার নিজের ছেলের উপর ভরসা আছে সে আমাকে নিরাশ করবে না। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে খুব গর্ব করি। আমার এই গর্ব মিথ্যা হতে দিস না। আমি যে শিক্ষায় তোদের বড় করেছি তা থেকে বিচ্যুত হোস না। আমার বন্ধুর সামনে আমাকে ছোট করিস না বাবা।
এবারও আরহাম কিছু বলল না। শুধু তার বাবার হাতটা শক্ত করে ধরল। হয়তো এটা ভরসার হাত ছিল। আশফাক সাহেব কি বুঝলেন জানি না, তিনি টলতে টলতে আবার সেই দক্ষিণ দিকের ঘরটার দিকে চলে গেলেন। আরহাম আরও একবার আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার বাসর ঘর নামক ঘরের দিকে পা বাড়াল।
বিছানায় তৃতি বাচ্চাদের মতো গুটিসুটি হয়ে সুয়ে আছে।বাচ্চাদের মতো কি বাচ্চাই তো মনে হয়, একটা ছোট্ট পুতল পুতুল বাচ্চা।আর সেই মেয়েটা নাকি এখন তার বউ। মনে মনে হাসল আরহম। তৃতি মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে। বিছানার একপাশে কিনারা ঘেসেই শুয়ে আছে সে। আরহাম অনায়েসে অন্য পাশে শুতে পারে। কিন্তু তবুও ঘরে একবার চোখ বুলালো সে। লাইটের টিমটিম আলোতে সে দেখল ঘরে কাপড় রাখার জন্য একটা কাবার্ড, একটা ভাঙ্গাচোরা ড্রেসিং টেবিল যাতে অতি কষ্টে নিজের চেহারাটা দেখা যায় আর একটা পড়ার টেবিল সাথে চেয়ার। পড়ার টেবিলে অনেক বই আছে কিন্তু সেগুলো কি বই তা লাইটেরর টিমটিম আলোতে আরহাম বুঝতে পারলো না। ঘরের মধ্যে সে খুব করে একটা সোফা খুজছিল যাতে সে আজকের রাতটা কোন রকমে পার করতে পারবে। কিন্তু এই বাসায় সেটা আশা করা অসম্ভব ব্যাপার । যে আসবাবপত্রগুলো না থাকলেই নয়, সেগুলো দিয়েই বাড়িটা কোনভাবে সাজানো হয়েছে।
না পেরে আরহামও বিছানার অপরপাশে গিয়ে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে পড়ল। বিছানাটা বেশ বড় ছিল আর তারা এমনভাবে শুয়েছে যে তাদের মধ্যে আরও একজনের জায়গা অনায়েসে হয়ে যাবে। এভাবে একটা মেয়ের পাশে শুয়ে আরহামের বেশ অসস্তি হচ্ছে। এমন নয় যে কোন মেয়ের পাশে সে এই প্রথম শুচ্ছে। ফিয়ানা মাঝে মাঝেই গ্রুপ স্টাডি করতে ওর বাসায় আসত। যেদিন ওদের গ্রুপ স্টাডি করতে করতে অনেক রাত হয়ে যেত সেদিন ওর বাসাতেই থেকে যেত ফিয়ানা। আরহাম যে বাসায় থাকত তার একটাই বেডরুম ছিল। ও একা একটা মানুষ একটার বেশী বেডরুম ওর লাগত না। কিন্তু ফিয়ানা থাকলে তখন একই বেডরুমে শুতে হতো ওদের। বিষয়টা আরহামের কাছে অসস্থিকর লাগত না। দুজনে বেডের দুপাশে শুয়ে মজা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ত বুঝতেই পারত না। কিন্তু আজ কেন এতো অসস্থি লাগছে তার।
ফিয়ানা মেয়েটা সত্যি অসাধারণ। আরহাম যেদিন দেশে চলে আসে সেদিন তার সেকি কান্না। কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটা চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছিল। তার ফর্সামুখে একটা লালচে আভা এসেছিল। আরহামের বেশ লাগছিল। তার জন্য একটা মেয়ে এতো কাদছে। সে নিজেকে চরম ভাগ্যবান ভেবেছিল সেদিন। কিশোরীর প্রথম প্রেমিকের অখ্যান পাওয়াটা সত্যি ভাগ্যবান হওয়ার মতো বিষয়। ফিয়ানাকে সাথে আনার খুব ইচ্ছা ছিল। ফিয়ানাও আসতে চায়ছিল কিন্তু তার বাবা মা ফিয়ানার আসাটাকে স্বাভাবিক ভাবে নিত না তাই আর আনা হয় নি। ওই দেশে যেটা স্বাভাবিক তা এই দেশে কল্পনা করাও যেন অসম্ভব বিষয় একটা। সে অবশ্য ফিয়ানাকে ইনভাইট করতে ভুলে নি বাংলাদেশ আসার জন্য।
ফিয়ানার কথা ভাবতেই কেন যেন অসস্থি ভাবটা কেটে গেল আরহামের। সে উল্টোদিকে পিঠ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিল। অন্ধকার ঘরে আবারও রুমের ডেকোরেশন দেখতে লাগল।
সকালে আরহামের ঘুম ভাঙ্গল বেশ বেলাতে। চোখ কচলে পাশে তাকিয়ে দেখল তৃতি নেই হয়তো উঠে পড়েছে। বাইরের রোদের আলো বেশ কড়াভাবেই আরহামের চোখে এসে লাগছে। বিছানার পাশ দিয়েই রুমের একমাত্র জানালাটা রয়েছে। কিন্তু জানালায় কোন পর্দা না থাকায় ভোরের রোদটা সরাসরি জানলা দিয়ে ঘরে ঢুকতে পারছে।
আরহাম ধিরে ধিরে উঠে বসল বিছানাতে। সামনে চোখ পড়তেই দেখন কাল রাতে যে টেবিলটা দেখেছিল বইয়ে ঠাসা, ও ভেবেছিল হয়তো তৃতির ক্লাসের বই আছে সেখানে। কিন্তু কোথায় কি? এখানে তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, বুদ্ধদেব গুহ, হুমায়ন আহমেদ সহ আরও বিভিন্ন লেখকের বইয়ে ঠাসা। কিন্তু তৃতি কি এই সব বই পড়ে। তৃতিতে সেদিন যখন জিজ্ঞেস করেছিল কোন ক্লাসে পড়ে তখন বলেছিল ক্লাস টেনে পড়ছে সে। তাহলে সে এতো বড় বড় রাইটারে বই কীভাবে পড়বে? হঠাৎ মনে হল আংকেল তো ভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিলেন। হয়তো তার বই এগুলো, এখানে রেখেছে।
আরহাম উঠে ফ্রেস হয়ে বাইরে এসে দেখলো সবার প্রায় নাস্তা করা শেষ। নাহুরা ডাইনিং টেবিলে বসে অনেকটা সময় নিয়ে অদ্রিকে খাওয়াচ্ছে। আরহামকে দেখে সে একটা শয়তানী হাসি দিয়ে বলল, "কিরে রাতে ঘরে ঢুকতেই চাইছিলি না আর এখন বের হতে চাইছিস না। বেলা কয়টা বাজে তার হিসেব আছে? কি এমন জাদু করল বউ এক রাতে?"
আরহামের এই মশকরা গুলো তার ভাবীর থেকে একদম আশা করেনি। আর কেউ জানুক না জানুক তার ভাবী তো জানে তার মনের মধ্য ঠিক কি চলছে। আরহাম তার সব মনের কথা একমাত্র ভাবীর সাথে শেয়ার করে। এমনকি ফিয়ানার কথাও। ভাবীকে সে তার বেস্ট ফ্রেন্ড মানে। তিনি তো আরহামকে সবচেয়ে ভাল চেনার কথা। তবুও তিনি এমন মশকরা পায় কোথা থেকে। আরহাম কোন উত্তর না দিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ল
তৃতির মা রেহানা বেগম চোখ দিয়ে তৃতিকে ইশারা করলেন যেন সে আরহামকে নাশতা সার্ভ করে। তৃতি প্রচন্ড অসস্থি নিয়ে এগিয়ে গেল আরহামের দিকে। এই মানুষটার সাথে তার বিয়ে হয়েছে একদিন কিন্তু এখনও কোন কথা হয় নি তাই বেশ অসস্থি লাগছে তার। তৃতি কাপা কাপা হাতে আরহামকে রুটি তরকারি তুলে দিচ্ছিল কিন্তু তার চোখ মাটির দিকে, সে না তাকাচ্ছে আরহামের দিকে না তার প্লেটের দিকে।
হুট করে আরহাম তৃতির হাতটা চেপে ধরলো। তৃতিও চোখ তুলে তাকালো আরহামের দিকে। যেন সারা শরীর জুরে শিরশির ঠান্ডা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। হালকা একটা কাপুনিও হচ্ছে তার। এই প্রথম কোন ছেলে তাকে স্পর্শ করছে। তাও আবার তার বর, হয়তো সে জন্যই তার এমন হচ্ছে। তার কাপাকাপি বেড়েছে প্রায় তিন গুন। মুখ দিয়ে চেয়েও কোন শব্দ বের করতে পারছে না। সে তাকিয়ে রইলো আরহামের মুখের দিকে। আরহাম প্লেটের দিকে তাকিয়েই বলল "আর লাগবে না।" বলেই হাতটা ছেড়ে দিল । তৃতি সাথে সাথেই দৌড়ে ঘরে গিয়ে দোর দিল।
ঘরের দড়জা লাগিয়ে তাতে পিঠ দিয়ে বসে পড়ল সে। কাল রাতে কখন আরহাম ঘরে এসেছিল সে জানে না। সারাদিনে এতো ঝামেলাতে সে আর বসে আরহামের জন্য অপেক্ষা করতে পারে নি, ঘুমিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সকালে যখন আরহামকে তার পাশে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে তখন আলাদা একটা ভাল লাগা কাজ করছিল তার। অনেকটা সময় সে আরহামের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল। ইচ্ছা করছিল একটু ছুয়ে দিতে কিন্তু সে তা তখন করে নি। তার খুব ইচ্ছা করছিন আরহামের ছোয়া পেতে, তাই একটু আগে যখন আরহাম তার হাতটা ছুয়ে দিল তখন অজানা এক ভাললাগা ছেয়ে গেছিল তার মন জুরে। আর কাপাকাপিও বাড়ছিল তাই নিজেক শান্ত করার জন্য ঘরের দিকে ছুটে এসেছে সে।
তৃতি দৌড়ে যাওয়ার সময় আরহাম ওর দিকে হা হয়ে তাকাচ্ছিল। ও কিছুতেই বুঝতে পারছে না কি এমন হল যে মেয়েটা এভাবে দৌড়ে পালাল। আর কিছু না ভেবে সে খাওয়াতে মন দিল। কাল সারাটা দিন রাগের জন্য ভাল করে খায় নি সে ফলে এখন প্রচন্ড খিদে পেয়ে। আরহাম খেতে খেতেই আশফাক সাহেব এসে ঘোষণা দিলেন তারা আজই ফিরে যাবে নতুন বউ নিয়ে। আরহাম খাবারের দলাটা গিয়ে ঢকঢক করে খানিকটা পানি খেয়ে একটা সস্তির নিশ্বাস ফেলল। ওর এখানে থাকতে দম বন্ধ লাগছিল। বাড়ি গেলেই শান্তি।
সবাই মিলে সিধান্ত নেওয়া হল তারা দুপুরে খেয়েই বেড়িয়ে পড়বে। যদিও রেজওয়ান সাহেব একটু আপত্তি করছিল। তিনি চাইছিলেন মেয়ে জামাইকে আর কটা দিন কাছে রাখতে কিন্তু আশফাক সাহেব তাকে ঠিক মানিয়ে নিলেন।
খাওয়া শেষ করে আরহাম ঘরের দিকে গেল। সবাই নিজেদের প্যাকিং শুরু করে দিয়েছে। আশফাক সাহেব আরহমকে বলেছেন সে যেন যেয়ে তৃতিকে নিজের সব কিছু গুছিয়ে নিতে বলে। আরহাম এক পা দু পা করে এগিয়ে যাচ্ছে ঘরের দিকে। তার কিছুতেই এই মেয়েটাকে সাথে নিতে ইচ্ছা করছে না কিন্তু কাউকে বলতেও পারছে না , ওর বিয়ে করা বউ বলে কথা। আচ্ছা এমন কিছু করা যায় না যাতে ওরা চলে যাবে কিন্তু তৃতি যাবে না ওদের সাথে। ভাবতে হবে বিষয় টা নিয়ে।
আরহাম গিয়ে দড়জাটা ধাক্কা দিল কিন্তু সেটা ভেতর থেকে আটকানো। তৃতি গুটি গুটি পায়ে এসে দড়জাটা খুলে আরহামের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে আরহাম আবারও তৃতির হাতটা চেপে ধরে। ইতিমধ্যে তৃতির আবার কাপাকাপি শুরু হয়ে গেছে। তৃতি বুঝে পায় না ছেলেটা এমন কেন হুটহাট তৃতির হাত এভাবে চেপে ধরছে। সে কি তৃতির কাপাকাপিটা বুঝছে না। আরহাম তৃতির কাপাকাপিটা বুঝতে পেরে হাতটা আরও একটু শক্ত করে ধরে বলল, কই যাও?
তৃতি মুখ তুলে তাকালো। আরহাম সামনের দিকে তাকিয়ে কথা বলেছে। তৃতি কোন রকমে বলল, মার কাছ যাই? আরহাম একই ভঙ্গিতে আবার বলে বলে উঠল, এখন যাবার দরকার নেয়। গোছগাছ শুরু কর আমরা দুপুরেই রওনা দিব। বলে হাতটা ছেড়ে দিল।
তৃতি "আইচ্ছা" বলে আবার দৌড় দিল। আরহাম সেদিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকল মেয়েটার কি কোন রোগ আছে এমন কথার মাঝে দৌড়ে পালায় কেন সবসময়?
চলবে,,,,

Writer:- জাকিয়া সুলতানা
 

Delivered by FeedBurner

a